সুরা আল আলা পবিত্র কোরআনের ৮৭তম সুরা। মক্কায় অবতীর্ণ সুরাটির আয়াত সংখ্যা ১৯টি, রুকু ১টি। এ সুরার ১৪-১৯ আায়াতে আল্লাহ মানুষকে পরিশুদ্ধ হওয়ার অর্থাৎ সব ধরনের গুনাহ বর্জন করে পবিত্র জীবনযাপন করার নির্দেশ দিয়েছেন। মানুষের দুনিয়াপ্রীতির কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেছেন, তারা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দেয়, অথচ আখেরাতই উত্তম ও চিরস্থায়ী!
সুরা আলার ১৪-১৯ আয়াতে আল্লাহ বলেন,
(১৪)
قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّى
কাদ আফলাহা মান তাযাক্কা
নিশ্চয়ই সফল হয় সেই ব্যক্তি, যে পরিশুদ্ধ হয়।
(১৫)
وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى
ওয়া যাকারা-সমা রাব্বিহি ফাসাল্লা
আর তার রবের নাম স্মরণ করে ও নামাজ আদায় করে।
(১৬)
بَلْ تُؤْثِرُونَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا
বাল তুসিরুনা-লহায়াতাদ-দুনিয়া
কিন্তু তোমরা তো দুনিয়ার জীবনকেই প্রাধান্য দাও,
(১৭)
وَالْآخِرَةُ خَيْرٌ وَأَبْقَى
ওয়া-লআখিরাতু খাইরুন-ওয়া আবকা
অথচ আখেরাত উত্তম ও চিরস্থায়ী।
(১৮)
إِنَّ هَذَا لَفِي الصُّحُفِ الْأُولَى
ইন্না হাজা লাফিস-সুহুফিল-উলা
নিশ্চয়ই এটা লিপিবদ্ধ ছিল পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে-
(১৯)
صُحُفِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى
সুহুফি ইবরাহিমা ওয়া মুসা
ইবরাহিম ও মুসার কিতাবসমূহে।
এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই
১. দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা অর্জনের একমাত্র উপায় হলো নিজেকে পরিশুদ্ধ করা অর্থাৎ সব ধরনের পাপাচার, জুলুম ও অন্যায় থেকে নিজেকে পবিত্র করা এবং নেক আমল করা। যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে ও নেক আমল করে, সে চূড়ান্ত সফলতা লাভ করে।
২. ইমানের পর নামাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল। নামাজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা পেতে হলে গুনাহমুক্ত হওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর নির্দেশিত ফরজ বিধানগুলোও পালন করতে হবে।
৩. পৃথিবীতে বসবাস ও জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজন পরিমাণ সম্পদ ও জীবনোপকরণ অর্জন করতেই হয়। কিন্তু সর্বাবস্থায় আখেরাতকে দুনিয়ার জীবনের ওপর প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ দুনিয়ার জীবন একেবারেই ক্ষণস্থায়ী, আখেরাত উত্তম ও চিরস্থায়ী।
৪. আল্লাহর প্রেরিত সব ধর্মের মূল বাণী এক। এ সুরায় আল্লাহ আমাদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা পূর্ববর্তী উম্মতদেরও দিয়েছিলেন। ইবরাহিম (আ.) ও মুসার (আ.) ওপর অবতীর্ণ কিতাবেও আল্লাহর এই নির্দেশনাগুলো ছিল।