উসওয়াতুন হাসানাহ |
পাগড়ীর উপর রুমাল পরিধান করা ও পাগড়ী ছাড়া রুমাল পরিধান করা উভয়টাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই মাথা মুবারকে পাগড়ীর উপরে রুমাল পরিধান করতেন এবং পাগড়ী ছাড়াও রুমাল পরিধান করতেন।
যেমন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,
قالت عائشة رضى الله تعالى عنها فبينا نحن يوما جلوس فى بيتنا فى نحر الظهيرة قال قائل لابى بكر رضى الله تعالى عنه هذا رسول الله صلى الله عليه وسلم مقبلا متقنعا.
অর্থ: ‘উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, একদা দ্বিপ্রহরের সময় আমরা আমাদের গৃহে বসা ছিলাম। তখন একজন আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়অ হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন যে, “ওই যে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (পাগড়ীর উপর) রুমাল পরিধান করে মাথা মুবারক আবৃত করে আগমন করছেন।” [বুখারী শরীফ ২/৮৬৪, আহমদ, আবূ দাউদ শরীফ ৫৬৪, ফতহুল বারী ১০/২২৪, উমদাতুল কারী ২১/৩০৯, বযলুল মাযহুদ ৬/৫৩]
উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে متقنعا শব্দটি تقنع শব্দ থেকে এসেছে। আর تقنع শব্দের অর্থ হলো,
وضع شيى الزائد على الرأس فوق العمامة.
অর্থ: تقنع হলো মাথায় পাগড়ীর উপরে অতিরিক্ত একটি কাপড় (রুমাল) পরিধান করা।” [বুখারী শরীফ ২/৮৬৪, ফতহুল বারী ১০/২২৪, উমদাতুল কারী ২১/৩০৯]
تقنع শব্দের ব্যাখ্যায় অনত্রে বলা হয়েছে,
تغطية الرأس واكثر الوجه برداء اوغيره.
অর্থ: “মাথা এবং চেহারার অধিকাংশ কোন চাদর অথবা অন্য কোন কাপড় (রুমাল) দিয়ে ঢেকে রাখা।” [বুখারী শরীফ ২/৮৬৪, ফতহুল বারী ১০/২২৪, উমদাতুল কারী ২১/৩০৮]
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,
عائشة رضى الله تعالى عنها قالت مااتى رسول الله صلى الله عليه وسلم احدا من نسائه الا متقنعا يرخى الثوب على راسه حياء.
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখনই উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কারো নিকট আসতেন তখন (রুমাল দিয়ে) মাথা মুবারক ঢেকে আসতেন। তিনি হায়ার কারণে স্বীয় মাথা মুবারকের উপর কাপড় (রুমাল) পরিধান করতেন।” [মসনদে আয়েশা, হাশীয়াদে আবূ দাউদ/২০৯]
ইমামাহ্ বা পাগড়ীর বর্ণনা ও ফযীলত
ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নত। কেননা আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করতেন। সেহেতু পাগড়ীর মধ্যে অনেক ফযীলত, মর্যাদা, মর্তবা পরিলক্ষিত হয়।
পাগড়ী পরিধানকারীগণের উপর মহান আল্লাহ্ পাক উনার খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণের খাছ দোয়া বর্ষণ হয়। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,
روى الطبرانى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله وملائكته يصلون على صاحب العمائم يوم الجمعة. (بذل المجهود شرح ابى داؤد ج৬ ص- انوار المحمود ج২ ص اللباس والزينة ص مجمع الزوائد ج ص، الجمعة ج২ ص الميزان ج১ ص – كشف الخفاء ومزيل الالباس ج২ ص
অর্থ: “ইমাম তাবারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত (তিনি বলেন) নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পাগড়ী (দায়িমীভাবে) পরিধান কারীগণের উপর প্রতি জুমুয়ার দিবসে ছলাত বা খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণ খাছ দোয়া বর্ষণ করেন।”
[বযলুল মাজহুদ শরহে আবী দাউদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪৬ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০, ১২১ পৃষ্ঠা, আল জুমুয়াহ্ ২য় জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, আল মীযান ১ম জিঃ ২৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল্ খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৮ পৃষ্ঠা]
পাগড়ীসহ নামাযের ফযীলত
পাগড়ীসহ এক রাকায়াত নামায পাগড়ী ছাড়া সত্তর রাকায়াত নামায অপেক্ষা উত্তম। এ ছাড়াও বিভিন্ন রেওয়ায়েতে বিভিন্নমূখী ফযীলতের কথা বর্ণিত আছে। সেগুলো হচ্ছে,
روى انه عليه السلام قال صلاة بعمامة افضل من سبعين صلاة بغير عمامة. مرقاة ج৮ ص
অর্থ: বর্ণিত আছে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, পাগড়ীসহ এক ওয়াক্ত নামায পাগড়ী ছাড়া সত্তর ওয়াক্ত নামাযের থেকে উত্তম।” [মিরকাত ৮ম জিঃ, ২৫০ পৃষ্ঠা]
ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها. حاشية سمائل الترمذى ص، هداسة العباد
অর্থ: “নিশ্চয়ই পাগড়ী পরিধান করে দু’রাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া সত্তর রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ।”
নামাযের বাইরে পাগড়ী পরিধান করা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সহীহ কিতাব “তিরমিযী শরীফ-এর” হাশিয়ায় উল্লেখ আছে,
ان لبس العمامة سنة
অর্থ: “নিঃসন্দেহে পাগড়ী পরিধান করা (দায়েমী) সুন্নত।” [হাশিয়ায়ে শামায়িলে তিরমিযী/৮]
আর নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরিধান করার ফযীলত সম্পর্কে উক্ত কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে যে,
ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها.
অর্থ: “নিশ্চয়ই পাগড়ী পরিধান করে দু’রাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ।” [হাশিয়ায়ে শামায়িলে তিরমিযী/৮]
পাগড়ীর উল্লিখিত ফযীলত থেকে যেন উম্মত মাহরুম না হয় সে জন্য সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উম্মতদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে,
فاعتموا فان العمامة سيماء الاسلام وهى الحاجز بين المسلمين والمشركين.
অর্থ: “তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। নিশ্চয়ই পাগড়ী পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নির্দশন এবং তা মুসলমান ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্যকারী।” [যারকানী ৬ষ্ঠ জি:, ২৭২ পৃষ্ঠা, উমদাতুল ক্বারী, ২১ জি:, ৩০৮ পৃষ্ঠা, খাছায়িলুন নবী ৭৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াজী ৫ম জি, ৪১২ পৃষ্ঠা]
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
عليكم بالعمائم فانها سيماء الملئكة.
অর্থ: “তোমাদের জন্য পাগড়ী অবধারিত, কেননা তা ফেরেশতাগণ উনাদের নিদর্শন স্বরূপ।” [মিশকাত শরীফ/৩৩৭, ফাইদুল ক্বদীর ৪র্থ জি, ৪৫৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জি:, ১৭৬ পৃষ্ঠা]
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধান করা ফেরেশতাগণ উনাদের নিদর্শন
আখেরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে “পাগড়ী”কে “হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের” নিদর্শন বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সর্দার হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনিসহ সকল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারাই পাগড়ী পরিধান করেন। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা যে পাগড়ী পরিধান করেন তা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত। যেমন, যিনি খালিক-মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يمددكم ربكم بخمسة الاف من الملئكة مسومين.
অর্থ: “তোমাদের পালনকর্তা চিহ্নিত ঘোড়ার উপর পাঁচ হাজার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তোমাদের সাহায্যে পাঠাবেন।” [পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১২৫]
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের পাগড়ী সম্পর্কে “তাফসীরগ্রন্থসমূহে” বিশদ আলোচনা এসেছে যা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।
روى عن على بن ابى طالب وابن عباس وغيرهما ان الملائكة اعتمت بعمائم بيض قدارسلوها بين اكتافهم ذكره البيهقى عن ابن عباس وحكاه المهدوى عن الزجاج الا جبريل فانه كان بعمامة صفراء على مثل الزبير بن العوام. (تفسير القرطبى الجلد الثانى ص ১৯৬)
অর্থ: হযরত আলী ইবনে আবু তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও অন্যান্যদের থেকে বর্ণিত আছে- নিঃসন্দেহে ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা “সাদা পাগড়ী” পরিধান করেছিলেন যার শামলা উনাদের দু’কাধের মধ্যবর্তীস্থালে ছিল। বাইহাক্বী ইহা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেছেন। আর হযরত মাহদুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত যুজাজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের থেকে বর্ণনা করেন, হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম উনার পাগড়ী মুবারক হযরত যুবাইর ইবনে আউওয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ন্যায় ঘিয়া রংয়ের ছিল।” [তাফসীরে কুরতুবী ২য় জিঃ ১৯৬ পৃষ্ঠা]
واخرج ابن اسحاق والطبرانى عن ابن عباس رضى الله عنه قال كانت سيماء الملائكة يوم بدر عمائم بيضاء قد ارسلوها فى ظهورهم ويوم حنين عمائم حمراء. (فتح القدير الجلد الاول ص ৩৭৯)
অর্থ: “হযরত ইবনে ইসহাক ও তিবরানী রহমতুল্লাহি আলাইহিমা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশেষ চিহ্ন ছিল “সাদা পাগড়ী”। যার শ্যামলা উনাদের পিঠে ঝুলানো ছিল। আর হুনাইন যুদ্ধের দিন ছিল তাদের গন্ধম রংয়ের পাগড়ী।” [তাফসীরে ফতহুল ক্বাদীর ১ম জিঃ, ৩৭৯ পৃষ্ঠা]
ইমামাহ্ বা পাগড়ী বাঁধার ব্যাপারে
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার আমর বা নির্দেশ মুবারক
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে শুধু নিজেই পাগড়ী পরিধান করেছেন তা নয়। বরং হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সমস্ত উম্মতে মুহম্মদীকে পাগড়ী পরিধান করার নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতিটি আদেশ নিষেধ মুবারক পালন করা বা মেনে চলা উম্মতের জন্য অবশ্য কর্তব্য। তাই হাম্বলী মাযহাবের ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতওয়া হচ্ছে সমস্ত সুন্নতগুলো পালন করা হচ্ছে ফরয। ইসলামী শরীয়ত যদিও পাগড়ী পরিধান করাকে ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুয়াক্কাদা হিসেবে সাব্যস্ত করেনি, তবে পবিত্র হাদীছ শরীফে পাগড়ী পরিধান করার ব্যাপারে যথেষ্ট তাক্বীদ এসেছে। যেন উম্মত পাগড়ীর ফাযায়েল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা হতে বঞ্চিত না হয়। কেননা পাগড়ী পরিধান করলে শুধু সুন্নতই আদায় হয়না বরং মহান মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ রহমতও লাভ করা যায়। যেমন এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
روى الطبرانى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله وملائكته يصلون على صاحب العمائم يوم الجمعة- (بذل المجهود شرح ابى داؤد ج ص انوار المحمود ج ص اللباس والزينة ص – مجمع الزوائد ج ص الجمعة ج ص الميزان ج – كشف الخفاء ومزيل الالباس ج
অর্থ: “ইমাম তিবরানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত (তিনি বলেন) নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পাগড়ী (দায়িমীভাবে) পরিধানকারীগণের উপর প্রতি পবিত্র জুমুয়া উনার দিবসে ছলাত বা খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণ খাছ দোয়া বর্ষণ করেন।” [বযলুল মাজহুদ শরহে আবী দাউদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪৬ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০, ১২১ পৃষ্ঠা, আল জুমুআহ্ ২য় জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, আল মীযান ১ম জিঃ ২৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল্ খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৮ পৃষ্ঠা]
قال النبى صلى الله عليه وسلم “تسوموا فان الملائكة قد تسومت”
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বদর যুদ্ধের দিন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুমগণকে) বলেছিলেন, “তোমরা চিহ্ন গ্রহণ কর অর্থাৎ পাগড়ী পরিধান কর। কেননা ফেরশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা আজ বিশেষ চিহ্ন গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ পাগড়ী পরিধান করেছেন।” [তাফসীরে আহ্কামুল কুরআন লি ইবনিল আরাবী ১ম জিঃ ২৯৬ পৃষ্ঠা]
عن عبد الرحمن بن عدى البهرانى عن اخيه عبد الاعلى بن عدى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دعا على بن ابى طالب رضى الله تعالى عنه يوم غد يرخم فعممه وارخى عذبة العمامة من خلفه ثم قال هكذا فاعتموا فان العمائم سيماء الاسلام- وهى الحاجز بين المسلمين والمشركين.
অর্থ: “হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আদিয়্যীল বাহরানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ভাই হযরত আব্দুল আ’লা ইবনে আদি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার হতে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইমামুল আউওয়াল মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে এক বৃষ্টির দিনে ডেকে উনার মাথা মুবারকে পাগড়ী বেঁধে তার শামলা পিছনে পিঠের উপর ঝুলিয়ে দিলেন। অতঃপর বললেন, তোমরা অনুরূপভাবে পাগড়ী পরিধান কর। কেননা নিশ্চয়ই পাগড়ী পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিশেষ নিদর্শন। আর এটা (পাগড়ী) মুসলমান ও মুশরিকদের মধ্যে পার্থক্যকারী। অর্থাৎ পাগড়ী পরা মুসলমানগণের নিদর্শন আর পাগড়ী পরা ছেড়ে দেয়া মুশরিকদের নিদর্শন।” [উমদাতুল কারী ২১তম জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, যুরকানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২৭২ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ৭৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২পৃষ্ঠা]
عن ابى المليح بن اسامة عن ابيه رفعه اعتموا تزدادوا حلما (فتح البارى ج ১০ ص ২৮৩- خصائل النبوى ص ৭৮- المستدرك ج ৪ ص ১৯৩- كشف الغمة ج ১ ص ৯৪- اللباس والزينة ص ১২৫- مجمع الزوائد ج ৫ ص ১১৯- الكبير ج ১ ص ১৯৪- كشف الخفاء ومزيل الالباس ج ২ ص ৬৭)
অর্থ: “হযরত আবুল মুলাইহ্ ইবনে উসামাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। এতে সহনশলীতা ও গাম্ভীর্যতা বৃদ্ধি পাবে।” [ফতহুল বারী ১০ম জিঃ ২৮৩ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ৭৮ পৃষ্ঠা, আল্ মুসতাদ্রক ৪র্থ জিঃ ১৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল গুম্মাহ্ ১ম জিঃ ৯৪ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১১৯ পৃষ্ঠা, আল্ কবীর ১ম জিঃ ১৯৪ পৃষ্ঠা, কাশফুল খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা]
ইমামাহ্ বা পাগড়ী বাঁধা নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের পবিত্র খাছ সুন্নত
পাগড়ী যে শুধু ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা পরিধান করেন তা নয়, বরং মহান আল্লাহ পাক উনার সবচেয়ে প্রিয় এবং উনার নিকট সবচেয়ে বেশি সম্মানের অধিকারী নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনারা সকলেই পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন। যেমন, এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে,
العمامة سنة الرأس وعادة الانبياء والسادة-) عارضة الاحوذى شرح ترمذى الجلد السابع ص ২৪৩)
অর্থ: পাগড়ী মাথায় পরিধান করা সুন্নত এবং সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের বিশেষ অভ্যাসগত আমল। [আরিদাতুল আহওয়াজী শরহে তিরমিযী ৭ম জিঃ ২৪৩ পৃষ্ঠা]
হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
মহান আল্লাহ পাক উনার নবী হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম উনার সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ان ياتيكم التابوت فيه سكينة من ربكم وبقية مما ترك ال موسى وال هارون. سورة البقرة- ২৪৮)
অর্থ: (তালুতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে) “তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে একটা সিন্দুক আসবে। তোমাদের সন্তুষ্টির জন্য। আর তাতে থাকবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম এবং উনাদের সন্তানগণের কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী। [পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪৮]
হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম উনার সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ان ياتيكم التابوت فيه سكينة من ربكم وبقية مما ترك ال موسى وال هارون. سورة البقرة- ২৪৮)
অর্থ: (তালুতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে) “তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে একটা সিন্দুক আসবে। তোমাদের সন্তুষ্টির জন্য। আর তাতে থাকবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম এবং উনাদের সন্তানগণের কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী। [পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪৮]
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম তিনি যে পাগড়ী পরিধান করেছিলেন তার প্রমাণ মিলে। নিম্নে এ বিষয়ে বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ সমূহের সুষ্পষ্ট দলীল-আদিল্লা পেশ করা হলো-
(فيه سكينة من ربكم وبقية مما ترك ال موسى وال هارون) وفى السكينة سبعة اقوال ………. والسادس انها رضاض الالواح وقفيز من فى طست من ذهب وعصا موسى وعمامته- قاله مقاتل- (تفسير زاد المسير فى علم التفسير الجلد الاول ص ২৫৯)
অর্থঃ (তালুতের নেতৃত্বের নিদর্শন হল- তোমাদের কাছে একটা সিন্দুক আসবে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের সন্তুষ্টির জন্য। আর তাতে থাকবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম এবং উনাদের সন্তানগণের কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী।) এখানে فى السكينة (সিন্দুকের মধ্যে) এর ব্যাখ্যায় সাতটি মত রয়েছে, ষষ্ঠ মত হলো সেখানে ছিল লেখার সামগ্রী চূর্ণপাথর, স্বর্ণের তৈরি প্লেটে নেয়ামতপূর্ণ মান্না’র কিছু অংশ এবং হযরত হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম উনার লাঠি মুবারক ও ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক। [তাফসীরু যাদুল মাসীর ফী ইল্মিত তাফসীর ১ম জিঃ ২৫৯ পৃষ্ঠা]
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সাধারণ সময়ের ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
عن عائشة رضى الله عنها ان رجلا اتى النبى صلى الله عليه وسلم على برذون وعليه عمامة طرفها بين كتفيه فسألت النبى صلى الله عليه وسلم عنه فقال رأيته ذالك جبريل عليه السلام- (مسند احمد بن حنبل الجلد السادس ص ১৪৮-১৫২)
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন। একদা এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট ‘বারজুন’ নামক স্থানে আসল, যখন উনার মাথা মুবারকে পাগড়ী ছিল, যার শামলা উনার দু’কাঁধের মাঝখানে ঝুলছিল। (উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন) আমি এ বিষয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বললেন, আমি অনুরূপভাবে (পাগড়ী পড়তে) হযরত জিব্রাইল আলাইহিস্ সালাম উনাকে দেখেছি।” [মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল ৬ষ্ঠ জিঃ ১৪৮-১৫২ পৃষ্ঠা]
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
নামাযের সময়ের ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করতেন। অর্থাৎ নামাযের বাইরে ও নামাযে উভয় অবস্থাতেই তিনি পাগড়ী ব্যবহার করতেন, তন্মধ্যে ঘরে অবস্থান কালে তিন হাত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে সাত হাত এবং জুমুআ ও দুই ঈদের দিনে বার হাত পাগড়ী ব্যবহার করতেন। নিম্নে তার দলীল-আদিল্লা পেশ করা হল,
وكان عمامة النبى صلى الله عليه وسلم فى عامة الاحيان ثلاثة اذرع شرعية وفى الصلوة الخمس سبعة اذرع وفى الجمع والاعياد وحين الوفود اثنى عشر ذراعا- (اتوار المحمود الجلد الثانى ص
অর্থ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অধিকাংশ সময়ের (ঘরের ভিতরে) ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল তিন হাত দীর্ঘ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল সাত হাত। আর পবিত্র জুমুআ, ঈদের দিন এবং কোন দেশের প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাতের সময় ব্যবহার করতেন বার হাত লম্বা পাগড়ী। [আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪২ পৃষ্ঠা]
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
জিহাদ অবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বদাই পাগড়ী পরিধান করতেন। এমনকি জিহাদ অবস্থায়ও উনার মাথা মুবারকে পাগড়ী মুবারক থাকত। যেমন, মক্কা বিজয়ের দিন, তাবুক যুদ্ধে, খন্দক যুদ্ধে, সানিইয়াতুল হানযাল এবং অপরাপর যুদ্ধে উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল। নিম্নে এ সম্পর্কিত দলীলসমূহ উপস্থাপন করা হলো-
عن جابربن عبد الله الانصارى رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دخل مكة وقال قتيبة دخل يوم فتح مكة وعليه عمامة سوداء. (مسلم شريف ج ১ ص ৪৩৯- مسلم بشرح النووى ج ৫ ص ১৩৩- شرح الابى والسنوسى ج ৪ ص ৪৬৭)
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ আল-আনছারী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন। কুতাইবা বলেন, যখন তিনি পবিত্র মক্কা বিজয়ের দিন পবিত্র মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন, তখন উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” [মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৪৩৯ পৃষ্ঠা, মুসলিম বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩ পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৪র্থ জিঃ ৪৬৭ পৃষ্ঠা]
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
যে পদ্ধতিতে পাগড়ী মুবারক পরিধান করেছেন
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলের জন্যই উত্তম আদর্শ মুবারক নিয়ে দুনিয়ায় এসেছেন। তাই পাগড়ী বাঁধার ব্যাপারে ও উনার উত্তম আদর্শ বা পদ্ধতি বিদ্যমান ছিল। যেমন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন পাগড়ী পরিধান করতেন। তখন তার একটি প্রান্ত মাথায় পেঁচিয়ে তারই শেষ কিনারা মাথার পিছনে উপরে গুঁজে দিতেন। আর শামলা উভয় কাঁধের মাঝে ঝুলাতেন। কখনো কখনো দুটি শামলাও পিঠের উপর রাখতেন। নিচে এ বিষয়ে দলীলসমূহ পেশ করা হলো-
عن ابن سلام بن عبد الله بن سلام قال سألت ابن عمر كيف كان النبى صلى الله عليه وسلم يعتم؟ قال كان يدير العمامة على رأسه ويقورها من وؤائه ويرسل لها ذؤابة بين كتفبه<
অর্থ: হযরত ইবনে সালাম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিভাবে পাগড়ী মুবারক বাঁধতেন?” উত্তরে তিনি বলেছিলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পাগড়ীর একটি প্রান্ত মাথা মুবারকে পেঁচাতেন ও তারই শেষ প্রান্ত পিছনে উপরে গুঁজে দিতেন। আর পাগড়ীর শামলা উভয় কাঁধ মুবারক উনার মাঝখানে ঝুলাতেন।” [নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১৩ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১৩ পৃষ্ঠা]
ইমামুল ছানী মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
হযরত ইমাম হাসান ইবনে আলী আলাইহিস সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
حدثنا ديناربن عمرو قال رأيت على الحسن عمامة سوداء
অর্থ: “হযরত দীনার ইবনে আমর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইমামুল ছানী মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা দেখেছি।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা]
হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
عن ابى رزين قال خطبنا الحسين بن على يوم الجمعة وعليه عمامة سوداء>
অর্থ: “হযরত আবু রঝীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা ইমামুল ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র জুমুয়ার দিনে আমাদের উদ্দেশ্যে খুত্ববাহ্ মুবারক দিচ্ছিলেন এমতাবস্থায় যে, উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৭ পৃষ্ঠা]
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা দায়িমীভাবে ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করতেন
قال عبيد الله اخبرنا اشياخنا أنهم رأوا اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم يعتمون ويرخونها بين اكتافهم.
অর্থঃ “হযরত উবাইদুল্লাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাকে আমার শায়খ বা উস্তাদগণ বলেছেন যে, নিশ্চয়ই উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে যত জনেরই সাক্ষাত মুবারক লাভ করেছেন, উনাদের প্রত্যেককেই পাগড়ী পরিধান করতে দেখেছেন। আর উনারা পাগড়ীর শামলা উনাদের দু’কাঁধের মাঝামাঝি ঝুলিয়ে রাখতেন।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম জিঃ ২৩৯ পৃষ্ঠা]
আল খলীফাতুল্ উলা, আফজালুন্ নাস্ বা’দাল আম্বিয়া,
হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
عن مرثد بن عبد الله اليزنى عن حميدبن غسيلة الصنابحى قال رأيت ابا بكر يمسح على الخمار.
অর্থ: “হযরত মারসাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ আল্ ইয়ায্নী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত হুমাইদ ইবনে গুসাইলাহ্ আছ্ছনাবিহী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, আমি আমীরুল্ মু’মিনীন, খলীফাতুল্ মুসলিমীন, খলীফাতু রসূলিল্লাহ্ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে পাগড়ীর উপর মসেহ্ করতে দেখেছি।” [মুছান্নাফু ইবনে আবূ শাইবাহ্ ১ম জিঃ ২২ পৃষ্ঠা]
আল্ খলীফাতুস্ ছানিয়াহ্, লিসানুল্লাহ্,
হযরত ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
عن السائب بن يزيد قال رايت عمربن الخطاب يوم عيد معتما قدارخى عمامته من خلفه.
অর্থ: “হযরত সাইব ইবনে ইয়াযীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঈদের দিনে আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি যে, উনার পাগড়ী মুবারকের শামলা পিছনে (পিঠ মুবারকের উপর) প্রলম্বিত ছিল।” [শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা]
আল্ খলীফাতুছ্ ছালিছাহ্, জামিউল্ কুরআন,
হযরত উসমান যুন্ নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
عن سليمان بن ابى عبد الله قال ادركت المهاجرين الاولين يعتمون بعمائم كرابيس سود وبيض وحمر وخضر وصفر
অর্থ: “হযরত সুলাইমান ইবনে আবু আব্দুল্লাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার) প্রথম দিকের সকল মুহাজিরীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কালো, সাদা, গন্ধম, সবুজ ও ঘিয়া রংয়ের সূতী কাপড়ের ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করতে দেখেছি।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম জিঃ ২৪১ পৃষ্ঠা]
আল্ খলীফাতুর রাবিয়াহ্, আসাদুল্লাহ্,
হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
عن عبد الله بن بشر رضى الله عنه قال بعث رسول الله صلى الله عليه وسلم على بن ابى طالب رضى الله عنه يوم خيبر فعممه بعمامة سوداء ارسلوها من ورائه وعن منكبه اليسرى.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে বাশ্শার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খাইবার যুদ্ধের দিবস (খাইবারের উদ্দেশ্যে) ইমামুল আউওয়াল মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত আলী কাররমাল্লাহু ওয়াজজাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে পাঠানোর সময় উনাকে কালো পাগড়ী মুবারক বেঁধে দেন। যার এক প্রান্ত (শামলা) পিছনে (পিঠের উপর) আর অপর প্রান্ত (শামলা) সামনে বাম কাঁধে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। [উমদাতুল ক্বারী ২১ জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১২ পৃষ্ঠা]
খাদিমুন্ নবী, হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
عن مسلم بن زياد قال رأيت اربعة من اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم انس بن مالك وفضالة بن عبيد وابا المنيب وفروخ بن سيار او سياربن فروخ يرخون العمائم من خلفهم وثيابهم الى الكعبين.
অর্থ: “হযরত মুসলিম ইবনে যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চারজন ছাহাবী (১) হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, (২) হযরত ফুযাইল ইবনে উবাইদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, (৩) হযরত আবুল মুনীব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং (৪) হযরত ফুররুখ ইবনে সিয়ার অথবা হযরত সিয়ার ইবনে ফুররুখ রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনাদের সকলকেই এ অবস্থায় দেখেছি যে, উনারা উনাদের পাগড়ী মুবারকের শামলা পিছনে (পিঠের উপর) ঝুলিয়ে রাখতেন এবং উনাদের পোশাক (কাপড়)কে দু’পায়ের গিড়ার উপর পর্যন্ত ঝুলাতেন।” [শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা]
আশেকে সুন্নত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক
عن عبد الله بن دينار عن عبد الله بن عمر ان رجلا من الاعراب لقيه بطريق مكة فسلم عليه عبد الله وحمله على حمار كان يركبه واعطاه عمامة كانت على رأسه.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, একদা পবিত্র মক্কা শরীফ উনার এক রাস্তায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার সঙ্গে এক বেদুঈন ব্যক্তির সাক্ষাত হল। হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে সালাম তিনি দিলেন এবং তিনি যে গাধার পিঠে আরোহন করেছিলেন, তাকেও সেই গাধায় আরোহন করে নিলেন। অতঃপর তিনি উনার মাথার পাগড়ী উনাকে দান করলেন।” [মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ ৩১৪ পৃষ্ঠা, মুসলিম বি শরহিন নববী ৮ম জিঃ ১০৯ পৃষ্ঠা, শরহুল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী আলা মুসলিম ৮ম জিঃ ৪৯৬ পৃষ্ঠা, ফতহুল মুলহিম ৫ম জিঃ, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ২ম জিঃ ৯১ পৃষ্ঠা]
হযরত যায়িদ বিন্ সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক
عن ثابت ابن عبيد قال رأيت زيد بن ثابت وعليه ازار ورداء وعمامة.
অর্থ: “হযরত সাবিক ইবনে উবাইদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত যায়িদ বিন সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে দেখেছি যে, উনার (পড়নে) লুঙ্গি, (গায়ে) চাদর ও (মাথায়) পাগড়ী ছিল।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৪১ পৃষ্ঠা]
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের আদব ও সুন্নত তরীক্বা
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন প্রত্যেকের জন্য প্রত্যেক আমলের ব্যাপারে আদর্শ স্বরূপ। তাই পাগড়ী পরিধানের ব্যাপারেও উনারই তরীক্বা অনুসরণ-অনুকরণ করে সে অনুযায়ী পাগড়ী বাঁধতে হবে। নিম্নে পাগড়ী পরিধানের সুন্নত তরীক্বা এবং সে সম্পর্কিত দলীল-আদিল্লাহ বর্ণিত হলো-
প্রতিটি কাজ যেরূপ ‘তাসমিয়া’ পাঠ করে করা সুন্নত তদ্রুপ ইমামাহ বা পাগড়ী বাঁধার সময়ও ‘তাসমিয়া’ পাঠ করা সুন্নত। যেমন, এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে,
بسم الله الرحمن الرحيم.
• “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” বলে পাগড়ী পরা সুন্নত। [সিফরুস সায়াদাত, যুরকানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২০৮ পৃষ্ঠা]
• পাগড়ী সূতী কাপড়ের হওয়া উত্তম (সুন্নত)। [শামাইলুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]
• ওজুর সহিত ইমামাহ বা পাগড়ী বাঁধা উত্তম (সুন্নত)। [হুজ্জাতুত তাম্মাহ ফী লুবসিল ইমামাহ ৫৬ পৃষ্ঠা]
• ক্বিবলামুখী হয়ে পাগড়ী বাঁধা উত্তম (সুন্নত)। [হুজ্জাতুত তাম্মাহ ফী লুবসিল ইমামাহ ৫৬ পৃষ্ঠা]
• পাগড়ী ডান দিক থেকে বাঁধা শুরু করা সুন্নত। কেননা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রত্যেক কাজ ডান দিক থেকে শুরু করা পছন্দ করতেন। [বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সারী]
ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করে দু’য়া পাঠ করা পবিত্র সুন্নত
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নতুন জামা ও পাগড়ী পরিধান করে দু’য়া পাঠ করতেন। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে, হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন নতুন কাপড় পরিধান করতেন। তখন তার জামা অথবা পাগড়ী ইত্যাদি উল্লেখ করে নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতেন:
اللهم لك الحمد انت كسوتنيه اسألك من خيره وخير ما صنع له واعوذ بك من شره وشر ما صنع له.
অর্থ: “আয় মহান আল্লাহ্ পাক! সমস্ত প্রশংসা আপনারই, আপনিই আমাকে এই কাপড় পরিধান করিয়েছেন। আমি আপনার কাছে এর কল্যাণ এবং ওই সমস্ত কল্যাণ কামনা করছি, যে উদ্দেশ্যে একে তৈরি করা হয়েছে। অনুরূপভাবে এর অকল্যাণ এবং ওই সমস্ত অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যে উদ্দেশ্যে তা তৈরি করা হয়েছে।”
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামিন এবং উনার প্রিয়তম রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালিন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যেন আমাদেরকে সমস্ত সুন্নতের সূক্ষ্ম অনুসরণ করার তৌফিক দান করেন। (আমীন)