কিতাবঃ নবীগণ (আলায়হিমুস্ সালাম) স্বশরীরে জীবিত
মূল : ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূত্বী
[রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি]
বঙ্গানুবাদ : অধ্যাপক মাওলানা সৈয়দ
মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল-আযহারী
সম্পাদনা : মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান
Text Ready by : মাসুম বিল্লাহ সানি
_______________________________
পরিচিতি
_______
নবীগণ [আলায়হিমুস্ সালাম] স্বশরীরে জীবিত
اِنْباَهُ الْاذَْكِیاَءِ فىِْ حَیاَةِ الْانَْبِیآَءِ
[علَیَھْمِ الس َُُّلامَُ]
মূল : ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূত্বী
[রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি]
বঙ্গানুবাদ : অধ্যাপক মাওলানা সৈয়দ
মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল-আযহারী
সম্পাদনা : মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান মহাপরিচালক, আনজুমান রিসার্চ সেন্টার
প্রকাশনায় : আন্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট
[প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ]
৩২১, দিদার মার্কেট (৩য় তলা দেওয়া, বাজার, চট্টগ্রাম-৪০০০, বাংলাদেশ। ফোন : ০৩১-২৮৫৫৯৭৬,
প্রকাশকাল : ০১ যিলহজ্ব, ১৪৩৬ হিজরী
০১ আশ্বিন, ১৪২২ বাংলা
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বস্বত্ত্ব প্রকাশকের : হাদিয়া: ৪০/- (চল্লিশ) টাকা
মুখবন্ধ
______
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লী ওয়া নুসাল্লিমু আলা হাবীবিল করীম
ওয়া ‘আলা-আ-লিহী ওয়া সাহ্বিহী আজমা‘ঈন
নবীকুল সরদার রসূলগণের ইমাম আমাদের আক্বা ও মাওলা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং অন্যান্য সকল নবী ও রসূলগণ আলায়হিমুস্ সালাম-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- তাঁরা ওফাত বরণের পরও সশরীরে জীবিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, নবীগণের শরীরকে গ্রাস করা যমীনের উপর আল্লাহ্ তা‘আলা হারাম করে দিয়েছেন। তিনি আরো এরশাদ করেছেন, আমার উপর দুরূদ ও সালাম প্রেরণকারীদের দুরূদ ও সালাম আমি শুনতে পাই। হাদীস শরীফ দ্বারা একথাও প্রমাণিত যে, পূর্ণভক্তি ও ভালবাসা সহকারে দুরূদ-সালাম প্রেরণকারীদের দুরূদ ও সালাম তিনি নিজে শুনেন ও গ্রহণ করেন, আর অন্যান্যদের দুরূদ ও সালাম তাঁর নিকট ফিরিশ্তাগণ পৌছিয়ে দেন। তখন তিনি ইচ্ছা করলে গ্রহণ করেন, নতুবা তা তাঁর পবিত্র দরবারে গ্রহণযোগ্য হয় না। এ দুরূদ ও সালাম পাঠকগণ বিভিন্নভাবে এর বদৌলতে উপকৃত হন। একটি বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, জুমার দিনে কিংবা জুমার রাতে নবী করীমের উপর একশ’ বার দুরূদ শরীফ পাঠ করে একশটা চাহিদা পূরণ হয়, সত্তরটা আখিরাতের এবং ত্রিশটা দুনিয়ার আর একজন ফেরেশতা নিয়োজিত হন, যিনি হুযূর-ই আক্রামের রওযা শরীফে তা এমনভাবে পৌঁছিয়ে থাকেন, যেভাবে পৃথিবীবাসীদের নিকট তাদের প্রতি প্রেরিত হাদিয়া পৌঁছানো হয়, ইত্যাদি। আর অন্যান্য নবীগণ আলায়হিমুস্ সালাম-এর হায়াতও বিশুদ্ধ হাদীসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয়। যেমন- হুযূর-ই আক্রাম মি’রাজ শরীফে যাবার সময় হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে প্রথমে তাঁর কবর শরীফে দাঁড়িয়ে নামায পড়তে দেখেছেন। তারপর তিনি বায়তুল মুক্বাদ্দাসে সমস্ত নবীর সাথে হুযূর-
ই আক্রামের ইমামতিতে নামায পড়েছেন। তারপর প্রতিটি আসমানে কতিপয় নবী আলায়হিমুস্ সালাম হুযূরই আক্রামকে সম্বর্ধনা জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন। ইত্যাদি। একটি হাদীস শরীফে আছে, হুযূর-ই আক্রাম এরশাদ করেন, যখন কেউ তাঁর উপর দুরূদ-সালাম প্রেরণ করে, তখন তাঁর রূহ মুবারককে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁকে ফিরিয়ে দেন, যেন তিনি ওই দুরূদ পাঠকের সালাত ও সালামের জবাব দেন।
উল্লেখ্য, প্রথমোক্ত সব বিষয়ে বর্ণিত অনেক বিশুদ্ধ হাদীস তো বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম সুয়ূত্বী তাঁর ‘ইম্বাহুল আযকিয়া ফী হায়াতিল আম্বিয়া’ [নবীগণ (আলায়হিমুস্ সালাম) সশরীরে জীবিত]-তে লিপিবদ্ধ করেছেন। আরো সুখের বিষয় যে, শেষোক্ত হাদীস, যাতে দুরূদ ও সালাম প্রেরণকারীদের দুরূদ ও সালামের জবাব দানের জন্য হুযূর আক্রামের রূহ তাঁকে ফিরিয়ে দেয়ার কথা এরশাদ হয়েছে, এ মহান বাণীর সর্বমোট ষোলটি হৃদয়গ্রাহী সপ্রমাণ ব্যাখ্যা দু’টি বিশেষ পরিচ্ছেদে দিয়েছেন; যেগুলো প্রতিটি উম্মতের ঈমানকে আরো সজীব করে দেয়-নিঃসন্দেহে।
তাই, ইমাম সুয়ূতীর এ মহা মূল্যবান কিতাবের বঙ্গানুবাদ করে প্রকাশ করা যুগের এক বিশেষ চাহিদা ছিলো। এ চাহিদা পূরণের জন্য এগিয়ে এসেছেন অধ্যাপক মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল-আযহারী এবং আনজুমান রিসার্চ সেন্টার ও আন্জুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ। বলাবাহুল্য, অধ্যাপক মাওলানা আযহারী সাহেব কিতাবটার বঙ্গানুবাদ করেছেন আর রিসার্চ সেন্টার সেটার সম্পাদনা ও কম্পোজ ইত্যাদির ব্যবস্থা করেছে। সর্বোপরি, আনজুমান প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ সেটা সুন্দর অবয়বে প্রকাশ করে অতি সুলভ মূল্যে সম্মানিত পাঠক সমাজের সমীপে উপস্থাপন করছে। কিতাবখানা পাঠক সমাজে বহুলভাবে সংগৃহীত ও সমাদৃত হোক- এটাই একান্তভাবে কামনা করছি। ইতি-
সালামান্তে-
(মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান) মহাপরিচালক, আন্জুমান রিসার্চ সেন্টার,
আলমগীর খানক্বাহ শরীফ, ষোলশহর, চট্টগ্রাম
ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূত্বী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
________________________
ইমাম হাফেয সুয়ূত্বী রাহিমাহুল্লাহর পূর্ণনাম-‘জালাল উদ্দীন আবদুর রহমান ইবনুল কামাল, আবূ বকর ইবনে মুহাম্মদ ইবনে সা-বিক্বুদ্দীন ইবনুল ফখর ওসমান ইবনে নাযিরুদ্দীন মুহাম্মদ ইবনে শায়খ হুমাম উদ্দীন। তাঁর জন্ম ১ রজব, ৮৪৯হিজরী রবিবার রাতে হয়েছিলো। ‘খুদ্বায়রী’ ও ‘আস্ সুয়ূত্বী, ‘সুয়ূত্বী’ সংক্ষেপে এ দু’টি সম্পর্কজনিত শব্দও তাঁর নামের সাথে সংযোজন করা হয়। তাঁর বংশীয় পরম্পরা এক অনারবীয় খান্দান পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তিনি তাঁরই লিখিত কিতাব ‘হুসনুল মুহা-দ্বারাহ্ ফী- আখবা-রি মিসর ওয়াল ক্বাহেরাহ্’য় আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘‘আমাকে এক নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি বলেছেন, আমার পিতা রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বর্ণনা করতেন যে, আমাদের পূর্বপুরুষ (বংশের মূল পুরুষ) একজন ‘আজমী’ (অনারবীয়) ছিলেন এবং পূর্বাঞ্চলীয় লোক ছিলেন। ইমাম সুয়ূত্বীর খান্দান মিশরে আসার পূর্বে বাগদাদের মহল্লা ‘খুদ্বায়রিয়্যাহ্’য় বসবাস করতেন। এ মহল্লা বাগদাদের পূর্ব প্রান্তে ইমাম-ই আ’যম রাহিমাহুল্লাহু তা‘আলার মাযার শরীফের নিকটে অবস্থিত। ‘খুদ্বায়রী’ সম্পর্কবাচক উপাধির কারণ এটাই। ইমাম সুয়ূতীর জন্মের কয়েক পুরুষ পূর্বে এ খান্দান ইরাক থেকে মিশর এসেছেন এবং মিশরের ‘আস্য়ূত্ব’ শহরে বসবাস
করতেন। সেটার নামও ‘খুদ্বায়রিয়্যাহ্’ রেখে দেন।
ইমাম সুয়ূত্বীর পিতা আস্য়ূত্ব থেকে কায়রো চলে যান। সেখানে তিনি ‘ইবনে তূ¡লূন জামে মসজিদ’-এ খতীব হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। সাথে সাথে শায়খূনী জামে মসজিদ সংলগ্ন মাদরাসায় ‘ফিক্বহ’র ওস্তাদ হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ৮৫৫ হিজরীতে তাঁর ইনতিক্বাল হয়। তখন ইমাম সুয়ূত্বীর বয়স পাঁচ কিংবা ছয় বছর ছিলো। তখন তাঁর অভিভাবকত্বের দায়িত্ব তাঁর পিতার এক সূফী
বন্ধু নিয়েছিলেন। ইমাম সুয়ূত্বী ৮ বছর বয়সে ক্বোরআন করীম হেফয করে নিয়েছিলেন। তারপর তিনি নাহ্ভ ও ফিক্বহ্র ‘মতন’ মুখস্থ করতে মশগুল হন। ইমাম সুয়ূত্বী তাঁর যুগের বহু ওস্তাদ ও মাশাইখ থেকে জ্ঞানার্জন করেন। তাঁদের অধিকাংশের উল্লেখ (আলোচনা) তিনি তাঁর ‘হুসনুল মুহা-দ্বারাহ্’য় করেছেন।
ইমাম সুয়ূত্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁর যুগে প্রচলিত সমস্ত আরবী ও ইসলামী বিষয়াদির জ্ঞান অর্জন করেন এবং সেগুলোতে পূর্ণ দক্ষতা লাভ করেন। ওইসব বিষয়ে তাঁর লেখনী (গ্রন্থ-পুস্তক)ও রয়েছে। তাঁর প্রণীত গ্রন্থ পুস্তকাদির আধিক্য ও বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর লেখনী অনুসারে তাঁরপর তাঁর মত আর কাউকে দেখা যায়না; এমনকি পূর্ববর্তীদের মধ্যেও হয়তো তাঁর মতো দু/একজন পাওয়া যায় কিনা সংশয় রয়েছে। তিনি হাদীস ও হাদীস শাস্ত্রের বিভিন্ন বিষয়, তাফসীর ও আল্লাহর কিতাব (ক্বোরআন মজীদ) সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়, ফিক্বহ্ ও এর উসূল, কালাম, জদল, ইতিহাস, অনুবাদ, তাসাওফ, সাহিত্য, অলংকার (মা‘আনী, বয়ান ও বদী’) নাহভ, সরফ, অভিধান ও মানত্বিক বিষয়ে শত-সহস্র কিতাব প্রণয়ন
-করেন। তিনি তাঁর ‘হুস্নুল মুহাদ্বারাহ্’য় লিখেছেন وَبَلغَتْ مُؤَلَّ فَاتىْ الْانَ ثَلاثََمِائَةِ كِتَابٍ سِوى مَا غَسَلْتھُ اوَْ رَجَعْتُ عَنْھعنھُ
অর্থাৎ এ পর্যন্ত আমার লিখিত কিতাবগুলোর সংখ্যা তিনশ’ হয়ে গেছে।
এগুলোর মধ্যে ওইসব কিতাব নেই, যেগুলো আমি বিনষ্ট করে ফেলেছি কিংবা
যেগুলো আমি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। কিতাবগুলোর এ সংখ্যা ‘হুস্নুল মুহা-দ্বারাহ্’ লিখার সময়কার ছিলো। আর সম্ভবত এত সংখ্যক কিতাব তিনি পরবর্তীতেও লিখেছেন। ‘মুস্তাশ্রিক্ব ফিলোগুল’ তাঁর লিখিত সমস্ত কিতাব গণনা করেছেন। তাঁর পরিসংখ্যান
অনুসারে ইমাম সুয়ূত্বীর লিখিত কিতাবগুলোর সংখ্যা ৫৬১।
তাঁর কিতাবগুলোর মধ্যে এমন বহু কিতাব রয়েছে, যেগুলো কয়েক খণ্ডে বিন্যস্থ। তন্মধ্যে কিছু কিতাব এমনও রয়েছে, যেগুলো ‘দাওয়া-ইরে মা‘আ-রিফ’ (জ্ঞানবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা সম্ভার)-এর মর্যাদা রাখে। পুস্তক প্রণয়ন ও রচনার ময়দানে আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁকে যেই সুবর্ণ সামর্থ্য দান করেছেন, তা খুব কম সংখ্যক লোকই পেয়েছেন। আরবী ও ইসলামী জ্ঞানের এমন কোন রাজপথ নেই, যাতে তাঁর পদচারণা পাওয়া যায় না। তাঁকে ‘হাত্বিবুল লায়ল’ (যাচাই বিহীন লোক) বলে যাঁরা সমালোচনা করেন তারাও জ্ঞান, গবেষণা ও বিশ্লেষণের উপত্যকায় তাঁর সাহায্য ছাড়া এক কদমও চলতে পারে না। বাস্তবাবস্থা হচ্ছে- বেশীর ভাগ পূর্ববর্তী ইমামগণের মতো ইমাম সুয়ূতীরও দু’টি যোগ্যতাপূর্ণ অবস্থান রয়েছে- একটি হচ্ছে জ্ঞান-ভাণ্ডার ও লেখকের আর অপরটি হচ্ছে- গভীর গবেষক ও বিশ্লষক এবং সুক্ষ্মদর্শী (মুহাক্বক্বিক্ব ও মুদাক্বক্বিক্ব)-এর। ইমাম সুয়ূতীর জন্য সাধারণভাবে ‘হাত্বিবুল লায়ল’ (নির্বিচারে উদ্ধৃতকারী লেখক) উপাধি ব্যবহারকারীগণ তাঁর এ দু’টি মর্যাদাপূর্ণ স্তরের মধ্যে পার্থক্য করতে অক্ষম এবং র্প্বূবর্তী ইমামগণের উন্নত রুচি ও পদ্ধতি সম্পর্কেও কম অবগত।
ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূত্বী দীর্ঘদিন যাবৎ প্রসিদ্ধ ‘খানক্বাহ্-ই বীবার্সিয়া’র ‘ওয়াক্বফ এস্টেট’-এর মহাব্যবস্থাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তদানীন্তনকালে এটা মিশরের সর্বাপেক্ষা বড় খান্ক্বাহ্ ছিলো; কিন্তু যখন সুলতান মুহাম্মদ ক্বাতবাঈ মিশরের শাসন-ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন ভণ্ড সূফীদের একটি দল সুলতানের নিকট ইমাম সুয়ূত্বীর বিপক্ষে কিছু অমূলক অভিযোগ করেছিলো। এতদ্ভিত্তিতে সুলতান তাঁকে উক্ত পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন। এ অপসারণের পর থেকে তিনি দুনিয়া ও এর সমস্ত সম্পর্ক থেকে নিজে নিজে অবসর গ্রহণ করেন এবং লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। এমন একাকীত্বের মধ্যে ইমাম সুয়ূতী তাঁর বেশীরভাগ কিতাব রচনা করেন। তাঁর এ একাক্বীত্ব ও জ্ঞানগত ই’তিকাফ তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অব্যাহত ছিলো। এ বিশ বছর ব্যাপী সময়সীমায় তিনি লোকজনের সাথে মেলামেশা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এমনকি তাঁর ঘরের নীল নদের দিকে খোলা হয় এমন জানালাগুলোও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আর নিজের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে ইসলামী ও আরবী জ্ঞানচর্চা, এগুলো নিয়ে চিন্তা-গবেষণা এবং গ্রন্থ-পুস্তক রচনা
ও প্রণয়নের মধ্যে অতিবাহিত করেন। ৯১১ হিজরীতে এ যুগশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী ও গুণী ইমামের ইনতিক্বাল হয়েছে। আল্লাহ্ তাঁর উপর রহমতের বারি বর্ষণ করুন।
আ-মী-ন।
__________________________
নবীগণ [আলায়হিমুস্ সালাম] স্বশরীরে জীবিত
انِْباَهُ الْاذَْكِیاَءِ فىِْ حَیاَةِ الْانَْبیِآَءِ
[علَیَھْمِ الس َُُّلامَُ]
__________________________
[বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম]
بسِمْ ِ ﷲ اِلر َّحمْنِِ الر َّحِیْمِ
_____
لِلْإِمَامِ جَلالَُ ِّ الدینِْ السُّ یوُْطِ ِّ ى رَحِمَھُ ﷲُ تعََالى
الحمد وسلام على عباده الذین اصطفى . وقع السؤال : قد اشتھر أن النبي صلى ﷲ علیھ وسلم حي في قبره وورد أنھ صلى ﷲ علیھ وسلم قال : عنَ أْبيَِ ھُریرَْة رَضي ﷲ عنھ أنَ َّ رسَُولَ ﷲ صَلى َّ َّ ﷲ عَلَیْھِ ََََََََََِّ َّ َُوَسَلمَ قَالَ : ما مَن أحْد یَُسٍلم عُلي َ َّ إلاَِّ ِّ رد ﷲ َّ عُليََ َّ رُِِوحيِ َّ حتَى ََأرََّ َّ ُد ََََََََعَلَیْھِ الس َّلَامَ. (١)
فظاھره مفارقة الروح [ لھ ] في بعض الأوقات فكیف الجمع ؟ وھو سؤال حسن یحتاج إلى النظر والتأمل .
সকল প্রশংসা আল্লাহ্ তা‘আলার নিমিত্তে। সালাম ও তাঁর ওই সমস্ত বান্দার উপর, যাদেরকে তিনি চয়ন করে নিয়েছেন। সকলের নিকট একথা প্রসিদ্ধ যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম নিজ রওযা শরীফে জীবিত; কিন্তু অন্য একটি বর্ণনায় দেখা যায-
হাদিস ১ :
প্রিয়নবী (ﷺ) এরশাদ করেছেন: “যখন কোন ব্যক্তি আমার প্রতি সালাম প্রেরণ করে তখন আল্লাহ তা‘আলা আমার প্রতি আমার রূহকে ফিরিয়ে দেন যাতে আমি তার সালামের উত্তর দিই।”
১- رواه أحمد (١٦/٤٧٧) ط الرسالة ، وأبو داود (٢٠٤١) وصححھ النووي في ” الأذكار “
.١٥٤)
এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ দ্বারা বুঝা যায় যে, প্রিয়নবীর রূহ মুবারক তাঁর দেহ মুবারক থেকে কখনও কখনও পৃথক ও বিচ্ছিন্ন হয়। সুতরাং এ উভয় হাদিসের মধ্যকার সমন্বয় সাধন কিভাবে হবে? ইমাম সুয়ূতী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি এ প্রশ্নের উত্তরে বলছেন,
‘‘এটি খুব সুন্দর একটি প্রশ্ন, যা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করা জরুরী।
فأقول : حیاة النبي صلى ﷲ علیھ وسلم في قبره ھو وسائر الأنبیاء معلومة عندنا علما قطعیا لما قام عندنا من الأدلة في ذلك وتواترت [بھ] الأخبار، وقد ألف البیھقي جزءا في حیاة الأنبیاء في قبورھم ، فمن الأخبار الدالة على ذلك:
সুতরাং আমি বলছি প্রিয়নবী (ﷺ) এবং অন্যান্য নবীরাসূলগণের নিজ নিজ রওযা শরীফে জীবিত থাকার বিষয়টি আমাদের সকলের নিকট সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত ও সর্বজন স্বীকৃত। কেননা এ বিষয়ে আমাদের নিকট অনেক দলীল ও প্রমাণ বিদ্যমান এবং এ ক্ষেত্রে প্রমাণিত দলীলগুলো ‘মুতাওয়াতির’ পর্যায়ের। অর্থাৎ যেগুলো এত অধিক সংখ্যক রাভী (বর্ণনাকারী) বর্ণনা করেছেন, যাতে কোন ধরনের সন্দেহের অবকাশ থাকে না।
আর ইমাম বাইহাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হিও নবীগণ আলায়হিস্ সালাম নিজেদের রওযা শরীফে জীবিত থাকার প্রমাণ স্বরূপ একটি স্বতন্ত্র
পুস্তিকা রচনা করেছেন। পুস্তিকাটির নাম হল:
حَیاَة الْانَْبِیآءِ َُعَلیْھِمُ َّ السلامَُفِىِْ قبُُوُْرِھِمْ
(হায়াতুল আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালামু ফী ক্বূবূরিহিম।)
এ বিষয়ের প্রমাণ স্বরূপ বর্ণিত হাদিসগুলোর মধ্যে থেকে নিম্নে কয়েকটি উল্লেখ করা গেলঃ
__________________________
হাদিস ২ :
ما أخرجھ مسلم عن أنس عن النبي صلى ﷲ علیھ وسلم قال : أَتَیْتُ –
وفي روایة : مررت – عَلىَ مُوسَى لیَْلَةً أسُرْيِ بيِ عنِدْعندَ الْكَثِیبِ ََالْأَحْمَرِ وَھُوَ قَاَئمٌِ ی ِّ ُصَلي فيِ قَبْرِهِ. (٢)
ইমাম মুসলিম তাঁর সহীহতে সাহাবী হযরত আনাস ইবনে মালেক থেকে বর্ণনা করেন,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “যে রাত্রিতে আমাকে ইসরা ও মি’রাজ করানো হলো, ওই রাত্রিতে আমি এলাম, অন্য এক বর্ণনায় আছে আমি, হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম-এর কবর শরীফের পাশ দিয়ে গেলাম। তখন আমি দেখতে পেলাম যে, হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম লাল বর্ণের টিলার পাশে স্বীয় কবর শরীফে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছেন।”
২- رواه مسلم (٢٣٧٥) .
__________________________
হাদিস ৩ :
وأخرج أبو نعیم في الحلیة عن ابن عباس . َّ انَ َّ النبىَّ َّ صَلى ﷲُ عَلیَْھِ َّ وَسَلمَ مَرَّ بقِبَْرِ مُوْسى عَلیَْھِ السَّ لامَُ وَھوَُ قآَئمٌ یُصَُلىِّْ فیِْھِ (٣)
আবূ নু‘আয়ম ইস্পাহানী তাঁর রচিত ‘হুলিয়াতুল আওলিয়া’ নামক প্রসিদ্ধ হাদিসগ্রন্থে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা
থেকে বর্ণনা করেন:
“নবী করীম (ﷺ) গমন করেছেন হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম-এর কবর শরীফের পাশ দিয়ে। আর তিনি নিজ কবর শরীফে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছিলেন।”
৩- أخرجھ وأبو نعیم في الحلیة ٦/٢٥٣، و /٣٣٣ وقال عقبة : غریب من حدیث عمرو عن ابن جریج ، تفرد بھ مروان ، أھـ. وللحدیث متابعات فقد رواه مسلم في صحیحھ : كتاب الفضائل : باب من فضائل موسى ، والنسائي في سننھ : كتاب قیام اللیل وتطوع النھار: باب ذكر صلاة نبي ﷲ موسى علیھ السلام، والبیھقي في جزء حیاة الأنبیاء بعد وفاتھم ص/٣١ كلھم عن أنس بن مالك ،ورواه مسلم في صحیحھ : كتاب الإیمان باب ذكر المسیح ابن مریم والمسیح الدجال، والبیھقي في جزء حیاة الأنبیاء بعد وفاتھم ص/٣٢، وفي كتاب دلائل النبوة ٢/٣٥٨- ٣٥٩ كلاھما عن أبي ھریرة أنس بن مالك رضي ﷲ عنھ ، عن النبي صلى ﷲ علیھ وسلم قال : (أتَیَْتُ – وفي روایة :
مررت -على مَُوَسى لیَْلة أَسَْريُ بيَ عِندعندَََََْ الكثیْبَِ الِأحَْْمرَ وھَُو قاَئَمِ ٌ یَََََََ ِّ ُصلَي فيِ قبَِِِِِِِِِْرِهِ ) رواه مسلم :
.٢٣٧٥
__________
হাদিস ৪ :
وأخرج أبو یعلى في مسنده، والبیھقي في كتاب حیاة الأنبیاء عن أنس أن النبي صلى ﷲ علیھ وسلم قال: الْأَنَْبِْیآَءُ احَْیَآَءٌ فِىِْ قُبُُوْرِھِمُّْ یُصَلوْنَ (٤)
আবু ইয়ালা তার মুসনাদ’-এ এবং ইমাম বায়হাক্কী রাহমাতুল্লাহি তাআলা আলায়হি তার “হায়াতুল আম্বিয়া” নামক কিতাবে হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, প্রিয় নবী (ﷺ) এরশাদ করেন,
“নবীগণ আলায়হিমুস সালাম নিজেদের কবর শরীফে জীবিত এবং তারা সেখানে
নামায আদায় করেন ।”
৪- أخرجھ أبو یعلى في مسنده ٦/١٤٧، والبیھقي في ” حیاة الانبیاء ” ص/٣ من طریق أبي یعلى والبزار في مسنده انظر كشف الاستار ٣/١٠٠ وأورده الحافظ الھیثمي في مجمع الزوائد ٨/٢١١ وقال : ” رواه أبو یعلى والبزار ورجال أبي یعلى ثقات ” ، وذكره الحافظ العسقلاني في المطالبالعالیة برقم /٣٤٥٢ وعزاه لأبي یعلى والبزار.
___________
হাদিস ৫ :
وأخرج أبو نعیم في الحلیة قَالَی : وس فیُوسُفُ بنْبنُ عَطِی َّةَ ، قَالَ : سَمِعْتُ ثَابِتًا ،یقَوُلیقولُ لحُِمَیْدٍ َّ الطوِیلِ ” : ھَلْ بَلَغَكَ -یَا أبَاَ عُبَیْدٍ -أنََّ أَحَدًا ی ِّ ُصَلي فيِ قَبْرِهِ إلِا الأنَْبِیَِاءَ؟ ” قَالَ : لا. (٥)
ইমাম আবু নু’আইম তার হুলিয়াতুল আউলিয়াতে ইউসুফ ইবনে আতিয়্যাহ থেকে বর্ণনা করেন,
↓
তিনি বলেন, “আমি হযরত সাবেত আল-বুনানী
রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুকে
↓
হুমাইদ আতত্বাভীলকে জিজ্ঞেস করতে শুনেছি: আপনার নিকট কি এমন কোন তথ্য আছে যা প্রমাণ করে যে,
নবীগণ আলায়হিমুস সালাম ব্যতীত অন্য কেউ নিজ কবরে নামায পড়েন?”
তিনি বললেন, “না”।
৫- حلیة الأولیاء لأبي نعیم ثابَتِ ٌ البُناَنيُِّ . رقم الحدیث: ٢٦٤١
_________
হাদিস ৬ :
وأخرج أبو داود والبیھقي عَنْ أَوَْسِ بْنِ أوَْسٍ ، قَالَ : قاَل رسَولرسُولُ ََِﷲِ صلى ﷲ علیھ وسلمإن: َّ من أْفضَْل أیِ َّامَكمِ یْومَْ اَلجْ مَََالجُمُعةُعةَ ، فیھِ ُُِِِِِِخلُقَِ آدَمُ ،
وفیھَ النِفخةَّ ، وفیھَ الصِِ َّعقةُُْ ، ْْفأكثَرَُْوِا عليََ َّ منََََِ الص َّلاةَ فیِھِِِِِِِِِ ، ََََفإَنِ َّ صَلاتكمََ مْعرَُْوضةَ َُعٌليََ َّ ، ، فقَاَل َََََرجَُلٌ : یا رسَُول ﷲ ، كیَفْ َََََِتعُرْضَتعرضُ
صَلاَتَُنَا عَلَیْكَ وَقَدْ أَرََمْتَ ؟ – یَعْنِى بَلیِتَ – فَقَالَ : إنِ َّ ﷲ َ حرَ َّمَ عَلَىالأرَضِْ أنَ تأَكْلُ ْْْأجَسْاَدأجسادَ َََالأنَْبیَِاءِ. (٦)
ইমাম আবূ দাঊদ এবং ইমাম বাইহাক্বী রাহ্মাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি হযরত আওস ইবনে আওস আস্ সাক্বাফী থেকে বর্ণনা করেন:
“প্রিয় নবী (ﷺ) এরশাদ করেন, নিশ্চয়
তোমাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো- জুমার দিন। সুতরাং এদিনে তোমরা আমার প্রতি অধিক পরিমাণে দুরূদ শরীফ প্রেরণ কর। কেননা, তোমাদের দুরূদ শরীফগুলো আমার নিকট পেশ করা হয়। সাহাবীগণ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুম বললেন, ‘‘এয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার নিকট আমাদের সালাত কিভাবে পেশ করা সম্ভব? কেননা আপনি তো ইন্তিকাল করবেন এবং আপনার দেহ মাটি খেয়ে ফেলবে?’’ তখন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাদের এ ভুল ধারণাকে সংশোধন করে দিয়ে বললেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা হারাম করে দিয়েছেন মাটির উপর নবীগণের দেহ মুবারককে গ্রাস করা।’’
৬- أخرجھ أحمد ٤/٨(١٦٢٦٢. َّ والدارِمِي (١٥٧٢) و॥”أبو داود॥” ١٠٤٧ و॥”ابن ماجة॥” ١٠٨٥
وأخرجھ ابن ماجة (١٦٣٧مرقاة المفاتیح شرح مشكاة المصابیح كتاب الصلاة باب الجمعة.১৩৬১ وقال: رواه أبو داود ، والنسائي ، وابن ماجھ ،والدارمي ،حیاة الأنبیاء في قبورھم للبیھقي, رقم الحدیث-١٠ والبیھقي في ” الدعوات الكبیر . ”
_______
হাদিস ৭ :
وأخرج البیھقي في شعب الإیمان ، والأصبھاني في الترغیب
عَنِ الأعْمَشِ ,عَنْ أبَِي صَالِحٍ ,عَنْ أبَيِ ھُرَیْرَةَ ,رَضِيَ َّ ﷲُ عَنْھْعنھُ -أنَ َّ النبَّ يِ ِّ صَلى َّ ﷲ عَلَیْھِ َّ َّ َُوَسَلمَ ، قَالَ ” : منَ صْلىََّ عليََ َّ عنِدْعندَ قبَرِْي سَمعِْتھُسمعتھُ، ومَنَ َّ صلىَ عليََ َّ ناَئیِاً منِھْمنھُ ًْْأبُْلغِْتھُأبلغتھُ ” (٧)
ইমাম বায়হাক্বী ‘শু‘আবুল ঈমান’ গ্রন্থে এবং ইস্পাহানী “আত্ তারগীব” নামক কিতাবে হযরত আবূ হোরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
“হযরত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমার কবরের নিকট উপস্থিত থেকে আমার উপর সালাত পাঠ করে, আমি তার সালাত শুনতে পাই (ও জবাব দিই)। আর যে অনুপস্থিত থেকে আমার প্রতি সালাত (সালাম) প্রেরণ করে তা আমার নিকট পৌঁছানো হয়।”
৭- حیاة الأنبیاء في قبورھم للبیھقي من صلى علي عند قبري سمعتھ ، ومن صلى علي نائیا منھ
… رقم الحدیث: ١٨. أخرجھ البیھقي في شعب الإیمان (٢/ ٢١٨/ ١٥٨٣) والخطیب البغدادي في تاریخھ (٣/ ٢٩١ – ٢٩٢) وابن الجوزي في الموضوعات (٢/ ٣٨/ ٥٦٢) والعقیلي في الضعفاء (٤/ ١٣٦ – ١٣٧/ ١٦٩٦) وأبو الشیخ في الصلاة على النبي صلى ﷲ علیھ وسلم كما في جلاء الأفھام ص ١٠٩. وھو حدیث ضعیف جدا. قال الحافظ ابن القیم: ھذا الحدیث غریب جدا. وقال العقیلي: لا أصل لھ من حدیث الأعمش، ولیس بمحفوظ. وانظر تفسیر القرآن العظیم للحافظ ابن كثیر (٣/ ٦٧٥) و میزان الاعتدال (٣/ ٣٢ – ٣٣/ ٨١٥٤) و الفوائد المجموعة (ص ٢٣٥) و السلسلة الضعیفة (٢٠٣.)
_________
হাদিস ৮ :
وأخرج البخاري في تاریخھ عن عمَ َّارَ بْنَ یَاسِرٍ ,یَقوُلیقولُ : سَمِعْتُ رسَُولَ ﷲ صَلى َّ َّ ﷲ عَلیَْھِ َّ َّ َُوَسَلمَ َََََََِیَقَوُلیقولُ : “إنَِّ َّ ﷲَ أَعْطَانِي مَلَكًا مِنَ المْلَاَئكِةَ یقَوُمُ علَىَ قبَرْيِ إذِاَ أنَاَ متِ ُّ فلَاَ یُصلَي عبَدٌْ علَيَ َّ ََََََُصَلَاةً َّ ِّ إلِا قَالَ : یاَ مُحَم َّدُ , فلانَُفلانُ بنْبنُ فلُاَنٍ ی ِّ ُصلَي علَیَكْ یُسَم ِّیھِ بِاسْمِھِ َََََوَاسْمِ أَبَِیھِ ، فیَ ِّ ُصَلي َّ ﷲُ مَكَانَھَا عَشْرًا صَلى َّ ﷲ عَلَیْھِ َّ َّ َُوَسَلمَ ” (٨)
ইমাম বোখারী তার ‘তারিখ-এ কাবীর’ গ্রন্থে হযরত আম্মার রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন,
“নিশ্চয় আমাকে আল্লাহ তা’আলা এমন একজন ফেরেশতা দিয়েছেন, যে আমার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকবে যখন আমি ইনতিকাল করবো তখন থেকে, অতঃপর যে কোন বান্দা আমার উপর সালাত পাঠ করবে, সাথে সাথে সে আমাকে তা বলে দেবে, ‘হে আল্লাহর মহা প্রশংসিত মাহবুব! অমুকের পুত্র অমুক, আপনার প্রতি দুরূদ প্রেরণ করছে । ওই ফিরিশতা দুরূদ প্রেরণকারীর নাম
ও তার পিতার নামসহ উল্লেখ করবে, অতঃপর আল্লাহ তা’আলা সেটার বিনিময়ে দশটি রহমত নাযিল করবেন । আল্লাহ তার প্রতি সালাম নাযিল করুন।”
৮- إتحاف الخیرة المھرة بزوائد المسانید العشرة كتِاَبكتابُ الْأدَْعِیَةِ بابَ ٌ فيِ الص َّلاَةِِ علَىَ َّ النبيِ ِّ
صَلىّ َّ ﷲُ… رقم الحدیث: ٥٨٢١
________
হাদিস ৯ :
وأخرج البیھقي في حیاة الأنبیاء، والأصبھاني في الترغیب عن أنس بن مالك رضي ﷲ عنھ أن النبي صلى ﷲ علیھ وسلم قال: إن أقربكم مني یوم القیامة في كل موطن أكثركم علي َصلاة في الدنیا ، من صلىعلي َّ في یوم الجمعة ولیلة الجمعة مائة مرة قضى ﷲ لھ مائة حاجة ،سبعین من حوائج الآخرة ، وثلاثین من حوائج الدنیا ، ثم یوكل ﷲ بذلك ملكا یدخلھ في قبري كما یدخل علیكم الھدایا. (٩)
ইমাম বায়হাক্বী ‘হায়াতুল আন্বিয়া’তে এবং ইমাম ইস্পাহানী ‘আত্ তারগীব’-এ হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, প্রিয়নবী (ﷺ) এরশাদ করেন,
“যে ব্যক্তি আমার উপর জুমার দিনে ও রাতে একশ’ বার দুরূদ পাঠ করবে এর বিনিময়ে তার একশ’টি চাহিদা পূরণ করা হবে- সত্তরটি তার আখিরাতের চাহিদা ও প্রয়োজন এবং ত্রিশটি তার দুনিয়ার চাহিদা ও প্রয়োজন। অত:পর আল্লাহ তা‘আলা এর জন্য একজন ফেরেশতা নিয়োগ করবেন, যে আমার নিকট দুরূদসমূহ ওইভাবে পেশ করবে, যেভাবে দুনিয়াতে তোমাদের নিকট উপহার-উপঢৌকন পেশ করা হয়। নিশ্চয় আমার জ্ঞান
আমার ইন্তিকালের পরও ওইরূপ সচল বিদ্যমান ও অক্ষুন্ন থাকবে যেভাবে আমার যাহেরী হায়াতে আছে।”
৯- رواه ابن منده في ” الفوائد ” (ص/٨٢)، والبیھقي في ” شعب الإیمان ” (٣/١١١) ، و”حیاة الأنبیاء” (٢٩) ، ومن طریق البیقھي : ابن عساكر في ” تاریخ دمشق ” (٥٤/٣٠١) ، وعزاه السیوطي في ” الحاوي ” (٢/١٤٠) للأصبھاني في ” الترغیب.” )
____________
হাদিস ১০ :
ولفظ البیھقي :یخبرني من صلى علي باسمھ ونسبھ ، فأثبتھ عندي في (١٠) .صحیفة بیضاء
আর ইমাম বায়হাক্বীর বর্ণনা মতে- “আমার নিকট ওই ব্যক্তির নাম এবং পিতার নামও উল্লেখ করা হবে, যে আমার উপর দুরূদ পাঠ করবে। অত:পর তা আমি আমার নিকট রক্ষিত শ্বেত সহীফায় (খাতায়) লিপিবদ্ধ করে রাখি।”
১০- رقم الحدیث: ١٣
____________
হাদিস ১১ :
وأخرج البیھقي عَنْ ثَابِتٍ ,عَنْ أَنََسٍ ,رَضِيَ َّ ﷲُ عنھْعنھُ , عنَ َّ النبيِ ِّ صَلى َّ ﷲ عَلَیْھِ َّ َّ َُوَسَلمَ ، قَالَ : ” إنَِّ الأنبَْیْاِءَ لا یُترْكَوُن فيِ قبُُُورھِِمِْ َََََبعَدْبعدَ
أَرَْبَعِینَ لیَْلَةً , ولكنَھُِم ْ ی ُّ ُصلوَن بینَْ یدََيِ َّ ﷲ عزَ وَجل َّ َََََََََََِّ َّ َّ حَتى یُنْفَخَ فِي
(١١) “الص ُّور
ِইমাম বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলাইহি হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:
“নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেন: নবীগণ আলায়হিমুস্ সালামকে তাঁদের ইন্তিকালের পর কবরে চল্লিশ রাতের বেশী রাখা হয়না, বরং তাঁরা আল্লাহ তা‘আলার কুদরতের সামনে নামায আদায় করতে থাকেন- ক্বিয়ামতের পূর্বে শিঙ্গায় ফুঁক দেয়ার আগ পর্যন্ত।”
১১- حیاة الأنبیاء في قبورھم للبیھقي الأنبیاء لا یتركون في قبورھم بعد أربعین لیلة , ولكنھم…
رقم الحدیث: ٤
________
হাদিস ১২ :
فَقَدْ رَوَىس فیاْنَسُفیانُ َّ الثورْيُِّ , فيِ الْجَامِعِ ، قَالَ : قَالَ شَیْخٌ لَنَا , عَنْ سَعِیدِ بنْ المُْسَیَّ بِ ، قَالَ ” : ماَ مكَثََ نبَيِ ُّ فِيِ قَبْرِهِ أَكْثَرَ مِنْ أرَْبَعِینَ َ َلَیْلَةً َّ حَتى
یُرِْفَعَ. (١٢)
হযরত সুফিয়ান সাওরী তাঁর ‘আল্ জা’মে’তে লিখেন: একজন শায়খ আমার নিকট হযরত সা‘ঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব (রা) থেকে বর্ণনা করে বলেন: কোন নবী তাঁর কবরে চল্লিশ দিনের বেশী অবস্থান করেননি; বরং তাঁরা
তাঁদের কবর থেকে উত্তোলন পর্যন্ত জীবিতই থাকবেন।”
১২- حیاة الأنبیاء في قبورھم للبیھقي ما مكث نبي في قبره أكثر من أربعین رقم الحدیث: ٥…
__________________
ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) বক্তব্য – ১
_________________________
প্রমাণ ১৩ :
قال البیھقي :فَعَلى ھذَاَ یصَیِرُونَ كَسَائِرِِ الأَحْیَاءِ , یكَوُنوُنَ حَیْثُْ ینْزِلھُیُنزلھُمُمُ َّ ﷲُ َّ عَز وَجَلَّ .”
ইমাম বায়হাক্বী বলেন, “উপরোক্ত বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা ইন্তিক্বালের পরও অন্যান্য জীবিতদের ন্যায় জীবিত, আল্লাহ্ তাদেরকে যেখানে অবস্থান করাবেন, তাঁরা সেখানে অবস্থান করতে থাকবেন।”
ثم قال البیھقي ولَحِیَاَة الأنَبْیِاَءِبعَدْبعدَ مَوْتِھِمْ صَلَوَاتُ َّ ﷲِ عَلَیْھِمْ شَوَاھِدُ ِِِِِمِنَالأحَاَدیِث الصَّحِیحَةِ ِِِِِمِنْھَا. ، فذكر قصة الإسراء في لقیھ جماعة من (١٣) .الأنبیاء وكلمھم وكلموه
অত:পর ইমাম বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন, “নিশ্চয় নবীগণ আলায়হিমুস্ সালাম-এর ইন্তিক্বালের পরও জীবিত থাকার স্বপক্ষে অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়।”
প্রমাণ স্বরূপ তিনি ইসরা ও মি’রাজের ঘটনা এবং এ রাতে নবীগণের সাথে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর কথা এবং নবী করীম (ﷺ)-এর সাথে তাঁদের আলায়হিস্ সালাম কথা বলার বিশুদ্ধ ঘটনা ও রেওয়ায়াতগুলো বর্ণনা করেন।
১৩- حیاة الأنبیاء في قبورھم للبیھقي ما مكث نبي في قبره أكثر من أربعین رقم الحدیث: ٥
____________
হাদিস ১৪ :
وأخرج حدیث أبي ھریرة في الإسراء وفیھ: عَنْ أبَىِ ھُرَیْرَةَ قَالَ : قَالَ رسَولرسُولُ َّ ﷲِ صلى ﷲ علیھ وسلم : (… وَقَدْ رَأیَْتُنِي فيِ جَمَاعَةٍ مِنَ الأنبَیْاِءَ فإذَاَِ مُوسىَ قائَمٌِِ یُصلَىِّ فإَذِاَ رجَُل ٌٌضَرْبٌ جَعْدٌ َّ كَأَنَھكأنھُ مِنْ رِجَالِ ة شَنُوءَوإَذاَ عَیسِى ابنابنُ مریَمْ عَلیَھَْْْ اِلس َّلامَ ُ قائَمِ ٌ ی ِّ ُصلَي َََََََأقرَْبَأقربُ َّ الناسِ بِھِ شبھا عَُروة بَِنُبنُ مسعَُوْد َّ اٍلثقفيَِ ُّ وإَذاَِ إبرِْاھَیمِ ًٍْْْْْعُلیَھَْ اِلس َّلامَُُ َََُقاَئمٌِ ی ِّ ُصَلى أشَْبَھأشبھُ الناَّ سِ بھِ ِِصَاحبُِكُمْ – یَعْنِي : نفَسَْھنفسھُ – فَحاَنتَِ الص َّلاةَ ََُفَأَمََمْتھُُمْ. (١٤)
ইমাম বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি প্রিয় নবীর ইসরা ও মি’রাজের ঘটনা বর্ণনার ক্ষেত্রে হযরত আবূ হোরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু-এর রেওয়ায়তটি উল্লেখ করেন। তাতে রয়েছে “আমি আমাকে দেখতে পেলাম একদল সম্মানিত নবীর দলে। আর হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে দেখলাম তিনি দাঁড়িয়ে নামায পড়ছেন। দেখলাম তিনি উপমাযোগ্য ব্যক্তি। তাঁর চুল কোঁকড়ানো দেখে মনে হচ্ছিল- তিনি ‘শানুয়া’ সম্প্রদায়ের লোক। আবার দেখলাম হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালাম দাঁড়িয়ে নামায পড়ছেন। ওদিকে হযরত ইবরাহীম আলায়হিস্ সালামও দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছেন। তিনি আলায়হিস্ সালাম দেখতে প্রায় আমার মতই। অত:পর নামাযের সময় এল। আর আমি তাঁদের সকলের ইমাম হিসেবে নামায
আদায় করলাম।”
১৪- رواه مسلم ( ١٧٢ )
____________
হাদিস ১৫ :
وأخرج حدیث ” : عَنْ أبَِي سَعِیدٍ ، قَالَ : قاَل رسولرسُولُ ﷲ َّ صَلى َّ َّ ﷲُ ََََِعَلَیْھِ
َّ وَسَلمَ : ” إنَِّ الناسَّ یَُصعقْوَنُ یَومَ الَقیاْمَِة فأِكَوَنُفأكونُ أوَ َّلَ ََََََََْْْمَنْ یُفِیِقُ . “(١٥)
ইমাম বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আনহু নিম্নের হাদীসের আলোকে বলেছেন: প্রিয় নবী (ﷺ) এরশাদ করেছেন “ক্বিয়ামতের দিনে মানুষ সংজ্ঞাহীন হয়ে যাবে। তখন আমিই সর্বপ্রথম সজাগ হবো।”
১৫- صحیح البخاري كتاب أحادیث الأنبیاء باب قول ﷲ تعالى وواعدنا موسى ثلاثین لیلة وأتممناھا بعشر. رقم الحدیث- ৩২১৭
____________
وقال : ھذا إنما یصح على أن ﷲ رد على الأنبیاء أرواحھم وھم أحیاء عند ربھم كالشھداء ، فإذا نفخ في الصور النفخة الأولى صعقوا فیمن صعق ثم لا یكون ذلك موتا في جمیع معانیھ إلا في ذھاب الاستشعار ، انتھى .
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন এ হাদীস শরীফ একথাও প্রমাণ করে যে, আল্লাহ তা‘আলা নবীগণের প্রতি তাঁদের রূহ ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাই তাঁরা মহান আল্লাহর দরবারে জীবিত, শহীদগণের ন্যায়। অত:পর যখন শিঙ্গায় প্রথম ফুঁক দেয়া হবে তখন তাঁরাও অন্যান্যদের ন্যায় সংজ্ঞাহীন হয়ে যাবেন। এটি কোন দিক থেকেই মৃত্যু নয়; বরং শুধু অনুভূতি শক্তি লোপ পাওয়া মাত্র।
______
হাদিস ১৬ :
وأخرج أبو یعلى عن أبي ھریرة سمعت رسول ﷲ صلى ﷲ علیھ وسلم یقول ” َّ وَالذِي نَفْسِي بِیَِدِهِ لینزََْلنَِ َّ عیِسىَ بنْبنُ مَرْیَمَ َّ ثُم لَئِنْ قَامَ عَلى
قَبْرِي فَقَالَ : یاَ مُحمَ َّدُ ! َّ لأجُیِبنَھلأجیبنھُ (١٦)
আবূ ইয়া’লা তাঁর মুসনাদে হযরত আবূ হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি- “যে মহান রবের ক্বুদরতের হাতে আমার জীবন, তাঁর শপথ করে বলছি- নিশ্চয় হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালাম অবতরণ করবেন। অত:পর তিনি যদি আমার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে “হে হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা!’’ বলে আহ্বান করেন, তাহলে আমি নিশ্চয় তাঁর আহ্বানে সাড়া দেব। “
১৬- وقد انفرد بروایتھ على ھذا الوجھ سعید المقبري من تلامیذ أبي ھریرة رضي ﷲ عنھ ، واختلف رواة الحدیث عن سعید المقبري: فرواه بھذا اللفظ أبو صخر ( حمید بن زیاد ، ویقال اسمھ : حمید بن صخر ) ، عن سعید المقبري ، عن أبي ھریرة رضي ﷲ عنھ . رواه أبو یعلى في ” المسند ” (١١/٤٦٢. (ورواه محمد بن إسحاق ، عن سعید المقبري ، عن عطاء (مولى أم صبیة) ، عن أبي ھریرة رضي ﷲ عنھ . رواه الحاكم في ” المستدرك ” (٢/٦٥١) ، لكن بلفظ: ( ولیأتین قبري حتى ِّ یسلم َ عليََّ ، ولأَرََ َّ ُدن َّ علیھ( وبھذا اللفظ رواه محمد بن إسحاق أیضاً عن سعید المقبري عن أبیھ عن أبي ھریرة رضي ﷲ عنھ . رواه ابن عساكر في تاریخ دمشق (٤٧/٤٩٣)
_____________
হাদিস ১৭ :
وأخرج أبو نعیم في دلائل النبوة عن سعَیِد بنْ المَََُْسَیََّ بِ یَقوُلیقولُ : لقد رأیتني لیالي الحْرَ َّة وما في مسجد رسول ﷲ صلى ﷲ علیھ وسلم أحدٌ غیري ، ما یأتي وقت صلاةٍ إلا سمعت الآذان مِن القبْر. (١٧)
হযরত আবূ নু‘আয়ম ইস্পাহানী তাঁর “দালায়েলুন্ নুবূয়্যাত”-এ হযরত সা‘ঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন ‘হাররা’-এর রাতগুলোতে আমি মসজিদে নবভী শরীফে আশ্রয় নিলাম। তখন মসজিদে নবভী শরীফে আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না। কিন্তু যখনই নামাযের সময় হতো, তখন আমি প্রিয়নবীর (ﷺ) কবর শরীফ থেকে আযান শুনতে পেতাম।
১৭- الراوي: سعید بن عبد العزیز المحدث: محمد المناوي – المصدر: تخریج أحادیث المصابیح – الصفحة أو الرقم: ٥/٢٣٦ . كرامات أولیاء ﷲ عز وجل للالكائي ذكر فضائل الصحابة وغیرھم ما كان سیاق ما روي من كرامات سعید بن المسیب رحمة ﷲ… رقم الحدیث: ٩٨. شرح أصول اعتقاد أھل السنة والجماعة بو القاسم ھبة ﷲ ابن الحسن بن منصور الطبري كرامات أولیاء ﷲ سیاق ما روي من كرامات سعید بن المسیب رحمة ﷲ علیھ, ما روي من كرامات سعید بن المسیب – رحمة ﷲ علیھ ১২০, ]تاریخ ابن أبي خیثمة ٤/ ١١٩[)
_____________
হাদিস ১৮ :
:وأخرج زبیر بن بكار في “أخبار المدینة” عن سعید بن المسیب، قال لم أزل أسمع الأذان والإقامة من قبر رسول ﷲ صلى ﷲ علیھ وسلم (١٨) .أیام الحرة حتى عاد الناس
হযরত যুবাইর ইবনে বাক্কার তাঁর ‘আখ্বারুল মাদিনা’তে হযরত সা‘ঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব থেকে বর্ণনা করেন : তিনি বলেন, আমি ‘হাররা’-এর রাতগুলোতে রাসূলে করীম (ﷺ) এর কবর শরীফে প্রতিটি নামাযের সময় আযান ও ইক্বামত শুনতে পেতাম। যতদিন পর্যন্ত মানুষ মদিনায় ফিরে আসেনি ততদিন পর্যন্ত তা শুনতে পেয়েছি। “
১৮- انظر: وفاء الوفا ٤/١٣٥٦.
_______
হাদিস ১৯ :
وأخرج ابن سعد في الطبقات عن سعید بن المسیب أنھ كان یلازم المسجد أیام الحرة والناس یقتتلون قال : فكَنتُْ إذاَِ حاَنتَ ِ الص َّلاةَََُُ أسَمْعَأسمعُ أذاَنَا یًخَرْ جیخرُجُ مِنَ الْقَبْرِ َّ الشرِیفِ .” (١٩)
ইমাম ইবনে সা’দ তাঁর ‘আত্ ত্বাবাক্বাত’ নামক কিতাবে হযরত সা‘ঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব থেকে বর্ণনা করেন: “তিনি হাররা-এর দিনগুলোতে যখন অকাতরে মানুষ হত্যা করা হচ্ছিল তখন মসজিদে নববী শরীফে আত্মগোপন করেন। তিনি বলেন- যখনি নামাযের সময় উপস্থিত হতো তখন আমি কবর শরীফ থেকে আযানের শব্দ বের হতে শুনতাম।”
১৯- سبل الھدى والرشاد، في سیرة خیر العباد، وذكر فضائلھ وأعلام نبوتھ وأفعالھ وأحوالھ فيالمبدأ والمعاد. المؤلف : محمد بن یوسف الصالحي الشامي
_______
হাদিস ২০ :
وأخرج الدارمي في مسنده: عَنْ سَعِیدِ بْنِ عَبْدِ الْعَزِیزِ، قَالَ: ” لمَ َّا كَانَ أی َّامَ الُحرْ َّة لِمَ یْ َّ ُؤذَن فيِ مسَجْدِ اِلنبيَّ ِ ِّ ثلَاَثاًَ، ولَمَ یُقمَ ولَمَْْْْ یبَرْحَ ََََََََسعَیِدُ ْْْْْبنْبنُ الْمُسَیَّ بِ المْسَجْدِالمسجدَ، وكَاَنَ لَا یعرَْفِیعرفُ وقَتْ َ الص َََّلاَة َّ إلِا بھِمَھْمَةَ یسَمْعَُھَا ٍِِْْْْمِنْ قبَرِْ َّ النبيِ ِّ صلى ﷲ علیھ وسلم “، فَذَكَرَ مَعْنَاهمعناهُ . (٢٠)
ইমাম দারেমী তাঁর ‘মুসনাদে দারেমী’তে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন-
আমাদের নিকট মারওয়ান ইবনে মুহাম্মদ সা‘ঈদ ইবনে আবদুল আযীযএর সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “আইয়্যামুল হাররা-এর ঘটনার সময় মসজিদে নবভী শরীফে আযান, ইক্বামত দেয়া হয়নি। হযরত সা‘ঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব এদিন-রাতগুলোতে মসজিদে নবভী শরীফের অভ্যন্তরেই অবস্থান করছিলেন। তিনি নামাযের সময় সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছেন না (অন্ধকার ও দরজাগুলো বন্ধ থাকার কারণে); কিন্তু যখনি নামাযের সময় হতো তখন প্রিয় নবীর রাওযা শরীফ থেকে একটি অস্পষ্ট শব্দ শুনতে পেতেন।
২০- رواه الدارمي ج ١ : ص ٢٢٨
____________
فھذه الأخبار دالة على حیاة النبي صلى ﷲ علیھ وسلم وسائر الأنبیاء.
উপরোল্লেখিত হাদীস ও বর্ণনাগুলো প্রমাণ করে যে, নবী করীম (ﷺ) এবং অপরাপর নবী-রাসূলগণ আলায়হিস্ সালাম তাঁদের নিজ নিজ কবর শরীফে সশরীরে জীবিত।
وقد قال تعالى في الشھداء: ولَا َ تحَسْبَنَ َّ الَّ ذِینَ قُتُِلوُاْ فِيِ سَبِیلِ ﷲِّ أمَْوَاتاًُْ بلَ أحَیاْءَ عندِعندَ ربَ ِّھِمْ یُْْْرْزَقوُنَ (آل عمران. الایة ١٦٩) والأنبیاء أولى بذلك ، فھم أجل وأعظم ، وما نبي إلا وقد جمع مع النبوة وصف الشھادة ، فیدخلون في عموم لفظ الآیة .
আল্লাহ তা‘আলা শহীদগণ সম্পর্কে পবিত্র ক্বোরআনে এরশাদ করেছেন: “যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত মনে কর না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তারা জীবিকা প্রাপ্ত।
[সূরা আলে ইমরান, আয়াত-১৬৯]
আর নবীগণ আলায়হিস্ সালাম এ ক্ষেত্রে আরও অধিক যোগ্য ও হক্বদার। কেননা তাঁরা আলায়হিমুস্ সালাম শহীদদের থেকে অনেক বেশি সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। অন্যদিকে প্রায় সব নবীর মাঝে নুবূয়তের পাশাপাশি শাহাদাতের মর্যাদা এবং গুণাবলীও বিদ্যমান। (খুব কম নবীই আছেন, যাঁরা শাহাদাত বরণ করেন নি,) সুতরাং তাঁরা এ আয়াতের ব্যাপকতার অন্তর্ভুক্ত।
___________
হাদিস ২১ :
وأخرج أحمد، وأبویعلى ، والطبراني، والحاكم في المستدرك، والبیھقي في دلائل النبوة عن ابن مسعود قال : لأنَ أحَلفِْ با تِسِعْاًْْْ إنِ َّ رَسَُولَ َّ َّ ﷲِ ََََِِ َّ صَلى ﷲ علُیھ َوَْسِلمَ قتلَ ُ قِتلَاَْ أحبَ ُّ إليَِ َّ منِ أْنَ ْْْْأحَلفِِْ وَاحَدَة ً، وذَلَكِ بأنَِ َّ َّ َّ ﷲَ َََََََََ َّ عَز وَجَل َّ اتخَّ َذَهتخذهُ نبَیِّاً ، وَجَعَلھَوجعلھُ شَھِیدًا . (٢١)
হযরত ইমাম আহমদ, আবূ ইয়া’লা ও ত্বাবরানী (রহঃ) তাঁদের নিজ নিজ গ্রন্থে এবং হাকেম তাঁর ‘মুসতাদরাক’-এ ও বায়হাক্বী তাঁর ‘দালায়েলুন্ নুবূয়্যাত’এ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:
“প্রিয় নবী (ﷺ) কে শহীদ করা হয়েছে এ মর্মে নয়বার শপথ করা আমার নিকট অধিক প্রিয় হবে, ‘তাঁকে শহীদ করা হয়নি’ মর্মে একবার শপথ করা থেকেও। কেননা আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে যেমন নবী হিসেবে গ্রহণ করেছেন ঠিক তেমনি শহীদ হিসেবেও গ্রহণ করেছেন।
২১- مسند أحمد بن حنبل مسمُسْندْندَُ العَْشرَة المُْبَشرِینَ َّ َّ ِِبِاِلْجَنةِ م سمُسْندْندَ ُ المُكثْرِیِن منِ الص َََََّحَابَةِ مسمُسْندْنَدُ عبد ﷲ بن مسعود رَضِيَ َّ ﷲُ تَعَالَى… رقم الحدیث: ٣٤٨٥ رواه أحمد (٣٦١٧) . وقال المحقون : إسناده صحیح على شرط مسلم اھـ, قال السندي : قولھ : ( قتل قتلا ) بس ِّ ُم ما تناول من الذراع بأن ظھرت آثاره عند الوفاة اھـ . نقلا من حاشیة المسند ٦/١١٦.)
_____________
হাদিস ২২ :
وأخرج البخاري ، والبیھقي :قَالَ عُرْوَةُ :كَانَتْ عَائِشَةُ ، تَقوُلتقولُ : كَانَ النبيَّ ِ ُّ صلىَ ﷲَّ عُلیَھَْ وِسَلمَ یَقوَُلیقولُ فيِ مرَضَھِ َّ َّ َّ اِلذيِ توُ ِّ ُفيَ فیِھِ : ” یَا عَائِشَةُ ، لَمْ أزَلَ أجَدُِ ألمَََ َّ الطعاَمِ الذَّ يِ أكَلَتْ بخِیَبْرَ ، ََََُفھَذَاَ أوَاَنأوانُ انْقِطَاعِ ََََََْْْأبَْھَرِي منِْ ذلَكَِ الس ُّ ِّ م” (٢٢)
ইমাম বুখারী ও ইমাম বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বর্ণনা করেন,
হযরত ওরওয়াহ্ বলেছেন, হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা বলতেন, নবী করীম (ﷺ) তাঁর ওই অসুস্থতার অবস্থায় বলছিলেন, যে অসুস্থতায় তিনি ইন্তিক্বাল করেছেন, হে আয়েশা, আমি এখনও ওই বিষমাখা খাদ্যের ব্যাথা অনুভব করছি, যা আমি খাইবারে খেয়েছিলাম। আর এটা হলো ওই বিষের কারণে আমার ঘাড়ের রগগুলোর বিচ্ছিন্ন হবার সময়।
২২- رواه البخاري ( ٤١٦٥. ( دلائل النبوة للبیھقي المدخْلْالمدخلُ إَلى دََلائل الِنب ُّ ُو َّةِِ ومَعَْرِفَةِ… ج
ُم َّاعاعُ أبَْوَابِ مرََضَِ رَسُولِ ﷲِ َّ صَلى َّ َّ ﷲُِ.. باَببابُ : مَا جَاءَ فيِ إِشَارَتھِِ إلِىَ عَائِشَةَ… رقم الحدیث: (٣١٠١
_________
فثبت كونھ صلى ﷲ علیھ وسلم حیا في قبره بنص القرآن ، إما من عموم اللفظ ، وإما من مفھوم الموافقة.
এটা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, প্রিয়নবী (ﷺ) নিজ কবর শরীফে জীবিত পবিত্র ক্বোরআনের সরাসরি ‘নাস্’ বা আয়াত দ্বারা অথবা শব্দের ব্যাপকতা দ্বারা অথবা অর্থের আনুকূল্য দ্বারা।
ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) এর বক্তব্য – ২
______________________
প্রমাণ ২৩ :
قال البیھقي في كتاب الاعتقاد : الأنبیاء بعدما قبضوا ردت إلیھم .أرواحھم فھم أحیاء عند ربھم كالشھداء
ইমাম বায়হাক্বী ‘কিতাবুল ই’তিক্বাদ’-এ লিখেছেন, নবীগণ আলায়হিমুস্ সালামকে তাঁদের রূহগুলো কব্জ করার পর ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তাই তাঁরা শহীদগণের মতো আল্লাহর নিকট জীবিত।”
وقال القرطبي في التذكرة في حدیث الصعقة نقلا عن شیخھ : الموت
(٢٣ (لیس بعدم محض ، وإنما ھو انتقال من حال إلى حال.
ইমাম কুরত্বুবী তাঁর “আত্ তায্কিরাহ্” কিতাবে ‘অজ্ঞান হওয়া’ (সা’ক্বাহ্) সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসের আলোকে তাঁর শায়খ থেকে বর্ণনা করেন: “মৃত্যু মানে একেবারে নি:শেষ, নিশ্চিহ্ণ বা অস্তিত্বহীন হয়ে যাওয়া নয়, বরং মৃত্যু হলো এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় স্থানান্তরিত হওয়া।”
২৩- بدائع التفسیر – ج ٢ – التوبة – الفتح. أحكام القرآن لابن العربي سورة الأنفال فیھا خمس وعشرون آیة الآیة الثانیة قولھ تعالى وإذ یعدكم ﷲ إحدى الطائفتین مسألة الموت لیس بعدم محض ولا فناء صرف)
________
ویدل على ذلك أن الشھداء بعد قتلھم وموتھم أحیاء یرزقون فرحین مستبشرین وھذه صفة الأحیاء في الدنیا ، وإذا كان ھذا في الشھداء فالأنبیاء أحق بذلك وأولى.
তাই প্রমাণ হলো- শহীদগণ তাঁদের কতল ও মৃত্যু হবার পরও তাঁরা নিজেদের রবের নিকট জীবিত, রিযিকপ্রাপ্ত, আনন্দিত ও প্রফুল্ল, যা মূলত: পৃথিবীতে যারা বেঁচে আছে তাদেরই বৈশিষ্ট্য। আর যদি শহীদগণের এ সম্মান ও অবস্থা হয়, তাহলে নবীগণ এর আরও অধিক হক্বদার ও যোগ্য।”
_________
হাদিস ২৪ :
وقد صح أن ﷲ عز وجل قد حرم على الأرض أن تأكل أجساد الأنبیاء
علیھم السلام . (٢٤)
বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে,
“মাটি নবীগণের দেহ মুবারককে স্পর্শ করে না।”
২৪- أخرجھ أحمد ٤/٨(١٦٢٦٢. َّ والدارِمِي (١٥٧٢) و॥”أبو داود॥” ١٠٤٧ و॥”ابن ماجة॥” ١٠٨٥وأخرجھ ابن ماجة (١٦٣٧مرقاة المفاتیح شرح مشكاة المصابیح كتاب الصلاة باب الجمعة.১৩৬১ وقال: رواه أبو داود ، والنسائي ، وابن ماجھ ،والدارمي ،حیاة الأنبیاء في قبورھم للبیھقي, رقم الحدیث-١٠ والبیھقي في ” الدعوات الكبیر . ” ).
_____
وأنھ صلى ﷲ علیھ وسلم اجتمع بالأنبیاء لیلة الإسراء في بیت المقدس وفي السماء، ورأى موسى قائما یصلي في قبره وأخبر صلى .ﷲ علیھ وسلم بأنھ یرد السلام على كل من یسلم علیھ
আমাদের প্রিয়নবী (ﷺ) মি’রাজ রজনীতে নবীগণের সাথে বাইতুল মুকাদ্দাস ও আসমানে সমবেত হয়েছেন। আবার তিনি হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে দেখেছেন, তিনি স্বীয় কবর শরীফে দাঁড়িয়ে নামায পড়ছেন।
হাদিস ২৫ :
আরও বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে,
“প্রিয় নবী (ﷺ) এর ইন্তিকালের পর কেউ যদি তাঁকে সালাম প্রদান করেন তিনি তার সালামের জবাব দেন।”
إلى غیر ذلك مما یحصل من جملتھ القطع بأن موت الأنبیاء إنما ھو راجع إلى أن غیبوا عنا بحیث لا ندركھم وإن كانوا موجودین أحیاء،
وذلك كالحال في الملائكة فإنھم موجودون أحیاء ولا یراھم أحد من .نوعنا إلا من خصھ ﷲ بكرامتھ من أولیائھ ، انتھى
এ ছাড়াও আরও অনেক হাদীস ও বর্ণনা পাওয়া যায়, যেগুলো দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে, নবীগণের ওফাত হলো মূলত: আমাদের চক্ষু থেকে গোপন ও অদৃশ্য হয়ে যাওয়া। যার ফলে আমরা তাঁদেরকে দেখিনা, যদিওবা তাঁরা বিদ্যমান, জীবিত। যে অবস্থাটি ফেরেশতাদের ক্ষেত্রেও লক্ষ্যণীয়। তাঁরা মওজুদ আছেন ও জীবিত আছেন; কিন্তু তাঁদেরকে আমাদের শ্রেণীর কোন সাধারণ লোক দেখতে পায়না, একমাত্র যাঁদেরকে আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা বিশেষিত করেছেন এমন আউলিয়ায়ে কেরামই একমাত্র ফেরেশতাদের দেখতে পান।
ইমাম বারেযী (রহঃ) এর বক্তব্য
___________________________
وسئل البارزي عن النبي صلى ﷲ علیھ وسلم ھل ھو حي بعد وفاتھ ؟ فأجاب : إنھ صلى ﷲ علیھ وسلم حي.
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে ইমাম বারেযীকে জিজ্ঞেস করা হলো: নবী করীম (ﷺ) কি তাঁর ওফাতের পরও জীবিত? তিনি জবাবে বললেন নিশ্চয় তিনি জীবিত।
ইমাম আবূ মনসুর আবদুল ক্বাহের ইবনে তাহের আল-বাগদাদী (রহঃ) এর বক্তব্য
__________________________________
قال الأستاذ أبو منصور عبد القاھر بن طاھر البغدادي الفقیھ الأصولي ش یخ الش افعیة ف ي أجوب ة مس ائل “الج اجر می ین” ق ال : المتكلم ون المحققون من أصحابنا أن نبینا صلى ﷲ علیھ وسلم حي بعد وفاتھ ، وأن ھ یسر بطاعات أمت ھ ویحزن بمعاصي العصاة منھم ، وأن ھ تبلغ ھ صلاة من یصلي علیھ من أمتھ،
ইমাম আবূ মনসুর আবদুল ক্বাহের ইবনে তাহের আল্ বাগদাদী, যিনি একজন ফক্বীহ ও উছুল শাস্ত্রবিদ এবং শাফে‘ঈ মাজহাবের প্রসিদ্ধ শেখ ছিলেন, তিনি তাঁর “ইনজানুম্ মুবীন” নামক কিতাবে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে বলেন:
“আমাদের সাথীদের মধ্যে যাঁরা কালাম শাস্ত্রবিদ ও মুহাক্কিক, তাঁরা সকলে একথা বলেন যে, আমাদের নবী করীম (ﷺ) ওফাতের পরও জীবিত। তিনি উম্মতদের ভাল কাজে খুশী হন এবং তাদের থেকে অবাধ্যদের অপকর্মে দু:খ পান। তাঁর নিকট তাঁর
উম্মতদের দেয়া সালাম পৌঁছে যায়।”
وقال : إن الأنبیاء لا یبلون ولا تأكل الأرض منھم شیئا، وقد مات موسى في زمانھ وأخبر نبینا صلى ﷲ علیھ وسلم أنھ رآه في قبره مصلیا ، وذكر في حدیث المعراج أنھ رآه في السماء الرابعة وأنھ رأى آدم في السماء الدنیا ، ورأى إبراھیم وقال لھ : مرحبا بالابن الصالح والنبي الصالح ، وإذا صح لنا ھذا الأصل قلنا : نبینا صلى ﷲ علیھ وسلم قد صار حیا بعد وفاتھ وھو على نبوتھ ، ھذا آخر كلام الأستاذ .
তিনি বলেন, নিশ্চয় নবীগণের দেহ মুবারক ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না এবং তাঁদের দেহের কোন অংশকেই মাটি স্পর্শ করে না। হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম ইন্তিকাল করেছেন অনেক সহস্রাব্দি পূর্বে, কিন্তু নবী করীম (ﷺ) বলছেন। তিনি হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে নিজ কবর শরীফে নামায পড়তে দেখেছেন।”
আবার মি’রাজের হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, রাসূল কারীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁকে চতুর্থ আসমানে দেখেছেন এবং হযরত আদম আলায়হিস্ সালামকে পৃথিবীর (প্রথম) আসমানে। হযরত ইবরাহীম আলায়হিস্ সালামকে দেখার পর তিনি নবী করীম (ﷺ) কে সম্বোধন করে বলেছেন,
مرحب ا ب الابن الص الح والنب ى الص الح
অর্থাৎ মারহাবা, হে প্রিয় সৎকর্মপরায়ন সন্তান
এবং সৎ যোগ্য নবী ও রাসূল!
যেহেতু উপরোক্ত হাদীসগুলো বিশুদ্ধ ও সহীহ হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে সেহেতু বলা যায়, আমাদের প্রিয়নবী (ﷺ) ওফাতের পর পুনর্জীবিত হয়ে গেছেন এবং তিনি স্বীয় নুবূয়তী দায়-দায়িত্বও পালন করছেন।
[এটি ছিল ইমাম আবদুল কাহের বাগদাদীর সর্বশেষ ভাষ্য।]
ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) এর বক্তব্য – ৩
___________________________
وقال الحافظ شیخ السنة أبو بكر البیھقي في كتاب الاعتقاد : الأنبیاء علیھم السلام بعدما قبضوا ردت إلیھم أرواحھم فھم أحیاء عند ربھم كالشھداء ، وقد رأى نبینا صلى ﷲ علیھ وسلم جماعة منھم وأمھم في الص لاة وأخب ر – وخب ره ص دق – أن ص لاتنا معروض ة علی ھ ، وأن سلامنا یبلغھ ، وأن ﷲ حرم على الأرض أن تأكل أجساد الأنبیاء.
হযরত হাফেয শাইখুস্ সুন্নাহ আবূ বকর বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁর ‘কিতাবুল ই’তিক্বাদ’ এ লিখেছেন:
“নবীগণ আলাইহিমুস্সালাম-এর রূহ মুবারক কব্জ করার পর তাঁদের নিকট আবার তাদের রূহকে ফেরত দেয়া হয়। ফলে তাঁরা আল্লাহ তা‘আলার নিকট জীবিত, শহীদগণের ন্যায়। আর নবী করীম (ﷺ) মি’রাজে সকল নবীর সাথে সাক্ষাত করেছেন এবং তিনি তাঁদের ইমামত করেছেন, তিনি (ﷺ) আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন (তাঁর সংবাদ নি:সন্দেহে সত্য ও বাস্তব) যে, আমাদের দুরূদ তাঁর নিকট প্রেরণ করা হয়। আমাদের সালাম তাঁর নিকট পেশ করা হয়। আল্লাহ তা‘আলা মাটির উপর হারাম করে দিয়েছেন নবীগণের দেহ মুবারককে গ্রাস করাকে।
قال : وقد أفردنا لإثبات حیاتھم كتابا
অত:পর ইমাম বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন- আমি হায়াতুল আন্বিয়া বা নবীগণের হায়াত সম্পর্কে একটি স্বতন্ত্র কিতাব রচনা করেছি।
قال : وھو بعد ما قبض نبي ﷲ ورسولھ وصفیھ وخیرتھ من خلقھ صلى ﷲ علیھ وسلم.
তিনি বলেন, কেননা নবী করীম (ﷺ) ইন্তিকালের পরও আল্লাহ তা‘আলার নবী, রাসূল, চয়নকৃত ও সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিদ্যমান রয়েছেন।
اللھم أحینا على سننھ وأمتنا على ملتھ واجمع بیننا وبینھ في الدنیا . والآخرة ، إنك على كل شيء قدیر ، انتھى جواب البارزي
হে আল্লাহ! আমাদেরকে জীবিত রাখ তাঁর সুন্নাতের উপর এবং মৃত্যু দান কর তাঁর মিল্লাতের উপর। আর আমাদেরকে মিলিত কর তাঁর সাথে দুনিয়া ও আখিরাতে। কেননা, তুমি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
ইমাম আফীফুদ্দীন ইয়াফে‘ঈ (রহঃ) এর বক্তব্য
___________________________
وقال الشیخ عفیف الدین الیافعي : الأولیاء ترد علیھم أحوال یشاھدون فیھا ملكوت السماوات والأرض وینظرون الأنبیاء أحیاء غیر أموات كما نظر النبي صلى ﷲ علیھ وسلم إلى موسى علیھ السلام في قبره،
শেখ আফীফুদ্দীন ইয়াফে‘ঈ রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন: “আউলিয়ায়ে কেরামের উপর এমন কিছু অবস্থা ও হালের অবতারণা ঘটে যে অবস্থায় তাঁরা সচক্ষে অবলোকন করতে পারেন আসমান ও যমীনের মালাকুত বা ফেরেশতাদের জগতকে এবং তাঁরা নবীগণকে দেখতে পান জীবিতাবস্থায়, মৃত নয়। যেমনিভাবে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম দেখেছেন হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে স্বীয় কবর শরীফে।
قال : وقد تقرر أن ما جاز للأنبیاء معجزة جاز للأولیاء كرامة بشرط عدم التحدي ، قال : ولا ینكر ذلك إلا جاھل ، ونصوص العلماء في
حیاة الأنبیاء كثیرة فلنكتف بھذا القدر(٢٥)
তিনি আরও বলেন, একথা প্রমাণিত যে, যা নবীগণের জন্য ‘মুজিযা’ হিসেবে প্রযোজ্য, তা আউলিয়ায়ে কেরামের জন্য ‘কারামত’ হিসেবেও প্রযোজ্য। শর্ত হলো: ওলীগণের কারামতের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ থাকতে পারবে না।
সেটাকে একমাত্র জাহেল ছাড়া অন্য কেউ অস্বীকার করতে পারে না। আর নবীগণের হায়াত বা জীবিত থাকার বিষয়ে আলিমদের নিকট অসংখ্য নাস্ বা ক্বোরআন হাদীসের দলীলাদি রয়েছে। তাই এখানে এতটুকুই যথেষ্ট মনে করি।
২৫- ( سبل الھدى والرشاد، في سیرة خیر العباد، وذكر فضائلھ وأعلام نبوتھ وأفعالھ وأحوالھ في المبدأ والمعاد: محمد بن یوسف الصالحي الشامي, الباب الحادي عشر في حیاتھ في قبره وكذلك
سائر الأنبیاء – علیھ وعلیھم أفضل الصلاة والسلام)
______________
পরিচ্ছেদ (فصل)
وأما الحدیث الآخر فأخرجھ أحمد في مسنده، وأبو داود في سننھ ، والبیھقي في شعب الإیمان من طریق أبي عبد الرحمن المقري عن حیوة بن شریح عن أبي صخر عن یزید بن عبد ﷲ بن قسیط عن أبي ھریرة أن رسول ﷲ صلى ﷲ علیھ وسلم قال : ما من أحد یسلم علي إلا رد ﷲ إلي روحي حتى أرد علیھ السلام(٢٦) .
হাদিস ২৬ :
অন্য হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমদ তার মুসনাদে, আবূ দাঊদ তাঁর সুনানে এবং বায়হাক্বী শু‘আবুল ঈমানে।
আবদুর রহমান আল মুক্বরী বর্ণনা করেছেন
↓
হায়ওয়াত ইবনে শুরাইহ্ থেকে, তিনি
↓
আবূ সাখর থেকে, তিনি
↓
ইয়াযীদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে ক্বাসীত্ব থেকে, তিনি,
↓
হযরত আবূ হোরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন,
“রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, যে কেউ আমার প্রতি সালাম পেশ করলো আল্লাহ তা‘আলা আমার প্রতি আমার রূহকে ফিরিয়ে দেন, যাতে আমি তার সালামের জবাব দিই।”
২৬- رواه أحمد (١٦/٤٧٧) ط الرسالة ، وأبو داود (٢٠٤١) وصححھ النووي في ” الأذكار ” .١٥٤)
ইমাম সূয়ূতী (রহঃ) কর্তৃক পূর্বোক্ত বর্ণনার ধারাবাহিক ব্যখ্যা – ১
____________________________
ولا شك أن ظاھر ھذا الحدیث مفارقة الروح لبدنھ الشریف في بعض الأوقات وھو مخالف للأحادیث السابقة، وقد تأملتھ ففتح علي في الجواب عنھ بأوجھ :
নিশ্চয় এ হাদীসটির যাহেরী দিক প্রমাণ করে যে, কিছু সময়ের জন্য হলেও প্রিয়নবীর দেহ মুবারক থেকে তাঁর রূহ মুবারক পৃথক বা বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে; যা পূর্ববর্তী হাদীসগুলোর সাথে বিরোধপূর্ণ। তাই আমি এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করলাম, ফলে আমার নিকট কয়েকটি জবাব উন্মোচিত হলোঃ
الأول – وھو أضعفھا – أن یدعي أن الراوي وھم في لفظة من الحدیث حصل بسببھا الإشكال ، وقد ادعى ذلك العلماء في أحادیث كثیرة ولكن الأصل خلاف ذلك فلا یعول على ھذه الدعوى .
প্রথম জবাব:
___________
(যা সবচেয়ে দুর্বল) তা হলো, হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে রাভীগণের শব্দের মধ্যে ভিন্নতার কারণেই মূলত এ সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে; যা অনেক ওলামা দাবী করেছেন; যদিও বা তা আসলের সাথে বিরোধপূর্ণ। তাই তাঁদের এ দাবীর প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
الثاني : وھو أقواھا ولا یدركھ إلا ذو باع في العربیة أن قولھ : ” رَ َّ د ﷲُ جمل ة حالی ة ، وقاع دة العربی ة أن جمل ة الح ال إذا وقع ت فع لا ماض یا قدرت فیھا قد كقولھ تعالى : أو جْاءَوُكم حْصَرِتَ ص دوُرصُدورُھمُھمْ ََأنَْ یُُُْقُاتِلوُكُمْ أوَْ یُقُاَتِلوُا قوَْمَھُمُْ (سورة النساء-٩٠) والآیة بكاملھا: َّ إِلا َّ الذِینَ یصَِلوُنَ إِلىَٰ قوْمٍ بیَْنكَُمْ وَبیَْنھَُمُ ِّ میثاقٌ أوَْ جَاءوُكمُ حْصَرِتَ ص دوُرصُ دورُھمُھمُْ أنَ یُُُْقُاتِلوُكُمْ أوَْ یُقَُاتِلُوُا قَوْمَھُمُْ ۚ وَلَوْ شَاءَ ﷲُ َّ َّ لسَلطَھُمُْ عَلیْكُمْ فلَقَاتلَوُكُمْ ۚ فإنِِ اعْتزََلوكُمْ فلَمْ یُقُ اتِلِوُكُمْ وَألَْق وْا إلِ یْكُمُ السَّ لمََ فمََ ا جَعَ لَ َّ ﷲُ لكَُ مْ عَل یْھِمْ سَ بیِلًا ) أي : ق د حصرت ،
দ্বিতীয় জবাব:
___________
(যা সর্বাধিক শক্তিশালী), যা আরবী ভাষার পন্ডিত ব্যক্তিবর্গ ব্যতিরেকে অন্যরা অনুধাবন করতে পারে না। আর তা হলোঃ এখানে প্রিয় নবীর কথা رَد ﷲ َّ (আল্লাহ তা‘আলা ফিরিয়ে দেন) বাক্যটি ‘জুমলায়ে হালিয়া’ (অবস্থার বর্ণনাসূচক বাক্য)। আর আরবী কায়েদা হলো- যদি জুমলায়ে হালিয়া فعل ماضى (অতীতকাল সূচক ক্রিয়া) হয়,
তাহলে এতে একটি قدَْ উহ্য থাকে; যেমন আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন,
جآءَ وُكْم حْصَرِتَُْ ص دوُرْصُدورُھمُھمْ
তরজমা: যারা তোমাদের নিকট এমন অবস্থায় আগমন করে যখন তাদের মন তোমাদের সাথে অথবা তাদের সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করতে সংকুচিত
হয়। [নিসা: ৯০]
وكذا تقدر ھنا والجملة ماضیة سابقة على السلام الواقع من كل أحد
অনুরূপ, উপরোক্ত হাদীসেও قدْ উহ্য রয়েছে। এ বাক্যটিও (ر َّ ُدتْ) অতীতকাল বাচক। এরূহ্ ফিরিয়ে দেওয়া কারো সালাম দেওয়ার পূর্বে সংঘঠিত হয়েছে। ،وحتى لیست للتعلیل، بل مجرد حرف عطف بمعنى الواو
অর্থাৎ আর حتى এখানে تعلیل বা কারণ বুঝানোর জন্য নয়; বরং তা
‘হরফে আত্ফ’, যা واو বা ‘এবং’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
فصار تقدیر الحدیث : ما من أحد یسلم علي إلا قد رد ﷲ علي روحي قبل ذلك فأرد علیھ،
সুতরাং এ হাদীসের প্রকৃত অর্থ দাঁড়াল: ‘যে কেউ আমার প্রতি সালাম পেশ করবে অথচ তার পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা আমার রূহকে ফিরিয়ে দিয়েছেন এবং আমি তার সালামের উত্তর দিই।’’
وإنم ا ج اء الإش كال م ن ظ ن أن جمل ة رد ﷲ عل ي بمعن ى الح ال أو الاستقبال ، وظن أن حتى تعلیلیة ، ولیس كذلك ، وبھذا الذي قررناه ارتفع الإشكال من أصلھ
অর্থাৎ তখন সন্দেহের সৃষ্টি হবে, যখন কেউ মনে করে থাকে যে, رَد ﷲُ َّ عَلى َّ (আল্লাহ আমাকে রূহ ফিরিয়ে দেন) বাক্যটি ‘হাল’ (বর্তমানকাল বাচক) অথবা ‘ইস্তিক্ববাল (ভবিষ্যৎকাল বাচক)
হয় আর মনে করে থাকে যে, এখানে حتى (হাত্তা) শব্দটি تعلیلیة বা কারণের বর্ণনাসূচক; অথচ এ রূপ নয়। বস্তুত, আমি যা বর্ণনা করেছি, তা দ্বারা সকল সন্দেহ দূরীভূত হয়ে যায়।
، وأیده من حیث المعنى أن الرد ولو أخذ بمعنى الحال والاستقبال لزم تك رره عن د تك رر المس لمین ، وتك رر ال رد یس تلزم تك رار المفارق ة ، وتكرار المفارقة یلزم علیھ محذوران
এর অর্থ – َّ رَد ﷲَ আর অর্থের দিক দিয়ে এর সমর্থনে বলা যায় যে, যদি বর্তমান বা ভবিষ্যৎকাল ধরে নেয়া হয়, তাহলে একথা অনিবার্য হয়ে যাবে যে, যত বারই মুসলমানগণ সালাম দেবে ততবারই রূহ ফিরিয়ে দেয়া হবে। আবার ফিরিয়ে নেয়া হবে। রূহের এ নেওয়া-দেওয়ার ফলে হুযূর-ই আক্রামের রূহ্ মুবারক তাঁর নূরানী দেহ্ মুবারক থেকে বারংবার বের হওয়াও অনিবার্য হয়ে যায়। এটাও কখনও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কারণ এতে কয়েক ধরনের বিপদ ও ভয়াবহতা আরোপিত হবেঃ
أحدھما تألیم الجسد الشریف بتكرار خروج الروح منھ أو نوع ما من ، مخالفة التكریم إن لم یكن تألیم
(এক)
তাঁর দেহ মুবারকে বারবার ব্যাথা অনুভূত হওয়া, রূহ মুবারককে বার বার দেওয়া ও নওয়ার কারণে। অথবা এ ধরণের কাজ প্রিয় নবীর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সম্মানের বিপরীত, যদিও বা ব্যাথা অনুভূত না হয়।
والآخر مخالفة سائر الناس الشھداء وغیرھم ، فإنھ لم یثبت لأحد منھم أن یتكرر لھ مفارقة الروح وعودھا في البرزخ ، والنبي صلى ﷲ علیھوسلم أولى بالاستمرار الذي ھو أعلى رتبة،
(দুই)
তা শহীদগণ ও অন্যান্য নেক বান্দাদের শানের বিপরীত। কেননা তাঁদের কারও ক্ষেত্রে এ কথা প্রমাণিত নয় যে, বরযখে (কবরে) তাঁদের রূহ্ তাদের দেহ থেকে বারংবার পৃথক করা হয়, আবার ফিরিয়ে দেয়া হয়। আর তাঁদের রূহ তাঁদের দেহে সর্বদা বিদ্যমান থাকে। বস্তুত: নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর রূহ্ মুবারক সর্বদা বিদ্যমান থাকার বেশী উপযোগী, যিনি তাঁদের চেয়ে মর্যাদায় অনেক ঊর্ধ্বে।
ومحذور ثالث وھو مخالفة القرآن فإنھ دل على أنھ لیس إلا موتتان .وحیاتان ، وھذا التكرار یستلزم موتات كثیرة وھو باطل
(তিন)
তা পবিত্র ক্বোরআনেরও বিপরীত। কেননা ক্বোরআনুল করীম প্রমাণ করে যে, দুইটি মৃত্যু এবং দুইটি হায়াত। আর এখানে বারংবার রূহ মুবারকের আসা-যাওয়া অসংখ্য-অগণিত মৃত্যু ও হায়াতকে আবশ্যক
করবে। এটা অগ্রহণযোগ্য।
ومحذور رابع وھو مخالفة الأحادیث المتواترة السابقة وما خالف القرآن والمتواتر من السنة وجب تأویلھ ، وإن لم یقبل التأویل كان . باطلا ; فلھذا وجب حمل الحدیث على ما ذكرناه
(চার)
এটা পূর্ববর্তী হাদীসে মুতাওয়াতিরের বিপরীত। আর যা ক্বোরআন ও হাদীসে মুতাওয়াতিরের সাথে বিরোধপূর্ণ হয়, তা অবশ্য পূর্ণ তাবীল বা ভিন্ন ব্যাখ্যার উপযোগী। আর যদি তা’ভীল বা ভিন্ন ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে তা বাতিল বা অগ্রহণযোগ্য।
তাই উপরোক্ত হাদীসকে পূর্বোল্লেখিত নিয়মে বাখ্যা করতে হবে।
الوجھ الثالث : أن یقال أن لفظ الرد قد لا یدل على المفارقة ، بل كنى بھ عن مطلق الصیرورة كما قیل في قولھ تعالى حكایة عن شعیب علیھ السلام قد : اِفترْیَناَ علىَ ﷲ كِذبَا إن عُْدناْ فيِ َّ ِِِِِملتِكمَُِ ًْْْبعدَْبعدَ ِِإذِْ نجَ ََََََََّانَا َّ َّ ﷲُ
(٨٩-مِنْھَا ۚ (الأعراف
তৃতীয় জবাব:
___________
এখানে رَد َّ (রাদ্দা) শব্দটি পৃথক বা বিচ্ছিন্ন হওয়ার অর্থ বুঝায় না বরং তা দ্বারা শুধু ‘হয়ে যাওয়া’ বুঝায়; যে ভাবে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হযরত শোয়াইব আলায়হিস্ সালাম এর ঘটনার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে-
(قدَِ افْترََیْناَ عَلىَ ﷲَّ ِ كَذِباً إِنْ عُدْناَ فِيِ مِلتَّ ِكُِم بعَْدَ إِذِْ َّ نجَاناَ َّ ﷲُ مِنْھاَ ۚ)
অর্থাৎ “যদি আমরা তোমাদের ধর্মের অনুসারী হয়ে যাই, তাহলে তো আমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করলাম এরপর যে, আল্লাহ্ আমাদেরকে তা থেকে নাজাত দিয়েছেন। [আ’রাফ: ৮৯]
إن لف ظ الع ود أری د ب ھ مطل ق الص یرورة لا الع ود بع د انتق ال ; لأن شعیبا علیھ السلام لم یكن في ملتھم قط،
এখানে عُدْناَ শব্দটি عاد یعود থেকে। যার অর্থ হলো ফিরে যাওয়া, কিন্তু এখানে সে অর্থে ব্যবহৃত হয়নি; বরং ‘রূপান্তরিত হওয়া বা হয়ে যাওয়া’ ইত্যাদি বুঝায়, ফিরে যাওয়া নয়। কেননা হযরত শোয়াইব আলায়হিস্ সালাম কখনও তাদের ধর্মে ছিলেন না।
وحسن استعمال ھذا اللفظ في ھذا الحدیث مراعاة المناسبة اللفظیة بینھ وبین قول ھ ” : حتى أرد علیھ السلام ” ، فج اء لف ظ ال رد في ص در . الحدیث لمناسبة ذكره في آخر الحدیث
এখানেও এ رَد َّ শব্দটি ব্যবহার করার নান্দনিকতা হলো- এ শব্দ এবং পরবর্তী শব্দ ◌أرَُدّ َ উভয়ের মধ্যকার শব্দগত মিল রয়েছে। তাই অর্থের দিক থেকে একই না হবার পরও উল্লেখের সৌন্দর্য্যরে জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। তাই رد শব্দটি হাদীসের শুরুতে এসেছে হাদীসের শেষের দিকেও এসেছে এ শব্দটি ইতোপূর্বে ব্যবহৃত হবার কারণেই।
الوجھ الرابع : وھو قوي جدا ، أنھ لیس المراد برد الروح عودھا بعد
المفارقة للبدن،
———–
رد الروح
এর অর্থের
চতুর্থ জবাব: (এটি অত্যন্ত শক্তিশালী)।
___________
এখানে নয় যে, রূহটি দেহ থেকে পৃথক হবার পরে আবার তা ফিরিয়ে দেয়া হয়; বরং তার মূল অর্থ বা উদ্দেশ্য হলো,
وإنما النبي صلى ﷲ علیھ وسلم في البرزخ مشغول بأحوال الملكوت مستغرق في مشاھدة ربھ كما كان في الدنیا في حالة الوحي وفي أوقات أخر ، فعبر عن إفاقتھ من تلك المشاھدة وذلك الاستغراق برد الروح،
কেননা নবী করীম (ﷺ) তাঁর বরযখী জীবনে অবস্থান করছেন। সেখানে তিনি মালাকুতী (উর্ধ্ব) জগতের নানা অবস্থাদি নিয়ে ব্যস্ত। তিনি স্বীয় রবের দিদার ও মোশাহাদায় সর্বদা নিমজ্জিত আছেন; যেমনি ভাবে তিনি ব্যস্ত ও মশগুল থাকতেন দুনিয়াতেও, যখন তাঁর প্রতি ওহী নাযিল হচ্ছিলো, তখন এবং বিশেষ বিশেষ অবস্থায়। তাই এখানে তাঁর ওই খোদায়ী দর্শন (মোশাহাদা) ও মালাকুতী জগতে মশগুল ও নিমজ্জিত থাকার অবস্থা থেকে, এদিকে (অর্থাৎ সালামের জবাবের দিকে) মনোনিবেশ করাকে رد الروح বা রূহ ফিরে আসা হিসেবে ব্যক্ত করা হয়েছে।
হাদিস ২৭ :
ونظیر ھذا قول العلماء في اللفظة التي وقعت في بعض أحادیث الإسراء وھي قولھ ” : فاستیقظت وأنا بالمسجد الحرام. (٢٧)
তার প্রমাণ স্বরূপ মি’রাজ সম্পর্কে বর্ণিত হাদিসগুলো উপস্থাপন করা যায়। যেখানে রাসূলে করীম (ﷺ) বলেছেন,
فاستیقظت وأنا بالمسجد الحرام
(আমি জাগ্রত হয়ে দেখলাম আমি মসজিদে হারামে উপস্থিত)। [২৭- البخاري-٧٥١٧]
____________
لیس المراد الاستیقاظ من نوم فإن الإسراء لم یكن مناما ، وإنما” .المراد الإفاقة مما خامره من عجائب الملكوت
এ ক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামের ভাষ্য হলো, এখানে استیقاظ বা জাগ্রত হওয়া মানে নিদ্রা থেকে জাগ্রত হওয়া নয়; কেননা মি’রাজ নিদ্রাবস্থায় সংঘটিত হয়নি বরং জাগ্রতাবস্থায় হয়েছে। তাই হাদীসে বর্ণিত শব্দটির অর্থ হবে মি’রাজ রজনীতে সৃষ্টির নানা আজব ও চিত্তাকর্ষক দৃশ্যাবলীতে বিভোর হওয়া থেকে জাগ্রত হওয়া বা এদিকে মনোনিবেশ করা।
وھذا الجواب الآن عندي أقوى ما یجاب بھ عن لفظة الرد ، وقد كنت ، .رجحت الثاني ثم قوي عندي ھذا
এখন এ উত্তরটি আমার নিকট অত্যন্ত শক্তিশালী হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। ردّ শব্দ নিয়ে যে উত্তরগুলো পেশ করা হয়েছে, তার চেয়েও এ উত্তর আমার নিকট অধিক মজবুত। আমি ইতোপূর্বে দ্বিতীয় উত্তরটিকে প্রাধান্য দিয়েছিলাম, কিন্তু আমার নিকট এখন এটিই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ও মজবুত মনে হচ্ছে।
الوجھ الخامس : أن یقال إن الرد یستلزم الاستمرار ; لأن الزمان لا یخلو من مصل علیھ في أقطار الأرض فلا یخلو من كون الروح في بدنھ .
পঞ্চম জবাব:
___________
এ ক্ষেত্রে বলা যায়, ‘রূহ ফিরিয়ে দেওয়া’ বাক্যটি নবী করীম (ﷺ) এর রূহ মুবারক সার্বক্ষণিকভাবে তাঁর দেহ মুবারকে বিদ্যমান ও অব্যাহত থাকাকে অনিবার্য করে। কেননা, এমন কোন সময় নেই যখন, বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে, কোননা কোন ব্যক্তি প্রিয় নবীর প্রতি দুরূদ-সালাম পেশ করছেনা। অর্থাৎ প্রতি মুহূর্তে, প্রতিক্ষণে প্রিয়নবীর প্রতি সদা-সর্বদা দুরূদ ও সালাম অব্যহত রয়েছে। কোন ধরনের বিরতি নেই। তাই সদা-সর্বদা তাঁর রূহ মুবারকও তাঁর দেহ মুবারকে বিদ্যমান। কোন অবস্থাতেই তা পৃথক বা বিচ্ছিন্ন হচ্ছে না।
السادس : قد یقال : إنھ أوحي إلیھ بھذا الأمر أولا قبل أن یوحى إلیھ بأنھ لا یزال حیا في قبره ، فأخبر بھ ثم أوحي إلیھ بعد بذلك ، فلا منافاة
لتأخیر الخبر الثاني عن الخبر الأول،
ষষ্ঠ জবাব:
___________
বলা যেতে পারে, এ বিষয়ে প্রিয় নবীকে প্রথমে বলা হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে তাঁর নিকট ওহী প্রেরণ করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, তিনি সার্বক্ষণিকভাবে তাঁর কবর শরীফে জীবিত থাকবেন। সুতরাং এতে কোন বিরোধ থাকছেনা; বরং প্রথমটি হবে মানসুখ এবং শেষোক্ত হবে নাসিখ।
ھذا ما أفتح ﷲ بھ من الأجوبة ولم أر شیئا منھا منقولا لأحد ، ثم بعد كتابتي لذلك راجعت كتاب “الفجر المنیر فیما فضل بھ البشیر النذیر” للشیخ تاج الدین بن الفاكھاني المالكي فوجدتھ قال فیھ ما نصھ
উপরোক্ত জবাবগুলো আল্লাহ তা‘আলা আমার জন্য উন্মোচিত করে দিয়েছেন। যে বিষয়ে কারও নিকট থেকে কোন ধরনের বর্ণনা আমি পায়নি।
ইমাম তাজুদ্দিন ইবনে ফাকেহানী আল মালেকী (রহঃ) এর বক্তব্য
___________________________
আমার এ উত্তর লিখার পর আমি যখন শেখ তাজুদ্দিন ইবনে ফাকেহানী আল মালেকী রচিত “আল্ ফাজরুল মুনীর ফীমা ফুদ্ব্দ্বিলা বিহিল বাশীরুল নাযীর” কিতাবটি অধ্যয়ন করলাম, তখন দেখলাম তিনি সেখানে লিখেছেন, যা হুবহু নিম্নরূপ,
হাদিস ২৮ :
روینا في الترمذي قال : قال رسول ﷲ صلى ﷲ علیھ وسلم : ما من أحد یسلم علي إلا رد ﷲ علي روحي حتى أرد علیھ السلام . (٢٨)
আমরা তিরমিযীতে বর্ণনা পেয়েছি যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেছেন, “যখন কোন ব্যক্তি আমার প্রতি সালাম পেশ করে তখন আল্লাহ তা‘আলা আমার রূহকে ফিরিয়ে দেন, যাতে আমি তার সালামের জবাব দিই।”
২৮- رواه أحمد (١٦/٤٧٧) ط الرسالة ، وأبو داود (٢٠٤١) وصححھ النووي في ” الأذكار ” (١٥٤.
______________
یؤخذ من ھذا الحدیث أن النبي صلى ﷲ علیھ وسلم حي على الدوام ، وذلك أنھ محال عادة أن یخلو الوجود كلھ من واحد مسلم على النبي
صلى ﷲ علیھ وسلم في لیل أو نھار
এ হাদীস শরীফ থেকে এ কথা প্রমাণিত হয় যে, নবী করীম (ﷺ) সার্বক্ষনিক ভাবে জীবিত। কেননা স্বাভাবিক ভাবে এটা অসম্ভব যে, রাত-দিনের এমন কোন মুহূর্ত খালি থাকা যে মুহূর্তে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর উপর সালাত সালাম পাঠ করা হচ্ছে না।
، فإن قلت : قولھ علیھ السلام ” : إلا رد ﷲ إلي روحي “لا یلتئم مع كونھ حیا على الدوام بل یلزم منھ أن تتعدد حیاتھ ووفاتھ في أقل من ساعة ، إذ الوجود لا یخلو من مسلم یسلم علیھ كما تقدم ، بل یتعدد السلام علیھ في الساعة الواحدة كثیرا.
যদি প্রশ্ন কর যে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর বাণী “আল্লাহ তা‘আলা আমার নিকট আমার রূহকে ফিরিয়ে দেন” একথাটি নবী করীম (ﷺ) এর সার্বক্ষণিকভাবে জীবিত থাকার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; বরং তা দ্বারা ক্ষণিক সময়ের মধ্যে তাঁর অনেক বার হায়াত ও ইন্তিকাল করা প্রমাণ করে। কেননা কোন একটি মুহূর্তও খালি যাচ্ছে না তাঁর উপর দুরূদ-সালাম প্রেরণ করা থেকে। এমনকি একটি মাত্র মুহূর্তে তাঁর উপর অসংখ্যবার সালাত-সালাম প্রেরণ করা হচ্ছে।
فالجواب وﷲ أعلم أن یقال : المراد بالروح ھنا النطق مجازا ، فكأنھ قال علیھ السلام : إلا رد ﷲ إلي نطقي وھو حي على الدوام ، لكن لا ،یلزم من حیاتھ نطقھ ، فا سبحانھ یرد علیھ النطق عند سلام كل مسلِّ م
উত্তরে বলা যায়, (আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন) এখানে রূহ থেকে রূপকভাবে النطق (কথা বলা) বুঝানো উদ্দেশ্য। সুতরাং এর অর্থ দাঁড়ায়, আল্লাহ তা‘আলা আমার নিকট আমার কথা বলার শক্তিকে ফিরিয়ে দেন। তিনি সদা-সর্বদা জীবিত। কিন্তু তাঁর জীবিত থাকা তাঁর কথা বলাকে আবশ্যক করে না। অতএব, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর উপর কথা বলার শক্তিকে ফিরিয়ে দেন যখন কেউ তাঁর উপর সালাম পাঠ করে।
وعلاقة المجاز أن النطق من لازمھ وجود الروح كما أن الروح من لازمھ وجود النطق بالفعل أو القوة ، فعبر علیھ السلام بأحد المتلازمین عن الآخر ، ومما یحقق ذلك أن عود الروح لا یكون إلا مرتین عملا بقولھ تعالى:
আর এখানে রূপক অর্থ নেয়ার কারণ হলো, কথা বলার শক্তি রূহ থাকাকে আবশ্যক করে; যেমনিভাবে রূহের আবশ্যকতাগুলোর মধ্যে একটি হলো, কথা বলার শক্তি। বাস্তবে হোক কিংবা শক্তির দিক থেকে হোক। তাই নবী করীম (ﷺ) এখানে দুইটি পরস্পর আবশ্যিক (রহূ ও কথা) থেকে একটির উল্লেখ করেছেন। কখনও এটিও প্রমাণিত হয় যে, রূহ ফিরিয়ে দেয়াটা মাত্র দুইবার হয়ে থাকে তার চেয়ে বেশী নয়। যা পবিত্র কোরআন দ্বারা প্রমাণিত।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
قالَوُا ربَنَّ اَّ َّ أمَتَنا ْاثنْتَیَنْ ْ ْوأَحَیْیَتْنَاَ ْاثنْتَیَنْ فاعَتْرَفَنْاَ ِِِِبذِنُوُبنِاَََََََََََ فھَلَْ إلىَٰ خرُوجٍ
مِّ ن سَبِیلٍ (غافر-١١ ) ھذا لفظ كلام الشیخ تاج الدین
“তারা বলল, হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি আমাদেরকে মৃত্যু দিয়েছ দু’বার এবং জীবিত করেছ দু’বার। (গাফির: ১১)
[এটুকু ছিল শেখ তাজুদ্দিনের বক্তব্য]
ইমাম সূয়ূতী (রহঃ) কর্তৃক পূর্বোক্ত বর্ণনার ধারাবাহিক ব্যখ্যা – ২
____________________________
ইমাম সুয়ূতী বলেন,
وھذا الذي ذكره من الجواب لیس واحدا من الستة التي ذكرتھا. فھو إن – سلم – جواب سابع
শেখ তাজুদ্দিন যে উত্তরটি দিয়েছেন সেটি উপরোক্ত ছয়টি উত্তরের কোন একটি নয়, যদি এ উত্তরটি যথাযথ হয় তাহলে এটাকে সপ্তম জবাব হিসেবে ধরে নেয়া যায়, যেগুলো আমি দিয়েছি।
وعندي فیھ وقفة من حیث إن ظاھره أن النبي صلى ﷲ علیھ وسلم مع كونھ حیا ف ي البرزخ یمن ع عن ھ النطق ف ي بعض الأوق ات ویرد علی ھ عن د س لام المسلم علیھ ، وھذا بعید جدا بل ممنوع، فإن العقل والنقل یشھدان بخلافھ،
তবে শেখ তাজুদ্দিনের জবাবের ক্ষেত্রে আমার কিছু বক্তব্য রয়েছে। কেননা তাঁর বক্তব্য বাহ্যিকভাবে প্রমাণ করে যে, নবী করীম (ﷺ) বরযখে জীবিত থাকলেও কিছু কিছু সময়ে তিনি কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। শুধুমাত্র কেউ তাঁর উপর সালাম পেশ করলে তখনই তিনি সালামের জবাব দিতে পারেন ও কথা বলতে পারেন। অন্য সময় নয়।
এ বক্তব্যটি বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে, বরং বর্জনীয় ও পরিত্যাজ্য। কেননা আক্বল ও নক্বল কোনটাই এ বক্তব্য সমর্থন করে না। কারণ
أما النقل فالأخبار الواردة عن حالھ صلى ﷲ علیھ وسلم وحال الأنبیاء علیھم السلام في البرزخ مصرحة بأنھم ینطقون كیف شاءوا لا یمنعون من شيء ، بل وسائر المؤمنین كذلك الشھداء وغیرھم ینطقون في البرزخ بما شاءوا غیر ممنوعین من شيء ، ولم یرد أن أحدا یمنع من النطق في البرزخ إلا من مات عن غیر وصیة ،
প্রথমত: নক্বল (উদ্ধৃতি) হলো: রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং অন্যান্য নবী ও রাসূলগণ আলায়হিস্ সালাম এর বরযখী অবস্থা বিশুদ্ধ বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্ট এবং প্রমাণিত যে, তাঁরা যেভাবে চান সেভাবে কথা বলতে পারেন। তাঁদেরকে কোন কিছু তা থেকে বিরত করতে পারে না; বরং সকল মু’মিন, সকল শহীদ এবং অন্যান্যরাও তাদের বরযখী জীবনে যেভাবে চান সেভাবে কথা বলতে পারেন। এতে কোন বাধা নেই। একমাত্র যে ওসীয়ত করা ব্যতিরেকে মারা গেছে সেই কবরে কথা বলতে পারবে না।
__________
হাদিস ২৯ :
أخرج أبو الشیخ بن حیان في كتاب الوصایا عن قیس بن قبیصة قال : قال رسول ﷲ صلى ﷲ علیھ وسلم من لم یوص لم یؤذن لھ في الكلام مع الموتى ، قیل : یا رسول ﷲ وھل یتكلم الموتى ؟ قال : نعم ویتزاورون . (٢٩)
যা আবুশ শাইখ তাঁর ‘‘আল ওসায়া’’ নামক কিতাবে হযরত ক্বায়স ইবনে ক্বাবীসাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন,
“যে ব্যক্তি ওসীয়ত করেনি (মৃত্যুর পূর্বে ওসীয়ত না করে মারা যায়) তাকে মৃত
ব্যক্তিদের ন্যায় কথা বলার অনুমতি দেয়া হবে না। জিজ্ঞেস করা হলো- ইয়া রাসূলাল্লাহ্! মৃত ব্যক্তিরা কি কথা বলতে পারে? বললেন, ‘‘হাঁ’’। তারা কথাও বলতে পারে এবং পরস্পর সাক্ষাতও করতে পারে।”
২৯- (أخرجھ أبو الشیخ في الوصایا كما في الكنز (٤٦٠٨٠)، والدیلمي في الفردوس (٥٩٤٥) وذكره الحافظ في الإصابة (٣/ ٢٤٧). وتصدیقھ ما رواه ابن أبي الدنیا عن بعض من یحفر القبور أنھ حفر قبرًا ونام عنده فأتاه امرأتان فقالت إحداھما: أنشدك ﷲ إلا صرفت عنا ھذه المرأة، فاستیقظ فإذا بامرأة جيء بھا فدفنھا في قبر آخر فرأى تلك اللیلة المرأتین تقول، إحداھما: جزاك ﷲ خیرًا ،فقال: ما لصاحبتك لا تتكلم، فقالت: ماتت بغیر وصیة ومن لم یوص لم یتكلم إلى یوم القیامة)
ইমাম তক্বী উদ্দিন আস-সুবকী (রহঃ) এর বক্তব্য
______________________
প্রমাণ ৩০ :
وقال الشیخ تقي الدین السبكي : حیاة الأنبیاء والشھداء في القبر كحیاتھم في الدنیا، ویشھد لھ صلاة موسى في قبره ، فإن الصلاة تستدعي جسدا حیا ، وكذلك الصفات المذكورة في الأنبیاء لیلة الإسراء كلھا صفات الأجسام ، ولا یلزم من كونھا حیاة حقیقة أن تكون الأبدان معھا كما كانت في الدنیا من الاحتیاج إلى الطعام والش راب ، وأما الإدراك ات كالعلم والسماع فلا شك أن ذلك ثابت لھم ولسائر الموتى، انتھى. (٣٠)
শেখ তক্বী উদ্দিন আস-সুবকী বলেন: “নবীগণ ও শহীদগণের কবরের জীবন ঠিক তাঁদের দুনিয়ার জীবনের মতই, যার প্রমাণ হলো-
★ হযরত মুসা আলায়হিস্ সালাম এর নিজ কবরে নামায আদায়। কেননা নামাযের জন্য দেহ জীবিত থাকা আবশ্যক।
★ অনুরূপভাবে, মি’রাজ রজনীতে নবীগণের অবস্থাও ছিল ঠিক তাই। অর্থাৎ দেহসহ তাঁদের উপস্থিতি ও নামায আদায় করা।
★ আবার তাঁদের বরযখের জীবন ‘হাক্বীক্বী হায়াত’ হওয়াটা একথাও আবশ্যক করে না যে, দুনিয়াতে দেহ যেভাবে খাদ্য ও পানীয়ের প্রতি মুখাপেক্ষী।
★ অনুরূপভাবে বরযখেও,
আর অনুভূতি শক্তি তথা কথা বলা, জানা, শোনা ইত্যাদি বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে, এ বিষয়টি তাঁদের জন্যও প্রমাণিত এবং অন্যান্য সাধারণ মৃতদের ক্ষেত্রেও প্রমাণিত সত্য।
৩০- السیرة الحلبیة = إنسان العیون في سیرة الأمین المأمون.
[এখানে ইমাম সুবকীর বক্তব্য শেষ]
______________________
ইমাম সূয়ূতী (রহঃ) কর্তৃক পূর্বোক্ত বর্ননার ধারাবাহিক ব্যখ্যা – ৩
____________________________
প্রমাণ ৩১ :
وأما العقل فلأن الحبس عن النطق في بعض الأوقات نوع حصر وتعذیب ، ولھذا عذب بھ تارك الوصیة ، والنبي صلى ﷲ علیھ وسلم منزه عن ذلك ، ولا یلحقھ بعد وفاتھ حصر أصلا بوجھ من الوجوه كما قال لفاطمة رضي ﷲ عنھا في مرض وفاتھ : ثاَبتٌِ البُْناَنيُِّ قَالَ : لمَ َّا ثقلَُ رسَولرسُولُ ﷲ صلَىَّ ﷲَّ َّ علَیَھْ وسَلَمَّ َُ ، ضمَ َّتھْتھُ ِِفَاطِمَةُ إلَِى ََََََََََِصَدْرِھَا ، وجَعَلَ یتَغَشَاَّ هُ الكْرَبْالكربُ ، وَجَعَلَتْ َََََََََفَاطِمَةُ تَقُولولُ : یَا كَرْبَاهكرباهُ لكَِرْبِ أَبََتَاهُ ، فقَاَل رسَ ولرسُولُ َّ ََِﷲِ صلى ﷲ علیھ وسلم ” : لا كرَبْ علَىَ أبَیِكِ بعَدْبعدَ ََََالْیَوْمِ “
(٣١)
দ্বিতীয়ত : আক্বল, আর তা হলো- কেননা কিছু সময়ের জন্য হলেও কথা বলার শক্তি কেড়ে নেয়া বা বাকরুদ্ধতা এক প্রকার সীমাবদ্ধকরণ ও কষ্ট দেওয়া। এ কারণে, এ ধরনের শাস্তি দেয়া হয়েছে একমাত্র ওসীয়াত ত্যাগকারীকে। আর নবী করীম (ﷺ) সর্বাবস্থায় পুত:পবিত্র। সুতরাং তাঁর ওফাতের পর তাঁর উপর কোন ধরনের সীমাবদ্ধতা আরোপিত হবে না। যেমনি ভাবে প্রিয় নবী (ﷺ) তাঁর ওফাতের সময় হযরত ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহাকে বলেছিলেন, “আজকের পর তোমার পিতার উপর আর কোন ধরনের মুসীবত বা বিপদ নেই।”
৩১- صحیح البخاري كتاب المغازي باب مرض النبي صلى ﷲ علیھ وسلم ووفاتھ. رقم الحدیث-٤١٩٣.
_______________
وإذا كان الشھداء وسائر المؤمنین من أمتھ إلا من استثنى من المعذبین لا یحصرون بالمنع من النطق فكیف بھ صلى ﷲ علیھ وسلم،
তাঁর উম্মতের মধ্যে এক শ্রেণীর শাস্তি প্রাপ্ত ব্যতিরেকে যদি সকল শহীদগণ ও ঈমানদারগণকে বাকরুদ্ধ করার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ করা না হয়, তাহলে নবী করীম (ﷺ) কে কিভাবে তা করা হতে পারে?
، نع م یمك ن أن ینتزع م ن ك لام الش یخ ت اج ال دین جواب آخ ر ویق رر بطریق أخر، وھو أن یراد بالروح النطق وبالرد الاستمرار من غیر مفارقة على حد ما قررتھ في الوجھ الثالث
হাঁ, তবে শেখ তাজুদ্দীনের বক্তব্য থেকে অন্য একটি জবাব খুঁজে বের করা যায় এবং অন্যভাবে এ বক্তব্যটি ব্যক্ত করা যায়। আর তা হলো,
‘রূহ’ দ্বারা কথা বলা এবং ‘ফিরিয়ে দেয়া’ দ্বারা পৃথক হওয়া ব্যতিরেকে সার্বক্ষণিকভাবে অব্যাহত থাকার অর্থ নেয়া যায়; যা আমি আমার তৃতীয় জবাবে উল্লেখ করেছি।
ویكون في الحدیث على ھذا مجازان : مجاز في لفظ الرد ، ومجاز في لفظ الروح ، فالأول استعارة تبعیة ، والثاني مجاز مرسل ، وعلى ما قررتھ في الوجھ الثالث یكون فیھ مجاز واحد في الرد فقط .
এ হিসেবে অত্র হাদিসে দুইটি মজায বা রূপক রয়েছে। একটি হলো الرد শব্দে, অপরটি হলো الروح শব্দে। তাই প্রথমটি استعارة تبعیھ ; অপরটিمجاز مرسل; আর আমি যা তৃতীয় জবাবে প্রমাণ করেছি এতে মাজায مجاز হলো মাত্র একটি; তা হলো الردّ শব্দে।
ویتولد من ھذا الجواب جواب آخر وھو أن یكون الروح كنایة عن السمع ، ویكون المراد أن ﷲ یرد علیھ سمعھ الخارق للعادة بحیث یسمع المسلم وإن بعد قطره ویرد علیھ من غیر احتیاج إلى واسطة مبلغ
এ উত্তর থেকে আরও একটি উত্তরের সূত্রপাত হয়, আর তা হলো: এখানে الروح (রূহ) শব্দ দ্বারা السمع (শ্রবণশক্তি) বুঝানো হয়েছে। সুতরাং অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে এমন এক শ্রবণশক্তি দান করেন, যা সম্পূর্ণরূপে অস্বাভাবিক, যার মাধ্যমে তিনি বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে সালাম প্রদানকারীর সালাম শুনতে পান, কোন ধরনের মাধ্যমের সাহায্য ছাড়াই।
প্রমাণ ৩২ :
ولیس المراد سمعھ المعتاد ، وقد كان لھ صلى ﷲ علیھ وسلم في الدنیا حالة یسمع فیھا سمعا خارقا للعادة بحیث كان یسمع أطیط السماء كما (٣٢) .بینت ذلك في كتاب المعجزات
এটা দ্বারা তাঁর স্বাভাবিক শ্রবণ শক্তিকে বুঝায় না। কেননা রাসূলে করীম (ﷺ) এর দুনিয়াতেও এমন কিছু অবস্থার অবতারণতা হতো, যে অবস্থায় তিনি এমনভাবে শুনতেন, যা ছিল সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক ও সাধারণ নিয়মের বিপরীত। এমনকি তিনি আসমানে বিরজমান শব্দগুলোও শুনতে পেতেন।
৩২- من طریق عبد الوھاب بن عطاء حدثنا سعید بن أبي عروبة عن قتادة عن صفوان بن محرز عن حكیم بن حزام قال: ” بینما رسول ﷲ صلى ﷲ علیھ وسلم في أصحابھ إذ قال لھم” ….أتسمعون ما أسمع؟ قالوا: ما نسمع من شيء، قال: إني لأسمع أطیط السماء وما تلام أن تئط وما فیھا موضع شبر إلا وعلیھ ملك ساجد أو قائم” (أخرجھ الطحاوي في ” مشكل الآثار ” (٢
____________
،وھذا قد ینفك في بعض الأوقات ویعود لا مانع منھ
যে শ্রবণশক্তি কখনও পৃথক হলেও আবার তা ফিরে আসে, যাতে কোন প্রকার বাধা নেই।
وحالتھ صلى ﷲ علیھ وسلم في البرزخ كحالتھ في الدنیا سواء
আর প্রিয় নবীর বরযখের অবস্থা তাঁর দুনিয়ার অবস্থার মতে কোন ধরণের পার্থক্য নেই।
وقد یخرج من ھذا جواب آخر وھو أن المراد سمعھ المعتاد ، ویكون المراد برده إفاقتھ من الاستغراق الملكوتي ، وما ھو فیھ من المشاھدة فیرده ﷲ تلك الساعة إلى خطاب من سلم علیھ في الدنیا ، فإذا فرغ من الرد علیھ عاد إلى ما كان فیھ
এ থেকে আরও একটি জবাবের সূত্রপাত হয়। আর তা’হল: এখানে তাঁর শ্রবণ থেকে স্বাভাবিক শ্রবণ শক্তি বুঝানো হয়েছে। আর এখানে رد (রদ) থেকে বুঝানো হয়েছে,
তাঁর ঊর্ধ্বজাগতিক ধ্যানে মগ্ন থাকা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা। যে অবস্থায় তিনি মালাকুতী দর্শন মুশাহাদায় ব্যস্ত ও বিভোর ছিলেন। অত:পর যখন কোন ব্যক্তি তাঁর প্রতি সালাম পেশ করে তখন আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে ওই ব্যক্তির সালামের জবাব দেয়ার জন্য এ অবস্থায় ফিরিয়ে দেন। আর যখন ওই ব্যক্তির সালামের জবাব থেকে অবসর হন তখন আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যান।
___________
/ ٤٣) والطبراني في ” المعجم الكبیر” ১ / ১৫৩ / ১) فذكره. قلت: وھذا إسناد صحیح على شرط مسلم وفي ابن عطاء كلام لا یضر. ولھ شاھد من حدیث أنس بن مالك مرفوعا بلفظ ” :أطت السماء وحق لھا أن تئط ” … الحدیث مثلھ. أخرجھ أبو نعیم فى ” الحلیة ” (٦ /٢٦٩) من طریق
زائدة بن أبي الرقاد حدثنا زیاد النمیري عنھ. وھذا إسناد ضعیف.)
ویخرج من ھذا جواب آخر وھو أن المراد برد الروح : التفرغ من الشغل وفراغ البال مما ھو بصدده في البرزخ من النظر في أعمال أمتھ والاستغفار لھم من السیئات ، والدعاء بكشف البلاء عنھم ، والتردد في أقطار الأرض لحلول البركة فیھا ، وحضور جنازة من مات من صالح أمتھ
এ থেকে আরও একটি জবাবের সূত্রপাত হয়, আর তা হল: এখানে ردّ الروح বা রূহ ফিরিয়ে দেয়া মানে,
ব্যস্ততা থেকে অবসর নেয়া। মনযোগ নিবদ্ধ করা ও মুক্তমনা হওয়া। কেননা প্রিয়নবী তাঁর বরযখী জীবনেও সর্বদা ব্যস্ত থাকেন উম্মতদের নিয়ে। তাঁর উম্মতদের আমলগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করেন এবং তাদেরকে গুনাহ থেকে মুক্ত করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা র দরবারে এস্তিগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাদের থেকে বালা-মুসীবত দূর করার জন্য দো‘আ করেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তকে বরকত দ্বারা ধন্য করার উদ্দেশ্যে তিনি বিশ্বের নানা স্থানে ভ্রমণ করেন ও তাঁর নেককার-পূণ্যবান উম্মতদের কেউ মারা গেলে তার জানাযায় উপস্থিত হন।
فإن ھذه الأمور من جملة أشغالھ في البرزخ كما وردت بذلك الأحادیث والآثارএ
কাজ-কর্মগুলোই হলো তাঁর বরযখী জীবনের ব্যস্ততার মূল কারণ, যার সমর্থনে অসংখ্য বিশুদ্ধ হাদিস ও বর্ণনা বিদ্যমান।
فلما كان السلام علیھ من أفضل الأعمال وأجل القربات اختص المسلم علیھ بأن یفرغ لھ من أشغالھ المھمة لحظة یرد علیھ فیھا تشریفا لھ ،ومجازاة
যেহেতু তাঁর প্রতি সালাম পেশ করা একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত ও তাঁর নৈকট্য লাভের অন্যতম উপায়, সেহেতু তাঁর প্রতি সালাম পেশকারীকে এমন এক মহান নি’মাত দ্বারা ধন্য করা হয় যে, তার সালামের প্রতিদান স্বরূপ ও তাঁর সম্মানার্থে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয়নবীকে কিছু সময়ের জন্য তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কর্মব্যস্ততা থেকে অবসর দেন, যাতে তিনি তাঁর প্রতি সালাম প্রদানকারীর সালামের জবাব দিতে পারেন।
فھذه عشرة أجوبة كلھا من استنباطي ، وقد قال الجاحظ :إذا نكح الفكر . الحفظ ولد العجائب
উপরোক্ত দশটি উত্তর পেশ করা হলো, যার সবই ছিল আমার ব্যক্তিগত চিন্তা-গবেষণা দ্বারা উদ্ভাবিত। জাহেয বলেছেন: “যখন স্মরণ শক্তির সাথে চিন্তাশক্তির সমন্বয় ঘটে, তখন জন্ম নেয় নানা আশ্চর্য।”
ثم ظھر لي جواب حادي عشر وھو أنھ لیس المراد بالروح روح الحیاة ، بل الارتیاح كما في قولھ تعالى: فَرَوْحٌ وَرَیْحَانٌ َّ وَجَنتُ نَعِیمٍ (الواقعة-٨٩) فإنھ قرئ فروح – بضم الراء
অত:পর আমার নিকট উদ্ভাবিত হলো একাদশ উত্তর। আর তা হলো: এখানে রূহ মানে জীবন বা হায়াত নয়; বরং রূহ মানে ইরতিয়াহ্ বা আনন্দ ও প্রফুল্লতা। যেমন পবিত্র কোরআনে
আল্লাহ তা‘আলার বাণী فرََ وحْوحٌ َّ ورَیْحَانٌ (অত:পর রয়েছে আনন্দ ও সুবাশ)
[সূরা: ওয়াক্বেআ আয়াত-৮৯]
এখানে শব্দটি رَوحْوحٌ পেশ সহকারেও পাঠ করা হয়ে থাকে।
والمراد أنھ صلى ﷲ علیھ وسلم یحصل لھ بسلام المسلم علیھ ارتیاح .وفرح وھشاشة لحبھ ذلك ، فیحملھ ذلك على أن یرد علیھ
সুতরাং তার অর্থ দাঁড়ায়- তাঁর প্রতি যখন কোন ব্যক্তি সালাম দেয় তখন তিনি তাতে আনন্দিত, সন্তুষ্ট, প্রফুল্ল, খুশি ও পুলকিত হন, সালামের প্রতি তাঁর ভালবাসা ও আগ্রহের কারণে; যার ফলে তিনি ওই ব্যক্তির সালামের
জবাব দিতে উৎসাহী হন।
ثم ظھر لي جواب ثاني عشر وھو : أن المراد بالروح الرحمة الحادثة من ثواب الصلاة
অত:পর আমার নিকট দ্বাদশ জবাব উন্মোচিত হলো, আর তা হলো: এখানে ‘রূহ’ দ্বারা ওই ‘রহমত’ বুঝানো হয়েছে, যা অর্জিত হয়ে থাকে তাঁর উপর সালাত ও সালাম পাঠ করার ফলে।
قال ابن الأثیر في النھایة : تكرر ذكر الروح في الحدیث كما تكرر في القرآن ووردت فیھ على معان ، والغالب منھا أن المراد بالروح الذي ৪৬یقوم بھ الجسد ، وقد أطلق على القرآن والوحي والرحمة وعلى جبریل ، انتھى .
ইবনুল আসীর তাঁর ‘আন্ নিহায়া’ নামক কিতাবে উল্লেখ করেন যে, الروح (রূহ) শব্দটি হাদীস শরীফে অনেক স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে, যেমনিভাবে অনেকবার উল্লেখ করা হয়েছে পবিত্র ক্বোুরআনেও। এসব স্থানগুলোতে الروح শব্দটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে সর্বাধিকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে ওই ‘রূহ্’-এর অর্থে, যা প্রতিটি জীবের মধ্যে বিদ্যমান। আবার কখনও রূহ শব্দটি দ্বারা ক্বোরআন, ওহী, রহমত এবং জিবরাঈল
বুঝানো হয়।
وأخرج ابن المنذر في تفسیره عن الحسن البصري أنھ قرأ قولھ تعالى :فروح وریحان بالضم ، وقال : الروح الرحمة
ইবনুল মুনযির তাঁর তাফসীর গ্রন্থে ইমাম হাসান বসরী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁর নিকট যখন روح وریحان (রূহুন ওয়া রায়হান) পেশ সহকারে পাঠ করা হল, তখন তিনি বলেছেন: এখানে ‘রূহুন’ শব্দটির অর্থ হল- রহমত।
প্রমাণ ৩৩ :
__________
وقد تقدم في حدیث أنس أن الصلاة تدخل علیھ صلى ﷲ علیھ وسلم في
قبره كما یدخل علیكم بالھدایا. (٣٣)
ইতিপূর্বে, হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদিসটি উল্লেখ করা হয়েছে যে, যেখানে –
প্রিয়নবী (ﷺ) এরশাদ করেছেন যে, তাঁর প্রতি প্রেরিত সালাত-সালামসমূহ তাঁর কবর শরীফে ওইভাবে পৌঁছে, যেভাবে তোমাদের নিকট তোমাদের উদ্দেশ্যে প্রেরিত উপহার-উপঢৌকন ও পুণ্য বা সাওয়াবসমূহ পৌঁছে থাকে।”
৩৩- حیاة الأنبیاء في قبورھم للبیھقي. رقم الحدیث: ١٣. رواه البیھقي في شُعَب الإیمان وابن عساكر في تاریخ دمشق بِلِفظ : ” إن أقْربكم مني یوم القیامة في كل موطن أكثركم علي صلاة في الدنیا . من صلى علي في یوم الجمعة ولیلة الجمعة قضى ﷲ لھ مائة حاجة سبعین من حوائج الآخرة وثلاثین من حوائج الدنیا ، ثم یوكل ﷲ بذلك مَلكَا یدخلھ في قبره كما یدخل علیكم الھدایا یخبرني من صلى عليعليّ باسمھ ونسبھ إلى عشیرتھ فأثبتھ عندي في صحیفة بیضاء. ”
________________
والمراد ثواب الصلاة ، وذلك رحمة ﷲ وإنعاماتھ.
এখানে সাওয়াব হলো যা সালাত-সালামের বিনিময়ে পৌঁছে থাকে। আর এটি হলো আল্লাহ তা‘আলার রহমত ও নি’মতরাজিই।
ثم ظھر لي جواب ثالث عشر وھو : أن المراد
بالروح الملك الذي وكل ،بقبره صلى ﷲ علیھ وسلم یبلغھ السلام
অত:পর আমার নিকট আরও একটি জবাব প্রকাশ পেল, ত্রয়োদশ জবাব হিসেবে। আর তা হলো: এখানে ‘রূহ’ দ্বারা ঐ ফেরেশতা বুঝানো হয়েছে, যাকে তাঁর (ﷺ) কবর শরীফে সালাত-সালাম পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, যিনি তাঁর কবর শরীফের নিকট সদা উপস্থিত থাকেন।
والروح یطلق على غیر جبریل أیضا من الملائكة، قال . الراغب :أشراف الملائكة تسمى أرواحا ، انتھى
আর ‘রূহ’ শব্দটি যেভাবে হযরত জিবরাঈল আলায়হিস্ সালাম-এর জন্য ব্যবহৃত হয়, সেভাবে অন্যান্য ফেরেশতাদের জন্যও ব্যবহৃত হয়। রাগেব ইস্পাহানী বলেন: ফেরেশতাদের মধ্যে যাঁরা সর্বাধিক অভিজাত ও সম্মানিত, তাঁদের প্রত্যেককে ‘রূহ’ বলা হয়।
ومعنى ” رد ﷲ إلي روحي “أي : بعث إلي الملك الموكل بتبلیغي . السلام ، ھذا غایة ما ظھر وﷲ أعلم
সুতরাং ‘‘আল্লাহ তা‘আলা আমার নিকট আমার রূহকে ফিরিয়ে দেন।” এ বাক্যটির অর্থ হলো: আমার নিকট সালাত-সালাম পাঠানোর দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতাকে আমার নিকট প্রেরণ করেন, যাতে তিনি আমার নিকট পঠিত সালাত-সালাম পৌঁছে দিতে পারে। এতটুকুই আমার নিকট প্রতীয়মান হয়েছে।
ইমাম সূয়ূতী (রহঃ) কর্তৃক পূর্বোক্ত বর্ণনার ধারাবাহিক ব্যখ্যা – ৪
____________________________
মনযোগ আকর্ষণ:
تنبیھوقع في كلام الشیخ تاج الدین أمران یحتاجان إلى التنبیھ علیھما،
শেখ তাজুদ্দিনের বক্তব্যে এমন দু’টি বিষয় আলোচিত হয়েছে, যে ব্যাপারে বিশেষ লক্ষ্য রাখা উচিতঃ
أحدھما : أنھ عزا الحدیث إلى الترمذي ، وھو غلط ، فلم یخرجھ من أصحاب الكتب الستة إلا أبو داود فقط كما ذكره الحافظ جمال الدین المزي في الأطراف،
প্রথমত : তিনি এ হাদীস শরীফের সূত্র বর্ণনায় তিরমিযী শরীফের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, আসলে তা ভুল। কেননা এ হাদীস সেহাহ্ সিত্তার কিতাবগুলোর মধ্যে একমাত্র আবূ দাউদ শরীফ ছাড়া অন্য কোন কিতাবে উল্লেখ করা হয়নি। যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাফেয মিয্যী তাঁর রচিত ‘আল্ আত্বরাফ’ কিতাবে।
الثاني : أنھ أورد الحدیث بلفظ ” رد ﷲ علي ” وھو كذلك في سنن أبي داود ، ولفظ روایة البیھقي رد ﷲ إلي [ روحي ] وھي ألطف وأنسب ، فإن بین التعدیتین فرقا لطیفا ، فإن ” رد ” یتعدى بعلى في الإھانة ، وبإلى في الإكرام ، قال في الصحاح : رد علیھ الشيء إذا لم یقبلھ ، وكذلك إذا خطأه ، ویقول رده إلى منزلھ ورد إلیھ جوابا أي : رجع،
দ্বিতীয়ত : তিনি হাদীসটি رَد ﷲُ َّ عَلى َّ তথা عَلى শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেছেন, যা আবূ দাউদ শরীফেও বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু ইমাম বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি হাদীসটি إلى َّ শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেছেন। আর মূলত: এটাই সর্বাধিক শোভনীয় ও মার্জিত। কেননা উভয় সেলাহ বা যোজন-এর মধ্যে একটি সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে, কারণ ردّ শব্দটি যখন على দ্বারা মুতা‘আদ্দী হয়, তখন এহানত বা
অপমানের অর্থ বুঝায়। আর إلى দ্বারা ইকরাম বা সম্মানসূচক অর্থ বুঝায়।
‘সিহাহ’ নামক কিতাবে বলেছেন: رد علیھ الشئَ َّ তখন ব্যবহার হয়, যখন কোন কিছু গ্রহণ না করে ফিরিয়ে দেয়া হয়। অনুরূপ, رد علیھ َّ বলা হয় যখন তা ভুল প্রমাণিত হয়। অন্যদিকে ردّ الى منزلھ এবং ردّ الیھ جوابا
তখন বলা হয় যখন শব্দটি গ্রহণ করা হয় এবং যখন চিঠির উত্তর দেয়া হয়।
، وقال الراغب :من الأول قولھ سبحانھ وتعالى : ( یاَ أیَ ُّھَا َّ الذِینَ آمَنُوا إن تْطُیعُِوا َّ الذینِ كفرََُوا یرَ ُّ ُدوكمْ عَلىَ أعَْقاَبكُِمْ فتََنَْقلَبُِوا ََََخَاسِرِینَ ) آل عِمران/١٤٩ .رُدوُّ ھا عليََ َّ ۖ فطَفَقَِ مسَحْاً باِلس ُّوقِ ََََوَالْأعْنَاقِ ۖ (سورة ص- ٣٣) قل أنْدعََُْو منِْْ دونُ ﷲِ َّ مِا لا ینفَعُْنا ولَا یضَُر ُّنَا ُّ وَنُرَد ََََََََََََََُُِٰعَلَىٰ أَعقاْبَناِ بعَدْبعدَ إذِْ ھدَََََانَا َّ ﷲُ (الأنعام-৭১)
প্রথমটির উদাহরণ স্বরূপ রাগেব ইস্পাহানী বলেন:
یرَیرُ ُّ دوْكُمْ عَلى أعَْقاَبِكُِمْ
অর্থাৎ তাহলে তারা তোমাদেরকে বিপরীত দিকে ফিরিয়ে দেবে। [আলে ইমরান: ১৪৯]
ردوھا َّ على
অর্থাৎ এগুলোকে পুনরায় আমার সম্মুখে আনায়ন কর। [সূরা সোয়াদ, আয়াত-৩৩]
نـُرد على أعـقابنا ُّ
অর্থাৎ আমাদের কি আমাদেরকে উল্টো পদে ফিরিয়ে দেয়া হবে? [সূরা আন্‘আম, আয়াত ১৭]
ومن الثاني : فردَ دنْاهَُ إلىَِ أمُ ِّھِ كيَ تقَرَ َّ عَیْنُھَا وَلَا َََََْْْتَحْزَنَ (القصص- ১৩) وَلئَنِْ رُددُتِْ إُلىِ رٰب ِّيَ لأجَدََن َّ خَیرًْا منِھْا
َ مَََُنْقَلَبًا(الكھف-৩৬) َّ ثُم ترُدَوُّ ن إلىَِ عاَلَمِ الغْیَبْ واَلشھَّ ادََةِِِ فیَُنَب ِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ َََََََََََٰتَعْمَلونَ(الجمعة-৯৪) ثمُ رَّ ُّ ُدوا إلِىَ َّ ﷲ مِوَْلاَھُمُ ََِ ِّ الْحَق ۚ (الأنعام-৬২) .
আর দ্বিতীয়টির উদাহরণ হলো:-
فرََدَدْناَهُ إلى ِّ أمُـھ
অর্থাৎ আমি তাকে তার মায়ের নিকট ফিরিয়ে দিয়েছি। [সূরা ক্বাসাস, আয়াত-১৩]
رددتُ الى ربى لاجدن خیرا منھا منقلبا
অর্থাৎ আর যদি আমি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তিত হই, তবে আমি তো নিশ্চয় তা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট স্থান পাব।
[সূরা কাহাফ, আয়াত-৩৬]
ثم تردون الى عالم الغیب والشھادة
অর্থাৎ অত:পর তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতার নিকট। [সূরা তাওবা, আয়াত-৯৪]
ثم ردوا الى ﷲ مولاھم الحق
অর্থাৎ অত:পর তাদের প্রকৃত প্রতিপালক আল্লাহর দিকে তারা প্রত্যানীত হয়। [আন‘আম, আয়াত-৬২]
পরিচ্ছেদ: (فصل)
قال الراغب :من معاني الرد التفویض ، یقال : رددت الحكم في كذا إلى فلان أي : فوضتھ إلیھ ، قال تعالى فإَنِ تنَاَزعَتْمُْ فيِ شيَءٍْ فرَ ُّ دوهفرُدوهُ إلَِى ﷲِّ والَر َّسُولِ إنِ كنُتمُْ تؤُْمنِوُن باِِ ّ واَلیْوَْمِ الآخرِِ ذلَكِ خیَرٌْ ََََََِوأَحَسْنَوأحسنُ تَأوِْیلاً (النساء٥٩ ): انتھى
রাগেব ইস্পাহানী বলেন: الرد -এর অন্য একটি অর্থ হলো- التفویض (ন্যস্ত করা, সমর্পণ করা, সোপর্দ করা)। যেমন বলা হয়ে থাকে رددت الحكم فى كذا الى فلان অর্থাৎ আমি এ বিষয়ের ফয়সালা অমুকের নিকট ন্যস্ত করলাম।
আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন:
فإنَ تنازََعَتمْ فْيِ شيَءْْ فٍرََََََ ُّ فرُدوهُدوهُ َُإلىَِ ﷲّ َِواَلر َّسُولِ إنِ كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاَِ واَلِیوَْمِْ الآخرِِ ذلَكِ خیَرٌْ َََََوأَحَسْنَوأحسنُ تَأوِْیلاً (النساء ٥٩) : انتھى .
“যদি কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয় তাহলে তা ন্যস্ত কর আল্লাহ ও রাসূলের নিকট। [সূরা নিসা, আয়াত- ৫৯]
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র এরশাদ করেন:
ولوردوه الى الرسول والى اولىالامر منھم
“যদি তারা তা রাসূল কিংবা তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতার অধিকারী তাদের গোচরে আনত।”
[সূরা নিসা, আয়াত- ৮৩]
ویخرج من ھذا جواب رابع عشر عن الحدیث وھو : أن المراد فوض ﷲ إلي رد السلام علیھ ، على أن المراد بالروح الرحمة ، والصلاة من ﷲ الرحمة ، فكان المسلم بسلامھ تعرض لطلب صلاة من ﷲ تحقیقا لقولھ صلى ﷲ علیھ وسلم : عَنْ أنََسِ بْنِ مَالكٍِ ، قَالَ : قَالَ رسَولرسُولُ ﷲِ صَلى َّ َّ ﷲ عَلَیْھِ َّ َّ َُوَسَلمَ ” : منَ ْ صلىَ عليََ َّ واَحدَِةً َّ َّ صَلى َّ ﷲُ عَلَیْھِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ ، وَحَ َّ ط عَنْھْعنھُ عَشْرَ خَطِیئَاتٍ. ” (٣٤)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আলোচ্য হাদীসের চতুর্দশ আরও জবাবের উৎপত্তি হয়, আর তা হলো: এখানে رد শব্দটি تفویض অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ “আল্লাহ তা‘আলা আমার প্রতি সালাম প্রেরণকারীর সালামের জবাব প্রদানের বিষয়টি আমার নিকট ন্যস্ত ও সমর্পণ করেন। আর এখানে روح (রূহ) মানে رحمة (রহমত)। আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে صلاة (সালাত)-এর অর্থ হল রহমত।
সুতরাং অর্থ দাঁড়াল- সালাম প্রদানকারী তার সালামের বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে রহমত তলবের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। প্রিয় নবীর এ বাণীর বাস্তবায়ন স্বরূপ,
হাদিস ৩৪ :
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার সালাত প্রেরণ করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার বিনিময়ে ঐ ব্যক্তির উপর দশবার রহমত প্রেরণ করবেন ও তার দশটি পাপ মোছন করে দেবেন।”
৩৪- رواه الإمام أحمد (١١٥٨٧) والنسائي (١٢٩٧) – واللفظ لھ – بإسناد حسن .و صحح الحدیث ابن حبان (٩٠٣) والحاكم (١/٥٥٠) وضیاء الدین المقدسي في المختارة (١٥٦٦) .
_______________
প্রমাণ ৩৫ :
والصلاة من ﷲ الرحمة ، ففوض ﷲ أمر ھذه الرحمة إلى النبي صلى ﷲ علیھ وسلم لیدعو بھا للمسلم فتحصل إجابتھ قطعا ، فتكون الرحمة الحاصلة للمسلم إنما ھي ببركة دعاء النبي صلى ﷲ علیھ وسلم لھ وسلامھ علیھ ، وینزل ذلك منزلة الشفاعة في قبول سلام المسلم والإثابة علیھ ، وتكون الإضافة في روحي لمجرد الملابسة ، ونظیره قولھ في حدیث الشفاعة : فیرده ھذا إلى ھذا، وھذا إلى ھذا، حتى یرجع إلى الأول. (٣٥)
আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে صلوة-এর অর্থ হলো- রহমত। এটি আল্লাহ তা‘আলা এ রহমতের দায়িত্বভার প্রিয়নবীর নিকট অর্পণ করেন, যাতে তিনি ওই সালাম প্রেরণকারীর জন্য দো‘আ করেন। ফলে তাঁর দো‘আ ওই ব্যক্তির ক্ষেত্রে কবূল হয়ে যাবে নিসন্দেহে। সুতরাং সালাম প্রদানকারীর ভাগ্যে যে রহমতসমূহ জুটল তা মূলত প্রিয়নবীর দো‘আর বরকতেই এবং তা সালাম প্রদানকারীর সালাম কবুল হওয়া ও তার বিনিময়ে তাকে সাওয়াব প্রদান করার জন্য প্রিয়নবীর পক্ষ থেকে শাফা‘আত বা সুপারিশের ন্যায়।
৩৫- أخرجھ ابن عبد البر في جامع بیان العلم [٢١٩٩ ، ٢٢٠١ ، ٢٢٠٢] من كلام عبد الرحمن بنأبي لیلى ولیس من كلام البراء.
———-
আর এখানে فى روحى-এর মধ্যে যে ইযাফতটি (সম্বন্ধ) রয়েছে তা শুধুমাত্র ‘মুলাবাসাহ্’ বা বাক্যের পরস্পর ঘনিষ্ঠতার কারণে। যেমনটি শাফা‘আত সংক্রান্ত হাদীসে বিদ্যমান।
فیرد ھذا الى ھذا وھذا الى
“শাফা‘আতের বিষয়টি ইনি ওনার নিকট ন্যস্ত করবেন। ইনি ওনি হতে হতে সর্বশেষ হযরত মুহাম্মদ মোস্তফার নিকট বিষয়টি সমর্পণ করা হবে।
হাদিস ৩৬ :
وفي حدیث الإسراء : عَنْ ابنْ مسَعُْودٍ ، عن
َ النبَّ يِ ِّ صَلى َّ ﷲ عَلَیْھِ َّ َّ َُوَسَلمَ
، قَالَ “: لقَیِتُ لیَلْةَََََ أسُْرِيَ بيِ إِبِرَْاھیِمَ ، وَمُوِسَى ، وَعِیسَى ” ، قَالَ : ” فتذَاَكَرَُوا أمَرْ الس َّاعة ، ُّ فرََدوا أمَرَْھُمْ إلَىَ ِِإبِْرَاھِیمَ ، ََََََفَقَالَ : لَا عِلْمَ لِي بِھَا ، ُّ فرََدوا الأْمَْرَ إلِىَ مُوسَى ، فَقَالَ : لَا عِلْمَ لِيِ بِھَا ، ُّ فَرَدوا الْأَمَْرَ إلَِى
عِیسَى. (٣٦)
মি’রাজ সংক্রান্ত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে: “মি’রাজের রাত্রিতে হযরত ইবরাহীম, হযরত মূসা ও হযরত ঈসা আলায়হিমুস্ সালাম-এর সাথে আমার সাক্ষাত হলো, তাঁরা সকলে ক্বিয়ামতের বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তখন তাঁরা বিষয়টি হযরত ইবরাহীম আলায়হিস্ সালাম-এর নিকট সোপর্দ করলেন। তিনি উত্তরে বললেন, এ বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই। অত:পর বিষয়টি হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামএর নিকট সোপর্দ করা হলে তিনিও উত্তরে বললেন: এ বিষয়ে আমার কোন জ্ঞান নেই। অত:পর সবশেষে বিষয়টি হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালাম-এর নিকট ন্যস্ত করা হলো।”
৩৬- ابن ماجھ, الفتن٤٠٨١ ومسند أحمد- ١/٣٧٥.
________
والحاصل أن معنى الحدیث على ھذا الوجھ : إلا فوض ﷲ إلي أمر الرحمة التي تحصل للمسلم بسببي، فأتولى الدعاء بھا بنفسي بأن أنطق بلفظ السلام على وجھ الرد علیھ في مقابلة سلامھ والدعاء لھ.
মোদ্দকথা হলো, এদিক থেকে হাদীস শরীফটির অর্থ দাঁড়ায়- আল্লাহ্ তা‘আলা আমার নিকট ঐ রহমতের বিষয়টি ন্যস্ত করবেন, যা সালাম প্রদানকারীর নিকট আমার কারণে ও বরকতে অর্জিত হয়। অত:পর আমি নিজেই এর বিনিময়ে দো‘আ করার দায়িত্ব গ্রহণ করব। ফলে আমি তার সালামের বিনিময়ে তার জবাব দেবার জন্য وَعَلیَْكُمُ َّ السلامَُ বলে মুখ খুলব এবং তার জন্য দো‘আ করব।
________________
হাদিস ৩৭ :
ثم ظھر لي جواب خامس عشر وھو : أن المراد بالروح الرحمة التي في قلب النبي صلى ﷲ علیھ وسلم على أمتھ والرأفة التي جبل علیھا ، وقد یغضب في بعض الأحیان على من عظمت ذنوبھ أو انتھك محارم ﷲ، والصلاة على النبي صلى ﷲ علیھ وسلم سبب لمغفرة الذنوب كما
في حدیث : إذن تكفى ھمك ویغفر ذنبك. (٣٧)
অত:পর আমার নিকট পঞ্চদশ জবাব উন্মোচিত হলো, আর তা হলো-
এখানে روح (রূহ) থেকে উদ্দেশ্য হল ওই রহমত, যা প্রিয়নবীর হৃদয় মুবারকে স্বীয় উম্মতদের জন্য বিদ্যমান এবং ঐ স্বভাবজাত দয়া ও স্নেহ, যার উপর তাঁকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি কখনও কখনও রাগান্বিতও হয়ে থাকেন তার উপর, যার অপরাধ অত্যন্ত জঘন্য এবং যে আল্লাহ তা‘আলা নির্ধারিত সীমানা ও নিষেধকে লংঘন করে।
আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর উপর সালাত-সালাম পাপ মার্জনার অন্যতম কারণ। যেভাবে
হাদীস শরীফে উল্লেখ রয়েছে- “
এ অধিকহারে দুরূদ পাঠের ফলে তোমার সকল চিন্তা-পেরেশানী দূর হয়ে যাবে এবং তোমার গুনাহ সমূহ মাফ হয়ে যাবে।”
৩৭- قال أبو عیسى: ھذا حدیث حسن صحیح, الراوي: أبي بن كعب – خلاصة الدرجة: حسن – المحدث: ابن حجر العسقلاني – المصدر: موافقة الخبر الخبر – الصفحة أو الرقم: ٢/٣٤٠ وحدیث ٧١٤٧٥ -, الراوي: حبان بن منقذ بن عمرو الأنصاري – خلاصة الدرجة: حسن لغیره – –
المصدر: صحیح الترغیب – الصفحة أو الرقم: ١٦٧١)
______________
فأخبر صلى ﷲ علیھ وسلم أنھ ما من أحد یسلم علیھ وإن بلغت ذنوبھ ما بلغت إلا رجعت إلیھ الرحمة التي جبل علیھا حتى یرد علیھ السلام بنفسھ ، ولا یمنعھ من الرد علیھ ما كان منھ قبل ذلك من ذنب، وھذه فائدة نفیسة وبشرى عظیمة ، وتكون ھذه فائدة زیادة من الاستغراقیة في
أحد المنفي الذي ھو ظاھر في الاستغراق قبل زیادتھا ، نص فیھ بعد زیادتھا بحیث انتفى بسببھا أن یكون من العام المراد بھ الخصوص .
অন্যত্র প্রিয়নবী (ﷺ) এরশাদ করেছেন:
“কেউ যদি তাঁর উপর সালাম পাঠ করে, আর তার গুনাহ যতই হোক না কেন, তার প্রতি ওই রহমতটুকু তাঁর (ﷺ) নুরানী হৃদয়ে জাগ্রত হবে, যা তাঁর স্বভাবজাত; ফলে তিনি ওই ব্যক্তির সালামের জবাব নিজেই দেবেন। পূর্বে তার অনেক গুনাহ থাকলেও তার সালামের জবাবে কোন ধরনের বাধা সৃষ্টি হবে না।”
এটা নি:সন্দেহে একটি খুবই উন্নত উপকার এবং মহান সুসংবাদ।
ھذا آخر ما فتح ﷲ بھ الآن من الأجوبة وإن فتح بعد ذلك بزیادة ألحقناھا ، وﷲ الموفق بمنھ وكرمھ ، ثم بعد ذلك رأیت الحدیث المسئول عنھ مخرجا في كتاب حیاة الأنبیاء للبیھقي بلفظ : إلا وقد رد ﷲ علي روحي فصرح فیھ بلفظ : ” وقد ” ، فحمدت ﷲ كثیرا وقوي أن روایة إسقاطھا محمولة على إضمارھا ، وأن حذفھا من تصرف
الرواة وھو الأمر الذي جنحت إلیھ في الوجھ الثاني من الأجوبة ،
এটা সর্বশেষ জবাব, যা আল্লাহ তা‘আলা আমার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। এর চেয়ে আরও অধিক কোন জবাব যদি আমার নিকট উন্মোচিত হয় তাহলে তাও এখানে সংযোজন করব। সকল তাওফীক্বের মালিক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা । অত:পর আমি উপরোক্ত হাদীস ইমাম বায়হাক্বী রচিত حیاة الانبیاء (হায়াতুল আন্বিয়া) নামক কিতাবে إلا وقد ردّﷲ علىّ روحى এভাবে দেখতে পেলাম। তিনি সেখানে وَقدَْ শব্দটি দ্বারা সরাসরি বর্ণনা করেছেন। তা দেখে আমি আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করলাম এবং আমার নিকট খুব দৃঢ়ভাবে সাব্যস্ত হলো যে, অন্যান্য রেওয়ায়তে وَقدَْ শব্দটা বাদ দেয়া হয়েছে; কারণ এটা উহ্য আছে। অথবা তা বাদ দেয়াটা বর্ণনাকরীর পক্ষ থেকে সংঘটিত হয়েছে। যে সম্পর্কে আমার দ্বিতীয় জবাবে আলোচনা
করেছি।
وقد عدت الآن إلى ترجیحھ لوجود ھذه الروایة فھو أقوى الأجوبة ، ومراد الحدیث علیھ الإخبار بأن ﷲ یرد إلیھ روحھ بعد الموت فیصیر حیا على الدوام ، حتى لو سلم علیھ أحد رد علیھ سلامھ لوجود الحیاة فیھ ، فصار الحدیث موافقا للأحادیث الواردة في حیاتھ في قبره ، وواحدا من جملتھا لا منافیا لھا البتة بوجھ من الوجوه ، و الحمد والمنة.
কিন্তু বর্তমানে আমার নিকট এ জবাবটি খুবই শক্তিশালী জবাব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ এর সমর্থনে প্রমাণিত হয়েছে সরাসরি রেওয়ায়াত। তাই এটাকে আমি অন্যান্য উত্তরের উপর প্রাধান্য দিচ্ছি।
অতএব, উপরোক্ত বর্ণনার ভিত্তিতে এ হাদীসের উদ্দেশ্য (মর্মার্থ) হলো- মহান আল্লাহ প্রিয়নবীর ইন্তিকালের পর তাঁর রূহ মুবারককে স্থায়ীভাবে তাঁর দেহ মুবারকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাই তিনি সদা-সর্বদা স্বীয় কবর শরীফে জীবিত। এমনকি কেউ তাঁর প্রতি সালাম পেশ করলে তিনি তার উত্তর দিয়ে থাকেন। কারণ তিনি তো জীবিত। সুতরাং এ হাদীস তাঁর কবর শরীফে জীবিত থাকার বিষয়ে বর্ণিত অন্যান্য হাদিসগুলোর সাথে সম্পূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ওই হাদিসগুলোরই একটি। এগুলোর সাথে এ হাদীসের কোন বিরোধ নেই।
_____
وقد قال بعض الحفاظ : لو لم نكتب الحدیث من ستین وجھا ما عقلناه.
(٣٨)
কতেক হাফেযে হাদীস বলেছেন: আমরা যদি কোন একটি হাদীসকে ৬০ (ষাট)টি সূত্র থেকে বর্ণনা না করি, তবে তা আমরা সঠিকভাবে বুঝতে পারিনা।
৩৮- ;( وقال الإمام یحیى بن معین: ” لو لم نكتب الحدیث من ثلاثین وجھا ما عقلناه .” – فتح
المغیث : ٢/٣٧٠. )
_______
وذلك لأن الطرق یزید بعضھا على بعض تارة في ألفاظ المتن ، وتارة في الإسناد ، فیستبین بالطریق المزید ما خفي في الطریق الناقصة وﷲ . تعالى أعلم
কেননা বিভিন্ন ধারার বর্ণনা পরস্পর পরস্পরকে মজবুত করে এবং এতে নতুন কতগুলো বিষয় সংযোজিত হয়। কখনও ‘মতন’-এর শব্দগুলোর দিক থেকে, আবার কখনও ‘সনদসমূহের’ দিক থেকে। ফলে অধিক সংখ্যক সূত্র ও ধারায় বর্ণিত হাদীস দ্বারা এমন কিছু দিক উন্মোচিত ও প্রকাশিত হয়, যা কম সংখ্যক বা অসম্পূর্ণ সনদে লুক্কায়িত বা অস্পষ্ট ছিল। আল্লাহ
তা‘আলাই ভাল জানেন।
[কিতাবটি সমাপ্ত হলো এখানেই]
إنباه الأذكیاء فى حیاة ألانبیاء
والحمد وحده والصلاة والسلام على من لانبي بعده سیدنا ومولانا محمد وعلى الھ وأصحابھ واولاده وازواجھ وذریتھ واھل بیتھ رضوان ﷲ تعالى علیھم اجمعین- والحمد رب العالمین-
সমাপ্ত