কিতাবঃ ইমাম হাসান (রা.) এর ৩০টি কাহিনী

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

শায়খে তরিকত, আমীরে আহলে সুন্নাত, দাওয়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা হযরত আল্লামা মাওলানা আবু বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী রযবী دَامَتۡ بَرَكَاتُهُمُ الۡعَالِيَه

টেক্সট রেডি: মুহাম্মাদ আবদুল কাদির মাহী

اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِيۡنَ وَالصَّلٰوةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى سَيِّدِ الۡمُرۡسَلِيۡنَ اَمَّابَعۡدُ فَاَعُوۡذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيۡطٰنِ الرَّجِیۡم ط

بِسۡمِ اللّٰهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِيۡم ط

কিতাব পাঠ করার দুআ

শায়খে তরিকত, আমীরে আহলে সুন্নাত, দাওয়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা, হযরত আল্লামা মাওলানা আবু বিলাল মুহাম্মদ ইল্‌ইয়াস আত্তার কাদিরী রযবী دَامَتۡ بَرَكَاتُهُمُ الۡعَالِيَه বর্ণনা করেন ? যে ব্যক্তি ধর্মীয় কিতাবাদি পাঠ করার শুরুতে নিম্নে প্রদত্ত দুআটি পড়ে নেয়, তবে যা কিছু পাঠ করা হবে, তা স্মরণে থাকবে। اِنشَاءَ اللّٰهُ عَزَّ وَجَلَّ

দুআটি নিম্নরূপ

اَللّٰهُمَّ افۡتَحۡ عَلَيۡنَا حِكۡمَتَكَ وَانۡشُرۡ عَلَيۡنَا رَحۡمَتَكَ يَا ذَالۡجَلَالِ وَالۡاِكۡرَام

অনুবাদ :- হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আপনার জ্ঞান ও হিকমতের দরজা খুলে দিন এবং আমাদের উপর আপনার বিশেষ অনুগ্রহ নাযিল করুন। হে চির মহান! হে চির মহিমান্বিত। (আল মুস্তাতারাফ, খন্ড-১ম, পৃ-৪০, দারুল ফিকির, বৈরুত) ।

নােট :- দুআটি পড়ার আগে ও পরে একবার করে দুরূদ শরীফ পাঠ করুন।

কিয়ামতের দিনে আফসােস

ফরমানে মুস্তফা صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم “কিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে বেশী আফসােস করবে, যে দুনিয়াতে জ্ঞান অর্জন করার সুযােগ পেল কিন্তু জ্ঞান অর্জন করল না এবং ঐ ব্যক্তি আফসােস করবে, যে জ্ঞান অর্জন করল আর অন্যরা তার থেকে শুনে উপকার গ্রহণ করল অথচ সে নিজে গ্রহণ করল না (অর্থাৎ সে জ্ঞান অনুযায়ী আমল করল না)।” (তারিখে দামেশক লিইবনে আসাকির, ৫১তম খন্ড, ১৩৭ পৃষ্ঠা, দারূল ফিকির বৈরুত)

দৃষ্টি আকর্ষন

কিতাবের মুদ্রনে সমস্যা হােক বা পৃষ্ঠা কম হােক বা বাইন্ডিংয়ে আগে পরে হয়ে যায় তবে মাকতাবাতুল মদীনা থেকে পরিবর্তন করে নিন। 

সূচীপত্র 

> দরূদ শরীফ লিখার বরকত

> শুকনাে গাছে সতেজ খেজুর

> জন্মের পূর্বে সুসংবাদ

> সৌভাগ্যময় জন্ম এবং নাম ও উপাধী

> মুস্তাফার অবয়ব

> এরূপ সন্তান কোন মা’ই জন্ম দেয়নি।

> মুস্তফার স্নেহ মারহাবা! মারহাবা!

> রাকিবে দোশে মুস্তফা

> আবু হুরায়রা দেখতেই কেঁদে দিতেন

> হে আমার সর্দার!

> সে আমার ফুল

> আমার এই সন্তান হলাে সর্দার

> ইমামে হাসান মুজতাবার খেলাফত

> ইমামে হাসান মুজতাবার খুতবা

> দুনিয়ার লজ্জা আখিরাতের

আযাব থেকে উত্তম

> সর্বপ্রথম গাউছে আযম

> খেলাফতে রাশেদা

> হে আল্লাহ! আমি তাঁকে ভালবাসি

> পুত্র সন্তানের জন্ম

> সুরমা এবং সুগন্ধি দ্বারা আতিথেয়তা

> শিশুকালেই হাদীস শুনে স্মরন করে নেন

> সন্তানদের উত্তম আদব শেখান

> তােমাদের নিকট তােমাদের সন্তান

সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে

> সাথে সাথেই প্রয়ােজন মিটিয়ে দিলেন।

> দশ হাজার দিরহাম দিয়ে ধন্য

করে দিলেন

> হাজীর প্রতি দয়া প্রদর্শনকারীদের

ক্ষমা করে দেয়া হয়

> অতিথিপরায়ণ বৃদ্ধা

> সবকিছু খয়রাত করে দিলেন

> তিলাওয়াতের আগ্রহ

> ইমামে হাসানের অভ্যাস সমূহ

> মদীনা থেকে মক্কা বিশ বার পায়ে

হেঁটে সফর

> গােলাম মুক্ত করে দিলেন

> যদি এক কানে গালি এবং অপর…

> নামাযের সময় রঙ পরিবর্তন হয়ে

যেতাে

> কুকুরের প্রতি দয়া প্রদর্শনকারী

> অসাধারন গােলাম

> ইমাম হাসান মুজতাবার স্বপ্ন

> এমন সৃষ্টি পুর্বে কখনােই দেখিনি

> শাহাদতের কারণ

> ওফাতের হতাশামূলক আয়াত

> জানাযার নামায

> জানাযায় মানুষের ভিড়

> ইমামে হাসানের সন্তানাদি

> ইয়া হাসান ইবনে আলী! করদো করম

اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِيۡنَ وَالصَّلٰوةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى سَيِّدِ الۡمُرۡسَلِيۡنَ اَمَّابَعۡدُ فَاَعُوۡذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيۡطٰنِ الرَّجِیۡم ط 

بِسۡمِ اللّٰهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِيۡم ط 

ইমাম হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর ৩০টি কাহিনী 

 শয়তান লাখাে অলসতা প্রদর্শন করুক, তারপরও আপনি এ রিসালাটি সম্পূর্ণ পাঠ করে নিন। اِنشَاءَ اللّٰهُ عَزَّ وَجَلَّ  এতে আপনি দ্বীন ও দুনিয়ার অসংখ্য কল্যাণ লাভ করতে পারবেন। 

দরূদ শরীফ লিখার বরকত

 হযরত সায়্যিদুনা আবুল আব্বাস উকলীশি  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ কে মৃত্যুর পর কেউ স্বপ্নে জান্নাতে দেখলাে। জিজ্ঞাসা করলাে: আপনি এই মর্যাদা কিভাবে অর্জন করেছেন? উত্তর দিলেন: আমার কিতাব “আল আরবাঈন” এ অধিকহারে দরূদ শরীফ লিখার কারণে। 

(আল কওলুল বদী, ৪৬৭ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(১) শুকনাে গাছে সতেজ খেজুর 

আরীফ বিল্লাহ, হযরত সায়্যিদুনা নুরুদ্দীন আব্দুর রহমান জামী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেন: ইমামে আলী মকাম হযরত ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ সফরকালে খেজুরের বাগান দিয়ে গমন করেন, যেখানকার সব গাছ শুষ্ক হয়ে গিয়েছিলাে, হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا ও তাঁর সাথে সফরে ছিলেন। হযরত  ইমামে হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এই বাগানে অবস্থান করলেন। খাদিমরা 

একটি শুকনাে গাছের নীচে আরাম করার জন্য বিছানা বিছিয়ে দিলেন। হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ আরয করলেন: হে রাসূলের দৌহিত্র! আহ! যদি এই শুকনাে গাছে সতেজ খেজুর  থাকতাে! তবে আমরা পেট ভরে খেতাম। একথা শুনে হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ নিম্নস্বরে কোন দোয়া পাঠ করলেন, যার বরকতে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই শুষ্ক গাছ সবুজ ও সতেজ হয়ে গেলাে এবং এতে তাজা পাকা খেজুর এসে গেলাে। এই দৃশ্য দেখে একজন উট চালনাকারী বলতে লাগলাে: এসব যাদুর কারিশমা। হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا তাকে ধমক দিলেন এবং বললেন: তাওবা করাে, এসব যাদু নয় বরং শাহাজাদায়ে রাসূলের মকবুল দোয়া। অতঃপর লােকেরা গাছ থেকে খেজুর ছিড়লাে এবং ভালভাবে খেলাে। (শুয়াহিবুন নবুয়ত, ২২৭ পৃষ্ঠা)।

রাকিবে দোশে শাহানশাহে উমাম

 ইয়া হাসান ইবনে আলী! করদো করম! ফাতেমা কে লাল হায়দার কে পেসর! 

আপনি উলফত দো মুঝে দো আপনা গম 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(২) জন্মের পূর্বে সুসংবাদ

 রাসূলে আকরাম, নুরে মুজাসসাম

 صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এর চাচীজা  হযরত সায়্যিদাতুনা উম্মুল ফযল   رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا

হুযুর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم কে তাঁর স্বপ্ন বর্ণনা করেন: “ইয়া রাসূলাল্লাহ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم আপনার মুবারক শরীরের অংশ আমার ঘরে আসলাে।” একথা শুনতেই হুযুর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করলেন:  “আপনি উত্তম স্বপ্ন দেখেছেন, ফাতেমার ঘরে পুত্র সন্তানের জন্ম হবে এবং আপনি তাকে দুধ পান করাবেন।” যখন হযরত সায়্যিদাতুনা ফাতেমাতুয যাহরা  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا এর ঘরে হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর জন্ম হলাে, তখন হযরত সায়্যিদাতুনা উম্মুল ফযল  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا  হযরত হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কে দুধ পান করালেন। (আয যারইয়াত তাহেরা লিল দুলাবী, ৭২ পৃষ্ঠ)।

সৌভাগ্যময় জন্ম এবং নাম ও উপাধী

ইমামে আলী মকাম, ইমামে হুমাম, ইমামে আরশে মকাম, হযরত সায়্যিদুনা ইমাম আবু মুহাম্মদ হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর সৌভাগ্যময় জন্ম ১৫ রমযানুল মুবারক ৩ হিজরীতে হয়েছিলাে। (আত তাবকাতুল কুবরা লিইবনে সাআদ, ৬ষ্ট খন্ড, ৩৫২ পৃষ্ঠা)।

 তাঁর মুবারক নাম: হাসান, উপনাম: আবু মুহাম্মদ এবং উপাধী: তাকী, সায়্যিদ, সিবতে রাসূলুল্লাহ । এবং সিবতে আকবর, তাঁর রায়হানাতুর রাসুল (অর্থাৎ রাসূলে খােদার ফুল)ও বলা হয়।

কিয়া বাত রযা উস চমনাস্তানে করম কি 

যাহরা হে কলী জিস মে হুসাইন অউর হাসান ফুল। (হাদায়িকে বখশীশ, ৭৯ পৃষ্ঠা)। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

মুস্তাফার অবয়ব 

হযরত সায়্যিদুনা আনাস বিন মালিক رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُথেকে বর্ণিত যে, (ইমামে) হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর চেয়ে বেশী রাসূলে করীম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এর সাথে মিল অন্য কোন ব্যক্তির ছিলাে না। (বুখারী, ২য় খন্ড, ৫৪৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৩৭৫২)। 

এরূপ সন্তান কোন মা’ই জন্ম দেয়নি! 

হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর : رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا ও অন্যান্য সাহাবায়ে কিরামের عَلَيۡهِمُ الرِّضۡوَان ন্যায় রাসূলের দৌহিত্র হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُকে অনেক ভালবাসতেন। 

একবার তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: “ আল্লাহর শপথ! মহিলারা হাসান বিন আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর মতাে সন্তান জন্ম দেয়নি।” 

(সবলুল হুদা, ১১তম খন্ড, ৬৯ পৃষ্ঠা) 

মুস্তফার স্নেহ মারহাবা! মারহাবা! 

 প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! নবীয়ে রহমত, শফীয়ে উম্মত صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এর সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর প্রতি খুবই ভালবাসা ছিলাে। তিনি صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم . হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কে কখনাে কোল মুবারকে উঠাতেন তবে কখনাে কাঁধ মুবারকে উঠিয়ে ঘর শরীফ থেকে বাইরে তাশরীফ নিয়ে যেতেন, কখনাে তাঁকে দেখতে এবং আদর করতে সায়্যিদা ফাতেমা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا এর ঘরে তাশরীফ নিয়ে যেতেন, হযরত সায়্যিদুনা হাসান মুজতাবা : رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ ও হুযুর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এর প্রতি খুবই ঘনিষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন যে, কখনাে নামাযের অবস্থায় পিঠ মুবারকে উঠে যেতেন। 

(৩) রাকিবে দেশে মুস্তফা

 একবার হুযুর পুরনুর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  হযরত সায়্যিদুনা হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কে মুবারক কাঁধে উঠিয়ে ছিলেন, তখন একজন আরয করলেন: نِعۡمَ الۡمَرۡكَبُ رَكِبۡتَ يَا غُلَامُ অর্থাৎ সাহেবজাদা! আপনার বাহন তাে খুবই উত্তম।” রাসূলে আকরাম 

صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم ইরশাদ করলেন: “ َوَنِعۡمَ الرَّكِبُ هُو” অর্থাৎ আরােহীও তাে খুবই উত্তম!” (তিরমিযী, ৫ম খন্ড, ৪৩২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৩৮০৯)।

ওহ হাসান মুজতাবা, সায়্যিদুল আসখিয়া  রাকিবে দোশে ইযযত পে লাখাে সালাম 

 (হাদায়িকে বখশীশ, ৩০৯ পৃষ্ঠ)। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(৪) আবু হুরায়রা দেখতেই কেঁদে দিতেন

হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: আমি যখন (ইমামে) হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কে দেখতাম, তখন আমার চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হয়ে যেতাে এবং নবী করীম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  একদিন বাইরে তাশরীফ নিয়ে এলে আমাকে মসজিদে দেখলেন, আমার হাত ধরলেন, আমি সাথে চলতে লাগলাম, হুযুরে আকরাম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم আমার সাথে কোন কথা বললেন না, এমনকি আমরা বনু কায়নুকার বাজারে প্রবেশ করলাম অতঃপর আমরা সেখান থেকে ফিরে আসলাম তখন হুযুর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করলেন: “ছােট বাচ্চা কোথায়, তাকে আমার নিকট নিয়ে এসাে!” 

হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: আমি দেখলাম (ইমামে) হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ আসলাে এবং প্রিয় আক্বা, মক্কী মাদানী মুস্তফা صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এর কোল মুবারকে বসে গেলাে, সুলতানে দোজাহান صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  নিজের জিহ্বা মুবারক তাঁর মুখে পুড়ে দিলেন এবং তিনবার ইরশাদ করলেন: “ইয়া আল্লাহ! আমি তাকে ভালবাসি, তুমিও তাঁকে ভালবাসাে এবং যে তাঁকে ভালবাসে, তাকেও তুমি ভালবাসাে।” (আল আদাবুল মুফরাদ, ৩০৪ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-১১৮৩)।

ফাতিমা কে লাল হায়দার কে পেসর! আপনি উলফত দো মুঝে দো আপনা গম 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(৫) হে আমার সর্দার! 

তাবেঈ বুযুর্গ হযরত সায়্যিদুনা আবু সাঈদ মাকবুরী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেন: আমি হযরত আবু হুরায়রা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর সাথে ছিলাম, হযরত সায়্যিদুনা হাসান মুজতাবা  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ ও সেখানে উপস্থিত হলেন এবং আমাকে সালাম করলেন, আমি সালামের উত্তর দিলাম কিন্তু হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কে (সালামের উত্তর দিতে) দেখলাম না। আমি আরয করলাম: হে আবু হুরায়রা! (হযরত ইমামে) হাসান বিন আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا আমাদের সালাম করেছেন, তখন তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ সাথে সাথেই (হযরত ইমাম) হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর প্রতি মনােযােগী হলেন এবং বললেন: “!s:/AL < অর্থাৎ হে আমার সর্দার! আপনার উপর শান্তি 

বর্ষিত হােক।” আমি নবী করীম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  কে ইরশাদ করতে শুনেছি যে, নিশ্চয় হাসান “সায়্যিদ” (অর্থাৎ সর্দার)। 

(আল মুস্তাদরিক, ৪র্থ খন্ড, ১৬১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৪৮৪৫)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(৬) সে আমার ফুল

 হযরত সায়্যিদুনা আবু বকর رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: নবী করীম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  আমাদের নামায পড়াচ্ছিলেন, এমন সময় (হযরত ইমাম) হাসান বিন আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا তাশরীফ নিয়ে আসলেন তখন তিনি ছােট ছিলেন। যখনই রাসূলে আকরাম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  সিজদায় যেতেন (হযরত ইমাম) হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ হুযুর আকরাম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর ঘাঁড় মুবারক এবং পিঠ মুবারকে বসে যেতেন। হুযুর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  খুবই ধীরে নিজের মাথা মুবারক সিজদা থেকে উঠাতেন এবং তাঁকে আদর করে নামাতেন। যখন নামায পূর্ণ হলাে তখন সাহাবায়ে কিরাম عَلَيۡهِمُ الرِّضۡوَان আরয করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এই বাচ্চার প্রতি আপনি এমনভাবে আচরণ করছেন যে, আর কারাে সাথে এরূপ আচরণ করেন না? ইরশাদ করলেন: “সে হলাে দুনিয়ায় আমার ফুল।” (মুসনাদে ব্যার, ৯ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১১১, হাদীস নং-৩৬৫৭)।

উন দো কা সদকা জিন কো কাহা মেরা ফুল হে কিজিয়ে রযা কো হাশর মে খান্দাঁ মিসালে গুল 

(হাদায়িকে বখশীশ, ৭৭ পৃষ্ঠা)। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(৭) আমার এই সন্তান হলাে সর্দার

হযরত সায়্যিদুনা আবু বকর  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: আমি দেখলাম যে, হুযুর নবীয়ে করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  মিম্বরে উপবিষ্ট আছেন এবং (ইমাম) হাসান বিন আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا

তাঁর পাশেই রয়েছেন। নবীয়ে করীম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  কখনাে মানুষের দিকে মনােযােগী হচ্ছিলেন এবং কখনাে (ইমাম) হাসান  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর দিকে দৃষ্টি দিচ্ছিলেন, হুযুর صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করলেন: “আমার এই সন্তান হলাে সায়্যিদ (অর্থাৎ নেতা), আল্লাহ তাআলা তাঁর মাধ্যমে মুসলমানদের দু’টি বড় দলের মাঝে সন্ধি করাবেন।” (বুখারী, ২য় খন্ড, ২১৪ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-২৭০৪)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(৮) ইমাম হাসান মুজতাবার খেলাফত 

আমীরুল মুমিনিন হযরত সায়্যিদুনা আলীউল মুরতাদা শেরে খােদা كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ  এর শাহাদতের পর হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান মুজতাবা ও رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ খেলাফতের মসনদে সমাসীন হলে কুফাবাসীরা তাঁর মুবারক হাতে বাইয়াত গ্রহন করে। তিনি  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ সেখানে কিছুদিন অবস্থান করেন, অতঃপর কতিপয় শর্তসাপেক্ষে খেলাফতের দায়ভার হযরত সায়্যিদুনা আমীরে মুয়াবিয়া ও رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কে সমর্পন করে দেন। হযরত সায়্যিদুনা আমীরে মুয়াবিয়া رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ সকল শর্ত মেনে নিলেন এবং পরস্পর সন্ধি হয়ে গেলাে। এভাবেই 

হুযুর নবীয়ে করীম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এর এই মুজিযা প্রকাশ পেলাে। যা তিনি صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেছিলেন যে, “আল্লাহ তাআলা আমার এই সন্তানের মাধ্যমে মুসলমানের দুটি বড় দলের মাঝে সন্ধি করিয়ে দেবেন।” (সাওয়ানেহে কারবালা, ৯৬ পৃষ্ঠা) 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(৯) ইমাম হাসান মুজতাবার খুতবা

 হযরত সায়্যিদুনা শায়খ ইউসুফ বিন ইসমাঈল নাবহানী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেন: যখন হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান মুজতাবা  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ হযরত সায়্যিদুনা আমীরে মুয়াবিয়া ও رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর বাইয়াত গ্রহন করে নেন এবং খেলাফতের দায়ভার তাকে সমর্পন করে দেন, তখন হযরত সায়্যিদুনা আমীরে মুয়াবীয়া  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কুফায় আসার পূর্বেই তিনি  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ মানুষের মাঝে খুতবা দিতে গিয়ে বলেন: “হে লােকেরা! নিশ্চয় আমি তােমাদের মেহমান এবং তােমাদের নবী صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এর আহলে বাইত, যাদের মধ্য থেকে আল্লাহ তাআলা সকল প্রকার নাপাকী দূর করে দিয়েছেন আর তাঁদের পুতঃপবিত্র করেছেন।” এই বাক্য তিনি বারবার পূনরাবৃত্তি করেন এমনকি উপস্থিত সকল লােকেরাই কান্না করতে লাগলাে এবং তাঁদের কান্নার আওয়াজ দূর থেকে শুনা যাচ্ছিলাে। 

(বারাকাতে আলে রাসূল, ১৩৮ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(১০) দুনিয়ার লজ্জা আখিরাতের আযাব থেকে উত্তম

হযরত সায়্যিদুনা হাসান মুজতাবা ও رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ যখন খেলাফত থেকে অব্যাহতি নিলেন তখন অনেক নির্বোধ লােক তাঁকে يَا عَارَ الۡمُؤمِنِيۡنَ (অর্থাৎ হে মুসলমানদের জন্য লজ্জার কারণ) বলে সম্বােধন করতাে, এতে তিনি  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলতেন: “লজ্জা, আগুন থেকে (অর্থাৎ দুনিয়ার এই লজ্জা আখিরাতের আযাব থেকে) উত্তম।”  (আল ইস্তিয়াব, ১ম খন্ড, ৪৩৮ পৃষ্ঠা)। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

সর্বপ্রথম গাউছে আযম

 ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর বিনয়ের প্রতি সাধুবাদ! খেলাফত ছাড়া কারণে আল্লাহ তাআলা তাঁকে গাউছে আযমের মর্যাদা দান করেছেন। যেমনটি ফতােয়ায়ে রযবীয়া এর ২৮তম খন্ডের ৩৯২ পৃষ্ঠায় আল্লামা আলী ক্বারী হানাফি মক্কী   رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  এর উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ রয়েছে: “নিশ্চয় আমি বুযুর্গদের নিকট থেকে জেনেছি যে, সায়্যিদুনা ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ যখন ফিতনা ও বিপদের আশঙ্কায় (অর্থাৎ মুসলমানদের মাঝে ফিতনা দূর করার মানষে) এই খেলাফত ত্যাগ করলেন, আল্লাহ তাআলা এর পরিবর্তে তাঁকে এবং তাঁর সম্মানিত বংশে গাউছে আযমের মর্যাদা প্রদান করেন। সর্বপ্রথম গাউছে আযম স্বয়ং হুযুর সায়্যিদুনা ইমামে হাসান ছিলেন এবং মধ্যখানে শুধুমাত্র হুযুর সায়্যিদুনা আব্দুল কাদের এবং শেষে হযরত ইমাম মাহদীই হবে।” ও رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمۡ (ফতােয়ায়ে রযবীয়া, ২৮তম খন্ড, ৩৯২ পৃষ্ঠা)।

صلی الله تعالی علی محد 

اعلی الحبیب! 

খেলাফতে রাশেদা 

নবীয়ে করীম صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم এর পর খলিফায়ে বরহক ও ইমামে মুতলাক হযরত সায়্যিদুনা আবু বকর সিদ্দিক, অতঃপর হযরত ওমর ফারুক, অতঃপর হযরত ওসমান গণী, অতঃপর হযরত মওলা আলী, অতঃপর ছয় মাসের জন্য হযরত ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمۡ ছিলেন, এ সকলদে  খােলাফায়ে রাশেদীন এবং তাঁদের খেলাফতকে খেলাফতে রাশেদা বলা হয়। (বাহারে শরীয়ত, ১ম খন্ড, ২৪১ পৃষ্ঠা)।

(১১) হে আল্লাহ! আমি তাকে ভালবাসি 

হযরত সায়্যিদুনা বারা বিন আযিব رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: আমি দেখলাম যে, নূরের আধার, সকল নবীদের সর্দার صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  (ইমামে) হাসান বিন আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا কে কাঁধে উঠিয়ে রেখেছেন এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে আরয করছেন: اَللّٰهُمَّ اِنِّیۡ اُحِبُّهٗ فَاَحِبَّهٗ  অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি তাঁকে ভালবাসি, তুমিও তাঁকে ভালবাসাে। 

(তিরমিযী, ৫ম খন্ড, ৪৩২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৮৯)।

 ইয়া হাসান! আপনি মুহাব্বাত দিজিয়ে! 

ইশক মে আপনে হামে গুম কিজিয়ে 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(১২) পুত্র সন্তানের জন্ম 

আরীফ বিল্লাহ, হযরত সায়্যিদুনা নুরুদ্দীন আব্দুর রহমান জামী رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ    (মৃত্যু: ৯৮৯ হিজরী) উদ্ধৃত করেন: একবার হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ হজ্বের সময় মক্কায়ে মুকাররমায় زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا পায়ে হেঁটে তাশরীফ নিয়ে যাচ্ছিলেন, পথিমধ্যে পা মুবারক ফুলে গিয়েছিলাে, গােলাম আরয করলাে: জনাব! কোন বাহনে আরােহন করে নিন, যেন পায়ের ফোলা কমে যায়, ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ গােলামের আবেদন গ্রহন করলেন না এবং বললেন: যখন নিজের গন্তব্যে পৌঁছাবে তখন সেখানে তােমার এক হাবশীর সাথে সাক্ষাৎ হবে, তার নিকট তেল থাকবে, তুমি তার থেকে সেই তেল কিনে নিও। তাঁর গােলাম বললাে: আমার পিতামাতা আপনার প্রতি উৎসর্গীত! আমি কোথাও এমন কোন লােক দেখিনি যার নিকট এমন ঔষধ রয়েছে। সেখানে কিভাবে পাব? যখন সে নিজের গন্তব্যে পৌঁছালাে, তখন সেই হাবশীকে দেখলাে। ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বললেন: এই সেই হাবশী যার সম্পর্কে আমি তােমাকে বলেছিলাম, যাও তার নিকট থেকে তেল কিনে নাও এবং মূল্য পরিশােধ করাে। গােলাম যখন তেল কেনার জন্য হাবশীর নিকট গেলাে এবং তেল চাইলাে তখন হাবশী বললাে: কার জন্য কিনছাে? গােলাম বললাে: ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর জন্য। হাবশী বললাে: আমাকে ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর নিকট নিয়ে চলাে, আমি তার গােলাম। যখন হাবশী হযরত ইমামে 

 হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর নিকট এলাে তখন আরয করলাে: জনাব! আমি আপনার গােলাম, আপনার নিকট তেলের দাম নিবাে না, আমার স্ত্রী প্রসব বেদনায় লিপ্ত, দোয়া করুন যেন আল্লাহ তাআলা নিরাপত্তার সহিত সন্তান দান করে। হযরত ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বললেন: “ঘরে যাও, আল্লাহ তাআলা তােমাকে তেমনি সন্তান দান করবেন, যেমনটি তুমি চাও এবং সে আমার অনুচরই থাকবে।” হাবশী ঘরে পৌঁছে ঘরের অবস্থা তেমনি পেলাে যেমনটি সে ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ থেকে শুনেছিলাে। (শাওয়াহেদুন নবুয়ত, ২২৭ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

 (১৩) সুরমা এবং সুগন্ধি দ্বারা আতিথেয়তা 

আমীরুল মুমিনিন হযরত সায়্যিদুনা ওসমান গনী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বিবাহের দাওয়াতে অংশগ্রহন করার জন্য (হযরত সায়্যিদুনা ইমাম) হাসান বিন আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا কে বার্তা প্রেরণ করেন। যখন তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ তাশরীফ নিয়ে এলেন তখন আমীরুল মুমিনিন হযরত সায়্যিদুনা ওসমান গণী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ নিজের সাথে আসনে বসালেন। হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বললেন: আমি রােযা আছি, যদি আমি এই বিষয়ে পূর্বে জানতাম যে, দাওয়াত করবেন তবে আমি (নফল) রােযা রাখতাম না। হযরত সায়্যিদুনা ওসমান গণী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বললেন: আপনি চাইলে আপনার জন্য তেমনই আয়ােজন করা হবে যা একজন রােযাদারের জন্য করা হয়। হযরত সায়্যিদুনা ওসমান গনী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ জিজ্ঞাসা করলেন: রােযাদারের জন্য কি আয়ােজন করা হয়? বললেন: “তা হলাে রােযাদারকে সুরমা ও সুগন্ধি লাগানাে হয়। অতঃপর আমীরুল মুমিনিন হযরত সায়্যিদুনা ওসমান গণী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ সুরমা ও সুগন্ধি আনালেন এবং তাঁকে এই দুটি লাগানাে হলাে। (তারীখে মদীনা মুনাওয়ারা, ৩য় অধ্যায়, ৯৮৪ পৃষ্ঠা)।

হে আশিকানে সাহাবা ও আহলে বাইত! এই কাহিনী থেকে আমরা এই মাদানী ফুল অর্জন করি যে, যদি মুসলমান পূর্বেই খাবারের দাওয়াত দেয় তবে সুযােগ অনুযায়ী তার মনােতুষ্টির জন্য নফল রােযা ত্যাগ করে দেয়া যায়। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(১৪) শিশুকালেই হাদীস শুনে স্মরন করে নেন

তাবেঈ বুযুর্গ হযরত সায়্যিদুনা আবুল হাওরা    رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেন: আমি হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান বিন আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا কে জিজ্ঞাসা করলাম: আপনার কি রাসূলুল্লাহ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم থেকে শুনা কোন হাদীস স্মরন আছে? বললেন: এই হাদীস শরীফটি স্মরন আছে যে, (শিশুকালে) একবার আমি সদকার (অর্থাৎ যাকাত) খেজুর থেকে একটি খেজুর উঠিয়ে মুখে পুরে দিলে নানাজান, রহমতে আলামিয়ান صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  আমার মুখ থেকে সেই খেজুর বের করে নিলেন এবং সদকার খেজুরের মধ্যে আবারাে রেখে দিলেন। আরয করা হলাে: ইয়া রাসূলাল্লাহ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  যদি একটি খেজুর তিনি খেয়ে নেন তবে এমন কি সমস্যা? প্রিয় আক্বা, মক্কী মাদানী মুস্তফা صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করলেন: اِنَّا اٰلُ مُحَمَّدٍ لَا تَحِلُّ لَنَا الصَّدَقَةُ  অর্থাৎ আমরা মুহাম্মদের সন্তানদের জন্য সদকার সম্পদ হালাল নয়। (আসাদুল গাবা, ২য় খন্ড, ১৬ পৃষ্ঠা)। 

 প্রসিদ্ধ মুফাসসীর, হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ মিরাত ৩য় খন্ডের ৪৬ পৃষ্ঠায় লিখেন: “নিজের অবুঝ সন্তানকেও নাজায়িয করাতে দেবেন না। এই দেখুন! হযরত হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ সেই সময় খুবই ছােট ছিলেন, কিন্তু হুযুরে আনওয়ার 

صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  তাঁকেও যাকাতের শুকনাে খেজুর খেতে দিলেন না।” 

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! দু’জাহানের তাজেদার, সুলতানে বাহরােবার صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  নিজের প্রিয় দৌহিত্র সায়্যিদুনা ইমাম হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কে কিরূপ উত্তম শিক্ষা দিলেন! এই বর্ণনায় আমাদের জন্য এই মাদানী ফুল রয়েছে যে, সন্তানের শিক্ষা প্রাথমিক বয়সেই করা উচিৎ। সাধারণত দেখা যায় যে, পিতামাতা সন্তানের শিক্ষার সঠিক হক আদায় করে না এবং শিশুকালে ভাল মন্দের পার্থক্য শেখায় না আর যখন সেই সন্তান বড় হয়ে যায় তখন এমন পিতামাতা নিজের সন্তানদের অবাধ্যতার কারণে কাঁদতে দেখা যায়। পিতামাতার উচিৎ যে, শিশুকালেই নিজের সন্তানদের শিক্ষা, শরীয়ত ও সুন্নাত অনুযায়ী করা। শিশু মনে করে তাকে ছেড়ে দেবেন না এবং এরূপ 

 বলে তাদের শিক্ষার প্রতি উদাসীন থাকা যে, এখনাে তাে শিশু, যখন বড় হবে নিজে নিজেই বুঝে নিবে। 

সন্তানদের উত্তম আদব শেখান

 সন্তানের উত্তম শিক্ষা সম্পর্কে মুস্তফা صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এর বাণী: “নিজের সন্তানের সাথে উত্তম আচরণ করাে এবং তাদের উত্তম আদব শেখাও।” (ইবনে মাজাহ, ৪খন্ড, ১৮৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৩৬৭১)।

তােমাদের নিকট তােমাদের সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে

হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ বিন ওমর رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا এক ব্যক্তিকে বললেন নিজের সন্তানদের উত্তম শিক্ষা দাও কেননা তােমাদের নিকট তােমাদের সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, তােমরা তাদের কিরূপ প্রশিক্ষিত করেছে এবং তােমরা তাকে কি শিখিয়েছাে? (শুয়াবুল ঈমান, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৪০০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-৮৬৬২)।

খুমিটে বেকার বাতোঁ কি, রাহে 

লব পে যিকরুল্লাহ মেরে দম বদম 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(১৫) সাথে সাথেই প্রয়ােজন মিটিয়ে দিলেন

হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর খেদমতে একজন ভিক্ষুক উপস্থিত হয়ে লিখিত আবেদন করলাে। তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ না পড়েই বললেন: তােমার প্রয়ােজন মিটিয়ে দেয়া হবে। আরয করা হলাে: হে রাসূলের দৌহিত্র رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ আপনি তার আবেদন পড়েই যদি উত্তর দিতেন। বললেন: যতক্ষণ আমি তার আবেদন পড়বো ততক্ষণ সে আমার সামনে লজ্জাবনত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে আর যদি আল্লাহ তাআলা আমাকে জিজ্ঞাসা করে যে, তুমি ভিক্ষুককে এতক্ষণ দাঁড় করিয়ে কেন রেখেছাে, কেন অপমান করেছাে? তখন আমি কি উত্তর দিবাে? (ইহইয়াউল উলুম, ৩য় খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(১৬) দশ হাজার দিরহাম দিয়ে ধন্য করে দিলেন 

হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর পাশে বসে এক ব্যক্তি একবার আল্লাহ তাআলার নিকট দশ হাজার দিরহামের প্রার্থনা করছিলাে, যখনই তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এই অভাবীর দোয়া শুনলেন, সাথে সাথেই নিজের ঘরে তাশরীফ নিয়ে গেলেন এবং সেই 

ব্যক্তির জন্য দশ হাজার দিরহাম প্রেরণ করলেন।(ইবনে আসাকির, ১৩ খন্ড, ২৪৫)।

মেরা দিল করতা হে মে ভি হজ্ব করোঁ

 হু আতা যাদে সফর চশমে করম! 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(১৭) হাজীর প্রতি দয়া প্রদর্শনকারীদের 

ক্ষমা করে দেয়া হয়

হযরত সায়্যিদুনা আবু হারুন رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ    বলেন: একবার আমি হজ্ব করার উদ্দেশ্যে বের হলাম, যখন মদীনা মুনাওয়ারা زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا  পৌঁছলাম তখন (হযরত সায়্যিদুনা ইমামে) হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর যিয়ারতের জন্যও উপস্থিত হলাম, সালাম দোয়ার পর হজ্বের সফর সম্পর্কে আরয করলাম। যখন আমি ফিরে আসছিলাম তখন (সায়্যিদুনা ইমামে) হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ আমাদের প্রত্যেকের জন্য চার চারশ দিরহাম করে পাঠালেন। আমি দিরহাম আনয়নকারীকে বললাম: আমি তাে সম্পদশালী, আমার এর প্রয়ােজন নেই। সে বললাে: আপনি হযরত (ইমাম) হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর কল্যাণকে ফিরিয়ে দেবেন না। অতঃপর আমি (হযরত সায়্যিদুনা ইমামে) হাসান  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর বরকতময় খেদমতে উপস্থিত হলাম এবং আমার সম্পদশীলতার ব্যাপারে আরয করলাম। বললেন: আমার কল্যাণের কাজকে ফিরিয়ে দেবেন না, যদি আমার বর্তমান অবস্থা এমন না হতাে তবে তা (দিরহাম গ্রহন না করা) তােমার জন্য সহজ হতাে, আমি তাে আপনাকে সফরের খরচাদি পেশ করছি, আল্লাহ তাআলা আরাফার দিন নিজ বান্দার ব্যাপারে ফিরিশতাদের সামনে গর্ব করেন এবং ইরশাদ করেন: “আমার বান্দা চিন্তান্বিত অবস্থায় আমার দরবারে রহমতের প্রার্থী হয়ে উপস্থিত, আমি তােমাদের সাক্ষী বানাচ্ছি যে, আমি তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শনকারীদের ক্ষমা করে দিলাম, তাদের সাথে মন্দ আচরণকারীদের হকে তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন কারীদের শাফায়াত কবুল করেছি।” আল্লাহ তাআলা জুমার দিনও এরূপ বলে থাকেন। (ইবনে আসাকির, ১৩ খন্ড, ২৪৮ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(১৮) অতিথিপরায়ণ বৃদ্ধা 

হাসানাঈন করীমাঈন (অর্থাৎ হাসান ও হুসাঈন) এবং আব্দুল্লাহ ইবনে জাফর رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمۡ তিনজনই হজ্বের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন, খাবার পানিয় এবং মালপত্রের উট অনেক পেছনে রয়ে গিয়েছিলাে। ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় অতিষ্ট হয়ে তাঁরা পথে এক বৃদ্ধার তাবুতে গেলেন এবং তাকে বললেন: আমাদের পিপাসা লেগেছে। তিনি একটি ছাগলের দুধ বের করে এই তিনজনকে পেশ করলেন। দুধ পান করে তাঁরা বললেন: খাবারের জন্য কিছু আনুন! বৃদ্ধা বললেন যে, খাবারের জন্য তাে কিছু নাই, আপনারা এই ছাগলটি জবাই করে খেয়ে নিন। তাঁরা এমনি করলাে, খাওয়া দাওয়ার পর তাঁরা বললাে: আমরা হলাম কুরাইশী, যখন সফর থেকে ফিরে আসবাে আপনি আমাদের নিকট আসবেন, আমরা এই অনুগ্রহের প্রতিদান দিবাে। একথা বলে তাঁরা সামনের দিকে অগ্রসর হলেন, যখন সেই বৃদ্ধার স্বামী আসলাে তখন এতই অসন্তুষ্ট হলাে যে, তুমি ছাগলটি এমন লােকের জন্য জবাই করে দিয়েছো, যাদের সম্পর্কে না আমরা জানি এবং না আছে তাদের সাথে বন্ধুত্ব। এই ঘটনার পর কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে গেলাে। সেই বৃদ্ধা ও তার স্বামীর মদীনা মুনাওয়ারায় زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا  যাওয়ার প্রয়ােজন হলাে, তারা সেখানে পৌঁছলাে এবং উটের মল খুঁজে খুঁজে বিক্রি করতে লাগলাে (যেন তাদের পেট ভরতে পারে)। একদিন এই বৃদ্ধা কোথাও যাচ্ছিলাে, পথিমধ্যে হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর মহা মর্যাদাময় বাড়ির পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাে, তখন তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ দরজায় দাড়িয়ে ছিলেন। বৃদ্ধার প্রতি যখনই দৃষ্টি পরলাে, তখনই তাকে চিনে নিলেন এবং তাকে বললেন: হে মহিলা! আপনি কি আমাকে চিনতে পারছেন? সে বললাে: না। তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বললেন: আমি হলাম সেই, যে অমুক দিন আপনার মেহমান হয়েছিলাে। সে বললাে: আচ্ছা! আপনি তাহলে সেই? এরপর তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ সেই বৃদ্ধাকে এক হাজার ছাগল এবং এক হাজার দীনার প্রদান করলেন আর তার গােলামের সাথে তাকে হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হুসাইন : رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর নিকট প্রেরণ করলেন। তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বৃদ্ধার নিকট জিজ্ঞাসা করলেন: হে মহিলা! আমার ভাইজান আপনাকে কি দিয়েছে? সে বললাে: এক হাজার ছাগল এবং এক হাজার দীনার দান করেছেন। হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হুসাইন رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ তাকে এরূপ উপহার প্রদান করেন এবং তাঁর গােলামের সাথে হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে জাফর رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর নিকট প্রেরণ করলেন। তিনি বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করলেন: হাসানাঈন করীমাঈন رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا আপনাকে কতটুকু মাল দিয়েছেন? তিনি বললেন: তাঁরা উভয়ে দু’হাজার ছাগল এবং দু’হাজার দীনার প্রদান করেছেন। হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে জাফর رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ ও তাকে দুই হাজার দীনার এবং দুই হাজার ছাগল দান করলেন। এভাবে সেই বৃদ্ধা চার হাজার দীনার এবং চার হাজার ছাগল নিয়ে তার স্বামীর নিকট ফিরে গেলাে। (ইহইয়াউল উলুম, ৩য় খন্ড, ৩০৭ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(১৯) সবকিছু খয়রাত করে দিলেন 

রাকিবে দোশে মুস্তফা, সায়্যিদুল আসখিয়া হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ দুইবার নিজের ঘরের সবকিছু এবং তিনবার অর্ধেক মালপত্র আল্লাহ তাআলার পথে ব্যয় করে দেন। 

(হিলইয়াতুল আউলিয়া, ২য় খন্ড, ৪৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-১৪৩৪)। 

এ্যয় সাখি ইবনে সাখি আপনি সাখা 

সে দু হিচ্চা সায়্যিদে আলী হাশাম। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد

(২০) তিলাওয়াতের আগ্রহ

 রাসূলের দৌহিত্র, মুরতাদার বাগানের জান্নাতি ফুল, বতুলের কলিজার টুকরাে সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ প্রতি রাতে সূরা কাহাফ এর তিলাওয়াত করতেন। এই মুবারক সূরাটি একটি ফলকে লেখা ছিলাে, তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ নিজের যেই স্ত্রীর নিকট তাশরীফ নিয়ে যেতেন এই মুবারক ফলকও তাঁর সাথে থাকতাে। 

(শুয়াবুল ঈমান, ২য় খন্ড, ৪৭৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-২৪৪৭)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(২১) ইমামে হাসানের অভ্যাস সমূহ 

হযরত সায়্যিদুনা আবু সাঈদ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: হযরত সায়্যিদুনা আমীরে মুয়াবিয়া رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ একবার মদীনা মুনাওয়ারা زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا এর এক কুরাইশী লােক থেকে সায়্যিদুনা ইমামে হাসান বিন আলী رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا এর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তখন সে আরয করলাে: হে আমীরুল মুমিনিন! তিনি ফযরের নামায আদায় করার পর সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত মসজিদের নববী শরীফেই عَلٰی صَاحِبِهِا الصَّلٰوةُ و السَّلَام  অবস্থান করেন। অতঃপর সাক্ষাতের জন্য আগতদের সাথে সাক্ষাত ও কথাবার্তা বলেন, এমনকি সকাল হয়ে যেতাে, এবার দু’রাকাত নামায আদায় করেন, এরপর উম্মাহাতুল মুমিনিনদের দরবারে উপস্থিত হন, সালাম করেন, অনেক সময় উম্মাহাতুল মুমিনিনদের رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُنَّ কোন না কোন উপহার পেশ করেন। এরপর তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ নিজের ঘরে তাশরীফ নিয়ে যান। তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ সন্ধ্যার সময়ও এরূপ করতেন। অতঃপর এই কুরাইশী লােকটি বললাে: আমাদের মধ্যে কেউ তাঁর সমমর্যাদাবান নই। (ইবনে আসকির, ১৩তম খন্ড, ২৪১ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(২২) মদীনা থেকে মক্কা বিশ বার পায়ে হেঁটে সফর 

হযরত সায়্যিদুনা মুহাম্মদ বিন আলী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেন: হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: আমার লজ্জা হয় যে, আপন রব তাআলার সাথে এভাবে মিলিত হবাে যে, তাঁর ঘরের দিকে কখনাে হাঁটলাম না। সুতরাং তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বার মদীনা মুনাওয়ারা زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا  থেকে পায়ে হেঁটে মক্কায়ে মুকাররমা زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا  এর যিয়ারতের জন্য উপস্থিত হয়েছেন।(হিলইয়াতুল আউলিয়া, ২য় খন্ড, ৪৬ পৃষ্ঠা, নম্বর-১৪৩১)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(২৩) গােলাম মুক্ত করে দিলেন

 হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ একবার কিছু মেহমানের সাথে খাবার খাচ্ছিলেন, গােলাম গরম গরম ঝােলের পাত্র দস্তরখানায় এনে রাখছিলাে, এমন সময় তার হাত থেকে পাত্র পরে গেলাে, যার কারণে ঝােলের দাগ তাঁর গায়েও এসে পড়লাে। তা দেখে গােলাম ঘাবড়ে গেলাে এবং লজ্জাবনত ভঙ্গিতে সূরা আলে ইমরানের ১৩৪ নং আয়াতের এই অংশটি তিলাওয়াত করলাে:

 وَالۡکٰظِمِیۡنَ الۡغَیۡظَ وَ الۡعَافِیۡنَ عَنِ النَّاسِوَ অর্থাৎ “এবং ক্রোধ-সংবরণকারী, মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শনকারী।” তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বললেন: আমি ক্ষমা করলাম। গােলাম অতঃপর এই আয়াতের শেষ অংশটি পাঠ করলাে:وَ اللّٰہُ یُحِبُّ الۡمُحۡسِنِیۡنَ  অর্থাৎ “এবং সৎব্যক্তিবর্গ আল্লাহ তাআলার : প্রিয়।” তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বললেন: আমি তােমাকে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য মুক্ত করে দিলাম। (রুহুল বয়ান, ২য় খন্ড, ৯৫ পৃষ্ঠা)। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(২৪) যদি এক কানে গালি এবং অপর…

 হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: لَوۡ اَنَّ رَجُلًا شَتَمَنِیۡ فِیۡ اُذُنِیۡ هٰذِهٖ، وَاعۡتَذَرَ اِلَیَّ فِیۡ اُذُنِی ا لۡاُخۡرٰی لَقَبِلۡتُ عُذۡرَهُ”  অর্থাৎ যদি কেউ আমার এক কানে গালি দেয় এবং অপর কানে ক্ষমা চেয়ে নেয় তবে আমি অবশ্যই তার প্রার্থনা গ্রহন করবাে।” 

(বাহজাতুল মাজালিশ, ২য় খন্ড, ৪৮৬ পৃষ্ঠা)। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد  

(২৫) নামাযের সময় রঙ পরিবর্তন হয়ে যেতাে

হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ যখনই ওযু করে নিতেন তখন তাঁর রঙ পরিবর্তন হয়ে যেতাে। এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে বলেন: “যে ব্যক্তি আরশের মালিক (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা) এর দরবারে উপস্থিতির ইচ্ছা করে তবে হক হলাে এটি যে, তার রঙ পরিবর্তন হয়ে যাওয়া।” (ওয়াফিয়াতুল ইয়ান, ২য় খন্ড, ৫৬ পৃষ্ঠা)। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(২৬) কুকুরের প্রতি দয়া প্রদর্শনকারী অসাধারন গােলাম 

হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ মদীনা মুনাওয়ারা زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا  এর একটি বাগানে এমনই এক কালাে গােলামকে দেখলেন, যে এক গ্রাস নিজে খাচ্ছে আর এক গ্রাস কুকুরকে খাওয়াচ্ছে। তিনি زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا  তার নিকট তাশরীফ নিয়ে গেলেন এবং বললেন: তােমাকে এরূপ করতে কে উদ্বুদ্ধ করলাে? সে আরয করলাে: আমার এই বিষয়ে লজ্জা হয় যে, নিজে তাে খেয়ে নিবাে কিন্তু তাকে খাওয়াবাে না। তাঁর (অর্থাৎ হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُএই কথাটি খুবই পছন্দ হলাে, তিনি 

 رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ তাকে বললেন: আমি ফিরে আসা পর্যন্ত এখানেই অপেক্ষা করাে। একথা বলে তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ তার মালিকের নিকট তাশরীফ নিয়ে গেলেন এবং তার থেকে সেই গােলাম ও বাগান কিনে নিলেন এবং গােলামকে মুক্ত করে বাগানটি তাকে উপহার স্বরূপ দিয়ে দিলেন। গােলামও বুদ্ধিমান ছিলাে এবং আল্লাহ তাআলার পথে ব্যয় করার গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত ছিলাে, সুতরাং সে সাথে সাথেই আরয করলাে:   يَا مَوۡلَایَ! قَدۡ وَهَبۡتُ الۡحَاءِطَ لِلَّذِی وَهَبۡتَنِی لَهُ  অর্থাৎ হে আমার মুনিব! আমি এই বাগানটি তাঁরই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হেবা (উপহার) করলাম, যার সন্তুষ্টির জন্য আপনি আমাকে তা দান করেছেন। (তারীখে বাগদাদ, ৬ষ্ট খন্ড, ৩৩ পৃষ্ঠা, নম্বর-৩০৫৯)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(২৭) ইমাম হাসান মুজতাবার স্বপ্ন

 হযরত সায়্যিদুনা ইমরান বিন আব্দুল্লাহ     رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  থেকে বর্ণিত যে, হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ স্বপ্নে দেখলেন যে, তাঁর চোখের মাঝখানে “قُلۡ هُوَ اللّٰهُ اَحَدٌ” লিখা রয়েছে। তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এই সুসংবাদটি নিজের আহলে বাইতদের জানালেন। তাঁরা যখন এই ঘটনা তাবেঈ বুযুর্গ হযরত সায়্যিদুনা সাআদ বিন মুসাইয়িব  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  এর সামনে বর্ণনা করলেন তখন তিনি  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  বলেন: যদি আসলে তিনি এই স্বপ্ন দেখে থাকেন তবে তাঁর বয়সের আর কয়েকদিনই বাকী আছে। এই ঘটনার কয়েকদিন পরই ইমামে হাসান মুজতাবা  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর ওফাত হয়ে গেলাে। 

(আত তাবকাতিল কুবরা লিইবনে সাআদ, ৬ষ্ট খন্ড, ৩৮৬ পৃষ্ঠা, নম্বর-৭৩৭৯)। 

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

 (২৮) এমন সৃষ্টি পুর্বে কখনােই দেখিনি 

ওফাত নিকটবর্তী হতেই হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হুসাইন رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ দেখলেন যে, সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর আতঙ্ক বিরাজ করছিলাে। তিনি رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ তাঁর সান্তনার জন্য আরয করলেন: ভাইজান! আপনি অসন্তুষ্ট কেন? রাসূলুল্লাহ صَلَّی اللّٰهُ تَعَالٰی عَلَيۡهِ وَاٰلِهٖ وَسَلَّم  এবং হযরত আলী كَرَّمَ اللّٰه تَعَالٰی وَجۡهَهُ الۡكَرِیۡمِ  এর খেদমতে আপনার অতি শীঘ্রই উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্য নসীব হবে এবং তাঁরা উভয়ে আপনার নানাজান এবং আব্বাজান, আর হযরত খাদীজাতুল কুবরা, হযরত ফাতিমাতুয যাহরা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا এর দরবারে উপস্থিতি হবে আর তাঁরা উভয়ে আপনার নানিজান এবং আম্মাজান। হযরত কাসিম ও তাহির رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا এর দীদার নসীব হবে এবং তাঁরা আপনার মামা এবং হযরত হামযা ও জাফর رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا এর সাথে সাক্ষাত হবে এবং তারা হলাে আপনার চাচা। হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: হে ভাই! আজ আমি এমন এক ব্যবস্থাপনায় প্রবেশকারী, যাতে আমি পূর্বে কখনো প্রবেশ করিনি এবং আজ আমি আল্লাহ তাআলার সৃষ্টির মধ্য হতে এমন এক সৃষ্টিকে দেখছি, যার মতো আমি আর কখনো দেখিনি। (তারীকুল খুলাফা,১৫৩ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

শাহাদতের কারণ

হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কে বিষ দেয়া হয়েছিলাে। সেই বিষই তাঁর উপর এমন প্রভাব বিস্তার করে যে, নাড়িগুলাে টুকরাে টুকরাে হয়ে বের হতে লাগলাে, ৪০ দিন পর্যন্ত তিনি ও رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ কঠিন কষ্টে ছিলেন। 

ওফাতের হতাশামূলক আয়াত

 ইমামে আলী মকাম, ইমামে আরশে মকাম, ইমামে হুমাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম আবু মুহাম্মদ হাসান رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ ৫ রবিউল আউয়াল ৫০ হিজরীতে মদীনা মুনাওয়ারায় زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا এই নশ্বর পৃথিবী থেকে চির বিদায় গ্রহন করেন (অর্থাৎ ওফাত গ্রহন করেন), اِنَّا لِلّٰہِ وَ  اِنَّاۤ اِلَیۡہِ رٰجِعُوۡنَ।  (সিফতুস সুফুত, ১ম খন্ড, ৩৮৬ পৃষ্ঠা) এটাও বলা হয় যে, ৪৯ হিজরীতে ওফাত গ্রহন করেন। শাহাদাতের সময় হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান মুজতাবা  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর বয়স ছিলাে ৪৭ বছর। 

(তাকরীবুল হাযিব লিইবনে হাজর আসকালানী, ৩৪০ পৃষ্ঠা)। 

(২৯) জানাযার নামায

 হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান মুজতাবা  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ জানাযার নামায হযরত সায়্যিদুনা সাঈদ বিন আ’স  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ পড়িয়েছেন, যিনি সেই সময় মদীনা মুনাওয়ারার زَادَها للّٰهُ شَرَفًا وَّتَعۡظِیۡمًا  গভর্নর ছিলেন। হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হুসাইন  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ তাঁকে জানাযা পড়ানাের জন্য অনুরােধ করেন। (আল ইস্তিয়াব, ১ম খন্ড, ৪৪২ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

(৩০) জানাযায় মানুষের ভিড়

 হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর জানাযায় এমন ভিড় ছিলাে যে, হযরত সায়্যিদুনা ছা’লাবা বিন আবী মালিক   رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ বলেন: আমি ইমাম হাসান মুজতাবা  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর জানাযায় অংশগ্রহন করলাম, তাঁকে জান্নাতুল বকীতে তাঁর সম্মানীতা আম্মাজানের পাশেই দাফন করা হয়, আমি জান্নাতুল বকীতে মানুষের এমন ভিড় দেখলাম যে, যদি একটি সুইও ফেলা হতাে তবে ভিড়ের কারণে তা মাটিতে পড়তাে না বরং কোন না কোন মানুষের মাথায় পড়তাে। (আল আসাবা, ২য় খন্ড, ২৫ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

ইমামে হাসানের সন্তানাদি 

তাঁর অনেক সন্তান ছিলাে, ইমাম ইবনে জাওযী  رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  তাঁর শাহাজাদাদের সংখ্যা ১৫জন এবং শাহাজাদিদের সংখ্যা ৮জন লিখেছেন। (আল মুনতাযাম, ৫ম খন্ড, ২২৫ পৃষ্ঠা) আর ইমাম মুহাম্মদ বিন আহমদ যাহবী   رَحۡمَةُ اللّٰهِ تَعَالٰی عَلَيۡهِ  তাঁর ১২জন শাহাজাদার নাম লিখেছেন: হাসান, যায়িদ, তালহা, কাসিম, আবু বকর এবং আব্দুল্লাহ এই ছয়জন তাঁদের 

চাচাজান সায়্যিদুশ শুহাদা হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হুসাইন  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর সাথে কারবালার ময়দানে শাহাদতের অমীয় সূধা পান করেন। বাকী ছয়জন হলাে: আমর, আব্দুর রহমান, হুসাইন, মুহাম্মদ, ইয়াকুব এবং ইসমাঈল رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمۡ اَجۡمَعِیۡن

হযরত সায়্যিদুনা ইমামে হাসান মুজতাবা  رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُ এর বংশ (অর্থাৎ হাসানী সায়্যিদের) ধারাবাহিকতা হযরত সায়্যিদুনা হাসান মুসান্না এবং হযরত সায়্যিদুনা যায়িদ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰی عَنۡهُمَا এর মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে।(সীয়রে আ’লামুন নিবালা, ৪র্থ খন্ড, ৪০১ পৃষ্ঠা)।

صَلُّوۡا عَلَى الۡحَبِيۡب

صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلٰى مُحَمَّد 

মদীনার ভালবাসা, 

জান্নাতুল বাক্বী, ক্ষমা ও বিনা হিসেবে জান্নাতুল ফিরদাউসে প্রিয় আক্বা ন্নভভব এর 

প্রতিবেশীত্বের প্রত্যাশী। 

রমযানুল মুবারক ১৪৩৮ হিজরী 

June 2017 

এই রিসালাটি পাঠ করে অন্যকে দিয়ে দিন। 

বিবাহ বা শোকের অনুষ্ঠান, ইজতিমা, ওরশ এবং জুলুসে মিলাদ ইত্যাদিতে মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত রিসালা এবং মাদানী ফুলের লিফলেট বন্টন করে সাওয়াব অর্জন করুন, গ্রাহকদের সাওয়াবের নিয়্যতে দেওয়ার জন্য আপনার দোকানেও রিসালা রাখার অভ্যাস গড়ুন, হকার কিংবা শিশুদের মাধ্যমে আপনার মহল্লার প্রতিটি ঘরে সাধ্যানুযায়ী রিসালা বা মাদানী ফুলের লিফলেট প্রতি মাসে পৌছিয়ে নেকীর দাওয়াতের সাড়া জাগান এবং সাওয়াব অর্জন করুন। 

রকিবে দোশে শাহানশাহে উমাম 

ইয়া হাসান ইবনে আলী! করদো করম

 ইয়া হাসান ইবনে আলী! করদো করম। ফাতিমা কে লাল হায়দার কে পেসর! 

আপনি উলফত দো মুঝে দো আপনা গম আপনে নানা কি মুহাব্বত দিজিয়ে 

অউর আতা হাে কলবে মুযতার চমমে নম 

খুমিটে বে কার বাতোঁ কি রাহে 

লব পে যিকরুল্লাহ মেরে দম বদম 

এ্যয় সাখি ইবনে সাখি আপনি সাখা

 সে দো হিচ্চা সায়্যিদে আলী হাশাম

 আ’ল ও আসহাবে নবী সে পেয়ার হে 

সারে সরকারোঁ কে দর পর সর হে খম 

পেশওয়ায়ে নওজোয়ানে বেহেশত 

হে মুহাম্মদ ﷺ হে নাওয়াসে লা জারাম

 ইয়া হাসান! ঈমাঁ পে তুম রেহনা গাওয়াহ আব্দে হক হোঁ খাদিমে শাহে উমাম। 

আহ! পাল্পে মে কোয়ী নেকী নেহী 

আরসায়ে মাহশার মে রাখ লেনা ভরম 

মেরা দিল করতা হে মে ভি হজ্ব করোঁ

হাে আতা যাদে সফর চশমে করম! 

তায়্যিবা দেখে এক যামানা হাে গেয়া 

ইয়া হাসান! দেখা দো নানা কা হারাম

জযবা তাে “নেকী কি দাওয়াত” কা মুঝে

রাহে হক মে মেরে জম জায়ে কদম 

মে সদা দ্বীনি কুতুব লিখতা রাহোঁ

 ইয়া হাসান! দে দিজিয়ে এ্যয়সা কলম

 দ্বীন কি খেদমত কা জোশ ও ওয়ালওয়ালা হাে ইনায়াত ইয়া ইমামে মুহতারাম। 

এ্যয় শহীদে কারবালা কে ভাইজান! 

দুর হোঁ আত্তার কে রনজ ও আলম 

শব্দার্থ: রাকিব-আরােহী। দোশ-কাঁধে বহন করা। লাল-সন্তান। পেসর-সন্তান। 

মুদতার-অশান্ত। চশমে নম-অশ্রুসজল চোখ। খু- অভ্যাস। লব – জিহ্বা। দমবদম-সর্বদা। সাখা-দানশীলতা। আলী হাশম-অধিক বুযুর্গী  সমৃদ্ধ। খম-নত হওয়া। আরসায়ে মাহশার-কিয়ামতের ময়দান। ভরম – সম্মান। সদা-সর্বদা। ওয়ালওয়ালা-অনেক বেশী আগ্রহ। আলাম-দুঃখ। 

 তথ্যসূত্র :

কিতাব + প্রকাশনা

কোরআনে করীম – 

রূহুল বয়ান – দারূল ইহইয়াউত তুরাসিল আরাবী

বুখারী-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

তিরমিযী-দারূল ফিকির

ইবনে মাজাহ – মা’আরিফ

আল আদাবুল মুফরাদ – মিশর

মসনাদে বযার-মাকতাবাতুল ইলুম ও হিকম

মুসতাদরিক-দারূল মারেফা

শুয়াবুল ঈমান-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

হিলইয়াতুল আউলিয়া-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

তাবকাতুল কুবরা-মাকতাবাতুল হানজি কাহিরা

তারিখে মদীনাতুল মুনাওয়ারা-দারূল ফিকির

তারিখে বাগদাদ-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

আল ইস্তিয়াব-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

ইহইয়াউল উলুম-দারে সাদির

ফতােয়ায়ে রযবীয়া-রযা ফাউন্ডেশন

সাওয়ানেহে কারবালা-মাকতাবাতুল মদীনা

বাহজাতুল মাজালিস-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

আল মুনতাযাম-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

সফতুস সুফুত-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

ইবনে আসাকির-দারূল ফিকির

ওয়াফিয়াতুল আয়ান-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

আসাদুল গাবা-দারূল ইহইয়াউত তুরাসিল আরাবী

সাবলুল হুদা-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

সীয়রে আলামুন নিবালা-দারূল ফিকির বৈরুত

আল আসাবাতা-দারূল কুতুবুল ইলমিয়্যা

তাকরীবুত তাহযীব-দারূল আসামাতার রিয়ায

তারিখুল খুলাফা-বাবুল মদীনা করাচী

আল কওলুল বদী-মওসাসাতুর রাইয়ান

শাওয়াহিদুন নবুয়ত-মাকতাবাতুল হাকিকি ইস্তানবুল

আয যারিয়াতুত তাহিরা-কুয়েত

বারাকাতে আলে রাসূল-যিয়াউল কোরআন পাবলিকেশনস

বাহারে শরীয়ত-মাকতাবাতুল মদীনা

 নামাযী হওয়ার জন্য প্রত্যেক বৃহস্পতিবার ইশার নামাযের পর আপনার এলাকায় অনুষ্ঠিত দাওয়াতে ইসলামীর সাপ্তাহিক সুন্নাতে ভরা ইজতিমায়

আল্লাহ তাআলার সন্তষ্টির উদ্দেশ্যে ভাল ভাল নিয়্যত সহকারে সারা রাত অংশগ্রহন করুন। সুন্নাতের প্রশিক্ষনের জন্য মাদানী কাফেলায় আশিকানে রাসূলের সাথে সফর এবং প্রতিদিন “ফিকরে মদীনা”র

মাধ্যমে মাদানী ইনআমাতের রিসালা পূরণ করে প্রত্যেক মাদানী মাসের প্রথম তারিখে আপনার এলাকার যিম্মাদারকে জ

মা করানাের অভ্যাস গড়ে নিন।

 মাদানী উদ্দেশ্য: “আমাকে নিজের এবং সারা দুনিয়ার মানুষের সংশােধনের চেষ্টা করতে হবে।” 

اِنۡ شَاءَ اللّٰه নিজের সংশােধনের জন্য মাদানী ইনআমাত” এর উপর আমল এবং সারা 

দুনিয়ার মানুষের সংশােধনের চেষ্টা করার জন্য “মাদানী কাফেলা”য় সফর করতে হবে। اِنۡ شَاءَ اللّٰه

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment