কারবালার সেই হত্যাকাণ্ডে কি ইয়াজিদ দায়ী নয়?
▪জেনে রাখুন আহলে বাইত কারা?
➖➖➖➖ ✍️ ইমরান বিন বদরী
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহপাক রব্বুল আ’লামীনের দরবারে, যিনি অসংখ্য মাখলূকাতের মধ্যে একমাত্র মানব জাতিকে তথা মানুষকে “আশরাফুল মাখলূকাত” অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা দান করেছেন। সালাত ও সালাম হাবীবে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি।
ইয়াজিদের পরিচয় আশাকরি সবার যানা আছে। নতুন করে পরিচয় দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনেহয় না। ইতিহাসে নির্মম কালো অধ্যায় রচনাকারী এই কুখ্যাত ইয়াজিদ। পৃথিবীতে কুখ্যাতি জন্য যে সকল লোক ধিকৃত, ইয়াজিদ তাদের অন্যতম। ‘ইয়াজিদ’ এমনই একটি কলঙ্কিত নাম যাকে আজো বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ অভিসম্পাত করে থাকেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে আজও আমাদের মাঝে তার কিছু অনুসারীর উপস্থিতি লক্ষণীয়। তারা হয়তো জানেওনা যে তাদের ভালবাসার মানুষটির সাথেই কাল হাশর হবেন। আমরা জান্নাতের সরদার ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর সাথে হাশরের মাঠে উপস্থিত হতে চাই বলেই আমার এই লেখা। ইয়াজিদকে ভালোবেসে তার সাথে হাশর হোক তা আমি চাইনা।
মহররম মাস আসলেই আমাদের মাঝে স্পষ্ট হয় ইয়াজিদী আর হোসাইনিদের পার্থক্য। ইসলামে দুটি গোত্রের স্পষ্টতা রয়েছে শিয়া আর সুন্নি। অনেকে মডার্ন মুসলিম সেজে অস্বীকার করেন যে ইসলামে এসব আবার কি? বিষয়টি খুবি কঠিন এবং গভীর চিন্তাভাবনার দাবী রাখেন। কথার উপর শিয়া সুন্নি এসব ইসলামকে ভাগ করার পায়তারামাত্র বলে উড়িয়ে দিলে সত্য মিথ্যার পার্থক্য কিন্তু আপনার নজরে স্পষ্ট হবেনা কোনদিন।
আমি শিয়াদের ব্যপারে বলতে চাইনা, শিয়া তো শিয়াই যারা আহলে বাইতকে ভালোবাসার নামে খলিফাতুর রাসুলদেরও গালি দিতে কুণ্ঠাবোধ করেনা। সেটা ভিন্ন বিষয়। আমি আজ সেই সব ইয়াজিদি মুসলমানদের কথাই বলবো যারা আহলে বাইতকে বেশুমার ভালোবাসার মাফকাঠিকে সীমাবদ্ধতায় নিয়ে এসে ইয়াজিদকে রাহিমাহুল্লাহ বলতে মরিয়া। যারা আজ ইয়াজিদের ভালবাসায় বিভোর।
আসুন মুল কথায় আসি। ইয়াজিদ সম্পর্কে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে আহলে বাইত কারা এবং তাদের মর্যাদা কি, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা থাকা চাই। অন্যথায় এসব সুক্ষ বিষয়টি সহজে কারো বোধগম্য হবেনা। সেদিন সপরিবারে কারবালার প্রান্তে যার পরোক্ষ নির্দেশে আহলে বাইতদেরকে শহীদ করা হয় তার প্রতি এতো দরদ দেখে কি মনে প্রশ্ন জাগেনা! এখনো ইয়াজিদীরা অর্থাৎ ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর বিপক্ষে তলোয়ার চালানো লোকের অনুসারীরা আমাদের সমাজে বিদ্যমান!
ইয়াজিদের সমস্ত অপরাধকে ভালোবাসাযুক্ত দেখে কারবালারমত এতোবড় ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাকরণ কেন? ইয়াজিদের প্রতি এতো ভালোবাসার উৎপত্তির কারণ কি? ১০ ই মহররম কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার সময় সে কি সিরিয়ার মসনদে আসীন ছিলোনা! কুফার তথা বর্তমান ইরাকের ইবনে জিয়াদ কার হুকুমে কারবালার প্রান্তরে গিয়েছিল? এতোবড় মর্মান্তিক একটা ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা মনে করার কারণ কি? এসব প্রশ্নগুলি আজ আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে।
কোন মুমিন বান্দা ইয়াজিদকে ভালো বাসতে পারেনা। ভালোবাসার তো কোন প্রশ্নেই আসেনা। সেতো ঘৃণির। তার প্রতি যে ঘৃণার কারণে আজ পর্যন্ত কোন মুসলমান ইয়াজিদ নামটিও তার সন্তানের জন্য উপযুক্ত মনে করেনাই। যে ব্যক্তি মুহাম্মদি ধর্মকে অবজ্ঞা করে ইসাঈ চিন্তা চেতনায় মদ এর মত নিষিদ্ধ পানীয়কে হালাম মনে করে তার প্রতি এতো দরদ কি মুসলমান হিসেবে প্রশ্নবিদ্ধ নয়!?
ইয়াজিদ যদি অপরাধের নির্দেশনা না দিতেন তো হজরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর মস্তকহীন দেহ রেখে মস্তক মুবারক কেন সিরিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ইয়াজিদ যদি আহলে বাইতের প্রতি এতোই দরদি ছিলো তো লাঠি আঘাত কেন শহীদ হওয়া ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর মুখের উপর করেছিলো। ইয়াজিদ যদি এতো আহলে বাইতের হত্যার নির্দেশ না দিতেন তো কারবালার নির্মম ঘটনার পরবর্তীতে এমন অমানুষিক কর্মকাণ্ডের কেসাস কেন নেয়নি। কারবালার ঘটনার প্রত্যক্ষ নায়ক ইবনে জিয়াদ আর শিমার তো কারবালার পরবর্তীতে বহাল তবিয়তে ছিলো। ইয়াজিদ যদি এতোই ধার্মিক হতো তো মদিনার মতো পবিত্র স্থানে এভাবে সাহাবীদের অর্থাৎ মদিনাবাসীদের নির্যাতন কিভাবে করেছে? মদিনা শরীফে তিনদিন মসজিদে নববীতে আজান পর্যন্ত হয়নি ইয়াজিদিদের আক্রমণে। মক্কায় হামলা করে কাবা শরীফের গিলাফে আগুন লাগাতে পারতোনা।
এর পরেও অনেকে ইয়াজিদকে জান্নাতি বানানোর জন্য তার পিতা হজরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সময়ে ইয়াজিদও নাকি বর্তমান তুর্কীতে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলো। বেশ ভালোকথা, হাদিস শরীফ অনুযায়ী সে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীরা জান্নাতি। ইয়াজিদ ভক্তদের যুক্তি হচ্ছে সে হিসেবে ইয়াজিদও জান্নাতি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোন ব্যক্তি যদি লাইলাতুলকদর রাতে ইবাদত করে বা আশুরার রোজা রাখে বা আরাফার দিন রোজা রেখে মানুষ হত্যা করেন, তবে কি সে হত্যাকারী ব্যক্তিও আল্লাহ দরবারে তার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা পাবেন? কারণ কদর রাতে ইবাদত করা মানে তো হাজার বছরের ইবাদতের সমান, আশুরা রোজা, আরাফার দিনের রোজার ফজিলত কিন্তু আগে পরের একটি বছরের গুনাহ মাফের কথা বলা হয়েছে।
তাই যদি হয় তো ইসলামে হত্যার বদলে হত্যার হুকুমের কি হবে? ইয়াজিদের ব্যাপারটিও কি ঠিক সে রকম নয়? যে একদিকে জান্নাতি দলের সাথে যুদ্ধে গমন অন্যদিকে জান্নাতের সরদারকে সপরিবারে কারবালার প্রান্তরে শহীদ করে দেওয়া!! এটা কিভাবে সম্ভব? ইয়াজিদের রাষ্ট্রে এতোবড় হত্যাকাণ্ড আর ইয়াজিদ অবগত নয় এটাও কি বিশ্বাস করতে হবে আমাদের?
অল্প বয়সে মারা যাওয়া ইয়াজিদেই ছিলেন ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক।
এবার আসুন ইয়াজিদের অপরাধ বুঝতে হলে আহলে বাইতের প্রতি একজন মুসলমানের কতটুকু ভালোবাসা থাকা চাই সে বিষয়ে আলোকপাত করি।
যে ভালোবাসার ঘাটতি থাকায় আজ ইয়াজিদের প্রেমে বিভোর আমাদের কিছু ভাই! ইনিয়ে বিনিয়ে বলা হচ্ছে কারবালার ঘটনায় ইয়াজিদের কোন হাত ছিলনা।অথচ যার নেতৃত্বে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড হয়েছিল সেই ইবনে জিয়াদকে কুফায় গভর্নর হিসেবে ইয়াজিদেই নিযুক্ত করেছিল। ইমাম হোসাইন রাদিআল্লাহু আনহুর চাচাত ভাই হজরত মুসলিম বিন আকিলকে হত্যাকরা থেকে শুরু করে কারবালা পর্যন্ত সমস্ত কাজ ইয়াজিদ সুক্ষভাবে তাকে দিয়েই সমাধান করিয়েছিলো। ইয়াজিদ নাকি ইবনে জিয়াদকে ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে তার উপর বায়াতের জন্য হুকুম দিয়েছিল হত্যার জন্য নয়! দেখুন কিভাবে ইতিহাস বিকৃত করে ইয়াজিদকে রক্ষার মিশনে নেমেছে আজ মুসলিম পরিবারের সন্তানেরা। আশ্চর্য!!
➡ আসুন সূরা আশ-শুরার ২৩ নং আয়াত নিয়ে একটু আলোচনা করি আহলে বাইতের মর্যাদা নিয়ে। পূর্ববর্তী আয়াতে অর্থাৎ ২২ নং আয়াতে কাফিরদের ভয় দেখিয়ে আল্লাহপাক মুমিনদের সুসংবাদ স্বরূপ বলেন,
قُل لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى
অর্থাৎ: হে হাবীব আপনি বলুন, আমি তোমাদের নিকট দাওয়াত পালনের (নবুয়ত) জন্য কোনো প্রতিদান চাইনা। তবে আমার নিকটজনদের (তথা আহলে বাইত) প্রতি তোমরা সদাচরণ করবে।”
উপরোক্ত আয়াতটির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাফসীরে এসেছে ঠিক এভাবে –
لا اسئلكم اجرا الا ان تودوا اقربائى واهل بيتى وعترتى وذلك لانه صلى الله عليه وسلم كان خاتم النبين لا نبى بعده.
অর্থাৎ “আমি তোমাদের নিকট প্রতিদান চাইনা তবে তোমরা আমার নিকটাত্মীয় তথা আহলে বাইত ও বংশধর উনাদের (যথাযথ সম্মান প্রদর্শন পূর্বক) হক্ব আদায় করবে। কেননা, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূরপাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি হচ্ছেন শেষ নবী। উনার পরে কোনো নবী নেই। (তাফসীরে মাজহারী)
অন্যত্রে আল্লাহ পাকে এরশাদ করেন,
اِنَّمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّزْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيْرًأ
অর্থাৎ; “হে নবী পরিবারের সদস্যবৃন্দ! আল্লাহ্ তো এটাই চান যে, তিনি তোমাদের থেকে সকল প্রকার অপবিত্রতা দূর করে দিবেন এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরুপে পূতঃ পবিত্র রাখবেন।”
সত্যিকার অর্থে আহলে বাইতের সম্মান অনেক ঊর্ধ্বে।
হজরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,
لما نزلت هذه الاية فقل تعالوا ندع ابناءنا وابناءكم دعا رسول الله صلى الله عليه وسلم عليا وفاطمة وحسنا وحسينا فقال اللهم هؤلاء اهل بيتى. যখন ندع ابناءنا وابناءكم الاية
(আসো আমরা আহবান করি আমাদের সন্তানগণকে ও তোমাদের সন্তানগণকে) আয়াত শরীফ নাযিল হলো, তখন রাসুলেপাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম ও হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদেরকে ডাকলেন এবং বললেন, আয় আল্লাহ পাক! এরা সকলে আমার আহলে বাইত।” (মুসলিম শরীফ)
⬇️ নিন্মে আরো কয়েকটি হাদিসে রাসুল (দরুদপাঠ) উল্লেখ করছি।
হজরত বারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,
رايت النبى صلى الله عليه وسلم والحسن بن على على عاتقه يقول اللهم انى احبه فاحبه
অর্থাৎ ; আমি রাসুলেপাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি যে, তিনি হাসান ইবনে আলী’কে নিজের কাঁধের উপর রেখে বলছেন: হে আল্লাহ পাক! আমি একে মুহব্বত করি, আপনিও একে মুহব্বত করুন।” (মুত্তাফাকুন আলাইহি)
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,
رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم فى حجته يوم عرفة وهو على ناقته القصواء يخطب فسمعته يقول يا ايها الناس انى تركت فيكم ما ان اخذتم به لن تضلوا كتاب الله وعترتى اهل بيتى
অর্থাৎ ; আমি নবীয়েপাক সল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লামাকে দেখেছি, তিনি (বিদায়) হজ্জের সময় আরাফাতের দিন ‘কাসওয়া’ নামক উষ্ট্রীর উপর সওয়ার অবস্থায় খুতবা দান করছেন। আমি শুনেছি, তিনি খুতবায় বলেছেন, হে লোক সকল! আমি তোমাদের মাঝে এমন জিনিস রেখে যাচ্ছি, তোমরা যদি তাকে শক্তভাবে ধরে রাখো, তবে কখনো গোমরাহ হবেনা। তা হলো আল্লাহ পাকের কিতাব ও আমার ইতরত বা আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম। (তিরমিযী শরীফ)
হযরত জায়িদ ইবনে আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,
ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لعلى رضى الله تعالى عنه وفاطمة عليها السلام والحسن عليه السلام والحسين عليه السلام انا حرب لـمن حاربهم وسلم لـمن سالـمهم.
অর্থাৎ ; নিশ্চয়ই রসূলেপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের সম্পর্কে বলেছেন, যারা উনাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করবে, আমি তাদের শত্রু। পক্ষান্তরে যে উনাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে,আমি তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবো। (তিরমিযী শরীফ)
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الحسن عليه السلام والحسين عليه السلام سيدا شباب اهل الجنة.
অর্থাৎ ; রাসুলেপাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হাসান ও হুসাইন তারা দুজনই জান্নাতী যুবকগণের সাইয়্যিদ ( সরদার) । (তিরমিযী)
➡ এবার আপনিই ভেবে দেখুন সেই আহলে বাইতের হত্যাকারীর প্রতি আপনার কেমন ধারণা হওয়া চাই।