কামেল হক্কানী পীর বা
শায়েখের আলামত ।
**************************************************** হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ্ মুহাদ্দিস দেহলভী রাহিমাহুল্লাহ উনার ” আল- ক্বাউলুল জামিল “
নামক গ্রন্থে প্রকৃত আল্লাহওয়ালা
কামিল পীর বা শায়েখের দশটি
আলামাতের উল্লেখ করেছেন, যার
মাধ্যমে সাধারণ মুসলিমগন কামিল
পীর বা শায়েখেকে চিনতে পারেন
এবং কুরআন ও ছুন্নাহ মোতাবেক তাঁর
অনুসরণ করতে পারেন। যথা-
(১) পীর সাহেব কুরআন, হাদীস মাসলা
মাসায়েল সম্পর্কে আলেম হবেন। তবে
এ ইলমের শেষ মর্তবা ও সব ইলম
সম্পর্কে আলেম হওয়ার আবশ্যক।
(২) পীর সাহেব আকীদা-বিশ্বাস ও
আমল শরীয়তের মোয়াফেক। স্বভাব
চরিত্র ও অন্যান্য গুণাবলী যে রকম
শরীয়তে চায় সে রকম হওয়া দরকার।
(৩) পীর সাহেবের মাঝে লোভ টাকা
পয়সা, সম্মান, প্রতিপত্তি, যশঃ ও
সুখ্যাতির লিপ্সা থাকবে না। নিজে
কামেল হওয়ার দাবী করবে না।
কেননা, এটাও দুনিয়া মহব্বতেরই
অন্তর্ভূক্ত।
(৪) তিনি কোন কামেল পীরের
খেদমতে দীর্ঘ দিন থেকেছেন। তাদের
থেকে বাতেনী নূর ও শান্তি লাভ
করেছেন। তিনি কোন হক্কানী শায়েখ
থেকে কামেল হয়েছেন। অর্থাৎ
কামেল শায়েখ থেকে এসলাহের ইলম
হাসিল করেছেন। কেননা, আল্লাহ
পাকের রীতি চলে আসছে যে, কোন
ব্যক্তি সফলতা লাভ করতে পারে না
যতক্ষণ সফলকামীদেরকে না দেখে।
যেমন আলেমগণের খেদমতে থাকা
ছাড়া ইলম হাসিল করা। এছাড়া
আন্যান্য জ্ঞানের ব্যাপারে একই
নিয়ম। তাই এ পথের ভাল মন্দ কোন
কামেল শায়েখ থেকে শিখতে হয়।
(৫) সমসাময়ীক পরহেযগার মুত্তাকী
আলেমগণ পীরগণ তাকে শায়েখ ও
অনুসরণের যোগ্য মনে করবেন।
(৬) দুনিয়াদার ও ফাসেক লোকদের
অপেক্ষায় দ্বীনদার লোকেরাই তার
প্রতি বেশী ভক্তি রাখে।
(৭) তাঁর মুরীদের মধ্যে অধিকাংশ এ
রকম হবে যে, তাদের অধিকাংশ হক্ক ও
সঠিক পথে চলে।
(৮) মুরীদদেরকে এ পথের ভাল মন্দ
শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে। তিনি মন
দিয়ে তার মুরীদদেরকে
আল্লাহরওলী বানানোর চেষ্টা করেন।
তাদেরকে নরমে গরমে সংশোধন করেন।
(৯) তার সোহবতে কিছুদিন যাবৎ
থাকলে দুনিয়ার মহব্বত কম হয় এবং
আখেরাতের চিন্তা বেশী হতে থাকে।
(১০) পীর কামেল তিনি নিচেও
রীতিমত যেকের আযকার বিভিন্ন
সময়ে হাদীসের বর্ণিত দোয়াগুলো
আমলের উপর পাবন্দী করেন। অন্তরকে
সর্বদা আল্লাহ পাকের সাথে মিলিয়ে
রাখার চেষ্টা করেন। তিনি নিজে
সর্বদা আমলের প্রতি পাবন্দী করেন
অন্ততঃপক্ষে আমল করার পাক্কা
ইচ্ছা রাখেন।
খিলাফাতের অবর্তমানে সমস্ত
মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত হল
কুরআন ও সুন্নাহর মানদন্ডে বিচার-
বিশ্লেষণ করে যার যার পছন্দনীয়
শায়েখ বা দ্বীনি মুরব্বীর হাতে
বাইয়াতভূক্ত হয়ে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
পর্যন্ত রূহানী লাইন রক্ষা করা এবং
ইসলামী জামাতবদ্ধ জীন্দেগী
অতিবাহিত করা।