জিজ্ঞাসা–২৯৫: বিয়ের জন্য কাজী যিনি হন তাকে ঠিক কি যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে? সাধারণ ইসলামি শরিয়া জানে, এমন কেউ কি কাজী হতে পারবে?–আলিশা তাউফাজ
জবাব: আরবী ভাষায় কাজী অর্থ বিচারক। ইসলামের প্রারম্ভিক যুগে কাজী বিচারকার্য পরিচালনা করতেন কোরআন, হাদিস কিংবা ইজমা ও শরঈ-কিয়াসের ভিত্তিতে। তাই সে সময়ে একজন কাজীকে এসব বিষয়ে পারদর্শী হওয়া আবশ্যক ছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর কিছু কিছু দেশে এটি মুসলিমদের বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশনকারীর পদবি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশনসম্পাদনের জন্য বিশেষ কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। রেজিস্ট্রেশন একটি রাষ্ট্রীয় আইন। অনাকাঙ্খিত ঝুট-ঝামেলা এড়ানোর জন্যে বিবাহের ক্ষেত্রে এই আইন মেনে বিয়ে করার জোরালো পরামর্শ ওলামায়েকেরাম দিয়ে থাকেন। তবে যেহেতু ইসলামি-বিবাহের মৌলিক বিধিবিধানে রেজিস্ট্রেশনের কোনো ভূমিকা নাই তাই এটি সম্পাদনকারী ‘কাজী’রও শরঈ-বিষয়ে বিশেষভাবে অভিজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই; বরং তার আদেল বা ন্যায়বান হওয়াই যথেষ্ট হবে।
তবে হ্যাঁ, কাজী যদি বিয়ের খুতবা-যা সুন্নাত এবং আকদ তথা ইজাব ও কবুল-যা রুকন সম্পাদনের দায়িত্ব পালন করে থাকেন তাহলে তার কমপক্ষে এতদসংশ্লিষ্ট মাসআলা জানা থাকতে হবে।
ইমাম বুখারী রহ. সহীহ বুখারীতে ‘আমলের পূর্বে ইলম অর্জন করা’ শিরোনামে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন এবং তার প্রমাণে কোরআন মজীদের এই আয়াতটি পেশ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ ‘সুতরাং জেনে রেখ, আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোনো মা‘বূদ নেই’। (বুখারী পৃ.১৬)
আর তাকে অবশ্যই পুরুষ হতে হবে। কেননা রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لا تُزَوِّجُ الْمَرْأَةُ الْمَرْأَةَ وَلا تُزَوِّجُ الْمَرْأَةُ نَفْسَهَا فَإِنَّ الزَّانِيَةَ هِيَ الَّتِي تُزَوِّجُ نَفْسَهَا
‘এক মহিলা আরেক মহিলাকে বিয়ে দিতে পারবে না। অথবা মহিলা নিজে নিজেকে বিয়ে দিতে পারবে না। ব্যভিচারিনী নিজে নিজেকে বিয়ে দেয়।’ (ইবন মাজাহ ১৭৮২)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী