৭৫- بَابُ مَا جَاءَ فِي زِيَارَةِ الْقُبُوْرِ وَالسَّلَامِ عَلَىٰ أَهْلِهِا
١٩٦- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، وَحَمَّادٍ، أَنَّهُمَا حَدَّثَاهُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ ، عَنِ النَّبِيِّ : «كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَنِ الْقُبُوْرِ أَنْ تَزُوْرُوْهَا، فَزُوْرُوْهَا وَلَا تَقُوْلُوْا: هُجْرًا».
বাব নং ৮৭. ৭৫. কবর যিয়ারত ও কবরবাসীকে সালাম দেওয়া প্রসঙ্গে
১৯৬. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আলকামা ইবনে মুরশাদ ও হাম্মাদ থেকে, তারা আব্দুল্লাহ ইবনে বুরাইদা থেকে, তিনি তার পিতা বুরাইদা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি নবী করিম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে প্রথমে কবর যিয়ারত থেকে নিষেধ করেছিলাম। এখন থেকে তোমরা কবর যিয়ারত করতে থাক। তবে মুখে শরীয়ত বিরোধী কোন কথা উচ্চারণ করবে না।
(মুসনাদে আহমদ, ৫/৩৬১/২৩১০২)
ব্যাখ্যা: আবু দাউদ শরীফে উপরোক্ত হাদিসের সাথে فان فى زيارتها تذكرة বাক্যটি অতিরিক্ত রয়েছে। “নিশ্চয়ই কবর যিয়ারতে নসীহত রয়েছে।”১৭১
➥ ইমাম আবু দাউদ (رحمة الله), (২৭৫ হিঃ), আবু দাউদ শরীফ, খন্ড ৩, পৃষ্ঠাঃ ২১২, হাদীস নং ৩২৩৭
❏তিরমিযী শরীফে বর্ণিত আছে-
فقد اذن لمحمد فى زيارة قبر امه فزورها فانها تذكرة الاخرة
“মুহাম্মদ কে তাঁর মায়ের কবর যিয়ারতের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং তোমরাও কবর যিয়ারত কর। কেননা কবর যিয়ারত আখিরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়।” ১৭২
➥ ইমাম তিরমিযী (رحمة الله), (২৭৯ হিঃ), তিরমিযী, খণ্ড, ৩, পৃষ্ঠাঃ ৩৭০, বৈরুত, হাদীস নং ১০৫৪
সুতরাং প্রমানিত হল যে, কবর যিয়ারত মুস্তাহাব। কেননা এতে অনেক উপকারীতা রয়েছে। তবে কবর যিয়ারতে গিয়ে মৃত ব্যক্তির গুনাহ মাফের জন্য এবং মঙ্গলের জন্য দোয়া করতে হবে।
❏কবরবাসীর নিকট কিছু চেয়ে দোয়া করা বৈধ কিনা? অধিকাংশ ওলামায়ে কিরাম ও ফোকাহায়ে এজাম এটাকে নাজায়েয বলেছেন। তবে কোন কোন সুফীয়ায়ে কিরাম ও ফকীহ এর অনুমতি দিয়েছেন। বরং অনেক কাশফধারী ও কামিল ব্যক্তির মত হলো- তাঁরা কবর যিয়ারত থেকে অনেক উপকৃত হয়ে থাকেন। ইমাম শাফেঈ (رحمة الله) বলেন- হযরত মুসা কাযিম (رحمة الله)’র কবর দোয়া কবুলের জন্য এক আশ্চর্য স্থান।
❏মহিলাদের জন্য কবর যিয়ারত বৈধ কিনা? এ বিষয়ে হযরত আবু হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (ﷺ) কবর যিয়ারতকারী মহিলাদের উপর লা‘নত করেছেন। ইমাম তিরমিযী এই হাদিসকে হাসান ও সহীহ বলেছেন। এই হাদিসের দৃষ্টিকোণ থেকে কোন কোন ওলামায়ে কিরাম মহিলাদের কবর যিয়ারতে গমন থেকে নিষেধ করেছেন। আবার কোন কোন ওলামায়ে কিরাম জায়েয বলেছেন। তাদের যুক্তি হলো, রাসূল (ﷺ) ’র এই নিষেধাজ্ঞা ঐ সময়ের জন্য প্রযোজ্য ছিল, যখন সকল পুরুষ ও মহিলার জন্য কবর যিয়ারত নিষেধ করা হয়েছিল।
কিন্তু উপরোক্ত হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী যখন রাসূল (ﷺ) অনুমতি প্রদান করেন, তখন এই সাধারণ অনুমতির মধ্যে মহিলাগণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কেউ কেউ মহিলাদের কবর যিয়ারত এই জন্য নিষেধ করেছেন যে, তাদের ধৈয্য ও সহ্য শক্তি অপেক্ষাকৃত কম। তাই তারা কবরে গিয়ে অধৈর্য হয়ে পড়ে। বস্তুত এরূপ করা জায়েয নয়। যদি এগুলো থেকে মুক্ত থেকে যিয়ারত করে, তবে কোন ক্ষতি নেই। সুতরাং হানাফী মাযহাবে মহিলাদের কবর যিযারত জায়েয রাখা হয়েছে। ফতোয়ায়ে আলমগীরি কিতাবেও এই মত পোষণ করা হয়েছে।
١٩٧- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ إذَا خَرَجَ إِلَى الْـمَقَابِرِ، قَالَ: «اَلسَّلَامُ عَلَىٰ أَهْلِ الدِّيَارِ مِنَ الْـمُسْلِمِيْنَ، وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لَاحِقُوْنَ، نَسْأَلُ اللهَ لَنَا وَلَكُمُ الْعَافِيَةَ».
১৯৭. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আলকামা থেকে, তিনি ইবনে বুরাইদা থেকে, তিনি তার পিতা বুরাইদা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নবী করিম (ﷺ) যখন কোন কবরস্থানে গমন করতেন, তখন তিনি এই দোয়া পাঠ করতেন- السلام على اهل الديار من المسلمين وانا ان شاء الله بكم لاحقون نسأل الله لنا ولكم العافية – “হে কবরবাসী মুসলমানগণ! তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমরাও ইনশাআল্লাহ্ তোমাদের সাথে মিলিত হবো। আমরা নিজেদের এবং তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট নিরাপত্তা ও শান্তির দোয়া করছি।”
(জামেউল আহাদীস, ১৫/২০২/১৫৩১৫)