কওমী মৌলভী কর্তৃক শিশু অপহরণ মুক্তিপণ দাবী অতঃপর খুন

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

অপহরণের কিছুক্ষণ পরেই গামছা দিয়ে মুখ পেঁচানোর ফলে মারা যায় শিশু মনির হোসেন (৮)। মৃত্যুর পরও শিশুটির পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করেন মসজিদের নুর-ই মদিনা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও মসজিদুল আয়েশায় ইমাম আব্দুল জলিল হাদী। রাজধানীর ডেমরা এলাকায় মসজিদ থেকে বস্তাবন্দি শিশুর মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উন্মোচন করে এই তথ্য জানায় পুলিশ।

এ ঘটনায় গ্রেফতার তিনজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্য তারা মনিরকে অপহরণ করেছিল। তবে গামছা দিয়ে মুখ পেঁচানোর ফলে শিশুটির মৃত্যু হয়। এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নুর-ই মদিনা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও মসজিদুল আয়েশায় ইমাম আব্দুল জলিল হাদী। তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন মো. আকরাম ও আহাম্মদ সফি ওরফে তোহা নামে দু’জন। মঙ্গলবার রাতে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

বুধবার (১০ এপ্রিল) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি ওয়ারী জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, মনির ও তার দুই ভাইবোন ৭ এপ্রিল সকালে মাদ্রাসায় পড়তে যায়। ১১টায় মাদরাসা ছুটি হওয়ার পর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, অধ্যক্ষ ও তার দুই সহযোগী মনিরকে অপহরণ করে। মাদ্রাসার পাশের নির্মাণাধীন মসজিদুল আয়েশায় নিয়ে যায় তাকে। ওই মসজিদের ইমাম আব্দুল জলিল হাদী। সেখানে নেয়ার পর মসজিদের সিঁড়িতে মনির কান্না শুরু করে। তখন অপহরণকারীদের একজন মুখ চেপে ধরে। মুখ চেপে ধরায় মনির আরও জোরে চিৎকার করে। তখন অধ্যক্ষ হাদীর গামছা দিয়ে মনিরের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলা হয়। এক পর্যায়ে মারা গেছে বুঝতে পেরে মনিরকে সিমেন্টের একটি বস্তায় ভরে সিঁড়ির পাশে রেখে দেয়। বস্তায় ঢুকানোর আগে মনিরের হাত পা বেঁধে ফেলা হয়

তিনি আরও বলেন, মারা গেছে জেনেও পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মনিরের বাবা সাইদুল হকের কাছে রাতে ফোন করে তারা তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মনিরের বাবা এক লাখ টাকা নিয়ে মসজিদে আসে। ছেলে ফিরে পাওয়ার আশায় মসজিদেই অপেক্ষা করে এবং টাকাটা মসজিদের ইমাম হাদীর কাছে রাখে। সারারাত অপেক্ষার পরও ছেলেকে ফিরে না পেয়ে পরদিন টাকা নিয়ে চলে যান তিনি। পরে পুলিশকে নিখোঁজের বিষয়ে জানালে পুলিশ মসজিদ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি পাতলা তোয়ালে, দুটি সিমেন্টের বস্তা, দুটি কালো রঙের দড়ি, সিমসহ একটি মোবাইল সেট, মৃতদেহের পরনে থাকা ফুল প্যান্ট ও পাঞ্জাবি উদ্ধার করা হয়।সোমবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে ডেমরার ডগাইর নতুনপাড়া এলাকার নুর আয়েশা জামে মসজিদের ভেতর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশু মনির হোসেনের (৮) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় শিশুশ্রেণির ছাত্র মনির আগের দিন রবিবার (৭ এপ্রিল) থেকে নিখোঁজ ছিল।এ ঘটনায় ডেমরা থানায় একটি জিডি ও পরবর্তীতে হত্যা মামলা করা হয়।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a reply

  • Default Comments (0)
  • Facebook Comments