মাসুম বিল্লাহ সানি
(ব্লগার, সুন্নি-বিশ্বকোষ)
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) কে ইমাম জাফর সাদেক (রহঃ) প্রশ্ন করেছিলেন,
চোখের জল কেন লবনাক্ত?
কানে কেন তিক্ততা?
নাকের বাতাসে কেন উষ্ণতা?
তিনি জবাব দিতে পারেন নি। আরজ করলেন, আপনার থেকে জানতে আগ্রহী।
ইমাম জাফর সাদেক (রহঃ) বলেন,
চোখ লবনাক্ত না হলে গলে যেত। (1)
কানে তিক্ততা এজন্য যে, কোন পোকামাকড় যেন প্রবেশ করতে না পারে। (2)
নাকের বাতাস উষ্ণ এজন্য যে, দুর্গন্ধ যেন মস্তিষ্ককে ক্ষতি করতে না পারে। (3)
ব্যাখ্যাঃ
(1) চোখের জলকে বলা হয় Aqueous Humor যা চোখের ciliary process থেকে তৈরি হয়। যার 80% তৈরি হয় Na+–K+ ATPase পাম্প & Carbonic Anhydrase এর মাধ্যমে। সেখান থেকেই Salt এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। অবশ্য এর আরো অনেক কারণ রয়েছে। তার মধ্যে আরেকটি কারণ হল Alkaline media জীবনু থেকে রক্ষা করে। যেমন, দেখবেন লবণে জীবনু তেমন grow করে না। এছাড়াও চোখকে জীবনুমুক্ত রাখতে secretory Immunoglobulin হিসেবে IgA থাকে। যার কারণে চোখ উমুক্ত থাকলে যাবতীয় Defence mechanism এর জন্য চোখ সুরক্ষিত থাকে।
(2) তিক্ততা হল এক ধরনের জীবনু ও কীট নাশক। এজন্য নিম পাতাও কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নিমপাতার রস কৃমিনাশক, সেই সাথে এটা আবার দেহের জন্য একপ্রকার বিষও বটে। তাই অতিরিক্ত খেলে সমস্যাও হতে পারে। কানের wax এ তিক্ততা থাকার কারণ হল, কানের ছিদ্রপথ খোলা থাকে। তাই এর ভিতর দিয়ে যেকোন পোকামাকড় ভূলক্রমে ঢুকে পড়লে তা Tympanic membrane এ গিয়ে ক্ষতি করতে পারে। এসব জায়গা খুবই sensative. কান শুধু শ্রবণ নয় equilibrium তথা ভারসাম্যও রক্ষা করে। নয়ত মাথা ঘুরাতো। যাকে বলা হয় Vertigo.
আমার কানে একবার Accidentally একটা মশা ঢুকে যায়। যার কারণে খুবই ভয় পেয়ে যাই। একে বের করারও কোন উপায় পাচ্ছিলাম না। অনুভব করলাম এটা ঐখানে ঢুকে শুধমাত্র দুইবার শব্দ করল তারপর শেষ। মানে কানের সেই তিক্ত wax এটাকে মেরে ফেলল। তখন বুঝলাম এমন না হলে কি হত।
(3) এর বাস্তব সত্যতার প্রমাণ পেয়েছি যখন মর্গে পোস্ট মর্টাম দেখতে গিয়েছিলাম৷ বিগলিত লাশ কি অসহ্য যন্ত্রণা। গন্ধে মনে হত নাড়িভুঁড়ি সব বের হয়ে আসবে। আমরা নাকে আতর দিয়েও বিন্দু পরিমাণ উপকৃত হইনি যতটা টাইগার বাম বা এ জাতীয় ওষুধ দিয়ে উপকৃত হতাম। নাকের ভিতর দিয়ে এই বাজে গন্ধ তখন একেবারেই কম অনুভব করতাম। বুঝতে পারলাম এই উক্তির আসল রহস্য। দুর্গন্ধকে ফিল্টার করার জন্যই হয়ত এই ব্যবস্থা।
আল্লাহ সুবহানু তা’য়ালা সবকিছুই কোন না কোন উদ্দেশ্যে দিয়েছেন। নিশ্চই তিনি আমাদের মঙ্গলকামী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মহাজ্ঞানী। এর থেকেও প্রমাণিত হয় ইসলাম বৈজ্ঞানিক ও সত্য ধর্ম।