ইসলামে নম্রতা ও বিনয়ী হওয়ার ফজিলত

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

নম্রতা ও বিনয়িতা ইসলামি চরিত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুণ। এটি মানুষের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে, অহংকার দূর করে এবং সমাজে শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা করে। কুরআন ও হাদিসে বিনয়ী হওয়ার অনেক ফজিলত ও পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে।


কুরআনের আলোকে বিনয়ী হওয়ার গুরুত্ব

১. আল্লাহ বিনয়ী ব্যক্তিদের ভালোবাসেন

আল্লাহ বলেন:
وَعِبَادُ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَى ٱلْأَرْضِ هَوْنًۭا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ ٱلْجَٰهِلُونَ قَالُوا۟ سَلَٰمًۭا
অর্থ: “রহমানের বান্দারা তারা, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং অজ্ঞ লোকেরা যখন তাদের সাথে তর্ক করে, তখন তারা (শান্তিপূর্ণভাবে) বলে, ‘সালাম’।” (সুরা الفرقان: ৬৩)

✅ এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে বিনয়ী হওয়া আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

২. নম্রতা দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি পায়

আল্লাহ বলেন:
فَبِمَا رَحْمَةٍۢ مِّنَ ٱللَّهِ لِنتَ لَهُمْ ۖ وَلَوْ كُنتَ فَظًّۭا غَلِيظَ ٱلْقَلْبِ لَٱنفَضُّوا۟ مِنْ حَوْلِكَ
অর্থ: “এটা আল্লাহর দয়া যে, তুমি তাদের প্রতি কোমল হয়েছ। যদি তুমি রূঢ় ও কঠোর হৃদয়ের হইতে, তবে তারা তোমার কাছ থেকে দূরে সরে যেত।” (সুরা آل ইমরান: ১৫৯)

✅ এখানে নম্রতার গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নম্র স্বভাবের কারণেই মানুষ তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে।


হাদিসের আলোকে বিনয়ী হওয়ার ফজিলত

১. নম্রতা মানুষকে মর্যাদাশালী করে

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“আল্লাহর জন্য যে ব্যক্তি বিনয় অবলম্বন করে, আল্লাহ তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করেন। আর যে ব্যক্তি অহংকার করে, আল্লাহ তাকে নিচে নামিয়ে দেন।” (সহিহ মুসলিম: ২৫৮৮)

✅ এ হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, বিনয়ী ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত হয়।

২. জান্নাতের সুসংবাদ

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“জান্নাত তিন শ্রেণির লোকের জন্য নির্ধারিত— ন্যায়পরায়ণ শাসক, দানশীল ও দয়ালু ব্যক্তি, এবং নম্র ও বিনয়ী ব্যক্তি।” (তিরমিজি: ১৯৮৪)

✅ এটি প্রমাণ করে যে বিনয়ী ও নম্র ব্যক্তির জন্য জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে।

৩. নম্রতা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্রের অংশ

আয়েশা (রা.) বলেন:
“রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো রূঢ় ছিলেন না, কঠোর হৃদয়ের ছিলেন না, বাজারে উচ্চস্বরে কথা বলতেন না, মন্দের বদলে মন্দ দিতেন না, বরং তিনি ক্ষমা করতেন এবং উপেক্ষা করতেন।” (তিরমিজি: ২০১৬)

✅ এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে বিনয়িতা নবিজির (সা.) অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল, যা আমাদের অনুসরণ করা উচিত।


বিনয়ী হওয়ার উপকারিতা

  1. আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হয়।
  2. মানুষের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়।
  3. অহংকার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  4. মানসিক প্রশান্তি ও শান্তি পাওয়া যায়।
  5. দুনিয়া ও আখিরাতে মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

উপসংহার

ইসলামে নম্রতা ও বিনয়িতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। এটি আল্লাহর প্রিয় গুণগুলোর মধ্যে একটি, যা রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও অনুসরণ করতেন। আমরা যদি নম্র ও বিনয়ী হই, তবে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত হবো এবং আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করব।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment