ইসলামী শরীয়তে উসিলার তাৎপর্য

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

ইসলামী শরীয়তে উসিলার তাৎপর্য
মাওলানা গোলাম মোসত্মফা মুহাম্মদ শায়েস্তা খান

উসিলা: – تَوَسُّلএর মর্মার্থ:
– تَوَسُّل এর মর্মার্থ অনুধাবনে অনেকে ভুল করে ফেলে, তাই উসিলার সঠিক অর্থ পাঠক সমীপে তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। তবে আলোচনার প্রারম্ভে কিছু বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে যাওয়া ভাল।
প্রথমতঃ
– تَوَسُّل বা উসিলা হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার নিকট দোয়া করার পন্থাসমূহের একটি এবং তা আল্লাহ তা’আলার দিকে মনোনিবেশ করার একটি অবলম্বন। অতঃপর — تَوَسُّل গ্রহণ এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ পাক সুবাহানু ওয়া তা’আলা এবং যাকে উসিলা করা হয় তিনি উসিলা গ্রহণকারীর জন্য আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম মাত্র। এর ব্যতিক্রম আক্বিদা পোষণ করলে অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত উসিলা কে যদি মূল উদ্দেশ্য ভাবে তাহলে তা শিরকের পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াবে।
দ্বিতীয়তঃ
উসিলা গ্রহণকারী উসিলাকৃত বস্ত্ত বা ব্যক্তিকে ভালবাসেন এবং সাথে সাথে এ আক্বিদা পোষণ করেন যে, আল্লাহ তা’আলার কাছেও উসিলাকৃত ব্যক্তি বা বস্ত্ত অত্যন্ত প্রিয়। পক্ষান্তরে- উসিলা গ্রহণকারীর নিকট উসিলাকৃত বস্ত্ত সমূহের উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যের বৈপরিত্ব প্রতীয়মান হলে সে ও গুলোকে উসিলা মানবে না। বরং এ ধরণের উসিলা মানাকে অপছন্দ করবে।
তৃতীয়তঃ
উসিলা গ্রহণকারী যদি উসিলাকৃতের ব্যাপারে এ ধারণা পোষণ করে যে তা স্বীয় শক্তি বলে আল্লাহ তা’আলার ন্যায় বা আল্লাহ ব্যতীত উসিলা গ্রহণকারী লাভ-ক্ষতি করতে পারে সে এ ব্যাপারে শিরক্ করল।
চতুর্থতঃ
উসিলা মানা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এমন জরুরী বিষয় নয় যে তা অবশ্যই করতে হবে। আর তা এমন বিষয়ও নয় যে এর উপর দোয়া কবুল হওয়া নির্ভর করে। বরং মূল বিষয়টি হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার দরবারে সাধারণভাবে দোয়া করা আর এই দোয়া মহান আল্লাহ দরবারে পাকে কবুল হওয়ার মানসে তাঁরই নিকট প্রিয় বস্ত্ত বা ব্যক্তিকে উসিলা করা উত্তম শরীয়ত সম্মত। তা আবার দোয়ার ক্ষেত্রে ফরজ ওয়াজিবের ন্যায় অপরিহার্য নয়। কেউ যদি উসিলা করতে না চায় তাতে কোন অসুবিধা নেই সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে হ্যাঁ, সে যদি এতটুকুতে ক্ষান্ত না হয়ে উসিলার বিরোধিতা করে এবং তা ইসলামী শরীয়তের পরিপন্থি বলে দাবী করে সে ক্ষেত্রে আমাদের আপত্তি আছে। সৎকর্মকে উসিলা করে আল্লাহ তা’আলার দরবারে ফরিয়াদ করা শরীয়ত সম্মত এতে কোন মুসলমানের দ্বিমত নেই। অতঃপর কেউ নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, ছদকা-খয়রাত ইত্যাদি ইবাদত পালন করতঃ তা উসিলা করে মহান প্রভুর দরবারে দোয়া করে তা কবুল হওয়ার ব্যাপারে মনোবাসনা পুরণের ব্যাপারে, আশা করা যায় তাতে মুসলিম উম্মাহর ঐকমত্য সুপ্রতিষ্ঠিত, আর এর প্রমাণ হচ্ছে হুজুর নবীয়ে করিম (দঃ) এর বাণী ‘‘রাসূলুল্লাহ (দঃ) ইরশাদ করেছেন আমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের তিনজন লোক একদা এক পাহাড়ের গুহায় আটকে পড়েছিল। তাঁদেরই একজন স্বীয় পিতা-মাতার খুব অনুগত ছিল তাদের বেশ সেবা যত্ন করত; তা উসিলা করে এই বিপদ মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করল। দ্বিতীয়জন সে একবার সুযোগ পেয়েও আল্লাহ তা’আলার ভয়ে অশ্লীল কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থেকেছে; তা উসিলা করে সে আল্লাহর দরবারে দোয়া করল। তৃতীয়জন খুব আমানতদার ছিলেন। তিনি মানুষের সাথে লেনদেন ব্যাপারে স্বচ্ছতা অবলম্বন করতেন, তিনি তা উসিলা করে ফরিয়াদ করলেন, অতঃপর আল্লাহ তা’আলা দয়া পরবশ হয়ে তাদের দোয়া কবুল করলেন। তাদেরকে বিপদ থেকে পরিত্রাণ দিলেন।
এ ধরনের উসিলা মানা যে জায়েজ এবং তা সর্বসম্মত এবং বিরোধীদের গুরুজন শেখ ইবনে তাইমিয়া এ বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তাঁর পুস্তকত قاعدة جليلة فى الةوسل والوسيلة — – تَوَسُّلএর মাসআলায় বিতর্কের বিষয় হচ্ছে উসিলা গ্রহণকারী স্বীয় সৎকর্মকে উসিলা না করে যদি কোন ব্যক্তি বিশেষকে উসিলা করে। যেমন, কেউ এভাবে বলল, হে আল্লাহ! আমি তোমার হাবীব নবী মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ (দঃ) এর উসিলায় বা হযরত ওমর (রাঃ) এর উসিলায় বা হযরত ওসমান (রাঃ) বা হযরত আলী (রাঃ) এর উসিলায় ফরিয়াদ করছি; সেক্ষেত্রে কিছু সংখ্যক লোকদের অভিমত তা নাযায়েজ, তাদের দৃষ্টিতে তা শরীয়তের পরিপন্থী।
আমরা যা বুঝলাম- – تَوَسُّل প্রসঙ্গে মতানৈক্যটি মৌলিক নয়, এটা বাহ্যিক। কারণ- – تَوَسُّل মূলত মানুষের সৎ আমলকেই উসিলা করা হয়। আর সৎকর্মকে উসিলা করার ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই।
ব্যক্তি বিশেষকে উসিলা করার বিরোধীরা যদি একটু গভীর দৃষ্টি দিয়ে চিন্তা করেন তাহলে ব্যাপারটি সুস্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এ বিষয়ে আসলে সমস্যা আছে বলে মনে হবে না, আর এটাকে উপলক্ষ করে প্রতিপক্ষক মুসলমানকে যত্রতত্র কুফর-শির্কের অপবাদ দেয়াও বন্ধ হবে।
অতঃপর বর্ণনা করতে যাচ্ছি কিভাবে অন্যজনকে উসিলা করা মানে প্রকৃত পক্ষে তাঁর অর্জিত সৎ কর্ম কেই উসিলা করা যায়।
এখন আসুন ব্যাপারটি নিয়ে একটু আলোচনা করি। কেউ যখন কোন ব্যক্তিকে উসিলা করে আল্লাহ তা’আলার দরবারে ফরিয়াদ করে, উসিলাকারী তখন যাঁকে উসিলা করেন তখন তাঁর প্রতি তিনি এ সুধারণা রাখেন যে, তিনি আল্লাহর ওলী বা তাঁর প্রিয় ব্যক্তিত্ব, তিনি আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করেছেন। তিনি আল্লাহ তা’আলস্নাহকে ভালবাসেন, তিনি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেন, তিনি সদাসর্বদা নিজকে আল্লাহর রাস্তায় নিয়োজিত রাখেন, ফলে আল্লাহ তাঁকে ভালবাসেন এই ধারণা করেই মূলত তাকে উসিলা করা হয়। তাহলে বুঝা গেল তাঁর প্রতি ভাল ধারণার মুলে রয়েছে তাঁর সৎকর্ম যার মাধ্যমে মহান রাববুল আলামীনের নিকট তাঁর গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
অর্থাৎ সে যেন দোয়া করছে, হে প্রতিপালক! আমি অমুককে ভালবাসি, আমার ধারণা তিনি যে আপনাকে ভালবাসেন, তিনি আপনার ব্যাপারে আন্তরিক, আপনার প্রতি সর্বস্ব উৎসর্গকারী, আপনার রাস্তায় জিহাদকারী আমার বিশ্বাস আপনি তাকে মহববত করেন, আপনি তার উপর সন্তুষ্ট, আপনার নিকট তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই তাঁকে উসিলা করে আপনার দরবারে আমার ফরিয়াদ।
আপনি আমার অমুক মকছুদ পূর্ণ করে দিন। সমস্যা দূর করে দিন। রোগ-ব্যাধি নিরাময় করে দিন ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু সব উসিলা করে প্রার্থনাকারীগণ, এ ব্যাপারে গুলোকে বিস্তারিত উল্লেখ না করে সরাসরি বলেন আল্লাহ! আপনার অমুক মকবুল বান্দা বা প্রিয় গুলীর উসিলায় আমি আপনার দরবারে ফরিয়াদ করছি। কারণ আল্লাহ তা’আলা সবার অবস্থাকে খুব ভালভাবেই জানেন, তিনি অন্তর্যামী বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের কোন ধুলি কণাও তাঁর নিকট লুকায়িত নয়।
অতবএব সে বলল হে আল্লাহ! আমি আপনার নবীর (দঃ) উসিলার প্রার্থনা করছি অথবা সে বলল, আপনার নবীর (দঃ) প্রতি আমার মহববাতের উসিলার প্রার্থনা করছি, উভয়ে একই বরাবর।
দ্বিতীয়টি সর্ব সম্মতি ক্রমে জায়েজ নবী (দঃ) এর প্রতি ভালবাসা ঈমনের অঙ্গ অতএব সৎকর্ম -তা উসিলা করতে কোন বাঁধা নেই।
এখন কথা হচ্ছে কারো প্রতি ভালবাসা কে যদি উসিলা করে প্রার্থনা করা যায় তাহলে যার প্রতি ভালবাসা তাকে উসিলা করা যাবেনা কেন? সৎকর্মকে উসিলা করতে পারলে সৎকর্মশীকে উসিলা করা যাবে না কেন? শেখ ইবনে তাইমিয়ার মতে . – تَوَسُّلবা উসিলা মানা শরীয়ত সম্মত। শেখ ইবনে তাইমিয়া তাঁর قاعدة جليلة فى الةوسل والوسيلة — নামক কিতাবে নিন্মোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন আল্লাহ তা’আলার বাণী, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং তাঁর নৈকট্য লাভের জন্য উসিলা তালাশ কর। (আল কুরাআন)
অতঃপর আল্লাহর নৈকট্যলাভের উসিলা তালাশ করার মানে হচ্ছে- কোন ঈমানদার নবী করীম (দঃ) এর প্রতি ঈমান এবং তাঁর অনুসরণের উসিলা করা। এ ধরণের উসিলা মানা প্রত্যেকের উপর প্রত্যেক অবস্থায় ফরজ। সেটা হোক প্রকাশ্যে অথবা অপ্রকাশ্যে। হুজুর (দঃ) এর জীবদ্দশায় ও তাঁর ইন্তকালের পরে তাঁর উপস্থিতিতে ও অনুপস্থিতিতে অর্থাৎ কোন মুসলমানের কোন অবস্থাতেই হুজুর (দঃ) এর প্রতি ঈমান ও তাঁর অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকতে পারবে না এবং এ ক্ষেত্রে কোন অপরাগত প্রকাশ করাও চলবে না। আল্লাহ তা’আলার দয়া ও করুণা এবং তাঁর পক্ষ থেকে সম্মান লাভ করা তাঁর শাস্তি ও লাঞ্চনা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় নবী করীম (দঃ)। তিনি সমগ্র সৃষ্টির জন্য আল্লাহর নিকট সুপারিশকারী। তিনি (দঃ) সবার কল্যাণের স্বার্থে মহান প্রভুর নিকট সুপারিশ করবেন। তিনি সর্বোচ্চ প্রশংসিত স্থানের অধাকারী যেটার ব্যাপারে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সবাই ঈর্ষাম্বিত হবে। তিনি শাফায়াতকারীর মধ্যে সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন। তিনি সৃষ্টির মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী।
আল্লাহ তা’আলা মূসা (আঃ) এর ব্যাপারে বলেছেন, তিনি দুনিয়া আখিরাতে সম্মানিত ছিলেন। এবং হুজুর (দঃ) হচ্ছেন সমস্ত নবী রাসূলের চেয়ে অধিক সম্মানিত। কিন্তু তাঁর দোয়া এবং শাফায়াত দ্বারা সেই উপকৃত হবে যার জন্য রাসূল (দঃ) দোয়া ও সুপারিশ করবেন। অতঃপর যার জন্য রাসূল (দঃ) সুপারিশ এবং দোয়া করেন সে এগুলোকে উসিলা করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করবে। যেমন সাহাবায়ে কেরাম করতেন এবং কিয়ামত দিবসে সমগ্র মানুষ তাঁর দোয়া ও সুপরিশের উসিলা করবেন।
শেখ ইবনে তাইময়ার- الفتوى الكبرى- নামক কিতাবে আছে, শেখ ইবনে তাইমিয়াকে প্রশ্ন করা হয়েছিল নবী করীম (দঃ) কে উসিলা করা জায়েজ কি নাজায়েজ? তিনি উত্তরে বলেন, আলহামদু লিল্লাহ নবী করীম (দঃ) এর প্রতি ঈমান, তাঁর প্রতি ভালবাসা, তাঁর আনুগত্য, তাঁর উপর দুরূদ ও সালাম, তাঁর দোয়া ও শাফায়াত এবং তাঁর সত্তার সাথে সম্পৃক্ত যে কোন কিছু দ্বারা আল্লাহর দরবারে উসিলা করা জায়েজ ও শরীয়ত সম্মত। এর উপর মুসলমানদের ঐকমত্য সুপ্রতিষ্ঠিত।
– تَوَسُّل সম্পর্কে ইমাম আতাবীর (রহ্) ঘটনা: আল্লামা শেখ ইমাদ উদ্দিন ইবনে কাসির (রহ) বলেন , এই ঘটনাটি অনেকে উল্লেখ করেছেন তবে তাদের মধ্যে শেখ আবুল মনসুর আস সাববাহ উল্লেযোগ্য। তিনি তাঁর .الحكاية المشهورة . কিতাবে আতাবি (র) এর সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি ( ইমাম আতাবি) বলেন আমি একদা হুজুর নবী (দ:) এর রওজায়ে আকদাসের পাশে বসে ছিলাম। এমতাবস্থায় একজন গ্রাম্য লোক এসে রসূল (দ) কে উদ্দেশ্য করে সালাম পেশ করল السلام عليك يا رسول الله صلى الله عليه وسلم-এবং বলল, ইয়া রাসূল্লাহ (দ)! পবিত্র কুরআন পাকে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন ‘‘আর য়দি তারা স্বীয় আত্মার উপর অত্যাচার ( অন্যায় অপরাধ) করে আপনার নিকট আসে অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে তবে তারা আল্লাহকে তওবা গ্রহণকারী দয়ালু রূপে পাবে।’’ এখন আমি আপনার নিকট এসেছি; আমার কৃত অপরাধের মার্জনা প্রার্থী হয়ে। আমার প্রতি পালকের নিকট আপনাকে সুপারিশকারী রূপে আহবান করছি।يا خير من رفت بالقاع اعظمه ু فيه العفاف وفيه الجود والكرم -.অতঃপর এই কবিতা পাঠ করে গ্রম্য লেকটি প্রস্থান করলো। এমতাবস্থায় আমার ঘুম আসলে নবী করীম (দ) কে স্বপ্নে দেখলাম। তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তুমি অতিসত্ত্বর এই গ্রাম্য লোকটির নিকট যাও; অতঃপর তাকে সুসংবাদ দাও যে, আল্লাহ তাআ’লা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
এ ঘটনাটি ইমাম নববী (রহ্) তার প্রসিদ্ধ কিতাব- الايضاح এর ষষ্ঠ অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। এবং হাফেজ ইবনে কসীর উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় তফসীরে ইবনে কাসীর এ উল্লেখ করেছেন।
আল্লামা আবু মুহাম্মদ ইবনে কুদামা তাঁর – المعنى – নামাক কিতাবের তৃতীয় খন্ডে ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন। كشف القناع গ্রন্থে আল্লামা শেখ আবুল ফয়জ ইবনে কুদামা এবং – الشرح الكبير – নামক গ্রন্থে আল্লামা শেখ মনসুর ইবনে ইউনুছ আল বাহুতী এই ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন।
বিশ্ব বিখ্যাত মুফাসসীরে কুরআন ইমাম কুরতুবী (রহ্) তাঁর প্রসিদ্ধ তফসীর গ্রন্থ- الجامع لاحكام القران- এ উপরোক্ত ঘটনার সাদৃশ্যপূর্ণ আরেকটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তিনি হযরত আলী (রাদ্বিঃ) থেকে আবু সাদেক সূত্রে বর্ণনা করেন, হযরত আলী (র.) বলেন, হুজুর (দঃ) কে দাফন করার তিন দিন পর একজন গ্রাম্য লোক এসে হুজুর (দঃ) এর কবর শরীফে লুটিয়ে পড়ে অঝোর কান্নাকাটি ও আহাজারি করছিল এবং কবর শরীফ থেকে মাটি নিয়ে মাথায় মাখছিল। অতঃপর বলছিল, ইয়া রাসূলালস্নাহ (দঃ)! আপনার উপর আলস্নাহ যা অবতীর্ণ করেছেন (আল-কুরআন) তা আমি শুনেছি এবং সংরÿণ করেছি। তাতে আছে, ‘‘যদি তারা স্বীয় আত্মার উপর জুলুম-অত্যচার করে আপনার কাছে আসে এবং তাদের কৃত কর্মের ব্যাপারে আলস্নাহর নিকট ÿমা চায় আর রাসূল (দঃ) ও তাদের জন্য ÿমা প্রার্থনা করেন; তবে তারা আলস্নাহকে তওবা কবুলকারী ও দয়ালুরূপে পাবে’’। আমি আমার আত্মার উপর জুলুম করেছি এবং এই অপরাধের মার্জনা প্রার্থী হয়ে আপনার দরবারে এসেছি। আমার জন্য আলস্নাহর দরবারে ÿমা প্রার্থনা করম্নন। অতঃপর কবর শরীফ থেকে আওয়াজ আসল (হে প্রার্থনাকারী) তোমাকে ÿমা করে দেয়া হয়েছে। ( তাফসীরে কুরতুবী, ষষ্ঠ খন্ড)
মোদ্দাকথা হচ্ছে, নবী করীম (দঃ) যে আলস্নাহর নিকট বিশেষ মর্যাদার অধিকারী এবং তাকে সবার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। অতএব, কোন জিনিস তাঁকে উসিলা করতে বাঁধা দেয়না, অথচ শরীয়াতের অসংখ্য দলীল রয়েছে যা দুনিয়া-আখেরাতে তাকে উসিলা করার বৈধতা প্রমাণ করে। এ উসিলা করার মধ্যে আমারা আলস্নাহ ছাড়া আর কারো কাছে কিছুই চাইনা এবং আর কারো ইবাদতও করিনা। তবে আমরা আলস্নাহকে আহবান করি এবং তার নিকট প্রার্থনা করি ; এমন কিছুকে মাধ্যম বা উসিলা করি যা তার নিকট খুবই প্রিয়। এÿÿত্রে কখনও সৎকর্ম, কখনও সৎকর্মশীল বান্দা, কখনও আসমউল হুসনার উসিলা করি কেননা এই বিষয় সমূহ আলস্নাহর নিকট প্রিয়। আর সকল প্রিয়ের সেরা প্রিয় নবী মুহাম্মদ (দঃ)। মূলতঃ এপর্যমত্ম যা উলেস্নখ করা হয়েছে উসিলা তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং আলস্নাহর নিকট প্রিয় ব্যক্তি বা বস্ত্তকেও উসিলা করা যায়। আর ‘‘উসিলার রহস্য হচ্ছে যা আলস্নাহর নিকট পছন্দনীয় তাই তাঁর সমীপে উপস্থাপন করা’’ এবং তাঁর নিকট প্রার্থনা করার সময় তা স্মরণ করা এই হিসেবে আমরা নবীগণ ও ওলীগণের উসিলায় তাঁর নিকট প্রার্থনা করি। সুস্থ বিবেক সম্পন্ন লোকদের নিকট এ কথাটি সুস্পষ্ট যে এমন কোন আকলী বা নকলী দলীল নেই যা উপরিউল্লিখিত ধরনের – تَوَسُّلٌ কে নিষেধ করে বরং তা জায়েজ হওয়ার ব্যাপারে অসংখ্য যুক্তি ও শরীয়তের প্রমাণ সুপ্রতিষ্ঠিত। কারণ উসিলা যাকেই করি না কেন প্রার্থনা তো করা হচ্ছে আল্লাহরই নিকট যিনি এক ও অদ্বিতীয়, যাঁর কোন সমকক্ষ বা অংশীদার নেই। এখানে কোন নবী ওলী কারো কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে না। তাঁরা আল্লাহর প্রিয়ভাজন হওয়ার কারণে তাঁদেরকে উসিলা করা হচ্ছে মাত্র। যেমন কুরআনের ভাষায়, ‘‘হে হাবীব (দঃ) আপনি বলে দিন সব কিছুই আল্লাহর কাছ থেকে। এ সম্প্রদায়ের কী হয়েছে ? এরা একেবারেই কিছু বুঝে না’’। (সুরা নিসা-৭৮)। আর যদি সৎকর্ম দ্বারা উসিলা করা জায়েজ হয় যা বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত; তবে নবী করীম (দঃ) কে উসিলা করা জায়েজ হবে না কেন ? বরং তা জায়েজ হওয়া অধিকতর প্রযোজ্য। কারণ সমগ্র সৃষ্টি জগত ও সব রকমের সৎকর্ম থেকে তাঁর ফজীলত অনেক বেশী। এবং সৃষ্টি জগতের সব কিছু থেকে তিনি আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। এত কিছুর পরেও আল্লাহর নিকট তাঁকে উসিলা করতে বাধা কোথায় ? তাঁর মর্যাদা সম্পর্কে খুব সংক্ষেপে এতটুকু বলা যায় যে তিনি আল্লাহর নিকট বিশেষভাবে সম্মানিত। যারা তাঁকে উসিলা করে তাঁরা এই বিষয়টির উপর গুরুত্ব দিয়েই করেন। আর যারা আল্লাহ তা’আলার নিকট তাঁর বিশেষ মর্যাদাকে অস্বীকার করবে তাদের তো ঈমানই থাকবেনা। আর আমরা আউলিয়া কেরাম বা সৎকর্মশীলদের উসিলা করি মূলতঃ তাঁদের সৎকর্মের কারণে। কারণ তাঁরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে নিষ্ঠার সাথে ইবাদত বা সৎকর্ম করেছেন। এর ফলে আল্লাহ তাঁদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে তাঁরা আউলিয়া কেরামের দায়েরাভুক্ত হয়েছেন।
একটি সন্দেহের অপনোদন:
– تَوَسُّلশরীয়ত সম্মত অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কিন্তু অনেকে বলতে চায় এটাতো হুজুর (দঃ) এর জীবদ্দশার সাথে খাস। এর জবাবে আমরা বলতে পারি – تَوَسُّل হুজুর (দঃ) এর জীবদ্দশার সাথে নির্দিষ্ট হওয়ার পেছনে কোন দলীল নেই্ কারণ মানুষ মৃত্যুবরণ করলেও তার আত্মা বা রূহ স্ব-অনুভূতিতে স্বজ্ঞানে বিদ্যমান তাকে। অর্থাৎ আত্মা মরে না। এ বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত এর দৃষ্টি ভঙ্গি হচ্ছে মৃত ব্যক্তি শুনে, উপলব্ধি করে, অনুধাবন করে এবং বুঝতে পারে। এবং সে ভালকাজ দ্বারা উপকৃত হয়, আনন্দিত হয় আর মন্দ কাজ দ্বারা কষ্ট পায় ও চিন্তিত হয়। আর এ মুমিন কাফির অবস্থা সবার বেলায়। এ জন্য হুজুর (দঃ) বদরের যুদ্ধের পর কুরাইশের কাফিরদের লাশগুলোকে যে গর্তে পুঁতে ফেলা হয়েছিল ঐ গর্তের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে সম্বোধন করে বলেছেন, হে উতবা, শায়বা, রবিয়াহ তোমরা কি পেয়েছ তোমাদের কৃতকর্মের প্রতিশ্রুত শাস্তি, যা আমি বলেছিলাম ? তখন একজন সাহাবী জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কাফেরদের এই গলিত মৃতদেহ গুলোকে আপনি কিভাবে প্রশ্ন করছেন ? (তারা কি আপনার কথা শুনছে ?) তখন রাসূলুল্লাহ (দঃ) বলেন, এরা তোমাদের চেয়ে বেশী শুনে কিন্তু উত্তর দিতে পারে না।
অতঃপর এটা যদি সাধারণ মানুষের অবস্থা হয়ে থাকে তাহলে সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বাধিক সম্মানিত ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষটির বেলায় কী হবে তা সহজেই অনুমেয়। এটি সন্দেহাতীত যে, তাঁর অনুভূতি শক্তি, তাঁর শ্রবণ শক্তি, দৃষ্টি শক্তি শুধু বহাল রয়েছে তাই নয় বরং তা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে্ অসংখ্য হাদীসে প্রমাণ করে যে তিনি মানুষের কথা শুনতে পান তাঁকে সালাম দিলে তিনি সালামের উত্তর দেন, উম্মতের আমলনামা প্রতি সম্পাহে প্রভুর দরবারে নেয়ার পূর্বে তাঁর সমীপে উপস্থাপন করা হয়। উম্মতের সৎ কর্মের জন্য তিনি আল্লাহর প্রশংসা করেন এবং তাদের গুনাহের জন্য আল্লাহর দরবরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
মূলতঃ মানুষের মূল্যায়ন তার জীবন দিয়ে নয় বাং তার জ্ঞান, অনুভূতি, উপলব্ধি দিয়ে করা হয়। এ জন্য আমরা দেখি অনেক মানুষের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে অনুভূতি শক্তি ও জ্ঞান দান করেননি। এ ধরণের লোক দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় না। বরং তারা জীবিত হয়েও মৃতদের কাতারে। অনেক মূর্খ লোক মনে করে নবী করীম (দঃ) আমাদের কথা শুনেন না, আমাদেরকে দেখেন না এবং রাসূলুল্লাহ (দঃ) এর শানে চরম বেয়াদবী। হুজুর (দঃ) কে আল্লাহ প্রদত্ত সম্মান ও মর্যাদার অস্বীকৃতির নামান্তর। যা নিম্নস্তরেরর অজ্ঞতার পরিচায়ক। কারণ, অসংখ্য হাদীস শরীফ প্রমাণ করেছে মৃতব্যক্তি মু’মিন হোক বা কাফের, তারা শুনতে পারে, উপলব্ধি করতে পারে এবং চিনতে পারে।
শেখ ইবনে কাইয়্যিম আল জওযিয়া .الروح . নামক কিতাবে বলেছেন পূর্বসূরী ওলামায়ে কেরামগণ মৃত ব্যক্তি কর্তৃক শুনা এবং উপলব্ধি করার ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন এবং ইবনে তাইমিয়াকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এর সমর্থনে ফতোয়া দেন। الفتوى الكبرى ুج.২৪-ص.৩১১
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এটা যদি সাধারণ মানুষের অবস্থা হয়, তাহলে যিনি আল্লাহর প্রিয় হাবীব শ্রেষ্ঠ রাসূল আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর বেলায় কী হবে, তা বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না।

– تَوَسُّل সমর্থনকারী মুসলিম মনীষীদের নামঃ
যে সমস্ত ইমামগণ কুরআন সুন্নাহ দ্বারা – تَوَسُّل কে বৈধ প্রমাণিত করেছেন এবং নিজেরা তা বাস্তবায়ন করেছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইমামগণের নাম নিম্নে দেয়া হল।
ইমাম হাকিম হাফেজ আবু আবদুল্লাহ নিশাপুরী তাঁর .المستدرك على الصحيحين . নামক কিতাবে আদম (আঃ) নবী করীম (দঃ) এর উসিলা নিয়ে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেছিলেন মর্মে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। এবং তা বিশুদ্ধ বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
ইমাম হাফেজ আবু বকর বায়হাকী স্বীয় .دلائل النبوة . নামক কিতাবে – تَوَسُّل প্রসঙ্গে উক্ত হাদীস সহ আরো অনেক হাদীস বর্ণনা করেছেন। এবং এগুলো জাল হাদীস হওয়ার অপরাধকে কঠোরতার সাথে রদ করেছেন।
ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহঃ) স্বীয় কিতাব .الخصائص الكبرى . তে আদম (আঃ) প্রসঙ্গে হাদীসটি বর্ণনা করেন।
আল্লামা হাফেজ আবুল ফরজ ইবনুল জাওযী তাঁর .الوفاء . নামক কিতাবে এ বিষয়ের সমর্থনে বেশ কিছু হাদীস বর্ণনা করেন।
ইমাম হাফেজ কাযী আয়ায তাঁর .الشفاء فى تعريف بحقوق المصطفى . নামক কিতাবে যিয়ারত অধ্যায় ও নবী করীম (দঃ) এর মহত্ব বর্ণনার অধ্যায়ে কুরআন সুন্নাহর আলোকে এ বিষয়টির অবতারণা করেন।
আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) শেফা শরীফের ব্যাখ্যায় উল্লেখিত অধ্যায়সমূহে – تَوَسُّل এর সমর্থনে জোরালো অভিমত ব্যক্ত করেন।
আল্লামা আহমদ শিহাবউদ্দিন আল খাফফাজী .سيم الرياض . নামক শেফা শরীফের ব্যাখ্যায় ু تَوَسُّل এর সমর্থনে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
আল্লামা ইমাম আল হাফেজ কুসতুলানী বিখ্যাত সীরাত গ্রন্থ . المواهب اللدنية . এর প্রথম পর্বে – تَوَسُّل বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
আল্লামা শেখ মুহাম্মদ আবদুল বাকী যুরকানী .المواهب اللدنية . গ্রন্থের ব্যাখ্যা যুকানী শরীফের প্রথম খন্ডে এ বিষয়টির অবতারণা করেন। ইমাম শায়খুল ইসলাম আবু যাকারিয়া ইহইয়া আন নববী (রহঃ) তাঁর . الايضاح . নাম কিতাবের ষষ্ঠ অধ্যায়ে – تَوَسُّل বিষয়ক আলোচনা পূর্বক তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেন।
আল্লামা শেখ ইবনে হাজর হায়তামী ইমাম নববীর .. নামক কিতাবের ব্যাখ্যায় – تَوَسُّل এর সমর্থনে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এবং তিনি এ বিষয়ে .الجوهر المنظم . নামক স্বতন্ত্র কিতাবও রচনা করেছেন।
আল্লামা শেখ হাফেজ শিহাব উদ্দীন মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে যাওজী দামেশকী স্বীয় কিতাব فى فضل اداب الدعاء .এ – تَوَسُّل এর সমর্থনে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আলস্নামা শওকানী স্বীয় কিতাব
تحفة الذاكرين.- এ এ বিষয়ে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
ইমাম আল্লামা মুহাদ্দিস আলী ইবনে আবদুল কাফী আস সুবকী স্বীয় কিতাব .شفاء السقام فى زيارة خير الانام. এ এ বিষয়ের সমর্থনে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন।
আল্লামা হাফেজ ইমাদ উদ্দীন ইবনে কসীর আল্লাহ তা’আলার বাণী . ولوانهم اذ ظلموا انفسهم الاية. এর তাফসীরে আল্লামা আতবীর সাথে একজন গ্রাম্য লোক যিনি হুজুর (দঃ) এর জিয়ারত এসেছিলেন এবং রওজা পারেক ক্রন্দনরত অবস্থায় নবী করীম (দঃ) কে উসিলা করে আহাজারী করে দোয়া করেছিলেন এবং ইমাম আতবীকে হুজুর (দঃ) সুসংবাদ দিয়েছিলেন এ ঘটনাটি উল্লেখ করেন। এবং এ ঘটনার সত্যতা নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলেননি। এবং তাঁর البداية والنهاية নামক বিখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থে হযরত আদম (আঃ) কর্তৃক হুজুর (দঃ) কে উসিলা করে তওবা করার ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন।
এ ঘটনাটি সম্পর্কে নেতিবাচক কোন মন্তব্য করেননি। তিনি আরও বর্ণনা করেন একদা এক ব্যক্তি নবী করীম (দঃ) এর রওজা পাকে এসে তাঁকে (দঃ) উসিলা করে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেছেন। এ ঘটনাটি বর্ণনার পর তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন যে এর সনদ বিশুদ্ধ। তিনি আরও বর্ণনা করেন তখনকার যুগে মুসলমানগণ বিপদগ্রস্ত হলে يا محمداه! আওয়াজ ধ্বনি তুলে রাসূল (দঃ) এর সাহায্য প্রার্থনা করতেন।
আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী (রহঃ) তাঁর কিতাব বুখারী শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ فتح البارى شرح البخارى দ্বিতীয় খন্ডে বর্ণনা করেছেন একদা এক ব্যক্তি নবী করীম (দঃ) রওজা শরীফে এসে তাঁকে উসিলা করে দোয়া করে। এই ঘটনার সনদটি বিশুদ্ধ বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। –
বিখ্যাত তাফসীর বিশারদ ইমাম আবু আবুদুল্লাহ কুরতুরী (রহঃ) আল্লাহ তাআ’লার বাণী ولو نهم اذ ظلموا انفسهم الاية এর তাফসীরে – تَوَسُّل এর সমর্থনে অভিমত ব্যক্ত করেন

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment