আবু মুহাম্মদ আলী ইবনে আহমদ ইবনে সাইদ ইবনে হাজম। স্পেনের কর্ডোভায় জন্মগ্রহণ করে। জন্ম ৩৮৪ হিজরী, মৃত্যু ৪৫৬ হিজরী। ইসলামের জাহিরি ধারার প্রবক্তা। হাজমের দাদা এবং বাবা উভয়ই উমাইয়া খলিফার দরবারে উপদেষ্টার পদে নিয়োজিত ছিলো। সে হিসাবে ইয়াযিদের ইতিহাস ইবনে হাজমের ভালোই জানা আছে।
এই ইবনে হাজম তার কিতাবে ইয়াযিদের চরিত্র উল্লেখ করেছে। সবচাইতে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ইবনে হাজম তার লিখিত বই “জামহারাত আনসাব আল আরবে” যেখানে ইয়াযিদের কুৎসিত চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছে সেখানে ইয়াযিদকে আমিরুল মুমিনিনও বলেছে (নাউযুবিল্লাহ) । খলীফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সামনে এক ব্যক্তি ইয়াযিদকে “আমিরুল মু’মিনিন” বলায় ২০ বেত মারার ইতিহাস ইবনে হাজমের জানা ছিলো কিনা জানি না।
যাইহোক এই ইবনে হাজম তার কিতাবে ইয়াযিদ সর্ম্পকে লিখেছে,
ويزيد أمير المؤمنين؛ وكان قبيح الآثار في الإسلام؛ قتل أهل المدينة، وأفاضل الناس، وبقية الصحابة -رضي الله عنهم- يوم الحرة، في آخر دولته؛ وقتل الحسين -رضي الله عنه- وأهل بيته في أول دولته؛ وحاصر ابن الزبير -رضي الله عنه- في المسجد الحرام، واستخف بحرمة الكعبة والإسلام؛ فأماته الله في تلك الأيام
“ইয়াজিদ (লা’নতুল্লাহি আলাইহি) , পবিত্র ইসলামে অনেক খারাপ কাজ করেছে। সে তার রাজত্ব্যের শেষ দিকে হাররার দিনে সম্মানিত মদীনা শরীফের অধিবাসী, সম্মনিত ব্যক্তিবর্গ, ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের মধ্যে অবশিষ্টদের শহীদ করে। তার রাজত্ব্যের প্রথম দিকে সে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম ও আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শহীদ করে। পবিত্র মসজিদে হারামে ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে ঘেরাও করে। সে পবিত্র কা’বা শরীফ ও ইসলামের সম্মানকে ভুলন্ঠিত করে। আর এ সময়ের মধ্যে আল্লাহ পাক তার মৃত্যু দেয়।”
(জামহারাত আনসাব আল আরব ১১২ পৃষ্ঠা; লেখক: ইবনে হাজম; প্রকাশনা : দারুল মা’রিফা, মিশর)
ইবনে হাজমের উক্তি থেকেই ইয়াযিদের কুৎসিত চরিত্র ফুটে উঠেছে। সেই সাথে কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার পেছনে সেই দায়ী এটাও প্রমাণিত হয়েছে। আর যার চরিত্রে এই পরিমান ইসলাম বিদ্বেষ সে নিঃসন্দেহে কাফির।