ইয়াজিদকে লানত দেয়ার বিধান
লেখক, সংকলকঃ মাসুম বিল্লাহ সানি
যারা ডঃ জাকির নায়েককে অন্ধভাবে মানেন তারা ইয়াজিদকে আজ থেকে (রহিমুল্লাহ) বলবেন। আর যদি না পারেন তাহলে ডঃ জাকির নায়েকের এই নিকৃষ্ট ফতোয়ার বিরোদ্ধে আওয়াজ তোলুন। কোন মুসলমান ইয়াজিদ প্রেমী হতে পারে না আমরা সেই ইমাম হোসাইনের জন্য পাগল যিনি শির দিয়েছেন কিন্তু ইয়াজিদকে হক বলেন নি, যিনি প্রানের নবী ((ﷺ)) এর কলিজার টুকরা প্রিয় দৌহিত্র , যিনি সমস্ত জান্নাতী যুবকদের সরদার। ইয়াজিদ গুষ্টি কিয়ামতের দিন কিভাবে পার পায় দেখা যাবে।
(I) ইয়াজিদের নিকৃষ্টতম পাপগুলোঃ
যে ইয়াজিদকে ডঃ জাকির নায়েক বলে (রহিমুল্লাহ) আসুন দেখি ইতিহাস কি বলেঃ
১. ইয়াযিদের ক্ষমতা দখল ও কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনা:
যে সমস্ত কারণে উলামায়ে কেরামগণ ইয়াযিদের প্রতি লা’নত প্রদান জায়েয বলেছেন তার প্রধান কারণ হল, রাসূলেপাক (ﷺ) এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে শহিদ করা, তার মস্তক মোবারকের সাথে বেয়াদবি, নবী পরিবারের সাথে দুর্ব্যবহার করা ইত্যাদি। আর এ সবগুলোই হয়েছিল ইয়াযিদের সরাসরি নির্দেশ মোতাবেক।
আমিরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু এর ইন্তেকালের পর ইয়াযিদ জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করে মক্কা মদিনাসহ সকল শহরে তার অনুগত লোকদেরকে গভর্ণর হিসেবে নিয়োগ করে এবং তার হাতে বাইআত গ্রহণ করতে সবাইকে নির্দেশ প্রদান করে। ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু এজিদের হাতে বাইআত করতে অস্বীকার করাই ছিল কারবালার ঘটনার মূল কারণ।
❏ ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ুতি (রহ.) লিখেন,
অর্থঃ ইরাকবাসী ইমাম হোসাইন (رضي الله عنه) এর কাছে অসংখ্য দূত মারফত পত্রাদি প্রেরণ করে তাকে সেখানে আসতে আহবান করে। অতঃপর হোসাইন (رضي الله عنه) জিলহজ্বের ১০ তারিখ মক্কাশরীফ থেকে ইরাক পথে রওয়ানা দেন। তার সাথে ছিলেন পরিবারের কিছু পুরুষ, মহিলা ও শিশুগণ। তখন এজিদ ইরাকের গভর্ণর উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদকে পত্র মারফত নির্দেশ দেয় হোসাইন (رضي الله عنه)কে শহিদ করার জন্য।
[ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ুতিঃ ‘তারিখুল খোলাফা’ গ্রন্থের ১৬৫ পৃষ্ঠা]
❏ হাফেজ ইবনে কাসীর আরো লিখেছেন, ইয়াজিদ হযরত হোসাইন (رضي الله عنه) ও তাঁর সাথীদেরকে ওবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদের মাধ্যমে হত্যা করিয়েছিল। (আল বেদায়া ওয়ান্নেহায়া ৮ম খন্ডঃ ২২২ পৃষ্ঠা)
২. শির মোবারকের সাথে ইয়াযিদের বেয়াদবি:
আমি ইতোপূর্বে প্রমাণ করেছি যে, এজিদের নির্দেশেই কারবালার নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এবং এজন্য এজিদই দায়ি। এখন আমি প্রমাণ করব ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু এর শির মোবারক দামেস্কে প্রেরণ করা হয়েছিল এবং এজিদ পবিত্র মস্তক মোবারকের সাথে বেয়াদবি করেছিল।
❏ হাফিজ ইবনে কাছিরের বর্ণনা:
আল্লামা হাফিজ ইবনে কাছির (আরবি) পৃ-২৬ গ্রন্থে ১১/৫৫৯ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেন-
অর্থ: হযরত মুজাহিদ থেকে বর্ণিত, ইমাম হুসাইন রাদিআল্লাহু আনহু এর শির মোবারক যখন আনা হল, অতঃপর এজিদের সামনে রাখা হল তখন এজিদ নিম্নলিখিত কবিতাগুলি আবৃত্তি করতে লাগল-
‘হায়! আজ যদি বদরে নিহত আমার মুরুব্বিগণ এ অবস্থা দেখত তাহলে তারা খুশি হয়ে যেত।
❏ সিবতু ইবনুল জাওযীর বর্ণনা:
আল্লামা সিবতু ইবনুল জাওযী তাঁর গ্রন্থে বর্ণনা করেন-
অর্থ: এজিদের ব্যাপারে সবগুলো বর্ণনা যাচাই বাছাই করার পর প্রসিদ্ধ মত হল যে, ইমাম হোসাইন রাদিআল্লাহু আনহু এর শির মোবারক শামে পৌছার পর যখন এজিদের সামনে রাখা হল তখন সে শাম বাসীদের একত্রিত করল। অতঃপর তার হাতে লাঠি দ্বারা শির মোবারকের উপর আঘাত করতে লাগল। এবং ইবনে যুবারীর কবিতা আবৃত্তি করতে লাগল।
‘হায় বদরে নিহত আমার মুরুব্বিগণ যদি এ অবস্থা দেখত। খাযরাজ গোত্রের তলওয়ার গুলো আজ আক্রমণ করছে। (তাযকিরাতুল খাওয়াস ২৬১)
৩. পবিত্র মদিনা শরীফ আক্রমণকারীর উপর লানতঃ
❏ সহিহ হাদিসে আছে রাসুল (ﷺ) বলেছেন, হে আল্লাহ, যে ব্যক্তি মদীনা বাসীর উপর অত্যাচার করে এবং তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করে, তুমি তাকে ভয় প্রদর্শন কর। এমন ব্যক্তির উপর আল্লাহ, ফেরেশতাগণ এবং সকল মানুষের লা’নত বর্ষিত হোক।
তথ্যসূত্রঃ
●মু’জামুল আওসাত লিত তাবারানীঃ২/১২৫/১
●আস সিলসিলাতুস সাহীহাহ লিল আলবানীঃ১/৬২০, ১/৩৫১
●আলা মাজমা’ লিল হাইসামীঃ৩/৩০৬
ইয়াযিদের লা’নত পাবার যোগ্য দুঃষ্কর্ম সমূহের দ্বিতীয় অধ্যায় হল মদিনা শরীফে আক্রমণ। এজিদী বাহিনী মদিনা শরীফে হামলা করে সন্ত্রাস কায়েম করে। তিন দিনের জন্য সকল লুঠতরাজ মুবাহ ঘোষণা করে। তারা অসংখ্য আনসার মুহাজিরদেরকে শহীদ করে। অসংখ্য মা বোনদেরকে ইজ্জত লুণ্ঠন করে। তিনদিন পর্যন্ত মসজিদে নববীতে আযান ইকামত বন্ধ ছিল।
মদিনাবাসীর বিরুদ্ধে এজিদী বাহিনীর তাণ্ডবঃ
মদিনাবাসীর বিদ্রোহের খবর যখন এজিদের কাছে পৌছল তখন সে মুশরিক বিন উকবার নেতৃত্যে একদল সেনাবাহিনী সেখানে প্রেরণ করল।
❏ হাফিজ ইবনে কাছিরের বর্ণনা:
“অতঃপর মুসরিফ বিন উকবাহ এজিদের নির্দেশক্রমে মদিনা শরীফকে তিন দিনের জন্য বৈধ ঘোষণা করল। এজন্য আল্লাহ তাকে ভাল প্রতিদান দিবেন না। সে অসংখ্য সম্মানিত সাহাবি হাফিজে কুরআনদেরকে শহিদ করল। তাদের মাল সম্পদ লুণ্ঠন করে নিল। অনেক মহিলাদের উপর পতিত হল। মারাত্মক ফাসাদ তৈরি করল। এ ইতিহাস অনেকেই বর্ণনা করেছেন। (বেদায়া-৬২০ পৃষ্ঠা)
৪. দশ হাজার লোক হত্যা ও ১০০০ কুমারী নারীর ইজ্জত লুণ্ঠনঃ
এজিদ বাহিনী সেদিন ৭ শত নেতৃস্থানীয় কুরাইশ, আনসার ও মুহাজিরদেরকে হত্যা করে। তাছাড়া মহিলা ও ছোট-ছোট বাচ্চাসহ ১০ হাজার লোককে তারা হত্যা করে। এ বর্ণনাগুলো প্রায় সবগুলো তারিখের কিতাবেই উল্লেখিত হয়েছে।
❏ দেখুন হাফিজ ইবনে কাছিরের বর্ণনাঃ
“মাদাইনী মদিনা শরীফের একজন শেখ থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন- আমি ইমাম যুহরীকে প্রশ্ন করলাম ‘হারবার যুদ্ধের’ দিন কত লোক শহিদ হয়েছিলেন? তিনি বললেন আনসার ও মুহাজিরীনদের ৭ শত নেতৃস্থানীয় লোক সে দিন শহিদ হন। তাছাড়া অপরিচিত পুরুষ, মহিলা ও দাস-দাসী ও অন্যান্য ১০ হাজার লোক শাহাদত বরণ করেন। (বেদায়া ৮/২২১ পৃষ্ঠা, আর রাদ্দু আলাল মুতাআসসিব ৬৭, কিতাবুল মিলহান ১৫১ পৃষ্ঠা)
এক হাজার কুমারী নারীর ইজ্জত লুণ্ঠন:
এজিদ বাহিনীর হামলা থেকে নিরীহ মা বোন পর্যন্ত রেহাই পায় নাই। এ ইতিহাস বড় লজ্জাজনক ইতিহাস, বড় কলঙ্কজনক অধ্যায়। অথচ আজ যারা এজিদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তাদের কি লজ্জা লাগে না।
❏ দেখুন হাফিজ ইবনে কাসিরের বর্ণনাঃ
মাদাইনী থেকে বর্ণিত, তিনি আবু বকর কুররাহ থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন হিশাম বিন হাসান বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন- হাররার যুদ্ধের পর মদিনাবাসী এক হাজার মহিলা স্বামী ব্যতীত সন্তান প্রসব করেছেন। (বিদায়া ৮/২১১, আর রাদ্দু আলাল মুতাআসসিব ৬৭ পৃষ্ঠা)
❏ ইমাম শামসুদ্দিন যাহাবি ‘তারিখুল ইসলাম’ গ্রন্থে ২৬ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেনঃ
হযরত জারির বিন আব্দুল হামিদ থেকে বর্ণিত, তিনি মুগিরা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন- মুসরিফ বিন উকবাহ তিনদিন পর্যন্ত মদিনা শরীফে সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালিয়েছে। সেদিন এক হাজার কুমারী মহিলাদের ইজ্জত তারা লুণ্ঠন করেছে।
❏ ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ুতি বর্ণনা করেছেনঃ
হাসান মুররাহ বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন- আল্লাহর শপথ, সেদিন মনে হয় নাই যে, তাদের আক্রমণ থেকে কেউ রক্ষা পাবে। সে আক্রমণ অনেক সাহাবি সহ অসংখ্য লোক শহিদ হয়েছিলেন। মদিনা শরীফকে লুঠতরাজের জন্য বৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে এক হাজার কুমারি নারী তাদের ইজ্জত হারিয়েছিলেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহ রাজিউন। (তারিখুল খোলাফা- ১৬৬ পৃষ্ঠা)
৫. রক্তাক্ত ইতিহাসের পাতায় হাররার ঘটনাঃ
❏ হুজ্জাতুল ইসলাম (৩ লক্ষ হাদিসের হাফিজ) ইবনে হাজার আসকালানী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
ঐতিহাসিকগণ হাররার ঘটনার সত্যতার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে ঘটনায় ৮০জন সাহাবী শহীদ হয়েছিলেন। এ ঘটনার পর আর কোন বদরী সাহাবী জীবিত থাকেন নি।
তথ্যসূত্রঃ
●ফতহুল বারী:৮/৬৫১
❏ এ হাররার ঘটনাকালে ইয়াযিদ বাহিনী মানুষ হত্যা, সম্পদ লুন্ঠন এবং নারী ধর্ষণ-সব কিছুই করেছিল।
তথ্যসূত্রঃ
●আত তাবারীঃ ৫/৪৮৪
●আল কামিলঃ ৪/১১২
●আল বিদায়াহঃ৮/২১৮
❏ এ হাররার ঘটনাকালে মুসলমানের রক্তে পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিল মদীনার রাস্তাগুলো। মুসলমানের রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে রাসুল (ﷺ) এর রওযা মোবারক পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মসজিদে নববী রক্তে ভরে গিয়েছিল। ১০০০০ মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছিল। (সেই পশু গুলোর) ধর্ষণের ফলে ১০০০ জারজ সন্তান জন্ম নিয়েছিল।
তথ্যসূত্রঃ
●ইমাম ইবনুল জাওযীঃ আত তাযকিরাহঃ পেইজঃ ৬৩, ১৬৩
II) কোন মুসলমানকে হত্যা করা মহাপাপঃ
❏ এজিদ ইরাকের গভর্ণর উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদকে পত্র মারফত নির্দেশ দেয় হোসাইন (رضي الله عنه)কে শহিদ করার জন্য। [ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ুতিঃ ‘তারিখুল খোলাফা’ গ্রন্থের ১৬৫ পৃষ্ঠা]
❏ হাফেজ ইবনে কাসীর আরো লিখেছেন, ইয়াজিদ হযরত হোসাইন (رضي الله عنه) ও তাঁর সাথীদেরকে ওবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদের মাধ্যমে হত্যা করিয়েছিল। (আল বেদায়া ওয়ান্নেহায়া ৮ম খন্ডঃ ২২২ পৃষ্ঠা)
আয়াত:
“যে ব্যাক্তি স্বেচ্ছায় কোন মু’মিনকে কতল করে সে জাহান্নামী।” ●সুরা নিসা ৯৩
হাদিস:
(১)
● আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল পাক (ﷺ) বলেছেন, মুসলমানদেরকে গালাগালি করা ফাসেকি আর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কুফরী | [ বুখারী ৪৮, মুসলিম ৬৪ ]
(২)
●আসওয়াদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। “ইয়া রাসুলুল্লাহ! এ ব্যাপারে আপনি কি মনে করেন, যদি আমি কোন কাফিরের সম্মুখীন হই এবং সে আমার সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যায়, তার তলোয়ার দ্বারা আমার একটি হাত উড়িয়ে দেয়, এরপর কোন গাছের আড়ালে গিয়ে বলে আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইসলাম গ্রহণ করলাম! এ কথা বলার পরও আমি কি তাকে কতল করতে পারি?” রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ “তাকে হত্যা করো না।” আমি আরয করলাম, “হে আল্লাহর রাসুল! সে আমার একটি হাত কেটে ফেলে এ কথা বলেছে, তবুও কি আমি তাকে হত্যা করব না?” তিনি বললেনঃ “না, হত্যা করতে পারবে না। যদি তুমি তাকে হত্যা কর (তবে) এ হত্যার পুর্বে তোমার যে অবস্হান ছিল সে ব্যাক্তি সে স্হানে পৌছবে এবং কালিমা পড়ার আগে সে ব্যাক্তি যে অবস্হানে ছিল তুমি সে স্হানে পৌছবে।”
[সহীহ মুসলিম ১৭৬, সহীহ বুখারি ৩৭৯৪]
(৩)
● রাসুলুল্লাহ (ﷺ) মুসলমানদের একটি বাহিনী মুশরিক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পাঠালেন। উভয় দল পরস্পর সম্মুর্খীন হল। মুশরিক বাহিনীতে এক ব্যাক্তি ছিল। সে যখনই কোন মুসলিমকে হামলা করতে ইচ্ছা করত, সে তাকে লক্ষ করে ঝাপিয়ে পড়ত এবং শহীদ করে ফেলত। একজন মুসলিম তার অসতর্ক মূহৃর্তের অপেক্ষা করতে নাগলেন। জুনদুব বললেন, আমাদের বলা হলো যে, সে ব্যাক্তি ছিল উসামা ইবনু যায়িদ। তিনি যখন তার উপর তলোয়ার উত্তোলন করলেন তখন সে বলল, ‘লা ইলাহা ইল্লাহ’ তবুও উসামা (رضي الله عنه) তাকে হত্যা করলেন। দুত যুদ্ধে জয়লাভের সুসংবাদ নিয়ে নাবী (ﷺ) -এর খেদমতে হাযির হলেন। তিনি তার কাছে যুদ্ধের পরিস্হিতি সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তিনি সব ঘটনাই বর্ণনা করলেন, এমন কি সে ব্যাক্তির ঘটনাটিও বললেন যে তিনি কি করেছিলেন। নাবী (ﷺ) উসামাকে ডেকে পাঠালেন এবং প্রশ্ন করলেন, তুমি সে ব্যাক্তিকে হত্যা করলে কেন? উসামা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সে অনেক মুসলিমকে ঘায়েল করেছে এবং অমুক অমুককে শহীদ করে দিয়েছে। এ বলে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করলেন। আমি যখন তাকে আক্রমণ করলাম এবং সে তলোয়ার দেখে অমনি ‘লা ইলাহা ইল্লাহ’ বলে উঠল। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তুমি কি তাকে মেরে ফেললে? তিনি বললেন, জি হ্যা। রাসুল বললেনঃ কিয়ামত দিবসে যখন সে ‘লা ইলাহা ইল্লাহ’ (কালিমা) নিয়ে আসবে, তখন তুমি কি করবে? তিনি আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার মাগফিরাতের জন্য দু’আ করুন। রাসুল বললেনঃ কিয়ামত দিবসে যখন সে ‘লা ইলাহা ইল্লাহ’ (কালিমা) নিয়ে আসবে তখন তুমি কি করবে? তারপর তিনি কেবল এ কথাই বলছিলেনঃ কিয়ামতের দ্বীন যখন সে ‘লা ইলাহা ইল্লাহ’ (কালিমা) নিয়ে আসবে, তখন তুমি কি করবে? তিনি এর অতিরিক্ত কিছু বলেন নি। [মুসলিম ১৭৬]
III) ইমাম হোসাইন (رضي الله عنه) এর হত্যার প্রতিশোধঃ
হযরত জয়নাব বিনতে জাহাশ (رضي الله عنه) থেকে বর্নিত,
নবীজী (ﷺ) বলেছেন,
আমাকে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যাদেশ পাঠিয়েছেন যে, আমি হযরত ইয়াহিয়া ইবনে জাকারিয়া (رضي الله عنه) এর হত্যার বদল হিসেবে ৭০ হাজার লোককে হত্যা করেছি, আমি আমার দৌহিত্রের হত্যার বদলা হিসেবে ৭০ হাজারের ৭০ গুন লোককে হত্যা করব। – আল্লাহু আকবার
তথ্যসূত্রঃ
● তাবারানীঃ আল মুজমাউল কবীরঃ খন্ড ২৪ : পৃ: ৫৪ হাদিস ১৪১
● আল হাকিমঃ সহিহ আল মুসতাদরেক : আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) এর সুত্রে, খন্ড ২ : পৃ: ৩১৯ : হাদিস ৩১৪৭
IV) ভেবে দেখুন ইয়াজিদ বাহিনী কাকে কতল করল?
হযরত জাবির (رضي الله عنه) বলেন, আমি বিদায় হজ্বে আরফাতের দিন হুযূরে পাক (ﷺ)কে ‘ক্বাসওয়া’ নামক উষ্ট্রীর উপর আরোহণরত অবস্থায় বলতে শুনেছি,
یا ایها الناس انی تر کت فیکم ماان اخزتم به لن تضالو ا کتاب الله و عتدتی اهال بیتی
হে লোকেরা! আমি তোমাদের মধ্যে যা রেখে যাচ্ছি যদি তোমরা তা দৃঢ়ভাবে ধারণ কর তাহলে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। তা হল আল্লাহর কিতাব এবং আমার বংশধর তথা আহলে বায়ত।
তথ্যসূত্রঃ
●[তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ – ৫৬৫ পৃঃ]
হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বারবার বলতেন : ‘হুসাইন আমা থেকে, আর আমি হুসাইন থেকে।’
তথ্যসূত্রঃ
● কানযুল উম্মাল, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২২১;
● সহীহ তিরমিযী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩০৬;
● মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বাল, ৩য় খণ্ড;
● হিলইয়াতু আবু নাঈম, ৫ম খণ্ড, ৪র্থ খন্ড;
● তারিখে বাগদাদ, ৯ম খণ্ড;
● তাহযিবুত তাহযীব,
● ইবনে হাজার, ৩য় খণ্ড;
● সহীহ ইবনে মাজাহ;
● মুস্তাদরাকুস সাহীহাইন, ৩য় খণ্ড;
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ইরশাদ করেন:
‘মা ফাতেমা (رضي الله عنه) সমস্ত জান্নাতী মহিলাদের সরদার আর ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন (رضي الله عنه) সমস্ত বেহেশতী যুবকদের সরদার।
তথ্যসূত্রঃ
● সহীহ তিরমিযী, আল জামি-উস-সহীহ (৫: ৬৬০) 3781)
● সহীহ ইবনে মাজাহ,
● ফাযায়েলে আসহাবুন নবী অধ্যায়; বুখারী ফি আদাবুল মুফরাদ
●নসাই, আস-সুনান-উল-কুবরা (5: 80, 95 # 8298, 8365)
●নসাই, ফাদাইল-উস-সাহাবাহ (পৃ. 58, 72 # 193, 260)
●আহমাদ বিন হাম্বল, আল-মুসনাদ (৫: ৩৯১)
●আহমাদ বিন হাম্বল, ফাদাইল-উস-সাহাবাহ (২: 788 # 1406)
●ইবনে আবী শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ (6: 388 # 32271)
●হাকিম, আল-মুস্তাদরাক (3: 164 # 4721, 4722)
●তবারানী, আল-মুজাম-উল-কবির (22: 402 # 1005)
●বায়হাকী, আল-ইতিকাদ (পৃষ্ঠা ৩৩২)
●মুহিব্ব তাবারী, খাইর-উল-উকবা ফী (পৃষ্ঠা ২২২৪)
V) মা ফাতেমা (رضي الله عنه) কে কষ্ট দেয়ায় লানতঃ
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ওপরকালে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি”।
(সূরা আহযাব : ৫৭)
Note: ইমাম হোসাইনকে যারা কতল করেছে তাদের প্রতি আল্লাহ ও রাসুল উভয়ই অসন্তুষ্ট এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায়।
হযরত আল-মিসওয়ার ইবনে মাখরামা ((رضي الله عنه)) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ
“ফাতেমা (رضي الله عنه) আমার শরীরের অংশ (যেমন ঠিক তেমন)। সুতরাং যে তাকে অসন্তুষ্ট করল, সে যেন আমাকেই অসন্তুষ্ট করল।”
তথ্যসূত্রঃ :
● বুখারীঃ আস-সহীহ, ৩য় খন্ড, পৃ.১৩৬১, ১৩৬৪, ১৩৭৪, হাদীস: ৩৫১০, ৩৫২৩, ৩৫৫৬; এবং ৫ম খন্ড, পৃ.২৩০৩, হাদীস: ৪৯৩২;
● মুসলিমঃ আস-সহীহ, ৪/১৯০৩, হাদীস: ২৪৪৯]
● মুসলিমঃ আস-সহীহ, ৭/১৪১, হাদীস: ৬৪৬১]
এই হাদিসের ৬৬টি রেফারেন্স আছে এত গুলো টাইপ করাও সম্ভব নয়।
(VI) ইয়াযীদ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ভবিষ্যত বাণীঃ
কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনার পূর্বাভাষ রাসূল ﷺ নিজেই দিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে অনেকগুলো সহীহ হাদিস রয়েছে। কোন কোন হাদিসে আবার সরাসরি এজিদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করে হলো।
(১) সহীহ বুখারী শারীফের ব্যাখ্যাকারী এবং ফাতহুল বারীর লেখক হাফিজ আহমদ বিন হাজর আসকলানী (رحمة الله) মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা সূত্রে বর্ণনা করেন, “হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বাজারে যাওয়ার সময় প্রার্থনা করত ‘ও আল্লাহ, আমাকে ৬০ হিজরী এবং যুবকের রাজত্বকাল পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখ না।’
সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাকারী ইমাম বদরুদ্দীন আইনি (رحمة الله) সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ‘প্রথম বালক যে শাসন করবে’এই কথা দ্বারা ইয়াজিদকে বুঝানো হয়েছে। [উমদাত উল কাদরী ভলি. ১৬, পেজ ৩৩৩]
(২) হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) সূত্রে বর্ণীত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন- আল্লাহ তা’আলার সাহায্য প্রার্থনা কর ৭০ দশক হতে এবং এক যুবকের রাজত্বকাল হতে।
তথ্যসূত্রঃ
[মুসনাদ ইমাম আহমদ, হাদীস নং ৩৮০০]
হাফিজ ইবন হাজর আসকলানী (رحمة الله) এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, এই হাদীসে ৬০ হিজরীতে একজন শাসকের কথা বলা হয়েছে। হাদীস অনুসারে তাই ঘটে। ইয়াজিদ বিন মুয়্যাবিয়্যা এই বছরেই শাসনে বসেন এবং ৬৪ হিজরীতে মারা যান।
(৩) আমর বিন ইয়াহিয়া সায়ে’দ বিন আমর বিন সায়ে’দ তাঁর দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, “আমি হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) এর সাথে মসজিদে নববীতে বসেছিলাম এবং মারওয়ান আমাদের সাথে ছিলেন। হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেছিলেনঃ “আমি শুনেছিলাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কুরাইশ বংশের কিছু যুবকদের দ্বারা আমার উম্মত ধ্বংস প্রাপ্ত হবে”। মারওয়ান বলেন, আল্লাহ এই ধরণের যুবকদের অভিশাপ দেন। হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, আমি বলতে পারি অমুক, অমুকের পুত্র অমুক, তমুকের পুত্র তমুক যদি আমি চাই। হযরত আমর বিন ইয়াহিয়া বলেন, আমি আমার দাদার সাথে বনী মারওয়ানে গিয়েছিলাম যখন তারা সিরিয়া নিয়ন্ত্রণ করছিল এবং এক জন যুবককে দেখতে পেলাম। আমার দাদা বললেন তারাও তাদের একজন হবে। আমরা বললাম তা আপনি ভাল বলতে পারবেন।
তথ্যসূত্রঃ
[সহীহ বুখারীঃ কিতাবুল ফিতনা, (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮০, তৌহিদ ফাউন্ডেশন – ৭০৫৮) ]
(৪) বিখ্যাত মুহাদ্দীস ইমাম সাহাবুদ্দীন আহমেদ বিন হাজর হায়তামী (رحمة الله) ভিন্ন সনদে একই হাদীস উল্লেখ করেছেন।
“হযরত আবু দারদা (رضي الله عنه) বলেছেন, “আমি শুনেছিলাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন – আমার সুন্নাহকে পরিবর্তনকারী প্রথম ব্যক্তি হবে বনি উম্যায়াহ গোত্রের ইয়াজিদ”।
তথ্যসূত্রঃ
[ইমাম সাহাবুদ্দীন আহমেদ বিন হাজর হায়তামী (رحمة الله) আস-সাবাক আল-মুহরিকা গ্রন্থের ১৩২ পৃঃ]
(৫) “হযরত আবুযার ঘিফারী (رضي الله عنه) থেকে। এই বর্ণনায় ‘যার নাম ইয়াজিদ হবে’ এই কথাটি অনুপস্থিত।
তথ্যসূত্রঃ
●হাফিজ ইবন কাছীর একই হাদীস উল্লেখ করেছেন তাঁর সুবিখ্যাত আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহ্যায়াহ গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ২৫৬ নং পৃষ্ঠায়।
●মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা- খণ্ডঃ ৮, পৃঃ ৩৪১, হাদীস নং ১৪৫;
●দালাইল উন নবুয়্যাত লিল বায়হাকী আবওয়াব ঘাজওয়া তাবুক- হাদীস নং ২৮০২;
●মাতালিব আল-আলিয়্যাহ- হাদীস নং ৪৫৮৪।
(৬) তৃতীয় শতাব্দীর এক বিখ্যাত মুহাদ্দীস ইমাম আবু ইয়া’লা (رحمة الله) তাঁর মুসনাদ সহীহ সনদে উল্লেখ করেনঃ
“হযরত আবু উবায়দাহ বিন জাররাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন – “মুসলিম উম্মাহর যাবতীয় কাজে ততক্ষণ পর্যন্ত ন্যায়পরায়ণতা পরিলক্ষিত হবে যতক্ষণ না বনি উম্যায়াহ গোত্রের একজন শাসক এসে দ্বীনের মধ্যে ফাটল ধরাবে। তার নাম হবে ইয়াজিদ।”
তথ্যসূত্রঃ
●ইমাম আবু ইয়া’লা তাঁর “মুসনাদে আবি ইয়ালা, খন্ড ২, পৃঃ ৭১।
●ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতিঃ তারীখুল খুলাফা তে।
হাদিসের সকল রাবী সৎ ও নির্ভরযোগ্য।
(মুসনাদে আবি ইয়ালা, খন্ড ২, পৃঃ ৭১, সহীহ সনদে)
হাদিসটির বিভিন্ন সুত্র :
(১) হযরত আবুযার ঘিফারী (رضي الله عنه)
(২) হযরত আবু উবায়দাহ বিন জাররাহ (رضي الله عنه)
(৩) হযরত আবু দারদা (رضي الله عنه)
ভিন্ন ভিন্ন সনদে আসার কারনে তা হাসান পর্যায়ে পৌঁছেছে।
الطريق الأول : هشام بن الغاز عن مكحول:
و اختلف عن هشام :
أ- فتارة يرويه عن مكحول عن أبي عبيدة بن الجراح مرفوعا ، رواه عنه :
1- عبد القدوس بن الحجاج الخولاني [و هو صدوق] :أخرجه نعيم بن حماد في الفتن (817) و (824) .
2- يحيى بن حمزة الحضرمي [ثقة رمي بالقدر] :أخرجه أحمد بن منيع في “مسنده” كما في “المطالب العالية” (4466) ، و أبي يعلى الموصلي في “مسنده” (870) .
ب- و تارة يرويه عن مكحول ، عن أبي ثعلبة الخشني ، عن أبي عبيدة بن الجراح مرفوعا ، رواه عنه :
أخرجه يعقوب بن سفيان الفسوي في “المعرفة و التاريخ” (1/295) ، و من طريقه البيهقي في “الدلائل” (6/467) ، و ابن عساكر في “تاريخه” (68/41) .
الطريق الثاني : سليمان بن أبي داود عن مكحول :
أخرجه البزار في “مسنده” (1284) :وَحَدَّثَنَاهُ سُلَيْمَانُ بْنُ سَيْفٍ الْحَرَّانِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ بْنِ أَبِي دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنِي أَبِي ، عَنْ مَكْحُولٍ ، عَنْ أَبِي ثَعْلَبَةَ الْخُشَنِيُّ ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : لاَ يَزَالُ هَذَا الأَمْرُ قَائِمًا حَتَّى يَثْلِمَهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي أُمَيَّةَ.
قال البزار : “وَهَذَا الْحَدِيثُ لاَ نَعْلَمُهُ يُرْوَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ، إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ بِهَذَا الإِسْنَادِ” .
الطريق الثالث : الأوزاعي عن مكحول :
أخرجه الحارث بن أبي أسامة في “مسنده” (رقم 616-بغية الباحث) ، و أبي يعلى الموصلي في “مسنده” (871) فقالا : حدثنا الحكم بن موسى حدثنا الوليد بن مسلم عن الأوزاعي عن مكحول ، عن أبي عبيدة قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : ” لا يزال أمر أمتي قائما بالقسط حتى يكون أول من يثلمه رجل من بني أمية يقال له يزيد ” .
الطريق الرابع : هشام بن عروة عن أبيه ، عن جابر ، عن أبي عبيدة :
أخرجه محمد بن الحسين الحاجي البزاز في “فوائده” كما في “أخبار قزوين” للرافعي (1/475) : فقال أنبأ أبو الحسين محمد بن عمار البزاز ثنا علي بن إبراهيم بن سلمة ثنا أحمد بن علي بن الفضل الخزاز ثنا عبيد بن صدقة النصيبي ثنا محمد بن سليمان حدثني صدقة بن عبد الله عن هشام بن عروة عن أبيه عن جابر عن أبي عبيدة قال قال رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم: “لا يزال هذا الأمر قائما بالقسط حتى ثلمه رجل من بني أمية”.
তাছাড়া এ ব্যাপারে আরেকটি হাদীস আছে, যা আলবানী হাসান বলেছেন,
حديث أبي ذر مرفوعًا بلفظ: «أول من يغير سنتي رجل من بني أمية!» أخرجه ابن أبي عاصم في «الأوائل» [رقم/ 63]، وابن أبي شيبة [رقم/35877]، وابن عدي في الكامل [164/3
حسنه الإمام في الصحيحة [329/4