৩৭ – بَابُ مَا جَاءَ فِي تَخْفِيْفِ الْإِمَامِ فِي الصَّلَاةِ
১২২ – أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، قَالَ: كَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْعُوْدٍ، وَحُذَيْفَةُ، وَأَبُوْ مُوْسَىٰ ، وَغَيْرُهُمْ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ اجْتَمَعُوْا فِيْ مَنْزِلٍ، فَأُقِيْمَتِ الصَّلَاةُ، فَجَعَلُوْا يَقُوْلُوْنَ: تَقَدَّمْ يَا فُلَانُ! فَأَبَىٰ، فَقَالَ: تَقَدَّمْ أَنْتَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمٰنِ! فَتَقَدَّمَ، فَصَلَّىٰ بِهِمْ صَلَاةً خَفِيْفَةً وَجِيْزَةً، أَتَمَّ الرُّكُوْعَ وَالسُّجُوْدَ، فَلَـمَّا انْصَرَفَ، قَالَ الْقَوْمُ: لَقَدْ حَفِظَ أَبُوْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ صَلَاةَ رَسُوْلِ اللهِ .
বাব নং ৫২. ৩৭. ইমাম সংক্ষেপে নামায আদায় করা
১২২. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه), হযরত হুযায়ফা (رضي الله عنه), হযরত আবু মূসা (رضي الله عنه) সহ বেশ কয়েকজন সাহাবায়ে কিরাম কোন এক বাড়িতে একত্রিত হলেন। এ সময় নামাযের জন্য ইকামত বলা হলো। সবাই বাড়ির মালিককে বললেন, জনাব! আপনি (ইমামতির জন্য) সামনে অগ্রসর হোন। কিন্তু এতে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) কে বলেন, হে আবু আব্দুর রহমান! আপনি সামনে অগ্রসর হোন। অবশেষে তিনি অগ্রসর হয়ে সংক্ষিপ্তভাবে কিন্তু পূর্ণাঙ্গভাবে রুকু-সিজদার সাথে নামায আদায় করেন। তিনি নামায শেষ করলে সাথীগণ বললেন, আবু আব্দুর রহমান রাসূল (ﷺ) ’র নামায উত্তমরূপে স্মরণ রেখেছেন। (অর্থাৎ কিরাত সংক্ষিপ্ত কিন্তু রুকু-সিজদা পূর্ণাঙ্গরূপে আদায় করেছেন)।
ব্যাখ্যা: এই হাদিসে কয়েকটি মাসয়ালা রয়েছে। প্রথমত মুক্তাদীর প্রতি লক্ষ্য রেখে রাসূল (ﷺ) নিজেও সংক্ষিপ্তভাবে নামায আদায় করতেন এবং সাহাবায়ে কিরামকেও এভাবে নামায আদায়ের নির্দেশ দিতেন। মুক্তাদীগণ বিরক্তবোধ করে এবং নামাযকে বোঝা মনে করে এমন নামায পড়ানোর উপর তিনি অসন্তুষ্ট প্রকাশ করতেন। কারণ এতে মানুষ জামাতে নামায আদায় করা থেকে বিরত থাকে। ইবনে মাজাহ হযরত আবু দাউদ আনসারী (رضي الله عنه) থেকে একই বিষয়ের উপর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, এক ব্যক্তি রাসূল (ﷺ) ’র দরবারে এসে আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক ব্যক্তির কারণে ফজর নামাযের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। কেননা তিনি নামায বেশী দীর্ঘ করে থাকেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাঁকে ঐ দিনের চেয়ে অধিক কখনো অসন্তুষ্ট হতে দেখিনি। তিনি বলেছেন, হে লোকসকল! তোমরা লোকদের মনে নামাযের ব্যাপারে ঘৃণা সৃষ্টি করছ। তোমাদের কেউ যখন নামাযের ইমামতি করবে, তখন নামায সংক্ষিপ্ত করবে। কারণ মুক্তাদীর মধ্যে কেউ বৃদ্ধ এবং কেউ বিশেষ কাজের লোকও থাকতে পারে। এভাবে একদিন দীর্ঘ নামায পড়ানোর কারণে রাসূল (ﷺ) হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল (رضي الله عنه) কে সাবধান করে দেন।
উপরোক্ত ঘটনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, ঘরে আরো অনেক সাহাবায়ে কিরাম থাকা সত্ত্বেও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) কে ইমামতির জন্য নির্বাচন করা হয়। কারণ ইমামতির জন্য ইলমে ফিক্হ জানতে হবে। উপস্থিত সকলের চেয়ে ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) ইলমে ফিক্হে বিজ্ঞ ছিলেন বলে তাঁকে ইমামতির দায়িত্ব প্রদান করা হয়। অধিকন্তু চার খলিফার পর তাঁকেই ইলমে ফিক্হ সম্পর্কে সবচেয়ে বিজ্ঞ বলে বিবেচিত হয়।
এই হাদিস দ্বারা এটাও প্রতীয়মান হয় যে, মুক্তাদীর অবস্থা বিবেচনায় যদিও নামায সংক্ষিপ্ত করা হয় কিন্তু নামাযের অন্যান্য আরকান অত্যন্ত ধীর-স্থীরভাবে বিনয়ের সাথে আদায় করতে হবে। তাই বর্ণিত হাদিসে فصلى صلوة خفيفة এর সাথে اتم الركوع والسجود বলা হয়েছে।