মাওলানা মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দিন ক্বাদেরী
আল্লাহ পাক মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং আল্লাহ পাকের ঘোষনা -وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ.
“আর আমি মানব জাতি ও জ¦ীন জাতিকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।” অন্য আয়াতে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, يا أَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ.
“হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকেও সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা পরহেযগার হতে পার।” আমরা ইবাদত করি আল্লাহ পাকের হুকুম তা’মিল করার জন্য। আমাদের যাবতীয় ইবাদত-বন্দেগী ও আমল আল্লাহর কাছে কবুল হলেই আমরা উভয় জগতে সফল। অন্যথায় সবকিছুই বৃথা। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আল্লাহর কাছে তা কবুল হয় না। ইবাদত ও আমল আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়া সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ষ্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ নিশ্চয় আল্লাহ পাক মুত্তাকীদের পক্ষ হতে কবুল করেন।
ইবাদত ও আমলের ধারণা
ইবাদত ও আমল এক কথা নয়। ইবাদতের তুলনায় আমল অনেক ব্যাপক। ইবাদত হচ্ছে আমলের একটি প্রকার মাত্র। অথচ আমরা দৈনন্দিন জীবনে আমাদের যাবতীয় ভাল কাজকেই ইবাদত মনে করি। আমরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবন পরিচালনায় আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার নির্দেশনা মোতাবেক যে কাজ আঞ্জাম দিয়ে থাকি তার সবকিছুই আমলে সালেহ বা সৎকর্মের অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনে যেখানে ঈমানের কথা বলেছেন সেখানে আমলের কথা বলেছেন। অর্থাৎ জান্নাতে যাওয়ার জন্য ঈমানদারকে অবশ্যই আমলদার হতে হবে। আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বর্ণনা করেন,
إِعْلَمْ أَنَّ مَدَارَ أُمُوْرِ الدِّيْنِ عَلى الْإِعْتِقَادَاتِ وَالْآَدَابِ وَالْعِبَادَاتِ وَالْمُعَامَلَاتِ وَالْعُقُوْبَاتِ. وَالْعِبَادَاتُ خَمْسَةٌ : اَلصَّلَاةُ وَالزَّكَاةُ وَالصَّوْمُ وَالْحَجُّ وَالْجِهَادُ. وَالصَّلَاةُ تَالِيَةٌ لِلْإيْمَانِ.أىْ نَصًا كَقَوْلِه تَعَالى : اَلَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ الخ وَكَحَدِيْثِ بُنِىَ الْإِسْلاَمُ عَلى خَمْسٍ الخ
‘জেনে রাখুন, নিশ্চয় ইসলাম ধর্মের বিষয়গুলো কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। যেমন: ঈমান তথা বিশ্বাস, শিষ্ঠাচারিতা, ইবাদাত, মুয়ামালাত ও শাস্তির বিধান।’ ইবাদাত পাঁচ প্রকার। যেমন: নামায, যাকাত, রোযা, হজ¦ ও জিহাদ। ঈমানের পরপরই নামায। তার দলীল হচ্ছে আল্লাহর বাণী-اَلَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ الخ وَكَحَدِيْثِ بُنِىَ الْإِسْلاَمُ عَلى خَمْسٍ الخ
আমলের প্রকারভেদ
১.ইবাদাত (উপাসনা) ২. মুয়ামালাত (লেনদেন) ৩. মু‘আশারাত (আচার-আচরণ) ৪. সিয়াসাত (রাষ্ট্রনীতি) ৫. দাওয়াত (তাবলীগে দ্বীন) ৬. জিহাদ (ধর্মের প্রচার ও প্রসারকল্পে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা) ইত্যাদি।
ইবাদতের প্রকারভেদ
১.নামায ২. রোযা ৩. হজ্জ ৪. যাকাত সহ ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল ইবাদত-বন্দেগী। সুতরাং বুঝা গেল, ইবাদাত হচ্ছে আমলের একটি প্রকার। আমল ইবাদতের চেয়ে অনেক ব্যাপক।
নামায, রোযা, হজ¦ ও যাকাত আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সাধারণ শর্তাবলী
দৈনন্দিন জীবনে আমরা ইবাদত যেমন করি, সাথে সাথে আমলও করি। কিন্তু কোনটিই নিজের খেয়ালখুশি মত করার সুযোগ নেই। সবগুলো এমনভাবে আঞ্জাম দিতে হবে, যেন আল্লাহ ও রাসূলের কাছে গ্রহনযোগ্য হয়। নামায, রোযা, হজ¦ ও যাকাত হচ্ছে প্রাপ্ত বয়স্ক ও সক্ষম মুসলিম নরনারীর উপর ফরয ইবাদত। এগুলো আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার জন্য অবশ্যই সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন অনুসরণ করতে হবে। নি¤েœ এ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলোঃ
নামায আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সাধারণ শর্তাবলী
শারীরিক ও আত্মিক পবিত্রতা অর্জন করতে হবে। শারীরিক পবিত্রতা হচ্ছে- অযু, গোসল ও তায়াম্মুম। আত্মিক পবিত্রতা হলো-মনের ভিতর লুকায়িত যাবতীয় খারাপ চিন্তা ও খারাপ পরিকল্পনা, কামনা বাসনা পরিহার করে ভাল পথে ফিরে আসার দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হওয়া। কারণ, পবিত্রতা অর্জন ব্যতীত নামায আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। নবীজি ইরশাদ করেছেন-
لَا تُقْبَلُ صَلَاةٌ بِغَيْرِطُهُوْرٍ. পবিত্রতা অর্জন ব্যতীত আল্লাহর দরবারে নামায কবুল হয় না। অযু, গোসল ও তায়াম্মুম বিষয়ক ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব ও মাকরূহ এবং এগুলো ভঙ্গ হওয়ার কারণ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের মুস্তাহাব সময়, মাকরূহ সময় ও নিষিদ্ধ সময় ভালভাবে জেনে নিয়ে মুস্তাহাব ও জায়েয সময়ের মধ্যে নামায আদায় করা। নিষিদ্ধ সময়ে নামায আদায় না করা। আল্লাহ পাক বলেন, إِنَّ الصَّلوةَ كاَنَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ كِتَابًا مَوْقُوْتًا
নিশ্চয় নামায ঈমানদারের উপর ফরয করা হয়েছে সঠিক সময়ে আদায়ের জন্য। নামাযের ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত ও মুস্তাহাব কাজগুলো যথাযথভাবে আদায় করা এবং নামাযের মাকরূহ ও নামায ভঙ্গের কারণসমূহ হতে বিরত থাকা। দুই রাকাআত নামাযে গুরুত্বপূর্ণ ৬০টি কাজ যথাযথভাবে আদায় করা। সুন্নাত পদ্ধতিতে সঠিক নিয়মে নামায আদায় করা। নবীজি ইরশাদ করেছেন- صَلُّوْا كَمَا رَأَيْتُمُوْنيْ أُصُلِّى
রোযা আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সাধারণ শর্তাবলী
মাহে রমজানে ফরয রোযা এবং অন্য মাসে নফল রোযা আদায়ের জন্য ফরয, সুন্নাত, মাকরূহ ও রোযাভঙ্গের কারণ বিষয়ক করণীয়-বর্জনীয় জ্ঞানার্জন যথানিয়মে আদায় করা। আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে আল্লাহর হুকুম তামিল করার জন্য রোযা পালন করা।
হজ¦ আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সাধারণ শর্তাবলী
যথানিয়মে ইহরাম বাঁধা। হজ্জের নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করা। হজ্জের ফরয, ওয়াজিব কাজগুলো যথাযথভাবে আদায় করা। নিষিদ্ধ কাজ হতে বিরত থাকা।
যাকাত আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সাধারণ শর্তাবলী
নিসাব সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখা। কাদের উপর যাকাত ফরয, কোন সম্পদের উপর যাকাত ফরয, কোন সম্পদে যাকাত ফরয নয়, যাকাতের হকদার কারা? কাদেরকে যাকাত দেওয়া যাবে না। যাকাত আদায়ের সময় এবং যাকাত আদায়ের নিয়ম সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করে যাকাত আদায় করলেই আল্লাহর দরবারে যাকাত কবুল হবে।
ইবাদাত ও অন্যান্য আমল আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার বিশেষ শর্তাবলী
১. ঈমান-আক্বীদা বিশুদ্ধ হওয়া
বান্দাহকে শিরক, কুফর ও নিফাকমুক্ত ঈমান পোষণ করতে হবে। মহান আল্লাহর দরবারে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য প্রথম শর্ত হলো বিশুদ্ধ ঈমান-আক্বীদা। কেননা, ঈমান আগে আমল হচ্ছে পরে। বিখ্যাত উসূলে ফিকাহর কিতাব ‘নূরুল আনোয়ার’ এর শুরুতেই রয়েছে, اَلدِّيْنُ يَشْمُلُ الْعَقَائِدَ وَالْأَعْمَالَ ইসলাম ধর্ম দুটি জিনিসকে অন্তর্ভূক্ত করে, তা হলো আক্বীদা ও আমল। সুতরাং এখানে আক্বীদার কথা আগে আর আমলের কথা পরে। যার আক্বীদা শুদ্ধ নেই তার আমলের কোন মূল্য নেই। আমল নির্ভর করে বিশুদ্ধ আক্বীদার উপর। সূরা ফাতিহার শুরুতে إِيَّاكَ نَعْبُدُ এর মধ্যেও আমলের উপর আক্বীদার প্রাধান্য প্রমাণিত।
২. তাকওয়া অবলম্বন করা এবং ছোট-বড়
গুনাহ থেকে বিরত থাকা
আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ
নিশ্চয় আল্লাহ পাক মুত্তাকীনদের পক্ষ হতে কবুল করেন। আল্লাহ পাক মুক্তাকীনদেরকে পছন্দ করেন। তাহলে মুত্তাকীন কারা? ‘মুত্তাকী’ অর্থ হলো পরহেযগার, তাকওয়াবান, খোদাভীরু। অর্থাৎ যারা আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের নির্দেশ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করেন তারাই মুত্তাকী। যে কোন পরিস্থিতিতে সত্য পথ থেকে তারা বিচ্যুত হন না। সর্বদা আল্লাহর দরবারে যে কোন কাজের জন্য জবাবদিহিতার মানসিকতা লালন করেন তারাই মুত্তাকী। যারা কবীরা গুনাহ সমূহ থেকে বিরত থাকেন। পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারার শুরুতে রয়েছে- ذلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيْهِ هُدًى لِلْمُتَّقِيْنَ. ঐ কিতাব যাতে সন্দেহের অবকাশ নেই, এটা মুত্তাকীনদের জন্য হেদায়তের আলোকবর্তিকা স্বরূপ। হাবিল কাবিলের কুরবানী ছিল আল্লাহর পক্ষ হতে তাদের জন্য এক কঠিনতম পরীক্ষা। আল্লাহ পাক হাবিলের কুরবানী কবুল করেছিলেন, কিন্তু কাবিলের কুরবানী কবুল করেননি। কারণ, হাবিল ছিল মুত্তাকী ও পরহেযগার। কাবিল ছিল সন্ত্রাসী ও জালেম। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের সন্তুষ্টির জন্য আমাদেরকে ইবাদত ও সৎকর্ম করতে হবে। সাথে সাথে গুনাহ হতেও বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় প্লাস আর মাইনাসে = মাইনাস হবে।
৩. বিশুদ্ধ নিয়তে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সওয়াবের আশায় ইবাদত করা
প্রতিটি কাজের সফলতা, গ্রহনযোগ্যতা ও ফলাফল নির্ভর করে নিয়তের বিশুদ্ধতার উপর। তাই বলা হয়- نِيَّةُ الْمُؤْمِنِ خَيْرٌ مِنْ عَمَلِه ঈমানদারের নিয়ত আমল থেকে উত্তম। এ প্রসঙ্গে বুখারী ও মুসলিম শরীফের সূত্রে মিশকাত শরীফের শুরুতে হাদিস বর্ণিত আছে- عَنْ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ قاَل رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لأمْرِئٍ مَا نَوَى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِهِ وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيْبُهَا أَوْ امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ. (متفق عليه) বুখারী ও মুসলিম শরীফের সূত্রে মিশকাত শরীফের কিতাবুস সাওম অধ্যায়ে রোযার ব্যাপারে বলা হয়েছে- عَنْ أَِبيْ هُرُيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيْمَانًا وَّإِحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ(متفق عليه)
আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমান সহকারে সওয়াবের আশায় রোযা রাখে তার অতীতের সকল সগীরা গুনাহ ক্ষমা করা হয়।
হযরত আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, নবীজি ইরশাদ করেন, যখন কিয়ামতের দিন হবে আল্লাহ পাক তার বান্দাহদের বিচারের উদ্দেশ্যে আবির্ভূত হবেন। তখন প্রতিটি জাতি ভয়ে নতজানু হয়ে যাবে। বান্দাদের মধ্যে প্রথমে ডাকা হবে কুরআনের বাহকদের, আল্লাহর পথে শহীদ ও সম্পদশালীদেরকে। আল্লাহ পাক ক্বারীর উদ্দেশ্যে বলবেন, আমি কি তোমাকে শিখাইনি? যা আমার রাসূলের উপর নাযিল করেছিলাম। সে বলবে, হাঁ। সুতরাং যা শিখেছো তা কী আমল করেছো? সে বলবে, দিন রাতের নানা প্রহরে আমি কুরআন তেলাওয়াত করেছিলাম। আল্লাহ পাক বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছো। ফেরেস্তারাও তার উদ্দেশ্যে বলবে, তুমি মিথ্যা বলছো। আল্লাহ বলবেন, তোমার অভিপ্রায় ছিল যে, লোকেরা তোমাকে ক্বারী বলে ডাকবে। আর তা তো তোমাকে ডাকা হয়েছে। ফলে দুনিয়াতে তোমার প্রতিদান তুমি পেয়েছো। হাদিসের পরের অংশে রয়েছে- অত:পর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
৪. রিয়া (লোক দেখানো ইবাদত করা)
থেকে বিরত থাকা
রিয়া ইবাদতকে ধবংস করে দেয়। নবীজি রিয়াকে ‘শিরকে খফী’ বলেছেন। নবীজি আরো ইরশাদ করেন, আমি আমার উম্মতের জন্য যে সব বিষয় ভয় করি, তার মধ্যে অধিক আশংকাজনক হচ্ছে আল্লাহর সাথে শিরক করা। আমি এ কথা বলছি না যে, তারা সূর্য ও চন্দ্রের পুঁজা করবে এবং তারা আল্লাহ ছাড়া অপরের সন্তুষ্টির জন্য কাজ করবে এবং গোপন পাপ করবে। অর্থাৎ লোক দেখানো ইবাদত করবে। প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য দান-সদকার সুফল ও কুফল সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
إِنْ تُبْدُوا الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَ وَإِنْ تُخْفُوهَا وَتُؤْتُوهَا الْفُقَرَاءَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ وَيُكَفِّرُ عَنْكُمْ مِنْ سَيِّئَاتِكُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ .
‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দানÑখয়রাত কর, তবে তা কতই না উত্তম! আর যদি দান-খয়রাত গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্থদের দিয়ে দাও, তবে তা তোমাদের জন্যে আরও উত্তম। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের কিছু গুনাহ দূর করে দিবেন। আল্লাহ পাক তোমাদের কৃতকর্মের ব্যাপারে অধিক অবগত।’
৫. সুম‘আ (ইবাদতের ফিরিস্তি প্রচার করা) থেকে বিরত থাকা
ইবাদত করার পর মানুষের কাছে বলে বেড়ানো। মানুষকে সর্বদা নিজের ইবাদতের ফিরিস্তি শোনানো। আর এটা ইবাদতকে শূন্য করে দেয়। ফলে ইবাদত ধবংস হয়ে যায়।
৬. হালাল উপার্জনের মাধ্যমে হালাল রিযিক গ্রহণ করা
ইবাদতের জন্য মানব দেহে শক্তি প্রয়োজন। আর শক্তির প্রধান উৎস হলো খাদ্য। তাই আল্লাহ পাক খাদ্য সংগ্রহ করার জন্য যমিনে ছড়িয়ে পড়ার তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহ পাক বলেন,
فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانْتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِنْ فَضْلِ اللهِ وَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ.
অর্থাৎ আর যখন তোমরা নামায আদায় সম্পন্ন করবে তখন যমিন ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর। আর আল্লাহকে বেশী পরিমাণ স্মরণ কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। এখানে ‘ফদলুল্লাহ’ এর অর্থ দুটি। একটি হলো ‘ইলম’ অপরটি হলো- রিযিক। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের ইবাদত করবে অথচ তার খাদ্য হালাল হবে না তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাই ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য হালাল উপার্জনের বিকল্প নেই। খ্যদ্যের দ্বারা শরীরের রক্ত মাংসের বৃদ্ধি ঘটে। উপার্জিত অর্থ সম্পদ ও জিবিকা যদি হালাল হয় তাহলে শরীরের বৃদ্ধি ও হালাল হবে। আর যদি উপার্জন হারাম হয় তাহলে হারাম খাদ্যে গঠিত শরীরও হারাম। সুতরাং হারাম খাদ্যে গঠিত শরীর দ্বারা যতই ইবাদত করা হউক না কেন তা কখনও আল্লাহর দরবারে গ্রহনযোগ্য হবে না। অতএব বুঝা গেল, ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ পাক হারাম ও অপবিত্র বস্তু কিছুই গ্রহণ করেন না। কেননা, আল্লাহ পাক নিজেই পবিত্র। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ
وَاشْكُرُوا لِلهِ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ.
হে ঈমানদার! তোমরা পবিত্র বস্তু আহার কর। যেগুলো আমি তোমাদেরকে জীবিকা হিসাবে দান করেছি এবং শোকরিয়া আদায় কর আল্লাহ পাকের, যদি তোমরা একমাত্র তারই ইবাদত করে থাক। আলোচ্য আয়াতে হারাম খাদ্য ভক্ষণ করতে যেমন নিষেধ করা হয়েছে তেমনি হালাল ও পবিত্র বস্তু খেতে এবং আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করতে অনুপ্রাণিত করা হয়েছে।
কুরআনে পাকে ইরশাদ হয়েছে- فَابْتَغُوا عِنْدَ اللهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ. তাই আল্লাহর কাছে রিযিক তালাশ কর, তার ইবাদত কর এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তারই কাছে তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তন করানো হবে।
হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে যে,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِيْنَ، فَقَالَ يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوْا صَالِحًا إِنِّيْ بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِيْمٌ হে লোক সকল! নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ব্যতিত কিছুই গ্রহণ করেন না। আর নিশ্চয় আল্লাহ ইমানদারকে তাই আদেশ করেছেন যা তিনি রাসূলগণকে আদেশ করেছিলেন।
হযরত ইবনে আব্বাছ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে- تُلِيَتْ هذِهِ الْآَيَةُ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صَلىَّ اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (يا أيها الناس كلوا مما في الأرض حلالا طيبا) فَقَامَ سَعْدُ بْنُ أَبِيْ وَقَّاصٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَي فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُدْعُ اللهَ أَنْ يَجْعَلَنِيْ مُسْتَجَابَ الدَّعْوَةِ، فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا سَعْدُ! أَطِبْ مَطْعَمَكَ.
রাসুুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট একদিন এই আয়াতটি তেলাওয়াত করা হলো। হে মানবমন্ডলী! পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু সামগ্রী ভক্ষণ কর। তখন সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাছ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, যেন আমার দোয়া কবুল হয়। নবীজি বললেন, হে সাদ! তোমার পানাহারকে হালাল কর। তবে তোমার দোয়া কবুল হবে।
সহীহ মুসলিম শরীফ বর্ণিত আছে, لَا تُقْبَلُ صَلوةٌ بِغَيْرِ طُهُوْرٍ অর্থাৎ পবিত্রতা অর্জন ছাড়া নামায আল্লাহর দরবারে কবুল করা হবে না। অযু গোসল ছাড়া যেমন নামায শুদ্ধ হয় না ঠিক তেমনি হালাল জীবিকা ছাড়া কোন ইবাদতই আল্লাহর কাছে কবুল হয় না। এমনকি হারাম বস্তু হালাল পন্থায় অর্জন করলেও তা হারাম। আর হালাল বস্তু হারাম পন্থায় অর্জন করলেও তা হারাম। হালাল উপাজর্ন অন্যতম ফরয ইবাদত। এ প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে, হালাল রিযিক সন্ধান করা নির্ধারিত ফরযসমূহের পরে একটি বিশেষ ফরয। মুসলিম শরীফ বর্ণিত আছে, আল্লাহ পাক পবিত্রতা ছাড়া কিছুই গ্রহণ করেন না। তাই সকল ঈমানদার মুসলিম নারী ও পুরুষের উপর হালাল উপার্জন করা ফরয। হালাল উপার্জন একটি জিহাদ। হালাল উপার্জনের সকল চেষ্টাই সৎকর্মের অন্তর্ভূক্ত।
হারাম দ্বারা পুষ্ট দেহ জান্নাতে যেতে পারবে না। নবীজি ইরশাদ করেছেন, طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالَ فَرِيْضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيْضَةِ
হালাল রুযি অন্বেষণ করা ফরযের পরেও আরেকটি ফরজ। বান্দাহ যে সকল ইবাদত করে থাকে হালাল উপার্জন তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রিযিক হালাল ও বৈধ হওয়ার জন্য দুটি শর্ত রয়েছে- ১। উপভোগের বস্তুটি বা বিষয়টি হালাল বা বৈধ বলে অনুমোদিত হতে হবে ২। তা প্রাপ্তি বা অর্জনের পথ হালাল হতে হবে। আল্লাহ পাক পবিত্র, তার ধর্ম পবিত্র, বিশ^াস পবিত্র। ইসলামের প্রথম বাণী হলো- কালিমা তাইয়্যেবা বা পবিত্র বাণী। এই বাণীর মাধ্যমে সে পবিত্র ধর্ম ইসলামে প্রবেশ করে। তাই তার সারা জীবনের প্রতিটি কাজ হবে পবিত্র।
৭. হারাম উপার্জন ত্যাগ করা এবং
হারাম রিযিক পরিহার করা
আল্লাহ পাক বলেন, يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُوا مِمَّا فِي الْأَرْضِ حَلَالًا طَيِّبًا وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ হে মানব সকল! পৃথিবীতে যা কিছু হালাল বস্তু রয়েছে তা হতে তোমরা ভক্ষণ কর, আর শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবু যর গিফারী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
عَنْ أَبِيْ ذَرِّ الْغِفَارِيُّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَزَالُ قَدَمَا عَبْدٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ أَرْبَعٍ عَنْ عُمُرِهِ فِيْمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيْمَا أَبْلَاهُ وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أَيْنَ إِكْتَسَبَهُ وَفِيْمَا أَنْفَقَهُ وَعَنْ عِلْمِهِ مَاذَا عَمِلَ فِيْهِ. (رواه البيهقى و ترغيب)
হযরত আবু যর গিফারী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে কোন ব্যক্তি আপন জায়গা হতে উভয় পা সরাতে পারবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশ্ন করা না হয়। ১. সে কী কাজে তার হায়াতের মূল্যবান সময় খরচ করেছে? ২. নিজের যৌবন কোন ধরণের ব্যস্ততার মধ্যে নষ্ট করেছে? ৩. নিজের টাকা পয়সা ও ধন সম্পদ কোথা হতে অর্জন করেছে এবং কোথায় খরচ করেছে? ৪. নিজের ইলম অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে?
৮.ইবাদতে সুন্নাত পদ্ধতির অনুসরণ করা
কোন ঈমানদার আল্লাহ ও রাসূলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিজের খেয়াল খুশিমত ইবাদত করতে পারে না। আল্লাহ পাক বলেন- وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُبِينًا অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নির্দেশ প্রদান করলে কোন মুমিন পুরুষ বা নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অনুমতি নেই। কেউ আল্লাহ ও রাসূলকে অমান্য করলে সে তো সুষ্পষ্ট গোমরাহ হয়ে যাবে। [আহযাব: ৩৬]
নামাযের ব্যাপারে নবীজি বলেছেন, صَلُّوْا كَمَا رَأَيْتُمُوْنِيْ أُصَلِّي
আমাকে যেভাবে নামায আদায় করতে দেখ সেভাবে তোমরা নামায আদায় কর। আল্লাহ পাক বলেন, وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا
রাসূল তোমাদের জন্য নিয়ে আসেন তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যে সকল বিষয় থেকে নিষেধ করে তা থেকে তোমরা বিরত থাক। [সূরা হাশর : ৭]
৯. একনিষ্ঠতা ও সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে ইবাদত করা
হাদিসে জিবরীলের মধ্যে উল্লেখ রয়েছে- أَنْ تَعْبُدَ اللهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ
তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে এমনভাবে যেন তুমি তাকে দেখতে পাচ্ছো। আর যদি তাকে দেখতে না পাও তাহলে একথা মনে করো যেন তিনি তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন। আল্লাহ পাক বলেন,
وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ . শুধু তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে তারা যেন একনিষ্ঠতার সাথে আল্লাহর ইবাদত করে। তারই জন্য দ্বীনকে একনিষ্ট করে এবং নামায কায়েম করে। [সূরা বাইয়্যিনাহ : ৫]
১০. পার্থিব উদ্দেশ্যে ইবাদত করা থেকে বিরত থাকা
পার্থিব উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য আল্লাহর ইবাদত করা। এটা মূল্যহীন এবং মুনাফিকের কাজ। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-
إِنَّ الْمُنَافِقِينَ يُخَادِعُونَ اللَّهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ وَإِذَا قَامُوا إِلَى الصَّلَاةِ قَامُوا كُسَالَى يُرَاءُونَ النَّاسَ وَلَا يَذْكُرُونَ اللَّهَ إِلَّا قَلِيلًا .
নিশ্চয় মুনাফিকরা প্রতারণা করে আল্লাহর সাথে। অথচ তারা নিজেরাই নিজেদের সাথে প্রতারণা করে। আর যখন তারা নামাযে দাঁড়ায় তখন তারা দাঁড়ায় অলসভাবে লোক দেখানোর জন্য। আর তারা আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে। [সূরা নিসা : ১৪২]
আল্লাহ পাক আমাদেরকে যাবতীয় ইবাদত ও আমল বিশুদ্ধ নিয়তে ও বিশুদ্ধ নিয়মে আদায় করার তৌফিক দান করুন, আমিন। বিহুরমাতি সায়্যিদিল মুরসালীন।
লেখক: মুহাদ্দিস, গহিরা এফ. কে. জামেউল উলূম বহুমুখী কামিল মাদরাসা, রাউজান, চট্টগ্রাম।