আহলে বাইতকে মুহাব্বাতকারীদের জন্য শাফায়াতঃ
❏ হাদীস ১:
أخرج الديلمي عن علي رضي الله عنه قال: قال رسول اللهﷺ أربعة أنالهم شفيع يوم القيامة: المکرم لذريتي، والقاضي لهم حوائجهم، والساعي لهم أمورهم عندما اضطروا، والمحب الهم بقلبه ولسانه ؛
ইমাম দায়লামী হযরত আলী (رضي الله عنه) এর সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের দিন আমি চার ব্যক্তির জন্য সুপারিশকারী হব। (তারা হল)
১. আমার বংশধরদেরকে সম্মান কারী,
২. তাঁদের প্রয়ােজন পূরণকারী,
৩. তারা যখন কোন বিষয়ে সংকটে পড়বে তখন তাদেরকে সহযােগিতাকারী, এবং
৪. তাদেরকে অন্তর ও জবান দ্বারা (প্রকৃত) ভালবাসা পােষণকারী’।
তথ্যসূত্রঃ
১. যাখায়েরুল উক্বাবা, তাবরানী- পৃ. ৫০।
২. কানযুল উম্মাল, আল মুত্তাকিউল হিন্দ -১২:১০০ (৩৪১৮০)।
৩. ইত্তিহাফু সা-দাতিল মুত্তাক্বীন, ৮:৭৩।
৪. জাওয়াহিরুল ইক্বদিয়্যীন, আস সামহুদী, ২:৩৮৩।
❏ হাদীস ২:
أخرج الخطيب في تاريخه عن علی رضی الله عنه قال: قال رسول اللهﷺ شفاعتي لأمتی، من أحب أهل بیتی؛
খতীব বাগদাদী তার ‘আত-তারীখ’-এ হযরত আলী (رضي الله عنه) এর সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, “আমার উম্মতের ঐসব লােকের জন্য আমার শাফায়াত (সুপারিশ) থাকবে একমাত্র যারা আমার পরিবারবর্গ (আহলে বাইত) কে ভালবেসেছে। [তারীখু বাগদাদ-২:১৪৬]
❏ হাদীস ৩:
হযরত আলী (عليه السلام) বর্ণনা করেন, হযরত রাসুল (ﷺ) হাসান – হোসাইন এর হাত ধরে বললেন, যে ব্যাক্তি আমাকে এবং এই দু’জনকে ( হাসান ও হোসাইন ) কে ভালবাসবে সাথে সাথে তাঁদের পিতা- মাতাকে ( হযরত আলী ও হযরত ফাতেমা ) কে ভালবাসবে সে কিয়ামতে দিবসে আমার সাথেই থাকবে।
[জামে আত তিরমিজি, আহমদ ইবনে হাম্বল, আল মুসনাদ, তাবরানি আল মু’জামুল কবির, খতিবে বাগদাদ, তারিখে বাগদাদ, আবু ইয়ালা- আল মুসনাদ]
❏ হাদিস ৪ :
রারসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আহলে বাইতের পরিচিতি লাভ দোজখ মুক্তির উসিলা। আর আহলে বাইত কে ভালোবাসা অর্থ পুলসিরাত পাড়ি দেওয়া। আর তাঁদের কে বিশ্বাস করা আল্লহর আযাব থেকে নিরাপত্তা সদৃশ।
[ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভীঃ মাদারেজুন নবুওয়াত, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-১১৫]
❏ হাদিস ৫ :
রারসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “কিয়ামতের দিন এক দল লোককে অত্যন্ত চমৎকার ও সম্মানিত অবস্থায় দেখা যাবে। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তারা ফেরেস্তা বা নবী কিনা? উত্তরে তারা বলবেন, আমরা ফেরেস্তাও নই নবীও নই, বরং মোহাম্মদ [ﷺ]-এঁর উম্মতের মধ্যে অভাবী লোক। তখন তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে, তাহলে কিভাবে তোমরা এত উচ্চ মর্যাদা লাভ করলে? উত্তরে তাঁরা বলবে, আমরা খুব বেশি আমল করিনি এমনকি পুরো বছর রোজাও রাখিনি এবং পুরো রাত্রি ইবাদতেও কাটাইনি। তবে আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করতাম এবং মোহাম্মদ [ﷺ] ও তাঁর আহলে বাইতের সদস্যগণের নাম শুনলে তাঁদের উপর দূরুদ পাঠ করতাম। আর তাঁদের দুঃখের কথা শুনলে আমাদের গালগড়িয়ে অশ্রু প্রবাহিত হত।
[ইমাম হাকিমঃ মুসতাদারক আলাস সাহীহাইন, খ–১০, পৃ-৩১৮]
❏ হাদিস ৬ :
হযরত আলী (عليه السلام) হতে বর্ণিত, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) ইরশাদ করেন, “আমি, আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন এবং আমাদের সকল আশেকরা একই স্থানে একত্রিত হবে। কিয়ামতের দিন আমাদের পানাহারও একত্রে হবে, মানুষের বিচারের ফয়সালা হওয়া পর্যন্ত।”
[সূত্রঃ তাবরানী, আল মু’জামুল কবির, খঃ-৩, পৃঃ-৪১, হাঃ-২৬২৩; হায়সামী, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, খঃ-৯, পৃঃ-১৬৯; আহমাদ ইবনে হাম্বাল,আল মুসনাদ, খঃ-১, পৃঃ-১০১; বাযযার, আল মুসনাদ, খঃ-৩, পৃঃ-২৯, হাঃ-৭৭৯; শায়বানী আস সুন্নাহ্, খঃ-২, পৃঃ-৫৯৮, হাঃ-১৩২২; ইবনে আসীর উসদুল গাবা, খঃ-৭, পৃঃ-২২০; ইবনে আসাকির তারিখে দামেশ্ক, খঃ-১৩, পৃঃ-২২৭]।
❏ হাদিস ৭ :
মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) এরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি দুনিয়াতে যাকে ভালোবাসবে বা অনুসরণ করবে তার সাথে তার হাশর হবে”।
[সূত্রঃ সহীহ্ মুসলিম, খঃ-৭, হাঃ-৬৪৭০, (ই,ফাঃ); সহীহ্ তিরমীজি, (সকল খণ্ড একত্রে) পৃঃ-৭২৮, হাঃ-২৩৪০ (তাজ কোং)]।
❏ হাদিস ৮ :
হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেন, “(শেষ বিচারের দিবসে) আমার শাফায়াত হবে মুসলিম উন্মাহর মধ্যে তাদের জন্য যারা আমার আহলে বাইতকে (অনুসরণ) মহব্বত করবে”।
[সূত্রঃ খতীব বাগদাদী, তারিখ বাগদাদ, খঃ -২, পৃঃ-১৪৬; হিন্দী, কানযুল উন্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-২১৭; সূয়ুতি ইয়াহইয়া আল মাইয়্যিত, পৃঃ-৩৭; আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৬৬, ৫৮১ (উর্দ্দু)]।
❏ হাদিস ৯ :
হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) ইমাম হাসান-হোসাইনের হাত ধরে বললেন, “যে ব্যক্তি আমাকে এবং এই দু‘জনকে (হাসান-হোসাইন)-কে ভালোবাসবে সাথে সাথে তাঁদের পিতা-মাতাকে (আলী ও ফাতেমা) কে ভালোবাসবে সে কিয়ামত দিবসে আমার সাথেই থাকবে”।
[সূত্রঃ জামে আত তিরমিযী, খঃ-৬, পৃঃ-৩৩১, হাঃ-৩৬৭০, (ইঃ, সঃ); তিরমিযী, আল-জামেউস সহীহ্, খঃ-৫, পৃঃ-৬৪১, হাঃ-৩৭৩৩; আহমদ ইবনে হাম্বাল, আল মুসনাদ, খঃ-১, পৃঃ-৭৭, হাঃ-৫৭৬; আহম্মদ ইবনে হাম্বাল-ফাযায়িলুস সাহাবা, খঃ-২, পৃঃ-৬৯৩, হাঃ-১১৮৫; তাবরানী-আল মু’জামুল কবির, খঃ-৩, পৃঃ-৫০, হাঃ-২৬৫৪]