আল-কোরআন এর আলোকে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) কে আল্লাহ প্রদত্ত ইলমে গায়েব :
উক্ত পোস্ট এ যা যা আলোচনা করা হয়েছে : পুরু পোস্ট না পড়লে বিভ্রান্তিতে পতিত হবেন।
১) আল্লাহর ইলমে গায়েবের আয়াত সমুহ। আল্লাহ স্বত্তাগত ভাবে গায়েব জানেন। রাসুলগন আল্লাহর খাস গায়েব (বা সম্পুর্ন গায়েব জানেন না)
২) আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ও মনোনিত রাসুলগনকে গায়েব জানিয়েছেন। আর এ সংবাদ কখনো ফেরেশতা,কখনো ওহী এবং কখনো আল্লাহ সরাসরি জানিয়েছেন (যেমন: মেরাজ এ)।
৩) গায়েব সম্পুর্ন জানা এবং নিজে নিজে জানা এটা প্রভুর শানেই মানায় তাই বলে আল্লাহ যাকে গায়েব জানিয়েছেন তার সেই প্রদত্ত গায়েব তো অস্বীকার করলে আল্লাহ আয়াতকেই অস্বীকার করা হবে তখন কুফর হবে। কারণ আল্লাহ বলেন জানিয়েছেন আপনে যদি বলেন জানে না, এসব মানি না তাহলে তো কুফরি হবে।
★★★ যেমন : এই ৩ আয়াতে সমগ্র মুলভাব চলে এসেছে :
আয়াত ১ : তিনিই অদৃশ্যের জ্ঞানী, আর তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না কিন্তু তাঁর মনোনীত রাসূল ব্যতীত (তাদেরকে ইচ্ছা অনুযায়ী দান করেন) আর তিনি তখন তার সামনে ও তার পিছনে প্রহরী নিযুক্ত করেন। আল-জিন, ৭২:২৬-২৭
আয়াত ২ : এগুলো গায়েবের সংবাদ, আমি আপনাকে ওহীর মাধ্যমে তা জানাচ্ছি। (আল-ইমরান ৩:৪৪)
আয়াত ৩ : হে রাসূল! আপনার রবের পক্ষ থেকে আপনার নিকট যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, তা আপনি পৌঁছে দিন। (মায়েদা ৫:৬৭)
Note: এই আয়াত দ্বারা স্পষ্ট হয় যে আল্লাহ যতটুকু নির্দেশ করেছেন ততটুকুই প্রচার করা হয়েছে তার মানে এই নয় যে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) যতটুকু গায়েব জানতেন পুরুটাই বলে দিয়েছেন শুধু মাত্র আদিষ্ট জ্ঞানগুলোই প্রচার করেছেন।
যেমন নিচের সকল আয়াতগুলোকে কেন্দ্র করে যদি ওহাবীরা ইলমে গায়েব অস্বীকার করতে চায় তাহলে তার জবাব হবে,
তিনিই অদৃশ্যের জ্ঞানী, আর তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না কিন্তু তাঁর মনোনীত রাসূল ব্যতীত (তাদেরকে ইচ্ছা অনুযায়ী দান করেন) আর তিনি তখন তার সামনে ও তার পিছনে প্রহরী নিযুক্ত করেন। আল-জিন, ৭২:২৬-২৭
আল্লাহ সত্তাগতভাবে আলিমুল গায়েব আর রাসুল (ﷺ) কে যতটুকু গায়েব দান করা হয়েছে তিনি সেই টুকু গায়েবের আলিম :-
ل لاَّ أَقُولُ لَكُمْ عِندِي خَزَآئِنُ اللّهِ وَلا أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلا أَقُولُ لَكُمْ إِنِّي مَلَكٌ إِنْ أَتَّبِعُ إِلاَّ مَا يُوحَى إِلَيَّ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأَعْمَى وَالْبَصِيرُ أَفَلاَ تَتَفَكَّرُونَ (50
আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় (নিজের নিজে) অবগতও নই।
আমি একথাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা (কিন্তু আমি বাশার)।
আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না।
★Reference : সুরা আনআম ৫০
عِندَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لاَ يَعْلَمُهَا إِلاَّ هُوَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَمَا تَسْقُطُ مِن وَرَقَةٍ إِلاَّ يَعْلَمُهَا وَلاَ حَبَّةٍ فِي ظُلُمَاتِ الأَرْضِ وَلاَ رَطْبٍ وَلاَ يَابِسٍ إِلاَّ فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ (59
তাঁর কাছেই (আল্লাহর কাছেই) অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না; কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না; যা তিনি জানেন না। তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে।
Reference : সুরা আনআম ৫৯
★ ৫৯নং আয়াতে কারীমার প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাই। সূরা আনয়ামের ৫০নং আয়াতে কারীমা আগে সূরা হুদের ৩১নং আয়াতে কারীমা সেখানে রয়েছে, হযরত নূহ (’আলাইহিস সালাম) তাঁর কওমকে বলেছিলেন: “আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধন- ভান্ডার রয়েছে এবং আমি গায়েব জানি না; আর আমি এও বলি না যে, আমিতো ফেরেশতা; আমি এটাও বলি না যে, তোমরা যাদেরকে হেয় ভাবছো – আল্লাহ কখনো তাদেরকে কল্যাণ করবেন না। তাদের হৃদয়ে যা রয়েছে – আল্লাহ তা ভালো করেই জানেন। নইলে, আমি জালেমদেরই অন্তর্ভুক্ত হবো।”
সূরা হুদের ৪৯ আয়াতে কারীমায় রয়েছে, “ওসব গায়েবের খবর আমি আপনার প্রতি ওহী করেছি – যেগুলো এর আগে আপনি ও আপনার উম্মত জানতেন না। …”।
ل لاَّ أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلاَ ضَرًّا إِلاَّ مَا شَاء اللّهُ وَلَوْ كُنتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لاَسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ إِنْ أَنَاْ إِلاَّ نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ (188
আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান (তাই হয়)। আর আমি যদি গায়বের কথা ( নিজে নিজে ) জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য।
★Reference : সুরা আল আরাফ ১৮৮
تِلْكَ مِنْ أَنْبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهَا إِلَيْكَ مَا كُنْتَ تَعْلَمُهَا أَنْتَ وَلا قَوْمُكَ مِنْ قَبْلِ هَذَا فَاصْبِرْ إِنَّ الْعَاقِبَةَ لِلْمُتَّقِينَ
(হে নবী) এগুলো গায়েবের সংবাদ, আমি তোমাকে ওহীর মাধ্যমে তা জানাচ্ছি; যা এর পূর্বে তুমি জানতে না আর না তোমার কওম জানত; সুতরাং তুমি ধৈর্য ধারণ কর, নিশ্চয় শুভ পরিণতি মুত্তাকীদের জন্যই।
★ Reference : হুদ ১১:৪৯
ذَلِكَ مِنْ أَنْبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ وَمَا كُنْتَ لَدَيْهِمْ إِذْ أَجْمَعُوا أَمْرَهُمْ وَهُمْ يَمْكُرُونَ
(হে নবী) এগুলো গায়েবের সংবাদ, আমি তোমাকে ওহীর মাধ্যমে তা জানাচ্ছি; তুমি তো তাদের নিকট ছিলে না যখন তারা তাদের সিদ্ধান্তে একমত হয়েছিল আর তারা ষড়যন্ত্র করছিল।
★ Reference : ইউসুফ ১২ : ১০২
মারইয়াম (আ) এর ঘটনা আল্লাহ তাঁর ওহীর মাধ্যমে রসূলকে জানিয়েছেন :
ذَلِكَ مِنْ أَنْبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ وَمَا كُنْتَ لَدَيْهِمْ إِذْ يُلْقُونَ أَقْلامَهُمْ أَيُّهُمْ يَكْفُلُ مَرْيَمَ وَمَا كُنْتَ لَدَيْهِمْ إِذْ يَخْتَصِمُونَ
(হে নবী) এগুলো গায়েবের সংবাদ, আমি তোমাকে ওহীর মাধ্যমে তা জানাচ্ছি; আর তুমি তাদের নিকট ছিলে না, যখন তারা তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল, তাদের মধ্যে কে মারইয়ামের দায়িত্ব নেবে? আর তুমি তাদের নিকট ছিলে না, যখন তারা বিতর্ক করছিল।