আল-কুরআন ৮:৩ অপব্যাখ্যার রদ
সংযুক্ত ফেইসবুক পোস্টটিতে প্রদত্ত কুরআনের আয়াতের অনুবাদ সঠিক নয়। এতে আউলিয়া-বুযূর্গানে দ্বীনের প্রতি ঢালাওভাবে বিদ্বেষ প্রচার করা হয়েছে। মুফতী আহমদ এয়ার খাঁন (রহ:)-এর প্রণীত ‘তাফসীরে নূরুল এরফান’ গ্রন্থে উক্ত সূরা আ’রাফের ৩য় আয়াতের অনুবাদ এরকম: “হে লোকেরা, সেটার ওপর-ই চলো, যা তোমাদের প্রতি তোমাদের রব্বের কাছ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেটাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য হুকুমদাতার অনুসরণ করো না।” অতঃপর তাফসীরে লেখা হয়েছে, “এ আয়াতের তাফসীর হচ্ছে এ-ই আয়াত – ‘এবং কাফেরদের ওলী-আউলিয়া তথা সাহায্যকারী হচ্ছে শয়তান’ (সূরা-২: আয়াত-২৫৭)। অর্থাৎ, শয়তান হচ্ছে আল্লাহ ব্যতীত অন্য বন্ধু। তাকে বন্ধু বানানো কুফর। পক্ষান্তরে, আল্লাহর ওলী-আউলিয়াকে বন্ধুস্বরূপ গ্রহণ না করা বে-দ্বীনী” [নূরুল এরফান, ১ম খণ্ড, ৩৯২ পৃষ্ঠা]। উপরন্তু, সূরা মা-ইদা’র ৫৫-৫৬ আয়াতে এরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয় তোমাদের ওলী তথা বন্ধু তো আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (দ:) ও (পুণ্যাত্মা বুযূর্গ) ঈমানদারবৃন্দ, যাঁরা নামায কায়েম করেন, যাকাত দেন এবং আল্লাহরই সামনে বিনত হন। এবং যেসব মানুষ আল্লাহ, তাঁর রাসূল (দ:) এবং (ওই পুণ্যাত্মা ঈমানদার) মুসলমানদেরকে স্বীয় ওলী তথা বন্ধুস্বরূপ গ্রহণ করে, তবে নিশ্চয় আল্লাহরই দল বিজয়ী হয়।” এর তাফসীরে লেখা হয়েছে, “এথেকে দুটি মাসআলা বোঝা যায়: ১/ আল্লাহর প্রিয় বান্দাদেরকে বন্ধু ও সাহায্যকারী বানানো মু’মিনদেরই পন্থা। তাঁদেরকে ভালোবাসা আল্লাহকে ভালোবাসারই নামান্তর। পক্ষান্তরে, তাঁদের প্রতি শত্রুতা পোষণ আল্লাহরই প্রতি শত্রুতা পোষণের সামিল। ২/ সর্বদা মুসলমানবৃন্দ নিজেদের জাতির মধ্যে থাকলে সম্মান ও বিজয় লাভ করবেন। নিজ জাতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কাফিরদের সাথে মিলিত হওয়া অবমাননা ও লাঞ্ছনারই কারণ। (বৃক্ষের) ওই শাখাই তাজা থাকে, যা তার শিকড়ের সাথে মিলে থাকে” [তাফসীরে নূরুল এরফান, ১ম খণ্ড, ৩০৬-৭ পৃষ্ঠা]। লক্ষণীয় যে আয়াত দুটিতে আল্লাহতা’লা ওলী তথা সাহায্যকারী হিসেবে তাঁর পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ (দ:) ও নেককার বুযূর্গ ঈমানদারবৃন্দকেও উল্লেখ করেছেন। এই দুটি আয়াতের কী জবাব দেবে বর্তমানকালের এসব স্বনিযুক্ত পণ্ডিত?
– এডমিন