আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া
قَالَ عَلَيْهِ السَّلَامُ: تَخَلَّقُوا بِأَخْلَاقِ اللَّهِ
-“রাসূলে পাক ( ﷺ) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(আল্লামা ইমাম ইসমাঈল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৫ম খন্ড, ৪৪৮ পৃ: ও ৫৪৪ পৃ:; আল্লামা মাহমুদ আলুছী বাগদাদী: তাফছিরে রুহুল মায়ানী, ৩০ তম খন্ড, ৫০২ পৃ:; ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী: তাফছিরে কবির শরিফ, ৭ম খন্ড, ৬৬ পৃ:; ৯ম খন্ড, ৫৫ পৃ:; ২৪ তম খন্ড, ১৭৩ পৃ:; ১১তম খন্ড, ৫১ পৃ:; আল লুভাব ফি উলুমিল কিতাব, ৭ম খন্ড, ৩৯ পৃ:; তাফছিরে নিছাপুরী, ১ম খন্ড, ৪০৪ পৃ:; তাফছিরে মারাগী, ১৮তম খন্ড, ৮৬ পৃ:; গাউছে পাক: ছেররুল আছরার, ১২৩ পৃ:;)
ইহা মূলত কোন সনদ দ্বারা প্রমাণিত নয় বরং পূর্বসূরী আইম্মায়ে কেরাম ইহাকে হাদিসে রাসূল হিসেবে স্ব স্ব কিতাবে উল্লেখ করেছেন। অনেকে ইহার মাআনাকে ছহীহ্ বলেছেন। তবে হাফিজ ইবনু তাইমিয়া ইহার অর্থকে ব্যাখ্যা সাপেক্ষে ছহীহ্ বলেছেন। যেমন লক্ষ্য করুন,
تخلقوا بأخلاق الله وهذا اللفظ لا يعرف عن النبي صلى الله عليه وسلم في شيء من كتب الحديث ولا هو معروف عن أحد من أهل العلم بل هو من باب الموضوعات عندهم وإن كان قد يفسر بمعنى صحيح يوافق الكتاب والسنة
-“তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও’ এই শব্দে আমি ইহাকে রাসূলে পাক ( ﷺ) থেকে হাদিসের গ্রন্থ সমূহে কিছুই জানিনা এবং আহলে ইলিমদের কাছ থেকেও ইহা প্রসিদ্ধ নয়। বরং ইমামদের কাছে ইহা মওজু একটি বিষয়। যদি ইহা ব্যাখ্যা করা হয় তাহলে ইহার অর্থ ছহীহ্ হবে এবং কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ’র অনুগামী হবে।” (ইবনে তাইমিয়া: বয়ানু তালবিছিল জাহমিয়্যা, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৫১৮ পৃ:;)
হাফিজ ইবনে তাইমিয়া তার কিতাবেও বলেছেন,
وقال صلى الله عليه وسلم تخلقوا بأخلاق الله -“রাসূলে পাক ( ﷺ) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(হাফিজ ইবনে তাইমিয়া: বায়ানু তালবিছুল জাহমিয়া, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৩৬৪ পৃ:;) তিনি আরেক জায়গায় বলেন,
وقد استدل أبو حامد بحديث ذكره مرفوعا إلى النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: تخلَّقوا بأخلاق الله
-“আবু হামিদ এই হাদিস দ্বারা দলিল পেশ করেন, তিনি নবী করিম ( ﷺ) এর প্রতি মারফূ রেওয়াতের কথা উল্লেখ করেন যে, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(হাফিজ ইবনে তাইমিয়া: জামেউল মাসাঈল, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১২৪ পৃ:;)
আল্লামা ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন,
قوله عليه الصلاة والسلام تخلقوا بأخلاق الله تعالى -“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) এর বাণী হল, তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: শরহে শিফা, ২য় খন্ড, ৫৩ পৃ:;)
শারিহে বুখারী ইমাম শিহাবুদ্দিন কাস্তালানী ( رَحْمَةُ الله عليه) এভাবে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন, قال عليه السلام: تخلقوا بأخلاق الله -“রাসূল ( ﷺ) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(ইমাম কাস্তালানী: এরশাদুছ ছারী শরহে বুখারী, ৫ম খন্ড, ৩৪১ পৃ:;)
আল্লামা আবু আব্দুল্লাহ বদরুদ্দিন জারকাশী শাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه) ওফাত ৭৯৪ হিজরী উল্লেখ করেন, فقد روي: تخلقوا بأخلاق الله
-“অবশ্যই বর্ণিত আছে যে, তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।” (তাশনিফুল মাসামে’ বি’জামেইল জাওয়ামে, ৪র্থ খন্ড, ৯২৭ পৃ:;)
আল্লামা ইবনুল হাজ্জ মালেকী ( رَحْمَةُ الله عليه) এভাবে উল্লেখ করেন,
قَوْلِهِ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ تَخَلَّقُوا بِأَخْلَاقِ اللَّهِ -“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) এর বাণী হচ্ছে, তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(আল্লামা ইবনুল হাজ্জ: মাদখাল, ১ম খন্ড, ২০০ পৃ:;)
আল্লামা আব্দুর রহমান ইবনে মুহাম্মদ আউদ জাযিরী উল্লেখ করেন,
لأن النبي صلى الله عليه وسلم قال: تخلقوا بأخلاق الله -“কেননা আল্লাহর নবী ( ﷺ) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।” (ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবা, ১ম খন্ড, ১৫৯ পৃ:;) আল্লামা মাহমুদ ইবনে ইসমাঈল খায়রাবাতী (ওফাত ৮৪৩ হি.) বলেন,
كَمَا قَالَ عَلَيْهِ السَّلَام: تخلقوا بأخلاق الله -“যেমনটি আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(র্দুরাতু গারাঈ ফি নাছিহাতি ছালাতিন, ১ম খন্ড, ১৫২ পৃ:;)
হাফিজুল হাদিস ইমাম ইবনে হাজার মক্কী হায়তামী ( رَحْمَةُ الله عليه) এভাবে উল্লেখ করেন,
هَذَا الحَدِيث الصَّحِيح عَن عَائِشَة رَضِي الله تَعَالَى عَنْهَا كَانَ صلى الله عليه وسلم خلقه الْقُرْآن وَحَدِيث تخلقوا بأخلاق الله تَعَالَى
-“এই হাদিস ছহীহ্ যে, হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে আল্লাহর রাসূল ( ﷺ) এর চরিত্র হল কোরআন। আর হাদিস হচ্ছে, তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(হাফিজ ইবনে হাজা হায়তামী: ফাতওয়ায়ে হাদিছিয়া, ১ম খন্ড, ২০৮ পৃ:;)