Revision in “Facebook Class” (কপি ও শেয়ার করুন)
বিষয়: আলী রা. কি মদ্যপান করেছেন?: ইমাম হাকেমের দৃষ্টিভঙ্গি
কৃত: মিসবাহুল ইসলাম আকিব
অনলাইন এক্টিভিস্ট, বাংলাদেশ।
বর্তমানে যে বিষয়টি নিয়ে সুন্নি অঙ্গনে খুব টানাপড়েন অবস্থা দৃশ্যমান, তা আমরা সকলেই জানি। হারাম হবার প্রাক্কালে হযরত আলী (রা.) মদ্যপান করেছেন, এমন সহিহ হাদিসটি গ্রহণযোগ্য, নাকি অগ্রহণযোগ্য, তা জানার আগ্রহ মোটামুটি সবারই আছে। ইতিমধ্যে একপক্ষ জানিয়েছেন, মাওলা আলী (রা.) মদ্যপান করেন নি, অন্যপক্ষ রায় দিয়েছেন, করেছেন। উভয়পক্ষই আমার উস্তাদ এবং উস্তাদ সমতূল্য। তাই কারো প্রতি সমর্থন বা বিরোধিতার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং উলুমুল হাদিসের একজন সত্যান্বেষী শিক্ষার্থী হিসেবে আমার স্টাডির আলোকে পাওয়া সত্যটা আমি তুলে ধরতে চাই। মানা, না মানা আপনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
নিচে দেখবেন, কিছু আরবি ইবারত এবং সরল অনুবাদ। এগুলো সরাসরি ইমাম হাকেম নিশাপুরি (রহ.) সংকলিত ‘মুস্তাদরাকে হাকেম’ নামক প্রসিদ্ধ হাদিসগ্রন্থটি থেকে হুবহু নেয়া। হুবহু চয়ন করলাম, কারণ সত্যটা তিনি অনেক আগেই আমাদের জানিয়ে গেছেন। ধৈর্য ধরে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন, আশাকরি সত্য কোনটি অল্পসময়ের মধ্যেই জেনে যাবেন।
ইমাম হাকিম নিশাপুরি (রহ.)-এর কলম:
* كتاب التفسير
* ﴿ شان نزول اية لا تقربوا الصلاة وانتم سكارى ﴾
۞۞۞۞۞۞۞
* অধ্যায়: তাফসির
* পরিচ্ছেদ: {লা তাকরাবুস সালাতা ওয়া আন্তুম সুকারা- তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না}– এই আয়াতের শানে নুজুল:
3252- أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ دُحَيْمٍ الشَّيْبَانِيُّ، ثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَازِمٍ الْغِفَارِيُّ، ثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، وَقَبِيصَةُ قَالَا: ثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: دَعَانَا رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ قَبْلَ تَحْرِيمِ الْخَمْرِ، فَحَضَرَتْ صَلَاةُ الْمَغْرِبِ، فَتَقَدَّمَ رَجُلٌ فَقَرَأَ: قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ، فَالْتَبَسَ عَلَيْهِ فَنَزَلَتْ: لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى حَتَّى تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ الْآيَةُ.
হাদিস নং: ৩২৫২
আমাদের নিকট মুহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে দুহাইম আশ শাইবানী বর্ণনা করেছেন: আমাদের নিকট আহমদ ইবনে হাজেম আল গিফারী বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট নুয়াইম এবং কাবিসা বর্ণনা করেন: তারা দুজনেই বলেন: আমাদের নিকট সুফিয়ান সাওরি বর্ণনা করেন: আতা ইবনে সায়েব থেকে বর্ণিত: আবু আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত: হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: মদ হারাম হবার প্রাক্কালে এক আনসারী ব্যক্তি আমাদের দাওয়াত করেছিলেন। অতঃপর মাগরিব নামাজের সময় এলে একব্যক্তি (ইমামতির জন্য) সামনে অগ্রসর হলেন। অতঃপর তেলাওয়াত করলেন {কুল ইয়া আইউহাল কাফিরুন}; আর তাতে ভুল করে ফেললেন। অতঃপর নাজিল হলো {লা তাকরাবুস সালাতা ওয়া আন্তুম সুকারা হাত্তা তা’লামু মা তাকুলূন}– এ আয়াতটি।
هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ وَلَمْ يُخْرِجَاهُ، وَفِي هَذَا الْحَدِيثِ فَائِدَةٌ كَثِيرَةٌ وَهِيَ أَنَّ الْخَوَارِجَ تَنْسِبُ هَذَا السُّكْرَ، وَهَذِهِ الْقِرَاءَةَ إِلَى أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ دُونَ غَيْرِهِ وَقَدْ بَرَّأَهُ اللَّهُ مِنْهَا فَإِنَّهُ رَاوِي هَذَا الْحَدِيثِ.
এই হাদিসটির সনদ সহিহ। তবে ইমাম বুখারি ও মুসলিম এটি বর্ণনা করেন নি। আর এতে অনেক ফায়েদা রয়েছে। তা হলো: এই মদ্যপান এবং তেলাওয়াতের বিষয়টি– যা খারেজিরা বিকৃতভাবে কেবল হযরত আলী (রা.)-এর ব্যাপারে সংযুক্ত করে দিয়েছে; অন্যের দিকে নয়। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা তাঁকে এ থেকে মুক্ত রেখেছেন। তিনি এ হাদিসে শুধুমাত্র বর্ণনাকারী হিসেবে রয়েছেন।
বিভিন্ন সহিহ বর্ণনার মধ্যে কোনটি গ্রহণযোগ্য:
* كتاب الأشربة:
* ﴿ ذكر احاديث تحريم الخمر ﴾
۞۞۞۞۞۞۞
* অধ্যায়: পান করা
* পরিচ্ছেদ: মদ নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কিত হাদিসসমূহের বিবরণ:
7302- حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدُ بْنُ يَعْقُوبَ الْحَافِظُ، ثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحَسَنِ، ثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْوَلِيدِ، ثَنَا سُفْيَانُ: وَحَدَّثَنَا أَبُو زَكَرِيَّا يَحْيَى بْنُ مُحَمَّدٍ الْعَنْبَرِيُّ، ثَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْبُوشَنْجِيُّ، ثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، ثَنَا وَكِيعٌ، ثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ عَلِيٍّ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: ” دَعَانَا رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ قَبْلَ أَنْ تُحَرَّمَ الْخَمْرُ فَتَقَدَّمَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ وَصَلَّى بِهِمُ الْمَغْرِبَ فَقَرَأَ: [قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ] فَالْتَبَسَ عَلَيْهِ فِيهَا ” فَنَزَلَتْ: [لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى].
হাদিস নং– ৭৩০২
আমাদের নিকট আবু আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াকুব আল হাফিজ বর্ণনা করেছেন: আমাদের নিকট আলী ইবনে হাসান বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট আব্দুল্লাহ ইবনে ওলীদ বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট সুফিয়ান সাওরী বর্ণনা করেন। এছাড়া (ভিন্ন সনদে) আমাদের নিকট আবু জাকারিয়া ইয়াহিয়া ইবনে মুহাম্মদ আল আম্বরী বর্ণনা করেছেন: আমাদের নিকট আবু আব্দুল্লাহ আল বুশানজী বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট আহমদ ইবনে হাম্বল বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট ওকী বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট সুফিয়ান সাওরি বর্ণনা করেন হযরত আতা ইবনে ছায়েব থেকে। তিনি বর্ণনা করেন আবু আব্দুর রহমান আস সুলামী থেকে। হযরত আলী রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন– মদ নিষিদ্ধ হবার প্রাক্কালে এক আনসার ব্যক্তি আমাদের দাওয়াত করেছিলেন। অতঃপর আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) এগিয়ে এসে মাগরিবের জামাত পড়ালেন। এরপর {কুল ইয়া আইয়ুহাল কাফিরুন} পাঠ করলেন এবং তাতে ভুল করে ফেললেন। তারপর নাজিল হলো {লা তাকরাবুস সালাত ও আন্তুম সুকারা- তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না}– আয়াতটি।
هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ وَلَمْ يُخْرِجَاهُ، وَقَدِ اخْتُلِفَ فِيهِ عَلَى عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ مِنْ ثَلَاثَةِ أَوْجُهٍ هَذَا أَوَّلُهَا وَأَصَحُّهَا.
এ হাদিসটির সনদ সহিহ। আর তা ইমাম বুখারি ও মুসলিম (রা.) বর্ণনা করেন নি। অবশ্যই আতা ইবনে সায়েব (রা.) থেকে তিনপ্রকারের সনদে বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায়। এটি তাঁর প্রথমটি, যা সবচেয়ে বিশুদ্ধ।
7303- وَالْوَجْهُ الثَّانِي حَدَّثَنَاهُ أَبُو زَكَرِيَّا الْعَنْبَرِيُّ، ثَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْبُوشَنْجِيُّ، ثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، ثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنِ ابْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَلِيٍّ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ” أَنَّهُ كَانَ هُوَ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ وَرَجُلٌ آخَرُ يَشْرَبُونَ الْخَمْرَ فَصَلَّى بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فَقَرَأَ: [قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ] فَخَلَطَ فِيهَا فَنَزَلَتْ [لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى].
হাদিস নং: ৭৩০৩
দ্বিতীয় প্রকারের সনদের বর্ণনা:
আমাদের নিকট আবু জাকারিয়া আল আম্বরি হাদিসটি বর্ণনা করেছেন: আমাদের নিকট আবু আব্দুল্লাহ আল বুশানজী বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট আহমদ ইবনে হাম্বল বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট আব্দুর রহমান ইবনে মাহদী বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট সুফিয়ান সাওরি বর্ণনা করেন: আতা ইবনে সায়েব থেকে বর্ণিত: ইবনে আব্দুর রহমান হতে বর্ণিত: হযরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত– তিনি, আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) এবং অপর ব্যক্তি মদ্যপান করছিলেন। তারপর আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) তাদের জামাতের ইমামতি করলেন এবং তেলাওয়াত করলেন {কুল ইয়া আইউহাল কাফিরুন}। আর তাতে ভুল পড়লেন৷ অতঃপর নাজিল হলো {লা তাকরাবুস সালাত ওয়া আন্তুম সুকারা- তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না}– আয়াতটি।
7304- الْوَجْهُ الثَّالِثُ حَدَّثَنَاهُ أَبُو زَكَرِيَّا الْعَنْبَرِيُّ، ثَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْبُوشَنْجِيُّ، ثَنَا مُسَدَّدُ بْنُ مُسَرْهَدٍ، أَنْبَأَ خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ صَنَعَ طَعَامًا قَالَ: ” فَدَعَا نَاسًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ فِيهِمْ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَقَرَأَ [قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ] وَنَحْنُ عَابِدُونَ مَا عَبَدْتُمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ [يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى حَتَّى تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ].
হাদিস নং: ৭৩০৪
তৃতীয় প্রকারের সনদের বর্ণনা:
আমাদের নিকট আবু জাকারিয়া আল আম্বরি বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট আবু আব্দুল্লাহ বুশানজী বর্ণনা করেন: আমাদের নিকট মুসাদ্দাদ ইবনে মুসারহাদ বর্ণনা করেন: খালেদ ইবনে আব্দুল্লাহ বর্ণনা করেন: আতা ইবনে সায়েব থেকে বর্ণিত: হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) হতে বর্ণিত– একদা আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) খাবার তৈরি করলেন। তিনি বলেন: অতঃপর নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কতেক সাহাবীকে দাওয়াত করলেন, যাদের মধ্যে হযরত আলি (রা)-ও ছিলেন। অতঃপর তিনি (নামাজে) {কুল ইয়া আইউহাল কাফিরুন, লা আ’বুদু মা তা’বুদূন} আয়াতটি তেলাওয়াতের সাথেসাথে (অতিরিক্ত) {ওয়া নাহনু আবিদুনা মা তাবদূনা} পাঠ করলেন। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা এ আয়াতটি নাজিল করলেন {ইয়া আইউহাল্লাজিনা আমানূ লা তাকরাবুস সালাতা ওয়া আন্তুম সুকারা হাত্তা তা’লামু মা তাকুলূন}।
هَذِهِ الْأَسَانِيدُ كُلُّهَا صَحِيحَةٌ وَالْحُكْمُ لِحَدِيثِ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ فَإِنَّهُ أَحْفَظُ مِنْ كُلِّ مَنْ رَوَاهُ عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ.
এই সনদসমূহের প্রত্যেকটিই সহিহ। কিন্তু হুকুম চলবে সুফিয়ান সাওরির হাদিসের ভিত্তিতে। কেননা আতা ইবনে সায়েব থেকে যারাই বর্ণনা করেছেন, তাদের সকলের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক স্মরণ-শক্তিসম্পন্ন। (মুস্তাদরাকে হাকেম- ইমাম হাকেম নিশাপুরি রহ.)
প্রিয় পাঠক, আমরা সুফিয়ান সাওরির সেই হাদিসটি প্রথমেই পড়েছি; যেই হাদিসটির ব্যাপারে ইমাম হাকেম (রহ.) সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন– ‘এটিই সবচেয়ে বিশুদ্ধ।’ তাই এর উপরই হুকুম চলবে। অর্থাৎ এর ভিত্তিতেই জানা যাবে, সেদিনকার সেই জামাতের ‘ইমাম’ আসলেই কে ছিলেন– হযরত আলী (রা.), নাকি আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.)। কারণ এটিই গ্রহণযোগ্য বর্ণনা; অন্যগুলো নয়।
চলুন, এবার উপরে গিয়ে তাফসির অধ্যায় থেকে চয়িত প্রথম হাদিসটায় একটু দেখে আসি, হাদিসের শব্দভান্ডারে কীসব অজানা তথ্য আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। দেখতে পাই, হাদিসটি আমাদের উদ্দেশ্যে দৃঢ়কণ্ঠে বলে দিচ্ছে– আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.)-ই ছিলেন সেই নামাজের ‘ইমাম’। আলী (রা.) ছিলেন না; এক জামাতে দু’জন ইমাম থাকবেন, এটাও তো অকল্পনীয় ব্যাপার। তাছাড়া হাদিসটিতে আলী (রা.) মদ্যপান করেছেন কী, করেন নি– তাও উল্লেখ নেই। অতএব মদ্যপানের বিষয়টি সেসময় হারাম ছিল না, এই অজুহাতে চাইলেই বানিয়ে আলী (রা.)-এর প্রতি সম্পৃক্ত করে দেয়া যায় না। কেননা, এই গ্রহণযোগ্য সনদটিতে মদ্যপানের বিষয়টিই আসে নি। যা গ্রহণযোগ্য সনদে প্রমাণিতই হয় নি, তা আলী (রা.)-এর প্রতি সম্পৃক্ত করার প্রশ্নই আসে না; এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক চেতনা। আলী (রা.) মদ্যপান করেছেন, এ এমন এক রচিত কথা, যার পেছনে গ্রহণযোগ্য কোনো দলিল নেই। অতএব তিনি মদ্যপান করেছেন– এ দাবিটা কীভাবে করা সম্ভব?
উল্লেখ্য যে, হযরত আলী (রা.)-এর মদপান করা সংক্রান্ত হাদিসটি অগ্রহণযোগ্য হওয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি নীতিভুক্ত কারণ রয়েছে। সর্বশ্রেণীর বিবেককুঠিরে দুর্বোধ্য হয়ে যাবার আশংকায় এবং লেখা সংক্ষেপিত করতে তাও আর উল্লেখ করা হলো না।