কিতাবঃ মানাকিবে মাওলা আলী (رضي الله عنه)
[হযরত আলী (رضي الله عنه) এর ফজিলত]
সংকলক, অনুবাদকঃ মাসুম বিল্লাহ সানি
আমি যার মাওলা আলি তার মাওলা
❏ ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী স্বীয় তাফসীরে দুররে মনসুর-এ উল্লেখ করেন,
ﻭَﺃﺧﺮﺝ ﺍﺑْﻦ ﺃﺑﻲ ﺣَﺎﺗِﻢ ﻭَﺍﺑْﻦ ﻣﺮْﺩَﻭَﻳْﻪ ﻭَﺍﺑْﻦ ﻋَﺴَﺎﻛِﺮ ﻋَﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺍﻟْﺨُﺪْﺭِﻱّ ﻗَﺎﻝَ : ﻧﺰﻟﺖ ﻫَﺬِﻩ ﺍﻟْﺂﻳَﺔ } ﻳَﺎ ﺃَﻳﻬَﺎ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮﻝ ﺑﻠﻎ ﻣَﺎ ﺃﻧﺰﻝ ﺇِﻟَﻴْﻚ ﻣﻦ ﺭَﺑﻚ { ﻋﻠﻰ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳﻠﻢ ﻳَﻮْﻡ ﻏَﺪِﻳﺮ ﺧﻢ ﻓِﻲ ﻋَﻠﻲّ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻃَﺎﻟﺐ
ﻭَﺃﺧﺮﺝ ﺍﺑْﻦ ﻣﺮْﺩَﻭَﻳْﻪ ﻋَﻦ ﺍﺑْﻦ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩ ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨَّﺎ ﻧَﻘْﺮَﺃ ﻋﻠﻰ ﻋﻬﺪ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳﻠﻢ } ﻳَﺎ ﺃَﻳﻬَﺎ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮﻝ ﺑﻠﻎ ﻣَﺎ ﺃﻧﺰﻝ ﺇِﻟَﻴْﻚ ﻣﻦ ﺭَﺑﻚ { ﺃَﻥ ﻋﻠﻴﺎ ﻣﻮﻟﻰ ﺍﻟْﻤُﺆﻣﻨِﻴﻦَ . ﻭَﺇِﻥ ﻟﻢ ﺗﻔﻌﻞ ﻓَﻤَﺎ ﺑﻠﻐﺖ ﺭﺳَﺎﻟَﺘﻪ ﻭَﺍﻟﻠﻪ ﻳَﻌْﺼِﻤﻚ ﻣﻦ ﺍﻟﻨَّﺎﺱ
অর্থাৎ অর্থাৎ ইবনে আবী হাতেম, ইবনে মারদুবিয়া এবং ইবনে আসাকিরের বর্ণনায় রয়েছে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) বলেছেন, গাদীরে খুমে কুপের নিকট হযরত আলী (رضي الله عنه) এর শানে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। ইবনে মারদুবিয়ার বর্ণনায় রয়েছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) বলেন, আমরা রেসালাতের যুগে এ আয়াতটি পাঠ করতাম “ইয়া আইয়ুহার রাসূল বাল্লিগ মা উনঝিলা ইলাইকা মিররব্বিক। ইন্না আলিয়ান মাওলাল মুমিনিনা ওয়া ইল্লাম তাফয়াল ফামা বাল্লাগতা রিসালাতাহু ওয়াল্লাহু ইয়া’সিমুকা মিনান্নাস” অর্থাৎ হে রাসূল! আপনার রবের নিকট থেকে আপনার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা প্রচার করুন। নিশ্চয়ই আলী (رضي الله عنه) মুমিনদের মাওলা (অভিভাবক)। যদি আপনি এরূপ না করেন তবে তো আপনি তাঁর রেসালাত প্রচার করলেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন।
(সূত্রঃ ইমাম সুয়ুতী: তাফসীরে দুররে মনসুর, ২/২৯৮পৃ)
❏ গাদীরে খুমে নবীজি দীর্ঘক্ষণ ভাষণ প্রদান করলেন। ভাষণের একেবারে শেষ প্রান্তে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরআন ও আহলে বাইতকে শক্ত করে ধারণ করতে বললেন। এরপরই বললেন, ‘হে লোক সকল! আমি কি সকল মু’মিনদের চেয়ে সর্বোত্তম নেতা নই? তখন সকলে সমস্বরে বলে উঠলো, জ্বি ইয়া রাসূলাল্লাহ।’ তিনি আরও বললেন, ﺃَﻟَﺴْﺖُ ﺃَﻭْﻟَﻰ ﺑِﺎﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻣِﻦْ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻬِﻢْ অর্থাৎ আমি কি তোমাদের প্রাণের চাইতে বেশী প্রিয় নই? তখন সকলে সমস্বরে বলে উঠলো, জ্বি ইয়া রাসূলাল্লাহ।’ অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর পার্শ্বে উপবিষ্ট হযরত আলী (رضي الله عنه) এর হাত সকলের সম্মুখে উঁচু করে তুলে ধরলেন এবং ঘোষনা দিলেন,
ﻣَﻦْ ﻛُﻨْﺖُ ﻣَﻮْﻻَﻩُ ﻓَﻌَﻠِﻲٌّ ﻣَﻮْﻻَﻩُ
অর্থাৎ আমি যার মাওলা (অভিভাবক/ বন্ধু), আলী (رضي الله عنه)ও তার মাওলা।
তথ্যসূত্রঃ
(ক) তিরমিজী শরীফ, কিতাবুল মানাকিব, মানাকিবে আলী (رضي الله عنه), হাদিস নং-৩৭১৩
(খ)সাহাবাহ, ২/৫৬৯পৃ, হাদিস-১৫৯
(গ) ইমাম তাবারানী: আল মুজামুল কবীর, ৫/১৯৫পৃ, হাদিস-৫০৭১
(ঘ) ইবনে কাসীর: আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৫/৪৬৩পৃ
(ঙ) ইবনে আসাকির: তারিখে দামেস্ক, ৪৫/১৬৩পৃ
❏ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরও বলেন,
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻭَﺍﻝِ ﻣَﻦْ ﻭَﺍﻟَﺎﻩُ، ﻭَﻋَﺎﺩِ ﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَﺍﻩُ، ﻭَﺃَﺣِﺐَّ ﻣَﻦْ ﺃَﺣَﺒَّﻪُ، ﻭَﺃَﺑْﻐِﺾْ ﻣَﻦْ ﺃَﺑْﻐَﻀَﻪُ، ﻭَﺍﻧْﺼُﺮْ ﻣَﻦْ ﻧَﺼَﺮَﻩُ، ﻭَﺍﺧْﺬُﻝْ ﻣَﻦْ ﺧَﺬَﻟَﻪُ
অর্থাৎ হে আল্লাহ! আপনি তার বন্ধু হোন যে আলী (رضي الله عنه)র বন্ধু হয়, তার শত্রু হোন যে আলী (رضي الله عنه)র শত্রু হয়। তাকে ভালবাসুন যে তাঁকে (আলী (رضي الله عنه)কে) ভালবাসে, তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করুন যে তার (আলী (رضي الله عنه)র) প্রতি বিদ্ধেষ রাখে, তাকে সাহায্য করুন যে তাকে (আলী (رضي الله عنه)কে) সাহায্য করে, তাকে অপদস্থ করুন যে তাকে (আলী (رضي الله عنه)কে) অপদস্থ করতে চেষ্টা করে।
তথ্যসূত্রঃ
(ক) ইমাম বাজ্জার: আল মুসনাদ, হাদিস নং-৭৮৬
(খ) ইমাম হায়ছামী: মাজামউয যাওয়ায়েদ, ৯/১০৪পৃৃ
(গ) মুত্তাকি হিন্দি: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং-৩৬৪৮৭
(ঘ) ইমাম তাহাবী: মাশকালুল আশার, ২/৩০৮পৃ
(ঙ) ইবনে আসাকির: তারিখে দামেস্ক, ৪৫/১৬০পৃ
❏ যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه) কে মাওলা হিসেবে ঘোষণা করলেন তখন সকল সাহাবী হযরত আলী (رضي الله عنه)কে মাওলা হিসেবে মেনে নিলেন এবং মুবারকবাদ জানালেন। তখনই কুরআনের শেষ আয়াত নাযিল হলো।
ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﺃَﻛْﻤَﻠْﺖُ ﻟَﻜُﻢْ ﺩِﻳﻨَﻜُﻢْ ﻭَﺃَﺗْﻤَﻤْﺖُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻧِﻌْﻤَﺘِﻲ ﻭَﺭَﺿِﻴﺖُ ﻟَﻜُﻢُ ﺍﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡَ ﺩِﻳﻨًﺎ
অর্থাৎ আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম। (সূরা মায়েদা-৩)
❏ হযরত আলী (رضي الله عنه) কে মাওলা ঘোষণার পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর মাথায় পাগড়ী পড়িয়ে দেন। যেমন বর্ণিত আছে,
ﻋَﻦْ ﻋَﻠِﻲٍّ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻋَﻤَّﻤَﻨِﻲ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻮْﻡَ ﻏَﺪِﻳﺮِ ﺧُﻢٍّ ﺑِﻌِﻤَﺎﻣَﺔٍ ﺳَﺪَﻟَﻬَﺎ ﺧَﻠْﻔِﻲ
অর্থাৎ হযরত আলী (رضي الله عنه) নিজেই বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, গাদীরে খুমের দিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একটি পাগড়ি আমার মাথায় পরিয়ে দিলেন এবং এর প্রান্তভাগ পিঠের দিকে ঝুলিয়ে দিলেন।
তথ্যসূত্রঃ
(ক) তায়ালিসি: আল মুসনাদ, হাদিস নং-১৪৯
(খ) ইমাম বায়হাকি: সুনানে কুবরা, হাদিস নং-১৯৭৩৬
(গ) মুত্তাকি হিন্দি: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং-৪১১৪১, ৪১৯০৯
(ঘ) ইমাম সুয়ূতী: জামেউল আহাদিস, হাদিস নং- ৩৩৬৭৮ ইমাম হায়ছামী উল্লেখ করেন,
❏ হযরত আলী (رضي الله عنه)কে মাওলা ঘোষনার পর সর্বপ্রথম হযরত আবু বকর ও হযরত উমর (رضي الله عنه) স্বীকৃতি দিলেন। ইমাম হায়ছামী বলেন,
ﻗﺎﻝ ﺃَﺑُﻮ ﺑﻜﺮ ﻭَﻋﻤﺮ ﻟﻌﻠﻰ ﺑﻦ ﺍﺑﻰ ﻃﺎﻟﺐ ﻳﻮﻡ ﻏﺪﻳﺮ ﺧﻢ ﺃﻣﺴﻴﺖ ﻳَﺎ ﺍﺑْﻦ ﺃﺑﻲ ﻃَﺎﻟﺐ ﻣﻮﻟﻰ ﻛﻞ ﻣُﺆﻣﻦ ﻭﻣﺆﻣﻨﺔ — ﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﻟﺪَّﺍﺭَﻗُﻄْﻨِﻲّ
অর্থাৎ হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) ও হযরত উমর (رضي الله عنه) গাদীরে খুমের দিন হযরত আলী (رضي الله عنه) বিন আবি তালিবকে বললেন, হে আবু তালিবের সন্তান! আপনি হলেন প্রতিটি মুমিন পুরুষ ও নারীর মাওলা। এটা দারা কুতনী বর্ণনা করেছেন। (সূত্রঃ ইমাম হায়ছামী: সাওয়ায়েকে মুহরিকা, ৯১পৃ)
❏ হযরত উমর (رضي الله عنه) হযরত আলী (رضي الله عنه) কে উদ্দেশ্য করে বললেন,
ﺑَﺦٍ ﺑَﺦٍ ﻟَﻚَ ﻳَﺎ ﺍﺑْﻦَ ﺃَﺑِﻲ ﻃَﺎﻟِﺐٍ، ﺃَﺻْﺒَﺤْﺖَ ﻣَﻮْﻟَﺎﻩُ ﻭَﻣَﻮْﻟَﻰ ﻛُﻞِّ ﻣُﺆْﻣِﻦٍ،
অর্থাৎ মারহাবা! মারহাবা! হে আবু তালিবের পুত্র। আপনি আমার মাওলা এবং প্রত্যেক মুমিনের মাওলা।
তথ্যসূত্রঃ
(ক) খতীব বাগদাদী: তারিখে বাগদাদ, ৮/২৯০পৃ
(খ) ইমাম তাবারানী: আল মুজামূল আওসাত, ৩/৩২৪পৃ
(গ) ইবনে আসাকির: তারিখে দামেস্ক, ৪৫/১৭৯পৃ
(ঘ) ওয়াহিদী: আসহাব উন নুজুল, ১০৮পৃ
(ঙ) ইমাম রাজী: তাফসীরে কবীর।
❏ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
مَنْ كُنْتُ مَوْلَاهُ فَعَلِيٌّ مَوْلَاهُ، اَللَّهُمَّ وَالِ مَنْ وَالَاهُ وَعَاِد مَنْ عَادَاهُ.
আমি যার মাওলা আলী (رضي الله عنه)ও তার মাওলা। হে আল্লাহ! যে আলী (رضي الله عنه)কে ভালোবাসে তুমি তাকে ভালোবাস আর যে আলী (رضي الله عنه)র সাথে শত্রুতা করে তুমি তার সাথে শত্রুতা করো।
তথ্যসূত্রঃ
১.কানযুল উম্মাল ১১:৬০৯/৩২৯৫০,
২.আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১০৯,
৩.মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০৪,
৪.আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ৪:১৭৩/৪০৫৩,
৫.তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৩,
৬.মুসনাদে আহমাদ ১:৮৪, ৮৮, ১১৯, ১৫২, ৩৩১ ও ৪:২৮১, ৩৬৮, ৩৭০, ৩৭২ ও ৫:৩৪৭, ৩৫৮, ৩৬১, ৩৬৬, ৪১৯।
❏ হজরত আবু বকর ও হজরত ওমর, হজরত আলী (رضي الله عنه) কে এ বলে স্বাগতম জানালেন যে, ইয়া আলী (رضي الله عنه) ইবনে আবু তালিব, আজ থেকে আপনি সকল মোমেন ও মোমেনার মাওলা ( অভিভাবক ) হয়ে গেলেন ।
তথ্যসূত্রঃ
১.মুসনাদে হাম্বাল, খঃ-৪, পৃঃ-২৪;
২.তাফসিরে আল কাবীর, খঃ-১২, পৃঃ-৪৯;
৩.কানজুল উম্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-৩৯৭;
৪.আর রিয়াযুন নাজরা, খঃ-২। পৃঃ-১৬৯;
৫.মুস্তাদারাকে হাকেম, খঃ-৩, পৃঃ-১০৯ ইত্যাদি।
❏ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
“আমি যার মাওলা (সাহায্যকারী) আলীও তার মাওলা (সাহায্যকারী) । হে খোদা যে আলীর সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখে তুমিও তার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখ, যে আলীর সাথে শত্রুতা রাখে তুমিও তার সাথে শত্রুতা রাখ।”
তথ্যসূত্র:
(১) সহিহ তিরমিযী, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ২৯৮, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ৬৩
(২) সুনানে ইবনে মাজাহ, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ১২,৪৩
(৩) ইমাম নাসায়ীঃ খাসাই’স, পৃষ্ঠা ৪,২১
(৪) আল-মুস্তাদরাক, আল-হাকিম, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১২৯, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ১০৯-১১০,১১৬,৩৭১
(৫) মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৮৪,১১৮,১১৯,১৫২,৩৩০, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৮১,৩৬৮,৩৭০, ৩৭২,৩৭৮, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩৫,৩৪৭,৩৫৮,৩৬১,৩৬৬,৪১৯ (বর্ণনাকারীদের ৪০ টি সনদ থেকে)
(৬) ফাদ্বাইলুস-সাহাবা, আহমদ হাম্বল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৬৩,৫৭২
(৭) মাজমা ’আল জাওয়াইদ, আল-হাইসামি, খন্ড ৯, পৃষ্ঠা ১০৩
(৮) তাফসীর আল-কবির, ইমাম ফখরুদ্দীন-রাজি, খন্ড ১২, পৃষ্ঠা ৪৯-৫০
(৯) তাফসীর আল-দুর আল-মনসুর, ইমাম জালালউদ্দিন সুয়ুতি, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ১৯
(১০) তারিক আল-খুলাফা, ইমাম সুয়ুতি, পৃষ্ঠা ১৬৯,১৭৩
(১১) আল-বিদায়াহ ওয়াল-নিহায়াহ, ইমাম ইবনে কাসির, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২১৩, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ২০৮
(১২) উসদুল গাবাহ, ইবনে আসির, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ১১৪
(১৩) মুশকিল আল-আছার, ইমাম আত-তাহাবি, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৩০৭-৩০৮
(১৪) হাবিব আল-সিয়ার, মীর খাঁনদ, খন্ড ১, অংশ ৩, পৃষ্ঠা ১৪৪
(১৫) সাওয়াইখ আল-মুহরিকাহ, ইবনে হাজার আল-হায়সামী, পৃষ্ঠা ২৬
(১৬) আল-ইসাবাহ, ইবনে হাজার আল-আসকালানী, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৫০৯; খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩১৯, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৭, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৯, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৪,১৬,১৪৩
(১৭) তাবারানী, যিনি ইবনে উমর, মালিক ইবনে আল-হাওইরথ +, হাবশী ইবনে জুনাদাহ, জারি, সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস, আনাস ইবনে মালিক, ইবনে আব্বাস, আমারাহ, বুরেদাহ।
(১৮) তারিক, আল-খতিব বাগদাদী, খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ২৯০
(১৯) হিলিয়াতুল আউলিয়া, আল-হাফিজ আবু নুয়াম, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৩, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৬-২৭
(২০) আল-ইসতিয়াব, ইবনে আব্দিল বারের রচিত, “আয়িন” শব্দের অধ্যায় (‘আলী), খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৬২
(২১) কানজুল উম্মাল, আল-মুত্তাকী আল-হিন্দি, খন্ড ৬, পৃষ্ঠা ১৫৪,৩৯৭
(২২) আল-মিরকাত, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ৫৬৮
(২৩) আল-রিয়াদ আল-নাদিরাহ, আল-মুহিব আল-তাবারী, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১৭২
(২৪) দাখাই’রুল-উকবা, আল-মুহিব আল-তাবারি , পৃষ্ঠা ৬৮।
(২৫) ফায়েদ আল কাদির, আল-মানাভী , খন্ড ৬, পৃষ্ঠা ২১৭।
(২৬) ইয়ানাবী ’আল-মাওয়াদদাহ, আল-কুদূজি আল-হানাফী , পৃষ্ঠা ২৯৭ … এবং আরও কয়েক শতাধিক।
আল কুরআনের তফসীরকারক যারা গাদির খুমের বর্ণনা উল্লেখ করেছেন:
১. ইবনে জারির আল-তাবারী (মৃত্যু: ৩১০), “তাফসির আল-বায়ান” -।
২. আল-জাসাসস (মৃত্যু: ৩০০), “আহকাম আল-কোরআন”।
৩. আল-হাফিজ আবু নুয়াম (মৃত্যু: ৪৩০), “আসবাব আল-নুজুল”।
৪. আল-থালাবী (মৃত্যু: ৪২৭ বা ৪৩৭), “তাফসির আল-থা’লাবি”।
৫. আল-ওয়াহিদী (মৃত্যু: ৪৬৮), “আসবাব আল-নুজুল”।
৬. আল-কুরতুবী (মৃত্যু: ৫৬৮), “তাফসীর জামিউল হুকাম আল-কোরআন”।
৭.আল-ফখরুদ্দিন আল-রাজি (মৃত্যু: ৬০৬), “আল-তাফসির আল-কবির”।
৮.আল-খাজিন বাগদাদী (মৃত্যু: ৭৪১), “তাফসির আল-খাজিন”।
৯.আল-নিসাবুরি (অষ্টম শতাব্দী), “তাফসির আল-নিসাবুরি”।
১০. ইবনে কাসীর (মৃত্যু: ৭৪৪) তাঁর “তাফসীর” (সম্পূর্ণ সংস্করণ) আয়াত ৫: ৩ এর অধীনে (এটি মেলানো সংস্করণে বাদ যায়!) ইবনে মারদাওয়াহ থেকে বর্ণিত।
১১. আল-হাফিজ জালালউদ্দীন আল সুয়ুতি (মৃত্যু: ৯১০), তাঁর “তাফসির”।
১২. আল-খতিব আল শারবিনী তাঁর “তাফসির”।
১৩. আবু আল সৌদ আল-হানাফি (মৃত্যু: ৯৭২), তাঁর “তাফসির”।
১৪. আল-আলোসি আল-বাগদাদি (মৃত্যু: ১২৭০), তাঁর “তাফসির”। এবং আরও অনেক তফসীরে।
গাদির খুমের বর্ণনার নিয়েছেন যে সমস্ত ঐতিহাসিকঃ
১. ইবনে কুতায়বাহ (মৃত্যু: ২৬৬) “মা’আরিফ” এবং “ইমামাহ ওয়াল সিয়াসাহ”।
২. আল-বালধুরী (মৃত্যু: ২৭৯), “আনসাব আল আশরাফ”।
৩. ইবনে জাওলাক আল-মিস্রি (মৃত্যু: ২৭৭), তাঁর গ্রন্থে।
৪. ইবনে জারির আল-তাবারী (মৃত্যু: ৩১০), “কিতাবুল উইলিয়াহ”।
৫.আল-খতিব আল-বাগদাদী (মৃত্যু: ৪৬৩), “তারিখ বাগদাদ”।
৬.ইবনে আবদ আল-বার (মৃত্যু: ৪৬৩), “আল- ইসতিয়াব”।
৭. আল-শাহরিস্তিণী (মৃত্যু ৫৪৮), “আল-মিলাল ওয়াল নিহাল”।
৮. ইবনে ‘আসাকির (মৃত্যু: ৫৭১),“ তারিখ ইবনে “আসাকির” এবং “ইয়াকূত আল-হামাভি”।
৯. ইবনে আল আতির (মৃত্যু ৬৩০), “উসদ আল গাবাহ”।
১০. সিব্বত ইবনে আল জাওযী (মৃত্যু ৬৫৪), “তদকিরাত খাওয়াস আল-উম্মাহ”।
১১. ইবনে আবী আল-হাদিদ (মৃত্যু: ৬৫৬), “শারহ নাহজুল বালাগা”।
১২. ইবনে খলকান (মৃত্যু: ৬৮১), “তারিখ ইবনে খলকান”।
১৩. আবুল ফিদা (), তাঁর “তারিখ”।
১৪. আল-ধাবি (মৃত্যু: ৭৪৮), “তদকিরাত আল-হাফধ”
১৫. আল-ইয়াফিআই (মৃত্যু: ৭৬৮), “মীরাত আল-জিনান”
১৬. ইবনে আল শায়খ আল-বালাভি, “আলেফ বা”।
১৭. ইবনে কাসীর (মৃত্যু: ৭৭৪) “আল-বিদায়াহ ওয়াল নিহায়াহ”।
১৮. ইবনে খালদুন (মৃত্যু: ৮০৮), “আল-মুকাদ্দিমাহ”।
১৯. আল-নুওয়াইরি (মৃত্যু: ৩ ৮৩৩), “নিহায়াত আল-ইরাব ফি ফিনুন আল-আদাব”
২০. আল-মাকরিজি (মৃত্যু ৮৪৫), “আল-খিতাত”।
২১. ইবনে হাজার আল-আসকালানী (মৃত্যু ৮৫২), “আল-ইসাবাহ” এবং “তাহহিদ আল-তাহধিব”।
২২. ইবনে আল-সাববাগ আল-মালেকী (মৃত্যু ৮৫৫), “আল-ফুসুল আল-মুহিমাহ”।
২৩. মীর খান্দ (মৃত্যু ৯০৩), “হাবিব আল-সিয়ার”।
২৪. জালালুল উদ্দিন আল সুয়ুতি (মৃত্যু ৯১০), “তারিখ আল খুলাফা”।
২৫. ইবনে হাজার আল-হায়সামী, (ড। ৯৭৪) “আল-সাওয়া’ইক-মুহুরিকাহ”।
২৬. আল-হাফিজ আহমদ ইবনে মুহাম্মদ আল-আসিমি, “জয়ন আল-ফাতা”।
২৭. আল-কিরমানি আল-দামাস্কি (মৃত্যু: ১০১৯), “আখবার আল-দুওয়াল”।
২৮. নূর আল-দীন আল-হালাবী (মৃত্যু: ১০৪৪), “আল-সিরাহ আল-হালাবিয়াহ”। এবং আরও অনেক ইতিহাসবিদ।
গাদির খুমের বর্ণনাটি (মুতাওয়াতির পর্যায়ভুক্ত) যা অস্বীকারকারীর ইমান থাকবে না।
সনদ ট্রান্সমিশনঃ
১. আহমদ ইবনে হাম্বল ৪০ টি সনদে থেকে বর্ণনা করেছেন;
২. ইবনে জারির আল-তাবারী ৭০ টিরও বেশি সনদে;
৩.আবু সাইদ আল-সিজিস্তিনি ১২০ টি সনদে থেকে;
৪. আবু বকির আল-জাবী ১২৫ টি চেইন থেকে;
৫. আল-আমির মুহাম্মদ আল-ইয়ামানী (২য় শতাব্দী) এর ১৫০ টি সনদে ছিল;
৬. আল-ধাবি তার সনদগুলো সহ একটি সম্পূর্ণ বই লিখেছেন এবং রায় দিয়েছেন যে এটি মুতাওয়াতির;
৭. আবুল আব্বাস ইবনে উকদাহ ১৫০ টি সনদের মধ্য দিয়ে বর্ণনা করেছেন।
আলী (رضي الله عنه) সম্পর্কে শতাধিক হাদিস
” আমিরুল মুমিনীন আলী (رضي الله عنه) সম্পর্কে মহানবী (ﷺ)-এর সত্তুরটি হাদীস “
[আহলে সুন্নাতের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য হাদীস গ্রন্থ থেকে সংকলিত]
১. মুমিনদের আমলনামার শিরোনাম
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عُنْوَانُ صَحِيفَةِ الْمُؤمِنِ حُبُّ عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ.
মুমিনের আমলনামার শিরোনাম হলো আলী (رضي الله عنه) এর ভালোবাসা।
(আল মানাকিব – ইবনে মাগাযেলী: ২৪৩/২৯০, কানযুল উম্মাল ১১:৬০১/৩২৯০০, তারীখে বাগদাদ : ৪:৪১০)
২. আরবের সরদার
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَنَا سَيِّدُ وُلْدِ آدَم، وَ عَلِيٌّ سَيِّدُ الْعَرَبِ.
আমি আদম সন্তানদের সরদার আর আলী (رضي الله عنه) আরবদের সরদার।
(আল মু’জামুল আওসাত-তাবারানী ২:২৭৯/১৪৯১, ইমাম আলী (رضي الله عنه) (অনুবাদ)- ইবনে আসাকির ২:২৬২/৭৮৯, কানযুল উম্মাল-১১-১৮/৩৩০০৬)।
৩. হিকমতের দরজা
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَنَا دَارُ الْحِكْمَةِ، وَ عَلِيٌّ بَابُهَا.
আমি হিকমতের গৃহ আর আলী (رضي الله عنه) তার দরজা।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৭/৩৭২৩, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৪, আল জামিউস্ সাগীর ১:৪১৫/২৭০৪)
৪. জ্ঞানের নগরীর দরওয়াযা
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَنَا مَدِينَةُ الْعِلْمِ وَ عَليُّ بَابُهَا، فَمَنْ أَرَادَ الْمَدِينَةَ فَلْيَأتِ البَابَ.
আমি সমস্ত জ্ঞানের নগরী আর আলী (رضي الله عنه) তার দরজা। কাজেই যে এই নগরীতে প্রবেশ করবে তাকে দরজা বা দ্বারের মধ্য দিয়ে আসতে হবে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৬-১২৭, জামেউল উসুল ৯:৪৭৩/৬৪৮৯, উসুদুল গবাহ্ ৪:২২, তারীখে বাগদাদ ১১:৪৯-৫০, আল বেদায়াহ্ ওয়ান নেহায়া ৭:৩৭২, আল জামেউস্ সাগীর ১:৪১৫/২৭০৫, সহি তিরমিজি, ৫ম খণ্ড, পৃ;২০১)
৫. উম্মতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَعْلَمُ اُمَّتِي مِنْ بَعْدِي عَلِیُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আমার পরে আলী (رضي الله عنه) হলো আমার উম্মতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী। (কানযুল উম্মাল ১১:৬১৪/৩২৯৭৭, আল ফেরদৌস ১:৩৭০/১৪৯১)
আমার উম্মতের মধ্যে আমার পর সর্বোচ্চ জ্ঞানী ব্যক্তি হলেন আলী। (মসনদে আহমদ, ৫ম খ-, পৃ. ৩২)
৬. মহানবী (ﷺ)-এর ভাই
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইমাম আলী (رضي الله عنه)কে বলেনঃ
أَنْتَ أَخِي فِي الدُّنْيَا وَ الْاَخِرَة.
তুমি দুনিয়া এবং পরকালে আমার ভাই।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭২০, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২৪)
৭. রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর মনোনীত
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَمَّا أَنْتَ يَا عَلِيّ، أَنْتَ صَفِيِّي وَ أمِينِي.
আর তুমি হে আলী (رضي الله عنه)! তুমি আমার মনোনীত এবং আমার আমানতদার।
(খাসায়েসে নাসায়ী : ১৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৫৬)
৮. মহানবী (ﷺ)-এর স্থলাভিষিক্ত
হুজুর (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه)র প্রতি ইঙ্গিত করে বলেনঃ
إِنَّ هَذَا أَخِي وَ وَصِيِّي وَ خَلِيفَتِي فِيكُمْ، فَاسْمَعُوا لَهُ وَ أَطِيعُوه.
জেনে রেখো যে, সে তোমাদের মাঝে আমার ভাই, উত্তরসূরি এবং স্থলাভিষিক্ত। সুতরাং তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে।
(তারীখে তাবারী ২:২১৭, আল কামিল ফিত্ তারীখ ২:৬৪, মাআলিমুত্ তানযীল ৪:২৭৮)
৯. মুমিনদের অভিভাবক
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
إنَّ عَلِيّاً وَلِيُّكُمْ بَعْدِي.
নিশ্চয় আলী (رضي الله عنه) আমার পরে তোমাদের অভিভাবক।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১২/৩২৯৬৩, আল ফেরদৌস ৫:২৯২/৮৫২৮)
১০. বিচারের সিংহাসনে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَقْضَي اُمَّتِي عَليُّ.
আলী (رضي الله عنه) আমার উম্মতের মাঝে সর্বাপেক্ষা বিচক্ষণ বিচারক।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৬৭, মানাকিবে খারেযমী ৩০, যাখায়িরুল উকবা ৮৩)
১১. উম্মতের জন্য হুজ্জাত বা দলিল
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَنَا وَ عَلِيٌّ حُجَّةٌ عَلَي أُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
কেয়ামতের দিন আমি এবং আলী (رضي الله عنه) আমার অনুসারীদের জন্য হুজ্জাত (দলিল) এবং পথপ্রদর্শনকারী। (তারীখে বাগদাদ ২:৮৮)
১২. মহানবী (ﷺ)-এর একই বংশধারা
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَنَا وَ عَلِيٌّ مِنْ شَجَرَةٍ وَاحِدَةٍ، وَ النَّاسُ مِنْ أشْجَارٍ شَتَّي.
আমি আর আলী (رضي الله عنه) একই বৃক্ষ থেকে, আর অন্যেরা (মানুষ) বিভিন্ন বৃক্ষ থেকে।
(আল মানাকিব – ইবনে মাগাযেলী :৪০০/৫৩, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৮/ ৩২৯৪৩, আল ফেরদৌস ১: ৪৪/১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০০)
১৩. উম্মতের হেদায়াতকারী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أنَا الْمُنْذِرُ وَ عَلِيٌّ الْهَادِي، بِكَ يَا عَلِيُّ يَهْتَدِي الْمُهْتَدُونَ.
আমি হলাম সাবধানকারী। আর হে আলী (رضي الله عنه)! তোমার মাধ্যমে পথ অন্বেষণকারীরা পথ খুঁজে পাবে।
(তাফসীরে তাবারী ১৩:৭২, ইমাম আলী (رضي الله عنه) (অনুবাদ)- ইবনে আসাকির ২:৪১৭/৯২৩)
১৪. জাতির পথ-প্রদর্শক
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইমাম আলী (رضي الله عنه)কে বলেনঃ
أنْتَ تُبَيِّنُ لِأُمَّتِي مَا اخْتَلَفُوا فِيهِ بَعْدِي.
আমার পরে আমার উম্মত যে বিষয়ে মতবিরোধ করবে তুমি তার সমাধান দান করবে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২২, কানযুল উম্মাল ১১:৬১৫/৩২৯৮৩, আল ফেরদৌস ৫:৩৩২/৮৩৪৯, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৪)
১৫. মহানবী (ﷺ)-এর থেকে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أنْتَ مِنِّي وَ أَنَا مِنْكَ.
তুমি আমার থেকে আর আমি তোমার থেকে।
(সহীহ বুখারী ৪:২২, ৫:৮৭, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৫/৩৭১৬, মাসাবিহুস সুন্নাহ ৪:১৭২/৪৭৬৫ ও ১৮৬/১০৪৮, তারীখে বাগদাদ ৪:১৪০)
১৬. মুমিনদের কর্তৃত্বের অধিকারী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইমাম আলী (رضي الله عنه)কে বলেনঃ
أنْتَ وَلِيُّ كُلِّ مُؤمِنٍ وَ مُؤمِنَةٍ بَعْدِي.
আমার পরে তুমি প্রত্যেক মুমিন নর ও নারীর ওপর কর্তৃত্বের অধিকারী।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৪, আল মুজামুল কাবীর-তাবারানী ১২:৭৮/১২৫৯৩)
১৭. আদর্শের পথে শহীদ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইমাম আলী (رضي الله عنه)কে বলেনঃ
أنْتَ تَعِيْشُ عَلَي مِلَّتِي، وَ تُقْتَلُ عَلَي سُنَّتِي.
তুমি আমার পন্থায় জীবন যাপন করবে, আর আমার আদর্শের পথেই শাহাদাত বরণ করবে।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৭/৩২৯৯৭, আল মুস্তাদরাক-হাকেম :৩/১৪২)
১৮. সকল মুমিনের নেতাঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
إِنَّ عَلِيّاً مِنِّي، وَ أََنَا مِنْهُ، وَ هُوَ وَلِيُّ كُلِّ مُؤمِنٍ بَعْدِي.
নিশ্চয় আলী (رضي الله عنه) আমার থেকে আর আমি আলী (رضي الله عنه) থেকে। আর সে আমার পরে সকল মুমিনের নেতা।
(খাসায়েসে নেসায়ী :২৩, মুসনাদে আহমাদ ৪:৪৩৮, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী
১৮: আলী (رضي الله عنه) এর জন্য দোয়াঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
رَحِمَ اللهُ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أَدِرِ الْحَقَّ مَعَهُ حَيْثُ دَارَ.
আল্লাহ আলী (رضي الله عنه)র ওপর রহমত বর্ষণ করুন! হে আল্লাহ! আলী (رضي الله عنه) যেখানেই আছে সত্যকে তার সাথে ঘুরিয়ে দিন।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৪, ইমাম আলী (رضي الله عنه) – ইবনে আসাকির, ৩:১৫১/১১৬৯-১১৭০)
১৯. মহানবী (ﷺ)-এর হারুন
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইমাম আলী (رضي الله عنه) কে বলেনঃ
أنْتَ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ هَارُونَ مِنْ مُوسَي إِلَّا أَنَّهُ لَا نَبِيَّ بَعْدي.
আমার নিকট তুমি মুসার কাছে হারুনের ন্যায়। শুধু আমার পরে কোনো নবী নেই।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৪১/৩৭৩০, মাসাবিহুস্ সুন্নাহ ৪:১৭০/৪৭৬২, সহীহ মুসলিম ৪:৪৪/৩০)
২০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَبْشِرْ يَا عَلِيُّ، حَيَاتُكَ مَعِي وَ مَوتُك مَعِي.
হে আলী (رضي الله عنه)! সুসংবাদ তোমার ওপর। তোমার জীবন আমার সাথে আর তোমার মরণও আমার সাথে।
(ইমাম আলী (رضي الله عنه)-ইবনে আসাকির ২:৪৩৫, ৯৪৭, মাজমাউয যাওয়াযেদ ৯:১১২, কানযুল উম্মাল ১৩: ১৪৪/৩৬৪৫৩)
২১. সর্বপ্রথম নামাযী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أََوَّلُ مَنْ صَلَّي مَعِي عَلِيٌّ.
সর্বপ্রথম আমার সাথে যে নামায পড়েছে সে হলো আলী (رضي الله عنه)।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৬/৩২৯৯২, আল ফেরদৌস ১:২৭/৩৯)
২২. শ্রেষ্ঠতম পুরুষ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
خَيْرُ رِجَالِكُمْ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আলী (رضي الله عنه) তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম পুরুষ।
(তারীখে বাগদাদ ৪:৩৯২, মুন্তাখাবু কানযুল উম্মাল ৫:৯৩)
২৩. উম্মতের পিতার ন্যায়
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
حَقُّ عَلِيٍّ عَلَي الْمُسْلِمِينَ حَقُّ الوَالِدِ عَلَي الْوَلَدِ.
মুসলমানদের ওপর আলী (رضي الله عنه)র অধিকার, সন্তানের ওপর পিতার অধিকারের ন্যায়।
(আর রিয়াদুন্ নাদরাহ ৩:১৩০, ইমাম আলী (رضي الله عنه) – ইবনে আসাকির ২:২৭২/৭৯৮-৭৯৯)
২৪. ইবাদতের সারসত্য
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
ذِكْرُ عَلِيٍّ عِبَادَةٌ.
আলী (رضي الله عنه)কে স্মরণ করা ইবাদততুল্য।
(কানযুল উম্মাল ১১, ৬০১/৩২৮৯৪, আল ফেরদৌস ২:২৪৪/৩১৫১, ওসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ: ৫ আল কাসাম ২:১৬৮)
২৫. মজলিসের সৌন্দর্য
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
زَيِّنُوا مَجَالِسَكُمْ بِذِكْرِ عَلِيٍّ.
তোমাদের মজলিসগুলোকে আলী (رضي الله عنه)র নাম উচ্চারণের মাধ্যমে সৌন্দর্যমন্ডিত করো।
(আল মানাকিব – ইবনুল মাগাযেলী : ২১১/২৫৫)
২৬. সর্বদা সত্যের সাথে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
رَحِمَ اللهُ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أَدِرِ الْحَقَّ مَعَهُ حَيْثُ دَارَ.
আল্লাহ আলী (رضي الله عنه)র ওপর রহমত বর্ষণ করুন! হে আল্লাহ! আলী (رضي الله عنه) যেখানেই আছে সত্যকে তার সাথে ঘোরাও।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৪, ইমাম আলী (رضي الله عنه) – ইবনে আসাকির, ৩:১৫১/১১৬৯-১১৭০)
২৭. রাসূলুললাহ (ﷺ)-এর গোপন রহস্যের আধার
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
صَاحِبُ سِرِّي عَلِيُّ ابْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আলী (رضي الله عنه) আমার গোপন রহস্যকথার একমাত্র আধার।
(আল ফেরদৌস ২:৪০৩/৩৭৯৩, আল ইমাম আলী (رضي الله عنه) – ইবনে আসাকির ২:৩১১/৮২২)
২৮. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জ্ঞানের ভান্ডার
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ خَازِنُ عِلْمِي.
আলী (رضي الله عنه) আমার জ্ঞানের ভান্ডার।
(শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ৯:১৬৫)
২৯. সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ خَيْرُ الْبَرِيَّةِ.
আলী (رضي الله عنه) সৃষ্টিকুলের সেরা।
(আল ইমাম আলী (رضي الله عنه) – ইবনে আসাকির ২:৪৪৩/৯৫৯, মানাকিবে খারেযমী : ৬২)
৩০. মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ خَيْرُ الْبَشَرِ، مَنْ أَبَي فَقَدْ كَفَرَ.
আলী (رضي الله عنه) সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, যে তা মানবে না সে নিঃসন্দেহে কাফের।
(সিয়ারু আ’লামুন নুবালা ৮:২৫০, ইমাম আলী (رضي الله عنه)-ইবনে আসাকির ২:৪৪৪/৯৬২-৯৬৬, তারীখে বাগদাদ ৭:৪২১)
৩১. জ্ঞানের আধার
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ عَيْبَةُ عِلْمِي.
আলী (رضي الله عنه) আমার জ্ঞানের আধার।
(আল জামেউস্ সাগীর ২:১৭৭, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ৯:১৬৫)
৩২. সর্বদা কুরআনের সাথে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مَعَ الْقُرْآنِ وَ الْقُرْآنُ مَعَ عَلِيٍّ.
আলী (رضي الله عنه) কুরআনের সাথে আর কুরআন আলী (رضي الله عنه)র সাথে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৩/৩২৯১২)
৩৩. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকটে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ رَأسِي مِنْ بَدَني.
আমার নিকটে আলী (رضي الله عنه) আমার শরীরে যুক্ত আমার মাথার ন্যায়।
(তারীখে বাগদাদ ৭:১২, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৩/৩২৯১৪)
৩৪. আল্লাহর নিকটে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مِنِّيكَمَنْزِلَتِي مِنْ رَبِّي.
আমার নিকটে আলী (رضي الله عنه)র মর্যাদা হলো যেমন আমার প্রতিপালকের নিকটে আমার মর্যাদা।
(আস সাওয়ায়িকুল মুহরিকা :১৭৭, যাখায়িরুল উক্বা : ৬৪)
৩৫. কেয়ামতের দিন বিজয়ী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ وَ شِيعَتُهُ هُمُ الْفَائِزُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
আলী (رضي الله عنه) এবং তাঁর অনুসারীরা নিঃসন্দেহে কেয়ামতের দিন বিজয়ী।
(আল ফেরদৌস ৩:৬১/৪১৭২, ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ:৫, আল কিস্ম ২:১৭০)
৩৬. বেহেশতের তারকা
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ يَزْهَرُ فِي الْجَنَّةِ كَكَوْكَبِ الصُّبْحِ لِأَهْلِ الدُّنْيَا.
আলী (رضي الله عنه) বেহেশতের মধ্যে দুনিয়াবাসীর জন্য ভোরের তারকার ন্যায় উজ্জ্বল।
(আল ফেরদৌস ৩:৬৩/৪১৭৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৪/৩২৯১৭)
৩৭. তাকে কষ্ট দিও না
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
مَنْ آذَي عَلِيّاً فَقَدْ آذَانِي.
যে ব্যক্তি আলী (رضي الله عنه)কে কষ্ট দেয় সে আমাকে কষ্ট দেয়।
(মুসনাদে আহমাদ ৩:৪৮৩, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২২, দালায়িলুন নব্যুওয়াত ৫:৩৯৫, আল ইহ্সান- ইবনে হাববান ৯:৩৯/৬৮৮৪)
৩৮. আল্লাহর অস্তিত্বে মিশে আছে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
لَاتَسُبُّوا عَلِيّاً، فَإِنَّهُ مَمْسُوسٌ فِي ذَاتِ اللهِ.
তোমরা আলী (رضي الله عنه)কে গালমন্দ করো না। সে আল্লাহর সত্তায় ফানা গেছে্। অর্থাৎ, আল্লাহর ভালবাসায় বিলীন হয়ে গেছে।
(আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ১৯:১৪৮/৩২৪, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬২১/৩৩০১৭)
৩৯. মুনাফিকরা তাঁকে ভালোবাসে না
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
لَا يُحِبُّ عَلِيّاً مُنَافِقٌ، وَ لاَ يُبْغِضُهُ مُؤمِنٌ.
মুনাফিকরা আলী (رضي الله عنه)কে ভালোবাসে না, আর মুমিন তাঁকে ঘৃণা করে না।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৫/৩৭১৭, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৮৯)
৪০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর হক (অধিকার) পূরণকারী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مِنِّي وَ أَنَامِنْ عَلِيٍّ، وَلَا يُؤَدِّي عَنِّي إِلَّا أَنَا أَوْ عَلِيٌّ.
আলী (رضي الله عنه) আমা থেকে আর আমি আলী (رضي الله عنه) থেকে, আমি আর আলী (رضي الله عنه) ব্যতীত কেউই আমার (রেসালাতের) অধিকার পূরণ করেনি।
(মাসাবিহুস সুন্নাহ ৪:১৭২/৪৭৬৮, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭১৯, মুসনাদে আহমাদ ৪:১৬৪)
৪১. মুসলমানদের সরদার
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ سَيِّدُ الْمُسْلِمِينَ، وَ إِمَامُ الْمُتَّقِينَ، وَ قَائِدُ الْغُرِّ الْمُحَجَّلِينَ.
আলী (رضي الله عنه) মুসলমানদের সরদার, পরহেযগারদের নেতা এবং সফলকামদের পথ প্রদর্শক।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৮, আল মানাকিব-ইবনুল মাগাযেলী ১০৪/১৪৬)
৪২. নাজাত দানকারী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
حُبُّ عَلِيٍّ بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ.
আলী (رضي الله عنه)র প্রতি ভালোবাসা আগুন থেকে মুক্তির কারণ।
(আল ফেরদৌস ২:১৪২/২৭২৩)
৪৩. ঈমানে সর্বাপেক্ষা অবিচল
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ الصِّدِّيقُ الْاَكْبَرُ، وَ فَارُوقُ هَذِهِ الْاُمَّةِ، وَ يَعْسُوبُ الْمُؤْمِنِينَ.
আলী (رضي الله عنه) ঈমানে সর্বাপেক্ষা দৃঢ়পদ, উম্মতের মধ্যে হক ও বাতিলে পার্থক্যকারী আর মুমিনদের কর্তা।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৬/৩২৯৯০, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ৬:২৬৯/৬১৮৪)
৪৪. তাঁকে অভিসম্পাত করো না
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
مَنْ سَبَّ عَلِيّاً فَقَدْ سَبَّنِي.
যে ব্যক্তি আলী (رضي الله عنه)কে গালমন্দ করে সে যেন আমাকেই গালি দিল।
(মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক – ইবনে মাঞ্জুর ১৭:৩৬৬, ফাযায়েলুস সাহাবা ২:৫৯৪/১০১১, খাসায়েসে নাসায়ী :২৪, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২১, মানাকিবে খারেযমী : ৮২)
৪৫. আল্লাহর রাস্তায় কঠোরতা
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أَيُّهَا النَّاسُ، لَا تَشْكُوا عَلِيّاً، فَو اللهِ إِنَّهُ لَأَخْشَنُ فِيذَاتِاللهِ، أَوْ فِي سَبِيلِ اللهِ.
হে লোকসকল! আলী (رضي الله عنه)র বিরুদ্ধে নালিশ করতে যেও না। সে আল্লাহর কারণে অথবা তাঁর সন্তুষ্টির জন্যেই কঠোর হয়।
(মুসনাদে আহমাদ ৩:৮৬, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৪)
৪৬. সত্যিকারের সৌভাগ্য
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
إنَّ السَّعِيدَ كُلَّ السَّعِيدِ، حَقَّ السَّعِيدِ، مَنْ أحَبَّ عَلِيّاً فِي حَيَاتِهِ وَ بَعْدَ مَوتِهِ.
নিশ্চয় সবচেয়ে সৌভাগ্যবান এবং সত্যিকারের সৌভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যে আলী (رضي الله عنه)কে তার জীবদ্দশায় এবং তার মৃত্যুর পরে ভালোবাসে।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৯১, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৬৫৮/১১২১, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ২২: ৪১৫/১০২৬, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৩২)
৪৭. পাপ ধ্বংসকারী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
حُبُّ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ يَأْكُلُ الذُّنُوبَ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ.
আলী (رضي الله عنه) এর ভালোবাসা পাপসমূহকে খেয়ে ফেলে যেভাবে আগুন কাঠকে খেয়ে ফেলে।
(আর রিয়াদুন্ নাদরাহ ৩: ১৯০, কানযুল উম্মাল ১১:৬২১/৩৩০২১, আল ফেরদৌস ২:১৪২/২৭২৩)
৪৮. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর উত্তরসূরি
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
لِكُلِّ نَبِيٍّ وَصِيٌّ وَ وَارِثٌ، وَ إَِنَّ عَلِيّاً وَصِيِّي وَ وَارِثِي.
প্রত্যেক নবীর ওয়াসী এবং উত্তরসূরি থাকে। আর আমার ওয়াসী এবং উত্তরসূরি হলো আলী (رضي الله عنه)।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৩৮, আল ফেরদৌস ৩:৩৩৬/৫০০৯, ইমাম আলী (رضي الله عنه) – ইবনে আসাকির ৩: ৫/১০৩০-১০৩১)
৪৯. তার দিকে তাকানো ইবাদত
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
َالنَّظَرُ إِلَي وَجْهِ عَلِيٍّ عِبَادَةٌ.
আলী (رضي الله عنه)র মুখের দিকে তাকানো ইবাদত।
(আল মানাকিব- ইবনে মাগাযেলী ২০৬/২৪৪-২৪৬ ও ২০৯/২৪৮-২৪৯ ও ২১০/২৫২-২৫৩, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৪২, আর রিয়াদুন্ নাদ্রাহ ৩:১৯৭)
৫০. রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর ওয়াসী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه)র প্রতি ইঙ্গিত করে বলেনঃ
هَذَا أَخِي وَ وَصِيِّي وَ خَلِيفَتِي مِنْ بَعْدِي، فَاسْمَعُوا لَهُ وَ أَطِيعُوه.
এ হলো আমার ভাই, আর আমার পরে আমার ওয়াসী এবং খলীফা। তার নির্দেশের প্রতি কর্ণপাত করো এবং তার আনুগত্য করো।
(তারীখে তাবারী ২:৩৩১, মাআলিমুত তানযীল ৪:২৭৯, আল কামিল ফিত তারীখ ২:৬৩, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ১৩:২১১, কানযুল উম্মাল ১৩:১৩১)
৫১. ফেরেশতাকুলের দরূদ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
إنَّ الْمَلَائِِكَةَ صَلَّتْ عَلَيَّ و عَلَي عَلِيٍّ سَبعَ سِنِيْنَ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ بَشَرٌ.
কোনো মানুষ মুসলমান হওয়ার সাত বছর পূর্ব থেকেই ফেরেশতারা আমার এবং আলী (رضي الله عنه)র ওপর দরূদ পাঠাতো।
(কানযুল উম্মাল ১১: ৬১৬/৩২৯৮৯, মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক -ইবনে মাঞ্জুর ১৭:৩০৫)
৫২. ঈমানের মানদন্ড
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আলী (رضي الله عنه) কে বলেনঃ
لَوْلَاكَ مَا عُرِفَ الْمُؤمِنُونَ مِنْ بَعْدِي.
যদি তুমি না থাকতে তাহলে আমার পরে মুমিনদের শনাক্ত করা যেত না।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৭৩, আল মানাকিব- ইবনুল মাগাযেলী :৭০/১০১, কানযুল উম্মাল ১৩ :১৫২/৩৬৪৭৭)
৫৩. সর্বদা সত্যের সাথে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مَعَ الْحَقِّ وَ الْحَقُّ مَعَ عَلِيٍّ، لَنْ يَفْتَرِقَا حَتَّي يَرِدَا عَلَيَّ الْحَوضِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
আলী (رضي الله عنه) সত্যের সাথে আর সত্য আলী (رضي الله عنه)র সাথে, এই দুটো কখনো একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না যতক্ষণ না কেয়ামতের দিন হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত হবে।
(তারীখে বাগদাদ ১৪:৩২১, ইমাম আলী (رضي الله عنه) – ইবনে আসাকির ৩:১৫৩/১১৭২)
৫৪. তাঁর থেকে পৃথক হয়ো না!
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
مَنْ فَارَقَ عَلِيّاً فَقَدْ فَارَقَنِي وَ مَنْ فَارَقَنِي فَقَدْ فَارَقَ اللهَ عَزَّوَجَلَّ.
যে ব্যক্তি আলী (رضي الله عنه) থেকে পৃথক হয় সে আমা থেকে পৃথক হলো আর যে আমা থেকে পৃথক হলো সে মহান আল্লাহ থেকে পৃথক হয়ে গেল।
(আল মানাকিব- ইবনে মাগাযেলী ২৪০/২৮৭, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, আল মু’জামুল কাবীর- তাবারানী ১২:৩২৩/১৩৫৫৯)
৫৫. মহানবী (ﷺ)-এর জ্ঞানের দরজা
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ بَابُ عِلْمِي، وَ مُبَيِّنُ لِاُمَّتِي مَا اُرْسِلْتُ بِهِ مِنْ بَعْديِ، حُبُّهُ اِيمَانٌ، و بُغْضُُهُ نِفَاقٌ وَ النَّظَرُ اِلَيْهِ رَأْفَةٌ.
আলী (رضي الله عنه) আমার জ্ঞানের দরজা। সে আমার পরে আমার রেসালাতকে আমার উম্মতের জন্যে ব্যাখ্যা করবে। তাকে ভালোবাসা ঈমানের পরিচায়ক, তাকে ঘৃণা করা মুনাফিকের পরিচায়ক এবং তার দিকে তাকানো প্রশান্তির কারণ।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৪/৩২৯৮১, আল ফেরদৌস ৩:৬৫/৪১৮১)
৫৬. আল্লাহর গোপন রহস্য ব্যক্তকারী
জাবের বলেনঃ তায়েফের দিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه)কে কাছে ডাকলেন। তাঁকে একপাশে নিয়ে কানে কানে যুক্তি করলেন। লোকজন বললো, ‘‘তাঁর চাচাতো ভাইয়ের সাথে যুক্তি করা কতো দীর্ঘায়িত হলো!’’ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন :
مَا اَنْتَجَيْتُهُ ، وَلَكِنْ اللهَ انْتَجَاهُ.
আমি তাঁর সাথে যুক্তি করিনি, বরং আল্লাহ তাঁর সাথে যুক্তি করেছেন।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৭০, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৯/৩৭২৬, খাসায়েসে নাসায়ী :৫, ফাযায়েলূস সাহাবা ২:৫৬০/৯৪৫, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩০-১৩২)
৫৭. মুমিনদের মাওলা
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
مَنْ كُنْتُ مَوْلَاهُ فَعَلِيٌّ مَوْلَاهُ، اَللَّهُمَّ وَالِ مَنْ وَالَاهُ وَعَاِد مَنْ عَادَاهُ.
আমি যার মাওলা আলী (رضي الله عنه)ও তার মাওলা। হে আল্লাহ! যে আলী (رضي الله عنه)কে ভালোবাসে তুমি তাকে ভালোবাস আর যে আলী (رضي الله عنه)র সাথে শত্রুতা করে তুমি তার সাথে শত্রুতা করো।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬০৯/৩২৯৫০, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০৪, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ৪:১৭৩/৪০৫৩, তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৩, মুসনাদে আহমাদ ১:৮৪, ৮৮, ১১৯, ১৫২, ৩৩১ ও ৪:২৮১, ৩৬৮, ৩৭০, ৩৭২ ও ৫:৩৪৭, ৩৫৮, ৩৬১, ৩৬৬, ৪১৯)
৫৮. তোমার জন্য সেটাই চাই!
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ! إِنِّي اُحِبُّ لَكَ مَا اُحِبُّ لِنَفْسِي، وَ أَكْرَهُ لَكَ مَا أَكْرَهُ لِنَفْسِي.
হে আলী (رضي الله عنه)! আমি নিজের জন্যে যা পছন্দ করি তোমার জন্য সেটাই পছন্দ করি। আর আমার চোখে যা অপছন্দনীয় তোমার জন্যও সেটা অপছন্দ করি।
(মুসনাদে আহমাদ ১:১৪৬, সুনানে তিরমিযী ২:৭২/২৮২, আল মুনাতাখাবু মিন মুসনাদে আব্দু ইবনে হামীদ :৫২/৬৭)
৫৯. বেহেশত-দোযখের বণ্টনকারী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، إِنَّكَ قَسِيمُ الْجَنَّةِ وَ النَّارِ وَ إِنَّكَ تَقْرَعُ بَابَ الْجَنَّةِ، فَتَدْخُلَهَا بِلَا حِسَابٍ.
হে আলী (رضي الله عنه)! তুমি (মানুষকে) বেহেশত ও দোযখের (মধ্যে) বণ্টনকারী। অতঃপর তুমি নিজে বেহেশতের দরওয়াযায় টোকা দিবে এবং হিসাব ছাড়াই প্রবেশ করবে।
(আল মানাকিব- ইবনুল মাগাযেলী ৬৭/৯৭, আল মানাকিব-খারেযমী : ২০৯, ফারায়িদুস সামতাঈন ১:৩২৫/২৫৩)
৬০. তোমাকে যারা ভালোবাসে তাদের প্রতি সুসংবাদ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
يا عَلِيّ، طُوبَي لِمَنْ أَحَبَّكَ وَ صَدَّقَ فِيكَ وَ وَيْلٌ لِمَنْ أَبْغَضَكَ وَ كَذَّبَ فِيكَ.
হে আলী (رضي الله عنه)! সুসংবাদ তার প্রতি যে তোমাকে ভালোবাসে এবং তোমাকে সত্য বলে জানে। আর দুর্ভাগ্য তাদের প্রতি যারা তোমার সাথে শত্রুতা করে এবং তোমার ব্যাপারে মিথ্যা আরোপ করে।
(তারীখে বাগদাদ ৯:৭২, ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ:৫, আল কিস্ম ২:১৬১, উসুদুল গবাহ ৪:২৩)
৬১. ওয়াসিগণের মধ্যে সর্বোত্তম
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হযরত ফাতিমাকে বলেনঃ
وَصِيِّي خَيْرُ الْأَوْصِيَاءِ، وَ أَحَبُّهُمْ إِلَي اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَ هُوَ بَعْلُكَ.
ওয়াসিগণের মধ্যে আমার ওয়াসীই সর্বোত্তম এবং আল্লাহর নিকটে তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয়তম। আর সে হলো তোমার স্বামী।
(মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৬৫, যাখায়িরুল উকবা :১৩৬)
৬২. মহানবী (ﷺ)-এর ভাই ও সহযোগী
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
اَللَّهُمَّ إنِّيأَقُولُكَمَاقَالَأَخِيمُوسَي: اَللَّهُمَّ اجْعَلْ لِيوَزِيراً مِنْ أَهْلِيأَخِيعَلِيّاً اُشْدُدْ بِهِ أزْرِي وَ أَشْرِكْهُ فِيأَمْرِي كَيْ نُسَبِّحَكَ كَثِيراً وَ نَذْكُرَكَ كَثيراً، إِنَّكَ كُنْتَ بِنَا بَصِيراً.
হে আল্লাহ! আমিও আমার ভাই মুসার মতো বলছি, ‘‘হে খোদা! আমার জন্য আমার পরিবারের মধ্যে থেকে কাউকে সাহায্যকারী হিসেবে নিয়োগ করো। আমার ভাই আলী (رضي الله عنه)কে যার দ্বারা আমার শক্তি মজবুত হয় এবং আমাকে সাহায্য করে। যাতে তোমার মহিমা বর্ণনা করতে সক্ষম হই এবং তোমার অধিক ইবাদতে নিমগ্ন হতে পারি। অবশ্য তুমি আমাদের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধকারী।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১১৮, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৬৭৮/১১৫)
৬৩. নিরাপত্তা এবং ঈমান
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه) কে বলেনঃ
مَنْ أَحَبَّكَ حُفَّ بِالاَمْنِ وَ الْإِيمَانِ، وَ مَنْ أَبْغَضَكَ أَمَاتَهُ اللهُ مِيْتَةَ الْجَاهِلِيَّةِ.
যে ব্যক্তি তোমাকে ভালোবাসবে, নিরাপত্তা ও ঈমান তাকে আবিষ্ট করবে। আর যে তোমার প্রতি শত্রুতা করবে আল্লাহ তাকে জাহেলিয়াতের মৃত্যু দান করবেন।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬০৭/৩২৯৩৫, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ১১:৬৩/১১০৯২)
৬৪. সীরাতুল মুস্তাকীম পার হওয়ার অনুমতি
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ وَ نُصِبَ الصِّرَاطُ عَلَي شَفِيرِ جَهَنَّم لَمْ يَجُزْ إلاَّ مَنْ مَعَهُ كِتَابُ عَلِيّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ.
যখন কেয়ামত উপস্থিত হবে এবং জাহান্নামের অগ্নিপার্শ্বে পুলসিরাত টাঙ্গানো হবে তখন শুধু কেবল যার সঙ্গে আলী (رضي الله عنه)-এর পত্র থাকবে সে ছাড়া কারো তা পার হবার অনুমতি থাকবে না।
(আল মানাকিব-ইবনুল মাগাযেলী ২৪২, ২৮৯, ফারায়িদুস সামতাইন ১:২২৮, ২৮৯)
৬৫. আলী (رضي الله عنه)-এর সহচরদের জন্য দোয়া
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
اَللّهُمَّ انْصُرْ مَنْ نَصَرَ عَلِيّاً، اَللَّهُمَّ أَكْرِمْ مَنْ أَكْرَمَ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أخْذُلْ مَنْ خَذَلَ عَلِيّاً.
হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আলী (رضي الله عنه)কে সাহায্য করে তুমি তাকে সাহায্য করো, যে ব্যক্তি তাকে সম্মান করে তুমি তাকে সম্মান করো আর যে তাকে লাঞ্ছিত করে তুমি তাকে লাঞ্ছিত করো।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬২৩/৩৩০৩৩, আল মু’জামুল কাবীর – তাবারানী ১৭:৩৯,৮২)
৬৬. আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা
আনাস ইবনে মালেক বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্য মুরগীর গোশত দ্বারা খাবার প্রস্ত্তত করা হয়েছিল। হুজুর (ﷺ) বললেনঃ
اَللَّهُمَّ ائْتِنِي بِاَحَبِّ خَلْقِكَ إِلَيْكَ يَأْكُلُ مَعِي هَذَا الطَّيْرَ، فَجَاءَ عَلِيٌّ فَأَكَلَ مَعَهُ.
হে আল্লাহ! তোমার সবচেয়ে প্রিয় বান্দাকে পৌঁছে দাও যে আমার সাথে এই মুরগীর গোশত ভক্ষণে অংশ নেবে। এমন সময় আলী (رضي الله عنه) এসে পৌঁছলেন এবং হুজুরের দস্তরখানায় বসে পড়লেন।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭২১, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৫৬০/৯৪৫, খাসায়েসে নাসায়ী : ৫, আল মুস্তাদরাক – হাকেম ৩:১৩০-১৩২)
৬৭. হেদায়াতের পতাকা
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
إِنَّ رَبَّ الْعَالَمِيْنَ عَهِدَ إِلَيَّ عَهْداً فِي عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ ، فَقَالَ: إنَّهُ رَايَةُ الْهُدَي، وَ مَنارُ الْاِيْمَانِ، وَ اِمَامُ أَوْلِيَائِي، وَ نُورُ جَمِيعِ مَنْ أَطَاعَنِي.
বিশ্ব প্রতিপালক আলী (رضي الله عنه)র ব্যাপারে আমার সাথে কঠিনভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছেন। অতঃপর আমাকে বলেছেন: নিশ্চয় আলী (رضي الله عنه) হলো হেদায়েতের পতাকা, ঈমানের শীর্ষচূড়া, আমার বন্ধুগণের নেতা আর আমার আনুগত্যকারী সকলের জ্যোতিস্বরূপ।
(হিলিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৬, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবীল হাদীদ ৯:১৬৮)
এ সম্পর্কে অন্যান্য হাদিসঃ মাওলা আলী (رضي الله عنه) এর শানঃ
৬৮.দুই হাজার বছর আগে থেকে আলী (رضي الله عنه) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ভাই
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
مَكْتُوبٌ عَلَي بَابِ الْجَنَّةِ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللهِ، عَلِيٌّ أَخُو النَّبِي، قَبْلَ أَنْ يُخْلَقَ الْخَلْقُ بِأَلْفَيْ سَنَة.
বেহেশতের দরওয়াযার ওপরে লেখা রয়েছে: আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল আর মানুষ সৃষ্টি হওয়ার দুই হাজার বছর আগে থেকে আলী (رضي الله عنه) নবীর ভাই। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১১১, মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক – ইবনে মাঞ্জুর ১৭:৩১৫, ফাযায়েলুস সাহাবা ২: ৬৬৮/১১৪০)
৬৯.আলী (رضي الله عنه) এর বেলায়েত বেহেশতের লাল শাখাঃ
مَنْ أَحَبَّ أََنْ يَسْتَمْسِكَ بِالْقَضِيبِ الاَحْمَرِ الَّذِي غَرَسَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي جَنَّةِ عَدْنٍ بِيَمِينِهِ، فَلْيَتَمَسَّكْ بِحُبِّ عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ.
আল্লাহ রাববুল আলামীন চিরন্তন বেহেশতে যে লাল শাখাটি রোপণ করেছেন যে ব্যক্তি সেটি ধরতে পছন্দ করে সে যেন আলী (رضي الله عنه) এর বেলায়েতকে গ্রহণ করে। (আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৯০, ফাযায়েলুস সাহাবা ২:৬৬৪/১১৩২, নাহজুল বালাগা -ইবনে আবিল হাদীদ ৯০/১৬৮)
৭০.আলী (رضي الله عنه) এর গুণঃ
مَنْ أَرَادَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَي آدَمَ فِي عِلْمِهِ، وَ إِلَي نُوحٍ فِي فَهْمِهِ وَ إِلَي إِبْرَاهِيمَ فِي حِلْمِهِ وَ إِلَي يَحْيَي بْنِ زَكَرِيَّا فِي زُهْدِهِ وَ إِلَي مُوسَي بْنِ عِمْرَانَ فِي بَطْشِهِ فَلْيَنْظُرْ إِلَي عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ.
যে ব্যক্তি আদমকে তাঁর জ্ঞানে, নুহকে তাঁর ধীশক্তিতে, ইবরাহীমকে তাঁর দূরদর্শিতায়, ইয়াহিয়াকে তাঁর সংযমশীলতায় আর মূসা ইবনে ইমরানকে তাঁর সাহসিকতায় দেখতে চায় সে যেন আলী (رضي الله عنه) এর প্রতি লক্ষ্য করে। (ইমাম আলী (رضي الله عنه)-ইবনে আসাকির ২:২৮০/৮১১, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৭:৩৬৯)
৭১. ইলমের গোপন ভান্ডারঃ
يَا عَلِيُّ، إِنَّ اللهَ أَمَرَنِي أَنْ اُدْنِيكَ وَ أُعَلِّمُكَ ِلتَعِيَ، وَ أََنْزَلَتْ هَذِهِ الْآيَهُ: «وَ تَعِيَهَا اُذُنٌ وَاِعيَةٌ» فَأََنْتَ اُذُنٌ وَاعِيَةٌ لِعِلْمِي.
হে আলী (رضي الله عنه)! আল্লাহ আমাকে বলেছেন, তোমাকে আমার কাছে এনে আমার ইলমকে তোমাকে শিক্ষা দিতে যাতে তুমি সেগুলো পুরোপুরি শিখে নাও। এ মর্মে এই আয়াত নাযিল হয়েছে ‘‘এবং সত্যগ্রাহী কান এটাকে ধারণ করে’’* কাজেই তুমি আমার জ্ঞানের সত্যগ্রাহী কান! * সূরা আল হাক্কাহ্ : ১২ (হিলিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৭, আদ দুররুল মানসূর ৮:২৬৭)
৭২.দুনিয়া ও আখেরাতের সরদারঃ
يَا عَلِيُّ، أَنْتَ سَيِّدٌ فِي الدُُّنْيَا وَ سَيِّدٌ فِي الْآخِرَةِ، حَبِيبُكَ حَبِيبِي وَ حَبِيبِي حَبِيبُ اللهِ، وَ عَدُوُّكَ عَدُوِّي وَ عَدُوِّي عَدُوُّ اللهِ وَ الْوَيْلُ لِمَنْ أَبْغَضَكَ بَعْدِي.
হে আলী (رضي الله عنه)! তুমি দুনিয়া ও আখেরাতের সরদার। তোমার বন্ধু আমারও বন্ধু, আর আমার বন্ধু আল্লাহরও বন্ধু। তোমার শত্রু আমারও শত্রু, আর আমার শত্রু আল্লাহরও শত্রু। অভিসম্পাত তার ওপর যে আমার পরে তোমার সাথে শত্রুতা করবে। (আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৮, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২৪, আল ফেরদৌস ৫:৩২৪/৮৩২৫)
৭৩.আলী (رضي الله عنه) এর পথই সত্যের পথঃ
يَا عَمَّارُ، إِنْ رَأَيْتَ عَلِيّاً قَدْ سَلَكَ وَادِياً وَ سَلَكَ النَّاسُ وَادِياً غَيْرَهُ، فَاسْلُكْ مَعَ عَلِيٍّ و دَعِ النَّاسَ، إِنَّهُ لَنْ يَدُلَّكَ عَلَي رَدَيً، وَ لَنْ يُخْرِجَكَ مِنَ الْهُدَي.
হে আম্মার! যদি দেখতে পাও যে আলী (رضي الله عنه) একপথে চলেছে আর লোকেরা অন্যপথে, তাহলে তুমি আলী (رضي الله عنه)র সাথে চলবে এবং লোকদেরকে ত্যাগ করবে। কারণ, আলী (رضي الله عنه) কখনো তোমাকে বক্রপথে পরিচালিত করবে না এবং তোমাকে হেদায়েতের পথ থেকে বাইরে নিয়ে যাবে না। (কানযুল উম্মাল ১১:৬১৩/৩২৯৭২, তারীখে বাগদাদ ১৩:১৮৭)
৭৪.আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ﷺ) আলী (رضي الله عنه) কে ভালোবাসেনঃ
لَأَعْطِيَنَّ الرَّايَةُ غَداً رَجُلاً يُحِبُّ اللهَ وَ رَسُولَهُ، وَ يُحِبُّهُ اللهُ وَ رَسُولُهُ، كَرَّارٌ غَيْرُ فَرَّارٍ، فَلَمَّا أَصْبَحَ النَّاسُ، قَالَ : أَيْنَ عَلِيٌّ؟ فَدَفَعَ الرَّايَةَ إِِلَيْهِ، فَفَتَحَ اللهُ عَلَيهِ.
আগামীকাল পতাকাকে এমন কারো হাতে তুলে দেব যাকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ভালোবাসেন, আর সেও আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে। সে অবিচল দৃঢ়পদ, কখনো পলায়ন করে না। যখন সকাল হলো, বললেন, ‘‘আলী (رضي الله عنه) কোথায়?’’ অতঃপর পতাকাকে তাঁর হাতে অর্পণ করলেন এবং আল্লাহ তাঁকে বিজয় দান করলেন।
(খাসায়েসে নাসায়ী: ৬, সহীহ বুখারী ৫:৮৭/১৯৭-২৭৯/২৩১, সহীহ মুসলিম ৪:১৮৭১/৩২-৩৪, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৮/৩৭২৪, মুসনাদে আহমাদ ১:১৮৫ ও ৫: ৩৮৫)
৭৫.আলী (رضي الله عنه) উম্মতের অভিভাবকঃ
أُوصِي مَنْ آمَنَ بِي وَ صَدَّقَنِي بِوِلَايَةِ عَلِيِّ بْنِ أبِي طَالِبٍ ، فَمَنْ تَوَلَّاهُ فَقَدْ تَوَلَّانِي، وَ مَنْ تَوَلَّانِي فَقَدْ تَوَلَّي اللهَ، وَ مَنْ أَحَبَّهُ فَقَدْ أَحَبَّنِي، وَ مَنْ أَحَبَّنِي فَقَدْ أَحَبَّ اللهَ، وَ مَنْ أبْغَضَهُ فَقَدْ أَبْغَضَنِي، وَ مَنْ أَبْغَضَنِي فَقَدْ أَبْغَضَ اللهَ عَزَّوَجَلَّ.
আমার প্রতি যে ঈমান আনে ও বিশ্বাস স্থাপন করে তার প্রতি আমার উপদেশ হলো তার নিজের জন্য যেন আলী (رضي الله عنه) এর অভিভাবকত্বকে মেনে নেয়। কারণ, যে ব্যক্তি নিজেকে আলী (رضي الله عنه)র বেলায়েতের অধীনে নিয়োজিত করে আমি তার অভিভাবক হই, আর আমি যার অভিভাবক হই আল্লাহ তাকে স্বীয় বেলায়েতের অধীনে গ্রহণ করেন। আর যে ব্যক্তি আলী (رضي الله عنه)কে ভালোবাসবে সে আমাকেও ভালোবাসবে, আর যে আমাকে ভালোবাসবে আল্লাহ তাকে ভালোবাসবে। আর যে ব্যক্তি আলী (رضي الله عنه)কে ঘৃণা করবে সে আমাকেও ঘৃণা করবে। আর যে আমাকে ঘৃণা করবে আল্লাহ তাকে ঘৃণা করবেন।
(আলমানাকিব-ইবনে মাগাযেলী : ২৩০/২৭৭, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬১০/৩২৯৫৩)
৭৫.সালাত আদায়কারী প্রথম মুসলিমঃ
আলী (رضي الله عنه) (ﷺ) প্রথম মুসলিম। সর্ব প্রথম তিনি সালাত আদায় করেন। (তিরমিযি, ইফা, ৬ :৩৭৩৪, ৩৭২৮)
৭৬.দোয়া
আলী (رضي الله عنه) এক যুদ্ধে ছিলেন। তাই রাসূল (ﷺ) দুই হাত তুলে দোয়া করেছিলেন, হে আল্লাহ ! আলী (رضي الله عنه)কে পুনর্বার না দেখিয়ে আমার মৃত্যু দিও না। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭৩৭)
৭৭.রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ভাই
রাসুল (ﷺ) বলেছেন, হে আলী (رضي الله عنه) ! আমার ক্ষেত্রে তোমার স্থান হল মূসার ক্ষেত্রে হারুনের মত। তবে আমার পরে কেউ নবী নেই। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ :৩৭৩০, ৩৭৩১; মুসলিম, ইফাবা, ৫ : ৫৯৯৯, ৬০০৩; বোখারী, মিনা. ৫ : ৩৪৩৪)
৭৮.আল্লাহর সঙ্গে কথাঃ
তাঈফ যুদ্ধের দিন রাসূল (ﷺ) আলী (رضي الله عنه)- এর সাথে গোপনে কথা বললে লোকেরা বলাবলি করতে লাগল যে, নবিজী তাঁর চাচাত ভাইয়ের সাথে দীর্ঘক্ষণ গোপনে কথাবার্তা বলছেন, রাসূল (ﷺ) বললেন আমি তাঁর সাথে গোপনে কথা বলিনি, বস্তুতঃ আল্লাহ তা’আলাই তার সঙ্গে কথা বলেছেন। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭২৬)
৭৯.প্রজ্ঞার ঘরঃ
রাসূল (ﷺ) হলেন প্রজ্ঞার ঘর আর আলী (رضي الله عنه) হল এর দ্বার (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ঃ৩৭২৩)
৮০.প্রিয় বান্দা ও প্রিয় উম্মতঃ
রাসুল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহর সবচেয়ে “প্রিয় বান্দা আলী (رضي الله عنه)। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭২১)
রাসূল (ﷺ) এর কাছে নারীদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় “ফাতেমা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম আ.) এবং পুরুষদের মধ্যে আলী (رضي الله عنه)। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৮৭৪)
৮১.আলী (رضي الله عنه) আমার আমি আলী (رضي الله عنه)রঃ
রাসুল (ﷺ) বলেছেন, আলী (رضي الله عنه) “আমার আমি “আলী (رضي الله عنه)র। আমার পক্ষ থেকে আমি আর আলী (رضي الله عنه) ছাড়া আর কেউ আমার “দায়িত্ব পালন করতে পারে না(তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭১৯)
রাসুল (ﷺ) বলেছেন, হে আলী (رضي الله عنه) ! তুমি আমার এবং আমি তোমার জন্য। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭১৬)
৮২.আলী (رضي الله عنه) এর সাথে সত্যঃ
রাসুল (ﷺ) বলেছেন, হে আল্লাহ ! আলী (رضي الله عنه) যে দিকে ঘুরবে হক ও সত্যকেও তুমি সে দিকে ঘুরিয়ে দিও। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭১৪)
৮৩.আলী (رضي الله عنه) কে অসন্তুষ্ট করা মানে ফাতেমাতুজ জাহরা (رضي الله عنه)কে অসন্তুষ্ট করাঃ
রাসূল (ﷺ) বলেন- ‘যে, ফাতেমা আমার দেহেরই “অংশ । যে তাকে অসুন্তুষ্ট করল, সে নিশ্চয়ই আমাকে “অসন্তুষ্ট করল। (সূত্র : বোখারী, মিনা. ৫ : ৩৪৮৭, মুসলিম, সোলেমানিয়া, ৪০তম অধ্যায়, ৬০৮৯)
৮৪.আলী (رضي الله عنه) এর সদকাহঃ
সূরা মায়দাহ ৫৫নং আয়াত, যেখানে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন মসজিদে নববিতে সংগঠিত একটি ঘটনার প্রশংসায় নাযিল করেছিলেন।
‘তোমাদের ওয়ালি তো হচ্ছেন আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসুল এবং সেই সকল মুমিনগণ যারা সালাত কায়েম করে এবং রুকু অবস্থায় যাকাত দেয়।’
আয়াতটি নাযিলের প্রেক্ষাপট হিসেবে তাফসিরকারক ও ঐতিহাসিকগণ চমৎকার একটি ঘটনার বর্ণনা করেছেন। একবার আল্লাহ’র রাসুল (ﷺ) সাহাবীদের সাথে মসজিদে নববিতে বসে ছিলেন, যখন আলী (رضي الله عنه) সালাত আদায় করছিলেন। এমন সময় এক ভিক্ষুক এসে মসজিদে নববিতে সকলের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করে নিরাশ হয়েছে এবং আল্লাহ্ দরবারে অভিযোগ করছিল যে, ‘ইয়া আল্লাহ্! তুমি সাক্ষি থেকো, তোমার নবীর মসজিদ থেকে আমি খালি হাতে ফিরে গেলাম।’ তখন আবুল হাসান (আলী (رضي الله عنه)) রুকু অবস্থায় ছিলেন এবং ভিক্ষুকের দিকে তাঁর হাত বাড়িয়ে দেন এবং ভিক্ষুক তাঁর হাত থেকে রাসুল (ﷺ)’র উপহার দেয়া সুলেমানি আংটি খুলে নিয়ে যায়। এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করে রাসুল (ﷺ) আল্লাহ’র দরবারে হাত তুলে দোয়া করেন, ‘হে আল্লাহ্! তুমি হারুনকে যেমন মুসার স্থলাভিষিক্ত করেছিলে, তেমনই আলি’কে আমার স্থলাভিষিক্ত করে দাও।’ তখন জিবরাঈল (عليه السلام) সূরা মায়েদার ৫৫ আয়াত নিয়ে হাজির হন।
[তাফিসির-এ-মারেফুল কোরআন, সূরা মায়েদাহ আয়াত ৫৫।]
৮৫.আলী (رضي الله عنه) আল্লাহর অত্যন্ত প্রিয় বান্দাঃ
আনাস ইবনে মালেক বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্য মুরগীর গোশত দ্বারা খাবার প্রস্ত্তত করা হয়েছিল। হুজুর (ﷺ) বললেনঃ
اَللَّهُمَّ ائْتِنِي بِاَحَبِّ خَلْقِكَ إِلَيْكَ يَأْكُلُ مَعِي هَذَا الطَّيْرَ، فَجَاءَ عَلِيٌّ فَأَكَلَ مَعَهُ.
হে আল্লাহ! তোমার সবচেয়ে প্রিয় বান্দাকে পৌঁছে দাও যে আমার সাথে এই মুরগীর গোশত ভক্ষণে অংশ নেবে। এমন সময় আলী (رضي الله عنه) এসে পৌঁছলেন এবং হুজুরের দস্তরখানায় বসে পড়লেন। (সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭২১, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৫৬০/৯৪৫, খাসায়েসে নাসায়ী : ৫, আল মুস্তাদরাক – হাকেম ৩:১৩০-১৩২)
৮৬.আলী (رضي الله عنه) এর বেলায়েতঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
مَنْ أَحَبَّأَنْ يَحْيَاحَيَاتِيوَيَمُوتَ مَوْتِيفَلْيَتَولَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ.
যে ব্যক্তি আমার মতো জীবন যাপন করতে এবং আমার মতো মৃত্যুবরণ করতে পছন্দ করে সে যেন আলী (رضي الله عنه) এর বেলায়েতকে মেনে চলে। (আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬১১/৩২৯৫৯)
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ أَمِيرُ الْبَرَرَةِ، وَ قَاتِلُ الْفَجَرةِ، مَنْصُورٌ مَنْ نَصَرَهُ، مَخْذُولٌ مَنْ خَذَلَهُ.
আলী (رضي الله عنه) সতকর্মশীলদের নেতা আর ব্যভিচারীদের হন্তা। যে কেউ তাকে সাহায্য করে সে সাহায্য প্রাপ্ত হয় আর যে ব্যক্তি তাকে ত্যাগ করে সে বিফল হয়। (আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৯, কানযুল উম্মাল ১১:৬০২/৩২৯০৯, আস-সাওয়ায়েকুল মুহরিকা :১২৫, আল ইমাম আলী (رضي الله عنه)-ইবনে আসাকির ২:৪৭৬/১০০৩ ও ৪৭৮/১০০৫)
৮৭.সর্বাগ্রে ইসলাম কবুল ও হাউজে কাওসারে প্রবেশঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
أََوَّلُكُمْ وُرُوداً فِي الْحَوْضِ أََوَّلُكُمْ إِِسْلَاماً عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
তোমাদের মধ্যে সবার আগে হাউজে কাওসারে প্রবেশ করবে সেই ব্যক্তি যে সবার আগে ইসলাম গ্রহণ করেছে। আর সে হলো আলী (رضي الله عنه)। (আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৬, আল ইস্তিয়াব ৩:২৭,২৮, উসুদুল গাবাহ ৪:১৮, তারীখে বাগদাদ ২:৮১)
৮৮.আলী (رضي الله عنه) কে ভালবাসা আল্লাহর নির্দেশঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
إِنَّ اللهَ أَمَرَنِي بِحُبِّ أَرْبِعَةٍ، وَ أَخْبَرَنِي أَنَّهُ يُحِبُّهُمْ. قِيلَ، يَا رَسُولَ اللهِ، سَمِّهِمْ لَنَا. قَالَ: عَلِيٌّ مِنْهُمْ، يَقُولُ ذَلِكَ ثَلَاثاً.
এমন চার ব্যক্তি যারা আল্লাহর কাছে প্রিয় মহান আল্লাহ আমাকে সে চারজনকে ভালোবাসতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বলা হলো, হে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)! তাদের নামগুলো আমাদের জন্য বলুন। তিনি তিন বার বললেন, আলী (رضي الله عنه) তাদের মধ্যে। (সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭১৮, সুনানে ইবনে মাজাহ ১:৫৩/১৪৯, মুসনাদে আহমাদ ৫:৩৫১, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩০)
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
لَوِ اجْتَمَعَ النَّاسُ عَلي حُبِّ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، لَمَا خَلَقَ اللهُ تَعَالَي النَّارَ.
যদি মানুষ আলী (رضي الله عنه) এর ভালোবাসায় একমত হতো তাহলে মহান আল্লাহ কখনো জাহান্নামকে সৃষ্টি করতেন না। (আল ফেরদৌস ৩:৩৭৩/১৩৫, আল মানাকিব-খারেযমী ৬৭/৩৯, মাকতালুল হুসাইন (رضي الله عنه)-খারেযমী ১:৩৮)
৮৯.উম্মতের সমুদয় কর্মের চাইতে অধিক মূল্যবানঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
لَمُبارِزَةُ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ لِعَمْرِو بْنِ عَبدوُدٍّ يَوْمَ الْخَنْدَقِ، أَفْضَلُ مِنْ عَمَلِ اُمَّتِي إِلَي يَوْمِ الْقِيَامَةِ.
খন্দকের যুদ্ধে আমর ইবনে আবদুউদ্দের বিরুদ্ধে আলী (رضي الله عنه) এর যুদ্ধ নিঃসন্দেহে কেয়ামত পর্যন্ত আমার উম্মতের সমুদয় কর্মের চাইতে অধিক মূল্যবান। (তারীখে বাগদাদ ১৩:১৯, আল মানাকিব-খারেযমী ১০৭/১১২)
৯০.আলী (رضي الله عنه) কে এর জন্য দোয়াঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
اَللّهُمَّ انْصُرْ مَنْ نَصَرَ عَلِيّاً، اَللَّهُمَّ أَكْرِمْ مَنْ أَكْرَمَ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أخْذُلْ مَنْ خَذَلَ عَلِيّاً.
হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আলী (رضي الله عنه)কে সাহায্য করে তুমি তাকে সাহায্য করো, যে ব্যক্তি তাকে সম্মান করে তুমি তাকে সম্মান করো আর যে তাকে লাঞ্ছিত করে তুমি তাকে লাঞ্ছিত করো। (কানযুল উম্মাল ১১:৬২৩/৩৩০৩৩, আল মু’জামুল কাবীর – তাবারানী ১৭:৩৯,৮২)
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
يا عَلِيّ، طُوبَي لِمَنْ أَحَبَّكَ وَ صَدَّقَ فِيكَ وَ وَيْلٌ لِمَنْ أَبْغَضَكَ وَ كَذَّبَ فِيكَ.
হে আলী (رضي الله عنه)! সুসংবাদ তার প্রতি যে তোমাকে ভালোবাসে এবং তোমাকে সত্য বলে জানে। আর দুর্ভাগ্য তাদের প্রতি যারা তোমার সাথে শত্রুতা করে এবং তোমার ব্যাপারে মিথ্যা আরোপ করে। (তারীখে বাগদাদ ৯:৭২, ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ:৫, আল কিস্ম ২:১৬১, উসুদুল গবাহ ৪:২৩)
৯১.আহলুল বাইআতকে ভালবাসার ফজিলতঃ
হজরত আলী (رضي الله عنه) বলেন, মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “মুনাফিকরা কখনো আলী (رضي الله عنه)কে ভালোবাসবে না, আর মুমিনরা কখনো তাঁকে ঘৃণা করবে না। [সুনানী তিরমিযি, খ–৫, পৃ-৬৩৫, হাদীস-৩৭১৭]
রাসূল (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه)র প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, “হে আলী (رضي الله عنه) আমার পরে তুমি প্রত্যেক মুমিন নর-নারীর ওপর কর্তৃত্বের অধিকারী। [আল মুস্তাদারক হাকেম, খ–৩, পৃ-১৩৪]
নবী (ﷺ) নির্দেশ দিয়েছেন যে, আহলে বাইতে এর আগে যাওয়ার চেষ্টা করোনা তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাদের থেকে সরে যেয়ো না তাহলে দুঃখ কষ্ট তোমাদের চির সাথী হয়ে যাবে। তাঁদেরকে শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করোনা তাঁরা তোমাদের থেকে বেশি জ্ঞানী।
সুত্রঃ তাফসিরে দুররে মানসুর, খঃ-২, পৃঃ-৬০; সাওয়ায়েকে মোহরেকা, পৃঃ-১৪৮ ; ইয়া নাবিয়ুল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৩৫৫ ; কানজুল উম্মাল, খঃ-১, পৃঃ- ১৬৮; আল তাবরানি, পৃঃ-৩৪২।
নবী (ﷺ) বলেছেন যে, আলী (رضي الله عنه) রয়েছে সত্যের সাথে এবং সত্য রয়েছে আলী (رضي الله عنه)’র সাথে, ইয়া আল্লাহ্ ! সত্যকে সেই দিকে ঘুরিয়ে দাও যেদিকে আলী (رضي الله عنه) যায়
সুত্রঃ তিরমিজি শরীফ, ৬স্ট খন্ড, পৃষ্ঠা-২৯৮ (ইসঃ ফাঃ বাঃ), সহীহ তিরমিজি ( সব খন্ড একত্রে) পৃস্টা-১৭২,এবং-১০৭২ (২০১০ইং), তাজ কোং, ঢাকা। তারীখে বাগদাদ, খন্ডঃ-১৪, পৃঃ-৩২১। ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৯১। তাফসীরে কাবির, খঃ-১,পৃঃ-১১১ (মিশর)। জামেউস সাগির, খঃ-২, পৃঃ-৭৪,৭৫,১১০। ইমামত অর সিয়াসাত, খঃ-১,পৃঃ-১১১। আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৯৮২। তারীখে খোলফা, পৃঃ-১১৬। ইযাযাতুল খিফা ( শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্ ) খঃ-১,পৃঃ-১৫৮,৫৪৮, কেফায়াতুত তালেব,অধ্যায়-৪৪।
একবার নবীজী (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه)কে বললেন , হে আলী (رضي الله عنه) , তোমার মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট আছে , যা অন্য কারো মধ্যে নেই , এমনকি আমার মধ্যেও নেই । হযরত আলী (رضي الله عنه) বললেন, হে আল্লার রাসুল (ﷺ) , এ আপনি কি বলছেন ! এও কি সম্ভব , আপনি হলেন , সাইয়্যেদুল মুরসালীন “। নবীজী (ﷺ) মৃদু হেসে তখন বললেন , তোমার বৈশিষ্টগুলি হচ্ছে যেমন তোমার জন্ম পবিত্র কাবা ঘরের অভ্যন্তরে হয়েছে , আমার হয়নি। তোমার শ্বশুর সাইয়্যেদুল মুরসালীন , আমার নয়। তোমার শ্বাশুড়ী হযরত খাদীজাতুল কোবরা সিদ্দীকা , আমার নয়। তোমার স্ত্রী হলেন জান্নাতের সম্রাজ্ঞী , আমার নয়। তোমার দুই পুত্র , ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেন জান্নাতের যুবকদের সর্দার , আমার নয়। তাই তুমি কত ভাগ্যবান ও মর্যাদাবান। তবে তোমরা সবাই আমার হতে আর আমি তোমাদের থেকে “।
সূত্র – নবীর (ﷺ) বংশধর ( আঞ্জুমানে কাদেরীয়া , চট্রগ্রাম ) ,পৃ-২২ , আরজাহুল মাতালেব,পৃ-৪১২ , ইয়া নাবিউল মুয়াদ্দাত ,পৃ-৪৬ , শাওয়াহেদুত তানযিল, খন্ড-১, পৃ-৪১৪ , নুরুল আবসার , পৃ-১০২ , আর রিয়াদুন নাদরাহ, খন্ড-৩, পৃ-১৭২।
“—- যারা কুফরী করেছে তারা বলে , আপনি রাসুল নন। আপনি বলে দিন , আমার ও তোমাদের মধ্যে আল্লাহ এবং ঐ ব্যক্তি যার কাছে কিতাবের ( ইলমুল কিতাব ) জ্ঞান আছে , সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট —- সুুরা রাদ/৪৩।
আবদুল্লাহ বিন সালাম বলেছেন যে , আমি নবীজীকে (ﷺ) প্রশ্ন করলাম যে , এই আয়াতে ঐ ব্যক্তি যার নিকট কিতাবের সমূদয় জ্ঞান রয়েছে , তিনি কে ? নবীজী (ﷺ) উত্তরে বললেন , ঐ ব্যক্তিটি হচ্ছে হযরত আলী (رضي الله عنه) ইবনে আবু তালিব “।
সূত্র – আল কাশফু ওয়াল বায়ান , খন্ড-৪, পৃ-৬০ , আল নাঈম আল মুকিম ,পৃ-৪৮৯ , তাফসীরে কুরতুবি ,খন্ড-৯ পৃ- ৩৩৬ সহ ১৩ টি কিতাবের খন্ড ও পৃষ্ঠার রেফারেন্স দেয়া যাবে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ
صَاحِبُ سِرِّي عَلِيُّ ابْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আলী (رضي الله عنه) আমার গোপন রহস্যকথার একমাত্র আধার। (আল ফেরদৌস ২:৪০৩/৩৭৯৩, আল ইমাম আলী (رضي الله عنه) – ইবনে আসাকির ২:৩১১/৮২২)
নবী (ﷺ) বলেছেন, হযরত আলী (رضي الله عنه)র জিকির ( ফজিলত বর্ণনা ) করা ইবাদত।
সুত্রঃ ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৪২২, কানজুল উম্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-১৫২, মুয়াদ্দাতুল কুরবা, পৃঃ-১১২।
সহী মুসলিমের বর্ণনা অনুসারে বিষয় বস্তু বর্ণিত হয়েছে।]
মাওলা আলী (رضي الله عنه)-এর কাছে একজন ঈসাই ( খ্রিস্টান ) ও একজন ইহুদী এসে এমন এক প্রশ্ন করলো যেন মাওলা আলী (رضي الله عنه) তাদের প্রশ্নের জবাব দিতে একটু সঙ্কোচবোধ করেন।
প্রশ্নটি ছিলোঃ
(১) হে আলী (رضي الله عنه) আপনি বলুনতো সেটা কোন জিনিস যেটা আমরা দেখি কিন্তু খোদা দেখেননা?
(২) আপনারা বলেন কোরআনে সব কিছু মওজুদ (উপস্থিত) আছে, কিন্তু নেই কোনটা?
বাবে ইলম মুচকি হাসি দিয়ে তার জবাবে বললেনঃ
প্রথমত, আল্লাহ স্বপ্ন দেখেননা, কারন আল্লাহর না কখনো ঘুম আসে আর না কখনো তন্দ্রা।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে, কোরআনে সব কিছু আছে কিন্তু মিথ্যা কোন কথা নেই।
মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “আলী (رضي الله عنه) ঈমানে সর্বাপেক্ষা দৃঢ়পদ, উম্মতের মধ্যে হক ও বাতিলের পার্থক্যকারী এবং মুমিনদের অভিভাবক। [কানযুল উম্মাল, খ–১১, পৃ-৬১৬]
মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “আলী (رضي الله عنه) আমার থেকে আমি আলী (رضي الله عنه) থেকে, আমি এবং আলী (رضي الله عنه) ব্যতীত কেহই রেসালাতের অধিকার পূরন করেনি। [সুনানী তিরমিযি, খ–৫, পৃ-৬৩৬, হা-৩৭১৯; মুসনাদে আহমাদ, খ–৪, পৃ-১৬৪]
মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “মুনাফিকরা কখনো আলী (رضي الله عنه)কে ভালোবাসবে না, আর মুমিনরা কখনো তাঁকে ঘৃণা করবে না। [সুনানী তিরমিযি, খ–৫, পৃ-৬৩৫, হাদীস-৩৭১৭]
মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “আলী (رضي الله عنه) এবং তার অনুসারীরা নিঃসন্দেহে কেয়ামতের দিন বিজয়ী। [আল ফেরদৌস, খ–৩, পৃ-৬১, হাদীস-৪১৭২]
মহানবী (ﷺ) বলেছেন, “আলী (رضي الله عنه) কোরআনের সাথে আর কোরআন আলী (رضي الله عنه)র সাথে।
[আল মুস্তাদারক হাকিম, খ–৩, পৃ-১২৪]
রাসূল (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه)র প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, “হে আলী (رضي الله عنه) আমার পরে তুমি প্রত্যেক মুমিন নর-নারীর ওপর কর্তৃত্বের অধিকারী। [আল মুস্তাদারক হাকেম, খ–৩, পৃ-১৩৪]
মহানবী (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه)র প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, “হে আলী (رضي الله عنه) আমি হলাম সাবধানকারী আর তোমার মাধ্যমে অন্বেষণকারীরা পথ খুজে পাবে। [তাফসীরের তাবারী, খ–১৩, পৃ-৭২; ইমাম আলী (رضي الله عنه); অনুবাদ-ইবনে আসাকিব, খ–২, পৃ-৪১৭]
মহানবী (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه)র প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, “জেনে রেখ, সে তোমাদের মাঝে আমার ভাই, আমার উত্তরসূরি এবং আমার স্থলাভিষিক্ত। সুতরাং তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং আনুগত্য করবে। [তারীখে তাবারী, খ–২, পৃ-২২১৭]
মাওলা আলী একমাত্র মহাপুরুষ যিনি জন্ম নিয়েছেন কাবাগৃহের মধ্যে। তাঁর জন্মের পূর্বে নবী প্রার্থনা করেছিলেন, হে আল্লাহ, আমাকে ততক্ষণ পর্যন্ত তুলে নিও না যতক্ষণ না আলীর আবির্ভাব ঘটে। (আল বেদায়া ও নেহায়া, পৃ.৩৫৭)
রাসুলুল্লাহ صلى الله عليه و آله وسلم বলেন,”
নবীজি আলীর সম্বন্ধে বলেন, নিশ্চয় আমার সাথে প্রথম যিনি সালাত করেন তিনি হলেন আলী। (মসনদে আহমদ, ৪র্থ খ-, পৃ.৩৪৮)
আমার উপর সর্বপ্রথম ঈমান আনয়নকারী এবং আমাকে সর্বপ্রথম সমর্থনকারী হলেন আলী। (আনসাব উল আশরাফ, ২য় খ-, পৃ.৩৬২)
আমার কাছে হাউজে কাউসারে যে আসবে সর্বপ্রথম সে-ই ইসলাম গ্রহণ করেছে (কান্জুল উম্মাল, ২য় খ-, পৃ.২১৪, হাদিস নং ১১৯৩)
আমার পর আলী মোমিনদের অভিবাবক। (তিরমিজি, ৫ম খ-, পৃ.৬৩২)
নিশ্চয় অটল পথের (সিরাতাল মোস্তাকিম) একটি কাল আছে যখন আলী ব্যতিত কেউ তা পার হতে পারবে না। (তারাবী, পৃ.১২৭)
আবু সাইদ খুদরী থেকে রেওয়ায়েত, আমরা হযরত আলীর প্রতি শত্রুতা থেকেই মোনাফেকদের চিনতে পারতাম। যারা আলীর সাথে শত্রুতা করত তাদের মোনাফেক বলতাম। (তিরমিজি)
পুণ্যবানদের ইমাম (নেতা) ও পাপাচারীদের নিশ্চিহ্নকারী হলেন আলী। (কাঞ্জুল উম্মাল, ১২তম খ-, পৃ.২০৩, হাদিস নং ১১৪৯)
আবু বকর মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ বিন বশির, জাকারিয়া, মাসায়াব, সাফিয়া প্রমুখ থেকে রেওয়ায়েত করে আয়েশা বলেন, একদিন সকালে রসুলে করিম একটি কালো চাদরে আবৃত ছিলেন। এমন সময় সেখানে হাসান বিন আলী এলে নবীজি তাঁকে চাদরের মধ্যে টেনে নিলেন। তারপর সেখানে হোসাইন বিন আলী এলেন। নবী করিম তাঁকেও চাদরের মধ্যে নিলেন। তারপর ফাতেমা তুজ জোহরা এলেন। নবী করিম তাঁকেও চাদরের মধ্যে প্রবেশ করালেন। তারপর হযরত আলী এলেন। তাঁকেও নবী সেই চাদরের ভেতর টেনে নিলেন। যখন এই পাঁচজনই চাদরে আবৃত হলেন তখন রসুলে করিম বললেন, এ পাঁচজনই আমার আহলে বাইত অর্থাৎ আদর্শিক গৃহের অধিবাসী। (মুসলিম, ২য় খ-, পৃ.২৮৩)
নবী করিম বলেছিলেন, যদি কারও ইচ্ছা হয় আরব যুবকদের সর্দারকে দেখবার সে যেন আলীকে দেখে। (মানকেব, ইবনে মাগাজেনী, পৃ.২৪৪)
বীরোত্তম মহাপুরুষ হলেন আলী, তাঁর তলোয়ার জুলফিকার। (আল বেদায়া ও নেহায়া, ৭ম খ-, পৃ.৩৩৭)
জামি ইবনে ওমায়ের বলেছেন যে, একদিন আমি আমার ফুফুর সাথে আয়েশার কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম, রসুলে করিম কাকে সবচেয়ে অধিক ভালবাসেন। তিনি বললেন, রসুল ফাতেমাকে খুব ভালবাসেন। আবার প্রশ্ন করা হলো, আর পুরুষদের মধ্যে? তখন তিনি বললেন, তাঁর স্বামী হযরত আলীকে তিনি সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন। (তিরমিজি, পৃ. ২৭৬)
মাওলা আলী বলতেন, নবী করিমের কাছে আমার যে নৈকট্য ও মর্যাদা রয়েছে তা জগতে আর কারোরই নেই। (কাঞ্জুল উম্মাল, ২য় খ-, পৃ.২১৮)
রাসূল (ﷺ) বিভিন্ন সময়ে বলেছেন:
“আলী আমার থেকে এবং আমি তাঁর থেকে এবং আলীই আমার পর সমস্ত মুমিনদের ওলি তথা অভিভাববক ও নেতা” (তিরমিজি, ৫ম খণ্ড, পৃ-১১০)
রাসূল (ﷺ) আরো বলে গেছেন, আলী সব সময়ই হকের পথে থাকবে। “আলী (আ.)-কে মহব্বত করা ঈমান, আর আলী (আ.)’র সঙ্গে শত্রুতা করা মুনাফেকী” (মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ-৪৮)।“
আলী করমুল্লাহ বলেছেন, যিনি বীজ অঙ্কুরোদ্গম করেছেন ও মানুষ সৃষ্টি করেছেন তাঁর শপথ, নবী-রসুল আমাকে অসিয়ত করে বলেছেন যে, মোমিন আমাকে ভালবাসবে আর মোনাফেক আমাকে ঘৃণা করবে।(মুসলিম)