আমার মাসুদ ভাইয়া, সিরিজ ৫

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

বিষয়: পানির নিচে রসগোল্লা !

মনে আছে আপনাদের রসগোল্লা গল্পের সেই ঝান্ডুদার কথা ৷ যিনি প্রায়ই ইউরোপ আমেরিকায় যেতেন ৷ এতই বেশী যাওয়া আসা করতেন যে তিনি যাচ্ছেন না আসছেন তা বুঝাই মুশকিল ছিল ৷ সে কি হাস্যকর এক কাহিনী তাই না ৷ (১)

তবে আমাদের মামা কিন্তু সেই ঝান্ডুদার চাইতে কম নয় ৷ প্রায় সময় তিনি লন্ডনে যাতায়াত করেন ৷ আর লন্ডন থেকে প্রতিবারই হাতে করে কোন না কোন পদের মিষ্টি নিয়ে আসেন ৷ কেন যেন মিষ্টির প্রতি তাঁর ঝোঁক একটু বেশীই ৷

আমি ও  মাসূদ ভাইয়া বেরিয়েছি মামার বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ৷ গন্তব্য সিলেটের বিয়ানীবাজার ৷ মামার মত এখানে আরও অনেকেই লন্ডনে যাতায়াত করে থাকেন ৷ আর তাছাড়া এখানকার জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ লন্ডন প্রবাসীও বটে ৷ তাই এ অঞ্চল ২য় লন্ডন নামে পরিচিতি লাভ করেছে ৷

ভাইয়া এবার অফিস থেকে তিন দিনের ছুঁটি নিয়েছেন ৷ তাই আমরা ২দিন মামার বাড়িতেই থাকব ৷ এত তাঁড়াতাড়ি মামার বাঁড়ি ছাড়লে কি আর হয় ৷ কথায় আছে না ‘মামার বাঁড়ি মঁধুর হাঁড়ি ৷’ না থুকু ! শ্বশুর বাঁড়ি হবে ৷ আমার কিন্তু শ্বশুর বাঁড়ি নেই, আপনাদের আছে নিশ্চয়ই !

যাইহোক , অবশেষে দীর্ঘপথ পারি দিয়ে আমরা মামার বাড়ি পৌছলাম ৷ দরজায় দাড়িয়ে মামাকে সালাম দিলেন মাসূদ ভাইয়া ৷ অতঃপর ভিতরে প্রবেশ করে কুশল বিনিময় করলেন ৷ তারপর মামার সাথে অনেক্ষণ কথাবার্তা হলো , লন্ডন সম্পর্কে অনেক কিছু জানাও হলো ৷ কথা হলো মামাতো ভাই রাকিবের সাথেও ৷ বয়সে প্রায় আমারই মত হবে ৷ অতঃপর আমাদেরকে লন্ডন থেকে নিয়ে আসা মিষ্টি খেতে দেয়া হলো ৷ ভাইয়ার কাছে কেমন লেগেছে বলতে পারি না ৷ তবে অামার কাছে কিন্তু দারুন লেগেছে ৷ আহ ! সে কি দারুন স্বাদ !

আচ্ছা ! এই টাইপের কোন রসগোল্লার জন্যই কি চুঙিওয়ালা ও বড়কর্তা এতটা পাগলামী করেছিল ৷(১)

রাতে রাকিবদের গেষ্ট রূমে আমাদের থাকার ব্যবস্হা হলো ৷ চারদিকে সবূজ ঘাস বেষ্টিত বাগানের মাঝে অবস্হিত রাকিবদের বাড়ি ৷ বাঁড়িটা মূলত চার তলা ৷ তাদের থাকার বিশাল ফ্লাটটাতে চারটি রুম ৷ একটি পশ্চিম ও একটি পূর্বে ৷ আর দুটি মাঝ বরাবর ৷ এগুলোর একটি হলো গেষ্ট রুম ৷ অন্যান্য রূমগুলোর তুলনায় গেষ্ট রূমটা একটু লম্বাটে ৷ দেয়ালের দুপাশে দুটি খাঁট বিছানো ৷ একটির পাশে রয়েছে জানালা ৷ রূমের মাঝ বরাবর দুটি করে সোঁফা মুখোমুখি বসানো ৷ জানালার ফাঁক দিয়ে বাগানের সবুজ ঘাসগুলো চোখে পরে ৷

রাত তখন সাঁড়ে নয়টার একটু বেশী হবে ৷ গেষ্ট রূমে আমি, রাকিব ও মাসূদ ভাইয়া ৷ বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে ৷ অন্ধকারের মাঝেও জানালার ফাঁক দিয়ে বৃষ্টির ফোঁটা চোখে পড়ছে ৷ জানালার পাশে বসানো বিছানাতে  আমরা গোল হয়ে বসলাম ৷ আমি বসলাম গ্লাস লাগানো জানালার কাছে ৷ কিছুটা রাত জেগে আজ আমরা গল্প করব বলে স্হির করলাম ৷

আমাদের গল্পটা বেশ জমে উঠল ! আলোচনার এক পর্যায়ে রাকিব বলল

—জানো মাসূদ ভাইয়া ! আমার ভার্সিটির এক বন্ধু ! মানিকগণ্জ্ঞে থাকে ! মা, বাবা, জেঠা-জেঠি, দাদা-দাদী ইত্যাদি সবাই মিলে তাঁরা একই সাথে বসবাস করে ৷ একবার সে আমাকে তার বাবা ও চাচার রসগোল্লা চ্যালেন্জ্ঞের কথা শোনাল ৷

আমি ভাবলাম, রসগোল্লা চ্যালেন্জ্ঞ ! সে আবার কি !

ভাইয়া বললেন, বলিস কি ! রসগোল্লা চ্যালেন্জ্ঞ ! মনে হচ্ছে ,ভেরি ইন্টারিস্টিং !  বল শুনি !

—শুনো তাহলে বলছি ! আমার বন্ধু বলল, “জানিস ! আমার বাবাকে দেখেছিলাম ছোট থাকতে, একবার তাঁর চাচাতো ভাই তাঁর সাথে চ্যালেন্জ লাগলো পুকুরের পানিতে ডুব দিয়ে মিষ্টি খাবে ! বাবা হেসে বলল, ঠিকাছে তুই যদি খেতে পারিস তবে তুই যা চাস তাই দেব ৷ তখন এ উদ্দেশ্যে দুজনই প্রস্তুত হয়ে পুকুরের সামনে গেল ! আর আমার বাবা তাঁর হাতে মিষ্টির হাঁড়ি তুলে দিলেন ৷ তারপর তাঁর সেই ভাই ,মানে আমার চাচা পুকুরে হাঁড়ি নিয়ে ডুব দিলেন ! তারপর কিছুক্ষণ পর সমস্ত হাঁড়ি খালি করে ফিরে এলেন ৷ বললেন, কই আমার বকশিষ ! তারপর হঠাৎ মিষ্টির অনেকগুলো টুকরো পর পর ভেসে উঠল ! তখন ভাইয়া চাচার কান ধরে বললেন, কিরে এই তোর মিষ্ট খাওয়া !

গল্পটি শুনে আমি হেঁসে উঠলাম ৷ রাকিব নিজেও হাসল ৷ মাসূদ ভাইয়াও কিছুটা হাসলেন বটে কিন্তু পরক্ষণে রাকিবকে বললেন,

—তোর সেই বন্ধুর চাচা পানিতে ডুব দিয়ে  রসগোল্লা খেতে না পারলেও আমরা অনেকেই সেটি করে দেখিয়েছি ৷

আমি শুনে অবাক হলাম ! ভাইয়া এসব কি বলছে ! পানির নিচে রসগোল্লা খাওয়া কি করে সম্ভব ৷ মুখ খুললেই তো নাকে মুখে  পানি ঢুকে যাবে !  its quite impossible !

কালবিলম্ব না করেই ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাইয়া তাও কি সম্ভব !

মাসূদ ভাইয়া বললেন, সম্ভব তো বটেই ৷ উপরন্তু এমন গুনে গুনান্বিত মানুষ অহরহ রয়েছে ৷

—বল কি ভাইয়া ৷ যেমন ?

—বাহিরে তো প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে তাই না ! তাহলে আয় বৃষ্টির কথা দিয়েই শুরু করা যাক !

— হুম ! বল ! ,রাকিব বলল ৷

— মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,

الذي جعل لكم الارض فراشا والسماء بناء- وانزل من السماء ماء فاخرج به من الثمرت رزق لكم- فلا تجعلوا لله اندادا وانتم تعلمون ٥

“তিনিই তোমাদের জন্য পৃথিবীকে বিছানা  ৷ এবং আকাশকে ছাঁদ করেছেন ৷ এবং আঁকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তা দ্বারা তোমাদের রিযিক হিসেবে ফলমূল উৎপাদন করেন ৷ সুতরাং , তোমরা জেনে শুনে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ বা শরীক(২) স্হির করো না ৷” (সূরা বাক্বারাহ ২:২২)

তাহলে এই আয়াতে খুবই স্পষ্টভাবে আল্লাহর সাথে শরীক বা সমকক্ষ করতে নিষেধ করা হচ্ছে, যাকে আরবীতে বলা হয় শিরক (الشرك) ৷  (বিস্তারিত, সিরিজ ৪)

এই শিরকের মত জঘন্য অপরাধে লিপ্ত ব্যাক্তিদের ভাল কাজ করে জান্নাত পাওয়ার চেষ্টা মিথ্যা আশা বৈ কিছু নই ৷ অনেকটা যেন সেই পানির নিচে রসগোল্লা খাওয়ার মতই ৷ বুঝলি এবার !

আমি বললাম, ভাইয়া ! তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছ ৷ শিরক করার কারণে তাদের আমল তথা ভাল কাজগুলো ব্যার্থ হয়ে যাবে ৷

—ঠিক ধরেছিস ! এই শিরক এমনই এক জঘন্য ও বড় ধরনের অপরাধ যা পূর্বের সব ভাল কাজগুলোকে নিশ্চিন্হ করে দেয় ৷ একথা বলে মহান আল্লাহ স্বয়ং  নবী (صلي الله عليه وسلم) কে শাসিয়েছেন ৷ তিনি বলেছেন

ولقد اوحي اليك والي الذين من قبلك – لئن اشركت ليحبطن عملك ولتكونن من الخسرين ٥

“(হে নবী ! ) অবশ্যই আমি আপনার প্রতি ও আপনার পূর্ববর্তী (নবীদের ) উপর এই ওহী নাযিল করেছি যে, ‘যদি আপনি আল্লাহর সাথে শিরকে লিপ্ত হন, তবে অবশ্যই আমি  আপনার সকল আমল নিশ্চিহ্ন করে দেব  এবং অবশ্যই আপনাকে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত করব ৷ “(সূরা যুমার ৩৯:৬৫)

রাকিব বলল, এই কথা যখন তুললেই তখন তাদের কিছু পরিচয়ও আমাদের বল ! শুনি !

—হুম ! বলছি ! শোন ৷ কেবল কয়েকজন প্রধান ব্যাক্তির কথা বলছি ৷

ব্যাক্তি নম্বর ১:— এরা মহান আল্লাহর সৃষ্টিজগত দেখে ৷ বুঝতে পারে যে, বাঘ আর সিংহের সত্তা একসাথে মিশে একাকার বা ফানা হয় না, হরিণ জিরাফের সত্ত্বার সাথে মিশে একাকার হয় না ৷ ঠিক তেমনি একজন মাকে তার সন্তানরা ভালবাসেন বলে নিজ সত্তাকে মায়ের সত্তার সাথে মিশিয়ে ফানা বা একাকার হয়ে যেতে পারে না ৷ অর্থাৎ এমন হতে পারে না যে বাঘ বলবে আমিই সিংহ, সন্তান বলবে আমিই জন্মদাতা মা ৷ অথচ তারা সৃষ্টিজগতের সাথে একেবারেই অতুলনীয় সত্তা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সাথে একাকার বা ফানা হওয়ার দাবী করে(৩) ঠিক যেমন খ্রিষ্টানদের ত্রিত্ববাদের থিওরি ৷ যেখানে মহান আল্লাহর সাথে আরও দুটি সত্ত্বাকে একত্রে মিশিয়ে ফানা বা একাকার করা হয়েছে ৷ মহান আল্লাহ তাদের ব্যাপারে বলেন,

لقد كفر الذين قالوا ان الله ثالث ثلثة – وما من اله الا اله واحد – وان لم ينتهوا عما يقولون ليمسن الذين كفروا منهم عذاب اليم ٥

“নিশ্চয়ই তারা কুফরী করেছে যারা বলে নিশ্চয়ই আল্লাহ হলো তিনের তৃতীয় ৷ অথচ একক ইলাহ (আল্লাহ) ব্যাতিত সত্য কোন ইলাহ নেই ৷ আর যদি তারা এমন কথা থেকে বিরত না হয় ,তবে অামি অবশ্যই কাফেরদেরকে আস্বাদন করাব যণ্ত্রনাদায়ক শাস্তি ৷”(সূরা মায়েদাহ ৫:৭৩)

রাসূল (صلي الله علبه وسلم) এর হাদীসে আমরা আরও দেখি, সেখানে ফানা হওয়ার দাবী তো দূরের কথা বরং আল্লাহর ইচ্ছার সাথে অন্য কারও ইচ্ছাকে বুঝাতে ‘এবং’ অব্যয় যুক্ত করতেও নিষেধ করেছেন ৷ তিনি বলেন:

لا تقولوا ما شاء الله وشاء فلان ولكن قولوا ما شاء الله ثم شاء فلان—

“তোমরা একথা বলো না যে, আল্লাহ যা চান এবং অমুক যা চান বরং তোমরা বল, আল্লাহ যা চান, অতঃপর অমুক যা চান ৷”(৪)

এছাড়াও আমরা দেখি আল্লাহ ও রাসূলকে মিলিয়ে ‘ ومن يعصهما বা আর যে তাঁদের অবাধ্য হবে ‘ বলার কারণে রাসূল (صلي الله عليه وسلم) তাঁকে কঠোর ধমকি দিয়েছেন ৷(৫)

ব্যাক্তি নম্বর ২:— এরা দেখে পৃথিবীতে পবিত্র, অপবিত্র সব জায়গাই আছে ৷ আছে ডাষ্টবিন, নর্দমা, শৌচাগার ইত্যাদি ৷ এরপরও তারা মহান আল্লাহর সত্ত্বাকে সব জায়গায় বিরাজমান দাবী করে ঠিক যেমন হিন্দু ধর্মাবলম্বিরা বলে ৷ অথচ মহান আল্লাহ বলেন,

الرحمن علي العرش استوي

“পরম করুণাময় (আল্লাহ) আরশে সমাসীন হলেন ৷”(সূরা তোহা ২০:৫)

আর তিনি সেখান থেকেই সবকিছু পরিচালনা করে থাকেন ৷ তিনি সবকিছু জানেন, শোনেন ও দেখেন ইত্যাদি ৷ [৬]

ব্যাক্তি নম্বর ৩: তাদের দাবী হলো, তারা আল্লাহকে ভালবাসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্তরে পৌছে গেছে ৷ সুতরাং, এখন আর শরীয়ত মানার দরকার নেই ৷ অথচ তাঁরা ভূলে যাচ্ছে যে, এমন ছাঁড় নবীদেরকেও দেওয়া হয়নি ৷ নবীদের ব্যাপারে আলেমদের ঐক্যমতে সাব্যস্ত হয়েছে ৷ যথা

১৷ নবীগণ আল্লাহর দ্বীন ও দাওয়াত পৌছানোর ব্যাপারে যাবতীয় দোষত্রুটি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ৷

২৷ নিম্নমানের কর্মকান্ড তথা হারাম ও মর্যাদাহানীকর সগীরা গোনাহ থেকেও তাঁরা সম্পূর্ণ মুক্ত

৩৷ মর্যাদাহানীকর নয় এমন ছোট ভূল তাঁদের দ্বারা হতে পারে ৷ কিন্তু এই প্রকার ভূলের উপরও মহান আল্লাহ তাঁদেরকে বহাল থাকতে দেন না ৷(৭)  আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, নবীগণ অন্যান্য মানুষ বা সৃষ্টির তুলনায় সবচেয়ে প্রিয় বান্দা হওয়া সত্বেও তাদেরকে এই ভূলের কারণে ছাঁড় দেননি বরং কঠোরভাবে শাসিয়েছেন ৷ এমনকি ইউনুস (عليه وسلم) কে মাছের পেঁটে অবস্হান করিয়েছেন ৷ যার ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন

لولا ان تداركه نعمة من ربه لنبذ بالعراء وهو مذموم ٥

“যদি তাঁর রবের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ তাঁকে সামাল না দিত তবে সে অবশ্যই নিন্দিত হয়ে জনশূন্য প্রাণ্তরে নিক্ষিপ্ত হতো ৷”(সূরা ক্বালাম ৬৮:৪৯)

এছাড়াও আমাদের নবী (صلي الله عليه وسلم) কে এই তৃতীয় প্রকার ভূলের জন্যই শাসিয়ে সূরা আবাসার ১২ টি আয়াত নাযিল হয়েছে ৷(৮)

আদম ও হাওয়া (عليه وسلم) কে জান্নাত থেকে বহিস্কার করা হলো এই ভূলের জন্য ৷(৯)  এমনকি তাঁদেরকে তওবা করার শিক্ষাও দিলেন এই জন্য ৷(১০)

মূসা (عليه وسلم) কে খিযির (عليه وسلم) এর কাছে পাঠানো হলো এই ভূলের জন্যই ৷(১১)

এমনকি হাশরের ময়দানে নবীগণ আল্লাহর সামনে কথা বলতে ভয় পাবেন এই ভূলের জন্যই ৷(১২)

তাহলে তোরাই বল তথাকথিত মহাব্বতকারীদের উপর শরীয়ত না মানার দাবী কিভাবে সঠিক হতে পারে !

আসলে তাদের উপর শরীয়ত রহিত হওয়ার দাবী নিতান্তই অহংকারবশত এবং তা হলো বিশাল শিরক ও কুফরি ৷ এদের অন্তর হলো সেই ইহুদীদের মত যারা নিজেকে আল্লাহর প্রকৃত বন্ধু ও মহব্বতকারী বলে দাবী করত অথচ শরীয়াহর প্রতি কোন ভ্রূক্ষেপ তাদের ছিল না ৷ আর মহান আল্লাহ তাদেরকে গাঁধার সাথে তুলনা করেছেন ৷(১৩)

মহান আল্লাহ বলেন,

ومن يبتغ غير الاسلام دينا فلن يقبل منه- وهو في الاخرة من الخسرين ٥

“নিশ্চয়ই যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন অন্বেষণ করবে কাষ্নীণকালেও তা কবুল করা হবে না, আর  আখিরাতে সে ক্ষতিগ্রস্হদের অন্তর্ভূক্ত হবে ৷”(সূরা ইমরান- ৩:৮৫)

ভালবাসার এসব দাবীদারকে মহান আল্লাহ চরম পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছেন নবী (صلي الله عليه وسلم) এর Life Style অনুসরণের কথা বলে

قل ان كنتم تحبون الله فاتبعوني يحببكم الله ويغفرلكم ذنوبكم-والله غفور رحيم ٥

“(হে নবী) তুমি বলে দাও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তবে আমার অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহসমূহ মাফ করবেন ৷ আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ৷”(সূরা ইমরান ৩:৩১)

এতো গেলো অসাড় মহব্বতের দাবীদারদের কথা ৷ চতুর্থ এক প্রকার লোক আছে যারা যিয়ারতের নামে জবাই ,মানত , সিজদা,নিজের চাওয়া-পাওয়া, সাহায্য, অভাব দূরীকরণ, সুখ-দু:খ ইত্যাদি যাবতীয় ব্যাপারসমূহ আল্লাহর জন্য নির্ধারিত না করে মূর্তি, পীর,ল্যাংটা ফকীর, মাজার ইত্যাদির জন্য নির্ধারিত করে ৷ কখনও বা মৃত পীর বা কোন মাজারকে ঘিরে ওরস পালন করা হয় ৷ তাঁরা ওসীলার নামে মাধ্যম নির্ধারণ করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য ৷ অথচ এইসবগুলোই হলো বড় শিরক এবং বড় ধরনের জুলুম ও অজ্ঞতার শামীল ৷ যেমন মহান আল্লাহ বলেন,

ومن اضل ممن يدعوا من دون الله من لا يستجيب له الي يوم القيامة وهم عن دعائهم غٰفلون٥ واذا حشر الناس كانوا لهم اعداء وكانوا بعبادتهم كفرين ٥

“তার চাইতে অধিক গোমরাহ আর কে হতে পারে যে আল্লাহ ছাড়া এমন কাউকে ডাকে যে কেয়ামত পর্যন্ত তার ডাকে সাঁড়া দিবেনা এবং তারাতো তাদের ডাক সম্পর্কেও বেখবর ৷ যখন মানুষকে একত্রিত করা তখন তারা তাদের শত্রু হবে এবং তাদের ইবাদতকে অস্বীকার করবে ৷”(সূরা আহক্বাফ ৪৬:৫-৬)

মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে বলছেন,

الا لله الدين الخالص – والذين اتخذوا من دونه اولياء- ما نعبدهم الا ليقربونا الي الله زلفي-ان الله يحكم بينهم في ما هم فيه يختلفون – ان الله لا يهدي من هو كٰذب كفار ٥

“সাবধান ! নিশ্চয়ই একনিষ্ঠভাবে ইবাদত(১৪) পাওয়ার অধিকার কেবল আল্লাহর ৷ আর তারা আল্লাহকে ছাঁড়া অন্যকে আউলিয়া(১৫) সাব্যস্ত করে নিয়েছে ৷ তারা বলে আমরা তাদের কাছে প্রচন্ড ভালবাসা ও ভয়ের সাথে নিজেকে সোঁপে দেই(১৪) কেবল এজন্য যে তাঁরা আমাদেরকে আল্লাহর কাছে পৌছে দেবে, যেন আমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারি ৷ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের মাঝে ফয়সালা করে দেবেন যে বিষয়ে তাঁরা ফয়সাল করত ৷”(সূরা যুমার ৩৯:৩)

আবার এই ফয়সালার ধরণ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেন এইভাবে,

ويوم يحشرهم وما يعبدون من دون الله اولياء فيقول ءانتم اضللتم عبادي هٰؤلاء ام هم ضلوا السبيل ٥ قالوا سبحٰنك ما كان ينبغي لنا ان نتخذ من دونك من اولياء ولكن متعتهم وابائهم حتي نسوا الذكر- وكانوا قوما بورا ٥ فقد كذبوكم بما تقولون فما تستطيعون صرفا ولا نصرا – ومن يظلم منكم نذقه عذابا كبيرا ٥

“আর সেদিন আমি তাদেরকে এবং তাঁরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে প্রচন্ড ভয়, বিনয় ও ভালবাসা সহকারে ডাঁকত(১৪) তাদেরকে একত্রিত করব ৷ তখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করব, তোমরাই কি আমার বান্দাদেরকে গোমরাহ করেছিলে নাকি তারা নিজেরাই গোমরাহ হয়েছিল ৷ তারা বলবে, আপনি মহা পবিত্র ! আপনি ছাড়া অন্য কাউকে ‘আউলিয়া'(১৫) সাব্যস্ত করা আমাদের জন্য শোভনীয় ছিল না ৷ আপনিই তাদেরকে ও তাদের পিতৃপুরুষদেরকে ভোগসামগ্রী দিয়েছিলেন ৷ ফলে তারা আপনার স্মরণ থেকে সরে গেল ৷ (এভাবেই) তাঁরা ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিতে পরিণত হলো ৷ (অতঃপর আল্লাহ শিরককারীদের উদ্দেশ্য করে বলবেন,) তারা তো তোমাদের কথাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করল ৷ সুতরাং আজ  তোমাদেরকে আমার আযাব থেকে ছাঁড় দেওয়া হবে না আর না তোমরা কোন প্রকার সাহায্য পাবে ৷ আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ শিরকে(১৬) লিপ্ত হবে তাকে আমি মহাশাস্তি আস্বাদন করাব ৷”(সূরা ফুরক্বান ২৫:১৭-১৯)

আমরা আরো দেখি যে, রাসূলুল্লাহ (صلي الله عليه وسلم) বলেছেন,

ولا تجعلوا قبري عيدا –

“আর তোমরা আমার কবরকে ওরস বা ঈদ-উৎসব পালনের স্হানে পরিণত করো না৷”(১৭)

তাহলে আর কে আছে যার কবরের ক্ষেত্রে এমনটি করা যেতে পারে ৷

আমরা আরো দেখি তিনি দোয়া করতেন,

اللهم لا تجعل قبري وثنا يعبد -اشتد غضب الله علي قوم اتخذوا قبور انبيائهم مساجدا –

“হে আল্লাহ ! তুমি আমার কবরকে মূর্তিপূজার স্হানের অনুরূপ কোন স্হানে পরিণত করো না ৷ নিশ্চয়ই ঐ জাতির প্রতি আল্লাহ অত্যন্ত রাগান্বিত হন যারা তাদের নবী-পয়গম্বরদের কবরকে মসজিদ বানায় !(১৮)

শুধু তাই নয় রাসূল (صلي الله عليه وسلم) তাদেরকে লা’নত বা অভিশাপও করেছেন এমন কাজের জন্য ৷ আয়িশাহ (رضي الله عنهما) ও আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنهما) এর বর্ণনায় এসেছে,তাঁরা উভয়ে বলেন,

لما نزل برسول الله صلي الله عليه وسلم طفق يطرح خميصة له علي وجهه فاذا اغتم كشفها عن وجهه وهو كذالك يقول لعنة الله علي اليهود والنصارٰي اتخذوا قبور انبيائهم مساجد يحذر ما صنعوا-

“রাসূলুল্লাহ (صلي الله عليه وسلم) এর (মৃত্যুকালীন) রোগ যণ্ত্রণার সময় যখন তিনি অস্হির হয়ে যেতেন তখন তিনি তাঁর কালো চাঁদর দিয়ে মুখ ঢেঁকে নিতেন এবং যখন জ্বরের উষ্ণতা কিছুটা কমে আসত তখন মুখ থেকে চাঁদর সরিয়ে নিতেন ৷ এমনি সময় তিনি বলতেন, ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক, তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছে ৷ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য সতর্ক করা হয়েছে ৷”(১৯)

এভাবে কথা বলতে বলতে রাত তখন সাঁড়ে দশটা ৷ বাইরে তখনও প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে ৷ ভাইয়া ঘড়ির দিকে তাঁকালেন ৷ তারপর আমাদেরকে বললেন, শোন ! রাত অনেক হয়েছে ৷ সকালে সালাতের জন্য উঠতে হবে ৷ তবে আলোচনার ইতি টানব ৫ম ব্যাক্তির আলোচনার দ্বারা ৷

তারা হলো সেই লোক যারা সালাত পরিত্যাগ করে আল্লাহর সাথে শিরক করছে !  যেমন মহান আল্লাহ বলছেন,

منيبين اليه واتقوه واقيموا الصلوة ولا تكونوا من المشركين ٥

“তোমরা একনিষ্ঠভাবে কেবল তাঁরই অভিমূখী হও,কেবল তাকেই ভয় কর এবং সালাত কায়েম কর আর মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত হয়ো না ৷”(সূরা রূম ৩০:৩১)

তাহলে এই আয়াত থেকে আমরা দেখলাম,  সালাত পরিত্যাগকারীকেও মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ধরা হয়েছে ৷ (২০)

আবার কোরআনের অন্য আয়াতে সালাতকে ‘ইমান’ বলা হয়েছে ৷ (২১)

তাই আমরা কোরআনের ব্যাখ্যা তথা রাসূল (صلي الله عليه وسلم) এর হাদীসেও সালাত ত্যাগ করাকে শিরক, কুফর ও দ্বীন থেকে বহিস্কার হওয়ার মত কথার উল্লেখ পাওয়া যায় ৷(২২) যেমন আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) এর বর্ণনায় এসেছে,  রাসূলুল্লাহ (صلي الله عليه وسلم) বলেছেন,

ليس بين العبد والشرك الا ترك الصلاة – فاذا تركها فقد اشرك

“বান্দা ও শিরকের মধ্যে পার্থক্য হলো কেবল সালাত পরিত্যাগ করা ৷ যখন সে তা পরিত্যাগ করল সে অবশ্যই শিরক করল ৷”(২৩)

এভাবে এক পর্যায়ে আমাদের আলোচনার ইতি ঘটল  ৷ রাকিব ও আমি খুবই মনযোগ দিয়ে ভাইয়ার কথা শুনছিলাম ৷ কিছুক্ষণ পর রাকিব তাঁর বেড রুমে চলে গেল ৷ ওদিকে ভাইয়াও নিজ বিছানায় শুয়ে পড়লেন ৷ কিন্তু আমি ভাবছিলাম অন্য কথা !

অন্যসব ব্যাপারে আমরা কতই না সঁচেতন ৷ এমনকি সামান্য হাঁত ধোয়ার ব্যাপারেও ৷ তাহলে শিরকের মত এত নিঁখুত এবং এত বড় ধরনের জুলুম সম্পর্কে আমরা কেন এত অসঁচেতন ৷ অথচ এটা দিনের আলোর মত পরিস্কার যে , শিরক করে জান্নাতের আকাঙ্খা আর পানির নিচে রসগোল্লা খাওয়া একই কথা ৷ ভাইয়ার কথা থেকে এমনটাই বুঝে আসল ৷

আচ্ছা ! আপনার কি মনে হয় না এটা আমাদের জাতীয় রসগোল্লা চ্যালেন্জ্ঞ ! যদি হাঁত ধোঁয়ার জন্য দিবস থাকে তবে এমন একটি দিবসও থাঁকা দরকার যার নাম হবে ‘জাতীয় রসগোল্লা দিবস’ ৷ আপনি কি বলেন !

টীকা:

১৷ সৈয়দ মুজতবা আলী রচনাবলী, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৬-১৪

২৷ বিস্তারিত দেখুন,সংক্ষিপ্ত তাফসীর, আবূ বকর যাকারিয়া, পৃষ্ঠা ৪৫, টীকা ১ ৷

৩৷ এদের মধ্যে মানসুর হাল্লাজ অন্যতম ৷ দেখুন, মাজমাউল ফতোয়া, ইবনে তাইমিয়্যাহ ,খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৮০ ৷ ফানা হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আরো জানতে দেখুন, ইবাদতের মর্মকথা, ইবনে তাইমিয়্যাহ, আধুনিক প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ১০৯-১০৭

৪৷ সুনান আবূ দাউদ, অধ্যায় ৩৬: শিষ্টাচার , অনুচ্ছেদ ৮৪, হাদীস ৪৯৮০, হাদীসের মান: সহীহ, তাহক্বীক: আলবানী  ৷ আরো দেখুন, রিয়াদুস সালেহীন ১৭৫৪

৫৷ সুনান আবূ দাউদ, অধ্যায় ৩৬: শিষ্টাচার , অনুচ্ছেদ ৮৫, হাদীস ৪৯৮১, হাদীসের মান: সহীহ, তাহক্বীক: আলবানী

৬৷ দেখুন, সূরা মুজাদালাহ ৫৮:৭, সূরা হাদীদ ৫৭:৪, সূরা ফজর ৮৯:১৪, সূরা ক্বফ  ৫০:১৬ সহ আরও অনেক আয়াত; আরও দেখুন, ইবাদতের মর্মকথা, ইবনে তাইমিয়্যাহ, আধুনিক প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ১০৯

৭৷ সূরা বাক্বারা ২:৩৬ এর ব্যাখ্যা দেখুন, সংক্ষিপ্ত তাফসীর-আবূ বকর যাকারিয়া মাদানী, পৃষ্ঠা ৩৬, টীকা ১!

৮৷সূরা আবাসা, ৮০:১-১২,

৯৷ সূরা বাক্বারা ২:৩০-৩৯,

১০৷ সূরা বাক্বারা ২:৩৭, সূরা আরাফ ৭:২৩

১১৷  সূরা কাহাফ ১৮:৬০-৮২  ; দেখুন সংক্ষিপ্ত তাফসীর, আবূ বকর যাকারিয়া মাদানী, পৃষ্ঠা ১৫৭৫ থেকে ১৫৮৪ ৷ আরো দেখুন সহীহ বুখারী ৩৪০০, ৩৪০১

১২৷ সহীহ বুখারী ৭৪৪০

১৩৷ সূরা জুমুআহ ৬২:৫-৭; আরো দেখুন ইবাদতের মর্মকথা, ইবনে তাইমিয়্যাহ, আধুনিক প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ৯৭-১০৮

১৪৷ ইবাদতের মর্মকথা, ইবনে তাইমিয়্যাহ, আধুনিক প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ১৩-২৩

১৫৷ এর ব্যাখ্যা দেখুন সূরা যুমার ৩৯:৩ এ, অথবা দেখুন তাফসীর ইবনে কাসীর, অনুবাদ: ড. মুজিবুর রহমান, সংশোধিত সংস্করণ, ১৫ তম খন্ড, পৃষ্ঠ ২৩৮-২৪১ ৷

১৬৷ এখানে يظلم শব্দ দ্বারা শিরক বুঝানো হয়েছে ৷ দেখুন তাফসীর ইবনে কাসীর, অনুবাদ: ড. মুজিবুর রহমান, সংশোধিত সংস্করণ, ১৫ তম খন্ড, পৃষ্ঠা ২৩৮-২৪১ ৷ অথবা দেখুন সংক্ষিপ্ত তাফসীর, আবূ বকর যাকারিয়া মাদানী, পৃষ্ঠা ১৯০৮, টীকা ১ ৷

১৭৷সুনান আবূ দাউদ, অধ্যায় ৫, অনুচ্ছেদ ১০০, হাদীস ২০৪২, হাদীসের মান: সহীহ, তাহক্বীক: আলবানী

১৮৷মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হাদীস ৪০৩, ইমাম শাফেয়ীর শর্তানুযায়ী সহীহ

১৯৷ সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৪৪৪৩ ও ৪৪৪৪

২০৷ দেখুন তাফসীর ইবনে কাসীর, অনুবাদ: ড. মুজিবুর রহমান, সংশোধিত সংস্করণ, ১৫ তম খন্ড, পৃষ্ঠা ৬৫৭

২১৷ সূরা বাক্বারা ২:১৪৩ নং আয়াতের ব্যাখ্যা দেখুন, সংক্ষিপ্ত তাফসীর, আবূ বকর যাকারিয়া মাদানী, পৃষ্ঠা ১৩৮-১৩৯, টীকা নং-২ ৷ তাফসীর ইবনে কাসীর, অনুবাদ: ড. মুজিবুর রহমান, সংশোধিত সংস্করণ, ১ম-৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৪১০-৪১১ ৷

২২৷ সহীহ মুসলিম ১৩৪, সুনান ইবনে মাজাহ ১০৭৯ (সহীহ)

২৩৷ সুনান ইবনে মাজাহ, অধ্যায় ৫, অনুচ্ছেদ ৭৮, হাদীস ১০৮০, হাদীসের মান: সহীহ, তাহক্বীক: আলবানী

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment