অভিধানে হুনাইন শব্দের অর্থ বাসনা প্রকাশ করা, রোদন করা এবং ওই উষ্ট্রীর আওয়াজ যার কাছ থেকে তার বাচ্চাকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জিয্অ শব্দের অর্থ গাছের ডাল। উস্তুনে হান্নানার হাদীছখানা সাহাবা কেরামের এক বিরাট গোষ্ঠী বর্ণনা করেছেন। মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া কিতাবে হজরত তাজুদ্দীন সুবকী বলেছেন, শরহে মুখতাসার ইবনে হাজেব কিতাবে বলা হয়েছে, উস্তুনে হান্নানার হাদীছখানা সর্বজনবিদিত। এটাই বিশুদ্ধ মত। এই হাদীছ বোখারী, মুসলিম ও অন্যান্য হাদীছগ্রন্থে অসংখ্য ও অগণিত সনদের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে।
হতে পারে এ হাদীছ কারও কারও কাছে মুতাওয়তির (সর্বজনবিদিত) নয়। শায়েখ ইবনে হাজার (رحمة الله) ফতহুলবারীতে বলেছেন, উন্তুনে হান্নানা এবং চন্দ্র দ্বিখন্ডিত করার হাদীছ মশহুর। যারা হাদীছ-বিশেষজ্ঞ তাদের নিকট এ সকল বিবরণ গুরুত্বপূর্ণ বটে। আর যারা হাদীছবিদ্যার সাথে সম্পর্ক রাখেন না, তাদের নিকট বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে নাও হতে পারে। ওয়াল্লাহু আ’লাম।
ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) বলেন, উস্তুনে হান্নানার ঘটনা একটি প্রকাশ্য ব্যাপার, যা সলফে সালেহীন পূর্ববর্তীগণ থেকে বড় বড় মোজেজার অন্যতম হিসেবে পেয়েছেন। এই ঘটনাটি নবী করীম (ﷺ) এর নবুওয়াতের দলীলরূপে গৃহীত হয়ে থাকে।
ইমাম শাফেয়ী বলেন, আমাদের নবী (ﷺ) কে যা কিছু দান করা হয়েছে, এতোকিছু আল্লাহ্পাক অন্য কোনো নবীকে দান করেননি। তিনি আরও বলেছেন, হজরত ঈসা (عليه السلام) কে আল্লাহ্তায়ালা মৃতকে জীবিত করার মোজেজা দান করেছেন, আর আমাদের নবী (ﷺ) কে মৃতবৃক্ষ উন্তুনে হান্নানাকে জীবন্ত প্রাণীর ন্যায় করে দেখাবার মোজেজা দান করেছেন। মৃত খেজুরবৃক্ষের ডাল জীবন্ত প্রাণীর মতো বিলাপ করে কেদেঁছে। তার বিলাপ ও রোদনের আওয়াজ সবাই শুনেছে। এটি তো মৃতকে জীবিত করার চেয়েও অধিকতর বিস্ময়কর। তারপর তিনি সাহাবীগণের সংখ্যা আলোচনা করেছেন, যারা উক্ত ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তার সাথে সাথে তিনি উক্ত বিবরণসমূহের সূত্র এবং তরিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন, যার বর্ণনা অতিদীর্ঘ।
➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله)]