হরিণের কথা বলা সম্পর্কে বিভিন্ন সনদের মাধ্যমে বহু হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। উক্ত বর্ণনাসমূহ একে অপরকে দৃঢ়তা দিয়েছে। কাযী আয়ায (رحمة الله) আশশেফা কিতাবে এবং আবু নঈম (رحمة الله) দালায়েল কিতাবে হজরত উম্মে সুলায়েম থেকে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, একদা রসুলেপাক (ﷺ) মরুভূমি অতিক্রম করছিলেন। অকস্মাৎ ‘ইয়া রসুলাল্লাহ!’ এরকম তিনটি আওয়াজ শোনা গেলো। রসুলেপাক (ﷺ) সেই আওয়াজের দিকে অগ্রসর হলেন। দেখলেন, একটি হরিণী বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে। কাছেই এক বেদুইন চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। তিনি হরিণীকে লক্ষ্য করে বললেন, বলো, কী প্রয়োজন তোমার? হরিণীটি বললো, আমাকে এই লোকটি শিকার করে বেঁধে রেখেছে। আমার দু’টি বাচ্চা এই পাহাড়ের গর্তের ভিতর রয়েছে। আপনি যদি আমাকে মুক্ত করে দেন, তাহলে বাচ্চা দু’টিকে দুধ পান করিয়ে আবার আমি ফিরে আসবো।
তিনি বললেন, তুমি কি আবার ফিরে আসবে?
হরিণীটি বললো, ফিরে না এলে আল্লাহ্তায়ালা আমাকে যেনো ওই আযাব প্রদান করেন, যে আযাব তিনি যাকাত আত্মসাৎকারীর জন্য নির্ধারণ করেছেন।
রসুলেপাক (ﷺ) তাকে মুক্ত করে দিলেন। সে চলে গেলো। অল্পক্ষণ পরেই আবার ফিরে এলো। রসুলেপাক (ﷺ) তাকে আগের মতো বেঁধে রাখলেন।বেদুইন লোকটি জেগে উঠে বললো, ইয়া রসুলাল্লাহ্! আপনার কি কোনো উদ্দেশ্য আছে?
তিনি বললেন, আমি ইচ্ছা করি, তুমি হরিণীটিকে মুক্তি দাও। লোকটি হরিণীটিকে ছেড়ে দিলো। সে মনের আনন্দে চক্কর দিয়ে দিয়ে দৌড়ে পাহাড়ের দিকে চলে গেলো। যাওয়ার সময় হরিণীটি সাক্ষ্য দিচ্ছিলো, আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়া আশহাদু আন্না মোহাম্মাদার রসূলুল্লাহ্।
আরেকটি ঘটনা- নবী করীম (ﷺ) এক সৈন্যবাহিনীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। সেনাদল ছিলো তৃষ্ণার্ত। এক সময় দেখা গেলো একটি জলাশয়। এমন সময় একটি হরিণী নবী করীম (ﷺ) এর নিকটে এলো। তিনি হরিণীর দুধ দোহন করলেন এবং বাহিনীর সকল সৈন্যকে পান করিয়ে দিলেন। সৈন্যসংখ্যা ছিলো প্রায় তিনশ’। নবী করীম (ﷺ) তাঁর গোলাম হজরত রাফে(رضي الله عنه)কে বললেন, তুমি হরিণীটির প্রতি লক্ষ্য রেখো। তিনি হরিনীটিকে বেঁধে ফেললেন। কিছুক্ষণ পর দেখলেন, সে পালিয়ে গেছে। একথা শুনে রসুলেপাক (ﷺ) বললেন, যিনি তাকে এনে দিয়েছিলেন, তিনিই তাকে নিয়ে গিয়েছেন।
➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله)]