হজ্জ আদায় না করা কিংবা হজ্জ আদায়ে গাফলতি করার ভয়ঙ্কর পরিণাম

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

আমীরুল মুমিনীন সাইয়্যেদুনা মাওলা আলী শেরে খোদা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে পাক সাহেবে লাওলাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি (হজ্জ আদায় করার) সম্বল এবং এমন আরোহীর মালিক হবে, যা বায়তুল্লাহ শরীফ পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম অথচ হজ্জ আদায় করলো না সে ইহুদী হয়ে মৃত্যুবরণ করল অথবা নাসারা হয়ে মৃত্যুবরণ করল তাতে কোন তারহতম্য নেই। কেননা আল্লাহ পাক বলেন সামর্থ্যবান মানুষের উপর আল্লাহর ঘরের হজ্জ আদায় করা অপরিহার্য।  [তিরমিযী শরীফ]

وَعَنْ اَبِىْ اُمَامَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ لَّمْ يَمْنَعْهُ مِنَ الْحَجٍّ حَاجَةٌ ظَاهِرَةٌ اَوْ سُلْطَانٌ جَآئِرٌ اَوْ مَرَضٌ حَابِسٌ فَمَاتَ وَلَمْ يَحُجَّ فَلْيَمُتْ اِنْ شَآءَ يَهُوْدِيًا وَاِنْ شَآءَ نَصْرَ انِيًا (رواه الدارمى)

অর্থাৎ (প্রখ্যাত সাহাবী-ই রাসূল সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাইয়্যেদুনা) হযরত আবূ উমামা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করীম রঊফুর রহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, প্রকাশ্য অভাব-অনটন কিংবা যালিম বাদশাহ অথবা দুরারোগ্য ব্যাধি যাকে হজ্জ পালনের বাধা প্রদান করলো না আর সে হজ্জ আদায় না করে মৃত্যু বরণ করলো-চাই সে ইহুদী হয়ে মৃত্যুবরণ করুক অথবা নাসারা হয়ে মৃত্যুবরণ করুক (তাতে কোন ব্যবধান নেই। (দারেমী শরীফ)

قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَيْسَرَ وَلَمْ يَحُجًّ وَمَاتَ عَلى ذَلِكَ فَهُوَ فِى النَّارِ ذَاتِ الْوَحْشَةِ وَالظَّلاَمِ

অর্থাৎ রাসূলে খোদা আশরাফে আম্বিয়া সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, সামর্থবান হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি হজ্জ আদায় না করে মৃত্যুবরন করলো সে যেন ভয়ানক অন্ধকারাচ্ছন্ন জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হলো। উপরোক্ত বর্ণনাসমূহের আলোকে প্রতীয়মান হয় যে সামর্থবান হওয়া সত্ত্বেও হজ্জ আদায় না করেন মৃত্যুবরণকারীর মৃত্যু ঈমানের সাথে হলো কিনা তাতে সমূহ সন্দেহ রয়েছে। (নাঊযুবিল্লাহ) কেননা হজ্জ আদায় না করার মধ্যে দিয়ে যেন হজ্জ ফরয হওয়াকে অস্বীকার করা হলো। এজন্য মৃত্যুর পর সে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে।

وَعَنْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَابِعُوْا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَاِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الْفَقْرَوَالذُّنُوْبَ كَمَا يَنْفِى الْكِيْرُ خُبْثَ الْحَدِيْدِ وَالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَيْسَ لِلْحَجَّةِ الْمَبْرُوْرَةِ ثَوَابٌ اِلَّا الْجَنَّةُ (رواه التر مذى والنسائى)

অর্থাৎ (প্রখ্যাত সাহাবী সাইয়্যেদুনা) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে পাক সাহেবে লাওলাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, তোমরা হজ্জ্ ও ওমরা একসঙ্গে আদায় করো। কেননা এ দুটি অভাব-অনটন এবং পাপসমূহকে তেমনভাবে দূরীভূত করে যেভাবে ভাট্টি স্বর্ণে-রৌপ্য ও লোহার মরিচাকে দূরীভূত করে দেয়। আর হজ্জে মাবরূরের প্রতিদান একমাত্র জান্নাতই । [তিরমিযী ও নাসায়ী শরীফ]
প্রখ্যাত সাহাবী-ই রাসূল সাইয়্যেদুনা হযরত আবূ মুসা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, আল্লাহর ঘরের হজ্ব আদায়কারী হাজী স্বীয় পরিবারের চারশত ব্যক্তির (নাজাতের) জন্য (আল্লাহর নিকট) শাফাআত করবেন এবং তারা গুনাহসমূহ থেকে মাতৃগর্ভে হতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিনের ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে যাবে। [মুসনাদে বাযযার]
প্রসিদ্ধ সাহাবী-ই রাসূল সাইয়্যেদুনা হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে পাক সাহেবে লাওলাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, এ ঘর (অর্থাৎ বায়তুল্লাহ শরীফ) ইসলামের স্তম্ভসমূহের অন্যতম একটি স্তম্ভ। অতঃপর যারা এ ঘরের হজ্জ কিংবা ওমরাহ করবে সে আল্লাহ পাকের যিম্মায় আশ্রয়পাপ্ত হবে। যদি মৃত্যুবরণ করে আল্লাহ পাক তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন। আর যদি ঘরে ফিরে যায় তবে সাওয়াব এবং গণীমত সহকারে আল্লাহ পাক তাকে ঘরে পৌঁছাবেন।
এছাড়াও অসংখ্য রেওয়ায়ত রয়েছে, যেগুলো দ্বারা প্রমাণিত হয় ও হজ্জের ফযীলত, বরকত, মরতবা-মহিমা অপরিসীম, হজ্জের বরকতে মুমিনের দৈহিক ও আত্মিক পরিশুদ্ধি অর্জিত হয় যা ইহকালীন ও পরকালীন চুড়ান্ত সাফল্যের নিশ্চিত সাহায়ক হয়।  -সুত্রঃ গাউসিয়া তারবিয়াতী নেসাব-

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment