৭. পার্থিব জীবনে আল্লাহর দিদার লাভ একমাত্র নবী (ﷺ) এর জন্য খাস। এই বিষয়ে সামনে আলোকপাত করা হবে। (আল-মুনতাকিদ, ৬১পৃ.) ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) উল্লেখ করেন-
اخرجه الْبَيْهَقِيّ فِي كتاب الرُّؤْيَة بِلَفْظ ان الله اصْطفى إِبْرَاهِيم بالخلة وَاصْطفى مُوسَى بالْكلَام وَاصْطفى مُحَمَّدًا بِالرُّؤْيَةِ
-“ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) ‘কিতাবুল রুয়া’ত’ এ বর্ণনা করেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) সূত্রে অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘য়ালা ইবরাহীম (رحمة الله) কে বন্ধুত্ব, মূসা (رحمة الله) কে আলাপ এবং হযরত মুহাম্মদ (رحمة الله) কে তাঁর দীদার দ্বারা একক মর্যাদা দান করেছেন।’’
➤ ইমাম কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ২/২৭০ পৃষ্ঠা, ইমাম জালালুদ্দীন সূয়তী : খাসায়েসুল কোবরা : ১/১৬১,পৃষ্ঠা, ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহেব : ৫/১১৭ পৃষ্ঠা, মোল্লা আলী ক্বারী : শরহে শিফা : ১/৪৭০ : পৃ:
পরকালে প্রত্যেক সুন্নি মুসলমানদের জন্য সম্ভব বরং অবশ্যম্ভাবী।
➤ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, কিতাবুর রিকাক, হা/৬২০৪ এবং হা/৬৯৯৯
রূহানী বা স্বপ্নযোগে সাক্ষাৎ অন্যান্য আম্বিয়ায়ে ও আওলিয়ায়ে কিরামের জন্যও সম্ভব। আমাদের ইমাম হযরত আবু হানিফা (رحمة الله) স্বপ্নে একশ‘বার আল্লাহর সাক্ষাত লাভ করেছেন। (আল-মুনতাকিদ, ৬১-৬২পৃ., ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, ১/১১৮পৃ.)
অসংখ্য ওলীরা মহান আল্লাহকে স্বপ্নযোগে দেখেছেন; তার অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়। ইমাম নববী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-
قَالَ الْقَاضِي وَاتَّفَقَ الْعُلَمَاءُ عَلَى جَوَازِ رُؤْيَةِ اللَّهِ تَعَالَى فِي الْمَنَامِ وَلَا اخْتِلَافُ
-‘‘ইমাম কাযি আয়্যায (رحمة الله) বলেন, সমস্ত উলামাগণ একমত পোষণ করেছেন যে, স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা বিশ্বাস বৈধ। এ ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে কারো কোনো মতভেদ নেই।’’
➤ ইমাম নববী, শরহে মুসলিম, ১৫/২৫পৃষ্ঠা, ইবনে হাজার আসকালানী, ফতহুল বারী, ১২/৩৮৭পৃষ্ঠা,
বিখ্যাত আকায়েদবিদ সা‘দ তাফতাযানী (ওফাত. ৭৯৩হি.) এ প্রসঙ্গে লিখেন-
وَلَا خَفَاءَ أَنَّهَا نَوْعُ مُشَاهَدَةٍ تَكُوْنُ بِالْقَلْبِ دُوْنَ الْعَيْنِ
-‘‘এটা স্পষ্টত একপ্রকারের দর্শন, যা অন্তরের মাধ্যমে হয়ে থাকে; চাক্ষুষ দেখা নয়।’’
➤ শারহুল মাওয়াকিফ,
ইমাম বাগভী (رحمة الله) এ প্রসঙ্গে লিখেন-
قَالَ الإِمَامُ: رُؤْيَةُ اللَّهِ فِي الْمَنَامِ جَائِزَةٌ،……وَتَكُونُ رُؤْيَتُهُ جَلَّتْ قُدْرَتُهُ ظُهُورَ الْعَدْلِ، وَالْفَرَجِ، وَالْخِصْبِ، وَالْخَيْرِ لأَهْلِ ذَلِكَ الْمَوْضِعِ، فَإِنْ رَآهُ فَوَعَدَ لَهُ جَنَّةً، أَوْ مَغْفِرَةً، أَوْ نَجَاةً مِنَ النَّارِ، فَقَوْلُهُ حَقٌّ، وَوَعْدُهُ صِدْقٌ، وَإِنْ رَآهُ يَنْظُرُ إِلَيْهِ، فَهُوَ رَحْمَتُهُ، وَإِنْ رَآهُ مُعْرِضًا عَنْهُ، فَهُوَ تَحْذِيرٌ مِنَ الذُّنُوبِ
-‘‘ইমাম বলেন, স্বপ্নে আল্লাহ কে দেখা বৈধ।……স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা সম্ভবপর। যদি কেউ তাঁকে জান্নাত কিংবা মাগফিরাত বা নাজাতের কথা বলতে দেখে, তা হলে তাঁর কথা হক্ক ও তাঁর ওয়াদা সত্য। যদি সে তাঁকে তার প্রতি দৃষ্টি দান করতে দেখে, তবে তা তার প্রতি দয়ার লক্ষণ আর যদি তাঁকে অবজ্ঞা করতে দেখে, তবে তা হবে পাপ থেকে সতর্ক করার লক্ষণ।’’
➤ বাগাভী, শারহুস সুন্নাহ, ১২/২২৭পৃষ্ঠা, হা/৩২৮৮