সেদিনকার আফসোসের কি মূল্য!

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

এই তো সেদিনকার কথা। গিয়েছিলাম সুনামগঞ্জ ভ্রমণে। পাহাড়গুলোর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে কে ওপরে উঠার লোভ সামলাতে পারে? পাহাড়ের চূড়া গুলোকে ছুঁয়ে আছে সাদা সাদা মেঘ। কোনো কোনো পাহাড়কে আবার মেঘগুলো ভেদ করে আরো ওপরে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। চূড়ায় যেতে পারলে মেঘগুলোকে নিচে দেখা যাবে হয়তো।

শেষমেশ একটা পাহাড়ে ওঠার সিদ্ধান্ত নিলাম বন্ধুরা মিলে। ওপরে ওঠার আনন্দে ভুলে গিয়েছিলাম সামনের সব পরিকল্পনা। বহু কষ্ট করে ওঠার পর মনে হলো তৃষ্ণায় আর পারা যাচ্ছে না। যাহ বাবা! সব আনন্দই যেন মাটি। পানি আনতেই ভুলে গেলাম। তীব্র তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে কাঠ। নিজেকে শত ধিক্কার দিতে লাগলাম। পানি টা মনে করে আনলে জায়গাটা আরো কতোই না উপভোগ্য হতো! কিন্তু আফসোস করেও আর লাভই বা কি।

‘এবং সেদিন জাহান্নামকে উপস্থাপন করা হবে; সেদিন মানুষ ভাববে এবং এখন তার ভাববার সময় কোথায়? বলবে, হায়! কোনো রকমে আমি যদি সৎকর্ম অগ্রীম পাঠাতে পারতাম।’ [১] এই আয়াতটা দেখে আমার সেদিনকার এই ঘটনাটা মনে পরে গেল। কতই না আফসোস ছিল মাত্র সামান্য পানির জন্য। নিজেকে কতই না ধিক্কার দিচ্ছিলাম।

আর যেদিন রব তায়ালা অসংখ্য বান্দাদের মধ্যে তাঁর প্রিয় বান্দাদের বলবেন— ‘হে প্রশান্ত আত্না! তুমি রবের নিকট ফিরে যাও এভাবে যে, তুমি তাঁর ওপর সন্তুষ্ট এবং তিনি তোমার ওপর সন্তুষ্ট। অতঃপর আমার খাস বান্দাদের মধ্যে প্রবেশ করো। এবং আমার জান্নাতে এসো।’ [২] যেদিন পিপাসা হবে তীব্র থেকে তীব্রতর। সূর্য তার সমস্ত তাপ নিয়ে মাথার ওপর এসে হাজির হবে। পায়ের নিচের জমিনও সেদিন উত্তাপ ছড়াবে। ঘামে ডুবে থাকবে মানুষ।

সেদিন উপস্থিত সকল হতভাগ্যদের, শত আফসোসের ছাপ ফুটে ওঠবে তাদের চেহারায়। চেহারা হয়ে যাবে বিকৃত এবং বলতে থাকবে— ‘হায়! যদি কিছু সৎকর্ম অগ্রীম পাঠাতাম!’ কিন্তু সেদিন আফসোসের কোনোই মূল্য থাকবে না। কাজে আসবে না সেই ধিক্কার। যারা দুনিয়ার তামাশায় মগ্ন হয়ে আগামী জীবনের পরিকল্পনা ভুলে গিয়েছিল! যারা কিছু নেক আমল অগ্রীম পাঠাতে ভুলে গিয়েছিল! সেদিন তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ।

তাহলে, আমাদের এখনই কি উচিত নয় জীবনের বাকী থাকা নিশ্বাসগুলো নষ্ট না করে সেগুলোর কদর করা? প্রত্যেকটা নিশ্বাস যেন হয় লাভজনক। যেন এই সময়টাতে আগামীর জন্য কিছু পরিকল্পনা করতে পারি। যেন আগামী জন্য কিছু পাথেয় সংগ্রহ করতে পারি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তৌফিক দান করুন।

Reference:

[১] সূরা ফজর, ২৩-২৪।

[২] সূরা ফজর, ২৭-৩০।

[ছবিটি গুগল থেকে ডাউনলোড করা।]

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment