সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম কি? এর কোন সহিহ দলিল আছে কিনা?

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

🌿নিয়্যতঃ

━━━━━━━━━━━

নাওয়াইতুয়ান উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবা’আ রাকাআতি ছালাতিল তাসবীহ সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবর।

অর্থঃ সালাতুত তাসবিহ চার রাকাত নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামূখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবর ।

🌿আদায়ের সময়ঃ

━━━━━━━━━━━

জাওয়াল,সুর্যাস্ত,সূর্যোদয়,নামায এর জন্য নিষিদ্ধ ও মাকরুহ সময় বাদে দিন অথবা রাতের যেকোন সময় একবারে চার রাকাত এ এই নামায আদায় করতে হয়। কিন্তু যোহরের আগে পড়াকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।

[ফাত্বয়াহ আলামগীরী]

🌿সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়মঃ

━━━━━━━━━━━

চার রাকাত নামায।প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর,যে কোন সূরা পড়তে পারেন।তবে এই নামাযে বিশেষত্ব এই যে, প্রতি রাকাতে ৭৫ বার করে,চার রাকাতে মোট (৭৫✖৪=৩০০) বার তাসবীহ পড়তে হবে।

🌺 ১ম নিয়ম 🌺

━━━━━━━━━━━

🌴তাসবীহ কিভাবে পরব?

سُبْحاَنَ الله وَالْحَمدُ للهِ وَلآَ اِلَهَ اِلاَّاللهُ وَاللهُ اَكْبرُ

উচ্ছারন: সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।

●১. ১ম রাকাত এ সানা পড়ার পরে তাসবীহ টি ১৫ বার পড়তে হবে

●২. তারপর স্বাভাবিক নিয়মে সুরা ফাতিহা ও অন্য আরেকটি সুরা অথবা অন্তত তিন আয়াত পড়ার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে।

●৩. এরপর রুকুতে গিয়ে রুকুর তাসবীহ পরার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে

●৪. এরপর রুকু হতে দাড়িয়ে গিয়ে “রাব্বানা লাকাল হামদ” পড়ার পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।

●৫. এরপর সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবীহ পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।

●৬. প্রথম সিজদা থেকে বসে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।

●৭. এরপর আবার সিজদায় গিয়ে সিজদার তাসবীহ পরে তাসবীহ টি ১০ বার পড়তে হবে ।

●৮. তারপর একই ভাবে ২য় রাকাত পড়তে হবে, (সুরা ফাতিহা পড়ার আগে তাসবীহ টি ১৫ বার পড়তে হবে।)

●৯. অতপর ২য়রাকাত এর ২য় সিজদার পর “আত্তহিয়্যাতু…”, দরুদ আর দোয়া পড়ার পরে সালাম না ফিরিয়ে,২য় রাকাত এর মতো ৩য় এবং ৪থ রাকাত একই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। (তাসবীহ টি ১৫ বার পড়ে স্বাভাবিক নিয়মে সুরা ফাতিহা ও অন্য আরেকটি সুরা পড়তে হবে)।

❏কোন এক স্থানে উক্ত তাসবীহ পড়তে সম্পূর্ণ ভুলে গেলে বা ভুলে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে কম পড়লে পরবর্তী যে রুকনেই স্মরণ আসুক সেখানে তথাকার সংখ্যার সাথে এই ভুলে যাওয়া সংখ্যাগুলোও আদায় করে নিতে হবে। আর এই নামাযে কোন কারণে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হলে সেই সিজদায়ে সাহুর সিজদা এবং তার মধ্যকার বৈঠকে উক্ত তাসবীহ পাঠ করতে হবে না। তাসবীহের সংখ্যা স্মরণ রাখার জন্য আঙ্গুলের কর গণনা করা যাবে না,তবে আঙ্গুল চেপে স্মরণ রাখা যেতে পারে।

❏আর কেহ যদি উপরোক্ত তাসবীহ বা কলেমার পরে “ওয়া লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিউল আজিম” এই কালিমা যোগ করে তা অতি উত্তম । হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

[সূত্রঃ- এহইয়াউ উলুমুদ্দীন]

ইবনুল মুবারক ও অন্য কয়েকজন বিশেষজ্ঞ সালাতুত তাসবীহ ও তার ফাযীলাত প্রসঙ্গে বর্ণনা করেছেন। আবু ওয়াহব বলেন, আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারককে সালাতুত তাসবীহ প্রসঙ্গে আমি প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহু আকবার বলবে, অতঃপর “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তা’আলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহ গাইরুকা” পাঠ করবে। অতঃপর পনের বার “সুবহানাল্লাহি ওয়াল-হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার” পাঠ করবে। অতঃপর আউযু বিল্লাহ, বিসমিল্লাহ এবং সূরা ফাতিহা ও তার সাথে অন্য সূরা পাঠ করবে। অতঃপর দশবার সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার” পাঠ করবে। অতঃপর রুকূতে গিয়ে দশবার, রুকু হতে মাথা তুলে দশবার, সাজদাহয় গিয়ে দশবার, সাজদাহ হতে মাথা তুলে দশবার এবং দ্বিতীয় সাজদাহয় দশবার উক্ত দু’আ পাঠ করবে। এভাবে চার রাকাআত নামায আদায় করবে। এতে প্রতি রাকাআতে পঁচাত্তর বার পাঠ করা হবে। প্রতি রাকাআতের প্রথমে এ দু’আ পনের বার পাঠ করবে, অতঃপর দশবার করে উক্ত দু’আ পাঠ করবে। যদি এ নামায রাতের বেলা আদায় করা হয় তবে আমি প্রতি দুই রাকাআত পর পর সালাম ফিরানো ভাল মনে করি। আর যদি দিনের বেলা আদায় করে তবে চাইলে দুই রাকাআত পর পর বা চার রাকাআত পরও সালাম ফিরাতে পারে। আবু ওয়াহব বলেন, ‘আবদুল আযীয আমাকে জানিয়েছেন যে, আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক বলেছেন, রুকু সাজদায় পরযায়ক্রমে তিনবার করে সুবহানা রব্বিয়াল আযীম’ ও ‘সুবহানা রব্বিয়াল আলা’ পাঠ করার পর উল্লেখিত দু’আ পাঠ করবে। আবদুল আযীয বলেন, আমি ইবনুল মুবারককে প্রশ্ন করলাম, যদি এ নামাযে ভুল হয়ে যায় তবে ভুলের সাজদাহতে উক্ত দু’আ পাঠ করতে হবে? তিনি বললেন, না, এ দু’আ তো মোট তিনশো বার পাঠ করতে হবে। -সহীহ। তা’লীকুর রাগীব- (১/২৩৯)

বিঃ দ্রঃ সালাতুত তাসবীহ পড়ার আরো একটি নিয়ম রয়েছে। তবে উপরোল্লিখিত নিয়মটি উত্তম।

🌺 দ্বিতীয় নিয়ম 🌺

━━━━━━━━━━━

ইমাম তিরমিযী (رحمة الله) প্রখ্যাত তাবে-তাবেয়ী আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারাক (رحمة الله)-(ইন্তেকাল:১৮১ হি:) থেকে “সালাতুত তাসবীহ” আদায়ের আরেকটি নিয়ম উল্লেখ করেছেন।আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারক (رحمة الله) এর মতে এ অতিরিক্ত যিকর আদায়ের নিয়ম হলো:

●১. নামায শুরু করে শুরুর দোয়া বা সানা পাঠের পরে তাসবিহ ১৫ বার।

●২. সূরা ফাতেহা ও অন্য কোনো সূরা শেষ করার পরে এ তাসবিহ ১০ বার।

●৩. রুকুর তসবিহ পাঠ করার পর ১০ বার এ তাসবিহ।

●৪. রুকু থেকে রাব্বানা লাকাল হামদ বলে উঠে ১০ বার এ তাসবিহ।

●৫. প্রথম সিজদায় “সুবহানা রাব্বি আল আ’লা” ৩ বার পড়ে এ তসবিহ ১০ বার। 

●৬. দুই সিজদার মাঝে ১০ বার এ তাসবিহ ও দ্বিতীয় সিজদায় আবার ১০ বার। মোট ৭৫ বার প্রতি রাক’আতে।

অর্থাৎ, এই নিয়মে কিরাআতের পূর্বে ও পরে দাঁড়ানো অবস্থায় ২৫ বার তাসবীহ পাঠ করা হয় আর দ্বিতীয় সিজদার পরে বসা অবস্থায় কোনো তাসবীহ পড়া হয় না।পূর্বের হাদীসে বর্ণিত নিয়মে কিরাআ’তের পূর্বে কোনো তাসবীহ নেই। দাঁড়ানো অবস্থায় শুধু কিরাআতের পরে ১৫ বার তাসবীহ পড়তে হবে। প্রত্যেক রাক’আতে দ্বিতীয় সিজদার পরে বসে ১০ বার তাসবীহ পড়তে হবে।

[মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে বুজ দান করুন।আমিন।]

🌿সালাতুত তাসবিহ নামাজ সুন্নাত নাকি নফল?

━━━━━━━━━━━

জবাব: 

এই নামাজ জীবনে অন্তত একবার আদায় করার উপর অত্যাবশ্যক বা জোর দেয়া হয়েছে। আর পরবর্তী বার এটা সুন্নাতে গাইরে মুয়াক্কাদাহ কিংবা নফল হিসেবে গন্য হবে। 

ফরজ ও ওয়াজিবের পরবর্তী পর্যায়ের নাম সুন্নাত। এই সুন্নাত আবার দুই প্রকারঃ

১) সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ (যা ছাড়লে কবীরা গুনাহ হয়)

২) সুন্নাতে জায়েদা বা সুন্নাতে গাইরে মুয়াক্কাদাহ (এটি ঐচ্ছিক সুন্নাত, পড়লে সওয়াব আছে, ছাড়লে গুনাহ নেই)

হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছেঃ

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ لِلْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ: يَا عَبَّاسُ، يَا عَمَّاهُ، ” أَلَا أُعْطِيكَ، أَلَا أَمْنَحُكَ، أَلَا أَحْبُوكَ، أَلَا أَفْعَلُ لَكَ عَشْرَ خِصَالٍ إِذَا أَنْتَ فَعَلْتَ ذَلِكَ، غَفَرَ اللَّهُ لَكَ ذَنْبَكَ أَوَّلَهُ وَآخِرَهُ، وَقَدِيمَهُ وَحَدِيثَهُ، وَخَطَأَهُ وَعَمْدَهُ، وَصَغِيرَهُ وَكَبِيرَهُ، وَسِرَّهُ وَعَلَانِيَتَهُ، عَشْرُ خِصَالٍ: أَنْ تُصَلِّيَ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، تَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَسُورَةٍ، فَإِذَا فَرَغْتَ مِنَ الْقِرَاءَةِ فِي أَوَّلِ رَكْعَةٍ، قُلْتَ وَأَنْتَ قَائِمٌ: سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ خَمْسَ عَشْرَةَ مَرَّةً، ثُمَّ تَرْكَعُ فَتَقُولُ وَأَنْتَ رَاكِعٌ عَشْرًا، ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ الرُّكُوعِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا، ثُمَّ تَهْوِي سَاجِدًا فَتَقُولُهَا وَأَنْتَ سَاجِدٌ عَشْرًا، ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ السُّجُودِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا، ثُمَّ تَسْجُدُ فَتَقُولُهَا عَشْرًا، ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ السُّجُودِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا، فَذَلِكَ خَمْسَةٌ وَسَبْعُونَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ، تَفْعَلُ فِي أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ، إِنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ تُصَلِّيَهَا فِي كُلِّ يَوْمٍ مَرَّةً فَافْعَلْ، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَفِي كُلِّ جُمُعَةٍ مَرَّةً، فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي كُلِّ شَهْرٍ مَرَّةً، فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي عُمُرِكَ مَرَّةً“

ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আব্বাস ইবনে আব্দিল মুত্তালিব (رضي الله عنه) কে বলেছেন,হে চাচা! আঁমি কি আপনাকে দেব না? আঁমি কি আপনাকে প্রদান করব না? আঁমি কি আপনার নিকটে আসব না? আঁমি কি আপনার জন্য দশটি সৎ গুনের বর্ণনা করব না যা করলে আল্লাহ তা’আলা আপনার আগের ও পিছনের,নতুন ও পুরাতন,ইচ্ছায় ও ভুলবশত কৃত,ছোট ও বড়, গোপন ও প্রকাশ্য সকল গুনাহ মাফ করে দেবেন? আর সে দশটি সৎ গুন হলো: 

❏ আপনি চার রাকাত নামাজ পড়বেন। 

❏ প্রতি রাকাআতে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়বেন। 

❏ প্রথম রাকাতে যখন কিরা’আত পড়া শেষ করবেন তখন দাঁড়ানো অবস্থায় ১৫ বার বলবেন:

سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ

উচ্চারণঃ সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।

❏ এরপর রুকুতে যাবেন এবং রুকু অবস্থায় (উক্ত দো’আটি) ১০ বার পড়বেন। 

❏ এরপর রুকু থেকে মাথা ওঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদায় যাবেন। সিজদারত অবস্থায় ১০ বার পড়বেন।এরপর সিজদা থেকে মাথা উঠাবেন অতঃপর ১০ বার পড়বেন। এরপর আবার সিজদায় যাবেন এবং সিজদারত অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা ওঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এ হলো প্রতি রাকাতে ৭৫ বার। আপনি চার রাকাতেই অনুরূপ করবেন। যদি আপনি প্রতিদিন আমল করতে পারেন, তবে তা করুন। আর যদি না পারেন,তবে প্রতি জু’মাআয় একবার। যদি প্রতি জু’মাআয় না করেন তবে প্রদি মাসে একবার। আর যদি তাও না করেন তবে জীবনে একবার।

●(ক.) সুনানে আবু দাউদ,হাদীস নং- ১২৯৭

●(খ.) সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদীস নং- ১৩৮৭

●(গ.) সহীহ ইবনে খুজাইমা,হাদীস নং- ১২১৬

●(ঘ.) সুনানে বায়হাকী কুবরা,হাদীস নং- ৪৬৯৫

●(ঙ.) তিরমিযি- ১/১০৬,হাদিস নং- ১২৯৯

[হাদীসটি সহীহ।]

🌱উক্ত হাদীসকে যারা সহীহ বলেছেন🌱

━━━━━━━━━━━

●১. ইমাম আবু দাউদ,হাদীস নং-১২৯৭

[ইমাম আবু দাউদ হাদীস বললে,চুপ থাকলে সেটি তার কাছে সহীহ।]

●২. ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) বলেন, এর সনদটি হাসান। [আলখিছাল-১/৪১]

●৩. আল্লামা ওয়াদেয়ী বলেন,হাসান।

[সহীহুল মুসনাদ,হাদীস নং-৫৮২]

●৪. ইবনুল মুলাক্কিন বলেন,এর সনদ উত্তম।

[আবদরুল মুনীর-৪/২৩৫]

●৫. ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) বলেন,হাসান।

[তাখরীজুল মিশকাতুল মাসাবীহ-২/৭৮]

●৬. আহলে হাদিস গুরু নাসীরুদ্দীন আলবানী বলেছেন,হাদীসটি সহীহ।

[সহীহুল জামে,হাদীস নং-৭৯৩৭]

●৭. ইমাম তিরমিযি (رحمة الله) ‘সালাতুত তাসবিহ-সংক্রান্ত হাদিসকে বলেছেন : حسن صحيح আল-মুসতাদরাক কিতাবের মধ্যে এ হাদিস সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে : هذا حديث صحيح على شرط مسلم و شاهده حديث اليمانيين في صلاة التسبيح

তাছাড়া নাসির উদ্দিন আলবানি সালাতুত তাসবিহ’র হাদিস সম্পর্কে বলেছেন :

حسن الإسناد

[তিরমিযি হাশিয়াসহ : ২য়খন্ড,৩৪৭]

●৮. তুহফাতুল আহওয়াযির লেখক বলেন :

كان عبد الله بن المبارك يفعلها وتداولها الصالحون بعضهم من بعض وفيه تقوية للحديث المرفوع

অর্থ : আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক (رحمة الله) সালাতুত তাসবিহ আদায় করতেন। নেককার-বুযুর্গগণ একজনের কাছ থেকে আরেকজন এ নামায শিখতেন। এর দ্বারা মারফু হাদিস আরো শক্তিশালী হয়েছে। অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারকের মতো মুহাদ্দিস এবং বুযুর্গ ব্যক্তিবর্গ সালাতুত তাসবিহ পড়ার দ্বারা বুঝা যায়, মারফু হাদিসটি সহিহ ও আমলযোগ্য। কারণ, কোনো বিষয়ে সালাফদের আমল থাকার অর্থই হচ্ছে বিষয়টি প্রমাণিত।

[২য় খণ্ড, পৃষ্ট: ৪৮৯]

●ইমাম তিরমিযিও প্রায় এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। সালাতুত তাসবিহ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে উক্ত হাদিসের অধীনে যে-কোনো ব্যাখ্যাগ্রন্থ দেখা যেতে পারে।

●এছাড়াও ইমাম দারা কুতনী (رحمة الله),খতীব আল বাগদাদী (رحمة الله),আবু মুসা আলা মাদানী, ঈমাম হাকেম (رحمة الله), ঈমাম সুয়ুতী (رحمة الله) প্রমুখ সহীহ বলেছেন।

এতগুলো মুহাদ্দিস হাদিসটি সহীহ ও হাসানের মর্যাদা দেবার পরও একে বাতিল বলা ধৃষ্ঠতা ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।

●আর যারা দুর্বল বলেছেন তারা হলেন: ইমাম ইবনুল জাউযী,সিরাজুদ্দীন আল কাজউয়ীনী,ইবনে তাইমিয়াহ প্রমুখ।

তবে সার্বিক বিবেচনায় হাদীসটি হাসান,যা সহিহ হাদীসের আওতাভুক্ত। অতএব এ হাদীস অনুযায়ী আমল করা শুদ্ধ হবে। তারপরও একটি দলিল উপস্থাপন করলাম।যারা কথায় কথায় উক্ত ফজিলতপূর্ন আমলটিকে বাতিল বা বিদ’আত বলে ফতোয়া দেন তাদের জন্য:

●(ক.) দূর্বল হাদীসের ব্যাপারে ইমাম সুয়ুতি (رحمة الله) আর ইমাম নববীর বক্তব্য দেখুন-“দূর্বল (যদি জাল না হয় বা এর বিপরীতে সহীহ হাদীস বিদ্যমান না থাকে তবে সে) হাদীসের উপর আমল করা জায়েয বরং মুস্তাহাব”

[ইমাম নববী,আল আযকার,পৃঃ ৭]

●(খ.) “ফজিলতের ক্ষেত্রে দূর্বল গ্রহনযোগ্য”

[সূয়ূতী,তাদরীর রাবী ১/৩৫০; আবদুল হাই লাখনবী,যাফরুল আমানী ২০৯-২২৪]

এখন কেউ যদি মনে করে আমি যুগের ঈমামদের চেয়ে বড় পন্ডিত,বূযুর্গ ও আল্লাহ ওয়ালা তাহলে তার ব্যাপারে আর কিছু বলার নেই।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment