হাফেজ ইমাম আব্দুল জলিল রহঃ
শাহআবদুল আজীজ দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তোহফায়ে ইসনা আশারিয়া গ্রন্থে শিয়া ফির্কা সমূহের কতিপয় গোমরাহ আক্বীদা উল্লেখ করেছেন। যথা:
১।শিয়াদের মতে: যুগে যুগে নবী প্রেরণ করা আল্লাহর উপর ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক। আহলে সুন্নাতের মতে, ইহা আল্লাহর অনুগ্রহ – বাধ্যতামূলক নয়। কেননা এমন যুগও ছিল – যখন কোন নবী ছিলেন না। যেমন হযরত ইছা ও আমাদের নবীর মধ্যবর্তী ৫৭০ বৎসরের যুগ। কোন কাজ আল্লাহর উপর ওয়াজিব হলে তা করতে আর একজন আল্লাহর প্রয়োজন (নাউযুবিল্লাহ)। সুতরাং কোন কাজ খোদার উপর ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত – ইত্যাদি হতে পারেনা। এসব হুকুম বান্দার বেলায় প্রযোজ্য।
২।ইমামপন্থী শিয়াগণ বলে: হযরত আদম আলাইহিস সালামসহ সাতজন উচ্চস্তরের পয়গাম্বর ব্যতিত অন্যান্য নবীগণের চেয়ে হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু উত্তম (নাউযুবিল্লাহ)।
আহলেসুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতে, নবীগণ ফেরেস্তাদের চেয়েও উত্তম। হযরত আলী নায়েবে নবী ও উম্মত মাত্র। উম্মত কোন দিনই নবীর চেয়ে উত্তম হতে পারেনা।
৩।ইমামিয়া শিয়াদের মতে, নবীগণের পক্ষে কোন কোন সময় মিথ্যা কথা বলা বা কারও উপর মিথ্যা অপবাদ দেওয়া জায়েয – বরং ওয়াজিব হয়ে পড়ে। তাদের পরিভাষায় ইহাকে ”তুকইয়া”বলে।
আহলেসুন্নাতের মতে, নবীগণ জন্ম হতে মৃত্যু পর্যন্ত মনগড়া কথা, মিথ্যা কথা ও মিথ্যা অপবাদ দেয়া – ইত্যাদি দোষ – ত্রুটি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত কোন পাপই তাঁদেরকে স্পর্শ করতে পারেনা। কেননা নবীগণের সমস্ত কাজই অনুসরন করা উম্মতের উপর ফরয। যদি তাঁরা মিথ্যা কথা বলতেন বা গুনাহ করতেন – তাহলে এটাও উম্মতের উপর ফরয হয়ে যেতো।
৪।ইমামিয়া শিয়াদের মতে: নবীগণ নবুয়্যতের দায়িত্ব লাভের সময় – এমনকি আল্লাহর সাথে কালাম করার সময়ও ঈমান এবং আকায়িদের মৌল নীতিমালা সম্পর্কে অবগত থাকেন না। সুস্পষ্ট ধারণা দেয়ার পরই তাঁরা ঈমান ও আকায়িদের মৌলিক ধারণা লাভ করে থাকেন (নাউযুবিল্লাহ)।
সুন্নীমুসলমানদের ঐক্যমতে – নবীগণ জন্ম সূত্রেই ঈমানের জরুরী বিষয় সমূহ অবগত হয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। কেননা আকায়িদ ও ঈমান সম্পর্কে অজ্ঞতার অর্থ হলো – কুফর। আর কুফরী অবস্থায় নবুয়তের দায়িত্ব অর্পন করা অবৈধ। শরীয়তের খুঁটি – নাটি বিস্তারিত বিষয় নবুয়ত লাভের পরেই ওহীর মাধ্যমে অর্জিত হয়ে থাকে। মোদ্দা কথা – ঈমানী বিষয়ে সকল নবগণই জন্ম সুত্রে অবগত এবং বিধি বিধানের বিস্তারিত তফসীল তাঁরা ওহীর মাধ্যমে অবগত হন।
কুরআনেরআয়াত ”মা – কুনতা তাদরী মাল কিতাবু ওয়ালাল ঈমান” – (অর্থ – হে নবী, আপনি কিতাব ও শরীয়তের তফসীলী বর্ণনা সম্পর্কে পূর্বে অবগত ছিলেননা) – এর সারমর্ম ইহাই। শিয়াদের অনুরূপ আক্বীদা পোষণ করেন জামাতে ইসলামীর কোন এক নেতা। তিনি ”ইসলামে নবীর মর্যাদা” প্রবন্ধে সিরাতুন্নাবী সংকলন পুস্তকে লিখেছেন: ”নবিগণ নবুয়ত লাভের পূর্বে জানতেন না যে, তিনি একজন ভবিষ্যত নবী” (নাউযুবিল্লাহ)। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আমি মায়ের গর্ভে থাকতেই লওহে মাহফুজে কলমের লেখনীর আওয়াজ শুনতাম। আমি শিশুকালে চাঁদের সাথে কথা বলতাম – ইত্যাদি। দেওবন্দী আলিমগণও শিয়াদের অনুরূপ ধারণা পোষণ করে থাকেন।
৫।ইমামিয়া শিয়াদের মতে: কোন কোন নবী থেকে গুনাহ প্রকাশ পেয়েছে। যেমন, হযরত আদম, হযরত ইব্রাহীম, হযরত ইউনুছ ও হযরত মুছা আলাইহিমুস সালাম প্রমূখ গুনাহ করেছিলেন (নাউযুবিল্লাহ)। একই আক্বীদা পোষণ করেন মাওলানা মওদুদী ও তার অনুসারী জামাতে ইসলামী। (”তাফহীমুল কোরআন” দেখুন)।
আহলেসুন্নাত ওয়াল জামায়াত – এর আক্বীদা হচ্ছে – নবীগণ নবুয়তের পূর্বে ও পরে ছোট বড় সব ধরনের গুনাহ হতে নিস্পাপ – মাসুম। হযরত আদম, হযরত ইব্রাহীম, হযরত ইউনুছ ও হযরত মুছা আলাইহিমুস সালামের যেসব কার্যাবলীকে শিয়া, মুতাজেলা ও মউদুদীবাদীরা গুনাহ বলে মনে করে – ঐগুলো খেলাফে আওলা বা অনুত্তম পর্যায়ভূক্ত – কিন্তু বৈধ। শিয়াদের প্রভাবের কারণে যারা বলে – ”কোন নবীই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি থেকে একেবারে মুক্ত ছিলেন না” (নাউযুবিল্লাহ) – তারা এক্ষেত্রে শিয়া ও মউদুদীর অনুসারী। (দেখুন – প্রেমাঞ্জলী)
৬।শিয়াদের নেতা ইবনে বাবুওয়াই স্বীয় ”উয়ুনু আখবারে রেযা” গ্রন্থে ইমাম রেযা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু – এর বরাতে লিখেন: যখন আল্লাহ তায়ালা ফেরেস্তাদের দিয়ে আদমকে সিজদা করালেন এবং বেহেস্তে স্থান দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করলেন – তখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম মনে মনে ভাবলেন – আমিই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর এ অবস্থা বুঝে আল্লাহ তায়ালা আরশের দিকে তাকাবার জন্য আদমকে নির্দেশ দিলেন। হযরত আদম আলাইহিস সালাম মাথা তুলে আরশের পায়ায় লেখা দেখলেন – ”আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই ; মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর রাসুল ; হযরত আলী আল্লাহর ওলী ও মুসলমানদের নেতা, বিবি ফাতেমা বিশ্ব নারীদের নেত্রী; ইমাম হাসান এবং হোসাইন বেহেস্তী যুবকদের সর্দার”। তখন আদম আলাইহিস সালাম জিজ্ঞাসা করলেন – এরা কারা? আল্লাহ বললেন – তোমারই সন্তান এবং তোমার চেয়ে উত্তম। আমার সমগ্র সৃষ্টি হতে এরা উত্তম। এরা না হলে আমি তোমাকে – এমনকি – বেহেস্ত – দোযখ আসমান – যমীন কিছুই সৃষ্টি করতাম না। হে আদম, তুমি এদেরকে হিংসার নজরে দেখোনা। তাহলে তোমাকে বেহেস্ত থেকে বের করে দেবো। কিন্তু আদম তাঁদের দিকে হিংসার দৃষ্টিতে দেখলেন তাই আল্লাহ তায়ালা আদমের পিছনে শয়তান লাগিয়ে দিয়ে তাঁকে বেহেস্ত হতে বিতাড়িত করলেন”। (নাউযুবিল্লাহ)। উক্ত গ্রন্থে ইমাম আবু আবদুল্লাহ জাফর সাদেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু – এর বরাত দিয়ে আরও উল্লেখ আছে: ”আল্লাহ তায়ালা আদম ও হাওয়াকে সব বৃক্ষের ফল ভক্ষণের অনুমতি দিয়ে একটি ফল বৃক্ষ নিষিদ্ধ করে দিলেন। আদম ও হাওয়া বেহেস্তে পাক পাঞ্জাতন ও তৎপরবর্তী ইমামদের মর্তবা দেখে হিংসায় জ্বলে উঠলেন। তাই তাঁরা লাঞ্চিত হলেন” (নাউযুবিল্লাহ)।
আহলেসুন্নাত ওয়াল জামায়াত এবং সমগ্র মুসলমানদের ঐক্যমত হলো – হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও বিবি হাওয়ার শানে এসব দোষারূপ করা তাঁদের অবমাননার শামিল এবং কুরআন হাদীসের পরিপন্থী। নবীগণের অবমাননা করা কুফরী। তাছাড়া পিতা- মাতা নিজ সন্তানের সম্মান ও মর্যাদা দর্শনে হিংসায় জ্বলে উঠতে পারেন না। শিয়াদের কথা মেনে নিলে আদম আলাইহিস সালাম ও শয়তানের মধ্যে পার্থক্য রইলো কোথায়?শয়তান আদমের প্রতি হিংসা করে অপদস্ত হলো; আর আদম আলাইহিস সালাম নিজ সন্তানের প্রতি হিংসা করে একই অপরাধে অপরাধী হলেন? (নাউযুবিল্লাহ)। আরশের পায়ায় নাম লেখা ছিল শুধু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের। শিয়ারা জুড়ে দিলো – আলী, ফাতিমা, হাসান ও হোসাইনের নাম। এটা হলো হাদীসের বিকৃতি বা তাহরীফ। মনগড়া ব্যাখ্যায় মউদুদী সাহেবও শিয়াদের মতই পটু। নবীগণের শানে অমর্যাদাকর উক্তি থেকে একমাত্র সুন্নাতপন্থী মুসলমানগণই সদা সতর্ক থাকেন।
৭।ইমামিয়াপন্থী শিয়াদের মতে: কোন কোন নবী খোদা প্রদত্ত দায়িত্ব পালনে ওজর আপত্তি ও অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন। প্রমাণ স্বরূপ তারা বলে – খোদা যখন মুছা আলাইহিস সালামকে বললেন – হে মুছা! তুমি যালিম বাদশাহ ফিরাউনের নিকট গমন করো। তখন মুছা আলাইহিস সালাম বলেছিলেন – ”হে খোদা! আমি মনে করি – ফিরাউন ও তার প্রজারা আমাকে সত্য বলে স্বীকার করবে না। তদুপরি আমার তর্ক করার ক্ষমতা কম এবং আমার কথা অস্পষ্ট। সর্বোপরি – আমি এক কিবতী যুবককে চপেটাঘাত করে মেরে ফেলেছি। তাই ভয় পাচ্ছি – তারা আমাকে মেরে ফেলবে। সুতরাং হে খোদা, তুমি আমার ভাই হারুনকে আমার পরিবর্তে নবুয়ত দিয়ে পাঠাও তিনি আমার চাইতে বেশী বাগ্মী”।
আহলেসুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা হলো: আল্লাহর নির্দেশ পালনে কোন নবীই ওজর আপত্তি করতে পারেন না। কেননা, ওজর আপত্তিকারী ব্যক্তি বিশ্বস্ত হতে পারেন না। শিয়াগণ কুরআনে উল্লেখিত মুছা নবীর ঘটনা সমূহ অপব্যাখ্যা সহকারে বিকৃত করেছে এবং এই অপব্যাখ্যা থেকে ভুল সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। উল্লেখ্য যে, মউদুদী সাহেবও হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের বেলায় রাত্রিতে চাঁদ – তারা দর্শন করার আয়াতকে তাঁর স্বীকৃতিমূলক কালাম বলে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে ক্ষণিকের জন্য মুশরিক সাব্যস্ত করেছেন (তাফহীমুল কুরআন)। যারা কোন নবীকে এক মুহুর্তের জন্য মুশরিক বলে ধারণা করবে – তারা নির্ঘাত কাফির। শিরিক, কুফর, কবিরাহ – ইত্যাদির গুনাহ নবীদের শানে আরোপ করা কুফরী ও বেদ্বীনী। হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের উক্তি ছিল প্রশ্নবোধক ও তিরষ্কারমূলক – স্বীকৃতিমূলক ছিলনা।
৮।গোরাবিয়া শিয়ারা বলে: হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর শারিরিক গঠন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মত ছিল। আলাহ তায়ালা জিব্রাইলকে রিছালাতের ওহী দিয়ে হযরত আলীর নিকট পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু জিব্রাইল আলাইহিস সালাম ভুল করে মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট রিছালাত বানী পৌছিয়ে দেন (নাউযুবিল্লাহ)।
ইসলামীআক্বীদা হচ্ছে – হযরত মোহাম্মাদ মোস্তফা সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই শেষ নবী – হযরত আলী নবী নন। জিব্রাইল আমীন আমানতদারীর সাথেই সঠিক পাত্রে ওহী পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। তাঁর ভূল হয়নি। কেননা, জিব্রাইলের ভূল হয়ে থাকলে খোদা কেনো জেনে শুনেও তা সংশোধন করেননি? মূলত: এই শিয়াগণ চরমপন্থী। আর চরমপন্থী শিয়ারা কাফির। কাদিয়ানী ফির্কাকেও এরা হার মানিয়েছে।
৯।ইসমাইলী, মোয়ামারী ও মনসুরিয়া শিয়া গোত্রত্রয় মূল মেরাজকেই অস্বীকার করে। মনসুরিয়া শিয়াগণ বলে – মেরাজ শুধু একা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হয়নি। তাদের নেতা আবুল মনসুর আজালিও মিরাজ গমন করেছিল বলে তারা বিশ্বাস করে। আবুল মনসুর নাকি সামনা সামনি খোদার সাথে কথা বলেছে এবং খোদাও আবুল মনসুরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছেন। ইমামিয়া শিয়াদের একদল বলে – হযরত আলীও ঐ মিরাজে রাসুল করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে শরীক ছিলেন। আর একদল বলে – হযরত আলী আরশে গমন করেননি – তবে তিনি পৃথিবীতে থেকেই ঐসব কিছু অবলোকন করেছিলেন – যা অবলোকন করেছিলেন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওখানে গিয়ে (নাউযুবিল্লাহ)।
ইসলামীআক্বীদা হচ্ছে: আকাশে ও উর্দ্ধ জগতে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মিরাজে অন্য কেউ তাঁর সাথে শরীক ছিলেন না। তিনি ছিলেন একা। জিব্রাইল আলাইহিস সালাম ছিলেন সাথী। কোরআন মজীদে ‘বি – আবদিহী’ শব্দ দ্বারা একক নবীকেই মিরাজে গমনের মালিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পৃথিবীতে থেকে যদি উর্দ্ধ জগতের সব কিছু অবলোকন করা যেতো – তবে এত আয়োজন করে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নেয়া হয়েছিল কেন? এতে তো হযরত আলীরই শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয় – এটা কুফরী। শিয়াদের এই মিথ্যা অপবাদ মনগড়া ও ইসলাম বিরুধী আক্বীদা।
১০।শিয়াদের অনেক উপদলই শরীয়তের বিধি বিধান রহিত হয়ে গেছে বলে বিশ্বাস করে। যেমন সাবইয়া, খাত্তাবিয়া, মানসুরিয়া, মুয়াম্মারীয়া, বাতিনীয়া, কারামাতা, রেজামিয়া – প্রভৃতি শিয়াগণ এই আক্বীদা পোষণ করে যে, বর্তমানে শরীয়তের সব বিধি বিধান রহিত হয়ে গেছে। এরা আরও বলে – নামায রোযা হজ্ব যাকাত দ্বারা প্রচলিত ইবাদত বুঝায় না। এগুলোর একটি গোপন অর্থ আছে – যার অর্থ একমাত্র ইমাম মাসুম জানেন – অন্য কেউ নয়।
কুরআনহাদীসের বানী সমূহ প্রকাশ্য অর্থেই গ্রহন করা মুসলমানদের আক্বীদা। কুরআন হাদীসের বিধি বিধান স্পষ্ট ও চিরস্থায়ী।
১১।ইমামিয়া শিয়ারা বলে: হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নিকটেও ফেরেস্তা ওহী নিয়ে আসতো। নবী ও হযরত আলীর ওহীর মধ্যে শুধু পার্থক্য এতটুকু যে – নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফেরেস্তা দেখতেন, কিন্তু আলী শুধু কথা শুনতেন – ফেরেস্তা দেখতেন না। আর একদল শিয়া বলে – নবী করিম সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইনতিকালের পর বিবি ফাতিমা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা এর নিকট ওহী আসতো। এ ওহী জমা করে রাখা হয়েছে এবং এর নাম মাসহাফে ফাতিমা। ভবিষ্যতে সংঘটিত অনেক ঘটনা ও ফিৎনা ঐ ফাতিমী মাসহাফে লিখা আছে। তাদের ইমামগণ ঐ মাসহাফ দেখে দেখে গায়েবী সংবাদ প্রকাশ করে থাকেন।
ইসলামীআক্বীদা হচ্ছে: নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর আল্লাহর বানী নিয়ে আর কোন ফেরেস্তা দুনিয়াতে আসেননি। তাদের এই ধারণা পবিত্রাত্বাদের প্রতি অপবাদ মাত্র।
১২।শিয়ারা বলে: ইমামের এই ক্ষমতা আছে যে, তিনি যখন মনে করেন, তখন যে কোন শরীয়তী বিধান পরিবর্তন বা বাতিল করে দিতে পারেন (নাউযুবিল্লাহ)।
মুসলমানদেরকোন ধর্মীয় ইমাম বা নেতার এই অধিকার নেই যে, সে শরীয়তের কোন বিধান মানসুখ বা বাতিল করে দিতে পারেন বা পরিবর্তন করতে পারেন। ইহা একমাত্র নবীর শান। তিনি ছাহেবে শরীয়ত। তিনি পারেন রহিত করতে বা পরিবর্তন করতে।