রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে নিয়ে কটুক্তিকারীর বিধান মৃত্যুদণ্ড হবে না কেন?

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে কটুক্তিকারীর মৃত্যূদন্ডের বিধান রেখে আইন করা হবেনা কেন?

-মো.শওকত হোসেন চৌধুরী রিপন

মানবতার নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনি নির্দিষ্ট কোন দলের বা রাষ্ট্রের নয়,তিনি সমস্ত সৃষ্টিকুলের নবী।যাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে সকল সৃষ্টির জন্য রহমত হিসেবে।মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সূরা আল-ইমরান,৩১ নং আয়াতে বলছেন, হে নবী! বলুন,তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাসো তবে আমাকে অনুসরণ করো।আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন।আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল,পরমদয়ালু।হাদিসে-কুদসী তে আল্লাহ বলেন, হে মুহাম্মদ! যদি আপনাকে সৃষ্টি না করতাম কস্মিনকালেও আকাশমণ্ডলী পৃথিবী কিছুই সৃষ্টি করতাম না।

প্রতিটি ধর্মগ্রন্থে যার গুণগান করেছেন।অথর্ববেদ উপনিষদে উল্লেখ আছে ‘আল্লাহ রসল্ল মুহাম্মদরঃকং বরস্য অল্ল অল্লাম।ইল্ললোতি ইল্ললা’’।অর্থাৎ মুহাম্মদ আল্লাহর রাসুল যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নাই।বেদ এ আরো বলে, ‘লা-ইলাহা’ বললে সমস্ত পাপ মাফ হয়।’ইলল্লাহ’ বললে প্রচুর সম্মানের অধিকারি হয়।যদি চিরতরে স্বর্গে বাস করতে চাও তবে মুহাম্মদের নাম জপ কর।জেন্দাবেস্তার দয়ালনবী সম্পর্কে বলেন, হে সাদী! মনে করিও না পবিত্রতার পথে মোস্তফার পশ্চাৎ অনুসরন ব্যতিরেকে গমন করিতে পারিবে।

বুদ্ধধর্ম প্রণেতা বুদ্ধদেব বলেছেন, আমি একমাত্র বুদ্ধ বা শেষ বুদ্ধ নই।যথাসময়ে আর একজন বুদ্ধ আসিবেন-আমার চেয়েও তিনি পবিত্র ও আলোকপ্রাপ্ত।

মুসলিম,হিন্দু,বুদ্ধ,খ্রিষ্টান যে যেই ধর্মের হোক না কেন যদি তারা নিজ ধর্ম মানে তাহলে মানবতার নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর শ্রেষ্ঠত্বও মানতে হবে।আর যারা ধর্ম মানেনা নাস্তিক তারাও বিবেকের সামনে দাঁড়িয়ে যদি সত্য বলার সাহস থাকে তাহলে দ্বিধাহীন চিত্তে মেনে নিতে হবে মোস্তফা(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর শ্রেষ্ঠত্ব।এজন্যই যুগে যুগে বিশ্বমনীষীরা আমার নবীর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষনা দিয়ে গেছেন।

প্রিয়নবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর জীবনী লিখতে গিয়ে খ্রিস্টান লেখক উইলিয়াম মুর বলেছেন “He was the mater mind not only of his own age but of all ages”অর্থাৎ মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)যে যুগে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন তাকে শুধু সে যুগেরই একজন মনীষী বলা হবে না, বরং তিনি ছিলেন সর্বকালের, সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মনীষী।

পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বলেন, বিধাতার তরপ থেকে মানুষের কল্যানের জন্য যদি কোন মহামানব এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়ে থাকে সেই মহামানবের নাম মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম), যদি কেউ বলে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বিধাতার প্রেরিত রাসূল/মহামানব নয়, তবে আমি হরপ্রসাদ শাস্তী বলছি বিধাতার তরপ থেকে মানুষের কল্যানের জন্য কোন মহামানব কোনদিন পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়নি।

ড. রাম নারায়ন শাস্তী বলেন ভারতের অধপতিত হিন্দু সমাজে ইসলাম এসেছে আলোর দীপ্তি নিয়ে, ইসলাম যদি ভারতবর্ষে না আসত ভারতের অধপতিত হিন্দু সমাজে মানুষগুলো কোনদিন মানুষ হতে পারত না।(আর এই ইসলাম আল্লাহ পরিপূর্ণ করেছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শে।)

ফরাসী লেখক আলফ্রেড দে লা মার্টিন তাঁর তুর্কীর ইতিহাসে গর্বভরে লিখেছেন-উদ্দেশ্যের মহত্ত্ব,উপায় উপকরণের স্বল্পতা এবং বিস্ময়কর সফলতা- যদি এই তিনটি বিষয়ই মানব প্রতিভার মানদণ্ড হয় তা হলে ইতিহাসের জন্য কোন মহামানবকে এনে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর সাথে তুলনা করবে এমন সাহস কার আছে?

শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী বলেছেন, হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর জীবনাদর্শ সারা বিশ্বের নিকট আজ অত্যন্ত মূল্যবান।সমস্ত শ্রেণীর মানুষেরই উচিত তাঁর আদর্শকে অনুসরণ করা।তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংঘাতময় বিশ্বে মুহাম্মদের গুণে গুণানীত হয়ে কোন মহা পুরুষ যদি জন্ম লাভ করে আমি হিন্দু হওয়ার পরেও দ্বিধাহীন চিত্তে একথা বলতে পারি এ বিশ্বে কোন সংঘাত থাকবেনা।

জর্জ বার্নাডশ বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি সমগ্র বৃটিশ সাম্রাজ্য এই শতাব্দী শেষ হওয়ার আগেই সংস্কারকৃত মুহাম্মদবাদ গ্রহণ করবে।

এভাবেই দয়ালনবীর শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দিয়ে গেছেন নেপোলিয়ান,হিন্দুধর্ম প্রণেতা মনু,রাজা রামমোহন রায়,স্বামী বিবেকানন্দ,গোকুলচন্দ্র গোস্বামী,গুরু নানক,মহামতি কার্লাইল,হিট্টি,লিউনার্ড,ডি জি হোগারথ,এইচ জি ওয়েলস,এম এন রায়,প্রফেসর ভেম্কট রত্নম,ঐতিহাসিক ড্রেপার,প্রফেসর ল্যা মারটিন,খ্রীষ্টান সন্ন্যাসী বহিরা,ভারতীয় ঐতিহাসিক ডঃতারাচাঁদ সহ অসংখ্য মনীষী।

মানুষের মহত্ত্ব মাপার যতগুলো মাপকাঠি আছে তা দিয়ে মাপলে কোন লোক যার চেয়ে মহৎ হতে পারবেনা,সেই দয়ালনবীকে অপমান করা মানে সারা মানবজাতিকে অপমান করা । সেই নবীকে কুটক্তি করা মানে বিশ্ব বিবেকের মুখে লাথি মারা।

যদি রাষ্ট্রপ্রধানকে কটুক্তি করলে ১২৪(ক) ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনে মামলা হয়, যাবৎজীবন জেল হয়।তাহলে ৯০% মুসলমানের এই দেশে মুসলমানদের জানের জান আমাদের ঈমান, সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে অবমাননাকারীর ফাঁসি হবেনা কেন?হাদিসে পাকে আছে, দয়াল নবী বলেন, “তোমরা কেউ ততক্ষন পর্যন্ত পূর্ণ মুমিন হবেনা যতক্ষণ তোমাদের সকল প্রিয়বস্তু এমন কি তোমাদের জীবনের চেয়েও আমি নবীর ভালবাসা বেশি হবেনা”।

নবীর প্রেম হচ্ছে ঈমানের পূর্বশর্ত।আর আমরা সামান্য দুনিয়ার সম্পদ ও ক্ষমতার জন্য,কিছু ইহুদীর বাচ্চাকে খুশি করার জন্য হাবীবুল্লাহ নবীর শানে বেয়াদবী সহ্য করি।আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম যথার্থ বলেছেন-

রাসুলের অপমানে যদি

কাঁদেনা তোর মন,

মুসলিম নয় মুনাফিক তুই

রাসুলের দুশমন ।

সুতরাং আর কালবিলম্ব না করে সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ নবীর কটুক্তিকারিকে, ধর্মদ্রোহিতার দায়ে মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে দ্রুত আইন পাস করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হোক, অন্যথায় বারবার কতিপয় উগ্র ধর্মদ্রোহী মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানবে, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও সমপ্রীতি বিনষ্টের স্পর্ধা প্রদর্শন করবে।

লেখক-

মো.শওকত হোসেন চৌধুরী রিপন

চন্দনাইশ , চট্টগ্রাম।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment