রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বিলাদতের তারিখ ১২ ই রবিউল আউয়াল

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বিলাদতের তারিখ ১২ ই রবিউল আউয়াল। _মিলাদুন্নবী (ﷺ) 

এ বিষয়ে সাহাবী ও তাবেয়ীদের অভিমত:

(১) ইমাম হাফেয আবু বকর ইবনে আবী শায়বাহ (رحمة الله) (ওফাত ২৩৫ হি.) সহীহ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন এভাবে-

وَقَالَ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ عَنْ سَعِيدِ ابن مِينَا عَنْ جَابِرٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ. قَالَا: وُلِدَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ عَامَ الْفِيلِ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ الثَّانِيَ عَشَرَ مِنْ رَبِيعٍ الْأَوَّلِ. ـ

-‘‘ইমাম ইবনে আবি শায়বাহ তিনি তাঁর উস্তাদ মুহাদ্দিস উসমান থেকে তিনি মুহাদ্দিস সাঈদ ইবনে মিনা থেকে বর্ণনা করেন, যথাক্রমে হযরত জাবের (رضي الله عنه) ও হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বিলাদত শরীফ ঐতিহাসিক হস্তী বাহিনী বর্ষের বছর ১২ ই রবিউল আউয়াল হয়েছিল।’’ ২৩৬

২৩৬.আল্লামা ইবনে কাসীর : বেদায়া ওয়ান নিহায়া : ৩/১০৯ পৃ. এবং সিরাতে নববিয়্যাহ, ১/১৯৯ পৃ., শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী : শরহে ফতহুর রব্বানী : ২/১৮৯ পৃ.

সনদ পর্যালোচনা:

✧ উক্ত বর্ণনার সনদ এর মধ্যে প্রথম বর্ণনাকারী হযরত উসমান সম্পর্কে মুহাদ্দিস গণ বলেছেন, উসমান একজন উচ্চ পর্যায়ের নির্ভরযোগ্য ইমাম, প্রবল স্মরণ শক্তি সম্পন্ন ও দৃঢ় প্রত্যয়সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব।

(খোলাসাতুত তাহযীব, পৃ-২৬৮, (বয়রুত হতে মুদ্রিত) ২য় বর্ণনাকারী সাঈদ ইবনে মীনা। তিনি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। (খোলাসাহ : ২/১৪৩ এবং তাকরীবুত তাহযীব : ২/১২৬ পৃ.)

✧ এ হাদিসটির আরেকটি সূত্র ইমাম ইবনে কাসীর বর্ণনা করেছেন সনদবিহীনভাবে এভাবে-

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ أَنَّهُ وُلِدَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، فِي الثَّانِي عَشَرَ مِنْ رَبِيعٍ الْأَوَّلِ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ

-‘‘হযরত জাবের (رضي الله عنه) ও হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বিলাদত শরীফ ১২ ই রবিউল আউয়াল হয়েছিল।’’

( আল্লামা ইবনে কাসীর : বেদায়া ওয়ান নিহায়া : ৩/৬ পৃ. দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত।)

পর্যালোচনা:

আমরা দুজন মুজতাহিদ তবকার সাহাবীদের অভিমত জানতে পারলাম যে, তাঁরা ১২ই রবিউল আউয়ালে রাসূল (ﷺ)-এর বিলাদাত শরীফের কথা বলেছেন। রাসূল (ﷺ)-এর বিষয়ে সাহাবীদের চেয়ে অধিক জ্ঞাত কেউ নেই। তাঁরা যেখানে মত প্রকাশ করেছেন সেখানে ঐতিহাসিকদের অভিমতের কোন মূল্য নেই।

✧ আল্লামা ইবনে কাসির (رحمة الله) এ বর্ণনা উল্লেখ করে কোনো সমালোচনা না করে লিখেন-

وَهَذَا هُوَ الْمَشْهُورُ عِنْدَ الْجُمْهُورِ وَاللَّهُ أَعْلَمُ.

-‘‘জমহুর (অধিকাংশ) ঐতিহাসিকদের কাছে এ মতটিই সুপ্রসিদ্ধ, মহান আল্লাহই এ বিষয়ে সবচেয়ে ভাল জানেন।’’ (আল্লামা ইবনে কাসীর, সিরাতে নববিয়্যাহ, ১/১৯৯ পৃ.)

(২) উক্ত হাদিসের ন্যায় শক্তিশালী সনদে ইমাম হাকিম নিশাপূরী (رحمة الله) বর্ণনা করেন এভাবে-

عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ: وُلِدَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ لِاثْنَتَيْ عَشْرَةَ لَيْلَةً مَضَتْ مِنْ شَهْرِ رَبِيعٍ الْأَوَّلِ – رواه الحاكم و قال : اسناد صحيح لم يخرجاه و قال الامام الذهبى في التلخيص: على شرط مسلم-

-‘‘বিখ্যাত তাবেয়ী, ঐতিহাসিক, ইমাম মুহাম্মদ বিন ইসহাক (رحمة الله) বলেন, রাসূল (ﷺ) ১২ই রবিউল আউয়াল এর রাতে শুভাগমন করেন। ইমাম হাকিম বলেন, উক্ত হাদিসটি সহীহ। ইমাম যাহাবী তাঁর তালখীছ গ্রন্থে বলেন, ইমাম মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী হাদিসটি সহীহ।’’

(ইমাম হাকেম নিশাপুরী : আল-মুস্তাদরাক : ২/৬৫৯ পৃ., কিতাবুল মানাকিব : হা/৪১৮২)

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment