উগ্রপন্থীরা মানবতার শত্রু।
➖➖➖➖➖ ইমরান বিন বদরী।
আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন সময়ের পরিক্রমায় অগণিত নবী রাসুলদের ধরার বুকে পাঠিয়েছেন কেবল মানবজাতির কল্যাণে। অহিংসা এবং ক্ষমার আদর্শ দিয়ে তারা জয় করেছিলেন অন্ধকারে নিমজ্জিত জাতিকে। কতোটা নিষ্ঠুর আর প্রতিকূল পরিবেশে তারা শান্তির পয়গাম প্রচার করেছিলেন তা অধিকাংশ ধর্মানুরাগীরা অবগত। কিন্তু আজ ধর্মানুরাগীদের মাঝেই অবস্থান করছেন কিছু ধর্মান্ধ। যারা প্রকৃতপক্ষে ধর্মের আলোতে আদৌ আলোকিত হতে পারেনি।রক্তপাতহীন শান্তির ধর্মকে হিংস্রধর্মে রূপান্তরিত করেছে। বস্তুত এভাবে মানবতাকে ধ্বংস করে ধর্মীয় লেবাসে মানবহত্যা কোন ধর্মেই গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রথমেই বলে রাখি নিউজিল্যান্ডে মুসলমানদের পবিত্রতম স্থানে এভাবে বর্বরোচিত হামলা কোন মুসলমান মেনে নিতে পারেনা। ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই। আজ ইসলামে একজন বীরপুরুষের অভাবে বিশ্ব মুসলমান নিরবে চোখের জল ফেলছে। অমানবিক নিষ্ঠুর অমার্জনীয় এ হত্যার বিচার না হলে অস্তিত্ব রক্ষা করা মুশকিল হয়ে পড়বে।
আসুন, আজ আমি ভিন্ন ধর্মের কথা নয় বরং নিজ ধর্মের-ই কিছু অমানুষিক কর্মকাণ্ডের কথা বলছি। আজ অমুসলিমদের কাছে ইসলামকে শান্তির ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করতে আমরা ব্যর্থ বলেই মুসলমানদের প্রতি তাদের এতো আক্রোশ। বিশ্বে একদিকে বিশালসংখ্যক বিধর্মী যখন ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন, অন্যদিকে বিশ্ববাসীর কাছে কিছু সার্থবাদী লোক ইসলামকে ভিন্নভাবে সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করে যাচ্ছেন। আর সেই কর্মকাণ্ডে পরক্ষোভাবে ইসলামের দুশমনেরা সাহায্য করে যাচ্ছেন। আমরা আজ চোখ থাকতেও অন্ধত্ব বরণ করেছি। সে জন্যই বলছি ইসলামের অমিয় বানী কিংবা শান্তির পরশ তাদের পানে আমরা পৌঁছাতে পারিনি বলেই অনেকটাই ব্যর্থ।
ইসলামের প্রকৃত ছায়ায় তাদেরকে তো আমরা আমন্ত্রণ জানাতে পারিইনি বরং তাদের সম্মুখে ইসলামকে সন্ত্রাসের নমুনা হিসেবে উপস্থাপন করেছি। আমি জানি অনেকে আমার এই কথায় দ্বিমত পোষণ করবেন কিন্তু গভীরভাবে একবার ভেবে দেখলে সবি এমনিতেই বুঝে আসবে। মধ্যপ্রাচ্যের নিজেদের অমানবিক নিষ্ঠুরতাই তার জলন্ত উদাহরণ। রক্তপাতহীন ইসলামকে তারা রক্তাক্ত করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। যদিওবা এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মূল হোতা বিধর্মীরাই কিন্তু ব্যবহৃত হয়েছে মুসলমান দাবী করা কিছু অবোধ নরাধম।
ইসলাম কখনো অমুসলিমদের প্রতি আক্রমনাত্মক ছিলোনা। শান্তির পরশে দয়ার সঞ্চারে অমুসলিমের হৃদয়ে ইসলামের আলো জ্বেলেছিল বলেই ১০ হাজার সাহাবী নিয়ে মক্কা বিজয় অর্জন করেছিলো।
আজকে নিউজিল্যান্ডের হামলা আমরা যতটা ব্যথিত তেমনি তথাকথিত মুসলমান দাবী করা সন্ত্রাসীদের হামলায় তারাও কিন্তু ব্যথিত হয়েছেন। ইউরোপের কয়েকটি হামলার কথা নিশ্চয় ভুলে যায়নি বিশ্ববাসী।
আজ একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান আল্লাহ ঘর মসজিদে বর্বরোচিত হামলায় যতটা ব্যথিত হয়েছি সে পবিত্র স্থানটি এর আগেও মুসলমান নামে অমানুষরা করে ব্যথিত করেছিলেন। মূলত এ ঘৃণ্য কাজটি এর আগে আমরা তাদেরকে আগেই করে দেখিয়েছি। যে জাতি তার পবিত্রতম স্থানকে মূল্যায়ন করতে শিখেনি সে জাতি অন্যের কাছে কিসের নিরাপত্তার আশা করতে পারেন!
শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করতে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদের হামলাটি সুস্পষ্ট ভাবেই বুঝা যাচ্ছে নিরীহ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ছিলো যা বন্ধুকদারীর ব্যবহৃত বন্দুকেই প্রমাণিত। নিউজিল্যান্ডে উগ্রপন্থী ধর্মান্ধতার কারণে আজ আমরা যে ভাইদের হারিয়েছি সেইসব নিরপরাধ ভাইদের পক্ষে আজ কেবল একটাই দাবী ফাঁস-দড়ি দিয়ে জনসম্মুখে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসী কার্যকর করা হোক।
♻ আমার আপলোড করা ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করেছে ফেসবুক। হয়তো এভাবেই সব ছবি কিংবা ভিডিও একদিন ডিলিট হয়ে যাবে। কিন্তু মুসলমানদের উচিৎ হবে “১৫ ই মার্চ মুসলিম মিল্লাতের কালো দিবস ” পালনে যেন ভুল না হয়।
ছবি নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলায় শহীদ ভাইদের জানাজার একাংশ। প্রতিকূল পরিবেশেও অগণিত মানুষের জানাজা আদায় করেছেন। আল্লাহ এই শহিদদের উছিলায় আমাদের কবুল করুন।