নবী করীম (স.) বলেন, যে ব্যক্তি আযান শোনে অতঃপর সে (অসুখ বা ভয় প্রভৃতি) কোন ওজর ছাড়া নামাজে হাজির হয় না (ঘরে পড়ে) তার নামাজ হয় না (দারাকুতনী, মেশকাত)। এই হাদীস দ্বারা মসজিদের গুরুত্ব প্রমাণিত হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় জায়গা মসজিদ এবং সবচেয়ে ঘৃণিত জায়গা হাট-বাজার (মুসলিম, মেশকাত, ৬৮ পৃঃ)। রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর ওয়াস্তে মসজিদ বানায় তার জন্য আল্লাহ জান্নাতে ঘর বানান (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত)। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স.) আমাদেরকে মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ বানাবার এবং সেগুলোকে পাকসাফ রাখবার ও খোশবু দিয়ে সুবাসিত করার হুকুম দিয়েছেন। (আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মেশকাত)। রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, একজন লোক ঘরে নামাজ পড়লে একটি নেকী পায়, সে ওয়াক্তিয়া মসজিদে পড়লে ২৫ গুণ, জুমুআ মসজিদে পড়লে পাঁচশ গুণ, মসজিদে আকসায় পড়লে পঞ্চাশ হাজার গুণ, আমার মসজিদে অর্থাত্ মসজিদে নববীতে পড়লে পঞ্চাশ হাজার গুণ এবং মসজিদুল হারাম বা কাবা ঘরে পড়লে এক লাখ গুণ সওয়াব পাবে (ইবনে মাজাহ, মেশকাত)। মসজিদে কি কি করা নিষেধ রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, পিঁয়াজ ও রসুন (কাঁচা) খেয়ে মসজিদের কাছে এসো না। কারণ এতে ফেরেশতারা কষ্ট পায় (বুখারী, মুসলিম)। তিনি (স.) বলেন, মসজিদে থুথু ফেল না (ঐ)। যদি কোন নামাজীকে নামাজ পড়া অবস্থায় থুথু ফেলতে হয় তাহলে সে যেন তার সামনে না ফেলে। কারণ সে ঐ সময় আল্লাহর সাথে চুপে চুপে কথা বলে এবং সে যেন ডানদিকেও না ফেলে, কারণ তার ডানদিকে ফেরেশতা থাকে। অতএব হয় সে বামদিকে ফেলবে কিংবা পায়ের নীচে ফেলবে। পরে সেটাকে মুছে দেবে। তিনি (স.) মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করতে, বেচাকেনা করতে ও জুমআর দিনে নামাজের আগে গোল হয়ে বসে চক্র বানাতে নিষেধ করেছেন (আবু দাউদ, তিরমিযী)। তিনি বলেন, এমন একটা যুগ আসবে যখন মানুষ মসজিদে বসে দুনিয়ার কথা বলবে, তখন তুমি তাদের সাথে বসবে না (বায়হাকী)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাত জায়গায় নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন- ১. জঞ্জাল ফেলার জায়গায় ২. জবেহ করার জায়গায় ৩. কবরস্থানে ৪. রাস্তায় ৫. গোসলখানায় ৬. উট বাঁধার জায়গায় ৭. কা’বার ছাদের ওপর (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মেশকাত)। রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, গোরস্থান, গোসলখানা ও অপবিত্র জায়গা ছাড়া সমস্ত যমীনটাই মসজিদ (আবু দাউদ, তিরমিযী, দারেমী মেশকাত)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের কিছু নামাজ (অর্থাত্ সুন্নত ও নফল নামাজগুলো) নিজেদের ঘরে পড় এবং (ঘরে ঐসব নামাজ না পড়ে) সেটাকে কবরে পরিণত করো না (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত, ৬৯ পৃঃ)। যায়দ ইবনে সাবেত (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ঘরে নামাজের জন্য একটি খাস হুজরা করে রেখেছিলেন। অনেক লোক তাঁর কাছে আসতো এবং তাতে নামাজ পড়তো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ফরয ছাড়া পুরুষের অন্যান্য সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে পড়া উত্তম (বুখারী, মুসলিম, বুলুগুল মারাম)। রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, যখন তোমাদের কেউ মসজিদে ঢুকবে তখন এই দোআ পড়বে, আল্লাহুম্মাফ তাহ্লী আব-ওয়া-বা রহমাতিকা। অর্থাত্ হে আল্লাহ! তুমি আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাগুলো খুলে দাও। যখন বের হবে তখন এই দোআ পড়বে, আল্লাহুম্মা ইন্নী আস আলুকা মিন ফাদলিকা। অর্থাত্ হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে তোমার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি (মুসলিম, মেশকাত)। মসজিদে ঢোকার সময় নবী (স.) প্রথমে ডান পা রাখতেন (তাবারানী)। বের হবার সময় প্রথমে বাম পা রাখতেন (হাকেম, ১ম খণ্ড ২১৮)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি নিজের ঘর থেকে অযু করে ফরজ নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে যায় সে ব্যক্তি একজন এহরামওয়ালা হজ্ব সমাধাকারীর নেকী পায় (আহমাদ, আবু দাউদ, মেশকাত)। রাসূল্লাহ (স.) বলেন, যখন তোমরা কেউ মসজিদে ঢুকবে তখন বসার আগে দু’রাকআত নামাজ পড়ে নেবে (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত)।
মসজিদেজামায়াতে নামাজ আদায়ের তাত্পর্য
পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।





Users Today : 332
Users Yesterday : 759
This Month : 5366
This Year : 177237
Total Users : 293100
Views Today : 4060
Total views : 3459171