হুযূর (ﷺ) কে আল্লাহ তা‘য়ালা ইলম শিক্ষা দিয়েছেন
দেওবন্দীদের আকিদা হল হুযুর (ﷺ) কে দেওবন্দীরা উর্দু শিখিয়েছে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা হল হুযুর (ﷺ) কে আল্লাহ তা‘য়ালা প্রত্যেক বস্তুর ইলম শিক্ষা দিয়েছেন। যেমন- কুরআনে পাকে আল্লাহ তা‘য়ালা ইরশাদ করেন:
وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ وَكَانَ فَضْلُ اللّٰهِ عَلَيْكَ عَظِيمًا
-“আর আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন যা কিছু আপনি জানতেন না এবং আপনার উপর আল্লাহ মহা অনুগ্রহ করেছেন।’’ ১৭৩
- ১৭৩. ৫ পারা ১৪ রুকু সূরা নিসা আয়াত: ১১৩
আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন তা, যা আপনার জানা ছিল না, এটি বারংবার পড়ে কোন মুসলমান এই আকিদা রাখবে যে, হুযুর (ﷺ)’র অমুক বস্তুর ইলম ছিল না এবং অমুক ভাষা জানতেন না। কুরআন মাজীদের অপরস্থানে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهِ لِيُبَيِّنَ لَهُمْ
-“এবং আমি প্রত্যেক রাসূলকে তাঁর স্ব-জাতির ভাষাভাষী করে প্রেরণ করেছি যেন তিনি তাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলে দেন।’’১৭৪
- ১৭৪. ১৩ পারা ১৩ রুকু, সূরা: ইবরাহীম আয়াত: ০৪
এই আয়াতের আল্লাহ তা‘য়ালা একটি নিয়ম বর্ণনা করেন যে, যে গোত্রের নিকটই রাসূল করবেন সেই গোত্রের ভাষা রাসূল জানেন। এবার দেখুন রাসূল (ﷺ) কাদের জন্য রাসূল হিসেবে প্ররিত হয়েছেন। আল্লাহ তা‘য়ালা ইরশাদ করেন:
أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي رَسُولُ اللّٰهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا
-“হে রাসূল! আপনি বলে দিন হে লোক সকল! তোমাদের সকলের প্রতি আমি আল্লাহর রাসূল।’’ ১৭৫
- ১৭৫. ৯ পারা, ১০ রুকু সূরা: আরাফ: ১৫৮
এই আয়াত হতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে, রাসূল করিম (ﷺ) দুনিয়ার সকল মানুষের রাসূল। আর এই মানুষের মধ্যে উর্দু ভাষাভাষীরাও রয়েছে। আল্লাহ তা‘য়ালা সূরা ফুরকানের শুরুতে বলেন-
تَبَارَكَ الَّذِي نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلَى عَبْدِهِ لِيَكُونَ لِلْعَالَمِينَ نَذِيرًا
-“বড় মঙ্গলময় তিনি যিনি অবর্তীণ করেছেন কুরআন আপন বান্দার প্রতি যাতে তিনি সমগ্র জগতের জন্য সর্তককারী হন।’’ ১৭৬
- ১৭৬. ১৮ পারা, ১৬ রুকু, সূরা: ফুরকান আয়াত: ১
এই আয়াতে মহান আল্লাহ তা‘য়ালা তাঁর প্রিয় হাবীব (ﷺ) কে সমস্ত পৃথিবীকে সর্তককারী হিসেবে বলেছেন। আর জাহানের মধ্যে উর্দু ভাষাভাষীও আছে। আল্লাহ তা‘য়ালা আরো বলেন-
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ
-“আমি আপনাকে সমগ্র জগতের রহমত রূপেই প্রেরণ করেছি।’’ ১৭৭
- ১৭৭. ১৭ পারা রুকু ৭ সূরা আম্বিয়া আয়াত: ১০৭
এ সকল আয়াতে মুবারাকা হতে প্রমাণিত হল ছরকারে দো আলম শাফিয়ে মুয়াজ্জম (ﷺ) সারা জগতের জন্য রাসূল হিসেবে তাশরীফ এনেছেন। আর মহান আল্লাহর একটি নিয়ম হল যাদের নিকট রাসূল প্রেরিত হবেন তাঁদের ভাষা তিনি জানবেন। সুতরাং শুধু উর্দু নয় বরং পৃথিবীর সব ভাষাই রাসূল (ﷺ) জানেন। আর যারা বলে বেড়ায় আমাদের থেকেই রাসূল উর্দু শিখেছেন এটা তাদের চরম বেয়াদবী এবং কুরআনের আয়াতকে অস্বীকার করার নামান্তর যা হল কুফুরী। কুরআনের আয়াতের পর নিম্নে দুটি হাদীস শরীফও বর্ণনা করা হল।
হযরত আবু যায়েদ (رضي الله عنه)’র আকিদা:
হযরত আবু যায়েদ অর্থাৎ আমর ইবনে আখতাব (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-
فَأَخْبَرَنَا بِمَا كَانَ وَبِمَا هُوَ كَائِنٌ
-‘‘নবী করিম (ﷺ) পূর্বাপর সবকিছুর বর্ণনা করেছেন। সুতরাং আসমান-জমিনে যা কিছু আছে সবকিছুই আমি জেনেছি।’’ ১৭৮
- ১৭৮. ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ৪/২২১৭ পৃ. হা/২৮৯২, খতিব তিবরিযি, মিশকাতে শরীফ, ৩/১৬১৭ পৃ. হা/৫৯৩৬
আল্লামা আলী বিন খাযেন (رحمة الله) আকিদা:
মুফাস্সিরে কুরআন আল্লামা আলী বিন মুহাম্মদ খাযেন (رحمة الله) তাঁর স্বীয় তাফসীরে বে-নযির এ সারকারে কায়েনাত ফখরে মওজুদাত বায়েছে তাখলিকে কায়েনাত হুযূর পুর নূর (ﷺ)’র একটি হাদিস এনেছেন, হুযুর করিম (ﷺ) বলেন,
مَا بَالَ أَقْوَامٍ طَعَنُوْا فِي عِلْمِي لَا تَسْأَلُوْنِي عَنْ شَيْء فِيْمَا بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ السَّاعَةِ إلّا نَبَأَتُكُمْ بِه
-‘‘তাদের কী হল যে, তারা আমার জ্ঞান নিয়ে ঠাট্টা করছে। কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে আমাকে জিজ্ঞাসা করো, তা আমি বলে দিবো।’’ (ইমাম খাযেন, তাফসিরে খাযেন, ১/৩২৪ পৃ.) পবিত্র কুরআন ও হাদিসে পাকের আলোকে বলা যায় দেওবন্দী ওহাবীরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জাম‘আত নয়।