কৃতঃ মাসুম বিল্লাহ সানি
রাসূলের মিলাদুন্নবী (ﷺ) বা জন্ম ও বংশ বৃত্তান্ত আলোচনা
🕋 হাদিস : হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর হাদীস, যিনি বিবৃত করেন: “মূর্খতাজনিত অবৈধ যৌনাচার আমার বেলাদত (ধরাধামে শুভাগমন)-কে স্পর্শ করেনি। আমার বেলাদত হয়েছে ইসলামী বিবাহ রীতির ফলশ্রুতিতেই।”
[১]. বায়হাকীঃ সুনানুল কুবরা, ৭১৯০।
🕋 হাদিস : হিশাম ইবনে মোহাম্মদ আল-কালবী বর্ণনা করেন তাঁর বাবার ভাষ্য, যিনি বলেন: “আমি রাসূলে খোদা (ﷺ)-এর উর্ধ্বতন (বা পূর্ববর্তী) বংশীয় পাঁচ’শ জন মায়ের হিসেব আমার গণনায় পেয়েছি। তাঁদের কারো মাঝেই কোনো অবৈধ যৌনাচারের লেশচিহ্ন মাত্র আমি খুঁজে পাইনি, যেমনটি পাইনি অজ্ঞদের কর্মকাণ্ড।”
🕋 হাদিস : সাইয়্যেদুনা হযরত আলী (ক:) বর্ণনা করেন হুযূর পূর নূর (ﷺ)-এর হাদীস, যিনি এরশাদ ফরমান: “আমি বিয়ের ফলশ্রুতিতেই বেলাদত-প্রাপ্ত হয়েছি, অবৈধ যৌনাচার থেকে নয়; আবির্ভূত হয়েছি আদম (عليه السلام) হতে বংশপরম্পরায় আমার পিতামাতার ঘরে। মূর্খতাজনিত অবৈধ যৌনাচারের কোনো কিছুই আমাকে স্পর্শ করেনি।”
[২].
ক) ইবনে আবী শায়বা : আল মুসান্নাফ, ৭:৪০৯।
খ) তাবরানী : মুজামুল আওসাত, বাবু মিন ইসমিহি আবদির রহমান, ১০:৪৪১, হাদিস নং : ৪৮৮৪।
গ) বায়হাকী : দালায়িলুন নবুয়্যাত, বাবু ওয়া মিন খারাজতু মিন নিকাহিন, ১৯৬, হাদিস নং : ৮১।
🕋 হাদিস : হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) রেওয়ায়াত করেন মহানবী (ﷺ)-এর বাণী, যিনি এরশাদ ফরমান: “আমার পিতামাতা কখনোই অবৈধ যৌনাচার করেননি। আল্লাহতা’লা আমাকে পুতঃপবিত্র ঔরস থেকে পুতঃপবিত্র গর্ভে স্থানান্তর করতে থাকেন; যখনই দুটো (বিকল্প) পথ সামনে এসেছে, আমি সেরা পথটি-ই পেয়েছি।”
[৩].
ক) বায়হাকী : দালায়িলুন নবুয়্যাত, ১১১৮।
খ) ইবনে কাসীর : অলি বিদাইয়া ওয়ান্ নিহাইয়া, ২:২৫৫।
🕋 হাদিস : হযরত আনাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন যে হুযূর পাক (ﷺ) ‘লাকাদ জা’আকুম রাসূলুম্ মিন আনফুসিকুম’-[৪] আয়াতটি তেলাওয়াত করেন এবং বলেন: “আমি আমার খানদান, আত্মীয়তা ও পূর্বপুরুষের দিক দিয়ে তোমাদের মাঝে সেরা; হযরত আদম (عليه السلام) হতে আরম্ভ করে আমার পূর্বপুরুষদের কেউই অবৈধ যৌনাচার করেননি।”
[৪]. আল কুরআন : সূরা তাওবা, ৯:১২৮।
🕋 হাদিস : সাইয়্যেদাহ আয়েশা সিদ্দীকা (رضي الله عنه) মহানবী (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন যে হযরত জিবরীল আমীন (عليه السلام) বলেন, “আমি পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত খুঁজেও মহানবী (ﷺ)-এর মতো সেরা ব্যক্তিত্বের সন্ধান পাইনি; আর বনূ হাশিম গোত্রের পুত্রদের মতো কোনো বাবার সন্তানের দেখাও পাইনি আমি।”
[৫]. হায়সামী : মাজমাউ যাওয়ায়িদ, ৮:২১৭।
🕋 হাদিস : সহীহ বোখারী শরীফে হযরত আবূ হোরায়রা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন মহানবী (ﷺ)-এর হাদীস, যিনি এরশাদ ফরমান: “আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে আদম সন্তানদের সেরা প্রজন্মে, একের পর এক, যতোক্ষণে আমি না পৌঁছেছি আমার (বর্তমান)-টিতে।”
[৬].
ক) বুখারী : আস সহীহ, বাবু সিফাতি নবী, ১১:৩৯২, হাদিস নং ৩২৯৩।
খ) তাবরিযী : মিশকাতুল মাসাবীহ, বাবু ফামিলি সায়্যিদিল মুরসালীন, পৃ. ২৪৭, হাদিস নং : ৫৭৩৯।
গ) আহমদ ইবনে হাম্বল ও বাবু মুসনাদি আবী হুরাইরা, ১৮:৪৪, হাদিস নং : ৮৫০২।
🕋 হাদিস : সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত ওয়াতিলা ইবনে আল-আসকা’ বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ ফরমান, “আল্লাহ পাক হযরত ইসমাঈল (عليه السلام)-এর পুত্রদের মধ্যে কেনানাকে বেছে নিয়েছেন এবং কেনানা হতে কুরাইশ গোত্রকে পছন্দ করেছেন; অার কুরাইশ গোত্র হতে বনূ হাশিমকে বেছে নিয়েছেন; এবং চূড়ান্তভাবে হাশিমের পুত্রদের মাঝে আমাকেই পছন্দ করেছেন।”
[৭].
ক) মুসলিম : আস সহীহ, বাবু ফদ্বরি নসবিন নবী, হাদিস নংঃ ২২৭৬।
খ) তিরমিযী : আসি সুনান, বাবু ফদ্বলিন নবী, হাদিস নং ৩৬০৫ ও ৩৬০৬।
🕋 হাদিস : হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) রেওয়ায়াত করেন হুযূর পূর নূর (ﷺ)-এর বাণী, যিনি বলেন: “সৃষ্টিকুলের অস্তিত্ব দেয়ার পর আল্লাহ পাক আমাকে সেরা দলগুলোতে অধিষ্ঠিত করেন; এবং দুটো দলের মধ্যে সেরা দলে (আমি অধিষ্ঠিত হই)। অতঃপর তিনি গোত্রগুলো বেছে নেন এবং সেগুলোর সেরা পরিবারটিতে আমাকে অাবির্ভূত করেন। অতএব, আমার ব্যক্তিত্ব, আত্মা ও স্বভাব সর্বসেরা এবং আমি এগুলোর সেরা উৎস হতে আগত।”
[৮].
ক) তিরমিযী : আস্-সুনান, বাবু ফদ্বলিন নবী, ১২:৫৩, হাদিস নং : ৫৪০।
খ) তাবরানীঃ মিশকাতুল মাসাবীহ, বাবু ফাদ্বায়িলি সায়্যিদিল মুরসালীন, পৃ. ২৫১, হাদিস নং : ৫৭৫৭।
🕋 হাদিস : হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর হাদীস, যিনি এরশাদ ফরমান: “আল্লাহতা’লা তাঁর সৃষ্টিকুলকে যাচাই করে আদম সন্তানদেরকে তা থেকে বাছাই করেন; এরপর তিনি আদম সন্তানদেরকে যাচাই করে তাদের মধ্য থেকে আরবদেরকে মনোনীত করেন; অতঃপর তিনি আরবদেরকে যাচাই করে আমাকে তাদের মধ্য হতে পছন্দ করে নেন। অতএব, আমি-ই সব পছন্দের সেরা পছন্দ। সতর্ক হও, আরবদেরকে যে মানুষেরা ভালোবাসে, তা আমার প্রতি ভালোবাসার কারণেই ভালোবাসে; আর যারা আরবদেরকে ঘৃণা করে, তারা আমাকে ঘৃণা করার কারণেই তা করে থাকে।”
[৯]. বায়হাকীঃ সুনানুল কুবরা, ৭:১৩৪।
স্বয়ং নবীজি নিজেই তাঁর মিলাদুন্নবী (ﷺ)’র আলোচনা করেছেন।
❏ মিলাদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে জন্মকালীন ঘটনা বর্ণনা
আয়াতঃ আল্লাহ পাক বলেন,
قال عيسي ابن مريم يبني اسراءيا اني رسول الله اليكم مصدقا لما بين يدي من التورة و مبشرا برسول ياتي من بعدي اسمه احمد
অর্থ :হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হে বনী ইসরাঈল ! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হিসাবে প্রেরিত হয়েছি ! আমার পূর্ববর্তী তাওরাত শরীফের আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদ দানকারী। যিনি আমার পরে আগমন করবেন, উনার নাম মুবারক হচ্ছে আহমদ (ﷺ) !” (সূরা ছফ ৬)
সূরা ছাফ ৬ এর তফসীর :
উক্ত আয়াতের পরিপ্রেক্ষিতে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিজেই নিজের মীলদ শরীফ বর্ননা করেন।
🕋হাদিস :
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল, ইমাম হাকিম, ইমাম আত-তাবারানী, ইমাম আল-বাজ্জার, ইমাম আল-বায়হাকী (رحمة الله) বর্ননা করেন,
হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,
عَن العِرْباض بن ساريةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ… وَسَأُخْبِرُكُمْ بِأَوَّلِ أَمْرِي دَعْوَةُ إِبْرَاهِيمَ وَبِشَارَةُ عِيسَى وَرُؤْيَا أُمِّي الَّتِي رَأَتْ حِينَ وَضَعَتْنِي وَقَدْ خَرَجَ لَهَا نُورٌ أَضَاءَ لَهَا مِنْهُ قصر الشام… (رواية في شرح ااسنة)
“আমি আল্লাহর বান্দা ও শেষ নবী।আমি তখনো নবী ছিলাম যখন আদম (عليه السلام) মাটির অন্তর্গত ছিলেন। খুব শীঘ্রই আমি তোমাদেরকে এসব বিষয়ে অবগত করব। আমি আমার পিতা হযরত ইব্রাহীম (عليه السلام) এর দোয়া, হযরত ঈসা (عليه السلام) এর [তার জাতিকে দেয়া ভবিষ্যৎবানী] সুসংবাদ এবং “আমার আন্মাজানের (স্বপ্নে) দেখা সেই নূর যা ওনার দেহ থেকে বের হয়ে শাম দেশের প্রাসাদ সমুহকে আলোকিত করেছিল।”
তথ্যসূত্রঃ
১.ইমাম আহমদ : মুসনাদে আহমদ খ ৪ : প ১২৭ : হাদিস ১৬৭০১।
২.আল-বায়হাকী, শু’য়াবুল ঈমান, খ. ২, পৃ. ৫১০, হাদীস: ১৩২২।
৩.ইমাম বায়হাকী : দালায়েলুন নবুওয়াত : খন্ড ১ : পৃ ৮৩, প ১১০।
৪.ইমাম বাজ্জার : আল বাহরুয যাখরার : খ ১০, পৃ ১৫৩, হাদিস ৪১৯৯ ।
৫.ইমাম ইবনে ইসহাক : সিরাতুন নবী : খ ১ : প ২৮।
৬.ইমাম ইবনে হিশাম : সিরাতুন নবী : খ ১ : প ১৫৬। ৭.ইমাম ইবনে সা’দ : তাবাকাত আল কুবরা : খ ১ : প ১৫০।
৮.ইমাম তাবারী : তফসীরে তাবারী : খ ১ : প ৫৫৬।
৯.ইমাম তাবারী : তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক : খ ১ : প ৪৫৮।
১০.ইমাম ইবনে আসাকির : তারিখে মদিনাত দামিস্ক : ১ম খন্ড : ১৭০ পৃ & ৩য় খন্ড ৩৯৩ পৃ।
১১.ইমাম কুরতুবী : তফসীরে কুরতুবী : খ ২ : প ১৩১।
১২.ইমাম আবু লাইস সমরকানী : তফসীরে সমরকানী : খ ৩ : প ৪২১।
১৩.আত-তাবারানী, আল-মু’জামুল কবীর, খ. ১৮, পৃ. ২৫২, হাদীস: ২২৯ ও ২৩০।
১৪.ইমাম ইবনে হিব্বান : সহীহ ইবনে হিব্বান : খ ৯ : প ১০৬।
১৫.মুসনাদে আফযার : হাদিস ২৩৬৫।
১৬.খতিব তিবরিযি, মিশকাতুল মাসাবিহ, ৩/১৬০৪পৃ. হাদিস নং. ৫৭৫৯,
১৭.ইমাম ইবনে জাওজী : আল ওয়াফা : প ৯১।
১৮.ইমাম হাকিম : মুস্তাদরেক আল হাকিম : খন্ড ২. পৃ. ৪৫৩, হাদীস: ৩৫৬৬ ও পৃ. ৬৫৬, হাদীস: ৪১৭৫।
১৯.ইমাম ইবনে কাসীর : তফসীরে ইবনে কাসীর : খ ৪ : প ৩৬০।
২০.ইমাম ইবনে কাসীর : আল বিদায়া ওয়ান নেহায়া : খ ২ : প ৩২১।
২১.ইমাম ইবনে হাজর হায়সামী : মাজমাউল যাওয়াইদ : (৮:২২১/৪০৯)
২২.ইমাম সূয়ূতী : তফসীরে দুররে মনসূর : খ ১ : প ৩৩৪।
২৩.ইমাম ইমাম হিন্দি : কাঞ্জুল উম্মাল : খ ১১ : প ১৭৩।
২৪.ইমাম হালাভী : সিরাতে হালাভিয়্যাহ : খ ১ : প ৭৭।
২৫.মাওয়ারেদুল জামান : ১ম খন্ড : পৃ ৫১২।
২৬.ইমাম ইমাম হিন্দি : কাঞ্জুল উম্মাল : খ ১১ : প ১৭৩।
২৭.ইমাম হালাভী : সিরাতে হালাভিয়্যাহ : খ ১ : প ৭৭।
২৮.সীরাত বিশ্বকোষঃ হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) : ৪খন্ডঃ পৃ ২১৮ : ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশনী।
এই হাদিসটির বিভিন্ন রেওয়াতে বর্ণিত সুত্রঃ
১. হযরত কা’ব আল আহবার (رضي الله عنه)
২. হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ (رضي الله عنه) এর মাতা শিফা বিনতে আমর ইবনে আউফ (رضي الله عنه)
৩. হযরত ইরবাদ ইবনে সারিয়া (رضي الله عنه)
৪. হযরত মু’য়াজ বিন জাবাল (رضي الله عنه)
৫. হযরত আবু উমামা (رضي الله عنه)
৬. হযরত উসমান ইবনে আবিল আস (رضي الله عنه)
৭. হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه)
৮. হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (رضي الله عنه) [ইমাম হাকিম : আল-মুস্তাদরাক : পৃ ৩৬৯, হাদিস ৫৪১৭; মুহাদ্দিসে দেহলভী : মা সাবাতা বিস সুন্নাহ : রবিউল আওয়াল অধ্যায় : ১১৪ পৃ]
৯. হযরত ইকরামা (رضي الله عنه)
❏ মিলাদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে রোজা রাখা
🕋হাদিসঃ
হযরত আবু কাতাদা আনসারী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
– أَخْبَرَنَا أَبُو الْحُسَيْنِ بْنُ الْفَضْلِ الْقَطَّانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ سُفْيَانَ، حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ، وَالْحَجَّاجُ، قَالَا: حَدَّثَنَا مَهْدِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا غَيْلَانُ بْنُ جَرِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَعْبَدٍ الزِّمَّانِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ الْأَنْصَارِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ لَهُ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللهِ صَوْمُ يَوْمِ الِاثْنَيْنِ ؟ قَالَ: ” فِيهِ وُلِدْتُ وَفِيهِ أُنْزِلَ عَلَيَّ الْقُرْآنُ ” أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ فِي الصَّحِي
অর্থঃ রাসুলুল্লাহ (ﷺ) কে সোমবারে রোজা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো, তিঁনি ইরশাদ করেন-
“সোমবারে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং সোমবারই আমার প্রতি ওহী নাজিল করা হয়েছে।”
●মোসান্নাফে আবদ্ আল-রাযযাক, ৪র্থ খণ্ড, ২৯৬ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ৭৮৬৫
●সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬০৬; ২৬০৩ হাদীসেও বিদ্যমান।
●মুসনাদে ইমাম আহমদ, খন্ড-৫ম, পৃ-২৮৭ হা.নং২১৫০৮,
●সুনানে আবি দাউদ, ৭ম খণ্ড, ২৫৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ২৪২৮
●মিশকাত পৃঃ১৭৯,
●বায়হাকীঃ সুনানে বায়হাকী, খন্ড ১ম, পৃ-৭২,
●ইমাম বায়হাকী কৃত সুনানে কুবরা, ৪র্থ খণ্ড, ৩০০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ৮১৮২ ও ৮২৫৯
●ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানীঃ হিলিয়াতুল আউলিয়া ৯ম খন্ড ৫২ পৃ:
͏●ইমাম মোল্লা আলী কারীঃ মিরকাত শরহে মিশকাত, খন্ড-৪র্থ, পৃ-২৯১,
●আসাদ আল-গাবা ফী মা’আরফাতেস্ সাহাবা, ১ম খণ্ড, ২১-২২ পৃষ্ঠা; ১৯৮৭ সালে লাহোর, পাকিস্তানে প্রকাশিত
❏ মিলাদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর বংশ-বৃত্তান্ত আলোচনা
🕋 হাদিস :
৩৫৫৭ – حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَمْرٍو عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ بُعِثْتُ مِنْ خَيْرِ قُرُونِ بَنِي آدَمَ قَرْنًا فَقَرْنًا حَتَّى كُنْتُ مِنْ الْقَرْنِ الَّذِي كُنْتُ فِيهِ
নিশ্চয় আল্লাহ তা’য়ালা, ইব্রাহীম (عليه السلام) এর আওলাদ হতে ইসমাঈল (عليه السلام) কে নির্বাচন করেছেন। ইসমাঈল (عليه السلام) হতে কেনানাহকে নির্বাচন করেছেন এবং কেনানার বংশ হতে কুরাইশ, কুরাইশের বংশ হতে হাশেমকে নির্বাচন করেছেন আর আমাকে হাশেমের আওলাদ হতে নির্বাচন করেছেন।
●মুসলিম শরীফ, খন্ড ৭, পৃষ্ঠা ৫৮;
●তিরমিযি শরীফ, হাদিস নং ৩৬০৫;
●মসনদে আহমদ, হাদীস নং ১৭০২৮;
●মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, ১১/৪৭৮, হদীস নং ৩২৩৮৯
🕋 হাদিস :
ওয়াসিলা ইবনে আল-আসকা (رضي الله عنه)’ বর্ণনা করেন যে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ ফরমানঃ “সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়া’লা হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর বংশধরদের মাঝে কানানা গোত্রকে বেছে নিয়েছেন; কানানা গোত্রের মধ্য হতে কোরাইশ গোত্রকে বেছে নিয়েছেন; কুরাইশের মধ্য হতে হাশেম পরিবারকে বেছে নিয়েছেন; আর আমাকে হাশেম পরিবারের মধ্য হতে বেছে নিয়েছেন”।
[তিরমিযী শরীফ: কিতাবুল মানাকিব, মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত অধ্যায়, হাদীস নং ৩৬১৭]
🕋 হাদিস :
হুজুর করিম (ﷺ) এর চাচা হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
عَن الْعَبَّاس أَنَّهُ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَأَنَّهُ سَمِعَ شَيْئًا فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ:مَنْ أَنَا؟ فَقَالُوا: أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ. فَقَالَ:أَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ الْخَلْقَ فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ ثمَّ جعلهم فرقتَيْن فجعلني فِي خير فِرْقَةً ثُمَّ جَعَلَهُمْ قَبَائِلَ فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ قَبيلَة ثمَّ جعله بُيُوتًا فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ بَيْتًا فَأَنَا خَيْرُهُمْ نفسا وَخَيرهمْ بَيْتا . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ-
-‘‘একদা তিনি হুযুর (ﷺ) এর নিকট ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আসলেন। কারণ তিনি যেন হুযুর করিম (ﷺ) এর বংশ বুনিয়াদ সম্পর্কে বিরূপ কিছু মন্তব্য শুনেছেন। [তা হুযুর করিম (ﷺ) কে অবহিত করলেন।] তখন হুজুর (ﷺ) মিম্বর শরীফের উপর আরোহন করলেন। অতঃপর তিনি সাহাবা কেরামগণের উদ্দেশ্যে বললেন “আমি কে?”
উত্তরে তাঁরা বললেন “আপনি আল্লাহর রাসূল”। তখন হুজুর আকরাম (ﷺ) এরশাদ করলেন “আমি আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের পুত্র মুহাম্মদ (ﷺ)। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা মানব-দানব সবই সৃষ্টি করেছেন। এতেও আমাকে উত্তম পক্ষের [অর্থাৎ মানবজাতি] মধ্যে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাদেরকে [মানব জাতিকে] দু ভাগে বিভক্ত করেন [আরবীয় ও অনারবীয়]। এতেও আমাকে উত্তম ‘সম্প্রদায় [আরবীয়তে] প্রেরণ করেছেন। অতঃপর আরব জাতিকে বহু গোত্রে বিভক্ত করেন। আর আমাকে গোত্রের দিক দিয়ে উত্তম গোত্র [কুরাইশে] রেখেছেন করেছেন। তারপর তাদেরকে [কুরাইশকে] পুনরায় বিভিন্ন উপগোত্রে ভাগ করেছেন। আর আমাকে উপগোত্রের দিক থেকে শ্রেষ্ঠ উপগোত্র [বনি হাশেমে] প্রেরণ করেছেন। সুতরাং আমি তোমাদের [তামাম সৃষ্টিজগতের] মধ্যে সত্ত্বাগত, বংশগত ও গোত্রগত দিক থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ।’’
→ইমাম তিরমিযি এ সনদটিকে ‘হাসান’ বলেছেন।
→আবূ হাসান এই হাদীসকে হাসান বলেছেন।
● তিরমিযী শরীফঃ কিতাবুল মানাকিব (গুণাবলীর বই), মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত অধ্যায়, হাদীস নং ৩৬০৮/৩৬১৬]
●মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৭৮৮,
●আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৬৭৫,
●মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩২২৯৬
●বায়হাকীঃ দালায়েলুল নবুওয়াতঃ ১ম খন্ড ১৬৯ পৃ,
●কানযুল উম্মাল ২য় খন্ড ১৭৫ পৃঃ
●খতিব তিবরিযি, মিশকাতুল মাসাবিহ, – ৫১৩ পৃ.,
●আশরাফ আলী থানভীঃ শরীয়তের দৃষ্টিতে ঈদে মিলাদুন্নবী (ﷺ) : অধ্যায় ৪ : নবী প্রেমের দাবী : ৪৩ পৃ, বাড কম্প্রিন্ট & পাব্লিকেশনস।
🕋 হাদিস :
অপর হাদিসে আছেঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক হযরত ইসমাঈল (عليه السلام)-এর বংশধর হতে হযরত কিনানা (عليه السلام)-কে মনোনীত করেছেন, এরপর কিনানা (عليه السلام)-এর বংশধর হতে কুরাইশকে মনোনীত করেছেন।
কুরাইশের বংশধর হতে বনী হাশিমকে মনোনীত করেছেন, আর বনী হাশিম থেকে আমাকে (রাসূলুল্লাহ ﷺ)-কে মনোনীত করেছেন।”
● সহিহ মুসলিমঃ ২য় খন্ড, ২৪৫ পৃষ্ঠা, হাদীস ২২৭৬।
● সহিহ তিরমীযিঃ ২য় খন্ড, ২০১ পৃষ্ঠা, হাদীস ৩৬০৫ ।
❏ মিলাদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে কাফির আবু লাহাবের আযাব লাঘব
🕋 হাদিস :
হযরত উরওয়া ইবনে জুবায়ের (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত,
ﻗﺎﻝ ﻋﺮﻭﺓ ﻭﺛﻮﻳﺒﺔ ﻣﻮﻻﺓ ﻻﺑﻰ ﻟﻬﺐ ﻛﺎﻥ ﺍﺑﻮﻟﻬﺐ ﺍﻋﺘﻘﻬﺎ ﻓﺎﺭﺿﻌﺖ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻠﻤﺎ ﻣﺎﺕﺍﺑﻮﻟﻬﺐ ﺍﺭﻳﻪ ﺑﻌﺾ ﺍﻫﻠﻪ ﺑﺸﺮ ﺣﻴﺒﺔ ﻗﺎﻝ ﻟﻪ ﻣﺎﺫﺍ ﻟﻘﻴﺖ ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻮﻟﻬﺐ ﻟﻢ ﺍﻟﻖ ﺑﻌﺪﻛﻢ ﻏﻴﺮ ﺍﻧﻰ ﺳﻘﻴﺖ ﻓﻰ ﻫﺬﻩ ﺑﻌﺘﺎﻗﺘﻰ ﺛﻮﻳﺒﺔ ০
হযরত সুহাইবাহ (رضي الله عنه) আবু লাহাবের দাসী ছিল। আবু লাহাব ওনার কাছে থেকে [রাসুল ﷺ] এর বেলাদাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত হয়ে কৃতদাসী সুহাইবাহ (رضي الله عنه) কে আযাদ করে দিয়েছিল। যখন আবু লাহাব মৃত্যুবরণ করেছিল তখন (এক বছর পর) তার ঘনিষ্ঠদের কেউ [হযরত আব্বাস (رضي الله عنه)] তাকে স্বপ্নে শোচনীয় অবস্থায় দেখে তার উদ্দেশ্যে বলেন,“তোমার অবস্থা কেমন?”
আবু লাহাব উত্তরে বলল, “তোমাদের নিকট থেকে আসার পর আমি কোন প্রকার শান্তি পাইনি, কেবল যে দিন [রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বেলাদতের খুশিতে] দাসী সুহাইবাকে আযাদ করে দিয়েছিলাম, ঐ কারনে প্রতি সোমবার আংগুল দুটির মধ্যে কিছু পানি জমে আমি ঐ পানি পান করে থাকি ঐদিন (জাহান্নামের কঠিন) আযাবকে হাল্কাবোধ করে থাকি।”
(ব্রেকেটযুক্ত টিকা ও অনুবাদঃ মাসুম বিল্লাহ সানি)
তথ্যসূত্রঃ
● সহিহ বুখারী : ২৬৪৪, ২৬৪৫, ২৬৪৬, ৩১০৫, ৪৭৯৬, ৫০৯৯, ৫১০০, ৫১০১, ৫১০৩, ৫১০৬, ৫১০৭, ৫১২৪, ৫১৩৩, ৫২৩৯, ৫৩৭২, ৬১৫৬
●ইমাম আহমদ : মুসনাদে আহমদ : হাদিস ২৫৯৫৩ উক্ত শিরোনামে لو كانت تحل لي لما تزوجتها قد أرضعتني وأباها ثويبة مولاة بني هاشم فلا تعرضن علي أخواتكن ولا بناتكن পুনরায় হাদিস ২৬৮৬৫, মতন :
ابنة أخي من الرضاعة وأرضعتني وأبا سلمة ثويبة فلا تعرضن علي بناتكن ولا أخواتكن
●ইমাম নাসাঈ : আস সুনানুল কুবরা : হাদিস ৫৩৯৪, ৫৩৯৫
●ইমাম নাসাঈ : আস সুনান আস-সুগরা : হাদিস ৩২৮৪, ৩২৮৫, ৩২৮৬, ৩২৮৭
●ইবনে মাজাহ : হাদিস ১৯৩৯ শিরোনাম( ابنة أخي من الرضاعة أرضعتني وأباها ثويبة فلا تعرضن علي أخواتكن ولا بناتكن)
● মুসলিম : হাদিস ২৬৩৪, ২৬৩৫।
● সহিহ ইবনে হিব্বান : ৪১১০, ৪১১১ হাদিসের মতন :
إن زينب تحرم علي وإنها في حجري وأرضعتني وإياها ثويبة فلا تعرضن علي بناتكن ولا أخواتكن ولا عماتكن ولا خالاتكن ولا أمهاتكن
اطراف الحدیث
●ইমাম বায়হাকী : সুনান আল কুবরা : বিবাহ অধ্যায়।
●জামেউল হাদিস : মাসানিদুস সাহাবা : হাদিস ৪৩৫৪৫।
●ইমাম বাগবি : শরহুস সুন্নাহ : ৯ম খন্ড : ৭৫ পৃ।
●ইমাম হিন্দি : কাঞ্জুল উম্মাল : ৬ খন্ড, হাদিস ১৫৭২৫।
●মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, ৭ম খন্ড, হাদিস ১৩৫৪৬।
●ইমাম আঈনী : উমদাতুল কারী শরহে বুখারী : ১৪ খন্ড, পৃ ৪৫।
●ইমাম ইবনে কাসীর : সিরাত আন নববিয়্যাহ : ১ম খন্ড , পৃ ২২৪।
●শরহে যুরকানী, ১ম খন্ড, ২৬১ পৃ।
●সুবলুল হুয়া ওয়ার রশদ : ১ম খন্ড, ৩৬৭ পৃ।
●ইবনে হাজর আসকালানী : ফতহুল বারী : ৭ম জিলদের ১২৫।
●ইবনুল কাইয়্যুম : তোহফাতুল মাওদুদ বি আহকাম আল মাওলুদ, ১৯ পৃ।
●ইবনে আব্দুল ওহাব, মুখতাসার সিরাতুর রাসূল, মাওলিদুন্নবী।
যেমন উক্ত ঘটনাটি বর্ননা করেছেন যেসকল ইমামঃ
❏ ইমাম শামসুদ্দিন দিমিস্কি (رحمة الله)
❏ বিখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা ইয়াকুব (رحمة الله)
❏ ইমাম ইবনে জাওযী (رحمة الله)
❏ ইমাম ইবনে দাহইয়া (رحمة الله)
❏ ইমাম সুহাইলী (رحمة الله)
❏ ইমাম ইবনে কাছির (رحمة الله)
❏ ইমাম ইবনে হজর আসকালানী (رحمة الله)
❏ ইমাম কুস্তালানী (رحمة الله)
❏ ইমাম জালালুদ্দিন মুয়ূতী (رحمة الله)
❏ ইমাম জামাল উদ্দিন আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল মালিক আল কাতানী (رحمة الله)
❏ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله)
সহ আরো অনেকে বর্ণনা করেছেন।
মিলদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে আবু লাহাবের আযাব লাঘব উক্ত ঘটনা সমর্থনে মুহাদ্দিসে কেরামের বিবৃতি তোলে ধরা হলঃ
❏ ইমাম শামসুদ্দিন দামিস্কি (رحمة الله) বলেনঃ
قد صح أن أبا لهب يخفف عنه عذاب النار في مثل يوم الاثنين لإعتاقه ثويبة سرورا بميلاد النبي صلى الله عليه وسلم ثم أنشد:إذا كان هذا كافرا جاء ذمه – وتبت يداه في الجحيم مخلدا أتى أنه في يوم الاثنين دائما – يخفف عنه للسرور بأحمدا فما الظن بالعبد الذي طول عمره – بأحمد مسرورا ومات موحدا
এটি প্রমাণিত যে আবু লাহাবের (পারলৌকিক) অনলে জ্বলবার শাস্তি প্রতি সোমবার লাঘব করা হয়, কেননা সে মহানবী (ﷺ)-এর বেলাদতে খুশি হয়েছিল এবং তার দাসী সোয়াইবিয়াকে মুক্ত করে দিয়েছিল (সুসংবাদ দেয়ার জন্যে)। আবু লাহাবের মতো অবিশ্বাসী, যার চিরস্থায়ী আবাস দোযখ এবং যার জন্যে সূরা লাহাব অবতীর্ণ হয়েছে, সে যদি আযাব থেকে তাখফিফ (নিষ্কৃতি) পায় প্রতি সোমবার, তাহলে ভাবুন সেই মো’মেন ব্যক্তির কী শান যিনি সারা জীবন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বেলাদতে খুশি প্রকাশ করেছিলেন এবং আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস নিয়ে ইন্তেকাল করেছেন।
● ইমাম দামেশকী কৃত ‘মওরিদ আস-সাফা ফী মওলিদ আল-হাদী’।
● ইমাম সৈয়ুতী প্রণীত ‘হুসনুল মাকসাদ ফী আমলিল মওলিদ’, ৬৬ পৃষ্ঠা।
❏ বিখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা ইয়াকুব (رحمة الله) উনার কিতাবে লিখেন-
قال النبي صلي الله عليه و سلم رايت ابا لهب في النار يصيح العطش العطش فيسقي من الماء في نقر ابهامه فقلت بم هذا فقال بعتقي ثويبة لانها ارضعتك
অর্থ : হাবীবুল্লাহ, হুজুর পাক (ﷺ) তিনি বলেন, আমি আবু লাহাবকে দেখেছি জাহান্নামের আগুনে নিমজ্জিত অবস্থায় চিৎকার করে বলছে, পানি দাও ! পানি দাও !
অতঃপর তার বৃদ্ধাঙুলীর গিরা দিয়ে পানি পান করানো হচ্ছে | আমি বললাম, কি কারনে এ পানি দেয়া পাচ্ছো ? আবু লাহাব বললো, আপনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে হযরত সুয়াইবা (رضي الله عنه) উনাকে মুক্ত করার কারনে এই ফায়দা পাচ্ছি ! কেননা তিনি আপনাকে দুগ্ধ মুবারক পান করিয়েছেন !”
[তারীখে ইয়াকুবী ১ম খন্ড ৩৬২ পৃষ্ঠা]
❏ ইমাম সুহাইলী (رحمة الله) লিখেন :
وذكر السهيلي ان العباس قال لما مات ابو لهب رايته في منامي بعد حول في شر حال فقال ما لقيت بعد كم راحة الا ان العذاب يخفف عني في كل يوم اثنين وذلك ان النبي صلي الله عليه و سلم ولد يوم الاثنين وكانت ثويبة بشرت ابا لهب بمولده فاعتقها
অর্থ: হযরত ইমাম সুহাইলী (رحمة الله) উল্লেখ করেন যে, হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, আবু লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর তাকে আমি স্বপ্নে দেখি যে, সে অত্যন্ত দুরবস্থায় রয়েছে ! সে বললো, [হে ভাই হযরত আব্বাস (رضي الله عنه)] আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার পর আমি কোন শান্তির মুখ দেখি নাই।
তবে হ্যাঁ, প্রতি সোমবার যখন আগমন করে তখন আমার থেকে সমস্ত আযাব লাঘব করা হয়, আমি শান্তিতে থাকি। হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) তিনি বলেন,আবু লাহাবের এ আযাব লাঘব হয়ে শান্তিতে থাকার কারন হচ্ছে, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক (ﷺ) এর বিলাদত শরীফ এর দিন ছিলো সোমবার ! সেই সোমবারে হাবীবুল্লাহ (ﷺ) এর বিলাদতের সুসংবাদ নিয়ে আবু লাহাবের বাঁদী সুয়াইবা (رضي الله عنه) তিনি আবু লাহাবকে খবরটি জানালেন তখন আবু লাহাব মিলাদুন্নবীর সংবাদ শুনে খুশি হয়ে হযরত সুয়াইবা (رضي الله عنه)-কে তৎক্ষণাৎ আযাদ করে দেয় !”
● ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী : ফতহুল বারী শরহে বুখারী ৯ম খন্ড ১১৮ পৃষ্ঠা
● ইমাম বদরুদ্দিন আঈনীঃ ওমদাতুল কারী শরহে বুখারীঃ ২য় খন্ডের ২৯৯ পৃষ্ঠা।
● ইমাম কাস্তালানী : মাওয়াহেবুল লাদুননিয়াহ ১ম খন্ড !
● ইমাম জুরকারীঃ জুরকানী শরহে মাওয়াহেব : ১ম খন্ড ২৬০ পৃষ্ঠা
❏ ইমাম ইবনুজ জাওযী (رحمة الله) বলেন-
ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﺠﺰﺭﻯ ﻓﺎﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻫﺬﺍ ﺍﺑﻮﺍﻟﻬﺐ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ ﺍﻟﺬﻯ ﻧﺰﻝ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﺑﺬﻣﻪ ﺟﻮﺯﻯ ﻓﻰ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺑﻔﺮﺣﻪ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻮﻟﺪ
ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺑﻪ ﻓﻤﺎ ﺣﺎﻝ ﺍﻟﻤﺴﻠﻢ ﺍﻟﻤﺆﺣﺪ ﻣﻦ ﺍﻣﺘﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺍﻟﺬﻯ ﻳﺴﺮ ﺑﻤﻮﻟﺪﻩﻭﻳﺒﺬﻝﻣﺎﺗﺼﻞ ﺍﻟﻴﻪ ﻗﺪﺭﺗﻪ ﻓﻰ ﻣﺤﺒﺘﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻟﻌﻤﺮﻯ ﺍﻧﻤﺎ ﻳﻜﻮﻥ ﺟﺰﺍﺅﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻜﺮﻳﻢ ﺍﻥ ﻳﺪﺧﻠﻪﺑﻔﻀﻠﻪ ﺍﻟﻌﻤﻴﻢ ﺟﻨﺎﺕ ﺍﻟﻨﻌﻴﻢ ০ ( ﻣﻮﺍﻫﺐ ﺍﻟﻠﺪﻧﻴﻪ ﺝ ১ ০ ﺹ২৭ ﺯﺭﻗﺎﻧﻰ ﺝ ০১ ﺹ১৩৯ )
“যে কাফের আবু লাহাবের বিরোদ্ধে আল-কুরআন নাজিল হয়েছে এবং যার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত, সে আবু লাহাবও যদি হুজুর (ﷺ) এর মিলাদুন্নবী উপলক্ষে খুশি হওয়াতে সুফল পায়, তাহলে তাঁর উম্মতের মধ্যে যে একত্ববাদী মুসলমান এবং তাঁর মিলাদুন্নবীতে (ﷺ) আনন্দিত হয় তাঁর মহব্বতে যথাসাধ্য দান করে,
তার অবস্থা কী হবে? আমি কসম করে বলছি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ হতে তার বিনিময় এ হবে যে, তিনি সর্বব্যাপী অনুগ্রহ দ্বারা তাকে জান্নাতুন নাঈমে প্রবেশ করাবেন।’
● ইবনে জাওজীঃ বয়ানুল মিলাদুন্নবী
● ইমাম কুস্তালানীঃ মাওয়াহিবে লাদুনিয়া ১ম জিল্দ ২৭ পৃঃ,
● ইমাম জুরকানীঃ জুরকানী ১ম জিল্দ ১৩৭ পৃঃ
❏ ইমাম ইবনে দাহইয়া (رحمة الله) বর্ননা করেন,
عن ابن عباس رضي الله عنه ،كان يحدث ذات يوم في بيته وقائع و لاد ته بقوم فيبشرون ويحمدون إذا جاء النبي صلي الله عليه و سلم و قال حلت لكم شفاعتي
͏হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হইতে বর্ণিত, একদিন হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কিছু লোক নিয়ে নিজ গৃহে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মকালীন ঘটনাবলী বর্ণনা করছিলেন এবং তাঁর প্রশংসাবলী আলোচনা করে দুরুদ ও সালাম পেশ করছিলেন। ইত্যবসরে প্রিয়নবী হাজির হয়ে এ আবস্তা দেখে বললেন, তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত আবশ্যক হয়ে গেল ।
● ইমাম ইবনে দাহইয়াঃ আত-তানবীর।
❏ ইমাম ইবনে কাছির (رحمة الله) উপরোক্ত হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন,
“এমন জঘন্য কাফের যার দোষ বর্ণনায় (আল-কুরআনে) এসেছে যে, তার হাত ধ্বংস হয়েছে, তার স্থায়ী নিবাস চির জাহান্নাম। আহমদ (ﷺ) এর আবির্ভাবে খুশী হয়ে সর্বদা সোমবার আসলে তার (মত কাফির) থেকে (যদি) আজাব হালকা করা হয়, তবে কিরূপ ধারণা হতে পারে সে ব্যক্তির ব্যাপারে, যার জীবন আহমদ (ﷺ) বিষয়ে আনন্দিত ছিল এবং তাওহীদবাদী হয়ে ইন্তেকাল করেছেন?
❏ ইমাম শিহাব উদ্দিন আহমদ কাস্তালানী (رحمة الله) বর্ননা করেন,
আবু লাহাবের আযাদকৃত দাসী সুয়াইবাহ তাকে (হুযুর ﷺ)-কে দুধ পান করিয়েছেন। যাকে আবু লাহাব তখনই আযাদ করেছিলো তখন তিনি তাকে হুযুর (ﷺ) এর বেলাদত শরীফের শুভ সংবাদ শুনিয়েছিলেন। উল্লেখ্য যে, একদা আবু লাহাবকে তার মৃত্যুর পর স্বপ্নে দেখা গিয়েছিলো। [হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) এক বছর পর স্বপ্ন দেখেছিলেন] তখন তাকে বলা হলো “তোমার কি অবস্থা?” সে বলল, দোজখেই আছি। তবে প্রতি সোমবার রাতে আমার শাস্তি কিছুটা শিথিল করা হয়; আর আমি আমার এ আঙ্গুল দুটির মধ্যে চুষে পানি পানের সুযোগ পাই। আর তখন সে তার আঙ্গুলের মাথা দিয়ে ইশারা করলো। আর বলল, আমার শাস্তির শিথিলতা এ জন্য যে, সুয়াইবা (رضي الله عنه) যখন আমাকে নবী (ﷺ) এর বেলাদতের সুসংবাদ দিয়েছিলো, তখন তাকে আমি আযাদ করে দিয়েছিলাম এবং তিনি হুযুর (ﷺ) কে দুগ্ধপান করিয়েছেন।
❏ ইমাম শিহাব উদ্দিন আহমদ কাস্তালানী (رحمة الله) আরো বলেন-
এতদভিত্তিতে, আল্লামা মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে জাযরী (رحمة الله) বলেন, যখন ঐ আবু লাহাব কাফির, যার তিরস্কারে কোরআনের সূরা নাযিল হয়েছে। মিলাদুন্নবী (ﷺ) এ আনন্দ প্রকাশের কারণে জাহান্নামে পুরস্কৃত হয়েছে। এখন উম্মতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ঐ একত্ববাদী মুসলমানের কি অবস্থা? যে নবী করীম (ﷺ) এর বেলাদতে খুশি হয় এবং হুযুর (ﷺ) এর ভালবাসায় তার সাধ্যনুযায়ী খরচ করে। তিনি জবাবে বলেন- আমার জীবনের শপথ! নিশ্চয়ই পরম করুণাময় আল্লাহ তাকে আপন ব্যাপক করুণায় নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
● ইমাম কুস্তালানীঃ মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়াঃ হুযুর (ﷺ) এর “দুগ্ধপান শীর্ষক অধ্যায়”।
● জুরকানী শরীফ ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং- ২৫৮-২৬২
❏ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله) বলেন,
ﺟﻨﺎﻧﺠﻪ ﺩﺭ ﺣﺪﻳﺚ ﺍﻣﺪﻩ ﺍﺳﺖ ﻭﺩﺭﻳﻨﺠﺎ ﺳﻨﺪﺍﺳﺖ ﻣﺮﺍﻫﻞ ﻣﻮﺍﻟﻴﺪ ﺭﺍﻛﻪ ﺩﺭﺷﺐ ﻣﻴﻼﺩ ﺍﻧﺤﻀﺮﺕ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪﻭﺳﻠﻢ ﺳﺮﻭﺭ ﻛﻨﻨﺪ ﻭﺑﺬﻝ ﺍﻣﻮﺍﻝ ﻧﻤﺎﻳﻨﺪ ﻳﻌﻨﻰ ﺍﺑﻮﻟﻬﺐ ﻛﻪ ﻛﺎﻓﺮ ﺑﻮﺩ ﻭﻗﺮﺍﻥ ﺑﻤﺬﻣﺖ ﻭﻯ ﻧﺎﺯﻝ ﺷﺪﻩ ﺟﻮﻥﺑﺴﺮﻭﺭ ﺑﻤﻴﻼﺩ ﺍﻧﺤﻀﺮﺕ ﻭ ﺑﺬﻝ ﺷﻴﺮ ﺟﺎﺭﻳﻪ
ﻭﻯ ﺑﺠﻬﺔ ﺍﻧﺤﻀﺮﺕ ﺟﺰﺍ ﺩﺍﺩﻩ ﺷﺪ ﺗﺎﺣﺎﻝ ﻣﺴﻠﻤﺎﻥ ﻛﻪ ﻣﻤﻠﻮﺳﺖ ﺑﻤﺤﺒﺖ ﻭﺳﺮﻭﺭ ﻭﺑﺬﻝ ﻣﺎﻝ ﺩﺭ ﻃﺮﻳﻖﻭﻯﺟﻪ ﺑﺎﺷﺪ ﻭﻟﻴﻜﻦ ﺑﺎﻳﺪﻛﻪ ﺍﺯ ﺑﺪﻋﺘﻬﺎ ﻛﻪ ﻋﻮﺍﻡ ﺍﺣﺪﺍﺙ ﻛﺮﺩﻩ ﺍﻧﺪﺍﺯ ﺗﻐﻨﻰ ﻭﺍﻻﺕ ﻣﺤﺮﻣﻪ ﻭ ﻣﻨﻜﺮﺍﺕ ﺧﺎﻟﻰﺑﺎﺷﺪ ০ ( ﻣﺪﺍﺭﺝ ﺍﻟﻨﺒﻮﺕ ﺝ ২ ০ ﺹ২৬ )
“উক্ত ঘটনা মিলাদ শরীফ পাঠকারীদের জন্য একটি বৃহত্তম দলিল, যারা মিলাদুন্নবীর রাতে আনন্দ উৎসব ও দান খয়ারাত করে থাকেন। আবু লাহাব কাফের এবং তার বিরোদ্ধে কোরআন নাজিল হওয়া সত্বেও নবী পাক (ﷺ) জন্মের সুসংবাদে আনন্দিত হয়ে নূরবীকে দুধপান করানোর নিমিত্তে বাদী [হযরত সুয়াইবাহ (رضي الله عنه) কে] আজাদ করে দেয়, সে কারণে তাকে পুরস্কার স্বরূপ প্রতি সোমবারে তার আজাব নিরসন করা হল। এখন যারা ঈমানদার নবীপ্রেমিক আনন্দ উৎসব ও দান খয়রাত করেন তাঁদের পুরস্কার কীরূপ হবে? অবশ্য সে মিলাদকে শরীফে গান ও হারাম বাদ্যযন্ত্র হতে পবিত্র রাখতে হবে।
[ইমাম আব্দুল হক দেহলভী (رحمة الله) : মাদারিজুন নবুয়ত ২য় খণ্ড ২৬ পৃঃ]
❏ ইমাম জামাল উদ্দিন আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল মালিক আল কাতানী (رحمة الله) পবিত্র মিলাদ সম্পর্কে লিখেন,
রাসূল (ﷺ) এর জন্ম দিন উপলক্ষে (প্রভুর শুকর আদায় স্বরূপ) যারা আনন্দ ও খুশী প্রকাশ করে তাদের পরকালে শাস্তি হালকা ও কম হওয়ার কারণে পরিণত হয়।
[সুবুলুল হুদা ওয়ার রাসাদ ফী সীরাতি খাইরিল ইবাদ-১ম খন্ড-পৃস্ঠা নং-৩৬৪]
❏ ইমাম ইবনে হজর আসকালানী (رحمة الله)
ফতহুল বারী শরহে বুখারী শরীফের মধ্যে এ মাসআলা নিয়ে বিশদ আলোচনা করে তিনি বলেনঃ
ﻓﻴﺤﺘﻤﻞ ﺍﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻣﺎﻳﺘﻌﻠﻖ ﺑﺎﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﺨﺼﻮﺻﺎ ﻣﻦ ﺫﺍﻟﻚ ﺑﺪﻟﻴﻞ ﻗﺼﺔ ﺍﺑﻰ ﻃﺎﻟﺐ ﻛﻤﺎﺗﻘﺪﻡ ﺍﻧﻪ ﺧﻔﻒ ﻋﻨﻪ ০
“যদিও কোন স্বপ্ন শরিয়তের দলিলরূপে গণ্য হয় না, কিন্তু এখানে হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) এর স্বপ্ন আবু লাহাবের আজাব লাঘব হওয়ার ব্যাপারে কেবলমাত্র নবী করিম (ﷺ) সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ার দরুণ দলিলরূপে গণ্য হতে পারে। অন্য কারো স্বপ্ন শরিয়তের দলিলরূপে গণ্য হবে না। তারপর আবু তালেবের আজাব কম হওয়ার প্রসঙ্গ দলিলরূপে উল্লেখ করেছেন।”
[ইমাম আসকালানী: ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ৯ম খন্ড, ১৫৪ পৃ:]
সাহাবীগণের যুগে মিলাদুন্নবী (ﷺ) উদযাপন
🕋 হাদিস :
হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه) বলেন-
مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قِرا ةَ مَوْ لِدِ النَّبىُ صلي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَان رفيقي فىِ الجَنّةِ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে”।
[ইমাম ইবনে হাজার হায়সামীঃ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭]
🕋 হাদিস :
হযরত ওমর ফারুক (رضي الله عنه) বলেন-
مَنْ عَظَّمَ مَوْلِدِ النَّبِىُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ َاحيا الاسْالاَمُ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী (ﷺ)-কে সম্মান করলো, সে অবশ্যই ইসলামকে জীবিত করলো”।
[ইমাম ইবনে হাজার হায়সামীঃ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭]
🕋 হাদিস :
হযরত উসমান বিন আফফান (رضي الله عنه) বলেন –
مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قرأة مَوْلِدِ النَّبِىُ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ فَكَا نَّمَا ثَهِيد غَزُوَةِ بَدَر َوحُنَيْنُ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী (ﷺ) পাঠ করার জন্য এক দিরহাম খরচ করল- সে যেন বদর ও হুনাইন জিহাদে শরীক হলো”।
[ইমাম ইবনে হাজার হায়সামীঃ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮]
🕋 হাদিস :
হযরত আলি (رضي الله عنه) বলেন :-
مَنْ عَظَّمَ مَوْ لِدِ النَّبِى صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ وَكَانَ سَبَبَا لِقرا ته لا يَخرج مِنَ الدُّنْيَا اِلا َّبِالاِ يْمَانِ وَيَدْخُلُ الجَنَّهَ بِغَيْرِ حِسَاب
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী (ﷺ)-উনাকে সম্মান করবে হবে সে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে”।
[ইমাম ইবনে হাজার হায়সামীঃ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮]
❏ হযরত আবু আমের আনসারী (رضي الله عنه)-এর মিলাদুন্নবী (ﷺ) মাহফিল
🕋 হাদিস :
হযরত আবু দারদা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে-
عن ابى الدرداء رضى الله عنه انه مر مع النبى صلى الله عليه وسلم إلى بيت عامر الأنصاري وكان يعلم وقائع ولادته صلى الله عليه وسلم لابنائه وعشيرته ويقول هذا اليوم هذا اليوم فقال عليه الصلوة والسلام ان الله فتح لك أبواب الرحمة والملائكة يستغفرون لك ومن فعل فعلك نجانجا تك –
তিনি বলেন, আমি একদিন নবী করিম (ﷺ)-এঁর সাথে মদিনাবাসী আবু আমেরের (رضي الله عنه) গৃহে গমন করে দেখতে পেলাম- তিনি তাঁর সন্তানাদি ও আত্মীয়স্বজনকে একত্রিত করে নবী করিম (ﷺ)-এঁর পবিত্র বেলাদত সম্পর্কীত জন্ম বিবরণী শিক্ষা দিচ্ছেন এবং বলছেন যে, “আজই সেই পবিত্র জন্ম তারিখ।” এই মাহফিল দেখে নবী-করিম (ﷺ) খুশী হয়ে তাঁকে সুসংবাদ দিলেন- “নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তোমার জন্য (মিলাদের কারণে) রহমতের অসংখ্য দরজা খুলে দিয়েছেন এবং ফেরেশতাগণ তোমাদের সকলের জন্য মাগফিরাত কামনা করছেন।”
● আল্লামা আবুল খাত্তাব ইবনে দাহইয়া (رحمة الله) (৬৩৩ হিঃ) ‘‘আত-তানবীর ফী মাওলিদিল বাশির আন নাযীর’৭৮পৃ.।
● আল্লামা জালালুদ্দীন সায়ুতি (رحمة الله) কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর, সুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা (ﷺ),
● আল্লামা সৈয়দ আহমদ সাইদ কাযেমী (رحمة الله) হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও মীলাদে আহমদী পৃষ্ঠা- ৩৫৫।
❏ হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه)-এর মিলাদুন্নবী (ﷺ) মাহফিল
🕋 হাদিস :
হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) নূর নবী (ﷺ)-এঁর জন্ম প্রসঙ্গে ৯ম হিজরীতে একটি কবিতায় বলেছেনঃ-
– وانت لما ولدت اشرقت الأرض – وضاءت بنورك الأفق
অর্থঃ “হে প্রিয় রাসূল, আপনি যখন ভূমিষ্ঠ হন, তখন পৃথিবী উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল এবং আপনার নূরের ছটায় চতুর্দিক আলোময় হয়ে গিয়েছিল।” (নশরুত ত্বীব, মাওয়াহিব, বেদায়া ও নেহায়া)
🕋 হাদিস :
একদিন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) নিজগৃহে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন।
عن ابن عباس رضي الله عنهما كان يحدث ذات يوم فى بيته وقائع ولادته صلى الله عليه وسلم فيبشرون ويحمدون ويصلون إذا جاء النبى صلى الله عليه وسلم وقال حلت لكم شفاعتى (الدر المنظم)
তিনি উপস্থিত সাহাবীগণের নিকট নবী করিম (ﷺ)-এঁর পবিত্র বেলাদত সম্পর্কিত ঘটনাবলী বয়ান করছিলেন। শ্রোতামন্ডলী শুনতে শুনতে মিলাদুন্নবীর আনন্দ উপভোগ করছিলেন এবং আল্লাহর প্রশংসা ও নবীজীর দরূদ পড়ছিলেন। এমন সময় নবী করিম (ﷺ) সেখানে উপস্থিত হয়ে এরশাদ করলেন, “তোমাদের সকলের প্রতি আমার সুপারিশ ও শাফাআত অবধারিত হয়ে গেল।”
● হাফিজুল হাদীস, ইমাম ইবনে হাযর মক্কীঃ মাওলুদুল কবীর,
● আল্লামা জালালুদ্দীন সায়ুতি (رحمة الله), সুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা (ﷺ),
● আল্লামা সৈয়দ আহমদ সাইদ কাযেমী (رحمة الله) হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও মীলাদে আহমদী পৃষ্ঠা- ৩৫৫।
● আদ-দুররুল মুনাযযাম – সপ্তম অধ্যায় – প্রথম পরিচ্ছেদ।
● ইবনে দাহিয়াহ, কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর, ৭৭পৃ.।
● ইশবাউল কালাম।
🕋 হাদিস :
হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) নবীজী (ﷺ)’র শানে না’ত পরিবেশনের মাধ্যমে মীলাদুন্নবী (ﷺ) উদযাপনঃ
হযরত খুরাইম বিন আউস (رضي الله عنه) বলেন, তাবুক থেকে ফেরার পর রাসুল (ﷺ)-এর নিকট আমি গমন করলাম অতঃপর তাঁর নিকট ইসলাম গ্রহণ করলাম। তখন আমি হযরত আব্বাস বিন আব্দিল মুত্তালিব (رضي الله عنه)-কে বলতে শুনলাম,
ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি আপনার প্রশংসা করতে চাই।
রাসুল (ﷺ) বললেন, বলুন। আল্লাহ যেন আপনার মুখকে দন্তহীন না করেন। (অর্থাৎ আল্লাহ আপনাকে সে তাওফিক দান করুন।) তখন আব্বাস বিন আব্দিল মুত্তালিব (رضي الله عنه) বলতে শুরু করলেন,
ওয়া আনতা লাম্মা উলিদতা আশরাক্বাতিল আরদ্বু
ওয়া দ্বা–আত বিনূ—রিকাল উফুক্বু’।
গদ্যানুবাদঃ
(ইয়া রাসুলাল্লাহ) আপনি যখন দুনিয়াতে তাশরিফ এনেছিলেন (জন্ম লাভ করলেন), পৃথিবী তখন আলোকিত হয়ে উঠেছিল। আর আপনার নূরের ঝলকে উদভাসিত হয়ে গিয়েছিল দিগন্ত। আর আমরা সেই নুর আর সেই আলোয় সঠিক পথেই পথ চলছি।
[হাফিযুল হাদীস ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী (رحمة الله) বলেন, এই হাদীসটি হাসান।]
● ইমাম ইবনু কাসির (رحمة الله) আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, খন্ডঃ ৩।
● আল-আমালী,
● ইবনু হাজার আসকালানী (رحمة الله)
❏ হযরত হাসসান (رضي الله عنه) -এঁর মিলাদুন্নবী (ﷺ) মাহফিল
🕋 হাদিস :
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হাসসান বিন সাবিত (رضي الله عنه) মিলাদুন্নবী (ﷺ) বর্ণনা প্রসঙ্গে একখানি কবিতাগ্রন্থ লিখেছিলেন এবং হুযুর নবী (ﷺ)-কে শুনিয়েছিলেন। পরবর্তীতে যার নাম রাখা হয়েছিল ‘দিওয়ানে হাসসান বিন সাবিত’। তিনি লিখেন,
أنك ولدت مبرا من كل عيب -كأنك خلقت كما تشاء –
وضم الاله اسمه الي اسمه -إذا قال في الخمس المؤذن اشهد –
وشق له من اسمه ليجله فذو العرش محمود ومذا محمد –
অর্থঃ ”হে প্রিয় রাসূল নবী (ﷺ), আপনি সর্বপ্রকার ত্রুটিমুক্ত হয়েই মাসুম নবী হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছেন। মনে হয়, যেন আপনার ইচ্ছা অনুযায়ীই আপনার বর্তমান সুরত পয়দা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ আযানের মধ্যে আপন নামের সাথে নবীর নাম সংযোজন করেছেন, যখন মুয়াযযিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের আযানে উচ্চারণ করেন, ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলাল্লাহ নবী (ﷺ)’। আর আল্লাহ আপন নামের অংশ দিয়ে তাঁর প্রিয় হাবীবের নাম রেখেছেন। আরশের অধিপতি হলেন ‘মাহমুদ’ এবং ইনি হলেন ‘মুহাম্মদ নবী (ﷺ)’।”
❏ এ বিষয়ে মক্কা-মদিনার ৯০জন মুফতির ফতোয়া ও উম্মাহর ইজমা
সাহাবী কবি হযরত হাসসান বিন সাবিত (رضي الله عنه) এর ঘটনার উপর ভিত্তি করে মক্কা-মদিনার ৯০ জন উলামাগণ ১২৮৬ হিজরীতে নিম্নোক্ত ফতোয়া দিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রে প্রেরণ করেছেন।
أعلم أن ذكر مولد النبى صلى الله عليه وسلم وجميع مناقبه وحضور سماعه سنة روى أن حسانا يفاخر قياما من رسول الله صلى الله عليه وسلم بحضرته والناس يجتمعون لسماعه –
অর্থ- “হে মুসলমানগণ! আপনারা জেনে রাখুন যে, মিলাদুন্নবী (ﷺ)-এঁর আলোচনা ও তাঁর সমস্ত শান মান বর্ণনা করা এবং ঐ মাহফিলে উপস্থিত হওয়া সবই সুন্নাত। বর্ণিত আছে যে, হযরত হাসসান বিন সাবিত (رضي الله عنه) কিয়াম অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (ﷺ)-এঁর পক্ষে হুযুরের উপস্থিতিতে হুযুর (ﷺ)-এঁর গৌরবগাথা পেশ করতেন, আর সাহাবীগণ তা শুনার জন্য একত্রিত হতেন।” (ফতোয়ায়ে হারামাঈন) একজনের কিয়ামই সকলের জন্য দলীল স্বরূপ।
হযরত হাসসান বিন সাবিত (رضي الله عنه)-এঁর কিয়ামের কাছিদার অংশবিশেষ ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। ঐ কাছিদায় তিনি রাসূল করীম (ﷺ)-এঁর আজন্ম নির্দোষ ও নিষ্পাপ হওয়া এবং হুযুরের ইচ্ছানুযায়ী তাঁর আকৃতি বা সুরতে মোহাম্মাদী সৃষ্টির তত্ত্ব পেশ করেছেন। নবী করিম (ﷺ) তাঁর এই কাছিদা শুনে দোয়া করতেন- “হে আল্লাহ! তুমি জিব্রাইলের মাধ্যমে হাসসানকে সাহায্য কর।” অর্থাৎ আমার পক্ষে আমার প্রশংসা বাক্য সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার তৌফিক দাও। এতে আমার দুশমনগণ ভালভাবে জব্দ হবে।
❏ সুনানে তিরমিযীতে “মিলাদুন্নবী (ﷺ)” শিরোনামে পরিচ্ছেদ
‘‘হাদিস শাস্ত্রের প্রখ্যাত ইমাম আবু ঈসা মুহাম্মদ তিরমিযী (رحمة الله) তাঁর সংকলিত ‘সুনানে তিরমিযী’ শরীফে একটি অধ্যায়ের মধ্যে بَابُ مَا جَاءَ فِي مِيلاَدِ النَّبِيِّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلم ‘মিলাদুন্নবী (ﷺ) শিরোনামে একটি পরিচ্ছেদ প্রণয়ন করেছেন। হাদিসটি নিম্নরূপঃ
🕋 হাদিস :
হযরত মোত্তালিব ইবনে আব্দুল্লাহ আপন দাদা কায়েস বিন মোখরামা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন- আমি ও নবী করিম (ﷺ) ‘আমুল ফীল’ অর্থাৎ, বাদশাহ আবরাহার হস্তি বাহিনীর উপর আল্লাহর গযব নাজিল হওয়ার বছর জন্মগ্রহণ করেছি। হযরত ওসমান বিন আফ্ফান (رضي الله عنه) বনি ইয়ামার ইবনে লাইস এর ভাই কুবাছ ইবনে আশইয়ামকে বললেন- ‘আপনি বড় না রাসূল (ﷺ)? তখন তিনি বললেন, রাসূল আমার চেয়ে অনেক বড় সম্মান ও মর্যাদার দিক থেকে, আর আমি জন্ম সূত্রে রাসূল (ﷺ) থেকে আগে মাত্র।’’
[তিরমিযী, আস্-সুনান, ৫/৫৮৯ পৃ. হাদিস নং. ৩৬১৯, দারুল গুরুবুল ইসলামী, বয়রুত, লেবানন, প্রকাশ. ১৯৯৮খৃ.।]
🕋 হাদিস :
হাদিস হতে প্রমাণিত, স্বয়ং হুযুর আপন বিলাদত (মিলাদুন্নবীর) খুশিতে (আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপনের) উদ্দেশ্যে ছাগল জবেহ করেছিলেন ।”
●ইমাম সুয়ুতী (رحمة الله) হুসনুন মাকাসিদ ফি আমালিল মওলিদ ৬৫ পৃষ্ঠা।
●ইমাম সুয়ুতী (رحمة الله) আল হাবিলুল ফাতোয়াঃ ১ম খন্ড, ১৯৬ পৃষ্ঠা।
●ইমাম নাবহানী (رحمة الله) হুজ্জাতুল্লাহে আলাল আলামীন ২৩৭ পৃষ্ঠা।
🕋 হাদিস :
হযরত আব্দুল মুত্তালিব (رضي الله عنه) হুজুর পাক
(ﷺ)-এর বিলাদত শরীফের সপ্তম দিনে পশু জবাই করে আক্বীকা করেছেন!”
●ইমাম সুয়ুতী (رحمة الله) খাসায়েছুল কুবরা ১ম খন্ড ৮৫ পৃষ্ঠ।
🕋 হাদিস :
উম্মুল মুমেনিন হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বণর্না করেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং আবুবকর সিদ্দিক (رضي الله عنه) আমার নিকট নিজ নিজ মিলাদ শরীফের বর্ণনা করেছেন।
●ইমাম বায়হাকী একে হাসান বলেছেন।
●ইমাম তাবারানীঃ আল মুযামুল কাবীর, ১ম খন্ড ৫৮ পৃঃ
●ইমাম ইবনে হাজার হায়সামীঃ মযমাঊল যাওয়াঈদ ৯ম খন্ড ৬৩ পৃঃ।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর জন্মকালীন অত্তোজ্জ্বল ঘটনাবলীঃ
🕋 হাদিস :
মা আমেনা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্মলগ্নের পর মুর্হূতেই এতটা নূর প্রকাশিত হল যার আলোতে পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের সব কিছু আলোকিত হয়ে যায়। যার ফলে সিরিয়ার শাহী মহল মা আমেনা দেখতে পান।
[বায়হাকি, ১ম থন্ড,পৃঃ৮০, মুসনাদে আহমদ ৪/১২৭পৃঃ]
🕋 হাদিস :
ফাতিমা বিন সুলায়মান (رضي الله عنه) বর্ননা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বিলাদাতের সময় আমি দেখতে পেলাম যে, বায়তুল্লাহ নূরের জ্যোতিতে জ্যোর্তিময় হয়ে উঠল এবং তারকারাজি জমীনের এত নিকটরর্তী হয়ে এল যে, আমার ধারনা হতে লাগল এগুলো আমার
উপর এসে পড়বে।
[বায়হাকি, নেহায়াতুল আরব, ১/৭৬ পৃঃ]
🕋 হাদিস :
পারস্য সম্রাট কিসরার রাজ প্রসাদের ১৪টি গম্বুজ ভেঙ্গে পড়ে, এবং পারস্যের অর্ণিবান শিখা যা ১০০০ বছর পর্যন্ত এক মুহূর্তের জন্যও নিভেনি তা রাসূলে করিম (ﷺ)-এর বিলাদাতের মুর্হুতে নিভে গেল।
[বায়হাকি, ১২৬ পৃঃ]
🕋 হাদিস :
হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। নিশ্চয়ই রাসুলে করীম (ﷺ) এরশাদ করেন- মহান আল্লাহর পক্ষ হতে আমার জন্য একটি বিশেষ মর্যাদা হলো, আমি খতনাকৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছি। তাই আমার লজ্জাস্থান অন্য কেউ দেখেনি।
[মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়া, শরহে জুরকানী ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং-২৩২]
🕋 হাদিস :
হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূলে খোদা (ﷺ) খতনা অবস্থায় দুনিয়ায় তাশরিফ আনেন ।
[বায়হাকি, নেহায়াতুল আরব ১/৭৭ পৃঃ]
🕋 হাদিস :
রাসূলে খোদা (ﷺ) দুনিয়ায় আগমনের সময় কোন প্রকার অপবিত্র বস্তু শরীর মুবারকে ছিল না। পূতঃপবিত্র অবস্থায় দুনিয়ায় এসেছেন ।
[বায়হাকি, নেহায়াতুল আরব ১/৭৬ পৃঃ]
🕋 হাদিস :
নূরে খোদা (ﷺ) মায়ের পেট থেকেই নাভি কাটা অবস্থায় দুনিয়ায় এসেছেন। [সূরাবাদী ৪১৫ পৃঃ]
🕋 হাদিস :
হযরত সুফিয়া (رضي الله عنه) বলেন , তিনি দুনিয়ায় আগমন করার পর ছেলে না মেয়ে এটা দেথতে চাইলাম হঠাৎ একটি নূর ওনার নীচের অংশ ঢেকে ফেলে, তাতে আমরা কেউ ওনার লজ্জাস্থান দেখতে পাইনি।
তিনি আরও বলেন তখনও ভোর হয়নি হঠাৎ দেখি পুরো ঘর আলোকিত হয়ে আছে, বাহিরে এসে দেখি সমগ্র জাহান নূরনবী (ﷺ) এর নূরে আলোকিত হয়ে আছে।
[বায়হাকি]