পবিত্র মি’রাজ বা উর্ধগমন (৬২১./১১, নববী বয়স ৫১ বছর)
মূলঃ ড. মুহাম্মদ সোলাইমান
(সহকারী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়)
মি’রাজ রাত্রি ছিল এক বিস্ময়কর রজনি
দীদার দিলেন প্রভু ঘুচালেন চিন্তার গ্লানি।
ছাব্বিশে রজব দিবাগত মহিমাম্বিত রাত
দ্বাদশ বর্ষে তখন তাঁর নোবুয়াত।
মকামে ইবরাহীম ও জমজমের মাঝে ঘুমান্ত আল-আমীন
নাম ধরে ডাকলেন ফেরশতা জিবরা’ঈল আমীন।
ঘুম ভেঙ্গে ওঠলেন জেগে নবিজি হঠাত করে
বোরাক নিয়ে জিবরা’ঈল এলেন তারঁ শিয়রে।
বোরাকে চড়লেন তিনি সাথে জিবরা’ঈল আমীন আকসায় পৌঁছলেন রাহমাতুল লিল আলামীন।
সকল নবীদের নিয়ে তিনি করলেন ইমামতি
ধন্য হলেন তাঁরা পেলেন সৌভাগ্য অতি।
অতঃপর নেয়া হল দুনিয়ার আসমানে তাঁকে
পেলেন তথায় পিতা আদমকে।
সালাম জানালেন আদমকে গভীর শ্রদ্ধাভরে
অভিনন্দন জানালেন পিতা হৃদয় হতে তাঁহারে।
ইসা ইবন মরিয়ম ইয়াহয়া ইবন যাকারিয়া
জানালেম সম্ভাষণ দ্বিতীয় আসমানে হৃদয় দিয়া।
আর যখন পৌঁছলেন তিনি তৃতীয় আসমানে
দোয়া করলেন ইউসুফ নবী তাঁরই কল্যাণে।
চতুর্থ আসমানে অভ্যর্থনা জানালেন ইদরিস নবি
মহান সুযোগ পেলেন তিনি যিয়ারতে শেষ নবি।
পঞ্চম আসমানে হারুন নবি ছিলেন অপেক্ষায় তারঁ স্বাগতম জানিয়ে ধন্য হলেন সাক্ষাতে যাঁর।
মুসা নবি অপেক্ষায় ছিলেন ষষ্ঠ আসমানে
অভিনন্দন জানালেন তাঁর শুভ আগমনে।
অবশেষে যখন সপ্তম আসমানে পৌঁছলেন তিনি সাক্ষাত হল পিতা ইবারাহীমের খলীলুল্লাহ যিনি।
অতঃপর সিদরাতুল মুনতাহা তিনি পৌঁছলেন যখন
আর এগুতে পারিনি জিবরা’ঈল আমীন তখন।
রফরফে চড়ে উর্ধে ওঠলেন একাকী তিনি
খোদার ঘর বায়তুল মা’মুর পৌঁছলেন যিনি।
তিনটি পাত্রে তাঁকে দেয়া হল উপঢৌকন
শারাব, দুধ আর মধু করা হল পরিবেশন।
দুধের পাত্র গ্রহণ করলেন মহা খুশীতে
নাজাত পেল উম্মত গোমরাহি হতে।
অতঃপর তিনি পৌছলেন অনেক উর্ধ জগতে
শুনলেন তিনি কলম ধ্বনি দুই কানেতে।
আল্লাহ তা’আলা অনেক নিকটে নিলেন তাঁরে
প্রভুর সাথে বললেন কথা হৃদয় ভরে।
দেখিলেন তিনি উর্ধলোকের অনেক ঘটনা গভীর বিস্ময়ে
আসলেন ফিরে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের উপঢৌকন নিয়ে।
নবীগণ সমবেত হন তাঁর বিদায় কালে
ফযর নামাজ পাড়ালেন তিনি সেই সকালে।
বুরাকে চড়লেন নবিজি ফিরে এলেন মক্কায়
হৃদয় তাঁর পূর্ণ হল আনন্দ আর প্রফুল্লতায়।