নারী ও পুরুষদের জন্য মাহরাম কারা? পর্দার গুরুত্ব

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

নারী ও পুরুষদের জন্য মাহরাম কারা? পর্দার গুরুত্ব

কৃতঃ মুফতি ইব্রাহিম খলিল কাদেরী

ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক একজন পুরুষ মোট**১৪ জন নারীর সাথে দেখা করতে পারবে।*

* মায়ের মত ৫ জন*

১| নিজের মা

২| দুধ মা

৩| খালা

৪| ফুফু

৫| শাশুড়ী

* বোনের মত ৫ জন*

১| আপন বোন

২| দুধ বোন

৩| দাদী

৪| নানী

৫| নাতনী

* মেয়ের মত ৪ জন*

১| নিজের মেয়ে

২| ভাইয়ের মেয়ে

৩|বোনের মেয়ে

৪| পুত্রবধু

*এমনিভাবে একজন মহিলার জন্যেও ১৪ জন পুরুষের সাথে দেখা দেওয়া বৈধ।*

* বাবার মত ৫ জন*

১| নিজের বাবা

২| দুধ বাবা

৩| চাচা

৪| মামা

৫| শশুর

* ভাইয়ের মত ৫ জন*

১| আপন ভাই

২| দুধ ভাই

৩| দাদা ভাই

৪| নানা ভাই

৫| নাতী

* ছেলের মত ৪জন*

১| নিজের ছেলে

২| ভাইয়ের ছেলে

৩|বোনের ছেলে

৪| মেয়ের জামাতা

*এছাড়া বাকিদের সাথে দেখা করা তো দুরের কথা,অযথা কথাবার্তা বলাও কবিরা গুনাহ। চাই তা সরাসরি হোক বা মোবাইল ফোনে হোক। যে গুনাহ তাওবা ছাড়া মাফ হয়না।

তাই আসুন আমরা সকলে এই গুনাহ থেকে বাচার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমিন।

ব্যক্তি ক্ষেত্রে পর্দার যে বিধান তাও ভিন্নঃ যেমন* 

স্বামী স্ত্রীর ক্ষেত্রে কোন পর্দা করতে হয়না সবকিছুই দেখা বা দেখানো জায়েয।

নারী—নারীঃ 

নারীদের সাথে নারীদের নাভীর নিজ থেকে হাটুর উপর পর্যন্ত দেখা বা দেখানো জায়েয নেই বাকি সব দেখা জায়েয তবে অকারণে গোপন অঙ্গ দেখা লজ্জাহীনতার পরিচয়,আর লজ্জাই নারীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ…।

*মাহরাম পুরুষদের ক্ষেত্রে মূখমন্ডল, হাতের কব্জির নিচের অংশ এবং পায়ের গিরার নিচের অংশ দেখা বা দেখানো জায়েয তবে ফেৎনার আশংকা থাকলে সবার ক্ষেত্রে এইটার ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

***বেমাহরাম/পরপুরুষের ক্ষেত্রে সমস্ত শরীরই ঢেকে রাখা জরুরী.একান্ত জরুরী কাজে বাহিরে যেতে হলে সমস্ত শরীর ঢেকে যেতে হবে।। 

পর্দা সম্পর্কিত কিছু হাদিস ও আয়াতঃ

কেননা রাসূল ﷺ) বলেছেন,“

“যে ব্যক্তি মানুষকে হিদায়াতের দিকে ডাকে তার জন্য ঠিক ঐ পরিমাণ সাওয়াব রয়েছে, যে পরিমাণ পাবে তাকে অনুসরণকারীরা।” (মুসলিম/২৬৭৪,৬৮০৪)

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا۟ مِنْ أَبْصَٰرِهِمْ وَيَحْفَظُوا۟ فُرُوجَهُمْۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْۗ إِنَّ ٱللّهَ خَبِيرٌۢ بِمَا يَصْنَعُونَ আন-নূর 24:30

মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَٰتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَٰرِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَاۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ ءَابَآئِهِنَّ أَوْ ءَابَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَآئِهِنَّ أَوْ أَبْنَآءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَٰنِهِنَّ أَوْ بَنِىٓ إِخْوَٰنِهِنَّ أَوْ بَنِىٓ أَخَوَٰتِهِنَّ أَوْ نِسَآئِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَٰنُهُنَّ أَوِ ٱلتَّٰبِعِينَ غَيْرِ أُو۟لِى ٱلْإِرْبَةِ مِنَ ٱلرِّجَالِ أَوِ ٱلطِّفْلِ ٱلَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا۟ عَلَىٰ عَوْرَٰتِ ٱلنِّسَآءِۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّۚ وَتُوبُوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ আন-নূর 24:31

আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।

وَعَنْ جَابِرٍ ؓ قَالَ : قَالَ رَسُوْلِ اللّٰهِ ﷺ : «إِلَّا لَا يَبِيْتَنً رَجُلٌ عِنْدَ امْرَأَةٍ ثَيِّبٍ إِلَّا أَنْ يَّكُوْنَ نَاكِحًا أَوْ ذَا مَحْرَمٍ». رَوَاهُ مُسْلِمٌ

৩১০১-[৪] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহﷺ বলেছেনঃ কোনো বিবাহিতা নারীর নিকটে স্বামী অথবা মাহরাম ছাড়া (বিবাহ নিষিদ্ধ যাদের সাথে) কেউ যেন রাত্রি যাপন না করে।সহীহ : মুসলিম ২১৭১

وَعَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «إِيَّاكُمْ وَالدُّخُوْلَ عَلَى النِّسَاءِ فَقَالَ رَجُلٌ : يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ! أَرَأَيْتَ الْحَمْوَ؟ قَالَ : «الْحَمْوُ الْمَوْتُ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

৩১০২-[৫] ‘উকবা ইবনু ‘আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহﷺবলেছেনঃ তোমরা কোনো নারীদের নিকট গমন (নিঃসঙ্গভাবে গৃহে প্রবেশ) করো না। (এটা শুনে) জনৈক ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রসূল! দেবর সম্পর্কে আপনি কি বলেন? (উত্তরে) তিনি ﷺ ) বললেন, দেবর তো মরণসম বা মরণের ন্যায়। ] সহীহ : বুখারী ৫২৩২, মুসলিম ২১৭২, তিরমিযী ১১৭১, আহমাদ ১৭৩৪৭, দারিমী ২৬৮৪, সহীহ আত্ তারগীব ১৯০৮।

وَعَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ فَإِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ

৩১০৯-[১২] উক্ত রাবী [ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবীﷺ  বলেছেনঃ রমণী মাত্রই আবরণীয় (বিষয়), যখন সে বের হয় তখন শায়ত্বন তাকে সুশোভিত করে তোলে বা শায়ত্বন হাত আড় করে তার প্রতি তাকায়।  : তিরমিযী ১১৭৩, ইরওয়া ২৭৩, সহীহ আল জামি‘ ৬৬৯০।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment