পবিত্র কোরআনের চতুর্থ সুরা আন নিসা। সুরা বাকারার পর এটাই কোরআনের সবচেয়ে বড় সুরা। এটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর আয়াত ১৭৬টি।
এই সুরার বেশির ভাগ আয়াত হিজরতের প্রথম দিকে নাজিল হয়েছে। ষষ্ঠ হিজরিতে হুদায়বিয়ার সন্ধি এবং অষ্টম হিজরিতে মক্কা বিজয় পর্যন্ত নাজিলের ধারা অব্যাহত ছিল। এই সুরার একাধিক আয়াতের শানে নুজুল আছে। নারী জাতির সামগ্রিক বিধি-বিধান থাকায় নিসা নামকরণ করা হয়েছে।
ই সুরার সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিম্নরূপ।
সুরা নিসার আলোচ্য বিষয়
এই সুরার মাধ্যমে জাহেলিয়াত যুগের জীবনব্যবস্থা থেকে মুসলিম সভ্যতা, সংস্কৃতিকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এই সুরা নাজিল হওয়ার পর রাসুল (সা.) বলেন, আর রুদ্ধতা নয়। এই সুরায় নারী জাতির অধিকার, বিবাহের বিধি-নিষেধ, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আত্মসংশোধনের পথ দেখানো হয়েছে। মুনাফিক, মুশরিক ও আহলে কিতাবদের ষড়যন্ত্রের মুখোশ উম্মোচন করা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ বিধানের মাধ্যমে মুসলমানদের জীবন সাজানোর নকশা দেওয়া হয়েছে।
সুরা নিসার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
পবিত্র কোরআনের প্রতিটি সুরার বিশেষ স্বকীয়তা ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে। হাদিসের বিভিন্ন গ্রন্থে সুরা আন নিসার গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্ণিত হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি সুরা আলে ইমরান পড়বে সে অমুখাপেক্ষী হবে।
আর সুরা আন নিসা হলো সৌন্দর্যপূর্ণ। (সুনানে দারেমি, হাদিস : ৩৩৯৫)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলতেন, আপনারা আমাকে সুরা নিসা সম্পর্কে প্রশ্ন করুন। কারণ আমি শিশুকাল থেকে কোরআন পড়া শুরু করেছি। হাদিসটি সহিহ হওয়া সত্ত্বেও বুখারি ও মুসলিমে উল্লেখ করা হয়নি। (মুসতাদরাক হাকেম ২/৩০১)
সুরা নিসার শ্রেষ্ঠ পাঁচ আয়াত
আবদুল্লাহ মাসউদ (রা.) বলেন, সুরা নিসার মধ্যে এমন পাঁচটি আয়াত আছে, যা আমার কাছে পৃথিবী ও তার সব বস্তু থেকে বহু মূল্যবান। গুরুত্বপূর্ণ আয়াতগুলো হলো–
এক. নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও অত্যাচার করেন না। (সুরা নিসা, আয়াত : ৪০)
দুই. তোমরা যদি সেই বড় বড় পাপ থেকে বিরত হও, যা তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে। (সুরা নিসা, আয়াত : ৩১)
তিন. নিশ্চয়ই আল্লাহ তার সঙ্গে অংশ স্থাপনকারীকে ক্ষমা করবেন না এবং তদ্ব্যতীত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন। (সুরা নিসা, আয়াত : ৪৮)
চার. ওই লোকগুলো যদি নিজেদের জীবনের ওপর অত্যাচার করার পর তোমার নিকট আসত এবং নিজেও স্বীয় পাপের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত এবং রাসুল তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতেন, তাহলে অবশ্যই তারা আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও দয়ালু পেত। (সুরা নিসা, আয়াত : ৬৪)
পাঁচ. এবং যে কেউ দুষ্কর্ম করে অথবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হয়, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় দেখতে পাবে। (সুরা নিসা, আয়াত : ১১০) (মুস্তাদরাক হাকেম : ২/৩০৫; তাফসির ইবনে কাসির : ২/ ৭৩০)





Users Today : 31
Users Yesterday : 357
This Month : 31
This Year : 171902
Total Users : 287765
Views Today : 4842
Total views : 3412405