প্রশ্ন: ইদানিং কিছু ইমামকে দেখা যায় নামাযে পাগড়ী না বেঁধে রুমালকে মহিলার ঘোমটার ন্যায় দুই পাশে ঝুলিয়ে দেয়। রুকু সাজদার সময় টেনে টেনে ঠিক করতে দেখা যায়। ইমামের এহেন কাজ শরিয়তে কতটুকু বৈধ বা অবৈধ এ ব্যাপারে জানালে উপকৃত হব।
উত্তর: পাগড়ী পরিধান করা সুন্নাতে মুস্তাহাব্বা। পাগড়ী পরিধান করার ফজিলত হাদীসে পাক দ্বারা সাব্যস্ত। পাগড়ী বেঁধে নামায আদায়ের সাওয়াব পাগড়ী ছাড়া নামায আদায়ের চেয়ে ২৫ থেকে ৭০ গুণ বেশি। যা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
এ ছাড়াও হাদীসে পাকে উল্লেখ রয়েছে- عَلَيْكُمْ بِالعمائم فاِنّها سيماءُ الملائكة- অর্থা- তোমরা পাগড়ী বাঁধবে, কেননা এটা ফেরেশতাদের প্রতীক। [শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নম্বর ৬২৬২, কৃত: ইমাম বায়হাকী রাহ.] অপর হাদীসে পাকে রয়েছে ‘তোমরা পাগড়ী পরিধান কর, নিশ্চয় পাগড়ী ইসলামের নিদর্শন এবং তা মুসলমান ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্যকারী। [তিরমিযি শরীফ: ১ম খণ্ড, ৩০৮ পৃষ্ঠা]
নামাযে ‘সদল’ বা কাপড় তথা চাদর বা রুমাল ঝুলিয়ে দেয়া মাকরূহে তাহরীমি। যেমন মাথা বা কাঁধের উপর চাদর, রুমাল, শাল ইত্যাদি এমনভাবে রাখা যে, উভয় প্রান্ত সরাসরি ঝুলতে থাকে। তবে যদি এক প্রান্ত এক কাধেঁর উপর রাখা হয় এবং অপর প্রান্ত ঝুলতে থাকে তাহলে অসুবিধা নেই। আজকাল দেখা যায়, কোন কোন নামাযী ও ইমাম মাথা বা কাধেঁর উপর এমনভাবে রুমাল ঝুলিয়ে রাখে যা রুকু অবস্থায় গলা, মাথা ও কাধেঁর উভয় প্রান্তে সরাসরি লটকে ও ঝুলে থাকে। এভাবে নামায পড়া মাকরূহ। এটা পাগড়ী বা আমামা নয় বরং নামাযের প্রতি অবহেলা।
তাছাড়া নামায অবস্থায় বার বার নড়াছড়া করা বা নামাযে আস্তিন, রুমাল বা চাদর বারবার উপরের দিকে এমনভাবে কুড়িয়ে নেয়া যাতে হাতের কুনুইগুলো প্রকাশ পায় তখনও নামায মাকরূহ হবে। এটা নামাযের প্রতি চরম অবহেলা ও অবজ্ঞা। নামাযের প্রতি অবশ্যই যত্নবান ও আন্তরিক হতে হবে নতুবা অবশ্যই গুনাহগার হবে। [ফাতহুল ক্বদীর, বাহরুর রায়িক এবং ফতোয়ায়ে রযভীয়া: ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪১৬ ও ৪২৩]