✍ কৃতঃ আল্লামা আজিজুল হক আল কাদেরী (رحمة الله) ➡ মুনিয়াতুল মুছলেমীন [১ম খন্ড]
❏ মাসয়ালা: (১৪৯)
নবী (ﷺ) এর জানাযার নামায কিভাবে পড়া হয়েছে এ ব্যাপারে সঠিক মত হল যা সিরাতের কিতাবে এসেছে, যা হানাফী ও শাফেয়ীর মূলনীতির আলোকে মিল, তার জানাযার নামায প্রচলিত প্রসিদ্ধ মতে পড়া হয়েছে; কিন্তু সেই জানাযাতে কেউ ইমাম ছিল না এবং সেখানে আমরা যে দু‘আ পড়ি তা পড়া হয়নি বরং তার স্থানে তার প্রশংসা করা হয়েছে।
এই মাসয়ালাটি হাদিস দ্বারাও প্রমাণিত।
➠ইমাম কুসতুলানী শায়খ যাইনুদ্দীন মুরাগী, আল্লামা যুরকানী ও শাফেয়ী ও হানাফীদের অধিকাংশ আলিমদের নিকট জানাযার নামায প্রসিদ্ধ পদ্ধতিতে হয়েছে। তবে তার জানাযার ব্যাপারে আমিলমদের মতানৈক্য রয়েছে। কেউ বলেন প্রসিদ্ধ পদ্দতিতে নামায হয়নি; বরং মানুষেরা দলে দলে প্রবেশ করেছে এবং সালাত সালাম পড়ে চলে গেছেন।
➠আল্লামা রাযী (রহ.) প্রসিদ্ধ পদ্ধতিতে নামায পড়ার কারণ বর্ণনা করেছেন, তাকে আল্লামা যুরকানী রদ করেছেন। তিনি বলেছেন নবী (ﷺ) এর জানাযার উদ্দেশ্য ক্ষমার দু‘আ করা নয়; বরং তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা, তাই সেখানে ক্ষমার দু‘আ পড়া হয়নি।
➠আল্লামা রাযী (রহ.) নবী (ﷺ) এর জানাযার নামায না পড়া শহীদদের সাথে তুলনা করেছেন। অথচ তা ভূল; কেননা হাদিস দ্বারা শহীদদের জানাযার নামায পড়া প্রমানিত। ইমাম বুখারী (رضي الله عنه) ওকবা ইবনে আমের থেকে এ ব্যাপারে হাদিস বর্ণনা করেছেন।
➠ইমাম কাযী আয়ায বর্ণনা করেন, অনেক আলিমগণ প্রচলিত পদ্ধতিতে নামায পড়ার কথা বলেন। তাই বিশুদ্ধ।
➠হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) উম্মতের ফিতনা দমনে ব্যস্ত ছিলেন যতক্ষণ পর্যন্ত লোক তার হাতে বায়য়াত গ্রহণ করেনননি মানুষেরা দলে দলে সেখানে প্রবেশ করতেন এবং জানাযার নামায পড়েছেন যখন বাইয়াত শেষ হল তখন শরীয়তের অলী তিনি হলেন, তিনি জানাযার নামায পড়েছেন তার পড়ার পর আর কেউ পড়েননি কেননা; অলীর জানাযার পরে আর জানাযা নেই।
➠ইমাম সুরাখসী মবসুত কিতাবে লিখেন, আবূ বকর (رضي الله عنه) উম্মতের ফিতনা দমনে ব্যস্ত ছিলেন, তখন সাহাবারা জানাযা পড়তে রয়েছেন যখন তিনি এসে জানাযা পড়লেন তখন আর কেউ পড়েননি।
➠জানাযার নামাযে ইমাম না থাকার ব্যাপারে ইমাম সুরাখসী বলেন, নবী (ﷺ) এর অলী হিসাবে হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) ছিলেন কিন্তু তিনি ভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিলেন তাই মানুষেরা একা নামায আদায় করলেন। এ ব্যাপারে হযরত ইমাম আহমদ রেযাখানের ফতওয়া ও আল্লামা গোলাম রাসূল সাইদীর কিতাবে বিস্তারিত রয়েছে।
❏ মাসয়ালা: (১৫০)
রাসূল (ﷺ) সোমবারে ইন্তেকাল করেন, বুধবারে তাকে দাফন করা হয়েছে।
❏ মাসয়ালা: (১৫১)
নবী (ﷺ) রবিউল আউয়াল মাসে সোমবারে ছাশতের শেষ সময় ইন্তেকাল করেছেন এবং বুধবারে অর্ধ রাতে দাফন করা হয়েছে।
➥ [দুসতুর:১৮৪]
➠এক বর্ণনায় এসেছে নবী (ﷺ) রবিউস সানীর সোমবারে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং রবিউল আউয়াল মাসের সোমবারে ইন্তেকাল করেছেন।
অর্থাৎ, জন্মের মাসের মতানৈক্য রয়েছে। তবে প্রসিদ্ধ মত হল, তিনি রবিউল আউয়ালের বার তারিখ সোমবারে হাতির ঘটনার বছর জন্ম গ্রহণ করেছেন।