নবীজীর বংশধারা কেয়ামত পর্যন্ত জারী থাকবে
কাফেররা যেই অর্থে নবীজিকে নির্বংশ বলে কটুক্তি করেছিল, সেই অর্থে নবীজি কখনই নির্বংশ নন। বরং সেই অর্থে কাফেররা নিজেরাই নির্বংশ। তাদের ধারনা ছিল নবীজির যেহেতু পুত্র-সন্তান ইন্তেকাল করেছেন। সুতরাং তার শান-মান বর্ণনা করার মত লোক পরবর্তীতে কেউ থাকবে না। এর জবাবে আল্লাহ তায়ালা নবীজিকে কাউছার প্রদানের ঘোষণা দিয়ে শান্ত্বনা দান করলেন- আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন- হে নবী নিশ্চয়ই আমি আপনাকে কাউছার দান করেছি।
কাউছারের একটি অর্থ হলো অধিক চর্চা। তখন অর্থ হবে কাফিররা ধারণা করেছিল পরবর্তীতে তাঁর নামের চর্চা বন্ধ হয়ে যাবে। তাঁকে কেউ চিনবে না। কেউ তাঁকে স্মরণও করবে না। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাঁর হাবিবের নামের চর্চা কিয়ামত পর্যন্ত সবার উপরে জারি রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ورفعنالك ذكرك অর্থ আমি আপনার যিকিরকে বুলন্দ করেছি।
আবার কাউছারের আরেকটি অর্থ হল অধিক সন্তান। এতে দুটি ব্যাখ্যা হতে পারে। প্রথমটি হল- যদিও রাসূলেপাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পুত্র সন্তান কেউ জীবিত নেই কিন্তু নবীজির মেয়ে বেহেস্তের মহিলাদের সর্দার মা ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহু এর মাধ্যমে তাঁর বংশ কিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে।
দ্বিতীয়টি হল নবীগণ হচ্ছেন পিতৃতুল্য আর তাদের উম্মতগণ তাদের সন্তান সমতুল্য। নবীজির উম্মতগণ তাঁর সন্তান স্বরূপ।
যেমন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন মাজীদে বলেন-
النبى اولى بالمؤمنين من انفسهم وازواجه امهاتهم-
অর্থ: নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুমিনদের প্রাণের চেয়েও অধিক নিকটে এবং তাঁর স্ত্রীগণ মুমিনদের মা।
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে রুহুল বয়ানে বর্ণিত হয়েছে-
وفى قرأة ابن مسعود النبى اولى بالمؤمنين من انفسهم وهو اب لهم-
অর্থ: হযরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু এর কেরাতে রয়েছে যে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুমিনদের প্রাণের চেয়েও অধিক নিকটে এবং তিনি মুমিনগণের পিতা।
এ প্রসঙ্গে মিশকাত শরীফে হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একখানা হাদিস-
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم انما انا لكم مثل الوالد لولده اعلمكم اذا اتيتم الغائط فلاتستقبلوا القبلة ولاتستدبروها- الخ (رواه ابن ماجه والدارمى)
অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- পুত্রের নিকট পিতা যেমন, তোমাদের নিকট আমিও তেমন। আমি তোমাদেরকে শিক্ষা দেই। যখন তোমরা পেশাব-পায়খানা (বাথরুমে) যাবে তখন কিবলার দিকে মুখ করে অথবা পিছন ফিরে বসবে না। (সংক্ষিপ্ত) ইবনে মাজাহ ও দারেমি।