কোন সাচ্চা দ্বীনী কর্মের মাধ্যমেও দুনিয়া চাইবে না। কারণ তা হবে আল্লাহরই পানাহ্! দ্বীন বিক্রি করার সামিল। যেমন, কোন কোন ফক্বীর হজ্জ করে আসে। তারা জায়গায় জায়গায় নিজের হজ্ব বিক্রি করে ঘুরে বেড়ায়। তারপর তা কোথাও বিক্রি করতে পারে না।
হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যক্তি আখিরাতের আমল দ্বারা দুনিয়া চায়, তার চেহারা বিকৃত করে দেওয়া হবে এবং তার স্মৃতি নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে, সর্বোপরি তার নাম দোযখীদের তালিকাভুক্ত করা হবে।
ইমাম হুজ্জাতুল ইসলাম বলেন, এক গোলাম ও তার মুনিব হজ্জ করে ফিরছিলো। পথে লবণ ফুরিয়ে গেলো। তার নিকট কোন রাহ্ খরচ ছিলো না, যা দিয়ে কিনে নেবে। এক যাত্রা-বিরতিতে মুনিব বললো, ‘‘মুদি দোকানীকে একটু লবণ এ বলে নিয়ে এসো- আমরা হজ্জ থেকে আসছি।’’ সে গিয়ে বললো, ‘‘আমি হজ্জ থেকে আসছি, আমাকে সামান্য লবণ দিন!’’ সুতরাং সে লবণ নিয়ে আসলো। দ্বিতীয় যাত্রা বিরতিতে মুনিব আবার প্রেরণ করলো। সে এবার এভাবে বললো, ‘‘আমার মুনিব হজ্জ থেকে আসছেন। সামান্য লবণ দিন!’’ সে লবন নিয়ে আসলো। তৃতীয় যাত্রা-বিরতিতে মুনিব পুনরায় পাঠাতে চাইলো। গোলাম তো প্রকৃতপক্ষে মুনিব হওয়ারই উপযোগী ছিলো। সে বললো, ‘‘গত পরশু তো লবণের কয়েক দানার বিনিময়ে আমার হজ্ব বিক্রি করে এসেছি, গতকাল আপনার হজ্ব। আজ কার হজ্ব বিক্রি করে আনবো?’’
ইমাম সুফিয়ান সওরী এক ব্যক্তির নিকট দাওয়াতে তাশরীফ নিয়ে যান। মেজবান খাদিমকে বললো, ‘‘ওই বর্তনে খানা আনো, যা আমি দ্বিতীয়বার হজ্জে গিয়ে এনেছি।’’ ইমাম বললেন, ‘‘ওহে মিসকীন! তুমি একটি মাত্র বাক্যে দু’টি হজ্ব বিনষ্ট করে দিয়েছো!’’ যখন নিছক ‘রিয়া’ বা প্রকাশ করার এ অবস্থা, তখন সেটাকে দুনিয়া অর্জনের মাধ্যম বানানো কতো নিম্ন পর্যায়ের কাজ হবে! মহামহিম আল্লাহরই পানাহ্!
[সূত্র. এরশাদাতে আলা হযরত, পৃ. ৮৭]