বিতর সালাত: পরিশিষ্ট (তৃতীয় অংশ)
শায়খ শুআইব -এর পূর্ণ বক্তব্য ও তার ব্যাখ্যা
গ্রন্থকারের বক্তব্য: ‘মুহাদ্দিস শুআইব আরঊত বলেন, ঐ অংশটুকু ছহীহ নয় ’ -এর মানে কি? ‘ঐ’ বলতে তিনি কি বুঝিয়েছেন বিষয়টি অস্পষ্ট?
আসলে শায়খ শুআইব বলেছেন:
صحيح دون قوله: “صلاة المغرب وتر صلاة النهار فأوتروا صلاة الليل” ، فقد سلف الحديث عنه في الرواية (৪৮৪৭) بأنه رواه عدة موقوفا، وهذا الإسناد رجاله ثقات رجال الشيخين غير هارون بن إبراهيم الأهوازي، فمن رجال النسائي، وهو ثقة.
অর্থ: “(হাদীসটি মরফুরূপেই) সহীহ, শুধু এ কথাটি ব্যতিত যে, ‘মাগরিবের নামায দিনের বিতর, তোমরা রাতের নামাযকেও বিতর কর’। (কারণ) পূর্বে ৪৮৪৭ নং বর্ণনায় (টীকায়) এ বিষয়ে বলা হয়েছে যে, একাধিকজন হাদীসটি মওকুফরূপে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসের সনদের সকল বর্ণনাকারী সিকাহ (বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য) ও বুখারী মুসলিমের বর্ণনাকারী। কেবল হারুন বিন ইবরাহীম ব্যতিত। তিনি সুনানে নাসায়ীর রাবী ও সিকা।” (মুসনাদে আহমদ হা.৫৫৪৯)
শায়খ শুআইবের বক্তব্য স্পষ্ট যে, তিনি হাদীসটির সনদকে যঈফ বলেননি বরং সহীহ বলেছেন। বক্তব্য সম্পর্কে সহীহ নয় বলে মারফূরূপে (অর্থাৎ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্যরূপে) বর্ণিত হওয়াকে সহীহ নয় বুঝিয়েছেন। মওকুফ বা সাহাবীর বক্তব্যরূপে বর্ণিত হওয়া তার দৃষ্টিতেও সহীহ।
গ্রন্থকার – ১৪
হযরত ইবনে মাসউদ এর ‘মারফূ’ বর্র্র্ণনা
গ্রন্থকার বলেন: “ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, রাত্রির তিন রাক‘আত বিতর দিনের বিতররের ন্যায় যেমন মাগরিবের ছালাত। তাহক্বীক: ইমাম দারাকুৎনী বর্ণনা করেন বলেন, ইয়াইইয়া ইবনু যাকারিয়া যাকে ইবনু আবীল হাওয়াজিব বলে, সে যঈফ। সে আ‘মাশ ছাড়া আর কারো নিকট থেকে মারফূ হাদীছ বর্ণনা করেনি। ইমাম বয়হাক্বী বলেন, ইয়াহইয়া ইবনু যাকারিয়া ইবনু হাযিব (সঠিক হল: ইবনু আবিল হাওয়াযিব!) কুফী আ‘মাশ থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণনা করেছে। কিন্তু সে যঈফ। তার বর্ণনা আ‘মাশ থেকে মারফূ অন্যান্য বর্ণনার বিরোধিতা করে। এছাড়া ইমাম দ্বারাকুৎনী উক্ত বর্ণনার পূর্বে তার বিরোধী ছহীহ হাদীছ উল্লেখ করেছেন। সেখানে মাগরিবের মত করে বিতর পড়তে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন: … ” (পৃ.৩৩০)
পর্যালোচনা
ইবনে মাসউদ রা. এর বর্ণনাটি ‘মারফূ’ ও ‘মাওকুফ’ উভয়ভাবেই বর্ণিত হয়েছে। মাওকুফ হিসেবে ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে এটি প্রমাণিত ও বিশুদ্ধ এতে কোন সন্দেহ নেই। আর দলিলের জন্য ‘মওকুফ’ বর্ণনাটিই যথেষ্ট। সাথে রয়েছে ইবনে উমর (রা.)-এর পূর্বোল্লেখিত মারফু ও মাওকুফ বর্ণনা এবং অন্যান্য দলিল।
ইবনে মাসউদ (রা.) এর মারফু বর্ণনা বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হল: এটি হাসান যা সর্বসম্মতিক্রমে দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য।
এখানে গ্রন্থকার তাহক্বীকের নামে কি ‘কীর্তি’টা আঞ্জাম দিয়েছেন তা সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।
(ক) ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া কি যঈফ?
গ্রন্থকার দারাকুতনীর উদ্ধৃতিতে বলেছেন: ‘সে যঈফ’।
ইমাম দারাকুতনী (রা.) ‘সুনানে’ তাঁকে যঈফ বলেছেন। অনেকেই তার বিষয়ে দারাকুতনীর সঙ্গে একমত হননি। যেমন:
১. ইামাম ইবনে হিব্বান তাঁকে ‘সিকাহ’ (বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য) বর্ণনাকারীদের মধ্যে গণ্য করেছেন। (কিতাবুছছিকাত)
২. ইমাম হাকেম নিশাপুরী: তার একটি হাদীসকে সহীহুল ইসনাদ বলেছেন। (মুসতাদরাক আলাস-সহীহাইন হা.৩০৪৫)
৩. ইমাম যাহাবী রহ. হাকিমের মন্তব্যকে সমর্থন করে বলেন: এটি সহীহ। (তালখীছুল মুসতাদরাক)
(খ) মারাত্মক ভুল তরজমা
গ্রন্থকার বলেন, “ ইমাম দারাকুৎনী … সে আ‘মাশ ছাড়া আর কারো নিকট থেকে মারফূ হাদীছ বর্ণনা করেনি।”
এ তরজমায় তিনি হাস্যকর ভুল করেছেন! সহীহ তরজমা হল: (ولم يروه عن الأعمش مرفوعا غيره) ‘আ‘মাশ থেকে তিনি ছাড়া অন্য কেউ এ হাদীসটি মরফূরূপে বর্ণনা করেনি’।
(গ) তরজমায় মারাত্মক ভুল
গ্রন্থকার যে বলেছেন: “ইমাম বায়হাক্বী বলেন, … তার বর্ণনা আ‘মাশ থেকে মারফূ অন্যান্য বর্ণনার বিরোধিতা করে।”
বাইহাকী’র বক্তব্যের এটিও মারাত্মক ভুল তরজমা। আরবীতে কথাটি এমন : (وروايته تخالف رواية الجماعة عن الأعمش) : এর সঠিক তরজমা হল: ‘আ‘মাশ থেকে তাঁর বর্ণনা অন্যান্য একাধিক রাবীর বর্ণনার বিরোধী’।
(ঘ) তাহলে কি এটি ইচ্ছাকৃত করা হয়েছে?!
গ্রন্থকার এখানে বাইহাকী’র পূর্ণ বক্তব্য উল্লেখ না করে আংশিক এনেছেন। টীকায় (নং ১২৭৭) বরাত দিয়েছেন, আস-সুনানুল কুবরা (৩/৩১)। ঠিক এ পৃষ্ঠাতেই বাইহাকী (রহ.) উপরিউক্ত মন্তব্য করার পূর্বে বলেছেন, “হাদীসটি মওকুফ তথা ইবনে মাসউদ (রা.) এর বক্তব্য হিসেবে সহীহ।” সুতরাং তিনি তার এ বক্তব্যটি অবশ্যই দেখেছেন। কিন্তু গ্রন্থকার এখানে তা উল্লেখ করেননি। আর ৩৩০-৩৩১ পৃষ্ঠায় ইবনে মাসউদের মওকুফ বর্ণনাটি উল্লেখ করেছেন, সেখানেও এ বক্তব্য উল্লেখ করেননি। বরং অন্যায়ভাবে অন্য আরেকটি হাদীসের ক্ষেত্রে করা আপত্তি এ হাদীসের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন !
গ্রন্থাকার – ১৫
সবশেষে তিনি মাযহাব বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে ও নবীজীর নামায বই দুটির উপর অন্যায় আপত্তি করে তা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বলেন: উবাইদুল্লাহ মুবারকপুরী (রহ.) বলেন, “তিন রাক‘আত বিতরের দ্বিতীয় রাক‘আতে বৈঠক করার পক্ষে আমি কোন মারফূ ছহীহ দালীল পাইনি”। (পৃ.৩৩১)
পর্যালোচনা
এ বিষয়ে কয়েকটি কথা:
১. গ্রন্থকার বলেছেন, ‘মরফু ছহীহ দলিল’ পাননি। দ্বিতীয় রাকাতের বৈঠক শরঈ দলিলের আলোকেই করা হয়ে থাকে। হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করেন না এমন অনেক বড় বড় ইমাম, হাফিজুল হাদীস ও মুহাদ্দিসই এর দলিল পেয়েছেন। যেমন ইমাম ইবনে আব্দিল বার, ইমাম ইবনুল জাওযী, ইমাম যাহাবী, ইবনে হাযম জাহেরী প্রমুখ।
২. এ বিষয়ে অনেক মরফূ সহীহ হাদীসে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যা পূর্বে বিতর নামাযের মূল আলোচনায় গত হয়েছে। এখানেও পূর্বোল্লেখিত ইবনে উমর (রা.) এর মরফু বর্ণনাটি এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ও সহীহ দলিল।
৩. ‘দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে তৃতীয় রাকাত পড়বে’ এর পক্ষে কোন মরফু সহীহ ও ছরীহ (স্পষ্ট) দলিল আছে কি? গ্রন্থকারতো তার এ গ্রন্থে দেখাতে পারেননি! আর ‘দুই রাকাতে বৈঠক না করেই তিন রাকাত পড়বে’ এ বিষয়ে মরফু নয় কোন মওকুফ সহীহ বর্ণনাও তারা পেশ করতে পারবেন না।
৪. মুবারকপুরী সাহেব বলেছন: ‘মরফু’ দলিল পাননি। তার মানে মওকুফ দলিল পেয়েছেন। আর মওকুফ তথা সাহাবীদের বক্তব্যতো অনেক আছে এর পক্ষে। তাহলে কি তিনি যেখানে মরফু পাওয়া যায় না সেখানেও মুওকুফ তথা সাহাবীর বক্তব্যকে দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য মনে করেন না? গ্রন্থকারও কি তার সাথে একমত? অথচ তিনি তার গ্রন্থের ৩৩২ ও ৩৩৩ পৃষ্ঠার টীকায় তিনটি মওকুফ বর্ণনা দলিল হিসেবে উল্লেখ করেছেন! তাহলে কি নিজের বেলায় চলে কিন্তু অন্যের বেলায় না!
৫. এখানে তিনি মরফু দলিল তালাশ করেন, অথচ কুনূত পড়ার সহীহ নিয়ম শিরোনামে তিনি আলবানী সাহেবের ‘ইরওয়াউল গালীল [২/৭১] পৃষ্ঠার বরাত দিয়েছেন, যেখানে তৃতীয় শতকের মুহাদ্দিস ইসহাক ইবনে রাহুইয়াহ রহ. এর আমল বর্ণিত হয়েছে। তাহলে তৃতীয় শতকের মুহাদ্দিসের বক্তব্য বা ফতোয়াও নয়, বরং তার একটি আমল দলিল হয়ে যায়, অথচ এখানে ‘কেবল মরফু দলিল তলব করতে হয় এটা কেমন কথা!
এক সালামে এক বৈঠকে তিন রাকাত?
গ্রন্থকার – ১৬
গ্রন্থকার বলেন: “এক সঙ্গে তিন রাকআত পড়ার ছহীহ দলীল:
عن عائشة قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يوتر بثلاث لا يقعد إلا في آخرهن.
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) তিন রাক‘আত বিতর পড়তেন। তিনি শেষের রাক্‘আতে ব্যতীত বসতেন না।” [টীকা:১২৮১. মুস্তাদরাক হাকেম হা/১১৪০; বায়হাক্বী হা/৪৮০৩, তয় খ-, পৃঃ৪১; সনদ ছহীহ, তা‘সীসুল আহকাম ২/২২৬ :(২/২৯৭] (পৃ. ৩৩১)
পর্যালোচনা
(ক) গ্রন্থকার উল্লিখিত হাদীসের যে বরাত দিয়েছেন তন্মধ্যে আমি প্রথমটিতে (অর্থাৎ মুস্তাদরাক হাকেম হা/১১৪০) হাদিসটি এ শব্দে পাইনি। তিনি বলেছেন: “ لا يقْعُد (বসতেন না)” আর মুস্তাদরাকের মুদ্রিত কপিতে আছে: “ لا يُسَلم (সালাম ফিরাতেন না)”। আর (সালাম ফিরাতেন না) শব্দ দিয়ে দুই রাকাতের পর তাশাহহুদ পড়তেন না এর পক্ষে দলিল হয় না। বরং এ হাদীস থেকেত একথাই প্রমাণিত হয় যে, বিতরের দুই রাকাতে বসতে হয়, কিন্তু সালাম ফিরাতে হয় তিন রাকাত পূর্ণ করে। কেননা এর অর্থ যদি দুই রাকাতে না বসা হত, তাহলে “ لا يُسَلم (শেষ না করে সালাম ফিরাতেন না)”: এ কথার কোন অর্থই হয় না। কারণ সালামত আর দাড়ানো অবস্থায় হয় না যে, ‘সালাম ফিরাতেন না’ বলে দিতে হবে।
মোট কথা বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে মুদ্রিত মুসতাদরাকের মোট পাঁচটি কপিতে আমি হাদীসটি (সালাম ফিরাতেন না) শব্দে এভাবেই পেয়েছি। দেখুন:
১. আল মুসতাদরাক আলাস সহীহাইন, ১/৪৪৭ হা.১১৪০ তাহক্বীক: আব্দুল ক্বাদের আতা, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বাইরুত, লেবানন।
২.আল মুসতাদরাক আলাস সহীহাইন: ১/৪৩৭ হা.১১৪১, প্রকাশক: দারুল হারামাইন, মিশর, প্রথম প্রকাশ :১৯৯৭।
৩. আল মুসতাদরাক আলাস সহীহাইন, ১/৩০৪ তাহক্বীক: ইউসুফ আব্দুর রহমান, বাইরুত, লেবানন।
৪. আল-মুসতাদরাক, হা. ১/৪১৪ দারুল ফিকর, বাইরুত, লেবানন।
৫. আল-মুসতাদরাক, ১/৩০৪ দাইরাতুল মা‘আরিফিল উসমানিয়া, হায়দারাবাদ, ভারত, প্রকাশকাল:১৩৩৪ হি.) এমনকি নাসীরুদ্দীন আলবানী সাহেবও ইরওয়াউল গালিলে (১/১৫১) এ শব্দেই উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু গ্রন্থকার মুস্তাদরাকের কোন কপিতে “ لا يقْعُد(বসতেন না)” পেলেন তা বলেননি। পরবর্তীতে তার বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে তিনিও কোন মুদ্রিত কপিতে“ لا يقْعُد (বসতেন না)” শব্দটি পাননি। কারণ তিনি বলেছেন: “মুস্তাদরাকে হাকেমে বর্ণিত لا يقْعُد(বসতেন না) শব্দকে পরিবর্তন করে পরবর্তী ছাপাতে لا يُسَلم (সালাম ফিরাতেন না) করা হয়েছে।” আবার কোন মাখতূতা বা পা-ুলিপিতে এ শব্দটি তিনি দেখেছেন তাও বলেননি। তার কথা ‘পরবর্তী ছাপা’ দ্বারা বুঝা যায় পূর্ববর্তী ছাপাতে لا يقْعُد (বসতেন না) শব্দ ছিল। কিন্তু সেটি পূর্ববর্তী কোন ছাপা তা তিনি কিছুই বলেননি!
তবুও কেন তিনি হাদীসটি “لا يقْعُد (বসতেন না” শব্দে এনে মুস্তাদরাকের বরাত উল্লেখ করলেন আমার বুঝে আসে না? যদি তার কাছে এ শব্দটি ভুল মনে হয়ে থাকে, তাহলে তিনি কিতাবের মূল শব্দটি উল্লেখ করার পর তা ভুল প্রমাণ করে দেখাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে নিজ থেকে হাদীসের শব্দ পরিবর্তন করে দিয়েছেন। পরে জোড়াতালি দেওয়ার জন্য উপযুক্ত দলিল না দিয়ে কতগুলো অযৌক্তিক কথা বলে শাস্ত্রীয় লোকদের জন্য কিছু হাসির যোগান দিলেন।
গ্রন্থকারের সমচিন্তার লেখক আব্দুল্লাহ আল-কাফি এখানে তারচেয়েও মারাত্মক অন্যায় কাজ করেছেন। তিনি বিতর ছালাত বইয়ে (পৃ.৩১) লেখেন: “এর মধ্যে তাশাহুদের জন্যে বসতেন না”। অর্থাৎ তিনি বসতেন না শব্দের সাথে ‘তাশাহুদের জন্যে’ কথাটি নিজের থেকে জুড়ে দিলেন, যার আরবী হবে: (للتشهد)। টীকায় বলেন: “হাদীছটি বর্ণনা করেন ইমাম হাকেম, তিনি হাদীছটিকে ছহীহ বলেন।” এতে তিনি কোন খ- ও পৃষ্ঠার উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া আর কোন বরাতও উল্লেখ করেননি। তাহলে কোথায় পেলেন তিনি এ শব্দ? এভাবেই তাহলে নবীজীর নামাযকে জাল হাদীস থেকে মুক্ত করতে গিয়ে জাল হাদীস যুক্ত করে দেওয়া হয়!
(খ) কোন শব্দটি সহীহ: “ لا يقْعُد” নাকি “ لا يُسَلم”?
এখানে কয়েকটি বিষয় পরিস্কার হওয়া দরকার:
এক. মুস্তাদরাকে হাকেমে এ হাদীসটি কোন শব্দে এসেছে?
দুই. এ হাদীসের অন্যান্য সকল সনদ বিবেচনায় কোন শব্দটি বিশুদ্ধ:“ لا يقْعُد (বসতেন না)” নাকি “ لا يُسَلم(সালাম ফিরাতেন না) ”?
তিন. “ لا يقْعُد (বসতেন না)” শব্দের অর্থের মধ্যে কি: ‘তাশাহুদের জন্য’ বসতেন না, এটি সুস্পষ্ট? নাকি ‘সালাম ফিরানোর জন্য বসতেন না, এ অর্থেরও যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে?
চার. হাদীস বর্ণনাকারী ইমাম বাইহাকী (রহ.) নিজে এ হাদীস থেকে কোন তরীকার বিতর বুঝেছেন?
পাঁচ. হাদীসটি বর্ণনাকারী ইমাম বাইহাকী (রহ.) বর্ণনাটির কি মান উল্লেখ করেছেন?
(এক) হাদীসের শব্দ “ لا يُسَلم (সালাম ফিরাতেন না)” ই সঠিক
আমার অনুসন্ধানে মনে হয়, মুসতাদরাকে হাকেমে মূলত “ لا يُسَلم (সালাম ফিরাতেন না)” শব্দটিই ছিল। অর্থাৎ হাকেম এ শব্দেই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আর “ لا يقْعُد (বসতেন না)” শব্দটি সঠিক নয়। হাকেম এ শব্দে বর্ণনা করেননি। কারণ:
১. আমার দেখা ‘মুসতাদরাকের’ পাঁচটি মুদ্রিত কপিতেই হাদীসটি “ لا يُسَلم (সালাম ফিরাতেন না)” শব্দে এসেছে : যা বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাৎ প্রকাশকদের কাছে এ কিতাবের যে কটি পা-ুলিপি ছিল তাতে হাদীসটি এ শব্দেই এসেছে।
২. কিতাবটি মুদ্রিত হয়ে আসার বহু আগে, যখন হস্তলিখিত কপি প্রচলিত ছিল তখনও বিভিন্ন যুগের বিভিন্ন দেশের অনেক মুহাদ্দিস ‘মুসতাদরাক’ থেকে হাদীসটি এ শব্দে উল্লেখ করেছেন। এতে বুঝা যায় তাদের কাছে থাকা মুসতারাকের কপিগুলোতেও হাদীসটি এ শব্দেই ছিল। যেমন:
১. হাফেজ জামালুদ্দীন যাইলাঈ (মৃত.৭৬১) নছবুর রায়া গ্রন্থে
২. হাফেজ শামসুদ্দীন ইবনে আব্দিল হাদী (মৃ.৭৪৪) তানক্বীহুত তাহক্বীক গ্রন্থে (২/৪২১)
৩. হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (মৃ.৮৫২) ‘আদদিরায়া’ গ্রন্থে (১/১৯১ হা.২৪২)
৪. হাফেজ বদরুদ্দীন আইনী রহ. (মৃ.৮৫৫) উমদাতুলকারী, শরহু আবিদাউদ ও আল বিনায়া গ্রন্থে
৫. ইবনুল হুমাম (মৃ.৮৬১) ফতহুল কাদীর গ্রন্থে,
৬. হাফেজ ক্বাসেম ইবনে কুতলুবুগা (মৃ.৮৭৯) ‘আততা‘রীফ ওয়াল ইখবার ফি তাখরীজুল ইখতিয়ার’ (১/৩৭৯ হা.২১৭) গ্রন্থে
৭. মোল্লা আলী ক্বারী রহ. (মৃ.১০১৪) শরহু মুসনাদি আবিহানীফা গ্রন্থে
৮. মুরতাজা যাবীদী (মৃ.১২০৫) উকূদুল জাওয়াহিরিল মুনীফা গ্রন্থে।
ঝ. এমনকি গাইরে মুকাল্লিদ আলেম শাওকানী রহ. নিজেও ‘নাইলুল আওতারে’ (৩/৪২) হযরত আয়শা (রা.) এর হাদীসটিতে মুসনাদের আহমদের পাশাপাশি মুসতাদরাকের বরাতও উল্লেখ করেছেন। মুসনাদে আহমদের বর্ণনার শব্দ হল: (لا يفصل بينهن) ‘তিনি রাকাতসমূহকে (সালামের মাধ্যমে) বিভক্ত করতেন না’। এটি উল্লেখের পর শাওকানী বলেন: (أما حديث عائشة فأخرجه أيضا البيهقي والحاكم بلفظ أحمد) : “আয়শার হাদীসটি বাইহাকী ও হাকেম (মুসনাদে) আহমদের (অনুরূপ) শব্দেই উল্লেখ করেছেন”। আর আহমদের অনুরূপ শব্দ হল: “সালাম ফিরাতেন না” : অর্থাৎ সালামের মাধ্যমে বিভক্ত করতেন না।
উপরোল্লিখিত পৃথিবী বিখ্যাত হাফেজে হাদীসগণ বিভিন্ন যুগে মুসতাদরাকের বিভিন্ন হস্তলিখিত কপি থেকে হাদীসটি এ শব্দেই উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ এ নয় অঞ্চলের নয় জন হাফেজে হাদীস ও মুহাদ্দিসের কাছে মুস্তাদরাকের যে কপিগুলো ছিল, তাতে এ শব্দটিই ছিল। বলাবাহুল্য তখন মুদ্রণের যুগ ছিল না যে, একজন ভুল ছেপে দিলে সবার কাছেই ভুলটা চলে যাবে। বরং সবগুলোই ছিল হস্তলিখিত কপি। আর এতগুলো কপিতে এক সাথে ভুল শব্দ থাকবে এটা হওয়ার কথা নয়।
অবশ্য ইবনে হাজার আসকালানীর ফাতহুল বারী মুদ্রিত কপিতে, হাদীসটি “বসতেন না” শব্দে এসেছে। হতে পারে তিনি অন্য কোন কপিতে এ শব্দেই পেয়েছেন। আবার এও হতে পারে যে, এটি ফাতহুল বারী কিতাবের মুদ্রণের ভুল। কিন্তু ইবনে রজব ফাতহুল বারীতে, ইবনুল মুলাক্কিন আল বাদরুল মুনীরে এবং ইবনু আব্দিল হাদী তানকীহুত তাহকীকে (لا يقعد) শব্দে উল্লেখ করেছেন। তাই এ সম্ভাবনাও রয়েছে যে, হয়ত মুসতাদরাকের কোন পান্ডুলিপিতেই لا يقْعُد শব্দ রয়েছে। কিন্তু যেমনটি আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী রহ. বলেছেন:
“আমার প্রবল ধারণা (لا يسلم) শব্দটি মুসতাদরাকে হাকেমের পা-ুলিপিতেও থাকবে। কেননা যাইলাঈ কারো উদ্ধৃতি উল্লেখ করার ক্ষেত্রে এতটা (মুতাসাব্বিত) নিশ্চিত ও নির্ভুলভাবে উল্লেখ করে থাকেন যে, হাফেজ (ইবনে হাজার আসকালানী)ও অতটা করেন না। তাঁর একটি রীতি হল, তিনি যখন কারো বক্তব্য কোন মাধ্যমে পেয়ে থাকেন তখন মাধ্যম উল্লেখ করে দেন। নতুনা নিজ চোখে দেখেই সেখান থেকে হুবহু বক্তব্যটিই উল্লেখ করেন। আর এখানে (لا يسلم) বলেছেন। সুতরাং (لا يسلم) শব্দটি মুসতাদরাকের পা-ুলিপিতে অবশ্যই থাকবে।” (টীকা-১) [আরফুশ শাযী- তিরমিযীর সাথে যুক্ত পৃ. ১০৪-১০৫]
৩. বিশেষত হাকেম এ হাদীসটি উল্লেখের পূর্বে একই সনদে আরেকটি হাদীস এনেছেন (নং ১১৩৯), যার শব্দ হল: (لا يسلم في ركعتي الوتر) সালাম ফিরাতেন না”। অতঃপর বলেন: “এ হাদীসের আরো শাওয়াহেদ তথা সমর্থক হাদীস আছে”। এবং সমর্থক হিসেবেই আলোচ্য হাদীসটি (হা.১১৪০) এনেছেন। তাই দ্বিতীয় হাদীসটি প্রথম হাদীসের সমর্থক হওয়ার জন্য প্রথম হাদীসের মত হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
৪. মুসতাদরাকের এ বর্ণনার সাথেই উল্লেখ আছে, “এটিই উমর রা. এর বিতর। তাঁর কাছ থেকেই মদীনাবাসী এ পদ্ধতির বিতর শিখেছে”।
ক্স বলাবাহুল্য ইমাম মালেক রহ. মদীনাবাসীর বিতরকে অনুসরণ করতেন, কিন্তু কোন মদীনাবাসী থেকে তিনি দুই রাকাতে বৈঠক ছাড়া তিন রাকাত বিতরের কোন বিবরণ উল্লেখ করেনও নি এবং তিনি নিজেও এভাবে বিতর পড়ার কথা বলেননি।
আবার হাফেজ ইবনুল মুলাক্কিন (মৃ.৮০৪) রহ. হাকেমের এ বিবরণ উল্লেখ করেছেন, “তাঁর কাছ থেকেই (মদীনাবাসী: এর স্থলে) ‘কুফাবাসী’ এ পদ্ধতির বিতর শিখেছে”। (আল-বাদরুল মুনীর ৪/৩০৮ দারুল হিজরাহ)। যদি ‘মদীনাবাসী’র পরিবর্তে ‘কুফাবাসী’ শব্দটি সহীহ হয় তাহলে, এ থেকে বুঝা যায় মুসতাদরাক সঙ্কলক হাকেম আবু আব্দুল্লাহ এ হাদীস থেকে দুই তাশাহহুদ ও এক সালামের বিতরই বুঝেছেন। বিশেষত হাকেমের সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, ইমাম বাইহাকী রহ.। তিনিও হাদীসটির শিরোনাম দিয়েছেন: ‘দুই তাশাহ্হুদ ও এক সালামে তিন রাকাত বিতর’।
(দুই) হাদীসের সবগুলো সূত্র সামনে রাখলে: দুই রাকাতে ‘বসতেন না’ কথার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না:
হযরত আয়শা রা. এর সূত্রে হাকেম ও বাইহাকী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এর সনদ: শাইবান ইবনে ফাররুখ আবান ইবনে ইয়াযিদ থেকে এবং আবান ইবনে ইয়াযিদ কাতাদা থেকে। অতঃপর সনদটি এরূপ: যুরারাহ-সা‘দ ইবনে হিশাম-হযরত আয়শা রা.।
কাতাদাসূত্রে হযরত আয়শা রা. এর বর্ণনাটি হাদীসের বহু কিতাবে বিভিন্ন শব্দে বর্ণিত হয়েছে (কাশফুস সিতর পৃ.৮৯-৯০)। যেমন:
১. (يوتر بثلاث لا يسلم /لا يقعد إلا في آخرهن – رواه الحاكم والبيهقي)
২. (كان لا يسلم في ركعتي الوتر- رواه النسائي)
৩. (أوتر بثلاث لا يفصل فيهن – رواه أحمد في المسند)
৪. (الوتر بتسع أو بسبع – رواه مسلم (৭৪৬) وغيره)
নির্ভরযোগ্য মুহাদ্দিসীনে কেরাম মনে করেন: সবগুলো মূলত একই হাদীসের বিভিন্ন শব্দ। বর্ণনাকারী বিভিন্ন সময়ে হাদীসের মূল বক্তব্য ঠিক রেখে বিভিন্ন শব্দে ব্যক্ত করেছেন। কখনো সংক্ষেপে আবার কখনো বিস্তারিত। সুতরাং এ হাদীস থেকে বিতর নামাযের পদ্ধতি বের করতে হলে, সবগুলো বর্ণনাকে সামনে রেখেই তবে করতে হবে। যে সকল মুহাদ্দিস শব্দের সামান্য ভিন্নতা সত্ত্বেও সবগুলোকে একই হাদীস বলে গণ্য করেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন:
১. এ হাদীসের বর্ণনাকারী হাকেম স্বয়ং: তার মুসতাদরাকে উপরোক্ত দ্বিতীয় নম্বরে উল্লিখিত শব্দের সমর্থক হিসেবে প্রথম নম্বরে বর্ণিত হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। (মুসতাদরাক হা.১১৪০, ১১৪১)
২. এ হাদীসে অপর বর্ণনাকারী বাইহাকী রহ. স্বষ্ট ভাষায় বলেছেন, সা‘দ ইবনে হিশাম সূত্রে হযরত আয়শা রা. থেকে বিভিন্ন শব্দে বর্ণিত বিতর বিষয়ক হাদীস মূলত একটি হাদীসেরই বিভিন্ন চিত্র। (وَفِي رِوَايَةِ عَبْدِ الْوَهَّابِ يُشْبِهُ أَنْ يَكُونَ اخْتِصَارًا مِنَ الْحَدِيثِ) [আসসুনানুল কুবরা ৩/৩১] অবশ্য বাইহাকী রহ. এর মত হল, সাদ ইবনে হিশামের আলোচ্য বর্ণনায় রাকাত সংখ্যা ছিল নয়। এ কথা মারওয়াযী ও তার অনুসরণে আলবানীও বলতে চেয়েছেন। কিন্তু এ মতের পক্ষে যথাযথ কোন দলিল পাওয়া যায় না।
৩. ইমাম নববী বাইহাকীর মন্তব্যটি সমর্থনপূর্বক উল্লেখ করেন। (আল-মাজমূ:৪/১৮)
৪. হাফেজ ইবনুল মুলাক্কিন (মৃ.৮০৪)। (আল-বদরুল মুনীল ৪/৩০৮)
৫. হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ.। (ইতহাফুল মাহারা বিল ফাওয়াইদিল মুবতাকারাহ ১৬/১০৮৬ হা. ২১৬৭১ )
৬. ইবনে তাইমিয়া আল-জাদ্দ ও শাওকানী রহ.। (নাইলুল আওতার ৩/৩৫)
৭. আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী রহ. (কাশফুস সিতর পৃ.৮৯-৯০)
৮. খোদ গাইরে মুকাল্লিদ আলেম আব্দুর রহমান মুবারকপুরীও স্পষ্ট ভাষায় দুটি হাদীসকে এক গণ্য করে বলেন: (قلت لا مخالفة بين قوله لا يسلم في الركعتين الأوليين من الوتر وقوله لا يقعد إلا في آخرهن) : দুই হাদীসের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। [তুহফাতুল আহওয়াযী ২/৪৫৩]
এ ছাড়াও আরো অনেকেই এ কথা স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন। বিশেষত প্রথমোক্ত দুটি শব্দ হযরত কাতাদা সূত্রে একই সনদে বর্ণিত হয়েছে।
সুতরাং সবগুলো বর্ণনাকে সামনে রাখলে স্পষ্ট যে, আলোচ্য হাদীসের শব্দ অন্যগুলোর মতই : “لا يقْعُد(বসতেন না)” না হয়ে “ لا يُسَلم (সালাম ফিরাতেন না)” হওয়াটাই যক্তিযুক্ত।
আর যদি এ হাদীসে বর্ণিত শব্দগুলির মধ্যে কোনটি প্রাধান্য পাবে সেদিকে দৃষ্টিপাত করা হয় তাহলে প্রথমোক্ত মুসতাদরাকে হাকেম ও বাইহাকীর (لا يقعد / لا يسلم) শব্দ সম্বলিত বর্ণনাটিই অধিকতর দূর্বল প্রমাণিত হয়। এর তুলনায় দ্বিতীয় নাম্বারে উল্লিখিত (لا يسلم في ركعتي الوتر) : শব্দটিই প্রাধান্য পায়, যার সুস্পষ্ট অর্থ হল, বিতরের দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠক করতেন হয়, কিন্তু সালাম ফিরাতেন না। কারণ, প্রথমোক্ত শব্দটি কাতাদা থেকে বর্ণনা করেছেন শাইবান ইবনে ফাররুখ আবান সূত্রে। আর দ্বিতীয়টি বর্ণনা করেছেন, আব্দুল ওয়াহহাব ইবনে আতা সাঈদ ইবনে আবী আরুবা সূত্রে। তন্মধ্যে শাইবান সত্যবাদী হওয়া সত্ত্বেও বর্ণনায় ভুল করতেন, ( صدوق يهم- تقريب التهذيب)। তাই কারো বর্ণনার সাথে বিরোধ লাগলে তার বর্ণনা যাচাই করা জরুরী। বিপরীতে আব্দুল ওয়াহহাব ইবনে আতা সম্পর্কে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বলেন: (كان عبد الوهاب بن عطاء من أعلم الناس بحديث سَعِيد بن أَبي عَرُوبَة) : আব্দুল ওয়াহহাব সাঈদের হাদীস সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জানেন (তাহযীবুল কামাল)। তাই সাঈদের বর্ণনায় তার ভুল হবার কথা নয়। আর ইমাম আবু হাতিম, ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন ও আবু দাউদ তায়ালিসী প্রমুখ বলেন: “(كان سعيد أحفظ أصحاب قتادة/ أعلم الناس بحديث قتادة) : অর্থাৎ কাতাদার হাদীস সম্পর্কে কাতাদার শিষ্যদের মধ্যে সাঈদ সবচেয়ে বেশি জানেন।” (সিয়ারু আলামিন নুবালা) সুতরাং স্বভাবতই তার বর্ণনা শাইবানের বর্ণণার উপর অগ্রগণ্য হবে। [আরো দেখুন: নছবুর রায়াহ টীকা, তাহক্বীক শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামাহ ২/১১৮]
বাকী অংশের জন্যে “বিতর সালাত: পরিশিষ্ট-(চতুর্থ অংশ)” দেখুন!!