ডিপ্রেশনের কুরআন ভিত্তিক সমাধান

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

ডিপ্রেশনের কুরআন ভিত্তিক সমাধান

🖋আসিফ উল ইসলাম সৈকত

প্রায় তিন বছর হলো কোন ওহি আসেনা। সেই কবে একবার জিব্রাইল আলাইহিস সালাম এসে সত্যায়ন করে প্রভুর পক্ষ থেকে উপদেশ শুনিয়ে গেলেন। এরপর থেকে আর কোন বার্তা আসেনা। নিজ থেকে গিয়ে যোগাযোগ করারও সুযোগ নেই।  মাঝে মাঝে বিভোরতার মাত্রা এত তীব্র হয়ে উঠতো যে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৌঁড়ে চলে যেতেন হেরা পর্বতে। ঝাপিয়ে পড়তে চাইতেন। তখনই জিব্রাইল আলাইহিস সাল্লাম উপস্থিত হয়ে বলতেন, “হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম), নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহ’র রসুল”। এই কথাশুনে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশ্বস্ত হতেন। অন্তরের অস্থিরতা কমে যেত। প্রশান্তি ফিরে আসতো। ফিরে যেতেন ঘরে। আবার যখন বেদনার জ্বালা বৃদ্ধি পেতো, অস্থির হৃদয়ের বিভোরতা নিয়ে ছুটে যেতেন পাহাড়ের চুড়ায়। লাফ দিতে চাইলেই আবার এসে উপস্থিত হতেন হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম এবং পূর্বের মত আশ্বস্ত করতেন [১][২] ।

ডিপ্রেশন মানব জীবনের একটা স্বাভাবিক অবস্থা। রসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র সীরাতেও আমরা তা দেখতে পাই। শুধু তিনিই নন, মারিয়ম আলাইহাস সালাম’ও একপর্যায়ে বিষণ্ণ হয়ে বলেছিলেন, “হায়! এর পূর্বে কোন মতে যদি আমি মরে যেতাম এবং লোকের স্মৃতি থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যেতাম[৩]”। একইভাবে, হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম’র বিচ্ছেদে হযরত ইয়াকুব  আলাইহিস সালাম বেদনায় কাতর হয়ে কাঁদতে কাঁদতে নিজের চোখের জ্যোতিও হারিয়ে বসেছিলেন। এইসবের ফলে উনাদের কারো মর্যাদাই আল্লাহ’র কাছে একটুও কমেনি। আল্লাহ তায়ালা তাঁদের কাউকেই ভর্ৎসনাও করেননি। অতএব, বুঝা যায় যে, মানুষের ডিপ্রেসড হওয়াটা মানবীয় বৈশিষ্ট। কিন্তু সমস্যা হয় যখন এটা চরমতর হয়ে ওঠে। মস্তিস্ক ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকে। এই সমস্যা থেকে প্রতিকারের জন্য আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্বন্ধে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কেননা, ডিপ্রেসড হয়ে বসে থাকা মানুষ হুট করে এত কিছু চিন্তা করতে পারেনা। ছোট ছোট বিপদেও বিষয়গুলোকে এপ্লাই করতে হবে। যদি হোঁচট খেয়েও পড়ে যায়, তখনও। আর এই বিষয়গুলো হবে সম্পূর্ণ কুরআন ভিত্তিক। কেননা, এগুলো বলে বলেই আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র অন্তরকে প্রশান্ত করতেন। আর আশা করি, আমাদের কারো জীবনেই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র চেয়ে বেশি কষ্টে আসেনি। ইন শা আল্লাহ আসবেও না।  আর, শেফা বা আরোগ্য  সম্বন্ধে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন বলছেন, “আমি কুরআনের মধ্যে ওই বিষয় অবতীর্ণ করি, যা ইমানদারদের জন্য আরোগ্য ও রহমত[৪]।” তাই, এই ডিপ্রেশন নামক রোগের শেফার জন্যও আমরা কুরআন থেকেই সমাধান খুঁজে বের করবো।

আল্লাহ তায়ালা’তো বলেছেনই

আল্লাহ তায়ালা তো আমাদের বলেই দিয়েছেন যে, তিনি আমাদের পরীক্ষা নিবেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করছেন, “লোকেরা কি এ অহঙ্কারের মধ্যে রয়েছে যে, এতটুকু কথার উপর তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে যে, তারা বলবে, “আমরা ইমান এনেছি।” তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না[৫]?”  অর্থাৎ, ইমানদারদের মধ্যে প্রত্যেককেই পরীক্ষা করা হবে। এখন পরীক্ষাটা কেমন হবে সেটা সম্বন্ধে আল্লাহ সুবাহানাহু বলছেন, “অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ঘাটতি দ্বারা। এবং সুসংবাদ শুনাও ওই সব সবরকারীদেরকে[৬]। আল্লাহু আকবার! কেমন কথা! পরীক্ষাও নিচ্ছেন, আবার প্রশ্ন পত্রও জানিয়ে দিচ্ছেন যাতে ইমানদারগণ কোন মতেই ফেইল না করে। আমাদের কেবল এতটুকুই উপলব্ধি করতে হবে যে, আল্লাহ তায়ালা যখন বলেছেনই যে, আমাদের থেকে তিনি পরীক্ষা নিবেন এবং কীভাবে কীভাবে নিবেন সেটাও যখন জানিয়ে দিয়েছেন, তখন আমাদের কর্তব্য হচ্ছে সর্বদা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা। যেকোন কঠিন পরিস্থিতে ধৈর্য ধারণ করা। 

আমিই একমাত্র নই

সাফা-মারওয়া দুইপাহাড়ের মাঝে দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে মা হাজেরা আলাইহাস সালাম একা অসহায় হয়ে বসে আসছেন। মানুষতো দূরের কথা, নেই পশুপাখিও। খাবার শেষ, পানিও শেষ। নিজের তৃষ্ণার কথা ভুলে গেলেও ছেলের কান্নাতো উপেক্ষা করা যায় না। পানির খোঁজে কখনো ছুটে গেছেন সাফায় আবার কখনো উঠেছে মারওয়ায়। তবুও পানির কোন সন্ধান পাচ্ছেন না। এদিকে ক্ষুধায়, তৃষ্ণায় কাতরাচ্ছেন শিশু হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম। কতই না করুন পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতেও তিনি কিন্তু অভিযোগ করেননি। ধৈর্য ধারণ করেছেন। ফলশ্রুতিতে, তাঁর ঐ মুহূর্তের প্রতিটি কাজকে আল্লাহ তায়ালা আজকের ইমানদারদের জন্য নিদর্শন বানিয়ে দিয়েছেন। 

হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম’র জীবন যেন সুরা বাকারাহ’র সেই  ২১৪ নং আয়াতে পাকেরই বাস্তব দৃষ্টান্ত। সন্তান-সন্তততি, অর্থ-কড়ি এমন কি মারাত্মক অসুখ দিয়েও আল্লাহ সুবাহানাহু তাকে পরীক্ষায় ফেলেছেন। এতপরীক্ষার মধ্যেও তিনি কোন অভিযোগ করেননি।বরং তিনি এই রোগাক্রান্ত অবস্থায় আল্লাহ তায়ালা’কে বললেন,

 أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ

 “আমাকে দুঃখ কষ্ট স্পর্শ করেছে এবং তুমি সমস্ত দয়ালুর মধ্যে সর্বাধিক দয়ালু[৭]।” আল্লাহু আকবার!  তিনি এখনো সুস্থও হননি, অথচ বলছেন, “ইয়া আল্লাহ, তুমিই সর্বাধিক দয়ালু”। তার এই ধৈর্যের বদলাও তিনি পেয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা তার সম্বন্ধে বলেন, “নিশ্চয় আমি তাকে(হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম) ধৈর্যশীল পেয়েছি। কতোই উত্তম বান্দা! নিশ্চয় সে অতি প্রত্যাবর্তনকারী[৮]।” ধৈর্যের, সহ্যের এবং পুষ্কার প্রাপ্তির যেন এক পরম দৃষ্টান্ত।

সময়ের অপেক্ষা

আমাদেরকে সবসময় স্মরণ রাখতে হবে যে, পৃথিবীতে যে কোন কিছু বৃদ্ধি এবং টেকসই হওয়ার জন্য সময়ের প্রয়োজন হয়।অনেক সময় একই কাজ বার বারও করতে হয়। এটাই কারণ যে, পৃথিবীতে আসতে একজন মানুষের স্বাভাবিকভাবে নয় মাস লাগে। এটাই কারণ যে, গাছের ফল পেতে একটা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় , পরিচর্যা করতে হয়। নামায আদায় করতে গেলে বার বার রুকু-সিজদা করতে হয়।  হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম বেশি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। যার ফলে আল্লাহ তায়ালা বলছেন,

وَاتَّخَذَ اللَّهُ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلًا

 “ এবং আল্লাহ ইব্রাহীমকে আপন ঘনিষ্ট বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন[৯]।” কষ্টের মাত্রা যত বেশি হবে, এবং যত দীর্ঘ হবে, আমাদের তত বেশি শুকরিয়া আদায় করতে হবে। বিচলিত না হয় এটা ভাবতে হবে যে, আল্লাহ তায়ালা কষ্টের বদলায় যা দিবেন, তা আমার কল্পনার চেয়ে অনেক অনেক বেশিই হবে। কেননা, আল্লাহ বলছেন, “ তারা হচ্ছে(এমন লোক), যখন তাদের উপর কোন বিপদ এসে পড়ে তখন তারা বলে,

اِنَّا لِلّٰهِ وَاِنَّـآ اِلَيۡهِ رٰجِعُوۡنَؕ‏

 “আমরা তো আল্লাহ’রই মালিকানাধীন এবং আমাদেরকে তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে”। 

আর যারা বিপদের সময় এই কথা বলে তাদের সম্বন্ধে আল্লাহ সুবাহানাহু বলছেন, “এসব লোক হচ্ছে তারাই, যাদের উপর তাদের রবের দরুদসমূহ এবং রহমত বর্ষিত হয়। আর এসব লোকই সঠিক পথের উপর প্রতিষ্টিত[১০]।”

আশার আলো

একদিন এক ছাত্র তার শায়েখকে জিজ্ঞাস করলো, “শায়েখ, আমাকে এমন একটা কথা বলুন, যা স্মরণ করলে খুশির সময় আমি ব্যাথিত হবো, আর দুঃখের সময় আমি আনন্দিত হবো।” এই কথা শুনে শায়েখ মুচকি হেসে একটা কাগজ হাতে নিয়ে সেটাতে লিখে দিলেন, “এই সময়টাও চলে যাবে।” আমরা যত কষ্টেই থাকি না কেন, বিশ্বাস রাখতে হবে যে, এই কষ্টের সময়টা একদিন শেষ হবেই।  হ্যাঁ, হতে পারে সেই দিনটা আসতে সময় লাগবে, কিন্তু আসবে অবশ্যই। আশাহত হওয়া চলবেনা। কখনো মানব শয়তান, আবার কখনো জ্বিন শয়তান আমাদেরকে আশাহত করার চেষ্টা করবে। শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এবং কোন মতেই, কোন অবস্থাতেই যেন আশাহত না হই, সেজন্য কুরআন মজিদে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, “ও মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তুমি বলো, হে আমার ওই সকল বান্দারা, যারা নিজেদের আত্মার প্রতি অবিচার করেছো,

لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَةِ اللّٰهِ 

“আল্লাহ’র অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হইয়ো না।” (সুরা যুমার-৫৩)

অন্যত্র, আল্লাহ সুবাহানাহু বলেন,

إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا

 “নিশ্চয় কষ্টের সাথেই রয়েছে স্বস্তি[১১]।” এখানে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করা উচিত যে, আল্লাহ তায়ালা কিন্তু ‘কষ্টের পরে স্বস্তি’ এমনটা বলেননি। আরবি ‘মা‘আ’ শব্দটি ‘সঙ্গে বা সাথে’ অর্থ দেয়। অর্থাৎ,  কষ্টের সাথে স্বস্তি সংযুক্ত আছে। অতএব, কষ্ট যাওয়ার সাথে সাথেই স্বস্তি চলে আসবে। যেভাবে, রাত যেতেই দিন চলে আসে। (তাফসিরে নুরুল ইরফান)। আবার, এই কথাটাই আল্লাহ তায়ালা একই সুরার মধ্যে দুইবার বলেছেন। আরবি ব্যাকরণ মতে, কোন বাক্য বার বার বলার অর্থ হলো, সেই বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া বা জোর দেওয়া। অতএব, অবশ্যই অবশ্যই  এবং অবশ্যই কোন সন্দেহ ছাড়া কষ্ট যাওয়া মাত্রই আল্লাহ তায়ালা স্বস্তি দান করবেন।  কাজ কেবল একটাই ধৈর্য ধারণ করা।

আল্লাহ তা জানেন যা আমরা জানিনা

শিশু বয়সেই ইউসুফ আলাইহিস সালাম’কে তাঁর ভাইয়েরা নিয়ে গিয়ে ফেলে দিলো কুপের মধ্যে। সেখান থেকে ভাগ্যক্রমে চলে গেলেন মিশরের বাজারে। সেখানে দাস হিশেবে তাঁকে বিক্রয় করা হলো। সেখান থেকে মিথ্যা অভিযোগের দায়ে পৌঁছে গেলেন কারাগারে। অবাক লাগে একজন নবী বছরের পর বছর বিনা কারণে এতগুলো কষ্ট সহ্য করলেন কীভাবে! এরপর থেকে শুরু হলো তাঁর স্বস্তির দিন। বাদশাহ একটা স্বপ্ন দেখলো,  যেটার ব্যাখ্যা কারো কাছেই ছিলোনা একমাত্র হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম ব্যাতিত। কারাগার থেকে এসে রাজার স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা করলেন তিনি। ফলে রাজা তাঁকে তাঁর ইচ্ছামোতাবেক অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে নিয়োজিত করলেন। কিছুদিনের মধ্য তিনিই রাজা হলেন। সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যা ছিলো মিশরে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ আসবে। সুতরাং,  দেখা দিলো দুর্ভিক্ষ। অতঃপর, হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম দুর্ভিক্ষ হতে পুরো মসরীয়দের রক্ষা করলেন। এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার হেকমত প্রকাশিত হলো এবং তিনি শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হলেন[১২]। 

এই ঘটনার মাধ্যমে ইউসুফ আলাইহিস সালাম এবং তাঁর পিতা ইয়াকুব আলাইহিস সালাম’র উপর চলতে থাকা পরীক্ষা সম্বন্ধে আমরা ধারণা করতে পারি। পরীক্ষা এতটাই কঠোর ছিল যে, ইয়াকুব আলাহিস সালাম পুত্রের শোকে কাঁদতে চোখের জ্যোতি হারিয়ে বসেন। এটা অবশ্যই তাঁদের উভয়ের জন্য কঠিন পরীক্ষা ছিল। কিন্তু এই পরীক্ষাটা নেওয়ার পেছনেও যে আল্লাহ তায়ালা’র বিরাট একটি হেকমত লুকায়িত ছিল। আর তা এটাই যে, হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম’কে রাজার পদে বসানো এবং  তাঁর মাধ্যমে দুর্ভিক্ষ থেকে মিসরীয়দের রক্ষা করা। ইতিহাস সাক্ষী, মিসরীয়দেরকে দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা করতে ইউসুফ আলাহিস সালাম’র ব্যবহৃত কৌশল ছিল অত্যন্ত অত্যাধুনিক। এই কৌশলটাই শেখানোর জন্য আল্লাহ তায়ালা তাঁকে এতগুলো পরীক্ষায় ফেলেছেন। অতঃপর, পরীক্ষার ফলাফল স্বরুপ সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারীও করেছেন।

এখানে হযরত খিদির আলাইহিস সালাম’র কথাও স্মরণ করতে পারি। যিনি এক নিষ্পাপ ছেলেকে মেরে ফেলেছিলেন। ক্ষুব্ধ হয়ে হযরত মূসা আলাইহিস সালাম কারণ জিজ্ঞেস করলে হযরত খিদির আলাইহিস সালাম বলেছিলেন, “ঐ যে বালক, তাঁর মাতা পিতা  মুসলমান ছিলো। তখন আমাদের আশঙ্কা ছিলো যে, সে তাদের (পিতা-মাতার) বিদ্রোচরণ করবে ও কুফরের উপর বাধ্য করবে। অতঃপর আমরা চাইলাম যে, তাদের উভয়ের(মৃত ছেলের পিতা-মাতার) রব তার (মৃত ছেলেটির) চেয়ে উত্তম,পবিত্র এবং তার চেয়ে অধিক নিকটতর (সন্তান) দান করবেন[১৩]।” ভবিষ্যত সম্বন্ধে আমরা কিছুই জানিনা বলে আজকের ছোট খাটো বিষয়ে ব্যাথিত,মর্মাহত হয়ে পড়ি। আর এই কারণেই আল্লাহ তায়ালা বলছেন, “সম্ভবতঃ তোমাদের নিকট কোন বিষয় অপছন্দ হবে অথচ তা তোমাদের পক্ষে কল্যাণকর হয়; এবং সম্ভবতঃ কোন বিষয় তোমাদের পছন্দনীয় হবে অথচ তা তোমাদের পক্ষে অকল্যাণকর হয়। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জানোনা[১৪]।” অতএব, যেকোন ছোট বড় কষ্ট আমাদের সামনে আসলেই, আশাহত না হয়ে এই কষ্টের পেছনে আল্লাহ তায়ালা’র হেকমত আছে বলেই  মনে করতে হবে। সাথে সাথে নিজেকে এটাও বুঝাতে হবে যে, নিঃসন্দেহে এই কষ্টের বদলায় আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে অনেক ভালো কিছুই দিবেন, ইন শা আল্লাহ।

আল্লাহ আমাদের সাথেই আছেন

ফিরাউন দলবল নিয়ে যখন হযরত মুসা আলাইহিস সালাম এবং তাঁর সঙ্গীদের পিছু নিলো , তখন ছুটতে ছুটতে এক পর্যায়ে মুসা আলাইহিস সালাম এবং তাঁর অনুসারীরা সমুদ্রের সামনে এসে পৌঁছলেন। সামনে সমুদ্র আর পেছনে ফিরাউনের শক্তিশালী বাহিনী। সামনেও মৃত্যু পেছনেও মৃত্যু। চোখের সামনে এই কঠিন পরিস্থিতি দেখে হযরত মুসা আলাইহিস সালাম’র অনুসারীরা বললেন, “তারাতো(শত্রুরা) আমাদের ধরে ফেললো”। তখন মুসা আলাইহিস সালাম চমৎকার কথা বললেন, তিনি বললেন, 

كَلَّا ۚ اِنَّ مَعِىَ رَبِّىۡ سَيَهۡدِيۡنِ

“ একেবারেই না। নিশ্চয় আমার রব আমার সঙ্গে আছেন। তিনিই আমাকে পথ প্রদর্শন করবেন[১৫]।” কি অসাধারণ দৃঢ়তা, সুবাহানাল্লাহ! বিপদ দেখে যখন সবাই অস্থির, তখন হযরত মুসা আলাইহিস সালাম বিচলিত হননি। ভরসা রেখেছেন সর্বশক্তিমান আল্লাহ রব্বুল আলামিন’র ওপর। 

হুজুর করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র হিজরতের ঘটনাও এমনই। রসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’কে  সাথে নিয় প্রবেশ করলেন হেরা গুহায়। কাফেররা তাঁদের খোঁজ করতে করতে গুহার একেবারে নিকটে চলে এসেছিলো। তখন হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বিচলিত হয়ে পড়েন। সেই সময় রসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র অন্তরকে প্রশান্ত করার জন্য যে চমৎকার উক্তিটি করেছিলেন তা যুগে যুগে প্রত্যেক উম্মতে মুহাম্মদী’র জন্য মহাপ্রেরণার বাণী হয়ে আছে এবং থাকবে। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ও আবু বকর,

لَا تَحْزَنْ إِنَّ اللَّهَ مَعَنَا

 “চিন্তিত হইয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাথেই আছেন[১৬]।”

 আল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার! হৃদয়ের কি দৃঢ়তা! কি স্থিরতা! দুশমনের পায়ের আওয়াজ একেবারে নিকটে। স্বাভাবিকভাবে বাঁচার কোন ভরসাই নেই। সেই মূহুর্তেও আশার বাণী! 

উভয় ঘটনার মধ্যে একটা বিষয় গভীরভাবে লক্ষ্য করা উচিত। মুসা আলাইহিস সালাম তাঁর অনুসারীদের অস্থিরতা দেখে বলেছেন, “আল্লাহ আমার সাথে আছেন।” আর রসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আল্লাহ আমাদের(উভয়ের) সাথেই আছেন।” হযরত মুসা আলাইহিস সালাম সঙ্গত্বকে নিজের দিকে সম্পৃক্ত করেছেন, তাঁর অনুসরণকারীদের প্রতি নয়। কিন্তু আমাদের প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সঙ্গত্বকে হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র দিকেও সম্পৃক্ত করেছেন। এখানেই হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং উম্মতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র শ্রেষ্ঠত্ব প্রামণিত হয়[১৭]।

মুসা আলাইইস সালাম’র স্থিরতা এবং দৃঢ়তার পুরুষ্কার স্বরুপ আল্লাহ তায়ালা তার সামনে সমুদ্রের পানিকে দুইভাগ করে দিলেন। বেরিয়ে আসলো রাস্তা। যার মাধ্যমে তিনি এবং তাঁর অনুসারীরা পার হয়ে গেলেন এবং ফেরাউন এবং তার সৈন্যদের সমুদ্রের মাঝে ডুবিয়ে মারেন। মুসা আলাইহিস সালাম এবং তাঁর অনুসারীরা জালিমের জুলুম থেকে রক্ষা পেলেন[১৮]। 

এবং রসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র ধৈর্য এবং তাওয়াক্কুল’র ফলে, আল্লাহ তায়ালা গুহার মুখে মাকড়শার মাধ্যমে জাল বানিয়ে দিলেন, বন্য কবুতরকে দিয়ে বাসা বাঁধিয়ে দিলেন। যার ফলে একেবারে কাছে এসেও কাফেররা হুজুর আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম’কে  না পেয়ে ফিরে গিয়েছিল[১৯]। বিপদের সময় অস্থির অথবা ডিপ্রেসড না হয়ে নিজেকে শান্ত রাখার কত মহান শিক্ষাই না এই দুইটি ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন।

আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট।

যাতুর রিকা যুদ্ধের সময় রসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গাছের নিচে আরাম করছিলেন। অমনি এক মুশরিক হঠাৎ এসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’কে তলোয়ার দেখিয়ে বললো, “আপনি আমাকে ভয় পান?” তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উত্তর দিলেন, “না”। সে এবার জিজ্ঞাস করলো, “আপনাকে আমার থেকে কে রক্ষা করবে?” এই কথাটা সে তিনবার জিজ্ঞাস করলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “আল্লাহ।” এই শব্দটা শুনতেই সেই ব্যক্তির হাত থেকে তলোয়ার পড়ে গেলো। সাথে সাথে নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোলায়র হাতে নিয়ে জিজ্ঞাস করলেন, “ এখন, আমার থেকে তোমাকে কে রক্ষা করবে?” সে ভয় পেয়ে উত্তর দিলো, “আপনিই উত্তম রক্ষাকারী।” রসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তাহলে তুমি সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং  আমি (মুহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ’র রসুল।” বেদুইনটি তাই করলো। হাদিসটি জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন[২০]। 

প্রত্যেক সময়ের নবি আলাইহিস সালামগণ আমাদের শিখিয়েছেন, জীবনের প্রত্যেক কঠিন সময়েও কীভাবে আল্লাহ’র উপর তাওয়াক্কুল করতে হয়। কঠিন বিপদেও কীভাবে আল্লাহ’র ওপর ভরসা করতে হয়। যারা এটা করতে পারেন তাদের ব্যাপারেই কুরআনে পাকে আল্লাহ সুবাহানাহু বলছেন, “আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য মুক্তির পথ বের করে দেবেন; এবং তাকে ওই স্থান থেকে জীবিকা দেবেন যেখানে তার কল্পনাও থাকে না এবং 

مَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ

যে আল্লাহ’র উপর ভরসা করে, তবে তিনি(আল্লাহ তায়ালা) তার জন্য যথেষ্ট[২১]।” আর আল্লাহ তায়ালা নিজেই একটি দুআ সম্বন্ধে কুরআনে পাকে বলেছেন। যে দুআর ফলে জীবনটা বিপদের কালো মেঘে ছেয়ে গেলেও আশার আলো এসে জীবনটাকে পুনরায় আলোকিত করে তুলবে এবং ইমানও বৃদ্ধি পাবে। তা হল-

حَسۡبُنَا اللّٰهُ وَنِعۡمَ الۡوَكِيۡلُ

 “আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, এবং তিনি কতোই উত্তম কর্মব্যবস্থাপক[২২]।” 

কেবল ধৈর্যটাই যথেষ্ট না

বৈচিত্রময় এই জীবনের কোন সমস্যাই এক রকম হয় না। সময়ের ভিন্নতায় সমস্যাও ভিন্নরূপে হাজির হয়। তাই প্রত্যেক সমস্যার সমাধানও কিন্তু এক না। কিছু কিছু সমস্যার ক্ষেত্রে কেবলই ধৈর্য ধারণ করা যথেষ্ট হয় না। তখনের মুহূর্তটা অবশ্যই অনেক কঠিন। এমন কঠিন মূহুর্তে সাহায্য চাওয়ার পদ্ধতি সম্বন্ধে জানিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, 

يٰٓاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَعِيۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَالصَّلٰوةِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِيۡنَ‏ 

 “হে ইমানদারগণ, সবর ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ সবরকারীদের  সাথে রয়েছেন[২৩]।” আয়াতে করিমায় বুঝানো হয়েছে যে, সাহায্য দ্রুত পেতে হলে, সবরের সাথে বিশেষ সালাতও সংযুক্ত করতে হবে, তবেই নিঃসন্দেহে আল্লাহ’র সাহায্য আসবে। আরেকটা আনন্দের কথা দেখুন, এই দ্রুত সাহায্য পাওয়ার সুযোগ কেবল ইমানদারদের জন্যই নির্ধারিত।  এর দ্বারা এটাও বুঝা যায় যে, কেবল সবর না, দ্রুত সমাধানের জন্য অনেক সময় অন্য কোন মাধ্যমকেও সবরের সাথে যুক্ত করতে হবে। 

জীবনের অনেক কঠিন সময়ে ডাক্তারের অথবা কোন একজন ভালো উপদেশ দাতার প্রয়োজন হয়। তখন অবশ্যই তাদের সাহায্য নিতে হবে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে, শেফা দিবেন একমাত্র আল্লাহ। আর ডাক্তারের কাছে যাওয়াটা হবে, উট বেঁধে নেওয়া। যেমনটা হাদিসে পাকে আল্লাহ’র হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “উটের পাঁ বেঁধে আল্লাহর উপর ভরসা করো[২৪]।” আর আল্লাহ তায়ালাও বলেছেন, “হে ইমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় করো এবং তাঁরই  দিকে মাধ্যম তালাশ করো এবং তাঁর পথে জিহাদ করো এ আশায় যে, সফলতা পেতে পারো[২৫]।” শেফা আল্লাহ’ই দিবেন কিন্তু মাধ্যম হিশেবে ডাক্তারের কাছে আমাদের যেতেই হবে, ওষুধ সেবন করতেই হবে। শেফা লাভের পদ্ধতিটা আল্লাহ এভাবেই বানিয়েছেন। 

শুরুতেই বর্ণীত সেই হাদিস পাকের কথাই স্মরণ করুন। অন্তরে শান্তি দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়লা। কিন্তু মাধ্যম হিশেবে জিব্রাইল আলাইহিস সালাম’কে বার বার পাঠিয়েছেন। আমাদের কেবল এতটুকুই স্মরণ রাখতে হবে যে, জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত পরীক্ষার। আমরা দুনিয়াতে সুখ-শান্তির লোভে পড়ে থাকতে আসিনি। আমাদের শান্তি পরকালের জন্য জমা রাখা আছে। আমরা এখানে পরীক্ষা দেবো। দুআ শুধু এতটুকুই পরীক্ষার সেই মুহূর্তে যেন ধৈর্যধারণ করতে পারি। আল কুরআনকে যেন আঁকড়ে ধরতে পারি। যেভাবে আল্লাহ আদেশ করেছেন যে, “সবাই মিলে আল্লাহ’র রুজ্জু(রশি) দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো[২৬]।” অধিকাংশ মুফাসসিরন রুজ্জু দ্বারা ‘কুরআন মাজিদ’ উদ্দেশ্য বলেছেন[২৭] যেমনটা মুসলিম শরিফেই আছে[২৮]। সাথে এই দুআও করি যে,  জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র সুমহান পুত চরিত্রকে নিজের জন্য একমাত্র আদর্শ হিশেবে মনে প্রাণে ধারণ করতে পারি। আল্লাহ সুবাহানাহু তাঁর  আর-রহমান এবং আর-রহিম নামের উসিলায় আমাদের দুআ কবুল করুণ। আমিন।

টীকা

[১] সহিহ বুখারি, স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান, ৬৯৮২।

[২] এখানে বার বার পাহাড়ের চুড়ায় যাওয়ার দ্বারা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র উদ্দেশ্য হয়তো আত্মহত্যা ছিলোনা, বরং নিজের ব্যাপারে পুনরায় সত্যায়ন এবং হৃদয়ের শান্তিই ছিলো উদ্দেশ্য। তিনিতো জানতেন তিনি আল্লাহ’র রসুল। কেননা, ওয়ারাকা ইবনে নাওফেলতো বলেছিলোই যে, একদিন তাঁকে তাঁর নগরের মানুষজন নির্যাতন করে চলে যেতে বাধ্য করবে। আর নবী-রসুলদের উপর নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকে যা শেষ না হওয়ার পর্যন্ত আল্লাহ তায়লা তাঁদেরকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করান না। অতএব, তিনি এমন কিছু চাইলেও আল্লাহ তায়ালা তা হতে দিবেননা। তাই আমরা বলতে পারি, ওহি না আসার বেদনায় হৃদয়ের অস্থিরতা বেড়ে গেলে নিজের সত্যায়ন শুনার জন্য পাহাড়ের চূড়ায় ছুটে যেতেন। অতঃপর জিব্রাইল আলাইহিস সালাম এসে সত্যায়ন করলে অন্তর প্রশান্ত হতো, এরপর ফিরে চলে আসতেন। আল্লাহু ওয়া রসুলু আ’লাম(লেখক)।

[৩] সুরা মারিয়ম ২৩।

[৪] সুরা বনি ইসরাইল- ৮২। 

[৫] সুরা আনকাবুত-২।

[৬]সুরা বাকারাহ-১৫৫।

[৭]সুরা আম্বিয়া-৮৩।

[৮] সুরা সোদ-৪৪।

[৯] সুরা নিসা-১২৫।

[১০] সুরা বাকারাহ-১৫৫-১৫৬।

[১১]সুরা ইনশিরাহ-৫।

[১২] সুরা ইউসুফ ৫৭, তাফসিরে ইবনে কাসির।

[১৩] সুরা কাহাফ-৮০।

[১৪] সুরা বাকারাহ-২১৬।

[১৫]সুরা শুয়ারা-৬১-৬২।

[১৬]সুরা তাওবাহ-৪০।

[১৭] আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ,১ম খণ্ড, অধ্যায়ঃ হিজরত, পরিচ্ছেদঃ আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র মর্যাদা। কৃত ইমাম কাস্তালানী রাহিমাহুমুল্লাহ।

[১৮] সুরা তাওবাহ-৬১-৬৬।

[১৯] আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ,১ম খণ্ড, অধ্যায়ঃহিজরত। কৃত ইমাম কাস্তালানী রাহিমাহুমুল্লাহ।

[২০] সহিহ বুখারি, ২য় খণ্ড,কিতাবুল জিহাদ,৪১৩৫।

[২১] সুরা ত্বালাক-২-৩।

[২২] সুরা আলে ইমরান-১৭৩।

[২৩] সুরা বাকারাহ-১৫৩।

[২৪] তিরমিযী-২৫১৭, হাদিসে মান- সহিহ।

[২৫] সুরা মায়েদাহ-৩৫।

[২৬] সুরা আলে ইমরান-১০৩।

[২৭] তাফসিরে ইবনে কাসির, সুরা আলে ইমরান-১০৩।

[২৮] সহিহ মুসলিম-২৪০৮।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment