মূল: হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী (রহ.)
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
[ইংরেজি অনুবাদক মুহাম্মদ আবূল ক্বা’সেম কর্তৃক লিখিত ভূমিকা ও টীকা-টিপ্পনীসহ]
*সূরাহ আহযাব হতে দশটি আয়াত (ومن سورة الأحزاب عَشْرُ آيات):
আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন:
مِّنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُواْ مَا عَاهَدُواْ ٱللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَّن قَضَىٰ نَحْبَهُ وَمِنْهُمْ مَّن يَنتَظِرُ وَمَا بَدَّلُواْ تَبْدِيلاً، لِّيَجْزِيَ ٱللَّهُ ٱلصَّادِقِينَ بِصِدْقِهِمْ وَيُعَذِّبَ ٱلْمُنَافِقِينَ إِن شَآءَ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُوراً رَّحِيماً.
অর্থ: মুসলমানদের মধ্যে কিছু এমন পুরুষ রয়েছে, যারা সত্য প্রমাণিত করেছে যে-ই অঙ্গীকার তারা আল্লাহর সাথে করেছিলো; সুতরাং তাদের মধ্যে কেউ কেউ আপন মান্নত পূর্ণ করেছে, এবং কেউ কেউ অপেক্ষা করছে। আর তারা সামান্যটুকুও পরিবর্তিত হয় নি, যাতে আল্লাহ সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যের পুরস্কার দেন এবং মুনাফিকদেরকে শাস্তি দেন যদি চান, অথবা তাদেরকে তওবার তৌফীক প্রদান করেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। [কুর’আন, ৩৩/২৩-২৪; নূরুল ইরফান]
আল্লাহ বিবৃত করেন:
إِنَّ ٱلْمُسْلِمِينَ وَٱلْمُسْلِمَاتِ وَٱلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَاتِ وَٱلْقَانِتِينَ وَٱلْقَانِتَاتِ وَٱلصَّادِقِينَ وَٱلصَّادِقَاتِ وَٱلصَّابِرِينَ وَٱلصَّابِرَاتِ وَٱلْخَاشِعِينَ وَٱلْخَاشِعَاتِ وَٱلْمُتَصَدِّقِينَ وَٱلْمُتَصَدِّقَاتِ وٱلصَّائِمِينَ وٱلصَّائِمَاتِ وَٱلْحَافِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَٱلْحَافِـظَاتِ وَٱلذَّاكِـرِينَ ٱللَّهَ كَثِيراً وَٱلذَّاكِرَاتِ أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْراً عَظِيماً، وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلاَ مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى ٱللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْراً أَن يَكُونَ لَهُمُ ٱلْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَن يَعْصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً مُّبِيناً.
অর্থ: নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ ও মুসলমান নারীবর্গ, ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীবর্গ, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারীবর্গ, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারীবর্গ, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারীবর্গ, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারীবর্গ, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারীবর্গ, বোযা পালনকারী পুরুষ ও রোযা পালনকারী নারীবর্গ, স্বীয় লজ্জাস্থানের পবিত্রতা হিফাজতকারী পুরুষ ও হিফাজতকারী নারীবর্গ এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও স্মরণকারী নারীবর্গ – এ সবার জন্যে আল্লাহ ক্ষমা ও মহা প্রতিদান তৈরি করে রেখেছেন। এবং না কোনো মুসলমান পুরুষ, না কোনো মুসলমান নারীর জন্যে শোভা পায় যে, যখন আল্লাহ ও রাসূল কোনো নির্দেশ দেন তখন তাদের স্বীয় ব্যাপারে কোনো ইখতিয়ার থাকবে। এবং যে কেউ নির্দেশ অমান্য করে – আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের, সে নিশ্চয় সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পথভ্রষ্ট হয়েছে। [কুর’আন, ৩৩/৩৫-৩৬; নূরুল ইরফান। হাকিমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন রহমতুল্লাহি আলাইহি উক্ত তফসীরে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখেন, “এ থেকে বহু মাস’আলা প্রতীয়মান হয়: (১) أَمر (নির্দেশ) ‘অপরিহার্যতা’ নির্দেশক; (২) হুজূর (দ.) প্রত্যেক মু’মিনের জান-মালের মালিক; (৩) হুজূরের (দ.) নির্দেশ মাতা-পিতার হুকুমের চেয়েও বেশি তাৎপর্যবহ; এবং (৪) হুজূরের (দ.) নির্দেশ আল্লাহরই নির্দেশ। এতে সন্দেহ করা পথভ্রষ্টতা। দেখুন, নারীর অধিকার রয়েছে কাকে বিয়ে করবে কী করবে না – সে ব্যাপারে। কিন্তু হুজূরের (দ.) নির্দেশ হলে তার নিজের কোনো মতামতের অধিকার নেই। (টীকা-৯৬)] {বঙ্গানুবাদকের নোট: লক্ষণীয় যে, আয়াতটিতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশাবলী আলাদা আলাদাভাবে উল্লেখিত হয়েছে (’এবং’ – وَ – শব্দটি ব্যবহার করে)। অর্থাৎ আল্লাহর নির্দেশ এসেছে আল-কুর’আনে এবং প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ হাদীসসমূহে (তথা সুন্নাহতে)। অতএব, যারা হাদীস মানে না, গোঁয়ার্তুমি করে বলে ‘সহীহ হাদীস প্রমাণ করা একেবারেই অসম্ভব’ এবং শুধু কুর’আনকেই প্রাধান্য দেয় – তারা অবশ্যঅবশ্য বাতিল পথ গ্রহণ করেছে (মানে গোমরাহ/পথভ্রষ্ট হয়েছে)!}
আল্লাহ পাক ফরমান:
يٰأَيُّهَا ٱلَّذِينَ آمَنُواْ ٱذْكُرُواْ ٱللَّهَ ذِكْراً كَثِيراً، وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلاً، هُوَ ٱلَّذِي يُصَلِّي عَلَيْكُمْ وَمَلاَئِكَتُهُ لِيُخْرِجَكُمْ مِّنَ ٱلظُّلُمَاتِ إِلَى ٱلنُّورِ وَكَانَ بِٱلْمُؤْمِنِينَ رَحِيماً، تَحِيَّتُهُمْ يَوْمَ يَلْقَوْنَهُ سَلاَمٌ وَأَعَدَّ لَهُمْ أَجْراً كَرِيماً.
অর্থ: হে ঈমানদার সকল, আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো। এবং সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো। তিনিই হন, যিনি দরূদ প্রেরণ করেন তোমাদের উপর এবং তাঁর ফিরিশতাবর্গ, যেনো তিনি তোমাদেরকে অন্ধকাররাশি থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন; এবং তিনি মুসলমানদের উপর/প্রতি দয়ালু। তাদের জন্যে সাক্ষাতের সময়ের অভিবাদন হবে ‘সালাম’ এবং তিনি তাদের জন্যে সম্মানজনক পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন। [কুর;আন, ৩৩/৪১-৪৪; নূরুল ইরফান]
আল্লাহ ব্যক্ত করেন:
يٰأَيُّهَا ٱلَّذِينَ آمَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَقُولُواْ قَوْلاً سَدِيداً، يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزاً عَظِيماً، إِنَّا عَرَضْنَا ٱلأَمَانَةَ عَلَى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلأَرْضِ وَٱلْجِبَالِ فَأبَيْنَ أَن يَحْمِلْنَهَا وَأَشْفَقْنَ مِنْهَا وَحَمَلَهَا ٱلإِنْسَانُ إِنَّهُ كَانَ ظَلُوماً جَهُولاً.
অর্থ: হে ঈমানদার সকল, আল্লাহকে ভয় করো এবং সরল কথা বলো। তোমাদের কর্ম তোমাদের জন্যে সংশোধন করে দেবেন এবং তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে সে মহা সাফল্য লাভ করেছে। নিশ্চয় আমি আমানত অর্পণ করেছি আসমানসমূহ, জমিন এবং পর্বতমালার প্রতি। অতঃপর সেগুলো তা বহন করতে অস্বীকার করলো এবং তাতে শঙ্কিত হলো, আর মানুষ তা বহন করলো। নিশ্চয় সে স্বীয় আত্মাকে কষ্টের মধ্যে নিক্ষেপকারী, বড় মূর্খ। [কুর’আন, ৩৩/৭৯-৭২; হাকিমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন রহমতুল্লাহি আলাইহি রচিত নূরুল ইরফান তাফসীরগ্রন্থ]





Users Today : 308
Users Yesterday : 767
This Month : 14730
This Year : 186601
Total Users : 302464
Views Today : 28610
Total views : 3605353