*জওয়া‘হিরুল কুর’আন (পর্ব-১৪৯)*

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

মূল: হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী (রহ.)

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

[ইংরেজি অনুবাদক মুহাম্মদ আবূল ক্বা’সেম কর্তৃক লিখিত ভূমিকা ও টীকা-টিপ্পনীসহ]

সূরাহ নূর হতে বারোটি আয়াত (ومن سورة النُّور اثنتا عشرة آية):

আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন:

إِنَّ ٱلَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ ٱلْفَاحِشَةُ فِي ٱلَّذِينَ آمَنُواْ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي ٱلدُّنْيَا وَٱلآخِرَةِ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ، وَلَوْلاَ فَضْلُ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ وَأَنَّ ٱللَّهَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ، يٰأَيُّهَا ٱلَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ ٱلشَّيْطَانِ وَمَن يَتَّبِعْ خُطُوَاتِ ٱلشَّيْطَانِ فَإِنَّهُ يَأْمُرُ بِٱلْفَحْشَآءِ وَٱلْمُنْكَرِ وَلَوْلاَ فَضْلُ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ مَا زَكَىٰ مِنكُمْ مِّنْ أَحَدٍ أَبَداً وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ يُزَكِّي مَن يَشَآءُ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ، وَلاَ يَأْتَلِ أُوْلُواْ ٱلْفَضْلِ مِنكُمْ وَٱلسَّعَةِ أَن يُؤْتُوۤاْ أُوْلِي ٱلْقُرْبَىٰ وَٱلْمَسَاكِينَ وَٱلْمُهَاجِرِينَ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَلْيَعْفُواْ وَلْيَصْفَحُوۤاْ أَلاَ تُحِبُّونَ أَن يَغْفِرَ ٱللَّهُ لَكُمْ وَٱللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ.

অর্থ: ওই সব লোক যারা চায় যে, মুসলমানদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার হোক, তাদের জন্যে মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে – দুনিয়া ও আখিরাতে এবং আল্লাহ জানেন আর তোমরা জানো না। এবং যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া তোমাদের প্রতি না থাকতো, তবে তোমরা সেটার কষ্টের স্বাদ অনুভব করতে আর আল্লাহ হন তোমাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু। হে ঈমানদারবর্গ, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। এবং যে ব্যক্তি শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, তবে সে তো অশ্লীলতা ও মন্দ কাজেরই কথা বলবে। আর যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া তোমাদের প্রতি না থাকতো, তবে তোমাদের মধ্যে কেউই কখনো পবিত্র হতে পারতে না। হ্যাঁ, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করে দেন এবং আল্লাহ শুনেন, জানেন। এবং তোমাদের মধ্যে যারা মর্যাদাবান ও সামর্থ্যবান তারা যেনো এ মর্মে শপথ না করে যে, আত্মীয়স্বজন, অভাবগ্রস্ত এবং আল্লাহর পথে হিজরতকারীদেরকে প্রদান করবে না এবং তাদের উচিত যেনো ক্ষমা করে দেয় এবং দোষত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি এ কথা পছন্দ করো না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন? এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। [কুর’আন, ২৪/১৯-২২; নূরুল ইরফান]

আল্লাহ বিবৃত করেন:

فِي بُيُوتٍ أَذِنَ ٱللَّهُ أَن تُرْفَعَ وَيُذْكَرَ فِيهَا ٱسْمُهُ يُسَبِّحُ لَهُ فِيهَا بِٱلْغُدُوِّ وَٱلآصَالِ، رِجَالٌ لاَّ تُلْهِيهِمْ تِجَارَةٌ وَلاَ بَيْعٌ عَن ذِكْرِ ٱللَّهِ وَإِقَامِ ٱلصَّلاَةِ وَإِيتَآءِ ٱلزَّكَـاةِ يَخَافُونَ يَوْماً تَتَقَلَّبُ فِيهِ ٱلْقُلُوبُ وَٱلأَبْصَارُ، لِيَجْزِيَهُمُ ٱللَّهُ أَحْسَنَ مَا عَمِلُواْ وَيَزِيدَهُمْ مِّن فَضْلِهِ وَٱللَّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ، وَٱلَّذِينَ كَفَرُوۤاْ أَعْمَالُهُمْ كَسَرَابٍ بِقِيعَةٍ يَحْسَبُهُ ٱلظَّمْآنُ مَآءً حَتَّىٰ إِذَا جَآءَهُ لَمْ يَجِدْهُ شَيْئاً وَوَجَدَ ٱللَّهَ عِندَهُ فَوَفَّـٰهُ حِسَابَهُ وَٱللَّهُ سَرِيعُ ٱلْحِسَابِ، أَوْ كَظُلُمَاتٍ فِي بَحْرٍ لُّجِّيٍّ يَغْشَاهُ مَوْجٌ مِّن فَوْقِهِ مَوْجٌ مِّن فَوْقِهِ سَحَابٌ ظُلُمَاتٌ بَعْضُهَا فَوْقَ بَعْضٍ إِذَآ أَخْرَجَ يَدَهُ لَمْ يَكَدْ يَرَاهَا وَمَن لَّمْ يَجْعَلِ ٱللَّهُ لَهُ نُوراً فَمَا لَهُ مِن نُورٍ.

অর্থ: সেসব ঘরের মধ্যে, যেগুলোকে সমুন্নত করার জন্যে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন এবং যেগুলোর মধ্যে তাঁর নাম নেয়া হয়, সেগুলোর মধ্যে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে সকাল ও সন্ধ্যায় ওই সব মানুষ, যাদেরকে অমনোযোগী করে না কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য, না বেচাকেনা – আল্লাহর স্মরণ থেকে এবং নামায কায়েম রাখা ও যাকাত প্রদান করা থেকে; তারা ভয় করে ওই দিনকে, যেদিন উল্টে যাবে অন্তর ও চোখসমূহ, যাতে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিদান দেন, তাদের সর্বাপেক্ষা উত্তম কাজের এবং আপন অনুগ্রহে তাদেরকে পুরস্কার বেশি দেন; আর আল্লাহ জীবিকা দান করেন যাকে চান অপরিমিত পরিমাণে। এবং যারা কাফির হয়েছে তাদের কর্ম এমনই, যেমন কোনো মরুভূমিতে রোদে চমকিত বালু পিপাসার্ত (ব্যক্তি) সেটাকে পানি মনে করে। শেষ পর্যন্ত যখন সেটার নিকট আসলো তখন দেখতে পেলো সেটা কিছুই নয় এবং আল্লাহকে নিজের নিকটে পেলো। অতঃপর তিনি তার হিসাব পূর্ণমাত্রায় দিলেন; এবং আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণ করেন। অথবা যেমন অন্ধকাররাশি কোনো সমুদ্রের গভীর জলাশয়ের মধ্যে, সেটার উপর ঢেউ, ঢেউয়ের উপর আরো ঢেউ, সেটার ঊর্ধ্বে মেঘপুঞ্জ; অন্ধকারপুঞ্জ রয়েছে একের উপর এক। যখন আপন হাত বের করে তখন তা দেখা যায় বলে মনে হয় না এবং আল্লাহ যাকে আলো দান করেন না, তার জন্যে কোথাও আলো নেই। [কুর’আন, ২৪/৩৬-৪০]

আল্লাহ পাক ফরমান:

إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ ٱلْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوۤاْ إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَن يَقُولُواْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُوْلَـٰئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ، وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَخْشَ ٱللَّهَ وَيَتَّقْهِ فَأُوْلَـٰئِكَ هُمُ ٱلْفَآئِزُون.

অর্থ: মুসলমানদের উক্তি তো এই – যখন আল্লাহ ও রাসূলের দিকে আহ্বান করা হয় এ জন্যে যে, রাসূল তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন, তখন তারা আরজ করে, ‘আমরা শ্রবণ করলাম এবং হুকুম মান্য করলাম।’ আর এসব মানুুষই সফলকাম। এবং যারা নির্দেশ মান্য করে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের এবং আল্লাহকে ভয় করে আর সাবধানতা অবলম্বন করে, তবে এসব মানুষই সফলকাম। [কুর’আন, ২৪/৫১-৫২; হাকিমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন রহমতুল্লাহি আলাইহি কৃত নূরুল ইরফান শীর্ষক তাফসীরগ্রন্থের বাংলা সংস্করণ]

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment