ধরায় এসেছেন এক মহাপুরুষ
———-মাহদি আল গালিব
৪৭০ হিজরী। ১০৭৮ ঈঙ্গাব্দ। পারস্য, জীলান প্রদেশ। শাবান মাস। শেষ দিন। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। সবাই দেখছে উপরে। উঠবে বাঁকা চাঁদ? হাসবে কি রমজানের হাসি। না, চাঁদ নেই। একরাশ নিরাশা।
কিন্তু কি হবে? রমজান কি আগামীকাল! সিদ্ধান্ত একজনই দিতে পারবেন। নাম, আবু সালেহ মুসা আল হাসানি। প্রসিদ্ধ পণ্ডিত। সকালে যেতে হবে। এখন রাত। সবাই ঘরে ফিরল।
সকাল। সবাই একত্রিত। পণ্ডিতের দলিজায়। ঠক! ঠক!
– ভেতরে কেউ আছেন। আমরা জিলান শহরবাসী। হযরতের কাছে এসেছি। বিশেষ দরকার।
– ক্ষমা করবেন। তিনি নেই। (আওয়াজ এলো, পর্দার ভেতর থেকে)।
– কোথায় তিনি? কখন আসবেন?
– অন্য শহরে গিয়েছেন। কিছুদিন লাগবে। জানতে পারি কি সমস্যা? তিনি আসলে জানাব।
তারা জানালো সমস্যা। চাঁদ না দেখা। রমজান নিয়ে দ্বিধা।
এবার ফেরার পালা। সবাই পিছে ঘুরল। ঘরে ফিরবে। তখনি ঘরের মালকিন ডাকলেন।
– শুনুন! একটু থামুন। আপনাদের সমাধান হয়ত আছে।
– জ্বী, বলুন। আমরা শুনছি।
– আজরাতে আমি সন্তান প্রসব করেছি। আমার সন্তান আজ সুবহে সাদেক থেকে কিছুই পান করছে না। খাওয়াতে চাইলে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। আমার মনে হয়, শিশুটি রোযা রেখেছে। আমার মনে হয় আজ রমযান। এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের।
সেদিন সবাই রোযা রেখেছিল। সে মহাত্ম্যা মহিলার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। মেনে নেয় দুধের শিশুর না বলা সিদ্ধান্ত।
মানবেই না কেন। সেই পণ্ডিত ছিলেন নবীবংশ, হাসানি। তাঁর স্ত্রীও ছিলেন নবীবংশ, হুসাইনি। আর তাঁদের সন্তান তো হাসানি ফুল। যাঁর সুবাস হুসাইনি।
#জ্বী, তিনি গাউসে পাক। তিনি বড়পীর। তিনি শেখ সৈয়দ আবু মুহাম্মাদ আব্দুল কাদের জিলানী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু।
তাঁর উপাধী মহীউদ্দীন। ধর্মের জীবন দানকারী। তাই তো জন্মের প্রথম দিনেই ধর্মের সমাধান দিলেন।
তিনি জন্মালেন। তাঁর ঘাড়ে ছিল একটি চিহ্ন। পবিত্র পায়ের চিহ্ন। মদিনা-মুনিব (দ) এঁর চরণচিহ্ন।
সেদিন জিলানে এগারো’শ শিশু জন্মেছিল। যাঁরা সবাই অলী হয়েছিলেন। পূণ্যাত্মা হয়েছেন।
তিনি গাউসে পাক! যাঁর কদম চিহ্ন সমস্ত আউলিয়াদের কাঁধে।
পহেলা রমযান তাঁর আগমন দিবস। আসুন, এ দিনটিকে উদযাপন করি।
সে দিন অন্তত একজন দুঃস্থকে সাহায্য করি। বন্ধুদের নিয়ে ইফতার করি। প্রতিবেশির খোঁজ নেই। তৈরী করি ভালোবাসার মহল।
দরূদ পড়ি। মিলাদ পড়াই। মানুষকে জানাই, এদিনে এসেছেন এক মহান পুরুষ।