পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।
কালেমা
কালেমা ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস । এর মাধ্যমেই ইসলামের প্রথম স্তম্ভ শাহাদাহ্ পূর্ণতা পায়। হযরত আমর ইবনে আস (রাঃ) বলেন যে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- এরশাদ করেছেনঃ কিয়ামত দিবসে এক ব্যক্তিকে আমল ওজন করা মীজানের কাছে আনা হবে এবং তার গুনাহের নিরান্নব্বইটি দফতর মীজানের এক পাল্লায় রেখে দেয়া হবে (প্রতিটি দফার দৃষ্টিসম সীমা দীর্ঘ হবে) অতঃপর কাগজের একটি ছোট্ট টুকরো বের করে অপর পাল্লায় রাখা হেব ।তখন এ কাগজের টুকরোটি তার গুনাহের নিরান্নব্বই দফতর থেকেও প্রভাবিত ও ভারী প্রমানিত হয়ে যাবে। কাগজের এ টুকরোতে লিখা থাকবে _“ আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওহদাহু লা-শারীকালাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাছুলুহু”। ইসলামের কালেমা গুলো হল :-
১. কালেমা তাইয়্যেবা
لَا اِلَهَ اِلاَّ اللهُ مُحَمَّدُ رَّسُوْ لُ الله
উচ্চারণঃ লা–ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ।
বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ ভিন্ন ইবাদত বন্দেগীর উপযুক্ত আর কেহই নাই। হযরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম তাঁহার প্রেরিত রসূল।
২. কালেমা–ই শাহাদত
اَشْهَدُ اَنْ لَّا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَاشَرِيْكَ لَهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُه
উচ্চারনঃ আশহাদু আল লা–ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওহদাহু লা–শারীকালাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাছুলুহু ।
অনুবাদঃ আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে , অাল্লাহ ভিন্ন আর কেহই ইবাদতের উপযুক্ত নাই তিনি এক তাঁহার কোন অংশীদার নাই । আমি আরও সাক্ষ্য দিতেছি যে, হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর শ্রেষ্ঠ বান্দা এবং তাঁহার প্রেরিত নবী ও রাসূল
৩. কালেমা–ই তাওহীদ
لَا اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ وَاحِدَ لَّاثَانِىَ لَكَ مُحَمَّدُرَّ سُوْلُ اللهِ اِمَامُ الْمُتَّقِيْنَ رَسُوْ لُرَبِّ الْعَلَمِيْنَ
উচ্চারণঃ লা–ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়াহেদাল্লা ছানীয়ালাকা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লা ইমামুল মোত্তাকীনা রাছুলুরাবি্বল আলামীন।
অনুবাদঃ আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন অংশীদার নেই। সকল ক্ষমতা এবং প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিন জীবন ও মৃত্যুর মালিক। তিনি চিরঞ্জীব, তিনি সকল সম্মানের মালিক। তাঁর হাতেই সকল মঙ্গল এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতা রাখেন।
৪. কালেমা–ই তামজীদ
لَا اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ نُوْرَ يَّهْدِىَ اللهُ لِنُوْرِهِ مَنْ يَّشَاءُ مُحَمَّدُ رَّسَوْ لُ اللهِ اِمَامُ الْمُرْسَلِيْنَ خَا تَمُ النَّبِيِّنَ
উচ্চারনঃ লা–ইলাহা ইল্লা আনতা নুরাইইয়াহ দিয়াল্লাহু লিনুরিহী মাইয়্যাশাউ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহি ইমামূল
মুরছালীনা খাতামুন–নাবিয়্যীন।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আপনি ব্যতীত কেহই উপাস্য নাই, আপনি জ্যোতিময় । আপনি যাহাকে ইচ্ছা আপন জ্যোতিঃ প্রদর্শন করেন । মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আপনার প্রেরিত পয়গম্বরগণের ইমাম এবং শেষ নবী।
“ ঈমানের আসল বস্তু তাওহীদ। এক কথায় তাওহীদ শব্দের অর্থ একাত্ব–বাদ । কিন্তু ইহার ব্যাপক ও ব্যবহারিক অর্থ কয়েক প্রকারে বিভক্ত । প্রথমতঃ ইহার অর্থ আল্লাহপাকের সর্বত ভাবে এক জানা, কাহাকেও তাঁহার সমকক্ষ মনে না করা । তাঁহার সাথে কাহাকেও চিন্তায়, কল্পনায় বা কর্মে অংশীদার স্থাপন না করা এবং ‘আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই’ এই কথার উপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করিয়া একমাত্র তাঁহারই উপর ইবাদতে রত হওয়া ”
৫. ঈমান–ই মুজমাল
امَنْتُ بِاللهِ كَمَا هُوَ بِاَسْمَائِه وَصِفَاتِه وَقَبِلْتُ جَمِيْعَ اَحْكَامِه وَاَرْكَانِه
উচ্চারণঃ আ–মানতু বিল্লা–হি কামা–হুয়া বিআসমা–ইহী ওয়া সিফা–তিহী ওয়া ক্বাবিলতু জামী–আ আহকা–মিহী ওয়া আরকা–নিহী।
অর্থঃ আমি আল্লাহ তা’আলার উপর ঈমান আনলাম। তিনি যেমন, তার নামসমূহ ও তাঁর গুণাবলী সহকারে এবং আমি গ্রহণ করেছি তার সমস্ত বিধান ও আরকানকে।
এই সম্পর্কে আল্লাহপাকের একটি পবিত্র কালাম এই যে
وَمَا اُمِرُوْا اِلاَّلِيَعْبُدُ اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَاءَ-
অর্থাৎ–তাহাদিগকে অন্য সব দেব–দেবীর পূজা ছাড়িয়া (খালেছ ভাবে) শুধুমাত্র এক আল্লাহ পাকের ইবাদত করার জন্য আদেশ করা হইয়াছে।
৬. ঈমান–ই–মুফাসসাল
امَنْتُ بِاللهِ وَمَلئِكَتِه وَكُتُبِه وَرَسُوْلِه وَالْيَوْمِ الْاخِرِ وَالْقَدْرِ خَيْرِه وَشَرِّه مِنَ اللهِ تَعَالى وَالْبَعْثِ بَعْدَالْمَوْتِ
উচ্চারণঃ আ–মানতু বিল্লা–হি ওয়া মালা–ইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুসূলিহী ওয়াল ইয়াউমিল আ–খিরী, ওয়াল ক্বাদরি খায়রিহী–ওয়া শাররিহী মিনাল্লা–হি তাআলা ওয়াল বা’সি বা’দাল মাওত।
অর্থঃ আমি ঈমান আনলাম আল্লাহর উপর তাঁর ফিরিশতাদের উপর, তাঁর আসমানী কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং শেষ দিবসের উপর আর এর উপর যে, অদৃষ্টের ভাল–মন্দ আল্লাহ তা’আলার তরফ হতে এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের উপর।
৭. কালেমা–ই রদ্দেকুফর
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنْ اَنْ اُشْرِكَ بِكَ شَيْئً وَاَنَا اعَلَمُ بِهِ وَاَسْتَغْفِرُكَ لِمَا اعَلَمُ بِهِ وَمَا لاَاعَلَمُ بِهِ تُبْتُ عَنْهُ وَتَبَرَّأتُ مِنَ الْكُفْرِ وَالشِّرْكِ وَالْمَعَاصِىْ كُلِّهَا وَاَسْلَمْتُ وَاَمَنْتُ وَاَقُوْلُ اَنْ لاَّاِلَهَ اِلاَّاللهُ مُحَمَّدُ رَّسَوْلُ اللهِ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিন আন উশরিকা বিকা শাইআও ওয়া আনা আলামু বিহি ওয়া আসতাগ ফিরুকা লিমা আলামু বিহি ওয়ামা লা আলামু বিহি তুবতু আনহু ওয়া তাবাররাতু মিনাল কুফরি ওয়াশ্শির্কি ওয়াল মা আছি কুল্লিহা ওয়া আসলামতু ওয়া আমানতু ওয়া আক্বলু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদু রাসূলুল্লাহ।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশা করছি, যেন কাহাকেও আপনার সহিত অংশীদার না করি। আমার জানা–অজানা গুনাহ হতে ক্ষমা চাহিতেছি এবং ইহা হতে তওবা করিতেছি । কুফর, শিরক এবং অন্যান্য সমস্ত গুনাহ হতে বিদুরীত হইতেছি এবং প্রতিজ্ঞা করিতেছি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নাই, মুহাম্মদ মুস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) তাঁহার রাসুল।
এছাড়া ও আরও একটি কালেমা আছে তা হল :
কালেমা–ই–আস্তাগফের
اسْتَغْفِرُ اللّهَ رَبِّىْ مِنْ كُلِّ ذَنْبٍ اَذْنَبْتُه عَمَدًا اَوْ خَطَاً سِرًّا اَوْ عَلَانِيَةً وَاَتُوْبُ اِلَيْهِ مِنْ الذَّنْبِ الَّذِىْ اَعْلَمُ وَ مِنْ الذَّنْبِ الَّذِىْ لا اَعْلَمُ اِنَّكَ اَنْتَ عَلَّامُ الغُيُبِ وَ سَتَّارُ الْعُيُوْبِ و َغَفَّارُ الذُّنُوْبِ وَ لا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ اِلَّا بِاللّهِ الْعَلِىِّ العَظِيْم
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জামবি আয নাবতুহু আমাদান আওখাতাআন সিররান আওয়ালা নিয়াতান ওয়াতুবু ইলাইহি মিনাযযামবিল্লাজি ওয়ামিনাযযামবিল্লাজি লা আলামু ইন্নাকা আনতা আল্লামুল গুয়ুবী ওয়া সাত্তারুল উইয়ুবী ওয়া গাফফারুজজুনুবি ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিউল আযীম।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাই সকল পাপ থেকে, যা আমি সংঘটিত করেছি আমার জ্ঞাতসারে অথবা অজ্ঞাতসারে, গোপনে বা প্রকাশ্যে এবং আমি আমার পালনকর্তার আশ্রয় চাই সেই পাপ থেকে, যে পাপ আমি জানি এবং যে পাপ আমি জানিনা। অবশ্যই আপনি লুকানো এবং গোপন (ভুল) পাপ সম্পর্কে জানেন এবং ক্ষমাশীল। আল্লাহ্ ছাড়া কোন শক্তি নেই, কোন ক্ষমতা নেই, তিনি সম্মানিত, তিনি মহান।
পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!