সমাজে একশ্রেনীর মানুষ বের হয়েছে যারা ইবলিশের চাইতেও নিকৃষ্ট। তারা প্রচার করছে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার শাহাদাতের ব্যাপারে ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি দায়ী নয়। ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি নকি এ ব্যাপারে কোন আদেশ দেয়নি। বরং শাহাদাতের সংবাদ শুনে কান্না করেছিলো। নাউযুবিল্লাহ। আমরা বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও ইতিহাসবিদ হযরত ইবনে আসাকীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “তারিখু মাদীনাতু দামেষ্ক” থেকে প্রমাণ করবো ইয়াযিদের নির্দেশে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করা হয় (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক), শহীদ করার পর ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি খুশি প্রকাশ করে (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। শুধু তাই না সম্মানিত মস্তক মুবারক উনার সাথেও চরম বেয়াদবী মূলক আচরন করে (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। যা ইতিহাসে পাতায় স্পষ্ট লেখা রয়েছে,
دخل بعض بني أمية عَلَى يزيد ، فَقَالَ : أبشر يا أمير المؤمنين ، فقد أمكنك اللَّه من عدو اللَّه وعدوك ؛ يعني : الحسين بْن علي قد قتل ، ووجه برأسه إليك ، فلم يلبث إلا أياما حتى جيء برأس الحسين ، فوضع بين يدي يزيد فِي طشت ، فأمر الغلام فرفع الثوب الَّذِي كَانَ عليه ، فحين رآه خمر وجهه بكمه ، كأنه يشم منه رائحة ، وقال : الحمد لله الَّذِي كفانا المؤنة بغير مؤنة كُلَّمَا أَوْقَدُوا نَارًا لِلْحَرْبِ أَطْفَأَهَا اللَّهُ سورة المائدة آية ৬৪ ، قالت ريا : فدنوت منه ، فنظرت إِلَيْهِ وبه ردع من حناء ، قَالَ حمزة : فقلت لها : اقرع ثناياه بالقضيب كما يقولون ؟ قالت : أي والذي ذهب بنفسه ، وهو قادر عَلَى أن يغفر لَهُ ، لقد رأيته يقرع ثناياه بقضيب فِي يده ،
অর্থ: বনু উমাইয়ার কিছু লোক ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহির কাছে আসে এবং বলে, হে আমীরুল মু’মিনিন (আসতাগফিরুল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ) সুসংবাদ গ্রহন করো। আল্লাহ পাক তোমাকে বিজয় দান করেছেন আল্লাহর দুশমন আর তোমার দুশমনের বিরুদ্ধে (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক!)। হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করা হয়েছে। উনার সম্মানিত শের মুবারক পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মস্তক মুবরাক এসে পৌঁছালো। তখন একটা প্লেটে সম্মানিত মস্তক মুবারক ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহির সামনে আনা হলো। তখন সে তার গোলামকে সেই প্লেট থেকে কাপড় সরাতে হুকুম করলো, সে তখন কাপড় সরালো। এটা দেখে তার (ইয়াযিদের) চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেলো, সে যেন সুগন্ধি নিচ্ছিলো (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। সে বললো, আলহামদুল্লিাহ! এত সহজেই আল্লাহ পাক আমাকে বিজয় দিয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)। এর পর সে কুরআন শরীফ থেকে كُلَّمَا أَوْقَدُوا نَارًا لِلْحَرْبِ أَطْفَأَهَا اللَّهُ (সূরা মায়েদা ৬৪) এ আয়াত শরীফ পড়লো। রাইয়া বলছে, আমি তখন তার দিকে তাকালাম। হামজা রইয়াকে প্রশ্ন করলো ইয়াযিদ কি বেত দিয়ে আঘাত করেছিলো। সে বললো আল্লাহর পাক উনার জাতের কসম। অমি দেখেছি ইয়াযিদ বেত দিয়ে উনার দাঁত মুবারকে আঘাত করছে (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)।
(তারিখু মাদীনাতু দামেষ্ক ৬৯তম থন্ড ১৫৯ পৃষ্ঠা; লেখক: ইমাম ইবনে আসাকীর রহমতুল্লাহি আলাইহি; জন্ম ৪৯৯ হিজরী- ওফাত ৫৭১ হিজরী; প্রকাশনা: দারুল ফিকর, বাইরুত, লেবানন)
একটু অগ্রসর হয়ে ইমাম আসাকীর রহমতুল্লাহি আলাইহি হামজার বরাতে লিখেন,
أنه رأى رأس الحسين مصلوبا بدمشق ثلاثة أيام
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার সুমহান মস্তক মুবারক দামেষ্কে ৩ দিন ঝুলানো ছিলো। (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক!)
উপরোক্ত ঘটনা থেকে যা প্রমাণ হলো,
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার প্রতি ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি ভয়ানক বিদ্বেষ পোষন করতো। উনাকে দুশমন মনে করতো। সম্মানিত মস্তক মুবারক দেখে সে খুশি হয় এবং চরম বেয়াদবী করে বেত দিয়ে দাঁত মুবারকে আঘাত করতে থাকে। এখানেই শেষ নয় বরং এই কাট্টা কাফির, চির জাহান্নামী ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহি সম্মানিত মস্তক মুবারক উনাকে ৩ দিন দামেষ্কের ফটকে ঝুলিয়ে রাখে। (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক! নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক!)
তাহলে কি করে বলা যায় যে কারবালার সেই নির্মম ঘটনার পিছনে সে দায়ী নয়? বরং এটাই প্রমাণ হলো তার আদেশেই কারবালার সেই নির্মম ঘটনা সংঘটিত হয়। আজ যারা ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহিকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চায়, ইয়াযিদকে বিখ্যাত তাবেয়ী বলে প্রচার করতে চায় বুঝতে হবে এরা আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনার পক্ষ ছেড়ে ইয়াযিদ লানতুল্লাহি আলাইহির পক্ষ নিয়েছে। বুঝতে হবে এরাই বর্তমান ইয়াযিদের উত্তোসূরি। ইবলিশের চাইতেও এরা নিকৃষ্ট। অনন্তকালের জন্য এদের প্রতি লা’নত! লা’নত! লা’নত। মহান আল্লাহ পাক এদের ধ্বংস করুন, লাঞ্ছিত করুন, এদের প্রতি লা’নত বর্ষন করুন। আমীন।